28-02-2019, 12:19 PM
পর্ব- ৪৬- টেলিপ্যাথিঃ
আমি: দীপা তুমি এত সহজে পারবেনা. যদিও তুমি খুব ভালই কল্পনা করতে পেরেছ. আমি একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসছি, আজ অফিস থেকে তারাতারি চলে এসেছি. তাই ইলেকট্রিক বিল তা জমা দিয়ে আসি. আমার আসতে দেরী হবে. তুমি ততক্ষণ মন দিয়ে ভাব.
দীপা: (চোখ তা বন্ধ করেই) হুমম.
আমি: দীপা আমায় তুমি বিশ্বাস করত?
দীপা: হা সমু করি. তাহলে একটাই কথা মনে রেখো যে তোমার খারাপ ভেবে আমি কিছুই করবনা.
আমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে অফিস এর দিকে গেলাম. আমি জানি এবার দীপা একবার অনলাইন হবেই. অফিস এ গিয়ে দ্রুত আমি তমালের একাউন্ট থেকে অনলাইন হলাম. হা সত্যি ই দীপা অনলাইন. দীপার মেসেজ এলো:
দীপা: কি করছ তমাল?
তমাল: তোমার কথায় ভাবছিলাম, বিকেলে আসছ তো চেন্নাই এ?
দীপার প্রায় ২-৩ মিনিট কোনো উত্তর নেই.
তমাল: কি চমকে গেলে?
দীপা: তুমি কে? কোথায় থাক? তুমি আমার কথা গুলো শুনতে কি করে পাও?
তমাল: দীপা সব বলব আমায় ভুল বুঝনা প্লিজ.
দীপা: ভুল বুঝিনি তমাল, কিন্তু আমায় বল সব. আমার অস্থির লাগছে.
তমাল: দীপা আমি টেলিপাথি করতে জানি. তুমি জানো টেলিপাথি কি?
দীপা: না. সেটা আবার কি?
তমাল: ইটা এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক বিদ্যা. আমি শিখেছিলাম খুব নাম করা এক বিজ্ঞানীর থেকে. তোমার সাথে কথা হচ্ছিলনা আমার খুব মন খারাপ লাগছিল. আমি সুধুই টেলিপাথি শিখেছিলাম কোনদিন করে দেখিনি. টেলিপাথি করে আমি যার সম্বন্ধে ভাবছি তার কাছে পৌছে যাওয়া যায়. প্রচন্ড মনোযোগ দরকার. একটু বাঘট ঘটলেই হয়না. আমি পরশু দুপুর থেকে চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু কিছুতেই পারছিলামনা. কাল সন্ধায় বেলা হঠাত পেরে গেলাম.
দীপা: আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা. প্লিজ একটু আমায় বুঝিয়ে বলবে?
তমাল: টেলিপাথি করে অন্যের মনের ওপর নিজের মনকে বসিয়ে দেওয়া যায়. অন্যের শরীরে নিজের মন স্থাপন করা যায়. ইটা সবসময় করা সম্ভব নয়. আমি এখন লন্ডনে. কিন্তু আরেকটু আগে আমার মনটা সমুর শরীরে ছিল. আমি তোমায় দেখতে পাচ্ছিলাম কথা বলতে পারছিলাম. সমু বেরিয়ে যাওয়ার আগে যে কথা গুলো বলল তা আসলে সমু নয় আমি বলেছি. সমু যখন বাড়ি ফিরবে ও সব ভুলে যাবে.
দীপা: তুমি কি সব বলছ তমাল. একী হয় নাকি. আমার মাথাটা ঝিম ঝিম করছে.
তমাল: বিশ্বাস হলনা তো. আচ্ছা এবার মিলিয়ে দেখো. তোমার ঠিক মাথার ওপরে বাদিকে দেওয়াল ঘড়ি রয়েছে. কাল রাতে ভুল বশত আচারের কৌটো টা নিচে পরে গেছিল, ওটা এখনো তুমি পরিষ্কার করনি. ওখানেই পরে আছে. কাল তুমি নিল রঙের সালোয়ার পরে প্লেন এ চরেছিলে. আজ এখন হলুদ রঙের একটা নাইটি পরে আছ. কি মিলল?
দীপা: (আমি জানি ও ঘাবড়ে গেছে) কি করে বলছ তুমি এগুলো?
তমাল: আমায় বিশ্বাস কর দীপা. আমি তোমার বন্ধু. আজ বিকেলে আমি আবার টেলিপাথি করব. তুমি আমার জন্য ঠিক ৬ টায় চেন্নাই স্টেশন এ দাড়াবে. এখন বাজে ৪:৩০. সমু বাড়ি ফিরবে ঠিক ৫:১০ এ. তুমি বাইরে থেকে লক করে জ্যোতি কে চাবি টা দিয়ে তারপর যেও. জ্যোতি কে বোলো তুমি মার্কেটিং করতে চেন্নাই যাচ্ছ. আমাকে আরো একবার দেখলে আর আমার সাথে কথা বললে তোমার সব ভ্রান্তি দূর হয়ে যাবে. এর থেকে বেশি সত্যি ই তোমায় বোঝাতে পারবনা.
দীপা: ঠিক আছে আমি যাব.
