Thread Rating:
  • 25 Vote(s) - 3.16 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery যেমন করে চাই তুমি তাই/কামদেব
#73
।।২৮।।



          দিন দশ বারো হবে বনু গেছে তবু মনে হয় কতদিন।রহিমা বেগম ছেলেকে বলে বলে আজ পাঠালেন। সায়েদমিঞা চা খেয়েই বেরিয়ে গেছে।বলদেব ডিএম বাংলোয় কাজে যোগ দিয়েছে।তাকে নিয়ে এখানে ছয়জন আছে।এর মধ্যে একদিনও দেখা হয়নি ডিএমের সঙ্গে।নানা কথা শোনা যায় তার সম্পর্কে,পুরানো অফিসে  কয়েকবার গেছেন কিন্তু কথা বলার সুযোগ হয়নি।আনিসের সঙ্গে আলাপ হল।হক সাহেব পৌছে দিয়ে গেলেন বলদেবকে।আনিস কেদেই ফেলল হকসাহেবকে দেখে।ডিএম সাহেব তার পাছায় বিড়ির ছ্যাকা দিয়েছেন।টুলে  বসে সবে একটা বিড়ী ধরিয়েছে কখন সাহেব এসে পিছনে দাড়িয়েছেন খেয়াল করেনি।মুখ থেকে বিড়ী নিয়ে পাছায় চেপে ধরে।পায়জামা ফুটা হয়ে গেছে।বলদেবের পাছায় হাত চলে যায়। এ কেমন ব্যবহার?সে অবশ্য বিড়ি খায়না আনিসকে আর বাংলোর ডিউটি করতে হবে না জেনে বিড়ির ছ্যাকা খাওয়ার সব দুঃখ ভুলে যায়।অফিসে জনা পাঁচেক স্টাফ,বড়বাবুকে দেখে উঠে দাড়ায়।বলদেবের সঙ্গে সবার আলাপ করিয়ে দিয়ে হক সাহেব আনিসকে নিয়ে চলে গেলেন। 
--তোমারে আগে কোথায় দেখেছি বলতো? একজন জিজ্ঞেস করল।
--জ্বি সেইটা স্মরণ করতে পারিনা। 
সবাই হেসে উঠে বলে,দেখছো তুমি তা ও বলবে কি করে?
হাসিতে কর্ণপাত না করে আবার জিজ্ঞেস করে,তুমি থাকো কই?
--জ্বি,দারোগা বাড়ি। 
সবাই অবাক হয়ে তাকায়।
--আমাকে আগে দেখো নাই?
--খেয়াল করতে পারতেছি না।
অন্য একজন বলে,উনি তো দারোগা বাড়ি থাকেন সুলতান সাহেব।সুলতান সাহেব ক্ষুন্ন হয়ে বললেন, যাও সবাইর পানীর গেলাস ভরে দাও।ঐখানে জাগ আছে।বাইরে কল আছে।
বলদেব সবার গেলাস ভরে দিয়ে জিজ্ঞেস করে,আর কিছু করতে হবে?
--না আর কিছু করার দরকার নাই।বাইরে টুল আছে ঐখানে বসে থাকো।একবার ঐ কোনায় স্যরের ঘরে একজন আছে তারে জিজ্ঞেস করো কিছু দরকার আছে কিনা? 
বলদেব ঘরের মধ্যে দিয়ে গিয়ে কোনার দিকে একটা ঘর,কাচের দরজা পর্দা ফেলা।স্যর কি তাহলে আছে?একটু ইতস্তত করে দরজার কাছে মুখ নিয়ে জিজ্ঞেস করে,আসতে পারি?
ভিতর থেকে মিহি গলায় জবাব আসে,আসেন।
বলদেব কাচের দরজা ঠেলে ভিতরে উকি দিতে এক ঝলক ঠাণ্ডা হাওয়ার স্পর্শ পেল। বুঝতে পারে ঘরে এসি চলতেছে। বিশাল টেবিলের পাশে এক কোনায় একটি মেয়ে বয়সে তার ছোটো হবে মনে হয়, বলদেবের দিকে চোখ তুলে দেখে বলে,কি চান?
