28-02-2019, 12:27 PM
পর্ব- ৪৯-তমালের পরীক্ষাঃ
সকালে যখন ঘুম থেকে উঠলাম দেখি আমার মাথাটা দীপার দুটো দুধের মাঝে, দীপার শরীর টা আমার শরীরে জড়িয়ে রয়েছে. ওই রাজকীয় সাদা সারি টা নিচে পরে রয়েছে. আমি আসতে আসতে উঠে বসলাম. দীপাও জেগে উঠলো. নিচে নেমে সারি টা শরীরে জড়িয়ে আমায় ভিশন জোরে জড়িয়ে ধরল.
দীপা: ওহহ সমু রাতে তুমি কি এত ভাব বলত. আমার দারুন দারুন লাগে যখন তুমি পাগলের মত করে আমায় ভালোবাসো. মনে হয় আমার জন্ম সার্থক. কিন্তু আমায় কিছুই বলতে দাও না. সোনা আমার তো তোমার সম্বন্ধে কিছু বলতে ইচ্ছে হয়.
আমি: (মনে মনে ভাবলাম কত কষ্ট করে যে এই কল্পনা গুলো করি টা আমি ই জানি, মাঝে কথা বলে সব কিছুতে জল ঢালতে আমি দেবনা)
আমি রেডি হয়ে অফিস এ বেরিয়ে গেলাম, খুব তারাতারি আমায় তমাল হতে হবে. আজ বিশাল কাজ. অফিস এ সব কাজ শেষ করতে প্রায় ৩ ঘন্টা লেগে গেল. আমি জানি এতে ভালই হলো, দীপাও ভাববার যথেষ্ট সময় পেল. আমি জানি দীপা অনলাইন এ আমার জন্য বহুক্ষণ অপেক্ষা করছে. আমি অনলাইন হতে হতে প্রায় ১:৩০ হয়ে গেল. হা দীপা অনলাইন. আজ প্রথম মেসেজ টা আমি ই পাঠাব.
তমাল: কি দীপা কিছু ভাবলে আমার প্রশ্নটার বাপরে?
দীপা: তমাল রাতে তো সময় পাইনি তবে এখন অনেক ভাবলাম. তমাল আমি কিছুতেই সমু ছাড়া কল্পনা করতে পারিনা কিছু. তাই তোমার প্রশ্নের উত্তর টা মাথায় এলোনা.
তমাল: (কিছুটা হতাশ ই হয়ে) আচ্ছা দীপা এরকম ভাব, সমু যে যে কাজ গুলো করে.. যেমন তোমার কেয়ার করে, তোমায় ভালবাসে, তোমায় নিয়ে ভাবে. এর মধ্যে যদি কোনো একটা ও করতে না পারে কোনো কারণে অক্ষম হয়ে যায় তাহলে কি হবে. ধর তোমায় যদি ও ভালো না বসে আর তখন?
দীপা: ও আমায় খুব ভালবাসে এরকম কখনই হবেনা.
তমাল: ঠিক আছে মন থেকে ভালোবাসলো কিন্তু ধর ওর শরীর ভালবাসার অক্ষম হয়ে গেল তাহলে. (কথাটা বলে আমার খুব ভয় লাগলো)
দীপা: আমি জানিনা কি হবে.
তমাল: এটা তো সত্যি যে খুব খারাপ লাগবে, পুরনো মোমেন্ট গুলো মিস করবে তুমি. যতদিন যাবে মানসিক রুগী হয়ে যাবে.
দীপা: হা এটা খুব সত্যি.
তমাল: দীপা তাহলে আমার অবস্থাটা একবার তুমি ভেবে দেখো. আমার কি হয় মনের অবস্থা. আমার শরীরে সবসময় একটা ক্ষিদে থাকে যা কিছুতেই নেভেনা. আমি প্রতি মুহুর্তে যন্ত্রণা ভোগ করি দীপা. আমার কষ্ট কেউ বোঝেনা. আমি শুধু অন্যের জন্য সারাজীবন করে গেলাম. আমায় কেউ কিছু দিলনা.
দীপা: এই তমাল এরকম বলনা. আমার মন খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে.
আমি অনেকক্ষণ উত্তর দিলামনা.
দীপা: এই তমাল কি হয়েছে?
দীপা: এই লক্ষিটি কি হয়েছে?