তমাল: আমি উঠি তাহলে. আমার অনেক কাজ এখন.
আমি জানি দীপা এখনো বাপার টা বিশ্বাস করেনি. আমার নিজের ওপর বিশ্বাস আছে, একবার শুধু ওকে পাই তাহলেই ওর ব্রেন ওয়াশ করে দেব. এতদূর অবধি মন্দ হয়নি. সব ঠিকঠাক ই হয়েছে. যাই হোক আমি সোজা এখান থেকেই চেন্নাই চলে যাব. রাস্তায় এসে উঠলাম, কিন্তু কোনো ট্যাক্সি নেই. প্রায় ১০ মিনিট হাটার পর একটা ট্যাক্সি এদিকে আসছিল, আমি ওটাতে চেপে বসলাম. সব ঠিক থাক চললে আমি ৫:৩০ তে চেন্নাই পৌছে যাব. পাশ দিয়ে দেখি আরেকটা ট্যাক্সি পাস করলো, আমি জানি ইটা কুরুভিল্লার. আমি মাথাটা নিচু করে নিলাম যাতে ও আমায় দেখতে না পায়. আমি জানি প্লান ঠিক থাক ই চলছে. প্রায় ৫:৩৫ এ স্টেশন এ পৌছালাম. পকেট থেকে একটা সুন্গ্লাস বার করে চোখে দিলাম. গায়ে সেই হলুদ টি শার্ট আর নিল জিন্স. হা এতে আমায় সত্যি ই কর্পোরেট কর্তার মতই লাগছে. ঠিক যতটা স্মার্ট নিজেকে দেখানো যায় ততটাই চেষ্টা করলাম. আমি দাড়িয়ে থাকলাম ওখানে জানি ১০ মিনিট এর মধ্যেই দীপা এসে যাবে.
হা দীপা সত্যি ই এলো. আমি যতটা সম্ভব চেষ্টা করলাম নিজেকে চিরাচরিত সমুর থেকে আলাদা দেখাতে. ওকে দেখা মাত্র সামনে গিয়ে হাত টা বাড়িয়ে দিলাম হ্যান্ডশেক করার জন্য. কুরুভিল্লা কে পকেট থেকে একটা ১০০ টাকার নোট দিলাম. কুরুভিল্লা বাকিটা দিতে গেল আমি বললাম বখশিশ রেখে দাও. ও খুব খুশি হয়ে চলে গেল. দীপা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো এক দৃষ্টিতে.
তমাল: কাম দীপা. এদিকে আস, একটা পার্ক আছে ওখানেই বসব আমরা. ইন্ডিয়া তে যা লোক রাস্তায় কথা বলাই দায়.
দীপা কিছু না বলে আমার সাথে সাথে হাটতে লাগলো. দীপা খুব ঘাবড়ে গেছে. বিশ্বাস ই করতে পারছেনা নিজের চোখকে.
তমাল: চেন্নাই এ একটা ফ্রেন্চ হোটেল আছে, আজ কিন্তু তোমায় ওখানের ডিশ টেস্ট করতে হবে. তুমি একদিন আমায় ভাত আর আলু ভাতে খাইয়েছ আজ আমি তোমায় আমার প্রিয় ফ্রেন্চ ডিশ খাওয়াব.
দীপা চোখ বড় বড় করে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো. আমরা পার্ক তার ভেতরে ঢুকে গেলাম. চার পাশে গাছের তলায় সব প্রেমিক প্রেমিকা রা বসে আছে. আমরা গিয়ে একটু নির্জনে একটা গাছের তলায় বসলাম.
তমাল: জানি দীপা তুমি সহজে বিশ্বাস করবেনা. প্লিজ বোঝো আমার শরীর টা এখন লন্ডনে আমার ফ্লাটে চোখ বন্ধ করে পরে আছে, আর মন টা এখানে চলে এসেছে. ইটা বাস্তবে হয়. তুমি আগেকার যুগের মুনিরিশি দের গল্প শোনো নি. একেই হয়ত তখন অন্তর্যামী বলা হত.
দীপা: আমার খুব অসুবিধা হচ্ছে মেনে নিতে. কিন্তু আমায় ভুল বুঝনা আমি সমু কে চিনি. জানি তুমি সমু নয় তুমি তমাল. আমি তোমাকে এরকম ই ভেবেছিলাম তমাল. কিন্তু আমায় একটু মানিয়ে নিতে সময় দাও প্লিজ.
তমাল: (একটু সস্তি পেয়ে) নিশ্চয়. তুমি আমার সাথে একটু গল্প কর, দেখবে আসতে আসতে সব ঠিক হয়ে যাবে. আচ্ছা বোলো রাজস্থান কেমন লাগলো?
দীপা: ধুস ঘুরতেই পারলামনা. পরলাম এক দোল বদমাস লোকের খপ্পরে. তোমায় অন্য একদিন বলব সে বাপরে. বিশাল ভাযন্কর এক বাপার. এখনো ভাবলে বুক টা কাপে. আমার ওই ঘটনা টা কাটিয়ে উঠতে আরো ২-৩ দিন লাগবে. তারপর তোমায় বলব এখন ভাবলে ভয় লাগছে.
