28-02-2019, 12:13 PM
পর্ব-৪৪—ব্যাক টু চেন্নাইঃ
দীপা আর ছুটতে পারছিলনা, আমরা একটা মাঠের সামনে চারিদিক ফাঁকা, কেউ নেই. আমাদের মেন রোড এ পৌছাতে আরো ৫ মিনিট. দীপা আর পারলনা দাড়িয়ে গেল. আমি জানি প্রতিটা সেকেন্ড কে কাজে লাগাতে হবে. আমি বললাম
আমি: দীপা এখানে কথাও কেউ নেই, তুমি ওই মাঠের মধ্যে ব্যাগ তা নিয়ে যাও. সালোয়ার তা বার করে পরে নাও. দীপা আমাদের বিশাল বিপদ বোঝার চেষ্টা কর. আবার দৌড়াতে হবে, যেভাবে হোক আমাদের ৫ মিনিট এর মধ্যেই মেন রোড এ পৌছে যেতে হবে. কিছু প্রশ্ন করনা প্লিজ.
দীপা আমায় অমান্য করেনা. ও মাঠের মধ্যে একটা গাছের পেছনে চলে গেল চেঞ্জ করতে. আমি সুমিত কে ফোন করলাম একবার,
সুমিত: সার আমি এখনো দশ মিনিট দুরে আছি.
আমি: (আমার ভয়ে জিভ শুকিয়ে এলো) সুমিত ভাই বিশাল বিপদে পরে গেছি. যেভাবে হোক এখানে আস. এই রাজবাড়ি তা ভালো নয়. মেন রোড থেকে রাজ বাড়ি আসার পথে একটা মাঠ পরে ওখানে একটা গাছের পেছনে লুকিয়ে আছি আমরা.
সুমিত: সার কোনো চিন্তা করবেন না. আমি সেরকম হলে পুলিশ কেও ইনফর্ম করব. আমি যত তারাতারি সম্ভব আসছি.
আমি আসতে আসতে গাছ তার ওখানে চলে গেলাম. দীপার তখন ড্রেস চেঞ্জ করা হয়ে গেছে, সারি তা ও বাগে ঢুকিয়ে নিয়েছে. হঠাত একটা জিপ এর আওয়াজ. আমি আর দীপা ওখানেই গাছটার পেছনে বসে পরলাম. জিপটা মাঠের কাছে এসে থামল. জিপ থেকে নেমে আসলো শক্তি আর রাজেন্দের. ওরা কিছুটা মাঠের মধ্যে নেমে আসলো. আমাদের দুজনের ই বুকটা ধরাশ ধরাশ করে কাপতে লাগলো. কিছুটা আসার পর ওরা থমকে দাড়ালো আর আবার পেছন ফিরে গিয়ে জিপ এ উঠে গেল আর সোজা চলে গেল. এদিকে আমার মনে এই চিন্তা আসতে লাগলো যে এখান থেকে এয়ারপোর্ট যাওয়ার রাস্তায় না ওরা ধরে ফেলে. ভরসা একজন ই সুমিত. লোকাল ছেলে বাচলে ওই পারবে বাচাতে. ওরা যাওয়ার পর দীপা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
দীপা: আচ্ছা আমরা চরের মত পালাচ্ছি কেন?
আমি: দীপা একবার জায়গাটা ছাড়তে পারি তোমায় সব বলব.
দীপা: না এখন ই বল.
আমি: দীপা কি করে বলি তোমায়. ওদের কু মতলব ছিল. ওদের পরিবারের ওপর অভিশাপ ছিল, এর আগে দুই ছেলের বিয়ের রাতে মৃত্যু হয়েছে. বংশরক্ষা করার জন্য তোমায় বেছে নিয়েছিল.
দীপা: (প্রচন্ড ভয়ে ঘামতে শুরু করে দিল)
আমি: ভয় পেয়োনা আমি তো আছি.
