01-07-2020, 08:10 PM
(Upload No. 114)
দীপ বললো, “গল্পটা তো এখনও সেখানে যায় নি। দাঁড়াও সে কাহিনীও আসছে। আচ্ছা শোনো, মান্তুর সাথে এমন খুনসুটি ফষ্টিনষ্টি আমার প্রায় সব সময়ই হতো। কিন্তু আমি এর ভেতরেও লাগাম টেনে রাখতাম। কারণ মান্তুকে আমার যতোই ভালো লাগুক, ওকে কখনোই আমার জীবনসঙ্গী করতে পারবো না। তাহলে মাসিমা মেশোমশাইয়ের মনের ওপর সাংঘাতিক আঘাত দিয়ে ফেলবো আমি। সেটা আমি কিছুতেই পারবোনা। আমি যে আজো বেঁচে আছি, ব্যাঙ্কে কাজ করছি, এ সব কিছুই সম্ভব হয়েছে একমাত্র মাসিমার জন্যেই । সুতরাং আমার জীবনের বিনিময়েও মাসিমার বুকে তেমন আঘাত আমি দিতে পারবো না। তাই মান্তুর সাথে একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব আমি সব সময় রেখে চলার চেষ্টা করতাম।
একদিন তুরা গিয়ে ওকে দেখে বেশ অবাক হলাম। মুখ চোখ বেশ শুকনো শুকনো লাগছিলো। এর আগের শনিবারে আমি তুরা যেতে পারিনি। অফিসের কাজ বেশী ছিলো বলে বাসটা ধরতে পারিনি। আমাকে পড়ার ঘরে একা পেয়ে মান্তু আমার জন্যে চা নিয়ে এসে বললো, ‘দীপদা, আপনার সাথে একটা কথা ছিলো আমার। আপনার সাজেশন চাই একটা ব্যাপারে’।
আমি ওর হাত থেকে চায়ের কাপটা নিয়ে বললাম, ‘কি ব্যাপার বলো তো? সামথিং সিরিয়াস’?
মান্তু বললো, ‘অবশ্যই সিরিয়াস, কিন্তু ব্যাপারটা একমাত্র আপনি ছাড়া আমি আর কাউকেই জানাতে পারবো না’।
আমি উৎসুক হয়ে বললাম, ‘বেশ তো, বলো দেখি, শুনি কী ব্যাপার’।
মান্তু প্রায় ফিসফিস করে বললো, ‘বড়দার সঙ্গে হাবিলার একটা বাজে সম্পর্ক চলছে’।
আমি ওর কথা শুনে চমকে উঠলাম। হাবিলা ছিলো ওদের বাড়ীর কাজের মেয়ে। কম বয়সী মেয়েটা গায়ে গতরে বেশ ভালো দেখতে ছিলো। গারো মেয়ে হলেও ওদের পরিবার বাংলাদেশ থেকে কয়েক বছর আগেই এদেশে এসেছে। বাংলাও খুব ভালো বলতে পারতো। সে মেয়েটার সাথে ওর বড়দার বাজে সম্পর্ক বলতেই আমি ব্যাপারটা মোটামুটি আন্দাজ করলাম কী হতে পারে। তবুও ঠিকঠাক জানার জন্যে বললাম, ‘তুমি কি করে জানলে সে কথা’?
মান্তু বললো, ‘গত সপ্তাহে তো আপনি আসেন নি। এ বুধবারের আগের বুধবার আমি বড়দার ঘরে কিছু একটা রাখতে গিয়েই... ঈশ ভাগ্যিস আমি হুট করে ঢুকে পরিনি। তাহলে তো একেবারে ডুবে মরার মতো অবস্থা হয়ে যেতো আমার। ওর ঘরের দরজার কাছে যেতেই কেমন একটা অদ্ভুত শব্দ শুনে আমার পা থেমে গেলো। ঘরের ভেতর থেকে কীসের এমন শব্দ হতে পারে ভাবতে ভাবতে পা টিপে টিপে দরজার ভেতরে উঁকি দিলাম। তারপর যা দেখলাম দীপদা, তাতে আমার অজ্ঞান হবার মতো অবস্থা’ I বলে মান্তু মুখ নিচু করে চুপ হয়ে গেলো।
বেশ কিছু সময় পার হয়ে যাবার পরেও কিছু বলছে না দেখে আমি এক চুমুক চা খেয়ে বললাম, ‘কী দেখলে সেটা বলতে লজ্জা হলে থাক মান্তু। আমি মোটামুটি আন্দাজ করতে পারছি’।
মান্তু বললো, ‘কিন্তু কথাটা কাউকে বলতে না পেরে আমার বুকের ভেতর ক’দিন ধরে যে একটা অসহ্য অস্বস্তি হচ্ছে, সেটা আপনাকে না বললে কমবে না যে দীপদা, কি করবো বলুন’।
আমি ওর মুখের দিকে চেয়ে বুঝলাম নিশ্চয়ই ও ভেতরে ভেতরে খুব বড় একটা কষ্ট চেপে রেখেছে। আর তাই আসবার পর থেকে ওর মুখটাকে শুকনো শুকনো দেখাচ্ছিলো। আমি ভেবে দেখলাম লজ্জা কাটিয়ে উঠে আমাকে যদি ও ঘটনাটা বলে বোঝাতে পারে তাহলে ওর বুকটা একটু হালকা হবে। তাই ওকে বললাম, ‘ঠিক আছে, তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই মান্তু। তুমি ধীরে সুস্থে যেটুকু বলতে পারো তাই বলো। তাহলে তোমার বুকটা একটু হলেও হালকা হবে’।
