27-02-2019, 10:47 PM
পর্ব: ৩৫: ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড
আমার মনে একটা দ্বিধা দেখা দিল. তমাল আর রকি এদের মধ্যে কাকে প্রথমে দীপার সাথে পরিচয় করব তাই নিয়ে. তমাল যেহেতু বয়সে বেশি বড় আর ওর পরিনতিবোধ তা রকি এর চেয়ে অনেক বেশি তাই তমাল কেই আগে পরিচয় করানো উচিত. আমি তমালের প্রোফাইল তা থেকে মেসেজ পাঠালাম
তমাল(আমি): কি সুমিতা কেমন আছ? কি করছ এখন?
জানি দীপার টাইপ করতে বেশ সময় লাগবে, তবে ২-৩ দিনের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে. কিছুক্ষণ বাদে দীপার রিপ্লাই এলো.
সুমিতা(দীপা): আমি ভালো আছি, কিন্তু আপনি আমায় কি ভাবে জানেন?
তমাল: আরে আমি জানব বা চিনব বলেই তো এখানে একাউন্ট খুলেছি. আমরা বন্ধু. নিজেদের অবসর সময়ে গল্প করব. নিজেদের জীবনের ঘটনা গুলো শেয়ার করব. বল তুমি কি করছ?
সুমিতা: কিছু নয়, বিছানায় সুয়ে আছি. কাল আমার পা মচকে গেছিল. আর আপনি কি করছেন?
তমাল: সে কি তোমার পা মচকে গেছিল, তো তুমি ওষুধ খেয়েছ? আর এখন শরীর কেমন আছে?
সুমিতা: এখন খুব ভালো আছি, আপনি কি করছেন?
তমাল: বলব তার আগে আমায় আর আপনি করে বলবেনা. বন্ধুদের মাঝে আপনি তা শুনতে খুব বাজে লাগে.
সুমিতা: ঠিক আছে, বল তুমি কি করছ?
তমাল: তোমার ঘড়িতে এখন খুব সম্ভাবত সাড়ে ১১:৩০ টা বাজে আর আমার ঘড়িতে রাত ১২ টা. আমি এখন লন্ডন এ আছি. যখন তোমায় ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলাম তখন তোমার ওখানে মাঝ রাত. আমি একজন শিল্পপতি. দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়াই. তুমি কি কর সুমিতা?
সুমিতা: কিছু না, আমি সামান্য হাউস ওয়াইফ.
তমাল: না এরকম বলবেনা, তুমি সবচেয়ে কঠিন কাজ টা কর, তুমি হোম মেকার. তোমার কি অফিস এ কাজ করতে ইচ্ছে হয় সুমিতা? আমার অফিস এ কাজ করবে, আমার সাথে?
সুমিতা: আমার বরের কি হবে তাহলে?
তমাল: কেন বর কেও নিয়ে আসবে, বর তোমার সাথেই থাকবে. ওকেও আমার কোম্পানি তেই রাখব. আমি কিন্তু ইয়ার্কি করছিনা. যে জীবন তাকে তুমি শ্রেষ্ঠ বলে মেনে নিয়েছ তার চেয়েও ভালো জীবন থাকতে পারে. তোমার কি ইচ্ছে করে দেশ বিদেশ ঘুরতে? যেন পৃথিবী টা কি সুন্দর.
সুমিতা: আমার ঘোরার খুব সখ. বিয়ের পর ঘর আরম্ভও করেছি. আমি খুব সামান্য গ্রামের মেয়ে. আমি তোমার সাথে কাজ করতে পারবনা. আর আমার স্বামী এক ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি তে চাকরি করে, তাই ওর ও কোনো দরকার নেই অন্য চাকরির.
