02-07-2020, 09:12 AM
(This post was last modified: 02-07-2020, 09:26 AM by Kolir kesto. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(#০৩)
মানসী - ছুটল বাণ কিয়ে নয়নে নিবার
ওই ক্লাসের পড়ের ক্লাস অফ ছিল। দুপুর বেলা বাইরে ভীষণ রোদ, তাই ছেলে মেয়েরা ওই ক্লাসে বসেই আড্ডা দিচ্ছিল।
কস্তূরী – রাধা আর কৃষ্ণের প্রেম নিয়ে কেন যে এত সাহিত্য বুঝিনা
অমিত – কৃষ্ণ সেইরকম কিছু বলত না, রাধাই ওর ওপর ফিদা হয়ে গিয়েছিলো
শিলা – রাধা কি করে যে ওই কুচকুচে কালো রঙের একটা ছেলেকে পছন্দ করলো কে জানে
অসীম – ছেলেদের কালো ফর্সা হয় না। তোর রাধা যদি কালো হত আর কৃষ্ণ ফর্সা হত তবে ওদের প্রেমও হত না আর এত সাহিত্যও হত না।
মানসী – একটা ছেলে আর একটা মেয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব বা ভালবাসা গায়ের রঙ দেখে হয় না
কস্তূরী – কিন্তু আমি বুঝলাম না গোবিন্দদাস শেষ লাইনটা কেন বলেছে
শিলা – কোন লাইনটা ?
কস্তূরী - ছুটল বাণ কিয়ে নয়নে নিবার
মানসী – দেখ ধনুকের থেকে বাণ ছেড়ে দিলে যেমন ফিরে আসে না। টিউবের থেকে টুথপেস্ট বের করার পরে যেমন ফেরত দেওয়া যায় না। সেইরকম রাধা রানীর মন কৃষ্ণের সাথে আটকে গেছে। সেটা আর ছাড়ানো যাবে না। প্রেম একবার হয়ে গেলে আর ফিরে আসা যায় না।
অমিত – বেশ সুন্দর উদাহরন দিয়ে বুঝিয়ে দিলি মাইরি
শিলা – পরের কবিতায় যা লিখেছে সেই রকম হলে আমারও দুঃখ হয়
অসীম – কি রকম ?
শিলা - সই , কেমনে ধরিব হিয়া ? আমার বঁধুয়া আন বাড়ি যায়, আমার আঙ্গিনা দিয়া!
কস্তূরী – তোর সাথে কে করে ওইরকম ?
শিলা – কেন এই অসীম হতচ্ছাড়াটা
কস্তূরী – অসীম তো তোকে ভালবাসে ?
শিলা – বাল ভালবাসে, শুধু আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে ওই পেত্মিটার পেছন পেছন ঘোরে
অমিত – পেত্নি আবার কে ?
শিলা – কেন এই মানসী, কালো পেত্নি
অমিত – ছিঃ তুই এই ভাবিস ! ও আমাদের বন্ধু না ?
শিলা – বন্ধু ! নেহাত মানসী পড়াশুনায় একটু ভাল তা না হলে ওর সাথে আমি জীবনে কথাই বলতাম না।
কস্তূরী – আমিও তো কালো
শিলা – তুই মোটেই ওর মত কালো নয়
অসীম – এই আলোচনা এখন না করলেই নয় ?
শিলা – আমি তোর আর অমিতের মত পেছনে বলি না। যা ভাবি সেটা সামনা সামনিই বলি
কস্তূরী – তাও চুপ কর প্লীজ
মানসী – না না ওকে বলতে দে, ওরা কি ভাবে সেটা জানা দরকার।
শিলা – ওই অসীম তোকে এত পাত্তা দেয় সেটা শুধু তোর কাছ থেকে তোর সুলগ্না বৌদির বানানো নোটস গুলো নেবে বলে।
অসীম – মোটেই না। আমি আর অমিত মানসীকে বন্ধু হিসাবেই দেখি।
শিলা – ওই অমিতের কথা আর বলিস না
অমিত – আমি আবার কি করলাম ?
শিলা – তুই অসীমকে কি বলেছিস আমি জানি
মানসী – কি বলেছে
কস্তূরী – কিচ্ছু বলেনি। ছেড়ে দে ওইসব ফালতু কথা।
মানসী – ছাড়তে হবে না, আমিও শুনি আর জানি আমার বন্ধুরা আমাকে নিয়ে কি ভাবে
শিলা – অমিতের ধান্দা তোর কাছ থেকে নোটস নেওয়া। আর তোকে বন্ধুত্বের জালে ফাঁসিয়ে তোর শরীরটাকে ভোগ করা।
কস্তূরী – ছিঃ
অমিত – মোটেও না
শিলা – একদম মিথ্যা কথা বলবি না। তুই বলিসনি অসীমের কাছে “মানসীর বুক দুটো দেখেছিস? একদম ডাঁসা পেয়ারা, কিন্তু ফজলি আমের সাইজের। পরীক্ষা হয়ে গেলে একদিন ওকে পটিয়ে মস্তি করবো। তারপর ওই কালো ভুতকে আর চেনারও দরকার হবে না”। কেউ বন্ধুদের শরীর দেখে !
কস্তূরী – ছিঃ অমিত ছিঃ, তোকে আমার বন্ধু বলে ভাবতেও গা শিরশির করছে
অমিত – দেখ সেদিন অসিমের সাথে কথায় কথায় বলে ফেলেছিলাম। মানসী বিশ্বাস কর আমি আসলে এইরকম ভাবি না।
মানসী - ছুটল বাণ কিয়ে নয়নে নিবার
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!