--আপনার কিছু লাগবে?
মেয়েটি ভ্রু কুচকে ভাল করে বলদেবকে দেখে জিজ্ঞেস করে,আপনে আজ থেকে কাজে লাগলেন?
--জ্বি।আনিস মিঞার জায়গায়।
--আপনের নাম?
--জ্বি আমার নাম বলদেব।আপনে বলা বলতে পারেন।
--যদি আপনাকে দেব বলি?মেয়েটির মুখে মৃদু হাসি।আমার নাম নুসরত জাহান,স্যরের পিএ। 
--যে নাম আপনের পছন্দ সেই নামেই ডাকতে পারেন।
--শুনুন দেব,এখন আমার কিছু দরকার নাই।আপনি দুটোর সময় একবার আসবেন,চা আনতে দেবো।
--জ্বি।সেলাম করে বলদেব বেরিয়ে এল।
বাইরে টুলে বসে ভাবে তাকে কেউ আপনি-আজ্ঞে করেনি।নুসরত জাহান কেন তাকে এত সম্মান দিল?একী তার প্রাপ্য নাকি ভদ্রমহিলার শিক্ষার গুণ?
চারদিকে তাকিয়ে দেখে।বাইরে চারজন সেণ্ট্রি পাহারায়।কলাপসিবল গেট পেরিয়ে বাংলো,পাশে বাগানে জঙ্গলে ভরে আছে পরিচর্যার অভাবে।বাংলোর তিন দিকে চওড়া বারান্দা। পিছন দিকে ছোট দোতলা বাড়ী।বোঝা যায় এইটা নতুন হয়েছে। নীচে বাথরুম রান্না ঘর প্রভৃতি।অন্য দিকে পুরানো বাথরুম অফিসের লোকজন ব্যবহার করে।দোতলায় স্যর থাকেন।
বলদেবের চুপচাপ বসে থাকতে ভাল লাগে না।আগের অফিসই ছিল ভাল।বাগানের মধ্যে একটা ফুল গাছের টব কাত হয়ে পড়ে আছে।ইস কেউ তোলে নাই?গাছটা কেমন বেকে আছে বলদেবের কষ্ট হয়।লাফ দিয়ে নীচে নেমে বারান্দার একপাশে রাখে নজরে পড়ে একটা হাস্নু হানা গাছে জড়ীয়ে আছে বুনো লতা।মনে হয় গাছটার দম বন্ধ হয়ে আসছে।হাত দিয়ে লতার বাধন ছিড়ে সরিয়ে দিল।বাধন মুক্ত হয়ে গাছের ডালপালা খুশিতে যেন খিলখিলিয়ে হেসে উঠল।হঠাৎ খেয়াল হয় দূটো বেজে গেছে,তাড়াতাড়ি নুসরতের ঘরে ঢুকে বলল,ম্যাম কি আনতে দিবেন বলছিলেন? 
--এক মিনিট,বসেন।
বলদেব বসেনা চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে।নুসরত কাজ বন্ধ করে বলে,আপনাকে বসতে বললাম না?আমার সামনে কেউ দাঁড়িয়ে থাকলে আমি কাজ করতে পারি না।
বলদেব বসে পড়ে।তার দেখা মেয়েদের চেয়ে এই মেয়েটা অন্য রকম।
--কি ভাবতেছেন?মুখ গুজে কি লিখতে লিখতে নুসরত বলে।
--জ্বি ভাবতেছি না দেখতেছি।
--কি দেখতেছেন? 
--ঘরে কি আর দেখার আছে?আপনেরে দেখতেছি।
নুসরতের কলম থেমে যায়,ঠোটে মৃদু হাসি।ধীরে ধীরে মাথা তুলে অবাক হয়ে বলদেবকে দেখে।বলদেব চোখ নামিয়ে নিল,বুঝতে পারে না অন্যায় কিছু বলেছে কিনা? ব্যাগ খুলে নুসরত টাকা দিয়ে মুড়ি আর বারোভাজা মিলিয়ে আনতে দিল,সঙ্গে চা।বলদেব টাকা নিয়ে বেরোতে একজন ডাকল,এদিকে একবার শুনবে।
--জ্বি?
