27-02-2019, 09:01 PM
ওর হাসি হাসি চোখের দিকে তাকিয়ে বলে, "একটু কিছু খেয়ে নাও তারপরে ওষুধ খেতে হবে। আজ আমি আর কোথাও যাচ্ছি না, তোমার কাছেই থাকব সারাদিন।"
বিছানা মাথার দিকে বালিশ দিয়ে পরীকে উঠিয়ে বসিয়ে দেয়, গলা পর্যন্ত টেনে দেয় গায়ের চাদর। রুটি দুধ মেখে খাওয়ানোর জন্য নিয়ে আসে। অভি ওকে মুখ ধুতে বলে, পরী অনুনয় সুরে বলে, "না।"
অভি মৃদু বকুনি দেয়, "মুখ না ধুলে হবে? যা বলছি তাই করো।"
তোয়ালে ভিজিয়ে চোখ মুখ মুছিয়ে দেওয়ার পরে খাইয়ে দেয়। হাত মুখ মুছিয়ে দেওয়ার পরে যেন পরীর একটু ভালো লাগে, গালের লালিমা যেন কিঞ্চিত ফিরে আসে।
"ভালো লাগছে?" ওকে জিজ্ঞেস করে। শুধু মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেয়, ঠিক আছে। খাওয়ানোর পরে ওষুধ খাইয়ে দেয়।
অভি পরীকে বলে, "মাথা ধুইয়ে গাঁ হাত, মুছিয়ে দেই ভালো লাগবে।"
পরীকে বাথরুমে ঢুকিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করে সাহায্য করতে হবে নাকি, পরী দরজা বন্ধ করে জোর গলায় বলে, "না।" অভি ওর কথা শোনে না, গরম জল করে এনে হাত পা মুখ মুছিয়ে দেয়, পরী বারবার অনুনয় করে, পায়ে যেন হাত না দেয়। হাত পা ধোয়ানর পরে, পরীর শরীর বেশ হালকা লাগে।
"রবীন্দ্রনাথের সাজাহান পড়ে শোনাবে আমাকে?"
অভির কাছে আব্দার করে।
অভি বিছানায় উঠে বসে, পরী গায়ের ওপরে চাদর টেনে ওর বুকের ওপরে মাথা রেখে শুয়ে পরে। বাম হাত দিয়ে পরীকে জড়িয়ে ধরে, এক হাতে খুলে ধরে রবীন্দ্রনাথের সঞ্চয়িতা। সাজাহান কবিতার কিছু অংশ পড়ে শোনানর চেষ্টা করে অভি। পরী ওর বাংলা কবিতা পড়া শুনে হেসে ফেলে, "থাক অনেক পড়ে ফেলেছ, আর কবিতার পিন্ডি চটকাতে হবে না।"
অভি নিরুপায় হয়ে পরীকে জানায়, "তুমি জানতে যে আমার বাংলা খুব সুন্দর, তাও আমাকে পড়তে বললে কেন?"
হেসে উত্তর দেয় পরী, "দেখতে চেয়েছিলাম তুমি সত্যি বাংলা পড়তে পারো কিনা।"
মাথার ওপরে চুমু খেয়ে বলে, "হাঁ ভগবান।"
মাথার ওপরে ঠোঁটের পরশ পেয়ে বুকের কাছে আরও জড়সড় হয়ে বসে বলে, "শক্ত করে জড়িয়ে ধরোনা আমায়।"
অভি বই ছেড়ে, দু’হাতে নিবিড় আলিঙ্গনে বেঁধে ফেলে পরীকে। বুকের কাছে যেন লেপটে যায় পরী।
অভি ওর কানে কানে বলে, "আমি হিন্দিতে তোমার জন্য কবিতা লিখেছি, শুনবে?"
পরী মাথা নোয়ায়, "হ্যাঁ।" অভি আবার বলে, "হিন্দি তে কিন্তু।" পরী জানায়, "প্রেমের কি ভাষা হয় নাকি, তুমি বলবে আমি ঠিক বুঝে নেব।"
ডায়রিতে কি লিখেছিল, একবার চোখ বন্ধ করে মনে করে নেয় তারপরে ওর হিন্দি কবিতা শোনায়। কবিতা শোনার পরে পরী অভির দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসে, দুহাতে ওর গলা জড়িয়ে ধরে। মুখ উঁচু করে অভির ঠোঁট ছুঁতে যায়। পরীর ঠোঁট ছোঁয়ার বদলে ওর মাথার ওপরে ঠোঁট চেপে ধরে অভি।
অভি, "তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাও, তারপরে আমাদের অনেক কিছু ভাবতে হবে, সোনা।"
পরী, "আমাকে তোমার বুকের কাছে লুকিয়ে নাও, অভি।"
বুকের ওপরে মাথা চেপে ধরে অভি বলে, "তুমি এখানেই থাকবে পরী, সবসময়ে এখানে থাকবে।"
দিন দুই পরে পরীর জ্বর সেরে গেলে অভি "সিন্ডলারস লিস্ট" দেখতে যাবার কথা বলে। পরী এক উপায় বের করে এবারে যাতে ওরা ধরা না পরে। অভিকে বলে যে ওরা বাবু, ছোটমা বেড়িয়ে যাবার পরেই সিনেমা দেখতে বেড়িয়ে পড়বে আর ওদের ফিরে আসার আগেই বাড়ি ফিরে আসবে। সুকৌশল পরিকল্পনা, যেমন ভাবা তেমনি কাজ, কিন্তু বাদ সাধে বর্ষা কাল। তাই আর সেদিন যাওয়া হয়ে ওঠে না।