আবার একটা জিপ এর আওয়াজ. আমরা আবার লুকিয়ে গেলাম. এবার জিপ থেকে নেমে এলো সুমিত. আমি আর দীপা প্রানপনে ছুটতে লাগলাম. কোনরকমে জিপে ওঠা মাত্র ও গাড়ি স্টার্ট করে দিল. আমি ওকে বললাম যে শক্তি কিছুক্ষণ আগে গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছে. ও মেন রোড থেকে গাড়িটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিল. এটা বেশ ঘুরপথ. আমরা প্রায় ৩০ মিনিট চলার পর একটা শহরে এসে পৌছালাম. সুমিত আমার দিকে তাকিয়ে বলল
সুমিত: স্যার আর ভয় নেই আমরা জয়পুরে এসে গেছি, আর ১৫ মিনিট এর রাস্তা. এখানে ওরা আমাদের দেখতে পেলেও কিছু করতে পারবেনা.
আমি আর দীপা দুজনেই হাপ ছেড়ে বাচলাম.
চারিদিকে সার দেওয়া উচু অট্টালিকা. খুব মনটা খারাপ লাগছিল. এত সুন্দর শুনেছি রাজস্থান অথচ পরলাম বাজে লোকেদের খপ্পরে. একবার মনে মনে বলে দিলাম বিদায় রাজস্থান, তবে আবার আসবো একদিন. দীপার দিকে তাকালাম ও এখন অনেক শান্ত ভয়টা কেটে গেছে পুরোপুরি. আমার বুকে মাথাটা রেখে চোখটা বন্ধ করেছে. কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা এয়ারপোর্ট এ এলাম. ভেতরে যখন ঢুকলাম ৬:৪৫ প্লেন ৭:০০ টায়. বিদায় জানালাম সুমিত কে, কারণ এখানে এত লোকের মাঝে ভয় কিছুই নেই. এবার সামনের গেট টায় গিয়ে দাড়ালাম ওখানে চেকিং হবে. পেছন ঘুরে দেখি আমার ঠিক পেছনেই দাড়িয়ে আছে মান্ভেন্দের, রাজেন্দের আর শক্তি. মুহুর্তের জন্য আমার হার্ট এটাক হওয়ার উপক্রম হলো. নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে সামনে দেখলাম, ওখানে তখন আমার চেকিং চলছে, বাস আর এক পা এগোলেই গেট এর ওপাশে. আমি পা তা বাড়াতে যাচ্ছি পেছন থেকে আমার কাধটা ধরে কেউ একটা ভিশন জোরে টান মারলো. ঘুরে দেখি মান্ভেন্দের. আমার দিকে তাকিয়ে বলল
মান্ভেন্দের: আজকের মত বিদায়. তবে দেখা একদিন হবেই. আমার ব্রহ্মচর্য নয়তো ভাঙ্গবে কি করে. বিধির বিধান কেউ ভাঙ্গতে পারেনা. রাজকুমারী আমার সেতার তোমার অপেক্ষায় থাকবে. (তারপর শীতল কোমল সেই দৃষ্টি.)
আমরা সামনে এগিয়ে গেলাম. পেছন থেকে ও চেচিয়ে বলল রাজকুমারী তোমার অপেক্ষায় থাকব আমি, তুমি এসে আমার ব্রহ্মচর্য ভাঙ্গবে.
আমরা প্লেন এ উঠে গেলাম. কখন যে প্লেন তা চেন্নাই তে পৌছালো মনে নেই. কুরুভিল্লা কে বলে রেখেছিলাম, ও আমাদের কোয়ার্টার এ পৌছে দিল. গাড়ি থেকে নেমে একবার ভালো করে কুরুভিল্লার দিকে দেখলাম, হা ও কুরুভিল্লা তাহলে সত্যি ই আমরা চেন্নাই তে আছি. জ্যোতি এগিয়ে আসছে আমার দিকে, সেই হাসি সেই উদ্দীপনা, বকবক করা স্বভাব. ওহহ এরা আমার আপনজন নিজের লোক. এরা আমার ই আত্মীয়. আমি জ্যোতি কে জড়িয়ে ধরলাম. ও কিছুটা ঘাব্রেই গেল. ও খাবার রেডি রেখেছিল, আমরা তারাতারি খেয়ে সুয়ে পরলাম. জানি কাল নতুন সকাল, নতুন দিন. খালি ওই সাদা সারি তা স্মৃতি হিসেবে থেকে গেল.