তমাল: দীপা কাল আমরা যে পার্ক এ দেখা করেছিলাম তুমি সেখানে আসো. আমি এক্ষুনি তোমায় দেখতে চাই. আমার শরীরে আগুন জলছে. আমি কুরুভিল্লা কে পাঠাচ্ছি. তুমি আসবে কিন্তু. আমি উঠলাম.
আমি লগ আউট করে দিলাম. অফিস এ এক সেট কালকের ড্রেস টা এনেছিলাম. ওটা চেঞ্জ করে আমি আগে একটা ট্যাক্সি করে বেরোলাম. তারপর কুরুভিল্লা কে ফোন এ বললাম বাড়ি থেকে দীপা কে নিয়ে আসতে.
আমি পার্ক এ পৌছে গেলাম ৪০ মিনিট এর মধ্যেই. আজ এখন পার্ক টা খুব শান্ত. হয়ত দুপুর বলে. মতে ২ তো প্রেমিক প্রেমিকা বসে আছে তাও অনেক দুরে দুরে. আমি গাড়িতে আসতে আসতে একটা কথ অনেকক্ষণ ধরে ভাবছিলাম. আমি যদি তমাল কে হালুসিনেসন করতে পারি তাহলে খুব ভালো হয়. দীপার কাছে এটাই বাস্তব মনে হচ্ছে. কিন্তু যেহেতু আমি আগে থেকে প্লান করে চলেছি তাই আমি ঠিক সেভাবে এনজয় করতে পারছিনা. ঠিক যেভাবে জ্যোতি বা দাদা আমার হালুসিনেসন এ আসে, তমাল কেও ঠিক অভাবেই আমায় আনতে হবে. আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম আমি দুরে কথাও লুকিয়ে আছি. আর আমার ই মত দেখতে আরেকজন যার নাম তমাল সে পার্ক এ বসে আমার সুন্দরী বউ এর জন্য অপেক্ষা করছে. তবে এক্ষেত্রে আমি কোনো কল্পনা করবনা শুধু যা হচ্ছে তাই ভাবব. প্রায় আধ ঘন্টা পর দীপা পার্ক এ ঢুকলো. তমাল মাথা নিচু করে বিমর্ষ হয়ে বসে আছে.
দীপা: এই তমাল কি পাগলামি শুরু করেছ?
তমাল: বাহ আজ তোমার এটাকে পাগলামি মনে হলো বলো.
দীপা: সরি বাবা. আমি তোমায় কষ্ট দিতে চাইনি.
তমাল: আমায় তুমি বোঝনা দীপা.
দীপা: তুমি কষ্ট পেয়োনা তমাল. আমার খুব মন খারাপ করছে. তুমি কি চাও আমি মন খারাপ করি.
তমাল: হা সারাজীবন আমি শুধু অন্যের কষ্ট তাই দেখে যাই, নিজের বলে কিছু থাকলোনা. আমার ও বাচতে ইচ্ছে করে দীপা. প্রতিদিন তুমি যেমন বিছানায় সমুর অপেক্ষায় থাক আমিও থাকি কোনো অচেনা কারুর অপেক্ষায়. একাকিত্ব এর একটা লিমিট আছে দীপা. আমি এভাবে বাচতে পারবনা.
দীপা: এরকম করনা তমাল, নিজেকে প্লিজ একটু কন্ট্রোল কর. তোমার ওপর অনেক দায়িত্ব.
তমাল: আমি আর এগুলো সামলাতে পারছিনা. আমি তাই সব ছেড়ে বার বার তোমার কাছে চলে আসছি. আমি আর পারছিনা দীপা.
দীপা: হা তমাল যখন ইচ্ছে হবে তখন ই তুমি আমার কাছে এসে যেও. আমি তোমার জন্য সব করতে পারি কাল তোমায় কথা দিলাম না আমি.
তমাল: দীপা আমার কথাটা বোঝো. বাবা মার যদি দুজন সন্তান থাকে তাহলে ওরা দুজন ই সমান ভালবাসা পায়. আমার ক্ষেত্রে সেটা হচ্ছেনা দীপা.
দীপা: আমি বুঝলামনা তমাল. প্লিজ আমায় বুঝিয়ে বলো.
তমাল: আমি সমু কে হিংসা করি. তুমি ওকে যা দাও টা আমায় দাওনা. অথচ আমরা দুজনেই তোমায় সমান ভাবে কেয়ার করি. সমান ভাবে তোমার কথা চিন্তা করি.