কিন্তু পরদিন যেই বাবা মা বেড়িয়ে যান কাজে, ঠিক তারপরেই অভি তৈরি হয়ে নেয়। আকাশের দিকে তাকিয়ে পরীকে অনুরধ করে যে ও যেন বৃষ্টির জন্য তৈরি থাকে আর সেই মত কাপড় পরে। কিন্তু লাজুক সুন্দরী পরী, শাড়ি ছাড়া যেন জগতে ওর কাছে আর কোন সুন্দর পোশাক হয় না। যথারীতি হাল্কা গোলাপি রঙের শিফন শাড়ি আর ছোটো হাতার কাঁচুলি পরে বেড়িয়ে এল। ফর্সা গায়ের রঙ আর তাঁর সাথে শাড়ির রঙ বেশ মিলিয়েছে। লাল ঠোঁট, চোখের কোলে কাজল, কপালে ছোটো গোলাপি টিপ সব মিলিয়ে অভির সেদিন মনে হয়েছিল যে, সিনেমা না হয় আর কোন একদিন দেখা যাবে আজ পরীকেই দেখি। হাতে ধরে কালো ক্লাচ ব্যাগ আর বাঁ হাতের সরু কব্জিতে সোনার টাইটান ঘড়ি, ছোটমা কয়েকদিন আগেই কিনে দিয়েছে। হাঁটু গেড়ে ওর সামনে বসে পরে দুহাতে জড়িয়ে ধরতে যায় পরীকে, মিষ্টি হেসে পরী ওকে বলে, "না, একদম কোন শয়তানি না, চল বেড়িয়ে পরি।"
উঠে দাঁড়িয়ে এক হাতে কোমর জড়িয়ে ধরে অভি, অন্য হাতের তর্জনী দিয়ে চিবুক ছুঁয়ে সুন্দর মুখখানি ওপরে তোলে। অভির বুকের ওপরে হাত রেখে জামা ধরে নেয়, প্রেমঘন গভীর কালো চোখে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে।
অভি, "তুমি এত সুন্দর কেন, পরী?"
পরী, "সৌন্দর্য সবসময়ে যে দেখে তাঁর চোখে লুকিয়ে থাকে। সুন্দরী আমি নয়, তোমার দৃষ্টি, তোমার চাহনি আমাকে সুন্দরী করে তুলেছে, অভি।"
সারা রাস্তা পরী ওর একদম পাসেপাসে ছিল, একবারের জন্য ও যেন ওকে আলাদা করতে মন করছিল না অভির। নন্দনে তাড়াতাড়ি পৌঁছে গেল। আকাশে কালো মেঘের খেলা শুরু হয়ে গেছে, বৃষ্টি যেকোনো সময়ে নামতে পারে।
পরী ওকে জিজ্ঞেস করে, "সিনেমাটা কি ধরনের?"
অভি উত্তর দেয়, "সত্য ঘটনা অবলম্বে এই সিনেমা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে এক জার্মান ইহুদী প্রায় এক হাজার ইহুদীদের হিটলারের অত্যাচার থেকে বাঁচায়।"
অস্ফুট চেঁচিয়ে ওঠে পরী, "তুমি আমাকে হরর সিনেমা দেখাতে এনেছ? কেউ কি তার গার্লফ্রেন্ড কে নিয়ে এইরকম সিনেমা দেখতে যায়?"
অভি হেসে ওঠে, "না বেবি, হরর সিনেমা নয়, এট।"
পরী, "তুমি আস্ত পাগল, এটা হরর নয়ত কি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধরে কাহিনী তারপরে আবার সত্য ঘটনা অবলম্বনে, তাঁর মানেই ত ভয়ের গল্প, দুখের গল্প।"
অভি অনেক নাম শুনেছে ওই সিনেমাটার তাই ওকে দেখতে হবেই, কোনোরকমে পরীকে রাজি করায় সিনেমা হলে ঢুকতে। শেষ পর্যন্ত ওর কাতর মিনতির সামনে পরী হার মানে। নন্দনে খুব মানুষ সেইদিন ওই সিনেমা দেখতে এসেছিল, একে বর্ষাকাল তার ওপরে একটু অন্যধরনের সিনেমা বলে হলে লোকসংখ্যা কম। পরী ওর ডানদিকে বসে কাঁধে মাথা রেখে চুপ করে সিনেমা দেখতে থাকে।
সিনেমায় এক দৃশ্য ছিল যে, রাল্ফ ফিয়েন্স এক সকালে কাঁধে বন্দুক নিয়ে নিজের রুম থেকে বেড়িয়ে বারন্দায় দাঁড়ায়। তারপরে সেই বন্দুকের নল তাক করে সামনের জেলের খোলা জায়গার দিকে, যেখানে অনেক ইহুদী মজুর কাজ করছিল। একটা ছোটো ছেলে কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে একটা ছোটো ঘরের সিঁড়িতে বসে একটু বিশ্রাম করছিল। রালফ ফিয়েন্স তাঁর দিকে বন্দুক তাগ করে সেই ছোটো ছেলেটার মাথার মধ্যে গুলি চালিয়ে দেয়, প্রানহীন রক্তাক্ত দেহ লুটিয়ে পরে মাটির ওপরে। সেই দৃশ্য দেখে পরী ভয়ে চিৎকার করে ওঠে। অভির বুকের জামা খামচে ধরে বুকের ওপরে মুখ লুকিয়ে ফেলে।
পরী, "না না না, আমি এইরকম বীভৎস সিনেমা দেখতে পারব না। আমাকে এখানে থেকে নিয়ে চল, আমি আর এই সিনেমা দেখব না, প্লিস নিয়ে চলো আমাকে।"
অভি মিনতি করে, "বেবি, এটা শুধু একটা মুভি।"
পরী মুখ না উঠিয়েই বলে, "সত্য ঘটনার অবলম্বনে তৈরি, আমি আর দেখতে পারবোনা।"
অভি, "প্লিস বেবি।"
পরী বিরক্তি ভরা চাহনি নিয়ে ওর দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে বলে, "তুমি কেমন ধারা মানুষ? প্রেমিকরা তাদের প্রেমিকাদের নিয়ে কোথায় রোম্যান্টিক সিনেমা দেখতে যায় আর তুমি কিনা তোমার প্রেমিকা কে নিয়ে এই রকম উধভট একটা বেদনাদায়ক সিনেমা দেখাতে এনেছ।"
অভি, "ওকে বাবা, কি চাও তুমি? দেখতে চাও না চলে যেতে চাও?"