পরদিন যখন ঘুম থেকে উঠি দেখি দীপা অনেকক্ষণ উঠে গেছে. ও আজ খুব শান্ত. চুপ করে বারান্দায় দাড়িয়ে আছে. আমি গিয়ে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম. ও প্রচন্ড ভয় পেয়ে আটকে উঠলো. এরকম কখনো হয়নি. ও কি এখনো ওই স্মৃতি গুলো ভুলতে পারেনি. আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম
আমি: সব ভুলে যাও দীপা. ওটা একটা স্বপ্ন ছিল. কেউ দায়ী নয় ওর জন্য. আমি কি জানতাম জায়গাটা ওরকম বলে.
দীপা: এমা সমু এরকম কেন বলছ. আসলে আমি এখনো ওই ঘটনা গুলো ভুলতে পারিনি. আমায় একটু সময় দাও প্লিজ.
আমি জানি ও ভিশন ভাবে আতঙ্কে ভুগেছিল. সত্যি ই ওকে সময় দেওয়া উচিত. আজ আর অফিস এ কোনো কাজ করবনা শুধু তমাল সেজে কথা বলব আর ওকে সুস্থ করে তুলব.
আমি: দীপা তুমি ইন্টারনেট তা খুলে কিছু কর আমি অফিস যাই. আমি মাঝে মাঝে ফোন করব.
আমি অফিস এ বেরিয়ে গেলাম. কম্পিউটার থেকে লগ ইন করলাম. কিন্তু অদ্ভুত ভাবে দীপা নেই অনলাইন. আমি ভাবলাম কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি তারপর দেখা যাবে. প্রায় ১ ঘন্টা হয়ে গেল দীপা আর অনলাইন হলনা. আমি ভাবলাম একবার ওকে ফোন করে দেখি. আমি ফোন করলাম.
আমি: হ্যালো দীপা কি করছ এখন?
দীপা: খুব উদাসীন ভাবে কিছু নয় এমনি ই বসে আছি.
আমি: লক্ষিটি মন খারাপ করনা, আমি আসছি এক্ষুনি বাড়িতে.
দীপা: হা প্লিজ এস, ভালো লাগছেনা আমার একা একা.
আমি ১০ মিনিট এর মধ্যে বাড়ি পৌছালাম. দেখি দীপা সুয়ে আনমনে কিছু ভাবছে. আমি কাছে গিয়ে বললাম
আমি: দীপা আমায় সব খুলে বল কি হয়েছে তোমার? আমি আছি তো. বল প্লিজ.
দীপা: সমু ভালো লাগছেনা কিছু. কালকের ঘটনা তা মনে পরে যাচ্ছে. ওরা যদি সত্যি ই আমাদের খুঁজে বার করে কি হবে গো?
আমি: ধুর পাগল. এখানে কেন রাজস্থানেও ওরা নিজেদের জায়গার বাইরে কিছু করতে পারবেনা. জানো কাল সুমিত পুলিশ কে ইনফর্ম করেছিল. ধরে নাও আমরা বাড়ি থেকে বেরোতে পারিনি. আমার একটা মেসেজ এই পুলিশ চলে আস্ত আর আমাদের ওখান থেকে বার করে নিয়ে যেত.
দীপা: ওরা ওরকম কেন করলো বলত. আমরা তো ওদের কোনো ক্ষতি করিনি.
আমি: দীপা যা হয়েছে ভুলে যাও প্লিজ.
দীপা: না সমু আমায় সব বল. ওই লোকটা মান্ভেন্দের না কি ও কি চায় কেন আমায় এরকম বলল এয়ারপোর্ট এ.