মান্তু জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে বেশ কয়েকবার আমার মুখের দিকে দেখে বার বার মাথা নিচু করে কিছু একটা ভাবছে। বলতে চেয়েও যেন আমাকে বলে উঠতে পারছেনা ঘটণাটা। আমি ওর অবস্থাটা বুঝতে পারছিলাম। কিন্তু ওকে আরো একটু সময় নিয়ে মনস্থির করার সুযোগ দিয়ে আমিও ওর বড়দার কথা ভাবতে লাগলাম। ওর বড়দা বাবুন আমার চেয়ে প্রায় বছর দুয়েকের ছোট। বি এস সি করে কয়েকমাস আগে তুরাতেই একটা হায়ার সেকেণ্ডারী কলেজে সাইন্স টিচার হিসেবে জয়েন করেছে। ছেলেটা বেশ বুদ্ধিমান আর ওর ব্যবহারও বেশ মিষ্টি। আমাকেও নিজের দাদার মতোই রেস্পেক্ট করে। সে এটা সাময়িক উত্তেজনার বশে করেছে না অন্য কোনো ব্যাপার সেটা তো বাবুনের সঙ্গে কথা না বললে বোঝা যাবেনা। কিন্তু এমন একটা ব্যাপার নিয়ে ওর সাথে আলোচনা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে আমার মনে হয় হয়তো পয়সার লোভ দেখিয়ে মেয়েটাকে ওসব করতে রাজী করিয়েছে। কিংবা এ-ও হতে পারে মেয়েটাই পয়সার লোভে ওর সাথে এসব করছে। কিন্তু যা-ই করুক না কেন কোনো কেলেঙ্কারী হবার মতো কাঁচা কাজ বোধহয় বাবুন করবে না। যদি গুদে বাড়া ঢুকিয়ে মেয়েটাকে চোদেও তাহলে সে প্রিকশান না নিয়ে সেটা করবে না। কাজের মেয়ের সাথে মান্তু তাকে যা করতে দেখেছে তাতে যদি মেয়েটা কোনো আপত্তি না করে থাকে, তাহলে কেলেঙ্কারী হবার সম্ভাবনা কম। বড় জোড় কিছু টাকা পয়সা গচ্চা যেতে পারে। আর তেমন হলে বাবুন নিজেই সেটা সামাল দিতে পারবে। তাই আমার মনে হলো আপাততঃ এতো সিরিয়াসলি না নিলেও চলবে। আর তা ছাড়া এ ব্যাপারে যদি কোনো সাজেশান দেবার প্রয়োজন হয় তো সে সাজেশান দিতে হবে বাবুনকে। মান্তুকে সাজেশান দেবার কোনো মানেই হয় না। কারণ ও কখনোই বাবুনের সামনা সামনি হয়ে এ ব্যাপারে কোনো কথাই বলতে পারবে না। আর মা, বাবা বা দিদিকেও নিজে মুখে কিছু বলতে পারবেনা। তাই আমি ভাবলাম আপাততঃ ওর মনের বোঝাটাকে হালকা করে দেওয়াই সবচেয়ে বেশী দরকার। বাবুনের ব্যাপারটা পরেও ভেবে দেখা যাবে। মান্তুর মনটা খুব সরল। ওর মনের মধ্যে কোনও জটিলতা বা কূটিলতা নেই। ও নিশ্চয়ই ওর বড়দাকে ওদের কাজের মেয়েটার সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখেছে। তারপর থেকে এ’কদিনের মধ্যে কাউকে কিছু বলতে না পেরে ও ভেতরে ভেতরে খুব মানসিক কষ্ট পাচ্ছে। তাই ওর হিতৈষী হিসেবে এখন ওর মনের সেই মানসিক কষ্টটার হাত থেকে ওকে মুক্তি করাই আমার আপাত প্রধান কাজ বলে মনে হলো।
তাই শেষ হয়ে যাওয়া চায়ের কাপটা টেবিলে রেখে ওর দিকে মুখ তুলে তাকালাম। মান্তু তখনও আমাকে কিছু বলে উঠতে পারছিলো না। বড় বড় শ্বাস নিয়ে প্রায় হাঁপাতে শুরু করেছে। বুঝতে কষ্ট হয় নি লজ্জা সংকোচ কাটিয়ে আমার কাছে ঘটনাটা প্রকাশ করবার মতো মনের জোর ও কিছুতেই সংগ্রহ করে উঠতে পারছিলো না।
আমি তাই নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে ওর কাছে গিয়ে ওর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বললাম, ‘মান্তু, আমি বুঝতে পারছি, তোমার মনের ভেতর কতোটা কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এতে তোমার তো কোনো দোষ নেই, তাইনা? তুমি সেদিন যা দেখেছো
সেসব কথা কাউকে বলতে না পেরে তোমার মনের কষ্টটা আরও বেড়ে যাচ্ছে। তাই সংকোচ ছেড়ে আমাকে খুলে বলো লক্ষ্মীটি, দেখবে তুমি অনেক সুস্থ বোধ করবে’।
মান্তু মুখ উঠিয়ে আমার দিকে তাকালো। দেখলাম ওর ঠোঁট দুটো থর থর করে কাঁপছে। তবুও মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছে না। আমি ওর মাথাটা একহাতে আমার বুকের সাথে চেপে ধরে অন্য হাতটা দিয়ে ওর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বললাম, ‘বাবুন কি হাবিলার সাথে সেক্স করছিলো’?
