28-02-2019, 12:24 PM
পর্ব – ৪৭- হ্যালুসিনেসন রাজবাড়ীঃ
দীপা কুরুভিল্লার সাথে ট্যাক্সি ধরে চলে গেল. আমি সাথে ব্যাগ এ অন্য কিছু জামা পান্ট এনেছিলাম যা সাধারণত সমু পরে. একটু নির্জন একটা মাঠে গিয়ে ড্রেস টা চেঞ্জ করে নিয়ে ট্যাক্সি ধরলাম. যখন বাড়ি পৌছালাম দেখি দীপা ততক্ষণে ড্রেস চেঞ্জ করে নাইটি পরে নিয়ে খাতে বসে আছে. ঘড়িতে প্রায় রাত ১০ টা বাজে. দীপা নিচের দিকে তাকিয়ে হাসছে আর কিছু একটা ভাবছে. আমি পেছন থেকে ওকে বললাম
আমি: কথায় ছিলে দীপা. আমি বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছি.
দীপা: (খুব চমকে আমার দিকে প্রায় ২-৩ মিনিট তাকিয়ে থাকলো তারপর হেসে আমার দিকে ছুটতে এসে আমায় খুব সুন্দর ভাবে গলা টা জড়িয়ে একটা কিস করলো) জানো খুব খুব খুব ভালো এক বন্ধু এই চেন্নাই তেই থাকে. মাঝে মাঝে ওর সাথে দেখা করতে যাব আর তোমাকেও আমার জন্য এত তারাতারি অফিস থেকে চলে আসতে হবেনা.
ও রান্না ঘরে গেল রান্না করতে. আমি জানি আমায় একটা কোনো হালুসিনেসন নিয়ে আসতে হবে. দীপা আজ আমার আদর পাওয়ার জন্য ছটপট করবে. এই কদিনে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা গুলো আমি একে একে ভাবতে লাগলাম. কিছুক্ষণ বাদে দীপা খাবার নিয়ে এলো আমরা খেয়ে নিলাম. দীপা আমার দিকে মুচকি হেসে বাথরুম এ গেল. আমি জানি এই হাসির মানে কি.
গল্পের প্লট আমার তৈরী. বাস দিপাকে ওই সাদা সারি টা যেভাবে রাজবাড়িতে পরেছিল সেভাবে পড়তে রাজি করাতে হবে. দীপা খাতের কাছে এসে আমায় জড়িয়ে ধরে বলল
দীপা: কি গো আজ নতুন কোন কল্পনা করেছ?
আমি: দীপা প্লিজ ওই সাদা সারি টা কাল কের মত করে পড়.
দীপা: মুখ টা গম্ভীর করে বসে থাকলো.
আমি: সোনা ওতে তোমায় দারুন লাগে, প্লিজ আমায় খুশি করার জন্য পড়. কোনো পুরনো কথা ভেবোনা প্লিজ.
দীপা: আমার দিকে তাকিয়ে হেসে আবার বাথরুম এ চলে গেল.
আমি আবার হালুসিনেসন এ চলে গেলাম.
রাজপ্রাসাদে আমি আর দীপা সুয়ে রয়েছি. সকালেই দেখেছিলাম পুজোর একটা আয়োজন হয়েছিল. নিশ্চয় এতক্ষণে পুজো স্টার্ট হয়ে গেছে. দীপা এখনো ঘুমাচ্ছে, কাল রাতে ওর ভালো ঘুম হয়নি. হয়ত নতুন জায়গা টা ভেবে বা হয়ত মান্ভেন্দের এর কথা ভেবে. আমি জানি মান্ভেন্দেরের সেতারের প্রতিটা তাল আর লয় দীপার মনে ফুলঝুরি ঝরাচ্ছিল. আমাদের পরিবারের কি বা সমর্থ. হয়ত নিজের রূপের কথা ভেবে ও আমাদের থেকে অনেক অনেক বেশি বিলাসিতা আশা করেছিল. ওর মনে একটা না পাওয়ার যন্ত্রণা আর খেদ রয়েই গিয়েছিল. এখানে এসে রাজমাতার রাজকীয় আতিথেয়তা ওকে বার বার এই প্রশ্নই করে যায় দীপা তুমি কি সত্যি ই রাজ রানী হওয়ার যোগ্য নয়. এই রূপ এই লাস্যময়তা এত কোনো রাজকুমার কে সমর্পণ করার ই জন্য. কাল রাতে যখন মান্ভেন্দের এর চোখ দীপার শরীরের প্রতিটি অংশর সাথে লুকোচুরি খেলছিল আমি জানি তখন ও মনে মনে বলছিল সেই শরীর ই সার্থক যা পুরুষ মনে আগুন জালাতে পারে. যাই হোক আমি ভাবলাম একবার দেখে আসি, পুজো কতদূর হলো. ঘড়িতে তখন বাজে বিকেল ৫ টা. দরজা খুলে বেরোতেই দেখি বাইরে দাড়িয়ে শক্তি, হাতে বিশাল এক তরোয়াল. আমার দিকে তাকিয়ে বলল
শক্তি: কোথায় যাচ্ছেন?