পরী, "না আমি আর এই সিনেমা দেখতে চাই না। আমাকে প্লিস এখান থেকে নিয়ে চলো।"
সিনেমার মাঝখানেই ওরা হল ছেড়ে বেড়িয়ে এল, অভির মন খারাপ হল বটে কিন্তু পরীকে দুঃখ দিয়ে সিনেমা দেখতে মন চাইল না। আকাশের দিকে তাকিয়ে পরী লক্ষ্য করল যে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে।
অভির দিকে ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে বলে, "অভি, বৃষ্টি নামলো বলে, কি করব? আমার শাড়ি ভিজে যাবে যে?"
অভি, "বারি ফিরে যাই চলো।"
বারির ফিরে যাবার কথা শুনে পরীর মন খারাপ হয়ে গেল। পরী ওকে বলল, "একদিনের জন্যও ঠিক করে বের হতে পারিনা। চলো না সেই আইস্ক্রিম পার্লারে যেখানে অরুনাকে নিয়ে গেছিলে।"
অভি আর পরী, ট্যাক্সি চেপে আউট্ট্রাম ঘাটের স্কুপ আইসক্রিম পার্লারে চলে আসে। পরীকে নিয়ে সেই একই জায়গায় বসে অভি, যেখানে অরুনাকে নিয়ে বসেছিল। পরী বড় কাঁচের জানালার বাইরে তাকিয়ে গঙ্গার দিকে একমনে তাকিয়ে থাকে, আকাশ কালো, জল কালো, মাঝে দিগন্তের দিকে একটু খোলা আকাশ, নয়নাভিরাম দৃশ্য।
পরী হেসে ওর দিকে তাকিয়ে বলে, "এই রকম রোম্যান্টিক জায়গা থাকতে তুমি কিনা আমাকে নিয়ে সিন্ডলারস লিস্ট দেখতে গেছ, কি মানুষ তুমি, অভি?"
পরীর কাঁধে মাথা রেখে চুপ করে বসে থাকে অভি, পরী আইস্ক্রিম খেতে খেতে মাঝে মাঝে ওর মাথার গাল ঘষে দেয়। বাইরে ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে দিয়েছে। পরী ওকে বলে যে এবারে বারি ফেরা উচিত। তাড়াতাড়ি আইস্ক্রিম শেষ করে ট্যাক্সি চেপে বাড়ি পৌঁছায় ওরা। বাড়িতে কেউ ফিরে আসার আগেই বাড়ি ঢুকে পরে। সারাটা রাস্তা দু’জনে বেড়াল ছানার মতন মারামারি করেতে থাকে, পরী ওকে খেপিয়ে তোলে যে প্রেমিকা কে নিয়ে কেউ কি ওই রকম উধভট সিনেমা দেখতে যায়, আর অভি রেগে যায় কেননা ওই সিনেমাটা ওর খুব প্রিয়।
দরজা খুলে পরী সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠে, পেছনে অভি। হাল্কা গোলাপি রঙের সিফন শাড়িটা যেন আস্টেপিষ্টে কমনীয় দেহের সাথে লেপে গেছে। ফুলে ওঠা নিতম্বের দোলা দেখে অভির মন নেচে ওঠে, শাড়ির আঁচল একদিক থেকে সিঁড়িতে পরে পরীর পেছন পেছন ধাওয়া করছে যেন। অভি শাড়ির আঁচল টেনে ধরে আর আঁচল ওর বুক থেকে খসে যায়। আচমকা অভির এই ব্যাবহারে পরী চমকে ওঠে, শাড়ির অপর প্রান্ত ধরে মিনতির সুরে অভিকে বলে, "সোনা, প্লিস ছেড়ে দাও।"
অভি ওর কথায় কান না দিয়ে শাড়ির আঁচল টেনে ধরে সিঁড়ির দেয়ালের ওপরে চেপে ধরে পরীর কমনীয় দেহ। বুক থেকে আঁচল খসে গেছে, কাঁচুলি অনাবৃত উন্নত বক্ষ যুগল যেন কাচুলির ভেতর থেকে ঠেলে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। অভি নিজেকে আর সামলাতে পারে না। অভি নিজের শরীর ওর দেহের ওপরে চেপে ধরে। লজ্জা পেয়ে যায় পরী, হাত উঠে আসে বুকের ওপরে, ঢেকে নিতে চায় নিজের লজ্জা। শ্বাসের ফলে উন্নত বক্ষ ওঠা নামা করে আর মনে হয় যেন এই ফেটে পড়বে। অভি দু’হাত নিয়ে যায় অনাবৃত কোমরে, মৃদু চাপ দিতে শুরু করে পেটের দুপাশের নরম তুলতুলে নারী মাংস। প্রেমিকের হাতের ছোঁয়ায় পরীর শ্বাস উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভির কামনা ভরা চোখের সামনে পরীর মুখ। দু হাতে অভির জামার কলার মুঠি করে ধরে আর ওর প্রেমঘন চোখের দিকে তাকায়। লাল ঠোঁট জোড়া অল্প খোলা, অভির সারা মুখের ওপরে তপ্ত কামনার শ্বাস বয়ে যায়। অভির সিংহ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
প্রকাশ্য দিবালোক সিঁড়ির জানালা দিয়ে ওদের ওপরে পরে, পরী লজ্জায় লাল হয়ে ওকে বলে, "প্লিস সোনা এখানে নয়।"
অভির ভেতরে যেন এক ক্ষিপ্ত হায়না জেগে ওঠে, চেপে ধরে নিজের তলপেট পরীর তলপেটের ওপরে। কঠিন শলাকার পরশ বুঝতে দেরি হয় না পরীর। ঠিক তলপেটের ওপরে কঠিন অভি, মৃদু শীৎকার করে ওঠে পরী, "আহহহ... প্লিস সোনা এখানেই আমাকে পাগল করে তুলো না... প্লিস হানি..."