মান্তু আমাকে দু’হাতে আঁকড়ে ধরে প্রায় কোঁকাতে কোঁকাতে বললো, ‘না দীপদা, ঠিক তা নয়। তবে অনেকটা সেরকমই’।
আমি সেভাবেই ওর মাথাটা আমার বুকে চেপে রেখে বললাম, ‘তাহলে, কি বাবুন হাবিলাকে কিস করছিলো’?
মান্তু এবার প্রায় হাঁপাতে হাঁপাতে বললো, ‘বড়দা হাবিলাকে পেছন থেকে জাপটে ধরে ওর বুকের ও’দুটো ধরে টিপছিলো’ I বলেই লজ্জায় ও দুঃখে আমার পেটের ওপর নিজের মুখ চেপে ধরলো।
আমি বেশ কিছু সময় ওর মাথায় হাত বুলিয়ে ওর সামনের দিকে এসে দাঁড়িয়ে ওর মুখটা তুলে ধরে দেখি ওর দু’চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে।
আমি হাতের আঙুলে ওর চোখের জল মুছে দিয়ে বললাম, ‘দূর বোকা মেয়ে। এ নিয়ে তুমি চোখের জল ফেলছো কেন? এ এমন কোনো সিরিয়াস ব্যাপার নয়। তুমি নেহাত কাকতালীয় ভাবে ঘটণাটা দেখে ফেলেছো বলেই তোমার এতটা মনে লেগেছে। কিন্তু একটুখানি ভেবে দ্যাখো তো, যদি তুমি সেটা না দেখতে তাহলে? তাহলে কি তোমার মনে কোনো কষ্ট হতো? কিছুই হতো না। আচ্ছা একটা কথা বলোতো, তোমার কি মনে হয় বাবুন মেয়েটাকে জোর করে করছিলো? মেয়েটা কি বাবুকে বাঁধা দিয়েছিলো’?
মান্তু কান্নার বেগ সামলে বললো, ‘না দীপদা, হাবিলা যদি রাজী না থাকতো তাহলে তো ও চেঁচাতো বা বড়দাকে বাঁধা দিতো। কিন্তু আমি তো ওকে তেমন কিছু করতে দেখিনি’!
আমি মান্তুর গালে হাত বোলাতে বোলাতে বললাম, ‘তাহলে তো তুমি নিজেই বুঝতে পারছো যে বাবুন যা-ই করে থাকুক না কেন তাতে হাবিলাও রাজী ছিলো। সুতরাং ওরা দুজনে শুধু একে অপরের সাথে মজা করছিলো। আর কারুর কোনো ক্ষতি না করে বা অন্য কাউকে ডিস্টার্ব না করে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে যদি নিজেদের শরীর নিয়ে একটু স্ফূর্তি করে মজা পায়, তো করুক না। তুমি নিজেই তো সেদিন বললে বাবলীর কথা। সেও নাকি কতজনের সাথে এসব করেছে। কিন্তু তাতে তো এখন পর্যন্ত কোনও সমস্যা হয়নি। যখন সমস্যা হবে তখন ওরা নিজেরাই নিজেদের সমস্যা মেটাবে। তুমি ওসব ভেবে এত কষ্ট পাবে কেন’?
মান্তু তবুও কিছু একটা বলতে যেতেই আমি ওকে থামিয়ে দিয়ে বললাম, ‘আচ্ছা দাঁড়াও, কিছু বলার আগে আমার একটা কথার জবাব দাও। এই যে ঠিক এ মুহূর্তে আমরা দুজন যা করছি, মানে তুমি আর আমি যে অবস্থায় আছি, এই যে আমি তোমার মাথা আমার শরীরে চেপে ধরে তোমার গালে হাত বোলাচ্ছি, এভাবে আমাদেরকে যদি কেউ দেখে ফেলে তাহলে সে কী ভাববে তা কি আন্দাজ করতে পারছো’?
মান্তু অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়েই লজ্জায় মুখ নামিয়ে নিলো। আমিও সাথে সাথে ওকে ছেড়ে দিয়ে আমার চেয়ারে বসে বলতে লাগলাম, ‘তোমার চোখের জলের কথা ছেড়ে দিয়ে এ অবস্থায় যে আমাদের দেখবে সে নিশ্চয়ই ভাববে যে আমরা একে অন্যের শরীর নিয়ে মজা করছি’।
মান্তু অভিযোগের সুরে বললো, ‘বারে, আমরা কি ওদের মতো ওসব করছিলাম না কি’?