আমি: যাই একটু বারান্দা টায় ঘুরে আসি.
শক্তি: আজ অমাবস্সার রাত. আজ রাজমহলে পুজো. বহিরাগতদের সেই পুজো দর্শন করার কোনো অধিকার নেই. আমাকেও আদেশ দেওয়া হয়নি আপনাকে অনুমতি দেওয়ার.
আমি: আমরা কখন বেরোতে পারব?
শক্তি: রাজমাতার হুকুম আমার কাছে আসলেই. আপনি ঘরে যান ওখানেই আপনার আমোদ প্রমোদের ব্যবস্থা করা হবে.
আমি ঘরে ঢুকে গেলাম. দীপা ততক্ষণে উঠে বসেছে. আমায় দেখে বলল
দীপা: কি গো তোমায় কি বাইরে যেতে দিলনা?
আমি: না, বলছে রাজমাতা বললে তবে বাইরে যাব.
আমরা ওখানেই বসে অল্প বিস্তর কথাবার্তা বলতে থাকলাম. ঠিক ৫:৩০ নাগাদ দুই দাসী ভেতরে এলো. হাতে সেই কালকের ট্রে টা. তাতে পরিপাটি করে সাজানো আছে প্রায় ১০ টা গ্লাস আলাদা আলাদা সুরা. ওরা আমাকে ওই ট্রে টা দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল. আমি ওটাকে দুরে সরিয়ে রাখলাম. কিছুক্ষণ পর ঘরে ঢুকলো মান্ভেন্দের, ওকে তো দেখে চেনাই যাচ্ছেনা. গাল ভর্তি দাড়ি, মাথার ঝাকরা চুল উধাও. তার বদলে খুব নিপুন ভাবে কাটা নায়কসুলভ চেহারা. কালকের ওই আলখাল্লা তাও নেই তার বদলে কুর্তা পাজামা, ঠিক নবাব দের মত. দীপা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো ওর দিকে. এই কি সে যে কাল ওর কোলে সেটার রেখে একের পর এক রাগ তুলে দীপার মন তাকে পাগল করে দিয়েছিল. দীপার চোখমুখ দেখেই মনে হচ্ছে যে ও রাজকুমারের রূপে মুগ্ধ. মান্ভেন্দের আমায় বলল
মান্ভেন্দের: আপনার কোনো অসুবিধা হয়নি তো?
আমি: না না রাজবাড়ির আপ্পায়নে আমি একান্তই বিগলিত.
মান্ভেন্দের: (এক ঝলক দীপার দিকে তাকিয়ে) এরকম ভাবে বলবেননা. আপনি যে উপহার আমায় ও রাজবাড়ি কে দিতে চলেছেন তাতে আমরা চিরক্রিতগ্গ্য.
উনি বেরিয়ে চলে গেলেন. আমি ভাবতে লাগলাম, উপহার টা কি? আমার মনে একটা অজানা ভয় কেন জানিনা ঘিরে ধরেছিল. আমি শুধু ভেবে চললাম এই কথার অর্থ কি? এদিকে দীপা আনমনে নিচের দিকে তাকিয়ে হেসে চলেছে. আমি জানি ও রাজকুমারের কথায় চিন্তা করছে.