তমাল: আরে সুমিতা তুমি জাননা, আমার কোম্পানি ঠিক কি বিশাল. এখানে যারা ম্যানেজমেন্ট বোর্ড এ আছে তারা সবাই আমার হাতেই তৈরী. আমি কয়লা খনি তে হিরে খুজতে ভালবাসি. তোমার এই সরলতার মধ্যে এক প্রতিভাময়ী মেয়ে লুকিয়ে আছে. জীবনটা শুধু কড়া খুন্তি তেই কাটিয়ে দিওনা. তোমার মত কতজন কে আমি নিজের হাতে তুলেছি. একদিন তুমিও ওদের মত হবে. পরে একদিন তোমায় ওদের গল্প বলব. শুধু এতটুকু বলি তুমি নিজেকে ছোট ভাবনা প্লিজ.
সুমিতা: আরে তুমি তো এক সাধারণ মাথা মোটা মেয়েকে শুন্যে ভাসিয়ে দিচ্ছো. ধরে নাও আমি রাজি, কিন্তু আমার স্বামী রাজি নয় তাহলে. মেয়েদের অনেক কিছু সামলে চলতে হয়.
তমাল: তোমার স্বামী কে শুধু একবার আমার নাম বল. আমায় প্রায় সবাই চেনে. আমি মানুষের মন নিয়ে গবেষণা করি আর তোমার মত যারা নিজেদের চিনতে পারেনা তাদের নিজেদের চেনাতে সাহায্য করি.
সুমিতা: ছাড়ো এসব. তোমার বউ কি করে?
তমাল: ওর বাপরে অন্য কখনো বলব, ও আমায় ছেড়ে চলে গেছে. আমার জীবনের এই একটাই কষ্ট যা আমায় প্রতিদিন কুরে কুরে খায়. আর ওকে ভোলার জন্যই আমি তোমাদের মত মানুষ দের নিয়ে নড়াচড়া করি আর তোমাদের ভেতরের মানুষ তাকে বার করে ানী.
সুমিতা: সরি তমাল.
তমাল: সরি বলনা. তোমরা খুব লাকি আমি হতভাগ্য. যাকগে আমি আজ চলি, আবার পরে কথা হবে. বাই.
আমি এই প্রোফাইল টা লগ আউট করে দিলাম. জানি এই শেষ সেন্টু টা দিপাকে খুব ভাবিয়ে তুলেছে আর ও নিজেকে দোষারোপ করছে তমালের বাক্তিগত বাপার টা ওঠানোর জন্য. না আজ এই গম্ভীর পরিস্থিতিতে আর রকি কে নিয়ে আসবনা. রকি কেও লগ আউট করলাম.
ভাবলাম একবার দিপাকে ফোন করি. ওর মনের অবস্থা টা বুঝতে পারলেই আমি বুঝে যাব প্লান টা ঠিক কতটা কাজ করলো. দিপাকে ফোন টা করেই দিলাম:
আমি: হ্যালো দীপা কি করছ তুমি? শরীর কেমন আছে তোমার?
দীপা: (খুব গম্ভীর ভাবে ) আমার শরীর তো ভালো আছে. সন তোমায় আর কষ্ট করে খাবার আনতে হবেনা আমি রান্না করে নেব.
আমি: না দীপা, এখন ২ দিন রান্না কড়া বন্ধ. তুমি রান্না ঘরে ঢুকবেনা.
দীপা: ও আচ্ছা ঠিক আছে. তুমি কি করছ?
আমি: কিছু নয় এই কাজের খুব চাপ. তোমার মন টা এরকম লাগছে কেন সোনা? কিছু হয়েছে তোমার?
দীপা: (জোর করে হেসে) এমা কি হবে, কিছু হয়নি. তুমি সাবধানে কাজ কর.
আমি: ঠিক আছে.
ফোন টা রাখার পর আমার মনে খুব আনন্দ হলো প্লান টা ২০০% সফল. তমাল সুপার হিট. রকি এর আর আলাদা করে কোনো প্রয়োজন নেই. ওকে শুধু তমালের সাহায্যের জন্য ব্যবহার করব. আমার একবার দেখা উচিত দীপা মানে সুমিতা এখনো অনলাইন কিনা মানে ও তমালের জন্য ওয়েট করছে কিনা. আমি রকি এর প্রোফাইল থেকে লগ ইন করলাম. হা সুমিতা সত্যি ই অনলাইন. সব কিছুই ঠিক থাক হচ্ছে. ভাবলাম এবার রকি কে ইউস করি, সুমিতাকে মেসেজ পাঠালাম
রকি: হ্যালো মাদাম আপনি কি কম্পিউটার গেম খেলেন, বা ভিডিও গেম. আমার কাছে প্রচুর আছে আপনাকে পাঠাব তাহলে.