দীপা: ও আমার স্বামী তমাল.
তমাল: আর আমি? আমি কে?
দীপা চুপ করে থাকলো.
তমাল: আমার ইচ্ছে গুলো আছে দীপা. আমার অন্যকে ভালবাসতে ইচ্ছে হয়. আমিও মানুষ.
দীপা: আমি কি তোমায় কষ্ট দিয়েছি? আমি কি তোমায় কখনো অবহেলা করেছি তমাল? আমি তো আজ তোমার এক কোথায় বেরিয়ে চলে এসেছি.
তমাল: দীপা আমি শান্ত হয়েছি. (দীপার দু হাত ধরে). প্লিজ একটু বোঝো. তুমি যদি সমুকে টানা কয়েক বছর ভালবাসতে না দাও ওর কি অবস্থা হবে টা জানো?
দীপা: হা আমি জানি.
তমাল: আমার অবস্থাটা এবার বোঝো দীপা. তুমি কাল আমায় কথা দিয়েছিলে আমার সব কথা তুমি বুঝবে. তাহলে কেন আমার মনের ইচ্ছেটা বুঝতে পারছনা.
তমাল আর কিছু বললনা, টানা দীপার দিকেই তাকিয়ে থাকলো. দীপা ওর কথাটা বুঝতে পেরেছে. দীপা মুখ তুলে ওর চোখে একবার দেখল আবার চোখ টা সরিয়ে নিল. দীপার নিরবতা তমালের কাছে একটা গ্রীন সিগনাল মনে হলো. তমাল দু হাত দিয়ে দীপার দু গাল আলতো করে ধরল. নিজের মুখটা আসতে আসতে দীপার সুন্দর মুখতার কাছে নিয়ে গেল. দীপার নাকের গরম নিশ্বাস তমালের মুখে পরছে. নারীর এই উষ্ণ নিশ্বাস কত বছর হয়ে গেল তমাল ভোগ করেনি. আর ওর পক্ষে নিজেকে কন্ট্রোল করা সম্ভব নয়. দীপার নিচের ঠোট টা দাত দিয়ে হালকা করে কামড়ে ধরে জিভ আর ঠোট দিয়ে দীপা কে কিস করতে শুরু করলো. কিস বললে ভুল বলা হবে স্মুচ বলাই ভালো. কিন্তু দীপা নিরুত্তাপ. পাথরের মূর্তির মত পরে থাকলো যেন কোনো সামান্য এক জীব কে দয়া করছে. তমাল এই অনুভুতি টা বোঝে. হয়ত ২ মিনিট ও হয়নি. তমাল নিজের মুখটা সরিয়ে নিল. দীপার কপালে মাথা ঠেকিয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে লাগলো. এভাবে নিজেকে কন্ট্রোল করতে ওর প্রায় ২-৩ মিনিট লেগে গেল.
তমাল: দীপা কাল তোমায় দিয়ে প্রতিগ্জ্ঞা করলাম বলে আমি মনের বিরুদ্ধে গিয়ে দয়া করলে.
দীপার মুখে কোনো উত্তর নেই.
তমাল ও বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো.
দীপা: এটা পাপ. আমি বিবাহিত. আমার স্বামী আমায় প্রচুর ভালবাসে. ও আমায় সমস্ত ভাবে খুব সুখ দেয়. আমার তো কোনো দরকার নেই এসবের. তুমি ভুল বুঝনা তমাল. আমি তোমায় প্রচুর পছন্দ করি, কিন্তু আমাদের পরিচয় বিয়ের পর তাই এটা ভুল.
তমাল: যাকে তুমি ভুল ভাবছ, দেখো একদিন সেটাই তোমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় হবে.
দীপা কোনো উত্তর দিলনা.
তমাল: তুমি নিজের অসুবিধা বা না পাওয়া গুলোকে বুঝতেই চাওনা তাই তুমি আমায় ফিরিয়ে দিলে. কিন্তু দীপা দেখো তোমায় আমাকে দরকার হবেই. তমালের মধ্যে অনেক কিছু নেই যা সমু দিতে পারে আবার সমুর মধ্যে এমন অনেক কিছুই নেই যা তমাল দিতে পারে. কারুর একার সাথে তুমি সুখী হবেনা.
দীপা কোনো উত্তর দিলনা.