ঠোঁট চেপে ধরে ওই রসালো ঠোঁটে জোড়ার ওপরে, থামিয়ে দেয় পরীর শীৎকার, মুখের ভেতরে টেনে নেয় পরীর শ্বাস আর লালার মধু। পরী দুহাতে ওর মাথা আঁকড়ে ধরে। কম্পিত উন্নত বক্ষ যুগল, অভির প্রসস্থ বুকের ওপরে লেপে যায় মাখনের মতন, পরী যেন গলে গিয়ে প্রলেপ লাগিয়ে দেয় নিজেকে। তীব্র কামনার আগুনে পরী অভির নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে দাঁতের মাঝে আর আলতো আলতো চাপ দিতে শুরু করে। কামরের সেই স্পর্শ অভিকে উন্মাদ করে তোলে, হাত নামিয়ে নিয়ে আসে পরীর কোমল সুগোল নিতম্বের ওপরে আর চেপে ধরে দুই নারী মন্ড কঠিন থাবার মাঝে। নখ বসিয়ে দেয় শাড়ির ওপরে দিয়ে আর পিষে ধরে কোমল নারী মাংস। দুহাতে চেপে ধরে পরীকে মাটি থেকে উঠিয়ে নেয়, পরী নিজের ভার অভির ওপরে ছেড়ে দেয় আর দুহাতে ওর গলা জড়িয়ে ধরে। কোলে তুলে বসার ঘরে ঢুকে ডিভানের ওপরে ছুঁড়ে দেয় পরীর কমনীয় শরীর। ডিভানে শুয়েই পরী ওর আঁচল গুটিয়ে নিয়ে বুকের কাছে জড় করে ধরে মিনতি করে অভির কাছে, "প্লিস এখুনি শুরু করো না সোনা, বাবু যেকোন মুহূর্তে বাড়ি ফিরে আসবে।"
এক টানে জামার বোতাম খুলে ফেলে অভি, জামা ছুঁড়ে ফেলে মাটিতে। প্রেমিক অভি লালসার লেলিহান শিখায় জ্বলে এক বুভুক্ষু হায়নার ন্যায় হয়ে উঠেছে। হিংস্র চোখে ক্ষুধার্ত দানবের মতন তাকিয়ে থাকে পরীর দিকে। বিছানার ওপরে চড়ে পরীর দিকে এগিয়ে যায় আর পরী ওর চোখের ভাষা দেখে ভয়ে দেয়ালের দিকে পিছিয়ে যায়। এ কোন অভিমন্যু, এত ওর প্রানের অভি নয়, কেঁপে ওঠে পরীর বুক। ওর পা ধরে টান মারে অভি, এক লাথি মারে অভির বুকের ওপরে। অভির হাত পৌঁছে যায় শাড়ির গিঁটের ওপরে, নাভির চারদিকের নরম মাংসে নখ বসিয়ে খামচে ধরে। পরী বারংবার অভিকে শান্ত হতে কাতর মিনতি জানায় কিন্তু ক্ষুধার্ত অভি উন্মাদ হয়ে উঠেছে। পেটের ফর্সা ত্বকের ওপরে নখের আঁচরে লাল হয়ে ওঠে।
পরী চিৎকার করে ওঠে ক্ষিপ্ত নাগিনীর মতন, "আমাকে ছেড়ে দাও অভি। আমার লাগছে।"
কি হয়েছিল সেদিন অভির, কিছুই জানে না, কোন কারন নেই তাও পরীর ওপরে যেন ওকে খুবলে খাবার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। পরীর চিৎকারে অভির সম্বিৎ ফেরে, ওর চোখের দিকে তাকিয়ে দেখে, পরীর গাল বেয়ে প্রচন্ড বেদনার অশ্রু গরাচ্ছে। ডুকরে কেঁদে ওঠে পরী, কম্পিত ঠোঁটে ধিক্কার জানায়, "ছেড়ে দাও আমাকে, তুমি আমার অভি নও।"
অভি তাও ছাড়েনা পরীকে, ওর কাতর মিনতি অভির কানে পৌঁছায় না। বুকের কাঁচুলি হাতের মুঠির মধ্যে নিয়ে একটান মারে আর পরপর করে ছিঁড়ে ফেলে হালকা গোলাপি রঙের বক্ষ আভরন। ভেতরের অন্তর্বাস সরে যায় বুকের অপর থেকে। বাম হাতে চেপে ধরে পরীর কোমল অনাবৃত বক্ষ।
বুকের আভরন ছিঁড়ে যেতেই, মর্মাহত পরী প্রাণপণে চিৎকার করে ওঠে, "দূর হয়ে যাও তুমি, তুমি কিছুতেই আমার অভিমন্যু হতে পার না, তুমি একটা জানোয়ার।"