আমি দিপাকে বিরক্ত করলামনা. আমরা দুজনেই ঘরে নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকলাম. এভাবে যে কতক্ষণ সময় কেটে গেছে খেয়াল করিনি. ঘড়িতে তখন প্রায় ৮:৩০ টা বাজে. ঘরে রাজমাতা প্রবেশ করলেন, উনি বললেন
রানিমা: তোমাদের এতক্ষণ এখানে রাখার জন্য আমায় মার্জনা কর. আমরা রাজবাড়ির প্রতিটা রীতি কে আজ মান্য করে চলি. আজ অমাবস্সার পূজা. তাই রাজকুমারী কে আমি নিজ হাতে স্নান করিয়ে সাজিয়ে দেব. আজকের দিনে আমাদের ঘরে রাজকুমারীদের পূজা করা হয়. তাদের সন্তুষ্টি দেওয়াই আজকের পুজোর লক্ষণ. আজ ওকে রাজবধুর মত করে সাজাব. সোনার প্লেট এ আহার করাবো. রাজমহলের সমস্ত দাসী আজ রাজকুমারীর সেবায় নিমগ্ন থাকবে.
আমি কিছুই বুঝলামনা, এই হরপ্পা সভ্ভতার কথাবার্তা সব ই আমার মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়. রাজমাতা দীপার দিকে তাকিয়ে বললেন
রানিমা: রাজকুমারী দীপা তুমি আমার সাথে এস, আজ আমরা সবাই তোমার দাসী.
দীপা মিষ্টি করে হাসতে হাসতে ওদের সাথে বেরিয়ে গেল. অনেকক্ষণ হয়ে গেল দীপা এলোনা. আমার চোখ এবার পাশে রাখা মহামূল্যবান সুরার দিকে পড়ল. আমি চুমুক দিয়ে আসতে আসতে খেতে লাগলাম সুরা. এমন সময় ঘরের মধ্যে ঢুকলো শক্তি,
শক্তি: তুমি দ্রুত পান করা শেষ কর. তোমার আহারের ব্যবস্থা করেছি. আহার হয়ে গেলে এঘর সাজাতে হবে, রাজমাতার আদেশ. রাজকুমারী পূজা স্থানেই আহার গ্রহন করছেন.
আমি তারাতারি এই গ্লাস টা শেষ করে খেতে বসলাম. খাওয়া হয়ে যেতে হাত ধুয়ে ঘড়ির দিকে তাকায় দেখি ১০:৩০ টা বাজে. আমি ঘর থেকে বেরিয়ে বাইরে দাড়ালাম. তারপর হাটতে হাটতে একটু পুকুর পরের দিকে গেলাম. ওখানে দেখা যাচ্ছে সারা গায়ে অলংকার পরে, সাদা সারি পরিহিতা রাজকুমারী দীপা. সোনা রূপ মনি মুক্ত দিয়ে ওর পুরো শরীর টা ঢাকা. আমি আবার ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলাম. সারা ঘর জুড়ে রজনীগন্ধার সুগন্ধ. এক বিশাল বিছানা পুরো ঘর টা জুড়ে মেঝেতে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে. আসতে আসতে বহু মূল্যবান কর্পুরের গন্ধ আর হাজার অলংকারের ঝন ঝন শব্দ আর নুপুরের মিষ্টি আওয়াজ আমার কানে আসতে লাগলো. আমি বিছানার এক কোনে চুপ করে বসে আছি. ঘরে ঢুকলো রাজকুমারী দীপা আর তার পেছনে ৫ জন দাসী ও সবার পেছনে রাজমাতা. রাজমাতা দাসী দের বলে উঠলেন
রানিমা: দাসী রা তোমরা যে যার আসন গ্রহণ কর.
দুজন দাসী গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে পা ছড়িয়ে পাশাপাশি বসে পড়ল. ওদের দুজনের শরীর টা জোড়া লেগে যাওয়ার ফলে দুজনের কোল একসাথে একটা বালিশের মত দেখালো. এরপর অন্য দুজন ওদের থেকে সামান্য একটু দুরে গিয়ে পাশাপাশি সুয়ে পড়ল. রাজমাতা বলে উঠলেন
রানিমা: রাজকুমারী আজ তোমার সৌন্দর্য আর দেহের পূজা. মা দয়া করে ওদের কোলে বসে ওই দাসী দের তোমাকে অর্চনা করতে দাও.
দীপা আসতে আসতে গিয়ে ওদের কোলের ওপর বসে পড়ল. এরপর আরেকজন দাসী ওদের মুখোমুখি এসে বসলো.
রানিমা: দাসীরা হাতে মাত্র ১ ঘন্টা সময়, তারপর ই লগ্ন এসে যাবে. তোমরা পূজা শুরু কর.
