28-02-2019, 12:17 PM
পর্ব-৪৫—এক শরীর দুই মানুষঃ
আমি: দীপা আলো নিভিয়ে দি, আর দরজা জানলা বন্ধ করে দি, দেখবে বেশি ভালো করে তুমি সব বুঝতে পারছ.
দীপা: হা দাও.
আমি: দীপা চোখ বন্ধ করে একজনের নাম ভাব. যাকে তুমি কখনো দেখনি, কিন্তু জানো কেমন দেখতে. যার গলার আওয়াজ কখনো শোননি কিন্তু প্রচুর কথা বলেছ. যার বাড়ি তুমি কখনো যাওনি, কিন্তু জানো তার বাড়িতে কোথায় কি আছে.
দীপা: এ আবার হয় নাকি.
আমি: দীপা মন দিয়ে ভাব. ছোটবেলায় মাস্টার মশাই যেভাবে অঙ্ক শেখাতেন আর তুমি যেভাবে বুঝতে ঠিক ওই ভাবে ভাব. একটা নাম বল. যে তোমার খুব ভালো বন্ধু হতে পারে, তোমার সব কথা সুনতে চায়. তোমার মন খারাপ থাকলে মুহুর্তের মধ্যে বুঝে যায়. কিন্তু তুমি তাকে কখনো দেখনি.
দীপা: (আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই) তমাল.
আমি: বাহ খুব ভালো নাম. এবার ভাব এই তমাল কে দেখতে কেমন. কি করে. কোথায় থাকে.
দীপা: উচ্চতা ৬ ফুট. গায়ের রং টুকটুকে ফর্সা. গালে সামান্য দাড়ি সামান্য গোফ. সপ্তাহে একদিন সেভ করে.
আমি: (বুঝলাম যে ক্লিন শাভে হওয়াটা আমায় ছাড়তে হবে, যদিও রাজস্থানে যাওয়ার দুদিন আগে থেকে আমিও সেভ করিনি, আমার মুখে ৪ দিনের দাড়ি গোফ.) (দীপার হাত দুটো ধরে আমার গালে স্পর্শ করিয়ে) ঠিক এরকম?
দীপা: (চোখ বুজে ভাবতে ভাবতে) ঠিক এইরকম.
আমি:আচ্ছা কিরকম জামা কাপড় পরে ও?
দীপা: হলুদ বা লাল টি শার্ট, ব্লু জিন্স. খুব ক্যাজুয়াল ড্রেস ওর পছন্দ.
আমি: তুমি ৫ মিনিট চোখ বন্ধ করে তমাল কে কল্পনা কর আমি আসছি. (আমি আলমারি খুলে একটা হলুদ টি শার্ট আর ব্লু জিন্স পরে নিলাম, তারপর দীপার কাছে এসে) ঠিক এরকম?
দীপা: (আলতো করে চোখ তা খুলে) হা ঠিক এরকম.
আমি: আচ্ছা ও কি করে?
দীপা: কোম্পানি আছে নিজের, বড় ইন্দাস্ত্রিয়ালিস্ট. এখন লন্ডনে আছে.
আমি: ইন্ডাস্ট্রি আমিও বুঝি যেহেতু ইঞ্জিনিয়ারিং পরেছি. চল এটাই বিশ্বাস করি যে ওর ইলেকট্রনিক্স এর ইন্ডাস্ট্রি আছে. মানে আমি যার স্পেশালিস্ট. আর ধরে নাও এটাই লন্ডন. তোমার কাছে চেন্নাই ও যা লন্ডন ও তা. ওর কোন জিনিস তা তোমার সবচেয়ে বেশি পছন্দ হয়?
দীপা: ওর কল্পনা শক্তি. ও খুব ভালো কল্পনা করতে পারে.
আমি: ঠিক আমার মত?
দীপা: হা হা ঠিক একদম তোমার মত.
আমি: ও কি বিবাহিত? কোনো গার্লফ্রেন্ড আছে?