এক হাতে বুকের কাপরে বুকের ওপরে কোন রকমে গুটিয়ে, ডান হাতে সজোরে এক থাপ্পর লাগিয়ে দেয় অভির গালে। চোখের চশমা খুলে মেঝেতে পরে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। অভি ওর বুক ছেড়ে দেয়। পরী আবার এক থাপ্পর কষিয়ে দেয় অভির গালে। আবার চিৎকার করে ওঠে ওর দিকে, "তুমি একটা জানোয়ার, তুমি পশু হয়ে গেছ অভি। আমি যে অভিমন্যু কে চিনতাম সেই অভি তুমি নও, আমার চোখের সামনে থেকে চলে যাও, অভি। দূর হয়ে যাও, আমি তোমাকে ঘৃণা করি।"
থাপ্পর খেয়ে অভির গাল লাল হয়ে যায়, ওর পশু সুলভ ঘোর কেটে যায়। চোখ বন্ধ করে পায়ের কাছে মাথা নিচু করে পরে যায়। কোনোরকমে গায়ের কাপড় বুকের কাছে গুটিয়ে নিয় কেঁদে ফেলে পরী। অভি আর ভাবতে পারেনা, কি হয়েছিল ওর, কেন ওর মধ্যে হটাত করে এক বুভুক্ষু হায়না জন্ম নিয়েছিল? উত্তর নেই অভির কাছে।
দেয়ালে মাথা ঠুকে কাঁদে পরী, "কেন কেন, তুমি আমার সাথে এই রকম ব্যাবহার করলে? কেন?"
পরিতাপের জল অভির চোখে দিয়ে গড়িয়ে পরে। পরীর পায়ের ওপরে মাথা রেখে কেঁদে ফেলে অভি, ফর্সা পা ভিজে যায় অভির চোখের জলে। অনেকক্ষণ ধরে দুজনে কাঁদে, পরীর কাছে ভর্তসনা জানাবার ভাষা নেই আর অভির কাছে ক্ষমা চাইবার ভাষা নেই। বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। অনেক পরে পরী কোন রকম নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে, নিজের ঘরে ঢুকে যায় আর দরজা বন্ধ করে দেয়। পরিতপ্ত অভি দেয়ালে মাথা ঠোকে বারবার। বারংবার নিজেকে প্রশ্ন করে, "কেন অভিমন্যু কেন, তুমি তোমার প্রেমিকার সাথে এই জানয়ারের মতন ব্যাবহার করলে।"
উত্তর নেই অভির কাছে।
ভাগ্যবশত অভির কাছে আরও একটা চশমা ছিল। বাবা মা ফিরে আসার পরে, সারা বিকেল ওরা একে ওপরে দিকে তাকাতে পারেনি। দুজনেই অবিশ্বাস্যভাবে চুপ করে যায়। কান্নার জন্য পরীর চোখ মুখ লাল হয়ে যায়। মা পরীকে কারন জিজ্ঞেস করাতে, পরী জানায় যে বিকেলে একটু বেশি ঘুমিয়ে পড়েছিল তাই চোখ মুখ লাল।
কোনরকম রাতের খাবার খেয়ে শুতে চলে যায় অভি। সারা রাত ঘুমাতে পারেনা অভি, ওর কানে পরীর কান্না বার বার ধাক্কা দেয়, "তুমি একটা জানোয়ার, তুমি পশু হয়ে গেছ অভি। আমি যে অভিমন্যু কে চিনতাম সেই অভিমন্যু তুমি নও।"
সকালে অভির দেরি করেই ঘুম ভাঙ্গে। নিচে নেমে দেখে যে বাবা মা কাজে বেড়িয়ে গেছেন, ঘরের মধ্যে কোথাও কোন আওয়াজ নেই, সারা বাড়ি যেন অস্বাভাবিক ভাবে নিস্তব্ধতার আঁচলে মোড়া। চুপ করে বসার ঘরে গিয়ে বসে, দেয়াল গুলো যেন ওর দিকে রেগে মেগে তাকিয়ে আছে, মাথার ওপরের ছাদ যেন ওর ওপরে হুমড়ি খেয়ে পড়বে। দরজা জানালা যেন ওকে বারংবার ধিক্কার জানাচ্ছে যে ও একটা নোংরা বীভৎস বুভুক্ষু জানোয়ার। টি.ভি চালায় অভি, কিন্তু সেই টি.ভির আওয়াজ ওর কান পর্যন্ত পৌঁছায় না।
কিছু পরে পর্দার আড়ালে পরীর পায়ের আওয়াজ শুনে চমকে ওঠে। বসার ঘরের পর্দা সরিয়ে পরী চায়ের কাপ নিয়ে ঘরে ঢুকে ওর দিকে ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে থাকে। লজ্জায় আর পরিতাপে অভি মাথা তুলে তাকাতে পারেনা। মুখ নিচু করে পাথরের মতন সোফায় বসে থাকে চুপ করে। কিছু পরে মাথা উঠিয়ে পরীর দিকে তাকায়। পরী ওর দিকে জল ভরা চোখে তাকিয়ে থাকে। সামনে এসে টেবিলের ওপরে সায়ের কাপ রেখে ওকে জিজ্ঞেস করে, "কাল কি হয়েছিল তোমার?"