প্রায় ৫ মিনিট হয়ে গেল সুমিতার কোনো মেসেজ ই এলোনা. দীপা এতটা রুড তো কখনো হয়নি, ওকে কেউ কিছু বললে ও উত্তর ঠিক ই দেবে. কিছুক্ষণ পর একটা মেসেজ এলো.
সুমিতা: দেখো রাকেশ আমি তোমাদের মত এত শিক্ষিত বা উচু সমাজের নই. আমি কোথায় কি বলতে হয় জানিনা. আমি মানুষ কে কষ্ট দিয়ে ফেলি. তাই তোমরা আমায় একটু বুঝে কথা বোলো.
আমি বুঝলাম খেলা জমে গেছে. আমি একটু ভেবে উত্তর দিলাম
রকি: মাদাম আপনি আমার থেকে বয়সে অনেক বড়. কিন্তু যেহেতু আমরা বন্ধু. তাই আপনি আমায় বলতে পারেন কেন আপনার মন খারাপ. কে বলতে পারে এই বাচ্চা ছেলেটাই হয়ত আপনার প্রবলেম টা সলভ করে দেবে.
প্রায় ২-৩ মিনিট কোনো রিপ্লাই এলোনা. তারপর একটা মেসেজ এলো.
সুমিতা: রকি তুমি কি তমাল সেন কে চেনো?
রকি: মাদাম ওনাকে প্রায় পুরো পৃথিবী ই চেনে. কি হয়েছে মাদাম আমায় খুলে বলুন. আমি ওনাকে একটা কলেজ এর প্রজেক্ট এর বাপরে খুব কাছ থেকে দেখেছি. বিশাল উপকার করেছিলেন. এমন ভাবে আমায় ইন্সপায়ার করলেন আজ আমি সারাক্ষণ ভার্চুয়াল রিয়ালিটি নিয়েই ভাবি. অনার সাথে কি কোনো প্রবলেম হয়েছে? আমায় বলুন আমি কথা বলব ওনার সাথে তাহলে.
সুমিতা: না রকি আমায় কথা দাও তুমি ওনাকে কিছু বলবেনা.
রকি: না মাদাম আমি কিছুই বলবনা.
সুমিতা: রকি আমি তমাল বাবুকে কষ্ট দিয়ে ফেলেছি.
রকি: আপনি হাসলেন মাদাম. উনি আর কষ্ট. আরে মাদাম তমাল বাবুর মত জলি মানুষ আপনি আর একটাও আপনি পাবেননা. উনি খুব ভালো. কত গরিব মানুষ, ছাত্রর উপকার করেন. কিন্তু একটাই কষ্ট ওনার জীবনে. উনি নিজের বউকে খুব ভালবাসতেন. কিন্তু ওনার বউ ভিশন বাজে ছিল. ঠিক কি হয়েছিল জানিনা, শুনেছি যে ওনার বউ পালিয়ে গেছিল কারুর সাথে. লজ্জায় অপমানে উনি আত্ম হত্যা এর চেষ্টা করেছিলেন. কোমাতে চলে গেছিলেন. প্রায় ১ মাস পর সাভাবিক হয়েছিলেন. এসব ই ওনার বাপরে পেপার থেকে পড়া. মানুষ খুব ই ভালো. নিজের ভালবাসা কে হারিয়ে ফেলেছেন. এই একটা বাপার ছাড়া যেকোনো বাপার ই উনি খুব ভালো ভাবে নেন. ওনাকে এই বাপরে কেউ কোনো কথা বলেননা.