দীপা: হা বিবাহিত. কিন্তু বউ ছেড়ে চলে গেছে. কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই. খুব কষ্ট তাই. প্রচুর সম্মান কিন্তু নিজের বলে কেউ নেই. আমার খুব খারাপ লাগে.
আমি: মনে আছে দীপা, আমার ওই বাইরে পরা থাকার কথা গুলো শুনে তুমিও প্রচুর কষ্ট পেয়েছিলে, আমায় আপন করে নিয়েছিলে.
দীপা: হমমম .
আমি: দীপা এতক্ষণ তুমি যা বললে এটা মোটামুটি ভালই একটা কল্পনা. এর চেয়েও বেশি তোমায় করতে হবে. সেটাই আমি তোমায় সেখাব. তুমি ছোট বেলায় কল্প বিজ্ঞানের গল্প পরেছিলে?
দীপা: হা প্রফেসর শন্কুর কিছু গল্প আরো কিছু ইংলিশ গল্পের বাংলা অনুবাদ পরেছিলাম.
আমি: বাহ খুব ভালো. আচ্ছা এরকম কোনো গল্প পরেছিলে যাতে একটা শরীরে ৩-৪ তে মানুষ একসাথে এক্সিস্ট করে.
দীপা: নাহ এ আবার কি. এ জীবনে শুনিনি.
আমি: আমি এরকম একটা ইংলিশ নভেল পরেছিলাম, যেখানে একটা মানুষের শরীরে দুটো আলাদা আলাদা লোক বর্তমান. ধরো একজনের নাম সৌমেন বা সমু আরেকজনের নাম তমাল. দুজনের মধ্যে অনেক মিল ছিল মনের দিক থেকে. কিন্তু অনেক গরমিল ও ছিল. ওই সমু ছেলেটার বাবা মা অনেক ডাক্তার দেখিয়েছিল. কিন্তু সবাই বলেছিল ওর কোনো রোগ নেই. সত্যি ই দুটো আলাদা ছেলে আছে. ভাগবান কোনো কারণে ওদের একটাই শরীর দিয়ে পাঠিয়েছিল. আসতে আসতে ওর বাবা মা মেনে নিল বাপারটা. বাড়িতে আলাদা দু ধরণের জামা আসতো, আলাদা দু ধরণের খাবার, খেলনা আসতো. বাবা মা জানত কোনটা কার পছন্দ. ওদের ওই পছন্দ গুলো দেখেই ওরা বুঝতে পারত বাড়িতে কে আছে সমু না তমাল. সব ঠিক ই চলছিল বাদ সাধলো বিয়ের পর. বউ কিছুদিন পর ই ভাবতে শুরু করলো যে সমু পাগল. ঠিক করলো সমু কে ছেড়ে চলে যাবে. একদিন রাতে এসে সমু ওকে বোঝালো কোনো কাজ ১ জন একা যত তারাতারি করতে পারে দুজনে আরো তারাতারি করতে পারে. ঠিক যে সম্পর্ক তা স্বামী আর স্ত্রীর মধ্যে হয় সেটাই ওর স্ত্রীর সাথে সমু আর তমাল দুজনের ই হয়ে গেল. প্রথমে ওর বউ এর খুব অসুবিধা হত কিন্তু আসতে আসতে সে বুঝলো এমন অনেক মনের কথা থাকে যা সমুকে বলা যায় তমালকে যায়না, আবার এমন ও অনেক কথা আছে যা তমালকে বলা যায় সমু কে যায়না. দুজনের নেচার ই যে সম্পূর্ণ আলাদা ছিল. শুধু মন কেন শরীরের দিক থেকেও দুজন সম্পূর্ণ আলাদা ছিল, তাই ওর বউ আগের থেকে দ্বিগুন আনন্দ পেতে লাগলো. এরপর সব ঠিক হয়ে গেল.
দীপা: একই বাস্তবে হয় নাকি.
আমি: আমার হাত তা দীপার গালে আর ঘাড়ে বলাতে বলাতে হা সোনা হয়.
দীপা: কি করে হয় বুঝিয়ে বলনা প্লিজ. আমার এভাবে ভাবতে খুব ভালো লাগছে.