দীপা কুরুভিল্লার সাথে ট্যাক্সি ধরে চলে গেল. আমি সাথে ব্যাগ এ অন্য কিছু জামা পান্ট এনেছিলাম যা সাধারণত সমু পরে. একটু নির্জন একটা মাঠে গিয়ে ড্রেস টা চেঞ্জ করে নিয়ে ট্যাক্সি ধরলাম. যখন বাড়ি পৌছালাম দেখি দীপা ততক্ষণে ড্রেস চেঞ্জ করে নাইটি পরে নিয়ে খাতে বসে আছে. ঘড়িতে প্রায় রাত ১০ টা বাজে. দীপা নিচের দিকে তাকিয়ে হাসছে আর কিছু একটা ভাবছে. আমি পেছন থেকে ওকে বললাম
আমি: কথায় ছিলে দীপা. আমি বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছি.
দীপা: (খুব চমকে আমার দিকে প্রায় ২-৩ মিনিট তাকিয়ে থাকলো তারপর হেসে আমার দিকে ছুটতে এসে আমায় খুব সুন্দর ভাবে গলা টা জড়িয়ে একটা কিস করলো) জানো খুব খুব খুব ভালো এক বন্ধু এই চেন্নাই তেই থাকে. মাঝে মাঝে ওর সাথে দেখা করতে যাব আর তোমাকেও আমার জন্য এত তারাতারি অফিস থেকে চলে আসতে হবেনা.
ও রান্না ঘরে গেল রান্না করতে. আমি জানি আমায় একটা কোনো হালুসিনেসন নিয়ে আসতে হবে. দীপা আজ আমার আদর পাওয়ার জন্য ছটপট করবে. এই কদিনে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা গুলো আমি একে একে ভাবতে লাগলাম. কিছুক্ষণ বাদে দীপা খাবার নিয়ে এলো আমরা খেয়ে নিলাম. দীপা আমার দিকে মুচকি হেসে বাথরুম এ গেল. আমি জানি এই হাসির মানে কি.
গল্পের প্লট আমার তৈরী. বাস দিপাকে ওই সাদা সারি টা যেভাবে রাজবাড়িতে পরেছিল সেভাবে পড়তে রাজি করাতে হবে. দীপা খাতের কাছে এসে আমায় জড়িয়ে ধরে বলল
দীপা: কি গো আজ নতুন কোন কল্পনা করেছ?
আমি: দীপা প্লিজ ওই সাদা সারি টা কাল কের মত করে পড়.
দীপা: মুখ টা গম্ভীর করে বসে থাকলো.
আমি: সোনা ওতে তোমায় দারুন লাগে, প্লিজ আমায় খুশি করার জন্য পড়. কোনো পুরনো কথা ভেবোনা প্লিজ.
দীপা: আমার দিকে তাকিয়ে হেসে আবার বাথরুম এ চলে গেল.
আমি আবার হালুসিনেসন এ চলে গেলাম.
রাজপ্রাসাদে আমি আর দীপা সুয়ে রয়েছি. সকালেই দেখেছিলাম পুজোর একটা আয়োজন হয়েছিল. নিশ্চয় এতক্ষণে পুজো স্টার্ট হয়ে গেছে. দীপা এখনো ঘুমাচ্ছে, কাল রাতে ওর ভালো ঘুম হয়নি. হয়ত নতুন জায়গা টা ভেবে বা হয়ত মান্ভেন্দের এর কথা ভেবে. আমি জানি মান্ভেন্দেরের সেতারের প্রতিটা তাল আর লয় দীপার মনে ফুলঝুরি ঝরাচ্ছিল. আমাদের পরিবারের কি বা সমর্থ. হয়ত নিজের রূপের কথা ভেবে ও আমাদের থেকে অনেক অনেক বেশি বিলাসিতা আশা করেছিল. ওর মনে একটা না পাওয়ার যন্ত্রণা আর খেদ রয়েই গিয়েছিল. এখানে এসে রাজমাতার রাজকীয় আতিথেয়তা ওকে বার বার এই প্রশ্নই করে যায় দীপা তুমি কি সত্যি ই রাজ রানী হওয়ার যোগ্য নয়. এই রূপ এই লাস্যময়তা এত কোনো রাজকুমার কে সমর্পণ করার ই জন্য. কাল রাতে যখন মান্ভেন্দের এর চোখ দীপার শরীরের প্রতিটি অংশর সাথে লুকোচুরি খেলছিল আমি জানি তখন ও মনে মনে বলছিল সেই শরীর ই সার্থক যা পুরুষ মনে আগুন জালাতে পারে. যাই হোক আমি ভাবলাম একবার দেখে আসি, পুজো কতদূর হলো. ঘড়িতে তখন বাজে বিকেল ৫ টা. দরজা খুলে বেরোতেই দেখি বাইরে দাড়িয়ে শক্তি, হাতে বিশাল এক তরোয়াল. আমার দিকে তাকিয়ে বলল
শক্তি: কোথায় যাচ্ছেন?