--ম্যাম চা আনতে বললেন?
--জ্বি।
--আমরাও চা খাবো।কতবার যাবে?ঐ কেটলিটা নিয়ে বেশি করে চা নিয়ে আসো।সবাইরে জিজ্ঞেস করো কার কি আনতে হবে?
কেউ পান কেউ সিগারেটের ফরমাস করল। বলদেব সবার টিফিন এনে দিল।কেউ কিছু জিজ্ঞেস করল না কেবল নুসরত ম্যাডাম জিজ্ঞেস করল,আপনি কিছু খাবেন না?
বলদেব হাসে।নুসরত ঠোঙ্গা উলটে বলদেবের হাতের তালুতে মুড়ি ঢেলে দিল।ম্যাডামের ব্যবহার এই অফিসের সমস্ত বিরক্তি ভুলিয়ে দিল।প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা মোটামুটি।স্যারের সঙ্গে দেখা হয়নি।স্যার অফিসে আসে আবার বাইরে বাইরেও নানা কাজে ব্যস্ত থাকে।আনিসের পাছায় বিড়ির ছ্যাকা বিষয়টা পছন্দ হয় নাই।পিয়ন হইলেও সে সহকর্মী।
বাসায় ফিরে পোষাক বদলে ভাবছে একটু প্রাণায়াম করবে কিনা? তার মধ্যেই মুমতাজ ভাবি খাবার নিয়ে হাজির।চায়ের সঙ্গে মিষ্টি দেখে বলদেব জিজ্ঞেস করে,ভাবী চায়ের সাথে মিষ্টি দিলেন?
মুচকি হেসে মুমতাজ বলে,আগে চা খাও তারপর মিষ্টি খেও।মনু আসছে,আজ পড়াবার দরকার নাই।মুমতাজ যেতে গিয়ে কি বলার জন্য ফিরে আসে।
--জ্বি কিছু বলবেন?
--তোমার টুনিঅপার খবর শুনেছো?
--জ্বি?
মুমতাজ আর দাঁড়ায় না উপরে চলে গেল।বলদেব বলদার মত তাকিয়ে থাকে মনে একটা চিন্তা ঢূকিয়ে দিয়ে গেল।চা মিষ্টী শেষ করে বলদেব উপরে উঠে গেল।রহিমা বেগম বলদেবকে অসময় দেখে জিজ্ঞেস করেন,কি ব্যাপার?কিছু বলবা?
--আম্মু,টুনি অপার কি হয়েছে?ভাবিজান বললেন?
রহিমা বেগম হেসে বলেন,তুমারে মামু বলার লোক আসতেছে। 
--তাই?উদাসভাবে বলে বলদেব,কি জানি কবে আসবে অতদিন থাকবো কি না?
--ওকি কথা?তোবা তোবা--।
--ভগবান আমারে ভেসে বেড়াবার জেবন দিয়েছে--কবে কোথায় থাকি কে বলতে পারে? 

--অফিসে কিছু হইছে?রহিমা বেগমের গলায় উদবেগ।
বলদেব হেসে বলল,না আম্মু অফিসে কিছু হয় নাই।আমি আসি?

মা মারা যাবার পর লেখাপড়া ছেড়ে জন মজুরি দিয়ে শুরু হয় জীবন।তারপর বদলাতে বদলাতে সরকারী চাকরি।আম্মু তারে ছেলে পড়ানোর দায়িত্ব দেয়।সবাই ভাল থাকুক আনন্দে থাকুক তার বেশি তার চাওয়ার নেই।  
 
[+] 7 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: যেমন করে চাই তুমি তাই/কামদেব - by kumdev - 30-06-2020, 12:10 AM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)