আমি: আমার গাল ভর্তি দাড়ি, তুমি বিয়ের পর আমায় কখনো দেখেছ গাল ভর্তি দাড়ি রাখতে.
দীপা: না কখনো না.
আমি: আমায় কি দেখেছ নিল জিন্স পড়তে, আমি তো কটন এর পান্ট আর শার্ট পরি.
দীপা: হা ঠিক.
আমি: ভাব নিল জিন্স, হলুদ টি শার্ট গাল ভর্তি দাড়ি, এগুলো কার?
দীপা: তমালের?
আমি: তাহলে তোমার পাশে কে সুয়ে আছে?
দীপা: কেন তুমি.
আমি: না হচ্ছেনা দীপা ভাব ভালো করে.
দীপা: না পারছিনা. তুমি প্লিজ বুঝিয়ে বল.
আমি: দীপা আমি কতগুলো কথা বলছি সেটা আগে বোঝো আর তারপর বিশ্বাস কর. আমার শরীরে দুটো মানুষ আছে. একজন সমু আরেকজন তমাল. আগে বল বুঝলে আর বিশ্বাস করলে কিনা.
দীপা: (এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে) হা করলাম.
আমি: সমু রিসার্চ ওরিয়েন্টেড লোক. তমাল ইন্দাস্ত্রিয়ালিস্ট. এটা একদম মনে গেথে নাও.
দীপা: হুম.
আমি: সমু শার্ট আর কটন এর পান্ট পরে, তমাল জিন্স আর টি শার্ট পরে. ঠিক আছে.
দীপা: হুম.
আমি: সমু ভালবাসে গ্রাম গঞ্জ বা মফস্সল. তমাল ভালবাসে মেট্রোপলিটন সিটি. সমু তোমার সাথে পাহাড় জঙ্গলে ঘুরতে বেশি ভালবাসে. তমাল ভালবাসে চেন্নাই এ গিয়ে কোনো দামী রেস্তোরা তে খাবার খেতে বা বড়জোর সমুদ্র দেখতে.
দীপা: হুম.
আমি: সমু মধ্যবিত্ত পরিবারের তাই খুব হিসাবী আর বুঝদার. তমাল খুব ধনী পরিবারের. তোমার জন্য প্রচুর খরচ করে.
দীপা: হুম.
আমি:আবার সমু আর তমাল দুজনেই খুব দুক্ষি. সমুর ছোটবেলা খুব কষ্টে কেটেছে. তোমায় আকড়ে বাচতে চায়. তমালের বউ ছেড়ে যাওয়ার পর জীবনে হতাশা আর হতাশা. সেও তোমায় আকড়ে বাচতে চায়.
দীপা: হা বুঝলাম.
আমি: আবার ওই প্রথম লাইন তা. তমাল আর সমু মানুষ আলাদা, কিন্তু শরীর এক. দুজনেই তোমায় ভালবাসে. তোমায় দুজনকে ভালবাসতে হবে.
দীপা: এটা কি সম্ভব সমু.
আমি: হা সম্ভব. তুমি এদের মধ্যে কাউকে কি অপছন্দ কর দীপা?
দীপা: না, খুব পছন্দ করি.
আমি: যদি দুজনেই তোমায় ভালবাসে. দুজনেই তোমার জন্য আলাদা করে কিছু করতে চায় ভাবতে চায় ক্ষতি কি. তুমি এখন যতটা ভালবাসা পাও তার দ্বিগুন পেলে খুশি হবে কি হবেনা?
দীপা: হা হব.
আমি: তাহলে তুমি রাজি তো সমু আর তমাল দুজন কেই একসাথে ভালবাসতে.
দীপা: হা রাজি.
আমি: আচ্ছা বল এখন তোমার পাশে কে সুয়ে আছে, সমু না তমাল?
দীপা: তমাল.
আমি: কি করে বুঝলে?
দীপা: মুখ ভর্তি দাড়ি, হলুদ টি শার্ট আর নিল জিন্স.
আমি: দারুন দীপা দারুন. আজ চল তমালের সাথে ঘুরে এস চেন্নাই থেকে. যাবে তমালের সাথে?