আমি: যাই একটু বারান্দা টায় ঘুরে আসি.
শক্তি: আজ অমাবস্সার রাত. আজ রাজমহলে পুজো. বহিরাগতদের সেই পুজো দর্শন করার কোনো অধিকার নেই. আমাকেও আদেশ দেওয়া হয়নি আপনাকে অনুমতি দেওয়ার.
আমি: আমরা কখন বেরোতে পারব?
শক্তি: রাজমাতার হুকুম আমার কাছে আসলেই. আপনি ঘরে যান ওখানেই আপনার আমোদ প্রমোদের ব্যবস্থা করা হবে.
আমি ঘরে ঢুকে গেলাম. দীপা ততক্ষণে উঠে বসেছে. আমায় দেখে বলল
দীপা: কি গো তোমায় কি বাইরে যেতে দিলনা?
আমি: না, বলছে রাজমাতা বললে তবে বাইরে যাব.
আমরা ওখানেই বসে অল্প বিস্তর কথাবার্তা বলতে থাকলাম. ঠিক ৫:৩০ নাগাদ দুই দাসী ভেতরে এলো. হাতে সেই কালকের ট্রে টা. তাতে পরিপাটি করে সাজানো আছে প্রায় ১০ টা গ্লাস আলাদা আলাদা সুরা. ওরা আমাকে ওই ট্রে টা দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল. আমি ওটাকে দুরে সরিয়ে রাখলাম. কিছুক্ষণ পর ঘরে ঢুকলো মান্ভেন্দের, ওকে তো দেখে চেনাই যাচ্ছেনা. গাল ভর্তি দাড়ি, মাথার ঝাকরা চুল উধাও. তার বদলে খুব নিপুন ভাবে কাটা নায়কসুলভ চেহারা. কালকের ওই আলখাল্লা তাও নেই তার বদলে কুর্তা পাজামা, ঠিক নবাব দের মত. দীপা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো ওর দিকে. এই কি সে যে কাল ওর কোলে সেটার রেখে একের পর এক রাগ তুলে দীপার মন তাকে পাগল করে দিয়েছিল. দীপার চোখমুখ দেখেই মনে হচ্ছে যে ও রাজকুমারের রূপে মুগ্ধ. মান্ভেন্দের আমায় বলল
মান্ভেন্দের: আপনার কোনো অসুবিধা হয়নি তো?
আমি: না না রাজবাড়ির আপ্পায়নে আমি একান্তই বিগলিত.
মান্ভেন্দের: (এক ঝলক দীপার দিকে তাকিয়ে) এরকম ভাবে বলবেননা. আপনি যে উপহার আমায় ও রাজবাড়ি কে দিতে চলেছেন তাতে আমরা চিরক্রিতগ্গ্য.
উনি বেরিয়ে চলে গেলেন. আমি ভাবতে লাগলাম, উপহার টা কি? আমার মনে একটা অজানা ভয় কেন জানিনা ঘিরে ধরেছিল. আমি শুধু ভেবে চললাম এই কথার অর্থ কি? এদিকে দীপা আনমনে নিচের দিকে তাকিয়ে হেসে চলেছে. আমি জানি ও রাজকুমারের কথায় চিন্তা করছে.