আমি হেঁসে বললাম, ‘যাক ছেড়ে দাও সেসব কথা। তবে তোমাকে বলছি, এ বয়সে ছেলেমেয়ে কাছাকাছি থাকলে আর তারা দুজনেই যদি শরীর টেপাটিপি করে সুখ পায় তো করুক না। তোমার তাতে ক্ষতি কী’?
‘কিন্তু তাই বলে বড়দা...’? মান্তু কথা শেষ করার আগেই আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি আমার একটা প্রশ্নের জবাব দাও তো। তুমি ঠিক কোন ব্যাপারটা মানতে পারছো না? তোমার বড়দা হাবিলাকে টিপেছে বলে? না হাবিলা তোমার বড়দাকে দিয়ে টিপিয়েছে বলে’?
মান্তু বললো, ‘দুটো ব্যাপার আবার আলাদা না কি? দুটোই আমার মনে লেগেছে’।
আমি বললাম, ‘না তুমি সত্যি বলছোনা। আমি বলছি শোনো। তোমার আসলে কোনোটাই খারাপ লাগেনি। যেটা তোমার খারাপ লেগেছে, তা হচ্ছে তোমার দেখে ফেলা টা। তুমি যদি সে ঘটনাটা দেখে না ফেলতে, তাহলে তোমার খারাপ লাগার প্রশ্নই উঠতোনা। তাই না? বাবলী যে এতজনের সাথে কী কী করেছে, এমনকি ও যে ওর ছোড়দাকে দিয়েও টেপায়, তা শুনেও তো তোমাদের বন্ধুত্ব নষ্ট হয়নি। কিন্তু যেহেতু বাবুন তোমার নিজের দাদা, তাই তোমার সেটা দেখে খারাপ লেগেছে। এ নিয়ে এতো ভাবার কিছু নেই। সব ছেলে মেয়েরই এসময় একটু আধটু এসব করতে ইচ্ছে করে। কেউ কেউ লোক লজ্জার ভয়ে বা অন্য যে কোনো কারণে সে আশাটাকে দমিয়ে রাখতে পারে। যারা পারেনা, তারা শুধু সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। সুযোগ পেলেই তারা এরকম মজা করে। যেমন বাবলী করেছে তোমাদের ক্লাসের অন্য ছেলেদের সাথে, ওই ছেলেগুলো করেছে বাবলীর সাথে। আবার বাবলী সুযোগ পেয়েছে ওর ছোড়দার সাথে করতে, আবার ওর ছোড়দাও সে সুযোগ পেয়েছে বাবলীর সাথে করতে। ঠিক তেমনি তোমার বড়দাও সুযোগ পেয়েছে হাবিলার সাথে করতে, আর হাবিলাও সুযোগ পেয়ে তোমার বড়দাকে দিয়ে টিপিয়েছে। এসব নিয়ে তুমি এতো মন খারাপ কোরো না। কিন্তু কথা হচ্ছে যে অনেকেই এসব মজা নিতে গিয়ে নিজেদের জীবনে বিপদ ডেকে আনে। বাবুন বেশ চালাক চতুর ছেলে, ও সব কিছু বুঝেই করবে বলে মনে হয়। দাদা একটু সুখ করুক না, তুমি তাতে বাদ সাধতে যাবে কেন’?
মান্তু আমার কথা শুনে মাথা নিচু করে কি যেন ভাবতে লাগলো। তারপর উঠে দরজার কাছে গিয়ে বাইরে কেউ কোথাও আছে কিনা দেখে আবার ঘুড়ে এসে নিজের জায়গায় বসে বললো, ‘কিন্তু দীপদা, যদি সত্যি কোনো বিপদ আপদের মুখ পড়ে বড়দা? তাহলে কি ওই কাজের মেয়েটাকে বিয়ে করবে’!