দীপা: হা যাব.
আমি: দীপা আলো নিভিয়ে দি, আর দরজা জানলা বন্ধ করে দি, দেখবে বেশি ভালো করে তুমি সব বুঝতে পারছ.
দীপা: হা দাও.
আমি: দীপা চোখ বন্ধ করে একজনের নাম ভাব. যাকে তুমি কখনো দেখনি, কিন্তু জানো কেমন দেখতে. যার গলার আওয়াজ কখনো শোননি কিন্তু প্রচুর কথা বলেছ. যার বাড়ি তুমি কখনো যাওনি, কিন্তু জানো তার বাড়িতে কোথায় কি আছে.
দীপা: এ আবার হয় নাকি.
আমি: দীপা মন দিয়ে ভাব. ছোটবেলায় মাস্টার মশাই যেভাবে অঙ্ক শেখাতেন আর তুমি যেভাবে বুঝতে ঠিক ওই ভাবে ভাব. একটা নাম বল. যে তোমার খুব ভালো বন্ধু হতে পারে, তোমার সব কথা সুনতে চায়. তোমার মন খারাপ থাকলে মুহুর্তের মধ্যে বুঝে যায়. কিন্তু তুমি তাকে কখনো দেখনি.
দীপা: (আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই) তমাল.
আমি: বাহ খুব ভালো নাম. এবার ভাব এই তমাল কে দেখতে কেমন. কি করে. কোথায় থাকে.
দীপা: উচ্চতা ৬ ফুট. গায়ের রং টুকটুকে ফর্সা. গালে সামান্য দাড়ি সামান্য গোফ. সপ্তাহে একদিন সেভ করে.
আমি: (বুঝলাম যে ক্লিন শাভে হওয়াটা আমায় ছাড়তে হবে, যদিও রাজস্থানে যাওয়ার দুদিন আগে থেকে আমিও সেভ করিনি, আমার মুখে ৪ দিনের দাড়ি গোফ.) (দীপার হাত দুটো ধরে আমার গালে স্পর্শ করিয়ে) ঠিক এরকম?
দীপা: (চোখ বুজে ভাবতে ভাবতে) ঠিক এইরকম.
আমি:আচ্ছা কিরকম জামা কাপড় পরে ও?
দীপা: হলুদ বা লাল টি শার্ট, ব্লু জিন্স. খুব ক্যাজুয়াল ড্রেস ওর পছন্দ.
আমি: তুমি ৫ মিনিট চোখ বন্ধ করে তমাল কে কল্পনা কর আমি আসছি. (আমি আলমারি খুলে একটা হলুদ টি শার্ট আর ব্লু জিন্স পরে নিলাম, তারপর দীপার কাছে এসে) ঠিক এরকম?
দীপা: (আলতো করে চোখ তা খুলে) হা ঠিক এরকম.
আমি: আচ্ছা ও কি করে?
দীপা: কোম্পানি আছে নিজের, বড় ইন্দাস্ত্রিয়ালিস্ট. এখন লন্ডনে আছে.
আমি: ইন্ডাস্ট্রি আমিও বুঝি যেহেতু ইঞ্জিনিয়ারিং পরেছি. চল এটাই বিশ্বাস করি যে ওর ইলেকট্রনিক্স এর ইন্ডাস্ট্রি আছে. মানে আমি যার স্পেশালিস্ট. আর ধরে নাও এটাই লন্ডন. তোমার কাছে চেন্নাই ও যা লন্ডন ও তা. ওর কোন জিনিস তা তোমার সবচেয়ে বেশি পছন্দ হয়?
দীপা: ওর কল্পনা শক্তি. ও খুব ভালো কল্পনা করতে পারে.
আমি: ঠিক আমার মত?
দীপা: হা হা ঠিক একদম তোমার মত.
আমি: ও কি বিবাহিত? কোনো গার্লফ্রেন্ড আছে?
দীপা: হা বিবাহিত. কিন্তু বউ ছেড়ে চলে গেছে. কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই. খুব কষ্ট তাই. প্রচুর সম্মান কিন্তু নিজের বলে কেউ নেই. আমার খুব খারাপ লাগে.