তমাল: ঠিক আছে ছাড়ো. আচ্ছা দীপা তোমার শশুর বাড়ির বাপরে কিছু শুনিনি. বলবে একটু?
দীপা: আমাদের যৌথ পরিবার. ওর বাবারা ৩ ভাই. ওর নিজের কোনো ভাই বোন নেই ৪ জন জেথ্তুত আর খুড়তুত ভাই রয়েছে. আমি বাড়ির একমাত্র বউ. বড়দার বিয়ে হয়েছিল কিন্তু ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছিল. তাই বাড়িতে একমাত্র বউ আমি.
তমাল: সমু ছাড়া সবচেয়ে বেশি কে তোমায় ভালবাসে?
দীপা: জেঠিমা নিজের ছেলেদের চেয়ে ওকে আর আমায় বেশি ভালবাসেন. আমার না মাঝে মধ্যেই জেঠিমার জন্য খুব মন খারাপ করে. আমি রোজ জেঠিমার সাথে কথা বলি.
তমাল: বাড়ির সবাই কেমন?
দীপা: সবাই খুব ভালো. কিন্তু জেঠিমা একদম দেবীর মত.
তমাল: আর বাপের বাড়ি বিয়ের পর যাওয়া হয়নি না?
দীপা: হা জানি. বাবা মা দাদার সাথে প্রায় রোজ ই কথা হয়. ওরা খুব খুশি যেহেতু আমি খুশি. তুমি এবার তোমার কথা বোলো তমাল.
তমাল: আমি আর কি বলব দীপা. সারাক্ষণ কাজে বাস্ত থাকি. আর যখন ফ্রি হই তোমার সাথে কথা বলি. একটা কথা খুব সত্যি যে তোমায় পেয়ে আমি সব কষ্ট ভুলে গেছি. জানত আজ যখন স্টেশন এ অপেক্ষা করছিলাম মনে হচ্ছিল যে আমি কলেজ এ পরি, আর ডেটিং এ এসেছি.
দীপা: (খুব জোরে হেসে) তুমি পারো তমাল.
তমাল: (দীপার হাত টা আসতে করে ধরে) হা দীপা আমি খুব খুশি. তুমি খুব ভালো. জানত আমার আর কাউকে দেখে হিংসে হয়না. মন খুব ভালো থাকে. তুমি খুব ভালো.
দীপা: (আবার একটু হেসে) আমার এবার বিশ্বাস হয়েছে সব কিছু. কিন্তু তমাল এভাবে তুমি কি পারবে.
তমাল: (একটু নিচের দিকে তাকিয়ে) দীপা যখন মনটা আবার আমার শরীরে যাবে মাথাটা খুব ধরে যাবে. এভাবে রোজ সম্ভব নয়. ইন্টারনেট এ কথা বোলো. যখন তোমার বা আমার ইচ্ছে হবে আমি এসে যাব. এটাই মনে রেখো আমি তোমার জন্য সব করতে পারি, মরতেও পারি.
দীপা: (আমার মুখে হাত চাপা দিয়ে) এরকম আর কখনো বলবেনা. জানো সমুও এই কথাটা বলে, কিন্তু ও তো আমার স্বামী তাই এরকম বলে. তুমি কেন আমায় এরকম বলছ তমাল.
তমাল: দীপা আমার মনে খুব কষ্ট. (এবার ওর দু হাত ভালো করে ধরে) তুমি জানো আমার জীবনে কি মূল্যবান জিনিস টা নেই যা তোমার আর সমুর আছে. আমার জীবনে কোনো সঙ্গিনী নেই. তুমি আমায় কখনো কষ্ট দেবেনা দীপা. আমায় তুমি সঙ্গ দাও. আমার গা ছুয়ে কথা দিলে কিন্তু.
দীপা: হা আমি তোমার সাথেই আছি কিন্তু তুমি থাক অন্য জগতে, আমি ওখানে কোনো প্রবলেম ই তো সলভ করতে পারবনা.
তমাল: (খুব জোরে হেসে) জানত দীপা, সমু আর আমার মধ্যে একটা বিশাল পার্থক্য আছে. ও সারাজীবন রিসার্চ নিয়েই থাকবে তাই ওর বাস্তব জ্ঞান অনেক কম. আমি কাজ করি মানুষের মন নিয়ে আর একেই বিজনেস বলে. আমি খুব বাস্তব টা বুঝি আর মানুষ কে চিনি. আজ অবধি বিয়ের পর থেকে যা যা প্রবলেম হয়েছে আমি সাথে থাকলে সেটা হবেনা. কাল রাজস্থানে যাই হয়ে থাক আমি থাকলে অনেক আগেই টা বুঝে যেতাম. আসল অসুবিধা টা হচ্ছে তুমি আর সমু দুজনেই খুব সহজ সরল. তাই তোমরা এত প্রবলেম এ পড়. আমি খুব চালক দীপা.
দীপা: তুমি মোটেই চালক নয়. তুমি খুব বুঝদার এটাই বলতে পারো.
তমাল: আরেকটা বিশাল পার্থক্য আছে আমার আর সমুর. সমু খুব ভদ্র আর শান্ত. আমি কিন্তু ভিশন ডানপিটে টাইপের আর সেই রকম ই বদমাশ.