তমাল: আমি সমুর ই সরীরের অংশ তাই জানি ওর কি দুর্বলতা. ওর শরীর ওর দুর্বলতা আর ওর মন ওর শক্তি. যে পরিমান আনন্দ তুমি পাও টা ওর মন থেকে. ও প্রতিদিন রাতে কিছু একটা কল্পনা করে. কখনো জঙ্গলে কখনো বা রাজবাড়িতে. যেদিন ও কল্পনা করতে পারবেনা সেদিন তুমি বিছানায় ছটপট করবে আর আমার ই কথা মনে আসবে. মনে রেখো আজ অবধি ও একবার ভালবাসার সময় তোমায় একটাও কথা বলতে দেয়নি. কিন্তু এভাবে ঠিক কতদিন. কতদিন তুমি পারবে. এক না একদিন ওর অক্ষমতা প্রকাশ পাবে. তখন কি করবে?
দীপা অবাক হয়ে কিছুটা ভয় পেয়েই ওর দিকে তাকিয়ে থাকলো. কথা গুলো তমাল সব ই সত্যি বলল কিন্তু দীপা কখনো এভাবে ভাবেনি. নাহ সমু এরকম কখনো করবেনা এত ভালবাসে ও সমু কে. সমু বুঝবেই ওর যন্ত্রনাটা.
তমাল: আমার একটা অনুরোধ রেখো. যেদিন বুঝবে দয়া নয় সত্যি ই আমায় প্রয়োজন সেদিন ই অনলাইন এ এস. তার আগে নয়.
দীপার চোখ দুটো ছল ছল করতে লাগলো. তমাল টা বুঝলো.
তমাল: (দীপার দু হাত ধরে) আমি আজ যাই করে থাকি আমায় বিশ্বাস টা কর. আর কোনদিন ভুল বুঝনা. যদি আজকের পর ও কোনদিন দেখা না হয় তাও ভুল বুঝনা. আমার চোখে তোমার চেয়ে ভালো কেউ হয়না.
ওরা পার্ক থেকে বেরিয়ে গেল. প্রথমে কুরুভিল্লার গাড়িতে দীপা উঠে চলে গেল. তারপর অন্য একটা গাড়ি দেকে তমাল উঠলো. এতক্ষণে আমিও হালুসিনেসন থেকে বেরিয়ে এসেছি. জানি বাড়ি ফিরলে কি হবে.
সকালে যখন ঘুম থেকে উঠলাম দেখি আমার মাথাটা দীপার দুটো দুধের মাঝে, দীপার শরীর টা আমার শরীরে জড়িয়ে রয়েছে. ওই রাজকীয় সাদা সারি টা নিচে পরে রয়েছে. আমি আসতে আসতে উঠে বসলাম. দীপাও জেগে উঠলো. নিচে নেমে সারি টা শরীরে জড়িয়ে আমায় ভিশন জোরে জড়িয়ে ধরল.
দীপা: ওহহ সমু রাতে তুমি কি এত ভাব বলত. আমার দারুন দারুন লাগে যখন তুমি পাগলের মত করে আমায় ভালোবাসো. মনে হয় আমার জন্ম সার্থক. কিন্তু আমায় কিছুই বলতে দাও না. সোনা আমার তো তোমার সম্বন্ধে কিছু বলতে ইচ্ছে হয়.
আমি: (মনে মনে ভাবলাম কত কষ্ট করে যে এই কল্পনা গুলো করি টা আমি ই জানি, মাঝে কথা বলে সব কিছুতে জল ঢালতে আমি দেবনা)
আমি রেডি হয়ে অফিস এ বেরিয়ে গেলাম, খুব তারাতারি আমায় তমাল হতে হবে. আজ বিশাল কাজ. অফিস এ সব কাজ শেষ করতে প্রায় ৩ ঘন্টা লেগে গেল. আমি জানি এতে ভালই হলো, দীপাও ভাববার যথেষ্ট সময় পেল. আমি জানি দীপা অনলাইন এ আমার জন্য বহুক্ষণ অপেক্ষা করছে. আমি অনলাইন হতে হতে প্রায় ১:৩০ হয়ে গেল. হা দীপা অনলাইন. আজ প্রথম মেসেজ টা আমি ই পাঠাব.
তমাল: কি দীপা কিছু ভাবলে আমার প্রশ্নটার বাপরে?
দীপা: তমাল রাতে তো সময় পাইনি তবে এখন অনেক ভাবলাম. তমাল আমি কিছুতেই সমু ছাড়া কল্পনা করতে পারিনা কিছু. তাই তোমার প্রশ্নের উত্তর টা মাথায় এলোনা.