আমি: দীপা, ঠিক বোঝাতে পারবনা. এটাই বোঝো যে ওদের খুব বদ মতলব ছিল. ও তোমায় ভোগ করতে চেয়েছিল. তুমি ভুলে যাও এটা.
দীপা: সমু যদি এরপর কখনো ওরা আমাদের মুখোমুখি হয় তাহলে?
আমি: আমি লড়াই করব ওদের সাথে. আরে কাল আমিও খুব ঘাবড়ে গেছিলাম. ওদের সাথে সংঘাতে গেলে ওরা নিজের থেকেই ভয় পেয়ে যেত.
দীপা: সমু আমায় একটু আদর করবে, আমার ভালো লাগছেনা কিছু. তুমি জানো যখন ই আমার মনে কোনো বাজে চিন্তা আসে তখন ই আমি তোমার সঙ্গ চাই.
আমি: দীপা আদর তো সবসময় ই করতে পারি, কিন্তু এই বাপার তা ভুলতে গেলে আগে আমাদের অন্য কোনো বাপার নিয়ে চিন্তা করতে হবে.
দীপা: কি নিয়ে চিন্তা করব বল?
আমি: দীপা এখান থেকে যাওয়ার আগে তুমি আমায় রোজ বলতে কি করে কল্পনা করতে হয় তা শিখিয়ে দিতে. আজ তোমায় অতি শেখাবো.
দীপা: (খুব আনন্দ পেয়ে লাফিয়ে উঠে বসলো আর আমায় জড়িয়ে ধরে) আরে আমি তো ভুলেই গেছিলাম, হা আজ তোমায় শেখাতেই হবে কি করে আমি কল্পনা করব তা. আজ কিন্তু শেখাতেই হবে. (আমার বুকে কিল মারতে মারতে সেই অতি পুরনো সেক্সি হাসিটা)
হা আমার পুরনো দীপা আবার ফিরে এসেছে. আমার খুব ভালো লাগলো.
দীপা আর ছুটতে পারছিলনা, আমরা একটা মাঠের সামনে চারিদিক ফাঁকা, কেউ নেই. আমাদের মেন রোড এ পৌছাতে আরো ৫ মিনিট. দীপা আর পারলনা দাড়িয়ে গেল. আমি জানি প্রতিটা সেকেন্ড কে কাজে লাগাতে হবে. আমি বললাম
আমি: দীপা এখানে কথাও কেউ নেই, তুমি ওই মাঠের মধ্যে ব্যাগ তা নিয়ে যাও. সালোয়ার তা বার করে পরে নাও. দীপা আমাদের বিশাল বিপদ বোঝার চেষ্টা কর. আবার দৌড়াতে হবে, যেভাবে হোক আমাদের ৫ মিনিট এর মধ্যেই মেন রোড এ পৌছে যেতে হবে. কিছু প্রশ্ন করনা প্লিজ.
দীপা আমায় অমান্য করেনা. ও মাঠের মধ্যে একটা গাছের পেছনে চলে গেল চেঞ্জ করতে. আমি সুমিত কে ফোন করলাম একবার,
সুমিত: সার আমি এখনো দশ মিনিট দুরে আছি.
আমি: (আমার ভয়ে জিভ শুকিয়ে এলো) সুমিত ভাই বিশাল বিপদে পরে গেছি. যেভাবে হোক এখানে আস. এই রাজবাড়ি তা ভালো নয়. মেন রোড থেকে রাজ বাড়ি আসার পথে একটা মাঠ পরে ওখানে একটা গাছের পেছনে লুকিয়ে আছি আমরা.
সুমিত: সার কোনো চিন্তা করবেন না. আমি সেরকম হলে পুলিশ কেও ইনফর্ম করব. আমি যত তারাতারি সম্ভব আসছি.