আমি বললাম, ‘তোমার বড়দার যদি ভালো লাগে করবে। তাছাড়া তেমন ঘটনা যখন হবে তখন তার সমাধান খুঁজে বেড় করতে হবে। আর তার দায়িত্ব থাকবে তোমার বড়দারই। তার দায় তোমার কখনো হবে না। সো রিল্যাক্স এন্ড ফরগেট হোয়াট এভার ইউ হ্যাভ সীন। আর এ নিয়ে মনে কোনো কষ্ট রেখো না। আর আমার পক্ষেও এর কোনো সমাধান বেড় করা এ মুহূর্তে সম্ভব নয়। বড় জোর মাসিমা মেশোমশাইকে হাবিলাকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেবার কথা বলা ছাড়া আমি আর কিছুই করতে পারবোনা। এমনটা তুমি নিজেও করতে পারো। কিন্তু তাতে করে মাসিমা বা তোমাদের ওপরে গৃহস্থালির কাজের চাপ আরেকটু বেড়ে যাবে। আর সে সময় তোমার মা বাবাও প্রশ্ন তুলতে পারেন যে হাবিলাকে ছাড়িয়ে দেবার কথা কেন বলছি আমরা। তখন তুমি বা আমি কেউই তো আসল কারণটা তাদেরকে বলতে পারবো না। তাই আপাতত চলতে দাও, পরে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে’।
____________________________
দীপ বললো, “গল্পটা তো এখনও সেখানে যায় নি। দাঁড়াও সে কাহিনীও আসছে। আচ্ছা শোনো, মান্তুর সাথে এমন খুনসুটি ফষ্টিনষ্টি আমার প্রায় সব সময়ই হতো। কিন্তু আমি এর ভেতরেও লাগাম টেনে রাখতাম। কারণ মান্তুকে আমার যতোই ভালো লাগুক, ওকে কখনোই আমার জীবনসঙ্গী করতে পারবো না। তাহলে মাসিমা মেশোমশাইয়ের মনের ওপর সাংঘাতিক আঘাত দিয়ে ফেলবো আমি। সেটা আমি কিছুতেই পারবোনা। আমি যে আজো বেঁচে আছি, ব্যাঙ্কে কাজ করছি, এ সব কিছুই সম্ভব হয়েছে একমাত্র মাসিমার জন্যেই । সুতরাং আমার জীবনের বিনিময়েও মাসিমার বুকে তেমন আঘাত আমি দিতে পারবো না। তাই মান্তুর সাথে একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব আমি সব সময় রেখে চলার চেষ্টা করতাম।
একদিন তুরা গিয়ে ওকে দেখে বেশ অবাক হলাম। মুখ চোখ বেশ শুকনো শুকনো লাগছিলো। এর আগের শনিবারে আমি তুরা যেতে পারিনি। অফিসের কাজ বেশী ছিলো বলে বাসটা ধরতে পারিনি। আমাকে পড়ার ঘরে একা পেয়ে মান্তু আমার জন্যে চা নিয়ে এসে বললো, ‘দীপদা, আপনার সাথে একটা কথা ছিলো আমার। আপনার সাজেশন চাই একটা ব্যাপারে’।
আমি ওর হাত থেকে চায়ের কাপটা নিয়ে বললাম, ‘কি ব্যাপার বলো তো? সামথিং সিরিয়াস’?
মান্তু বললো, ‘অবশ্যই সিরিয়াস, কিন্তু ব্যাপারটা একমাত্র আপনি ছাড়া আমি আর কাউকেই জানাতে পারবো না’।
আমি উৎসুক হয়ে বললাম, ‘বেশ তো, বলো দেখি, শুনি কী ব্যাপার’।
মান্তু প্রায় ফিসফিস করে বললো, ‘বড়দার সঙ্গে হাবিলার একটা বাজে সম্পর্ক চলছে’।
আমি ওর কথা শুনে চমকে উঠলাম। হাবিলা ছিলো ওদের বাড়ীর কাজের মেয়ে। কম বয়সী মেয়েটা গায়ে গতরে বেশ ভালো দেখতে ছিলো। গারো মেয়ে হলেও ওদের পরিবার বাংলাদেশ থেকে কয়েক বছর আগেই এদেশে এসেছে। বাংলাও খুব ভালো বলতে পারতো। সে মেয়েটার সাথে ওর বড়দার বাজে সম্পর্ক বলতেই আমি ব্যাপারটা মোটামুটি আন্দাজ করলাম কী হতে পারে। তবুও ঠিকঠাক জানার জন্যে বললাম, ‘তুমি কি করে জানলে সে কথা’?
মান্তু বললো, ‘গত সপ্তাহে তো আপনি আসেন নি। এ বুধবারের আগের বুধবার আমি বড়দার ঘরে কিছু একটা রাখতে গিয়েই... ঈশ ভাগ্যিস আমি হুট করে ঢুকে পরিনি। তাহলে তো একেবারে ডুবে মরার মতো অবস্থা হয়ে যেতো আমার। ওর ঘরের দরজার কাছে যেতেই কেমন একটা অদ্ভুত শব্দ শুনে আমার পা থেমে গেলো। ঘরের ভেতর থেকে কীসের এমন শব্দ হতে পারে ভাবতে ভাবতে পা টিপে টিপে দরজার ভেতরে উঁকি দিলাম। তারপর যা দেখলাম দীপদা, তাতে আমার অজ্ঞান হবার মতো অবস্থা’ I বলে মান্তু মুখ নিচু করে চুপ হয়ে গেলো।
বেশ কিছু সময় পার হয়ে যাবার পরেও কিছু বলছে না দেখে আমি এক চুমুক চা খেয়ে বললাম, ‘কী দেখলে সেটা বলতে লজ্জা হলে থাক মান্তু। আমি মোটামুটি আন্দাজ করতে পারছি’।
মান্তু বললো, ‘কিন্তু কথাটা কাউকে বলতে না পেরে আমার বুকের ভেতর ক’দিন ধরে যে একটা অসহ্য অস্বস্তি হচ্ছে, সেটা আপনাকে না বললে কমবে না যে দীপদা, কি করবো বলুন’।