সুমিতা: আমার বিশাল অপরাধ হয়ে গেছে রকি.
রকি: কি হয়েছে মাদাম?
সুমিতা: কিছু নয়. তুমি ভালো থেকো. তোমার সাথে পরে কথা হবে.
এতক্ষণ পর দেখলাম দীপা সত্যি ই লগ আউট করলো. কিছুক্ষণ বাদে আমি খাবার নিয়ে ঘরে ঢুকলাম দেখি ওর মন টা সত্যি ভালো নেই. খুব অল্প কথা বলল আমার সাথে. আমি আবার অফিস এ বেরিয়ে এলাম. অফিস এ রকি এর প্রোফাইল টা খুলে দেখলাম সুমিতা অনলাইন. আমি বুঝলাম ও তমালের জন্য অপেক্ষা করছে. কিন্তু আজ তমাল আর ওকে ধরা দেবেনা. আমি দেখতে চাই ওর মনের ওপর কতটা প্রভাব ফেলল তমাল আর রকি. অফিস থেকে ফেরার পর সেরকম কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটল না. রাতে খাওয়ার পর আমরা বিছানায় গেলাম. আমি ওর পেতে হাত দিয়ে নাভির কাছ টায় হাত বলাতে লাগলাম ও আমার দিকে খুব করুন ভাবে তাকিয়ে বলল
দীপা: প্লিজ সমু আমার আজ শরীর সায় দিচ্ছেনা.
আমি: (আমি আর কিছুই করলামনা, জানি কাল তমালের সাথে কথা হওয়ার পর ই সব ঠিক হবে, তার আগে নয়) দীপা কাল যদি তোমার পা ঠিক হয়ে যায়, বিকেলে একবার চল চেন্নাই এর সমুদ্র সৈকত গুলো ঘুরে আসি.
দীপা: (একটু অন্য মনস্ক হয়ে) হুমম.
আমি জানি ও কি ভাবছে. বেশ কিছুক্ষণ ওকে লক্ষ্য করলাম আর তারপর আমি ঘুমিয়ে পরলাম.
আমার মনে একটা দ্বিধা দেখা দিল. তমাল আর রকি এদের মধ্যে কাকে প্রথমে দীপার সাথে পরিচয় করব তাই নিয়ে. তমাল যেহেতু বয়সে বেশি বড় আর ওর পরিনতিবোধ তা রকি এর চেয়ে অনেক বেশি তাই তমাল কেই আগে পরিচয় করানো উচিত. আমি তমালের প্রোফাইল তা থেকে মেসেজ পাঠালাম
তমাল(আমি): কি সুমিতা কেমন আছ? কি করছ এখন?
জানি দীপার টাইপ করতে বেশ সময় লাগবে, তবে ২-৩ দিনের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে. কিছুক্ষণ বাদে দীপার রিপ্লাই এলো.
সুমিতা(দীপা): আমি ভালো আছি, কিন্তু আপনি আমায় কি ভাবে জানেন?
তমাল: আরে আমি জানব বা চিনব বলেই তো এখানে একাউন্ট খুলেছি. আমরা বন্ধু. নিজেদের অবসর সময়ে গল্প করব. নিজেদের জীবনের ঘটনা গুলো শেয়ার করব. বল তুমি কি করছ?
সুমিতা: কিছু নয়, বিছানায় সুয়ে আছি. কাল আমার পা মচকে গেছিল. আর আপনি কি করছেন?
তমাল: সে কি তোমার পা মচকে গেছিল, তো তুমি ওষুধ খেয়েছ? আর এখন শরীর কেমন আছে?
সুমিতা: এখন খুব ভালো আছি, আপনি কি করছেন?
তমাল: বলব তার আগে আমায় আর আপনি করে বলবেনা. বন্ধুদের মাঝে আপনি তা শুনতে খুব বাজে লাগে.
সুমিতা: ঠিক আছে, বল তুমি কি করছ?