দীপা: ভালো তো, জানত মেয়েরা একটু দুষ্টুমি বেশি পছন্দ করে.
তমাল: আমার দুষ্টুমি গুলো সয্য করতে পারবে তো তুমি?
দীপা: হা নিশ্চয় পারব.
দীপা: আচ্ছা তমাল একটা উত্তর দাও. আগে নিজের কথা বলি. আমি এমন অনেক জিনিস তোমার মধ্যে পেয়েছি যা আমায় খুব সাহায্য করে, যেটা সত্যি ই সমু করতে পারেনা. তুমি পারো. কিন্তু আমার থেকে তুমি কি পাবে? আমি তো খুব সাধারণ গ্রামের মেয়ে.
তমাল: এরকম বলনা. একটাই কথা তোমায় বললামনা আমি তোমার জন্যে সব করতে পারি. আমি এটাই আশা করব তুমি ও আমায় খুশি করতে আমায় হাসাতে সব ই করতে পারবে. তুমি নিশ্চয় খেয়াল করেছ আমি আগের থেকে অনেক খুশি. কিন্তু দীপা আমি আরো অনেক কিছু জীবনে চাই. টা কখনো তোমায় বলতে পারবনা.
দীপা: না বলনা প্লিজ. আমার খুব খারাপ লাগবে যদি তুমি আমায় না বোলো. তুমি যা চাইবে আমি তোমার জন্য তাই করব.
তমাল: তুমি ভাব তোমার অঢেল টাকা আছে, সম্মান আছে. গোটা পৃথিবী তোমায় চেনে. কিন্তু এরকম যেন না হয় তাও বলছি সমু তোমায় ছেড়ে চলে গেছে. তুমি আসতে আসতে বুঝে গেছ তুমি ওকে আর পাবেনা. কিন্তু তোমায় বেছে থাকতে হবে নিজের বাবা মা এর কথা ভেবে. এমন সময় তুমি আমায় পেলে, আমি একদম তোমার মনের মত. আমার থেকে তুমি কি কি চাইতে?
দীপা ভাবতে শুরু করলো.
তমাল: আরে এখানে আমরা ঘুরব বলে এসেছি, চল এবার ওই ফ্রেন্চ রেস্তোরায় যাই তারপর কিছু মার্কেটিং করতে হবে. একটা কথা দীপা, তুমি কিন্তু আমার সব কথা শুনবে বলেছ. মনে রেখো ইটা.
দীপা: হা তমাল তোমার সব কথায় আমি শুনব, তুমি আর কষ্ট পেয়োনা.
আমরা একটা দামী রেস্তোরায় খাবার খেয়ে নিয়ে একটা মল এ ঢুকলাম.
তমাল: দীপা আগে আমার জন্য কিছু ড্রেস কিনতে হবে. তাহলে তোমার সামনে আসতে খুব সুবিধা হয়. তুমি এই ড্রেস গুলো লুকিয়ে তোমার সুটকেস টায় রেখে দিও. যেন সমু দেখতে না পায়. আমি যখন এসব তোমার সাথে দেখা করতে ওই ড্রেস গুলো পরে আসবো.
দীপা: ঠিক আছে চল তোমার জন্য কিছু ড্রেস আমি পছন্দ করে দি.
আমরা ৩ তে টি শার্ট আর ৩ তে জিন্স কিনলাম. দীপা ওগুলো নিজের কাছে রেখে দিল.
তমাল: এবার আমার পছন্দের কিছু ড্রেস তোমায় নিতে হবে.
ওর বিশাল আপত্তি সত্তেও আমি ওকে ৩ তে ন্যারো জিন্স, ৩ তে টপ, আর ২ তো ৩ কোয়ার্টার কিনে দিলাম.
এবার বেরোনোর সময়. আমরা বাইরে বেরিয়ে একটা ফাঁকা জায়গায় এলাম.
তমাল: দীপা তোমায় যে প্রশ্নটা করলাম, টা ভেবে দেখো. এর ওপর আমাদের ৩ জনের বাকি জীবন টা নির্ভর করছে. আর আমার কোনো কথায় কিছু মনে করনা.
দীপা: হা তমাল, নিশ্চয় ভাবব. ভালো করে ভাবব. তুমি কোনো চিন্তায় করনা.
তমাল: এত টুকু যেন যে আসল তমাল এখনো বাইরে আসেনি ওর অনেক সময় লাগবে ফ্রি হতে. তোমার উত্তর তার ওপরেই নির্ভর করছে তুমি দুষ্টু তমাল কে পাবে কিনা. আর শোনো কুরুভিল্লা এই আসবে বলে, ওর সাথে চলে যাও. সমু কিছু জিগ্গেস করলে বোলো যে তোমার এক বান্ধবীর চেন্নাই তে বিয়ে হয়েছে. ও ফোন করেছিল ওর সাথে দেখা করতে গেছিলে. এরপর থেকে যখন ই আমাদের দেখা হবে ওই বান্ধবীর নাম নিয়ে বেরিও.
দীপা: ঠিক আছে.
তমাল: আর হা সমুর কিন্তু কিছুই মনে থাকবেনা. ওকে দেখে আবার ঘাবড়ে যেওনা.