আমি ওর মুখের দিকে চেয়ে বুঝলাম নিশ্চয়ই ও ভেতরে ভেতরে খুব বড় একটা কষ্ট চেপে রেখেছে। আর তাই আসবার পর থেকে ওর মুখটাকে শুকনো শুকনো দেখাচ্ছিলো। আমি ভেবে দেখলাম লজ্জা কাটিয়ে উঠে আমাকে যদি ও ঘটনাটা বলে বোঝাতে পারে তাহলে ওর বুকটা একটু হালকা হবে। তাই ওকে বললাম, ‘ঠিক আছে, তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই মান্তু। তুমি ধীরে সুস্থে যেটুকু বলতে পারো তাই বলো। তাহলে তোমার বুকটা একটু হলেও হালকা হবে’।
মান্তু জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে বেশ কয়েকবার আমার মুখের দিকে দেখে বার বার মাথা নিচু করে কিছু একটা ভাবছে। বলতে চেয়েও যেন আমাকে বলে উঠতে পারছেনা ঘটণাটা। আমি ওর অবস্থাটা বুঝতে পারছিলাম। কিন্তু ওকে আরো একটু সময় নিয়ে মনস্থির করার সুযোগ দিয়ে আমিও ওর বড়দার কথা ভাবতে লাগলাম। ওর বড়দা বাবুন আমার চেয়ে প্রায় বছর দুয়েকের ছোট। বি এস সি করে কয়েকমাস আগে তুরাতেই একটা হায়ার সেকেণ্ডারী কলেজে সাইন্স টিচার হিসেবে জয়েন করেছে। ছেলেটা বেশ বুদ্ধিমান আর ওর ব্যবহারও বেশ মিষ্টি। আমাকেও নিজের দাদার মতোই রেস্পেক্ট করে। সে এটা সাময়িক উত্তেজনার বশে করেছে না অন্য কোনো ব্যাপার সেটা তো বাবুনের সঙ্গে কথা না বললে বোঝা যাবেনা। কিন্তু এমন একটা ব্যাপার নিয়ে ওর সাথে আলোচনা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে আমার মনে হয় হয়তো পয়সার লোভ দেখিয়ে মেয়েটাকে ওসব করতে রাজী করিয়েছে। কিংবা এ-ও হতে পারে মেয়েটাই পয়সার লোভে ওর সাথে এসব করছে। কিন্তু যা-ই করুক না কেন কোনো কেলেঙ্কারী হবার মতো কাঁচা কাজ বোধহয় বাবুন করবে না। যদি গুদে বাড়া ঢুকিয়ে মেয়েটাকে চোদেও তাহলে সে প্রিকশান না নিয়ে সেটা করবে না। কাজের মেয়ের সাথে মান্তু তাকে যা করতে দেখেছে তাতে যদি মেয়েটা কোনো আপত্তি না করে থাকে, তাহলে কেলেঙ্কারী হবার সম্ভাবনা কম। বড় জোড় কিছু টাকা পয়সা গচ্চা যেতে পারে। আর তেমন হলে বাবুন নিজেই সেটা সামাল দিতে পারবে। তাই আমার মনে হলো আপাততঃ এতো সিরিয়াসলি না নিলেও চলবে। আর তা ছাড়া এ ব্যাপারে যদি কোনো সাজেশান দেবার প্রয়োজন হয় তো সে সাজেশান দিতে হবে বাবুনকে। মান্তুকে সাজেশান দেবার কোনো মানেই হয় না। কারণ ও কখনোই বাবুনের সামনা সামনি হয়ে এ ব্যাপারে কোনো কথাই বলতে পারবে না। আর মা, বাবা বা দিদিকেও নিজে মুখে কিছু বলতে পারবেনা। তাই আমি ভাবলাম আপাততঃ ওর মনের বোঝাটাকে হালকা করে দেওয়াই সবচেয়ে বেশী দরকার। বাবুনের ব্যাপারটা পরেও ভেবে দেখা যাবে। মান্তুর মনটা খুব সরল। ওর মনের মধ্যে কোনও জটিলতা বা কূটিলতা নেই। ও নিশ্চয়ই ওর বড়দাকে ওদের কাজের মেয়েটার সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখেছে। তারপর থেকে এ’কদিনের মধ্যে কাউকে কিছু বলতে না পেরে ও ভেতরে ভেতরে খুব মানসিক কষ্ট পাচ্ছে। তাই ওর হিতৈষী হিসেবে এখন ওর মনের সেই মানসিক কষ্টটার হাত থেকে ওকে মুক্তি করাই আমার আপাত প্রধান কাজ বলে মনে হলো।
তাই শেষ হয়ে যাওয়া চায়ের কাপটা টেবিলে রেখে ওর দিকে মুখ তুলে তাকালাম। মান্তু তখনও আমাকে কিছু বলে উঠতে পারছিলো না। বড় বড় শ্বাস নিয়ে প্রায় হাঁপাতে শুরু করেছে। বুঝতে কষ্ট হয় নি লজ্জা সংকোচ কাটিয়ে আমার কাছে ঘটনাটা প্রকাশ করবার মতো মনের জোর ও কিছুতেই সংগ্রহ করে উঠতে পারছিলো না।
আমি তাই নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে ওর কাছে গিয়ে ওর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বললাম, ‘মান্তু, আমি বুঝতে পারছি, তোমার মনের ভেতর কতোটা কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এতে তোমার তো কোনো দোষ নেই, তাইনা? তুমি সেদিন যা দেখেছো
সেসব কথা কাউকে বলতে না পেরে তোমার মনের কষ্টটা আরও বেড়ে যাচ্ছে। তাই সংকোচ ছেড়ে আমাকে খুলে বলো লক্ষ্মীটি, দেখবে তুমি অনেক সুস্থ বোধ করবে’।
মান্তু মুখ উঠিয়ে আমার দিকে তাকালো। দেখলাম ওর ঠোঁট দুটো থর থর করে কাঁপছে। তবুও মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছে না। আমি ওর মাথাটা একহাতে আমার বুকের সাথে চেপে ধরে অন্য হাতটা দিয়ে ওর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বললাম, ‘বাবুন কি হাবিলার সাথে সেক্স করছিলো’?