আমি আসতে আসতে গাছ তার ওখানে চলে গেলাম. দীপার তখন ড্রেস চেঞ্জ করা হয়ে গেছে, সারি তা ও বাগে ঢুকিয়ে নিয়েছে. হঠাত একটা জিপ এর আওয়াজ. আমি আর দীপা ওখানেই গাছটার পেছনে বসে পরলাম. জিপটা মাঠের কাছে এসে থামল. জিপ থেকে নেমে আসলো শক্তি আর রাজেন্দের. ওরা কিছুটা মাঠের মধ্যে নেমে আসলো. আমাদের দুজনের ই বুকটা ধরাশ ধরাশ করে কাপতে লাগলো. কিছুটা আসার পর ওরা থমকে দাড়ালো আর আবার পেছন ফিরে গিয়ে জিপ এ উঠে গেল আর সোজা চলে গেল. এদিকে আমার মনে এই চিন্তা আসতে লাগলো যে এখান থেকে এয়ারপোর্ট যাওয়ার রাস্তায় না ওরা ধরে ফেলে. ভরসা একজন ই সুমিত. লোকাল ছেলে বাচলে ওই পারবে বাচাতে. ওরা যাওয়ার পর দীপা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
দীপা: আচ্ছা আমরা চরের মত পালাচ্ছি কেন?
আমি: দীপা একবার জায়গাটা ছাড়তে পারি তোমায় সব বলব.
দীপা: না এখন ই বল.
আমি: দীপা কি করে বলি তোমায়. ওদের কু মতলব ছিল. ওদের পরিবারের ওপর অভিশাপ ছিল, এর আগে দুই ছেলের বিয়ের রাতে মৃত্যু হয়েছে. বংশরক্ষা করার জন্য তোমায় বেছে নিয়েছিল.
দীপা: (প্রচন্ড ভয়ে ঘামতে শুরু করে দিল)
আমি: ভয় পেয়োনা আমি তো আছি.
আবার একটা জিপ এর আওয়াজ. আমরা আবার লুকিয়ে গেলাম. এবার জিপ থেকে নেমে এলো সুমিত. আমি আর দীপা প্রানপনে ছুটতে লাগলাম. কোনরকমে জিপে ওঠা মাত্র ও গাড়ি স্টার্ট করে দিল. আমি ওকে বললাম যে শক্তি কিছুক্ষণ আগে গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছে. ও মেন রোড থেকে গাড়িটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিল. এটা বেশ ঘুরপথ. আমরা প্রায় ৩০ মিনিট চলার পর একটা শহরে এসে পৌছালাম. সুমিত আমার দিকে তাকিয়ে বলল
সুমিত: স্যার আর ভয় নেই আমরা জয়পুরে এসে গেছি, আর ১৫ মিনিট এর রাস্তা. এখানে ওরা আমাদের দেখতে পেলেও কিছু করতে পারবেনা.
আমি আর দীপা দুজনেই হাপ ছেড়ে বাচলাম.
চারিদিকে সার দেওয়া উচু অট্টালিকা. খুব মনটা খারাপ লাগছিল. এত সুন্দর শুনেছি রাজস্থান অথচ পরলাম বাজে লোকেদের খপ্পরে. একবার মনে মনে বলে দিলাম বিদায় রাজস্থান, তবে আবার আসবো একদিন. দীপার দিকে তাকালাম ও এখন অনেক শান্ত ভয়টা কেটে গেছে পুরোপুরি. আমার বুকে মাথাটা রেখে চোখটা বন্ধ করেছে. কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা এয়ারপোর্ট এ এলাম. ভেতরে যখন ঢুকলাম ৬:৪৫ প্লেন ৭:০০ টায়. বিদায় জানালাম সুমিত কে, কারণ এখানে এত লোকের মাঝে ভয় কিছুই নেই. এবার সামনের গেট টায় গিয়ে দাড়ালাম ওখানে চেকিং হবে. পেছন ঘুরে দেখি আমার ঠিক পেছনেই দাড়িয়ে আছে মান্ভেন্দের, রাজেন্দের আর শক্তি. মুহুর্তের জন্য আমার হার্ট এটাক হওয়ার উপক্রম হলো. নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে সামনে দেখলাম, ওখানে তখন আমার চেকিং চলছে, বাস আর এক পা এগোলেই গেট এর ওপাশে. আমি পা তা বাড়াতে যাচ্ছি পেছন থেকে আমার কাধটা ধরে কেউ একটা ভিশন জোরে টান মারলো. ঘুরে দেখি মান্ভেন্দের. আমার দিকে তাকিয়ে বলল
মান্ভেন্দের: আজকের মত বিদায়. তবে দেখা একদিন হবেই. আমার ব্রহ্মচর্য নয়তো ভাঙ্গবে কি করে. বিধির বিধান কেউ ভাঙ্গতে পারেনা. রাজকুমারী আমার সেতার তোমার অপেক্ষায় থাকবে. (তারপর শীতল কোমল সেই দৃষ্টি.)