দীপা: (একটু হেসে) ঠিক আছে.
আমি: দীপা তুমি এত সহজে পারবেনা. যদিও তুমি খুব ভালই কল্পনা করতে পেরেছ. আমি একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসছি, আজ অফিস থেকে তারাতারি চলে এসেছি. তাই ইলেকট্রিক বিল তা জমা দিয়ে আসি. আমার আসতে দেরী হবে. তুমি ততক্ষণ মন দিয়ে ভাব.
দীপা: (চোখ তা বন্ধ করেই) হুমম.
আমি: দীপা আমায় তুমি বিশ্বাস করত?
দীপা: হা সমু করি. তাহলে একটাই কথা মনে রেখো যে তোমার খারাপ ভেবে আমি কিছুই করবনা.
আমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে অফিস এর দিকে গেলাম. আমি জানি এবার দীপা একবার অনলাইন হবেই. অফিস এ গিয়ে দ্রুত আমি তমালের একাউন্ট থেকে অনলাইন হলাম. হা সত্যি ই দীপা অনলাইন. দীপার মেসেজ এলো:
দীপা: কি করছ তমাল?
তমাল: তোমার কথায় ভাবছিলাম, বিকেলে আসছ তো চেন্নাই এ?
দীপার প্রায় ২-৩ মিনিট কোনো উত্তর নেই.
তমাল: কি চমকে গেলে?
দীপা: তুমি কে? কোথায় থাক? তুমি আমার কথা গুলো শুনতে কি করে পাও?
তমাল: দীপা সব বলব আমায় ভুল বুঝনা প্লিজ.
দীপা: ভুল বুঝিনি তমাল, কিন্তু আমায় বল সব. আমার অস্থির লাগছে.
তমাল: দীপা আমি টেলিপাথি করতে জানি. তুমি জানো টেলিপাথি কি?
দীপা: না. সেটা আবার কি?
তমাল: ইটা এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক বিদ্যা. আমি শিখেছিলাম খুব নাম করা এক বিজ্ঞানীর থেকে. তোমার সাথে কথা হচ্ছিলনা আমার খুব মন খারাপ লাগছিল. আমি সুধুই টেলিপাথি শিখেছিলাম কোনদিন করে দেখিনি. টেলিপাথি করে আমি যার সম্বন্ধে ভাবছি তার কাছে পৌছে যাওয়া যায়. প্রচন্ড মনোযোগ দরকার. একটু বাঘট ঘটলেই হয়না. আমি পরশু দুপুর থেকে চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু কিছুতেই পারছিলামনা. কাল সন্ধায় বেলা হঠাত পেরে গেলাম.
দীপা: আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা. প্লিজ একটু আমায় বুঝিয়ে বলবে?
তমাল: টেলিপাথি করে অন্যের মনের ওপর নিজের মনকে বসিয়ে দেওয়া যায়. অন্যের শরীরে নিজের মন স্থাপন করা যায়. ইটা সবসময় করা সম্ভব নয়. আমি এখন লন্ডনে. কিন্তু আরেকটু আগে আমার মনটা সমুর শরীরে ছিল. আমি তোমায় দেখতে পাচ্ছিলাম কথা বলতে পারছিলাম. সমু বেরিয়ে যাওয়ার আগে যে কথা গুলো বলল তা আসলে সমু নয় আমি বলেছি. সমু যখন বাড়ি ফিরবে ও সব ভুলে যাবে.
দীপা: তুমি কি সব বলছ তমাল. একী হয় নাকি. আমার মাথাটা ঝিম ঝিম করছে.
তমাল: বিশ্বাস হলনা তো. আচ্ছা এবার মিলিয়ে দেখো. তোমার ঠিক মাথার ওপরে বাদিকে দেওয়াল ঘড়ি রয়েছে. কাল রাতে ভুল বশত আচারের কৌটো টা নিচে পরে গেছিল, ওটা এখনো তুমি পরিষ্কার করনি. ওখানেই পরে আছে. কাল তুমি নিল রঙের সালোয়ার পরে প্লেন এ চরেছিলে. আজ এখন হলুদ রঙের একটা নাইটি পরে আছ. কি মিলল?
দীপা: (আমি জানি ও ঘাবড়ে গেছে) কি করে বলছ তুমি এগুলো?
তমাল: আমায় বিশ্বাস কর দীপা. আমি তোমার বন্ধু. আজ বিকেলে আমি আবার টেলিপাথি করব. তুমি আমার জন্য ঠিক ৬ টায় চেন্নাই স্টেশন এ দাড়াবে. এখন বাজে ৪:৩০. সমু বাড়ি ফিরবে ঠিক ৫:১০ এ. তুমি বাইরে থেকে লক করে জ্যোতি কে চাবি টা দিয়ে তারপর যেও. জ্যোতি কে বোলো তুমি মার্কেটিং করতে চেন্নাই যাচ্ছ. আমাকে আরো একবার দেখলে আর আমার সাথে কথা বললে তোমার সব ভ্রান্তি দূর হয়ে যাবে. এর থেকে বেশি সত্যি ই তোমায় বোঝাতে পারবনা.
দীপা: ঠিক আছে আমি যাব.