মান্তু আমাকে দু’হাতে আঁকড়ে ধরে প্রায় কোঁকাতে কোঁকাতে বললো, ‘না দীপদা, ঠিক তা নয়। তবে অনেকটা সেরকমই’।
আমি সেভাবেই ওর মাথাটা আমার বুকে চেপে রেখে বললাম, ‘তাহলে, কি বাবুন হাবিলাকে কিস করছিলো’?
মান্তু এবার প্রায় হাঁপাতে হাঁপাতে বললো, ‘বড়দা হাবিলাকে পেছন থেকে জাপটে ধরে ওর বুকের ও’দুটো ধরে টিপছিলো’ I বলেই লজ্জায় ও দুঃখে আমার পেটের ওপর নিজের মুখ চেপে ধরলো।
আমি বেশ কিছু সময় ওর মাথায় হাত বুলিয়ে ওর সামনের দিকে এসে দাঁড়িয়ে ওর মুখটা তুলে ধরে দেখি ওর দু’চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে।
আমি হাতের আঙুলে ওর চোখের জল মুছে দিয়ে বললাম, ‘দূর বোকা মেয়ে। এ নিয়ে তুমি চোখের জল ফেলছো কেন? এ এমন কোনো সিরিয়াস ব্যাপার নয়। তুমি নেহাত কাকতালীয় ভাবে ঘটণাটা দেখে ফেলেছো বলেই তোমার এতটা মনে লেগেছে। কিন্তু একটুখানি ভেবে দ্যাখো তো, যদি তুমি সেটা না দেখতে তাহলে? তাহলে কি তোমার মনে কোনো কষ্ট হতো? কিছুই হতো না। আচ্ছা একটা কথা বলোতো, তোমার কি মনে হয় বাবুন মেয়েটাকে জোর করে করছিলো? মেয়েটা কি বাবুকে বাঁধা দিয়েছিলো’?
মান্তু কান্নার বেগ সামলে বললো, ‘না দীপদা, হাবিলা যদি রাজী না থাকতো তাহলে তো ও চেঁচাতো বা বড়দাকে বাঁধা দিতো। কিন্তু আমি তো ওকে তেমন কিছু করতে দেখিনি’!
আমি মান্তুর গালে হাত বোলাতে বোলাতে বললাম, ‘তাহলে তো তুমি নিজেই বুঝতে পারছো যে বাবুন যা-ই করে থাকুক না কেন তাতে হাবিলাও রাজী ছিলো। সুতরাং ওরা দুজনে শুধু একে অপরের সাথে মজা করছিলো। আর কারুর কোনো ক্ষতি না করে বা অন্য কাউকে ডিস্টার্ব না করে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে যদি নিজেদের শরীর নিয়ে একটু স্ফূর্তি করে মজা পায়, তো করুক না। তুমি নিজেই তো সেদিন বললে বাবলীর কথা। সেও নাকি কতজনের সাথে এসব করেছে। কিন্তু তাতে তো এখন পর্যন্ত কোনও সমস্যা হয়নি। যখন সমস্যা হবে তখন ওরা নিজেরাই নিজেদের সমস্যা মেটাবে। তুমি ওসব ভেবে এত কষ্ট পাবে কেন’?
মান্তু তবুও কিছু একটা বলতে যেতেই আমি ওকে থামিয়ে দিয়ে বললাম, ‘আচ্ছা দাঁড়াও, কিছু বলার আগে আমার একটা কথার জবাব দাও। এই যে ঠিক এ মুহূর্তে আমরা দুজন যা করছি, মানে তুমি আর আমি যে অবস্থায় আছি, এই যে আমি তোমার মাথা আমার শরীরে চেপে ধরে তোমার গালে হাত বোলাচ্ছি, এভাবে আমাদেরকে যদি কেউ দেখে ফেলে তাহলে সে কী ভাববে তা কি আন্দাজ করতে পারছো’?
মান্তু অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়েই লজ্জায় মুখ নামিয়ে নিলো। আমিও সাথে সাথে ওকে ছেড়ে দিয়ে আমার চেয়ারে বসে বলতে লাগলাম, ‘তোমার চোখের জলের কথা ছেড়ে দিয়ে এ অবস্থায় যে আমাদের দেখবে সে নিশ্চয়ই ভাববে যে আমরা একে অন্যের শরীর নিয়ে মজা করছি’।
মান্তু অভিযোগের সুরে বললো, ‘বারে, আমরা কি ওদের মতো ওসব করছিলাম না কি’?