আমি: মনে আছে দীপা, আমার ওই বাইরে পরা থাকার কথা গুলো শুনে তুমিও প্রচুর কষ্ট পেয়েছিলে, আমায় আপন করে নিয়েছিলে.
দীপা: হমমম .
আমি: দীপা এতক্ষণ তুমি যা বললে এটা মোটামুটি ভালই একটা কল্পনা. এর চেয়েও বেশি তোমায় করতে হবে. সেটাই আমি তোমায় সেখাব. তুমি ছোট বেলায় কল্প বিজ্ঞানের গল্প পরেছিলে?
দীপা: হা প্রফেসর শন্কুর কিছু গল্প আরো কিছু ইংলিশ গল্পের বাংলা অনুবাদ পরেছিলাম.
আমি: বাহ খুব ভালো. আচ্ছা এরকম কোনো গল্প পরেছিলে যাতে একটা শরীরে ৩-৪ তে মানুষ একসাথে এক্সিস্ট করে.
দীপা: নাহ এ আবার কি. এ জীবনে শুনিনি.
আমি: আমি এরকম একটা ইংলিশ নভেল পরেছিলাম, যেখানে একটা মানুষের শরীরে দুটো আলাদা আলাদা লোক বর্তমান. ধরো একজনের নাম সৌমেন বা সমু আরেকজনের নাম তমাল. দুজনের মধ্যে অনেক মিল ছিল মনের দিক থেকে. কিন্তু অনেক গরমিল ও ছিল. ওই সমু ছেলেটার বাবা মা অনেক ডাক্তার দেখিয়েছিল. কিন্তু সবাই বলেছিল ওর কোনো রোগ নেই. সত্যি ই দুটো আলাদা ছেলে আছে. ভাগবান কোনো কারণে ওদের একটাই শরীর দিয়ে পাঠিয়েছিল. আসতে আসতে ওর বাবা মা মেনে নিল বাপারটা. বাড়িতে আলাদা দু ধরণের জামা আসতো, আলাদা দু ধরণের খাবার, খেলনা আসতো. বাবা মা জানত কোনটা কার পছন্দ. ওদের ওই পছন্দ গুলো দেখেই ওরা বুঝতে পারত বাড়িতে কে আছে সমু না তমাল. সব ঠিক ই চলছিল বাদ সাধলো বিয়ের পর. বউ কিছুদিন পর ই ভাবতে শুরু করলো যে সমু পাগল. ঠিক করলো সমু কে ছেড়ে চলে যাবে. একদিন রাতে এসে সমু ওকে বোঝালো কোনো কাজ ১ জন একা যত তারাতারি করতে পারে দুজনে আরো তারাতারি করতে পারে. ঠিক যে সম্পর্ক তা স্বামী আর স্ত্রীর মধ্যে হয় সেটাই ওর স্ত্রীর সাথে সমু আর তমাল দুজনের ই হয়ে গেল. প্রথমে ওর বউ এর খুব অসুবিধা হত কিন্তু আসতে আসতে সে বুঝলো এমন অনেক মনের কথা থাকে যা সমুকে বলা যায় তমালকে যায়না, আবার এমন ও অনেক কথা আছে যা তমালকে বলা যায় সমু কে যায়না. দুজনের নেচার ই যে সম্পূর্ণ আলাদা ছিল. শুধু মন কেন শরীরের দিক থেকেও দুজন সম্পূর্ণ আলাদা ছিল, তাই ওর বউ আগের থেকে দ্বিগুন আনন্দ পেতে লাগলো. এরপর সব ঠিক হয়ে গেল.
দীপা: একই বাস্তবে হয় নাকি.
আমি: আমার হাত তা দীপার গালে আর ঘাড়ে বলাতে বলাতে হা সোনা হয়.
দীপা: কি করে হয় বুঝিয়ে বলনা প্লিজ. আমার এভাবে ভাবতে খুব ভালো লাগছে.