তমাল: আমি উঠি তাহলে. আমার অনেক কাজ এখন.
আমি জানি দীপা এখনো বাপার টা বিশ্বাস করেনি. আমার নিজের ওপর বিশ্বাস আছে, একবার শুধু ওকে পাই তাহলেই ওর ব্রেন ওয়াশ করে দেব. এতদূর অবধি মন্দ হয়নি. সব ঠিকঠাক ই হয়েছে. যাই হোক আমি সোজা এখান থেকেই চেন্নাই চলে যাব. রাস্তায় এসে উঠলাম, কিন্তু কোনো ট্যাক্সি নেই. প্রায় ১০ মিনিট হাটার পর একটা ট্যাক্সি এদিকে আসছিল, আমি ওটাতে চেপে বসলাম. সব ঠিক থাক চললে আমি ৫:৩০ তে চেন্নাই পৌছে যাব. পাশ দিয়ে দেখি আরেকটা ট্যাক্সি পাস করলো, আমি জানি ইটা কুরুভিল্লার. আমি মাথাটা নিচু করে নিলাম যাতে ও আমায় দেখতে না পায়. আমি জানি প্লান ঠিক থাক ই চলছে. প্রায় ৫:৩৫ এ স্টেশন এ পৌছালাম. পকেট থেকে একটা সুন্গ্লাস বার করে চোখে দিলাম. গায়ে সেই হলুদ টি শার্ট আর নিল জিন্স. হা এতে আমায় সত্যি ই কর্পোরেট কর্তার মতই লাগছে. ঠিক যতটা স্মার্ট নিজেকে দেখানো যায় ততটাই চেষ্টা করলাম. আমি দাড়িয়ে থাকলাম ওখানে জানি ১০ মিনিট এর মধ্যেই দীপা এসে যাবে.
হা দীপা সত্যি ই এলো. আমি যতটা সম্ভব চেষ্টা করলাম নিজেকে চিরাচরিত সমুর থেকে আলাদা দেখাতে. ওকে দেখা মাত্র সামনে গিয়ে হাত টা বাড়িয়ে দিলাম হ্যান্ডশেক করার জন্য. কুরুভিল্লা কে পকেট থেকে একটা ১০০ টাকার নোট দিলাম. কুরুভিল্লা বাকিটা দিতে গেল আমি বললাম বখশিশ রেখে দাও. ও খুব খুশি হয়ে চলে গেল. দীপা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো এক দৃষ্টিতে.
তমাল: কাম দীপা. এদিকে আস, একটা পার্ক আছে ওখানেই বসব আমরা. ইন্ডিয়া তে যা লোক রাস্তায় কথা বলাই দায়.
দীপা কিছু না বলে আমার সাথে সাথে হাটতে লাগলো. দীপা খুব ঘাবড়ে গেছে. বিশ্বাস ই করতে পারছেনা নিজের চোখকে.
তমাল: চেন্নাই এ একটা ফ্রেন্চ হোটেল আছে, আজ কিন্তু তোমায় ওখানের ডিশ টেস্ট করতে হবে. তুমি একদিন আমায় ভাত আর আলু ভাতে খাইয়েছ আজ আমি তোমায় আমার প্রিয় ফ্রেন্চ ডিশ খাওয়াব.
দীপা চোখ বড় বড় করে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো. আমরা পার্ক তার ভেতরে ঢুকে গেলাম. চার পাশে গাছের তলায় সব প্রেমিক প্রেমিকা রা বসে আছে. আমরা গিয়ে একটু নির্জনে একটা গাছের তলায় বসলাম.
তমাল: জানি দীপা তুমি সহজে বিশ্বাস করবেনা. প্লিজ বোঝো আমার শরীর টা এখন লন্ডনে আমার ফ্লাটে চোখ বন্ধ করে পরে আছে, আর মন টা এখানে চলে এসেছে. ইটা বাস্তবে হয়. তুমি আগেকার যুগের মুনিরিশি দের গল্প শোনো নি. একেই হয়ত তখন অন্তর্যামী বলা হত.
দীপা: আমার খুব অসুবিধা হচ্ছে মেনে নিতে. কিন্তু আমায় ভুল বুঝনা আমি সমু কে চিনি. জানি তুমি সমু নয় তুমি তমাল. আমি তোমাকে এরকম ই ভেবেছিলাম তমাল. কিন্তু আমায় একটু মানিয়ে নিতে সময় দাও প্লিজ.
তমাল: (একটু সস্তি পেয়ে) নিশ্চয়. তুমি আমার সাথে একটু গল্প কর, দেখবে আসতে আসতে সব ঠিক হয়ে যাবে. আচ্ছা বোলো রাজস্থান কেমন লাগলো?
দীপা: ধুস ঘুরতেই পারলামনা. পরলাম এক দোল বদমাস লোকের খপ্পরে. তোমায় অন্য একদিন বলব সে বাপরে. বিশাল ভাযন্কর এক বাপার. এখনো ভাবলে বুক টা কাপে. আমার ওই ঘটনা টা কাটিয়ে উঠতে আরো ২-৩ দিন লাগবে. তারপর তোমায় বলব এখন ভাবলে ভয় লাগছে.