তমাল: (কিছুটা হতাশ ই হয়ে) আচ্ছা দীপা এরকম ভাব, সমু যে যে কাজ গুলো করে.. যেমন তোমার কেয়ার করে, তোমায় ভালবাসে, তোমায় নিয়ে ভাবে. এর মধ্যে যদি কোনো একটা ও করতে না পারে কোনো কারণে অক্ষম হয়ে যায় তাহলে কি হবে. ধর তোমায় যদি ও ভালো না বসে আর তখন?
দীপা: ও আমায় খুব ভালবাসে এরকম কখনই হবেনা.
তমাল: ঠিক আছে মন থেকে ভালোবাসলো কিন্তু ধর ওর শরীর ভালবাসার অক্ষম হয়ে গেল তাহলে. (কথাটা বলে আমার খুব ভয় লাগলো)
দীপা: আমি জানিনা কি হবে.
তমাল: এটা তো সত্যি যে খুব খারাপ লাগবে, পুরনো মোমেন্ট গুলো মিস করবে তুমি. যতদিন যাবে মানসিক রুগী হয়ে যাবে.
দীপা: হা এটা খুব সত্যি.
তমাল: দীপা তাহলে আমার অবস্থাটা একবার তুমি ভেবে দেখো. আমার কি হয় মনের অবস্থা. আমার শরীরে সবসময় একটা ক্ষিদে থাকে যা কিছুতেই নেভেনা. আমি প্রতি মুহুর্তে যন্ত্রণা ভোগ করি দীপা. আমার কষ্ট কেউ বোঝেনা. আমি শুধু অন্যের জন্য সারাজীবন করে গেলাম. আমায় কেউ কিছু দিলনা.
দীপা: এই তমাল এরকম বলনা. আমার মন খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে.
আমি অনেকক্ষণ উত্তর দিলামনা.
দীপা: এই তমাল কি হয়েছে?
দীপা: এই লক্ষিটি কি হয়েছে?
তমাল: দীপা কাল আমরা যে পার্ক এ দেখা করেছিলাম তুমি সেখানে আসো. আমি এক্ষুনি তোমায় দেখতে চাই. আমার শরীরে আগুন জলছে. আমি কুরুভিল্লা কে পাঠাচ্ছি. তুমি আসবে কিন্তু. আমি উঠলাম.
আমি লগ আউট করে দিলাম. অফিস এ এক সেট কালকের ড্রেস টা এনেছিলাম. ওটা চেঞ্জ করে আমি আগে একটা ট্যাক্সি করে বেরোলাম. তারপর কুরুভিল্লা কে ফোন এ বললাম বাড়ি থেকে দীপা কে নিয়ে আসতে.
আমি পার্ক এ পৌছে গেলাম ৪০ মিনিট এর মধ্যেই. আজ এখন পার্ক টা খুব শান্ত. হয়ত দুপুর বলে. মতে ২ তো প্রেমিক প্রেমিকা বসে আছে তাও অনেক দুরে দুরে. আমি গাড়িতে আসতে আসতে একটা কথ অনেকক্ষণ ধরে ভাবছিলাম. আমি যদি তমাল কে হালুসিনেসন করতে পারি তাহলে খুব ভালো হয়. দীপার কাছে এটাই বাস্তব মনে হচ্ছে. কিন্তু যেহেতু আমি আগে থেকে প্লান করে চলেছি তাই আমি ঠিক সেভাবে এনজয় করতে পারছিনা. ঠিক যেভাবে জ্যোতি বা দাদা আমার হালুসিনেসন এ আসে, তমাল কেও ঠিক অভাবেই আমায় আনতে হবে. আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম আমি দুরে কথাও লুকিয়ে আছি. আর আমার ই মত দেখতে আরেকজন যার নাম তমাল সে পার্ক এ বসে আমার সুন্দরী বউ এর জন্য অপেক্ষা করছে. তবে এক্ষেত্রে আমি কোনো কল্পনা করবনা শুধু যা হচ্ছে তাই ভাবব. প্রায় আধ ঘন্টা পর দীপা পার্ক এ ঢুকলো. তমাল মাথা নিচু করে বিমর্ষ হয়ে বসে আছে.
দীপা: এই তমাল কি পাগলামি শুরু করেছ?