ওর গলার আওয়াজ শুনে আর থাকতে পারেনা অভি। পরীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ওর কোমর জড়িয়ে ধরে পেটের ওপরে মুখ লুকিয়ে নেয়। কাঁদো কাঁদো স্বরে বলে, "আমি জানিনা পরী, আমি সত্যি জানি না আমার কি হয়েছিল।"
পরী ওর মাথা নিজের দিকে তুলে ধরে আবার জিজ্ঞেস করে, "কি হয়েছিল তোমার?"
চিকচিক করছে পরীর চোখ, ঠোঁটে লেগে মৃদু হাসি। অভির হৃদয় যেন কেউ মুঠির মধ্যে করে নিয়ে মুচরে দেয় আর বিবেক ওকে ধিক্কার জানায়। আবার জিজ্ঞেস করে পরী, "আমার অভি ত ওইরকম ছিল না। তুমি কেন আমার সাথে হায়নার মতন ব্যাবহার করলে সত্যি বলোতো?"
কেঁদে ফেলে অভি, "আমি সত্যি বলছি পরী, আমি জানিনা কেন আমি কাল তোমার সাথে ওইরকম ব্যাবহার করেছিলাম। এই শেষবারের মতন আমাকে ক্ষমা করে দাও পরী।"
পরী সোফায় বসে অভির মুখ দুহাতে আঁজলা করে ধরে ওর চোখের দিকে তাকায়। আঙুল দিয়ে গালের জলের দাগ মুছিয়ে বলে, "তুমি একটা ভীষণ শয়তান ছেলে।" নাকে নাক ঘষে বলে, "তুমি একটা জানোয়ার, একটা পশু তুমি।"
চোখের থেকে চশমা খুলে টেবিলের ওপরে রেখে দেয়। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে অভির ঠোঁটের কাছে এনে ধরে, ওকে চা খেতে বলে। অভি ওর কোমর প্রাণপণে জড়িয়ে ধরে ওকে মিনতি করে বলে, "আমার এই ব্যাবহারের জন্য তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবেনা ত?"
হেসে ফেলে পরী, "কি করে যাই বলো, তোমাকে ছেড়ে? তুমি শয়তান, তুমি পশু হতে পারো, কিন্তু তুমি যে গাধা একটা। আমাকে ছাড়া তুমি জীবনে এক পা ও চলতে পারবে না। আমি কি করে আমার সেই ছোট্ট রাজকুমার কে ছেড়ে চলে যাই বলো ত? আমি ত তাকে ছেড়ে যেতে পারিনা। ওই কথা কখন মুখে আনবে না, যে আমি তোমাকে ছেড়ে চলে যাবো। এবারে চা খেয়ে নাও।"
অভির ঠোঁটের কাছে চায়ের কাপ ধরে চা খাইয়ে দেয়। চা খাওয়ানোর পরে বাইরে তাকিয়ে দেখে যে ঝিরঝির বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টির দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে অভিকে বলে, "বাইরে দেখ, মেঘের দেবতারা আকাশ থেকে আমাদের আশীর্বাদ করছেন। চলো না ছাদে গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে মজা করি।"
পরী অভির হাত ধরে ধরে টানতে টানতে ছাদে নিয়ে গেল। ওর মুখের হাসি ফিরে এসেছে দেখে অভির মরা গাঙ্গে জোয়ার এল যেন। ছাদে উঠেই ওর হাত ছেড়ে দৌড়ে গিয়ে ছাদের মাঝে দাঁড়িয়ে পরে, বৃষ্টির মাঝে। চোখ বন্ধ করে মাথা উঁচু করে, হাত দুটি দুপাশে ছড়িয়ে যেন বৃষ্টিকে আহবান জানায় ওকে ভিজিয়ে দেওয়ার জন্য। অভি হাসে আর পরী দিকে তাকিয়ে থাকে। পরনের কাপড় ভিজে গিয়ে কোমরের নিচ থেকে পুরো অঙ্গে লেপটে গেছে। পরী যেন শিশিরে ভেজা জুঁই। লম্বা ঘন কালো চুল বেয়ে টপ টপ করে জল বেয়ে চিবুকের নিচে গিয়ে অল্প জমে ওঠে তারপরে টপ টপ করে নিচে পড়তে থাকে। সামনে দাঁড়িয়ে যেন স্বর্গের অপ্সরা মেনকা, এই যেন সাগর জলে স্নান সেরে ওর চোখের সামনে উঠে এসেছে।
চোখে মুখের জল মুছে অভির দিকে তাকিয়ে জোরে ডাক দেয়, "কি হল, ওখানে দাঁড়িয়ে কেন? এখানে এস।"
মৃদু হেসে অভি উত্তর দেয়, "ভুলে গেছ? কয়েক দিন আগেই কিন্তু তুমি জ্বর থেকে উঠছ।"
খিলখিল করে হেসে ফেলে পরী, "না না ভুলিনি, আবার পড়লে তুমি আছো ত আমাকে দেখার জন্য।"
মাথা নাড়ায় অভি, "তুমি শুধরবে না তাই না।"
অভি বৃষ্টির মধ্যে, ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। পরী ওর চোখে দেখে বুঝতে পারে যে অভি কি করতে চলেছে, দু পা পেছনে সরে যায়। অভি আবার দু’পা ওর দিকে এগিয়ে যায় আর পরী আবার দু’পা পিছিয়ে যায়, এ যেন এক বিড়াল আর ইঁদুরের খেলা। অভির চোখে দুষ্টুমির হাসি, একবার হাতে পেলে হয় পরী।
পরী ওর চোখের হাসি দেখে এক দৌড়ে অভির ঘরে ঢুকে পড়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। অভি মাথা দোলায়, "দুষ্টু মেয়ে, কত লুকোচুরি খেলবে আমার সাথে।"
বন্ধ দরজার অন্য পাশ থেকে পরী জোরে বলে ওঠে, "এস না, দেখি কেমন ধরতে পারো।"
দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকে পড়ে অভি, পরী বিছানার পাসে দাঁড়িয়ে তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে থাকে। চোখে মুখে সেই পুরানো হাসি।
অভি ওর হাসি দেখে জিজ্ঞেস করে, "শয়তান মেয়ে, আমার ভেতরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে তারপরে আবার দুরে ঠেলে দেওয়া হয় কেন?"