তমাল: ঠিক আছে ছাড়ো. আচ্ছা দীপা তোমার শশুর বাড়ির বাপরে কিছু শুনিনি. বলবে একটু?
দীপা: আমাদের যৌথ পরিবার. ওর বাবারা ৩ ভাই. ওর নিজের কোনো ভাই বোন নেই ৪ জন জেথ্তুত আর খুড়তুত ভাই রয়েছে. আমি বাড়ির একমাত্র বউ. বড়দার বিয়ে হয়েছিল কিন্তু ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছিল. তাই বাড়িতে একমাত্র বউ আমি.
তমাল: সমু ছাড়া সবচেয়ে বেশি কে তোমায় ভালবাসে?
দীপা: জেঠিমা নিজের ছেলেদের চেয়ে ওকে আর আমায় বেশি ভালবাসেন. আমার না মাঝে মধ্যেই জেঠিমার জন্য খুব মন খারাপ করে. আমি রোজ জেঠিমার সাথে কথা বলি.
তমাল: বাড়ির সবাই কেমন?
দীপা: সবাই খুব ভালো. কিন্তু জেঠিমা একদম দেবীর মত.
তমাল: আর বাপের বাড়ি বিয়ের পর যাওয়া হয়নি না?
দীপা: হা জানি. বাবা মা দাদার সাথে প্রায় রোজ ই কথা হয়. ওরা খুব খুশি যেহেতু আমি খুশি. তুমি এবার তোমার কথা বোলো তমাল.
তমাল: আমি আর কি বলব দীপা. সারাক্ষণ কাজে বাস্ত থাকি. আর যখন ফ্রি হই তোমার সাথে কথা বলি. একটা কথা খুব সত্যি যে তোমায় পেয়ে আমি সব কষ্ট ভুলে গেছি. জানত আজ যখন স্টেশন এ অপেক্ষা করছিলাম মনে হচ্ছিল যে আমি কলেজ এ পরি, আর ডেটিং এ এসেছি.
দীপা: (খুব জোরে হেসে) তুমি পারো তমাল.
তমাল: (দীপার হাত টা আসতে করে ধরে) হা দীপা আমি খুব খুশি. তুমি খুব ভালো. জানত আমার আর কাউকে দেখে হিংসে হয়না. মন খুব ভালো থাকে. তুমি খুব ভালো.
দীপা: (আবার একটু হেসে) আমার এবার বিশ্বাস হয়েছে সব কিছু. কিন্তু তমাল এভাবে তুমি কি পারবে.
তমাল: (একটু নিচের দিকে তাকিয়ে) দীপা যখন মনটা আবার আমার শরীরে যাবে মাথাটা খুব ধরে যাবে. এভাবে রোজ সম্ভব নয়. ইন্টারনেট এ কথা বোলো. যখন তোমার বা আমার ইচ্ছে হবে আমি এসে যাব. এটাই মনে রেখো আমি তোমার জন্য সব করতে পারি, মরতেও পারি.
দীপা: (আমার মুখে হাত চাপা দিয়ে) এরকম আর কখনো বলবেনা. জানো সমুও এই কথাটা বলে, কিন্তু ও তো আমার স্বামী তাই এরকম বলে. তুমি কেন আমায় এরকম বলছ তমাল.
তমাল: দীপা আমার মনে খুব কষ্ট. (এবার ওর দু হাত ভালো করে ধরে) তুমি জানো আমার জীবনে কি মূল্যবান জিনিস টা নেই যা তোমার আর সমুর আছে. আমার জীবনে কোনো সঙ্গিনী নেই. তুমি আমায় কখনো কষ্ট দেবেনা দীপা. আমায় তুমি সঙ্গ দাও. আমার গা ছুয়ে কথা দিলে কিন্তু.
দীপা: হা আমি তোমার সাথেই আছি কিন্তু তুমি থাক অন্য জগতে, আমি ওখানে কোনো প্রবলেম ই তো সলভ করতে পারবনা.
তমাল: (খুব জোরে হেসে) জানত দীপা, সমু আর আমার মধ্যে একটা বিশাল পার্থক্য আছে. ও সারাজীবন রিসার্চ নিয়েই থাকবে তাই ওর বাস্তব জ্ঞান অনেক কম. আমি কাজ করি মানুষের মন নিয়ে আর একেই বিজনেস বলে. আমি খুব বাস্তব টা বুঝি আর মানুষ কে চিনি. আজ অবধি বিয়ের পর থেকে যা যা প্রবলেম হয়েছে আমি সাথে থাকলে সেটা হবেনা. কাল রাজস্থানে যাই হয়ে থাক আমি থাকলে অনেক আগেই টা বুঝে যেতাম. আসল অসুবিধা টা হচ্ছে তুমি আর সমু দুজনেই খুব সহজ সরল. তাই তোমরা এত প্রবলেম এ পড়. আমি খুব চালক দীপা.
দীপা: তুমি মোটেই চালক নয়. তুমি খুব বুঝদার এটাই বলতে পারো.
তমাল: আরেকটা বিশাল পার্থক্য আছে আমার আর সমুর. সমু খুব ভদ্র আর শান্ত. আমি কিন্তু ভিশন ডানপিটে টাইপের আর সেই রকম ই বদমাশ.