আমরা সামনে এগিয়ে গেলাম. পেছন থেকে ও চেচিয়ে বলল রাজকুমারী তোমার অপেক্ষায় থাকব আমি, তুমি এসে আমার ব্রহ্মচর্য ভাঙ্গবে.
আমরা প্লেন এ উঠে গেলাম. কখন যে প্লেন তা চেন্নাই তে পৌছালো মনে নেই. কুরুভিল্লা কে বলে রেখেছিলাম, ও আমাদের কোয়ার্টার এ পৌছে দিল. গাড়ি থেকে নেমে একবার ভালো করে কুরুভিল্লার দিকে দেখলাম, হা ও কুরুভিল্লা তাহলে সত্যি ই আমরা চেন্নাই তে আছি. জ্যোতি এগিয়ে আসছে আমার দিকে, সেই হাসি সেই উদ্দীপনা, বকবক করা স্বভাব. ওহহ এরা আমার আপনজন নিজের লোক. এরা আমার ই আত্মীয়. আমি জ্যোতি কে জড়িয়ে ধরলাম. ও কিছুটা ঘাব্রেই গেল. ও খাবার রেডি রেখেছিল, আমরা তারাতারি খেয়ে সুয়ে পরলাম. জানি কাল নতুন সকাল, নতুন দিন. খালি ওই সাদা সারি তা স্মৃতি হিসেবে থেকে গেল.
পরদিন যখন ঘুম থেকে উঠি দেখি দীপা অনেকক্ষণ উঠে গেছে. ও আজ খুব শান্ত. চুপ করে বারান্দায় দাড়িয়ে আছে. আমি গিয়ে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম. ও প্রচন্ড ভয় পেয়ে আটকে উঠলো. এরকম কখনো হয়নি. ও কি এখনো ওই স্মৃতি গুলো ভুলতে পারেনি. আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম
আমি: সব ভুলে যাও দীপা. ওটা একটা স্বপ্ন ছিল. কেউ দায়ী নয় ওর জন্য. আমি কি জানতাম জায়গাটা ওরকম বলে.
দীপা: এমা সমু এরকম কেন বলছ. আসলে আমি এখনো ওই ঘটনা গুলো ভুলতে পারিনি. আমায় একটু সময় দাও প্লিজ.
আমি জানি ও ভিশন ভাবে আতঙ্কে ভুগেছিল. সত্যি ই ওকে সময় দেওয়া উচিত. আজ আর অফিস এ কোনো কাজ করবনা শুধু তমাল সেজে কথা বলব আর ওকে সুস্থ করে তুলব.
আমি: দীপা তুমি ইন্টারনেট তা খুলে কিছু কর আমি অফিস যাই. আমি মাঝে মাঝে ফোন করব.
আমি অফিস এ বেরিয়ে গেলাম. কম্পিউটার থেকে লগ ইন করলাম. কিন্তু অদ্ভুত ভাবে দীপা নেই অনলাইন. আমি ভাবলাম কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি তারপর দেখা যাবে. প্রায় ১ ঘন্টা হয়ে গেল দীপা আর অনলাইন হলনা. আমি ভাবলাম একবার ওকে ফোন করে দেখি. আমি ফোন করলাম.