তমাল: বাহ আজ তোমার এটাকে পাগলামি মনে হলো বলো.
দীপা: সরি বাবা. আমি তোমায় কষ্ট দিতে চাইনি.
তমাল: আমায় তুমি বোঝনা দীপা.
দীপা: তুমি কষ্ট পেয়োনা তমাল. আমার খুব মন খারাপ করছে. তুমি কি চাও আমি মন খারাপ করি.
তমাল: হা সারাজীবন আমি শুধু অন্যের কষ্ট তাই দেখে যাই, নিজের বলে কিছু থাকলোনা. আমার ও বাচতে ইচ্ছে করে দীপা. প্রতিদিন তুমি যেমন বিছানায় সমুর অপেক্ষায় থাক আমিও থাকি কোনো অচেনা কারুর অপেক্ষায়. একাকিত্ব এর একটা লিমিট আছে দীপা. আমি এভাবে বাচতে পারবনা.
দীপা: এরকম করনা তমাল, নিজেকে প্লিজ একটু কন্ট্রোল কর. তোমার ওপর অনেক দায়িত্ব.
তমাল: আমি আর এগুলো সামলাতে পারছিনা. আমি তাই সব ছেড়ে বার বার তোমার কাছে চলে আসছি. আমি আর পারছিনা দীপা.
দীপা: হা তমাল যখন ইচ্ছে হবে তখন ই তুমি আমার কাছে এসে যেও. আমি তোমার জন্য সব করতে পারি কাল তোমায় কথা দিলাম না আমি.
তমাল: দীপা আমার কথাটা বোঝো. বাবা মার যদি দুজন সন্তান থাকে তাহলে ওরা দুজন ই সমান ভালবাসা পায়. আমার ক্ষেত্রে সেটা হচ্ছেনা দীপা.
দীপা: আমি বুঝলামনা তমাল. প্লিজ আমায় বুঝিয়ে বলো.
তমাল: আমি সমু কে হিংসা করি. তুমি ওকে যা দাও টা আমায় দাওনা. অথচ আমরা দুজনেই তোমায় সমান ভাবে কেয়ার করি. সমান ভাবে তোমার কথা চিন্তা করি.
দীপা: ও আমার স্বামী তমাল.
তমাল: আর আমি? আমি কে?
দীপা চুপ করে থাকলো.
তমাল: আমার ইচ্ছে গুলো আছে দীপা. আমার অন্যকে ভালবাসতে ইচ্ছে হয়. আমিও মানুষ.
দীপা: আমি কি তোমায় কষ্ট দিয়েছি? আমি কি তোমায় কখনো অবহেলা করেছি তমাল? আমি তো আজ তোমার এক কোথায় বেরিয়ে চলে এসেছি.
তমাল: দীপা আমি শান্ত হয়েছি. (দীপার দু হাত ধরে). প্লিজ একটু বোঝো. তুমি যদি সমুকে টানা কয়েক বছর ভালবাসতে না দাও ওর কি অবস্থা হবে টা জানো?
দীপা: হা আমি জানি.
তমাল: আমার অবস্থাটা এবার বোঝো দীপা. তুমি কাল আমায় কথা দিয়েছিলে আমার সব কথা তুমি বুঝবে. তাহলে কেন আমার মনের ইচ্ছেটা বুঝতে পারছনা.
তমাল আর কিছু বললনা, টানা দীপার দিকেই তাকিয়ে থাকলো. দীপা ওর কথাটা বুঝতে পেরেছে. দীপা মুখ তুলে ওর চোখে একবার দেখল আবার চোখ টা সরিয়ে নিল. দীপার নিরবতা তমালের কাছে একটা গ্রীন সিগনাল মনে হলো. তমাল দু হাত দিয়ে দীপার দু গাল আলতো করে ধরল. নিজের মুখটা আসতে আসতে দীপার সুন্দর মুখতার কাছে নিয়ে গেল. দীপার নাকের গরম নিশ্বাস তমালের মুখে পরছে. নারীর এই উষ্ণ নিশ্বাস কত বছর হয়ে গেল তমাল ভোগ করেনি. আর ওর পক্ষে নিজেকে কন্ট্রোল করা সম্ভব নয়. দীপার নিচের ঠোট টা দাত দিয়ে হালকা করে কামড়ে ধরে জিভ আর ঠোট দিয়ে দীপা কে কিস করতে শুরু করলো. কিস বললে ভুল বলা হবে স্মুচ বলাই ভালো. কিন্তু দীপা নিরুত্তাপ. পাথরের মূর্তির মত পরে থাকলো যেন কোনো সামান্য এক জীব কে দয়া করছে. তমাল এই অনুভুতি টা বোঝে. হয়ত ২ মিনিট ও হয়নি. তমাল নিজের মুখটা সরিয়ে নিল. দীপার কপালে মাথা ঠেকিয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে লাগলো. এভাবে নিজেকে কন্ট্রোল করতে ওর প্রায় ২-৩ মিনিট লেগে গেল.