দীপা: ভালো তো, জানত মেয়েরা একটু দুষ্টুমি বেশি পছন্দ করে.
তমাল: আমার দুষ্টুমি গুলো সয্য করতে পারবে তো তুমি?
দীপা: হা নিশ্চয় পারব.
দীপা: আচ্ছা তমাল একটা উত্তর দাও. আগে নিজের কথা বলি. আমি এমন অনেক জিনিস তোমার মধ্যে পেয়েছি যা আমায় খুব সাহায্য করে, যেটা সত্যি ই সমু করতে পারেনা. তুমি পারো. কিন্তু আমার থেকে তুমি কি পাবে? আমি তো খুব সাধারণ গ্রামের মেয়ে.
তমাল: এরকম বলনা. একটাই কথা তোমায় বললামনা আমি তোমার জন্যে সব করতে পারি. আমি এটাই আশা করব তুমি ও আমায় খুশি করতে আমায় হাসাতে সব ই করতে পারবে. তুমি নিশ্চয় খেয়াল করেছ আমি আগের থেকে অনেক খুশি. কিন্তু দীপা আমি আরো অনেক কিছু জীবনে চাই. টা কখনো তোমায় বলতে পারবনা.
দীপা: না বলনা প্লিজ. আমার খুব খারাপ লাগবে যদি তুমি আমায় না বোলো. তুমি যা চাইবে আমি তোমার জন্য তাই করব.
তমাল: তুমি ভাব তোমার অঢেল টাকা আছে, সম্মান আছে. গোটা পৃথিবী তোমায় চেনে. কিন্তু এরকম যেন না হয় তাও বলছি সমু তোমায় ছেড়ে চলে গেছে. তুমি আসতে আসতে বুঝে গেছ তুমি ওকে আর পাবেনা. কিন্তু তোমায় বেছে থাকতে হবে নিজের বাবা মা এর কথা ভেবে. এমন সময় তুমি আমায় পেলে, আমি একদম তোমার মনের মত. আমার থেকে তুমি কি কি চাইতে?
দীপা ভাবতে শুরু করলো.
তমাল: আরে এখানে আমরা ঘুরব বলে এসেছি, চল এবার ওই ফ্রেন্চ রেস্তোরায় যাই তারপর কিছু মার্কেটিং করতে হবে. একটা কথা দীপা, তুমি কিন্তু আমার সব কথা শুনবে বলেছ. মনে রেখো ইটা.
দীপা: হা তমাল তোমার সব কথায় আমি শুনব, তুমি আর কষ্ট পেয়োনা.
আমরা একটা দামী রেস্তোরায় খাবার খেয়ে নিয়ে একটা মল এ ঢুকলাম.
তমাল: দীপা আগে আমার জন্য কিছু ড্রেস কিনতে হবে. তাহলে তোমার সামনে আসতে খুব সুবিধা হয়. তুমি এই ড্রেস গুলো লুকিয়ে তোমার সুটকেস টায় রেখে দিও. যেন সমু দেখতে না পায়. আমি যখন এসব তোমার সাথে দেখা করতে ওই ড্রেস গুলো পরে আসবো.
দীপা: ঠিক আছে চল তোমার জন্য কিছু ড্রেস আমি পছন্দ করে দি.
আমরা ৩ তে টি শার্ট আর ৩ তে জিন্স কিনলাম. দীপা ওগুলো নিজের কাছে রেখে দিল.
তমাল: এবার আমার পছন্দের কিছু ড্রেস তোমায় নিতে হবে.
ওর বিশাল আপত্তি সত্তেও আমি ওকে ৩ তে ন্যারো জিন্স, ৩ তে টপ, আর ২ তো ৩ কোয়ার্টার কিনে দিলাম.
এবার বেরোনোর সময়. আমরা বাইরে বেরিয়ে একটা ফাঁকা জায়গায় এলাম.
তমাল: দীপা তোমায় যে প্রশ্নটা করলাম, টা ভেবে দেখো. এর ওপর আমাদের ৩ জনের বাকি জীবন টা নির্ভর করছে. আর আমার কোনো কথায় কিছু মনে করনা.
দীপা: হা তমাল, নিশ্চয় ভাবব. ভালো করে ভাবব. তুমি কোনো চিন্তায় করনা.
তমাল: এত টুকু যেন যে আসল তমাল এখনো বাইরে আসেনি ওর অনেক সময় লাগবে ফ্রি হতে. তোমার উত্তর তার ওপরেই নির্ভর করছে তুমি দুষ্টু তমাল কে পাবে কিনা. আর শোনো কুরুভিল্লা এই আসবে বলে, ওর সাথে চলে যাও. সমু কিছু জিগ্গেস করলে বোলো যে তোমার এক বান্ধবীর চেন্নাই তে বিয়ে হয়েছে. ও ফোন করেছিল ওর সাথে দেখা করতে গেছিলে. এরপর থেকে যখন ই আমাদের দেখা হবে ওই বান্ধবীর নাম নিয়ে বেরিও.
দীপা: ঠিক আছে.
তমাল: আর হা সমুর কিন্তু কিছুই মনে থাকবেনা. ওকে দেখে আবার ঘাবড়ে যেওনা.
দীপা: (একটু হেসে) ঠিক আছে.