আমি: হ্যালো দীপা কি করছ এখন?
দীপা: খুব উদাসীন ভাবে কিছু নয় এমনি ই বসে আছি.
আমি: লক্ষিটি মন খারাপ করনা, আমি আসছি এক্ষুনি বাড়িতে.
দীপা: হা প্লিজ এস, ভালো লাগছেনা আমার একা একা.
আমি ১০ মিনিট এর মধ্যে বাড়ি পৌছালাম. দেখি দীপা সুয়ে আনমনে কিছু ভাবছে. আমি কাছে গিয়ে বললাম
আমি: দীপা আমায় সব খুলে বল কি হয়েছে তোমার? আমি আছি তো. বল প্লিজ.
দীপা: সমু ভালো লাগছেনা কিছু. কালকের ঘটনা তা মনে পরে যাচ্ছে. ওরা যদি সত্যি ই আমাদের খুঁজে বার করে কি হবে গো?
আমি: ধুর পাগল. এখানে কেন রাজস্থানেও ওরা নিজেদের জায়গার বাইরে কিছু করতে পারবেনা. জানো কাল সুমিত পুলিশ কে ইনফর্ম করেছিল. ধরে নাও আমরা বাড়ি থেকে বেরোতে পারিনি. আমার একটা মেসেজ এই পুলিশ চলে আস্ত আর আমাদের ওখান থেকে বার করে নিয়ে যেত.
দীপা: ওরা ওরকম কেন করলো বলত. আমরা তো ওদের কোনো ক্ষতি করিনি.
আমি: দীপা যা হয়েছে ভুলে যাও প্লিজ.
দীপা: না সমু আমায় সব বল. ওই লোকটা মান্ভেন্দের না কি ও কি চায় কেন আমায় এরকম বলল এয়ারপোর্ট এ.
আমি: দীপা, ঠিক বোঝাতে পারবনা. এটাই বোঝো যে ওদের খুব বদ মতলব ছিল. ও তোমায় ভোগ করতে চেয়েছিল. তুমি ভুলে যাও এটা.
দীপা: সমু যদি এরপর কখনো ওরা আমাদের মুখোমুখি হয় তাহলে?
আমি: আমি লড়াই করব ওদের সাথে. আরে কাল আমিও খুব ঘাবড়ে গেছিলাম. ওদের সাথে সংঘাতে গেলে ওরা নিজের থেকেই ভয় পেয়ে যেত.
দীপা: সমু আমায় একটু আদর করবে, আমার ভালো লাগছেনা কিছু. তুমি জানো যখন ই আমার মনে কোনো বাজে চিন্তা আসে তখন ই আমি তোমার সঙ্গ চাই.
আমি: দীপা আদর তো সবসময় ই করতে পারি, কিন্তু এই বাপার তা ভুলতে গেলে আগে আমাদের অন্য কোনো বাপার নিয়ে চিন্তা করতে হবে.
দীপা: কি নিয়ে চিন্তা করব বল?
আমি: দীপা এখান থেকে যাওয়ার আগে তুমি আমায় রোজ বলতে কি করে কল্পনা করতে হয় তা শিখিয়ে দিতে. আজ তোমায় অতি শেখাবো.
দীপা: (খুব আনন্দ পেয়ে লাফিয়ে উঠে বসলো আর আমায় জড়িয়ে ধরে) আরে আমি তো ভুলেই গেছিলাম, হা আজ তোমায় শেখাতেই হবে কি করে আমি কল্পনা করব তা. আজ কিন্তু শেখাতেই হবে. (আমার বুকে কিল মারতে মারতে সেই অতি পুরনো সেক্সি হাসিটা)
হা আমার পুরনো দীপা আবার ফিরে এসেছে. আমার খুব ভালো লাগলো.