আমি হেঁসে বললাম, ‘যাক ছেড়ে দাও সেসব কথা। তবে তোমাকে বলছি, এ বয়সে ছেলেমেয়ে কাছাকাছি থাকলে আর তারা দুজনেই যদি শরীর টেপাটিপি করে সুখ পায় তো করুক না। তোমার তাতে ক্ষতি কী’?
‘কিন্তু তাই বলে বড়দা...’? মান্তু কথা শেষ করার আগেই আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি আমার একটা প্রশ্নের জবাব দাও তো। তুমি ঠিক কোন ব্যাপারটা মানতে পারছো না? তোমার বড়দা হাবিলাকে টিপেছে বলে? না হাবিলা তোমার বড়দাকে দিয়ে টিপিয়েছে বলে’?
মান্তু বললো, ‘দুটো ব্যাপার আবার আলাদা না কি? দুটোই আমার মনে লেগেছে’।
আমি বললাম, ‘না তুমি সত্যি বলছোনা। আমি বলছি শোনো। তোমার আসলে কোনোটাই খারাপ লাগেনি। যেটা তোমার খারাপ লেগেছে, তা হচ্ছে তোমার দেখে ফেলা টা। তুমি যদি সে ঘটনাটা দেখে না ফেলতে, তাহলে তোমার খারাপ লাগার প্রশ্নই উঠতোনা। তাই না? বাবলী যে এতজনের সাথে কী কী করেছে, এমনকি ও যে ওর ছোড়দাকে দিয়েও টেপায়, তা শুনেও তো তোমাদের বন্ধুত্ব নষ্ট হয়নি। কিন্তু যেহেতু বাবুন তোমার নিজের দাদা, তাই তোমার সেটা দেখে খারাপ লেগেছে। এ নিয়ে এতো ভাবার কিছু নেই। সব ছেলে মেয়েরই এসময় একটু আধটু এসব করতে ইচ্ছে করে। কেউ কেউ লোক লজ্জার ভয়ে বা অন্য যে কোনো কারণে সে আশাটাকে দমিয়ে রাখতে পারে। যারা পারেনা, তারা শুধু সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। সুযোগ পেলেই তারা এরকম মজা করে। যেমন বাবলী করেছে তোমাদের ক্লাসের অন্য ছেলেদের সাথে, ওই ছেলেগুলো করেছে বাবলীর সাথে। আবার বাবলী সুযোগ পেয়েছে ওর ছোড়দার সাথে করতে, আবার ওর ছোড়দাও সে সুযোগ পেয়েছে বাবলীর সাথে করতে। ঠিক তেমনি তোমার বড়দাও সুযোগ পেয়েছে হাবিলার সাথে করতে, আর হাবিলাও সুযোগ পেয়ে তোমার বড়দাকে দিয়ে টিপিয়েছে। এসব নিয়ে তুমি এতো মন খারাপ কোরো না। কিন্তু কথা হচ্ছে যে অনেকেই এসব মজা নিতে গিয়ে নিজেদের জীবনে বিপদ ডেকে আনে। বাবুন বেশ চালাক চতুর ছেলে, ও সব কিছু বুঝেই করবে বলে মনে হয়। দাদা একটু সুখ করুক না, তুমি তাতে বাদ সাধতে যাবে কেন’?
মান্তু আমার কথা শুনে মাথা নিচু করে কি যেন ভাবতে লাগলো। তারপর উঠে দরজার কাছে গিয়ে বাইরে কেউ কোথাও আছে কিনা দেখে আবার ঘুড়ে এসে নিজের জায়গায় বসে বললো, ‘কিন্তু দীপদা, যদি সত্যি কোনো বিপদ আপদের মুখ পড়ে বড়দা? তাহলে কি ওই কাজের মেয়েটাকে বিয়ে করবে’!
আমি বললাম, ‘তোমার বড়দার যদি ভালো লাগে করবে। তাছাড়া তেমন ঘটনা যখন হবে তখন তার সমাধান খুঁজে বেড় করতে হবে। আর তার দায়িত্ব থাকবে তোমার বড়দারই। তার দায় তোমার কখনো হবে না। সো রিল্যাক্স এন্ড ফরগেট হোয়াট এভার ইউ হ্যাভ সীন। আর এ নিয়ে মনে কোনো কষ্ট রেখো না। আর আমার পক্ষেও এর কোনো সমাধান বেড় করা এ মুহূর্তে সম্ভব নয়। বড় জোর মাসিমা মেশোমশাইকে হাবিলাকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেবার কথা বলা ছাড়া আমি আর কিছুই করতে পারবোনা। এমনটা তুমি নিজেও করতে পারো। কিন্তু তাতে করে মাসিমা বা তোমাদের ওপরে গৃহস্থালির কাজের চাপ আরেকটু বেড়ে যাবে। আর সে সময় তোমার মা বাবাও প্রশ্ন তুলতে পারেন যে হাবিলাকে ছাড়িয়ে দেবার কথা কেন বলছি আমরা। তখন তুমি বা আমি কেউই তো আসল কারণটা তাদেরকে বলতে পারবো না। তাই আপাতত চলতে দাও, পরে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে’।
____________________________