তমাল: তোমার ঘড়িতে এখন খুব সম্ভাবত সাড়ে ১১:৩০ টা বাজে আর আমার ঘড়িতে রাত ১২ টা. আমি এখন লন্ডন এ আছি. যখন তোমায় ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলাম তখন তোমার ওখানে মাঝ রাত. আমি একজন শিল্পপতি. দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়াই. তুমি কি কর সুমিতা?
সুমিতা: কিছু না, আমি সামান্য হাউস ওয়াইফ.
তমাল: না এরকম বলবেনা, তুমি সবচেয়ে কঠিন কাজ টা কর, তুমি হোম মেকার. তোমার কি অফিস এ কাজ করতে ইচ্ছে হয় সুমিতা? আমার অফিস এ কাজ করবে, আমার সাথে?
সুমিতা: আমার বরের কি হবে তাহলে?
তমাল: কেন বর কেও নিয়ে আসবে, বর তোমার সাথেই থাকবে. ওকেও আমার কোম্পানি তেই রাখব. আমি কিন্তু ইয়ার্কি করছিনা. যে জীবন তাকে তুমি শ্রেষ্ঠ বলে মেনে নিয়েছ তার চেয়েও ভালো জীবন থাকতে পারে. তোমার কি ইচ্ছে করে দেশ বিদেশ ঘুরতে? যেন পৃথিবী টা কি সুন্দর.
সুমিতা: আমার ঘোরার খুব সখ. বিয়ের পর ঘর আরম্ভও করেছি. আমি খুব সামান্য গ্রামের মেয়ে. আমি তোমার সাথে কাজ করতে পারবনা. আর আমার স্বামী এক ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি তে চাকরি করে, তাই ওর ও কোনো দরকার নেই অন্য চাকরির.
তমাল: আরে সুমিতা তুমি জাননা, আমার কোম্পানি ঠিক কি বিশাল. এখানে যারা ম্যানেজমেন্ট বোর্ড এ আছে তারা সবাই আমার হাতেই তৈরী. আমি কয়লা খনি তে হিরে খুজতে ভালবাসি. তোমার এই সরলতার মধ্যে এক প্রতিভাময়ী মেয়ে লুকিয়ে আছে. জীবনটা শুধু কড়া খুন্তি তেই কাটিয়ে দিওনা. তোমার মত কতজন কে আমি নিজের হাতে তুলেছি. একদিন তুমিও ওদের মত হবে. পরে একদিন তোমায় ওদের গল্প বলব. শুধু এতটুকু বলি তুমি নিজেকে ছোট ভাবনা প্লিজ.
সুমিতা: আরে তুমি তো এক সাধারণ মাথা মোটা মেয়েকে শুন্যে ভাসিয়ে দিচ্ছো. ধরে নাও আমি রাজি, কিন্তু আমার স্বামী রাজি নয় তাহলে. মেয়েদের অনেক কিছু সামলে চলতে হয়.
তমাল: তোমার স্বামী কে শুধু একবার আমার নাম বল. আমায় প্রায় সবাই চেনে. আমি মানুষের মন নিয়ে গবেষণা করি আর তোমার মত যারা নিজেদের চিনতে পারেনা তাদের নিজেদের চেনাতে সাহায্য করি.
সুমিতা: ছাড়ো এসব. তোমার বউ কি করে?
তমাল: ওর বাপরে অন্য কখনো বলব, ও আমায় ছেড়ে চলে গেছে. আমার জীবনের এই একটাই কষ্ট যা আমায় প্রতিদিন কুরে কুরে খায়. আর ওকে ভোলার জন্যই আমি তোমাদের মত মানুষ দের নিয়ে নড়াচড়া করি আর তোমাদের ভেতরের মানুষ তাকে বার করে ানী.
সুমিতা: সরি তমাল.
তমাল: সরি বলনা. তোমরা খুব লাকি আমি হতভাগ্য. যাকগে আমি আজ চলি, আবার পরে কথা হবে. বাই.