তমাল: দীপা কাল তোমায় দিয়ে প্রতিগ্জ্ঞা করলাম বলে আমি মনের বিরুদ্ধে গিয়ে দয়া করলে.
দীপার মুখে কোনো উত্তর নেই.
তমাল ও বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো.
দীপা: এটা পাপ. আমি বিবাহিত. আমার স্বামী আমায় প্রচুর ভালবাসে. ও আমায় সমস্ত ভাবে খুব সুখ দেয়. আমার তো কোনো দরকার নেই এসবের. তুমি ভুল বুঝনা তমাল. আমি তোমায় প্রচুর পছন্দ করি, কিন্তু আমাদের পরিচয় বিয়ের পর তাই এটা ভুল.
তমাল: যাকে তুমি ভুল ভাবছ, দেখো একদিন সেটাই তোমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় হবে.
দীপা কোনো উত্তর দিলনা.
তমাল: তুমি নিজের অসুবিধা বা না পাওয়া গুলোকে বুঝতেই চাওনা তাই তুমি আমায় ফিরিয়ে দিলে. কিন্তু দীপা দেখো তোমায় আমাকে দরকার হবেই. তমালের মধ্যে অনেক কিছু নেই যা সমু দিতে পারে আবার সমুর মধ্যে এমন অনেক কিছুই নেই যা তমাল দিতে পারে. কারুর একার সাথে তুমি সুখী হবেনা.
দীপা কোনো উত্তর দিলনা.
তমাল: আমি সমুর ই সরীরের অংশ তাই জানি ওর কি দুর্বলতা. ওর শরীর ওর দুর্বলতা আর ওর মন ওর শক্তি. যে পরিমান আনন্দ তুমি পাও টা ওর মন থেকে. ও প্রতিদিন রাতে কিছু একটা কল্পনা করে. কখনো জঙ্গলে কখনো বা রাজবাড়িতে. যেদিন ও কল্পনা করতে পারবেনা সেদিন তুমি বিছানায় ছটপট করবে আর আমার ই কথা মনে আসবে. মনে রেখো আজ অবধি ও একবার ভালবাসার সময় তোমায় একটাও কথা বলতে দেয়নি. কিন্তু এভাবে ঠিক কতদিন. কতদিন তুমি পারবে. এক না একদিন ওর অক্ষমতা প্রকাশ পাবে. তখন কি করবে?
দীপা অবাক হয়ে কিছুটা ভয় পেয়েই ওর দিকে তাকিয়ে থাকলো. কথা গুলো তমাল সব ই সত্যি বলল কিন্তু দীপা কখনো এভাবে ভাবেনি. নাহ সমু এরকম কখনো করবেনা এত ভালবাসে ও সমু কে. সমু বুঝবেই ওর যন্ত্রনাটা.
তমাল: আমার একটা অনুরোধ রেখো. যেদিন বুঝবে দয়া নয় সত্যি ই আমায় প্রয়োজন সেদিন ই অনলাইন এ এস. তার আগে নয়.
দীপার চোখ দুটো ছল ছল করতে লাগলো. তমাল টা বুঝলো.
তমাল: (দীপার দু হাত ধরে) আমি আজ যাই করে থাকি আমায় বিশ্বাস টা কর. আর কোনদিন ভুল বুঝনা. যদি আজকের পর ও কোনদিন দেখা না হয় তাও ভুল বুঝনা. আমার চোখে তোমার চেয়ে ভালো কেউ হয়না.
ওরা পার্ক থেকে বেরিয়ে গেল. প্রথমে কুরুভিল্লার গাড়িতে দীপা উঠে চলে গেল. তারপর অন্য একটা গাড়ি দেকে তমাল উঠলো. এতক্ষণে আমিও হালুসিনেসন থেকে বেরিয়ে এসেছি. জানি বাড়ি ফিরলে কি হবে.