আমি: আমার গাল ভর্তি দাড়ি, তুমি বিয়ের পর আমায় কখনো দেখেছ গাল ভর্তি দাড়ি রাখতে.
দীপা: না কখনো না.
আমি: আমায় কি দেখেছ নিল জিন্স পড়তে, আমি তো কটন এর পান্ট আর শার্ট পরি.
দীপা: হা ঠিক.
আমি: ভাব নিল জিন্স, হলুদ টি শার্ট গাল ভর্তি দাড়ি, এগুলো কার?
দীপা: তমালের?
আমি: তাহলে তোমার পাশে কে সুয়ে আছে?
দীপা: কেন তুমি.
আমি: না হচ্ছেনা দীপা ভাব ভালো করে.
দীপা: না পারছিনা. তুমি প্লিজ বুঝিয়ে বল.
আমি: দীপা আমি কতগুলো কথা বলছি সেটা আগে বোঝো আর তারপর বিশ্বাস কর. আমার শরীরে দুটো মানুষ আছে. একজন সমু আরেকজন তমাল. আগে বল বুঝলে আর বিশ্বাস করলে কিনা.
দীপা: (এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে) হা করলাম.
আমি: সমু রিসার্চ ওরিয়েন্টেড লোক. তমাল ইন্দাস্ত্রিয়ালিস্ট. এটা একদম মনে গেথে নাও.
দীপা: হুম.
আমি: সমু শার্ট আর কটন এর পান্ট পরে, তমাল জিন্স আর টি শার্ট পরে. ঠিক আছে.
দীপা: হুম.
আমি: সমু ভালবাসে গ্রাম গঞ্জ বা মফস্সল. তমাল ভালবাসে মেট্রোপলিটন সিটি. সমু তোমার সাথে পাহাড় জঙ্গলে ঘুরতে বেশি ভালবাসে. তমাল ভালবাসে চেন্নাই এ গিয়ে কোনো দামী রেস্তোরা তে খাবার খেতে বা বড়জোর সমুদ্র দেখতে.
দীপা: হুম.
আমি: সমু মধ্যবিত্ত পরিবারের তাই খুব হিসাবী আর বুঝদার. তমাল খুব ধনী পরিবারের. তোমার জন্য প্রচুর খরচ করে.
দীপা: হুম.
আমি:আবার সমু আর তমাল দুজনেই খুব দুক্ষি. সমুর ছোটবেলা খুব কষ্টে কেটেছে. তোমায় আকড়ে বাচতে চায়. তমালের বউ ছেড়ে যাওয়ার পর জীবনে হতাশা আর হতাশা. সেও তোমায় আকড়ে বাচতে চায়.
দীপা: হা বুঝলাম.
আমি: আবার ওই প্রথম লাইন তা. তমাল আর সমু মানুষ আলাদা, কিন্তু শরীর এক. দুজনেই তোমায় ভালবাসে. তোমায় দুজনকে ভালবাসতে হবে.
দীপা: এটা কি সম্ভব সমু.
আমি: হা সম্ভব. তুমি এদের মধ্যে কাউকে কি অপছন্দ কর দীপা?
দীপা: না, খুব পছন্দ করি.
আমি: যদি দুজনেই তোমায় ভালবাসে. দুজনেই তোমার জন্য আলাদা করে কিছু করতে চায় ভাবতে চায় ক্ষতি কি. তুমি এখন যতটা ভালবাসা পাও তার দ্বিগুন পেলে খুশি হবে কি হবেনা?
দীপা: হা হব.
আমি: তাহলে তুমি রাজি তো সমু আর তমাল দুজন কেই একসাথে ভালবাসতে.
দীপা: হা রাজি.
আমি: আচ্ছা বল এখন তোমার পাশে কে সুয়ে আছে, সমু না তমাল?
দীপা: তমাল.
আমি: কি করে বুঝলে?
দীপা: মুখ ভর্তি দাড়ি, হলুদ টি শার্ট আর নিল জিন্স.
আমি: দারুন দীপা দারুন. আজ চল তমালের সাথে ঘুরে এস চেন্নাই থেকে. যাবে তমালের সাথে?
দীপা: হা যাব.