আমি এই প্রোফাইল টা লগ আউট করে দিলাম. জানি এই শেষ সেন্টু টা দিপাকে খুব ভাবিয়ে তুলেছে আর ও নিজেকে দোষারোপ করছে তমালের বাক্তিগত বাপার টা ওঠানোর জন্য. না আজ এই গম্ভীর পরিস্থিতিতে আর রকি কে নিয়ে আসবনা. রকি কেও লগ আউট করলাম.
ভাবলাম একবার দিপাকে ফোন করি. ওর মনের অবস্থা টা বুঝতে পারলেই আমি বুঝে যাব প্লান টা ঠিক কতটা কাজ করলো. দিপাকে ফোন টা করেই দিলাম:
আমি: হ্যালো দীপা কি করছ তুমি? শরীর কেমন আছে তোমার?
দীপা: (খুব গম্ভীর ভাবে ) আমার শরীর তো ভালো আছে. সন তোমায় আর কষ্ট করে খাবার আনতে হবেনা আমি রান্না করে নেব.
আমি: না দীপা, এখন ২ দিন রান্না কড়া বন্ধ. তুমি রান্না ঘরে ঢুকবেনা.
দীপা: ও আচ্ছা ঠিক আছে. তুমি কি করছ?
আমি: কিছু নয় এই কাজের খুব চাপ. তোমার মন টা এরকম লাগছে কেন সোনা? কিছু হয়েছে তোমার?
দীপা: (জোর করে হেসে) এমা কি হবে, কিছু হয়নি. তুমি সাবধানে কাজ কর.
আমি: ঠিক আছে.
ফোন টা রাখার পর আমার মনে খুব আনন্দ হলো প্লান টা ২০০% সফল. তমাল সুপার হিট. রকি এর আর আলাদা করে কোনো প্রয়োজন নেই. ওকে শুধু তমালের সাহায্যের জন্য ব্যবহার করব. আমার একবার দেখা উচিত দীপা মানে সুমিতা এখনো অনলাইন কিনা মানে ও তমালের জন্য ওয়েট করছে কিনা. আমি রকি এর প্রোফাইল থেকে লগ ইন করলাম. হা সুমিতা সত্যি ই অনলাইন. সব কিছুই ঠিক থাক হচ্ছে. ভাবলাম এবার রকি কে ইউস করি, সুমিতাকে মেসেজ পাঠালাম
রকি: হ্যালো মাদাম আপনি কি কম্পিউটার গেম খেলেন, বা ভিডিও গেম. আমার কাছে প্রচুর আছে আপনাকে পাঠাব তাহলে.
প্রায় ৫ মিনিট হয়ে গেল সুমিতার কোনো মেসেজ ই এলোনা. দীপা এতটা রুড তো কখনো হয়নি, ওকে কেউ কিছু বললে ও উত্তর ঠিক ই দেবে. কিছুক্ষণ পর একটা মেসেজ এলো.
সুমিতা: দেখো রাকেশ আমি তোমাদের মত এত শিক্ষিত বা উচু সমাজের নই. আমি কোথায় কি বলতে হয় জানিনা. আমি মানুষ কে কষ্ট দিয়ে ফেলি. তাই তোমরা আমায় একটু বুঝে কথা বোলো.
আমি বুঝলাম খেলা জমে গেছে. আমি একটু ভেবে উত্তর দিলাম
রকি: মাদাম আপনি আমার থেকে বয়সে অনেক বড়. কিন্তু যেহেতু আমরা বন্ধু. তাই আপনি আমায় বলতে পারেন কেন আপনার মন খারাপ. কে বলতে পারে এই বাচ্চা ছেলেটাই হয়ত আপনার প্রবলেম টা সলভ করে দেবে.
প্রায় ২-৩ মিনিট কোনো রিপ্লাই এলোনা. তারপর একটা মেসেজ এলো.
সুমিতা: রকি তুমি কি তমাল সেন কে চেনো?