আমি দিপাকে বিরক্ত করলামনা. আমরা দুজনেই ঘরে নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকলাম. এভাবে যে কতক্ষণ সময় কেটে গেছে খেয়াল করিনি. ঘড়িতে তখন প্রায় ৮:৩০ টা বাজে. ঘরে রাজমাতা প্রবেশ করলেন, উনি বললেন
রানিমা: তোমাদের এতক্ষণ এখানে রাখার জন্য আমায় মার্জনা কর. আমরা রাজবাড়ির প্রতিটা রীতি কে আজ মান্য করে চলি. আজ অমাবস্সার পূজা. তাই রাজকুমারী কে আমি নিজ হাতে স্নান করিয়ে সাজিয়ে দেব. আজকের দিনে আমাদের ঘরে রাজকুমারীদের পূজা করা হয়. তাদের সন্তুষ্টি দেওয়াই আজকের পুজোর লক্ষণ. আজ ওকে রাজবধুর মত করে সাজাব. সোনার প্লেট এ আহার করাবো. রাজমহলের সমস্ত দাসী আজ রাজকুমারীর সেবায় নিমগ্ন থাকবে.
আমি কিছুই বুঝলামনা, এই হরপ্পা সভ্ভতার কথাবার্তা সব ই আমার মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়. রাজমাতা দীপার দিকে তাকিয়ে বললেন
রানিমা: রাজকুমারী দীপা তুমি আমার সাথে এস, আজ আমরা সবাই তোমার দাসী.
দীপা মিষ্টি করে হাসতে হাসতে ওদের সাথে বেরিয়ে গেল. অনেকক্ষণ হয়ে গেল দীপা এলোনা. আমার চোখ এবার পাশে রাখা মহামূল্যবান সুরার দিকে পড়ল. আমি চুমুক দিয়ে আসতে আসতে খেতে লাগলাম সুরা. এমন সময় ঘরের মধ্যে ঢুকলো শক্তি,
শক্তি: তুমি দ্রুত পান করা শেষ কর. তোমার আহারের ব্যবস্থা করেছি. আহার হয়ে গেলে এঘর সাজাতে হবে, রাজমাতার আদেশ. রাজকুমারী পূজা স্থানেই আহার গ্রহন করছেন.
আমি তারাতারি এই গ্লাস টা শেষ করে খেতে বসলাম. খাওয়া হয়ে যেতে হাত ধুয়ে ঘড়ির দিকে তাকায় দেখি ১০:৩০ টা বাজে. আমি ঘর থেকে বেরিয়ে বাইরে দাড়ালাম. তারপর হাটতে হাটতে একটু পুকুর পরের দিকে গেলাম. ওখানে দেখা যাচ্ছে সারা গায়ে অলংকার পরে, সাদা সারি পরিহিতা রাজকুমারী দীপা. সোনা রূপ মনি মুক্ত দিয়ে ওর পুরো শরীর টা ঢাকা. আমি আবার ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলাম. সারা ঘর জুড়ে রজনীগন্ধার সুগন্ধ. এক বিশাল বিছানা পুরো ঘর টা জুড়ে মেঝেতে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে. আসতে আসতে বহু মূল্যবান কর্পুরের গন্ধ আর হাজার অলংকারের ঝন ঝন শব্দ আর নুপুরের মিষ্টি আওয়াজ আমার কানে আসতে লাগলো. আমি বিছানার এক কোনে চুপ করে বসে আছি. ঘরে ঢুকলো রাজকুমারী দীপা আর তার পেছনে ৫ জন দাসী ও সবার পেছনে রাজমাতা. রাজমাতা দাসী দের বলে উঠলেন
রানিমা: দাসী রা তোমরা যে যার আসন গ্রহণ কর.
দুজন দাসী গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে পা ছড়িয়ে পাশাপাশি বসে পড়ল. ওদের দুজনের শরীর টা জোড়া লেগে যাওয়ার ফলে দুজনের কোল একসাথে একটা বালিশের মত দেখালো. এরপর অন্য দুজন ওদের থেকে সামান্য একটু দুরে গিয়ে পাশাপাশি সুয়ে পড়ল. রাজমাতা বলে উঠলেন
রানিমা: রাজকুমারী আজ তোমার সৌন্দর্য আর দেহের পূজা. মা দয়া করে ওদের কোলে বসে ওই দাসী দের তোমাকে অর্চনা করতে দাও.
দীপা আসতে আসতে গিয়ে ওদের কোলের ওপর বসে পড়ল. এরপর আরেকজন দাসী ওদের মুখোমুখি এসে বসলো.
রানিমা: দাসীরা হাতে মাত্র ১ ঘন্টা সময়, তারপর ই লগ্ন এসে যাবে. তোমরা পূজা শুরু কর.