পরী ওকে উলটো প্রশ্ন করে, "সবসময়ে কি তোমার শয়তানি করার ইচ্ছে জাগে? কখন কি আমাকে একটু জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে না, একবার অন্তত্ত আদর করে জড়িয়ে ধরে আকাশের দিকে চেয়ে থাকতে। তুমি জড়িয়ে ধরলে মনে যেন এক অনাবিল শান্তির ছায়া নেমে আসে, আমি নিরুদ্বেগে তোমার কোলে মাথা রেখে যেন ঘুমিয়ে পড়তে পারি।"
পরীর কথা শুনে অভির মন ভারী হয়ে যায়, পরিতাপ ঢেকে দেয় ওর হৃদয়কে। অভি ওর দিকে দু’পা এগিয়ে যায়, পরী বলে ওঠে, "আমি কিন্তু একদম ভিজে গেছি, একদম কাছে আসবে না।"
অভি হাত ভাঁজ করে মাথার ওপরে বাড়ি মারে, পরীর দিকে এগতে আর সাহস করেনা। ভারাক্রান্ত মনে জিজ্ঞেস করে, "তাহলে তুমি আমাকে ক্ষমা করনি, তাই ত?"
বিছানার ওপরে ভিজে তোয়ালে ছুঁড়ে ফেলে অভির সামনে এগিয়ে আসে। অভির কলার ধরে উঁচু হয়ে নাকে নাক ঠেকায়। অভির নিস্পলক কাতর চোখের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বলে, "তুমি ত ক্ষমার যোগ্য নও। তবে একটা শর্তে ক্ষমা করতে রাজি আছি, যদি তুমি আমার ছবি আঁকো।"
বিছানা মাথার দিকে বালিশ দিয়ে পরীকে উঠিয়ে বসিয়ে দেয়, গলা পর্যন্ত টেনে দেয় গায়ের চাদর। রুটি দুধ মেখে খাওয়ানোর জন্য নিয়ে আসে। অভি ওকে মুখ ধুতে বলে, পরী অনুনয় সুরে বলে, "না।"
অভি মৃদু বকুনি দেয়, "মুখ না ধুলে হবে? যা বলছি তাই করো।"
তোয়ালে ভিজিয়ে চোখ মুখ মুছিয়ে দেওয়ার পরে খাইয়ে দেয়। হাত মুখ মুছিয়ে দেওয়ার পরে যেন পরীর একটু ভালো লাগে, গালের লালিমা যেন কিঞ্চিত ফিরে আসে।
"ভালো লাগছে?" ওকে জিজ্ঞেস করে। শুধু মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেয়, ঠিক আছে। খাওয়ানোর পরে ওষুধ খাইয়ে দেয়।
অভি পরীকে বলে, "মাথা ধুইয়ে গাঁ হাত, মুছিয়ে দেই ভালো লাগবে।"
পরীকে বাথরুমে ঢুকিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করে সাহায্য করতে হবে নাকি, পরী দরজা বন্ধ করে জোর গলায় বলে, "না।" অভি ওর কথা শোনে না, গরম জল করে এনে হাত পা মুখ মুছিয়ে দেয়, পরী বারবার অনুনয় করে, পায়ে যেন হাত না দেয়। হাত পা ধোয়ানর পরে, পরীর শরীর বেশ হালকা লাগে।
"রবীন্দ্রনাথের সাজাহান পড়ে শোনাবে আমাকে?"
অভির কাছে আব্দার করে।
অভি বিছানায় উঠে বসে, পরী গায়ের ওপরে চাদর টেনে ওর বুকের ওপরে মাথা রেখে শুয়ে পরে। বাম হাত দিয়ে পরীকে জড়িয়ে ধরে, এক হাতে খুলে ধরে রবীন্দ্রনাথের সঞ্চয়িতা। সাজাহান কবিতার কিছু অংশ পড়ে শোনানর চেষ্টা করে অভি। পরী ওর বাংলা কবিতা পড়া শুনে হেসে ফেলে, "থাক অনেক পড়ে ফেলেছ, আর কবিতার পিন্ডি চটকাতে হবে না।"
অভি নিরুপায় হয়ে পরীকে জানায়, "তুমি জানতে যে আমার বাংলা খুব সুন্দর, তাও আমাকে পড়তে বললে কেন?"
হেসে উত্তর দেয় পরী, "দেখতে চেয়েছিলাম তুমি সত্যি বাংলা পড়তে পারো কিনা।"
মাথার ওপরে চুমু খেয়ে বলে, "হাঁ ভগবান।"
মাথার ওপরে ঠোঁটের পরশ পেয়ে বুকের কাছে আরও জড়সড় হয়ে বসে বলে, "শক্ত করে জড়িয়ে ধরোনা আমায়।"
অভি বই ছেড়ে, দু’হাতে নিবিড় আলিঙ্গনে বেঁধে ফেলে পরীকে। বুকের কাছে যেন লেপটে যায় পরী।
অভি ওর কানে কানে বলে, "আমি হিন্দিতে তোমার জন্য কবিতা লিখেছি, শুনবে?"