রকি: মাদাম ওনাকে প্রায় পুরো পৃথিবী ই চেনে. কি হয়েছে মাদাম আমায় খুলে বলুন. আমি ওনাকে একটা কলেজ এর প্রজেক্ট এর বাপরে খুব কাছ থেকে দেখেছি. বিশাল উপকার করেছিলেন. এমন ভাবে আমায় ইন্সপায়ার করলেন আজ আমি সারাক্ষণ ভার্চুয়াল রিয়ালিটি নিয়েই ভাবি. অনার সাথে কি কোনো প্রবলেম হয়েছে? আমায় বলুন আমি কথা বলব ওনার সাথে তাহলে.
সুমিতা: না রকি আমায় কথা দাও তুমি ওনাকে কিছু বলবেনা.
রকি: না মাদাম আমি কিছুই বলবনা.
সুমিতা: রকি আমি তমাল বাবুকে কষ্ট দিয়ে ফেলেছি.
রকি: আপনি হাসলেন মাদাম. উনি আর কষ্ট. আরে মাদাম তমাল বাবুর মত জলি মানুষ আপনি আর একটাও আপনি পাবেননা. উনি খুব ভালো. কত গরিব মানুষ, ছাত্রর উপকার করেন. কিন্তু একটাই কষ্ট ওনার জীবনে. উনি নিজের বউকে খুব ভালবাসতেন. কিন্তু ওনার বউ ভিশন বাজে ছিল. ঠিক কি হয়েছিল জানিনা, শুনেছি যে ওনার বউ পালিয়ে গেছিল কারুর সাথে. লজ্জায় অপমানে উনি আত্ম হত্যা এর চেষ্টা করেছিলেন. কোমাতে চলে গেছিলেন. প্রায় ১ মাস পর সাভাবিক হয়েছিলেন. এসব ই ওনার বাপরে পেপার থেকে পড়া. মানুষ খুব ই ভালো. নিজের ভালবাসা কে হারিয়ে ফেলেছেন. এই একটা বাপার ছাড়া যেকোনো বাপার ই উনি খুব ভালো ভাবে নেন. ওনাকে এই বাপরে কেউ কোনো কথা বলেননা.
সুমিতা: আমার বিশাল অপরাধ হয়ে গেছে রকি.
রকি: কি হয়েছে মাদাম?
সুমিতা: কিছু নয়. তুমি ভালো থেকো. তোমার সাথে পরে কথা হবে.
এতক্ষণ পর দেখলাম দীপা সত্যি ই লগ আউট করলো. কিছুক্ষণ বাদে আমি খাবার নিয়ে ঘরে ঢুকলাম দেখি ওর মন টা সত্যি ভালো নেই. খুব অল্প কথা বলল আমার সাথে. আমি আবার অফিস এ বেরিয়ে এলাম. অফিস এ রকি এর প্রোফাইল টা খুলে দেখলাম সুমিতা অনলাইন. আমি বুঝলাম ও তমালের জন্য অপেক্ষা করছে. কিন্তু আজ তমাল আর ওকে ধরা দেবেনা. আমি দেখতে চাই ওর মনের ওপর কতটা প্রভাব ফেলল তমাল আর রকি. অফিস থেকে ফেরার পর সেরকম কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটল না. রাতে খাওয়ার পর আমরা বিছানায় গেলাম. আমি ওর পেতে হাত দিয়ে নাভির কাছ টায় হাত বলাতে লাগলাম ও আমার দিকে খুব করুন ভাবে তাকিয়ে বলল
দীপা: প্লিজ সমু আমার আজ শরীর সায় দিচ্ছেনা.
আমি: (আমি আর কিছুই করলামনা, জানি কাল তমালের সাথে কথা হওয়ার পর ই সব ঠিক হবে, তার আগে নয়) দীপা কাল যদি তোমার পা ঠিক হয়ে যায়, বিকেলে একবার চল চেন্নাই এর সমুদ্র সৈকত গুলো ঘুরে আসি.
দীপা: (একটু অন্য মনস্ক হয়ে) হুমম.
আমি জানি ও কি ভাবছে. বেশ কিছুক্ষণ ওকে লক্ষ্য করলাম আর তারপর আমি ঘুমিয়ে পরলাম.