পরী মাথা নোয়ায়, "হ্যাঁ।" অভি আবার বলে, "হিন্দি তে কিন্তু।" পরী জানায়, "প্রেমের কি ভাষা হয় নাকি, তুমি বলবে আমি ঠিক বুঝে নেব।"
ডায়রিতে কি লিখেছিল, একবার চোখ বন্ধ করে মনে করে নেয় তারপরে ওর হিন্দি কবিতা শোনায়। কবিতা শোনার পরে পরী অভির দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসে, দুহাতে ওর গলা জড়িয়ে ধরে। মুখ উঁচু করে অভির ঠোঁট ছুঁতে যায়। পরীর ঠোঁট ছোঁয়ার বদলে ওর মাথার ওপরে ঠোঁট চেপে ধরে অভি।
অভি, "তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাও, তারপরে আমাদের অনেক কিছু ভাবতে হবে, সোনা।"
পরী, "আমাকে তোমার বুকের কাছে লুকিয়ে নাও, অভি।"
বুকের ওপরে মাথা চেপে ধরে অভি বলে, "তুমি এখানেই থাকবে পরী, সবসময়ে এখানে থাকবে।"
দিন দুই পরে পরীর জ্বর সেরে গেলে অভি "সিন্ডলারস লিস্ট" দেখতে যাবার কথা বলে। পরী এক উপায় বের করে এবারে যাতে ওরা ধরা না পরে। অভিকে বলে যে ওরা বাবু, ছোটমা বেড়িয়ে যাবার পরেই সিনেমা দেখতে বেড়িয়ে পড়বে আর ওদের ফিরে আসার আগেই বাড়ি ফিরে আসবে। সুকৌশল পরিকল্পনা, যেমন ভাবা তেমনি কাজ, কিন্তু বাদ সাধে বর্ষা কাল। তাই আর সেদিন যাওয়া হয়ে ওঠে না।
কিন্তু পরদিন যেই বাবা মা বেড়িয়ে যান কাজে, ঠিক তারপরেই অভি তৈরি হয়ে নেয়। আকাশের দিকে তাকিয়ে পরীকে অনুরধ করে যে ও যেন বৃষ্টির জন্য তৈরি থাকে আর সেই মত কাপড় পরে। কিন্তু লাজুক সুন্দরী পরী, শাড়ি ছাড়া যেন জগতে ওর কাছে আর কোন সুন্দর পোশাক হয় না। যথারীতি হাল্কা গোলাপি রঙের শিফন শাড়ি আর ছোটো হাতার কাঁচুলি পরে বেড়িয়ে এল। ফর্সা গায়ের রঙ আর তাঁর সাথে শাড়ির রঙ বেশ মিলিয়েছে। লাল ঠোঁট, চোখের কোলে কাজল, কপালে ছোটো গোলাপি টিপ সব মিলিয়ে অভির সেদিন মনে হয়েছিল যে, সিনেমা না হয় আর কোন একদিন দেখা যাবে আজ পরীকেই দেখি। হাতে ধরে কালো ক্লাচ ব্যাগ আর বাঁ হাতের সরু কব্জিতে সোনার টাইটান ঘড়ি, ছোটমা কয়েকদিন আগেই কিনে দিয়েছে। হাঁটু গেড়ে ওর সামনে বসে পরে দুহাতে জড়িয়ে ধরতে যায় পরীকে, মিষ্টি হেসে পরী ওকে বলে, "না, একদম কোন শয়তানি না, চল বেড়িয়ে পরি।"
উঠে দাঁড়িয়ে এক হাতে কোমর জড়িয়ে ধরে অভি, অন্য হাতের তর্জনী দিয়ে চিবুক ছুঁয়ে সুন্দর মুখখানি ওপরে তোলে। অভির বুকের ওপরে হাত রেখে জামা ধরে নেয়, প্রেমঘন গভীর কালো চোখে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে।
অভি, "তুমি এত সুন্দর কেন, পরী?"
পরী, "সৌন্দর্য সবসময়ে যে দেখে তাঁর চোখে লুকিয়ে থাকে। সুন্দরী আমি নয়, তোমার দৃষ্টি, তোমার চাহনি আমাকে সুন্দরী করে তুলেছে, অভি।"
সারা রাস্তা পরী ওর একদম পাসেপাসে ছিল, একবারের জন্য ও যেন ওকে আলাদা করতে মন করছিল না অভির। নন্দনে তাড়াতাড়ি পৌঁছে গেল। আকাশে কালো মেঘের খেলা শুরু হয়ে গেছে, বৃষ্টি যেকোনো সময়ে নামতে পারে।
পরী ওকে জিজ্ঞেস করে, "সিনেমাটা কি ধরনের?"
অভি উত্তর দেয়, "সত্য ঘটনা অবলম্বে এই সিনেমা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে এক জার্মান ইহুদী প্রায় এক হাজার ইহুদীদের হিটলারের অত্যাচার থেকে বাঁচায়।"
অস্ফুট চেঁচিয়ে ওঠে পরী, "তুমি আমাকে হরর সিনেমা দেখাতে এনেছ? কেউ কি তার গার্লফ্রেন্ড কে নিয়ে এইরকম সিনেমা দেখতে যায়?"
অভি হেসে ওঠে, "না বেবি, হরর সিনেমা নয়, এট।"
পরী, "তুমি আস্ত পাগল, এটা হরর নয়ত কি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধরে কাহিনী তারপরে আবার সত্য ঘটনা অবলম্বনে, তাঁর মানেই ত ভয়ের গল্প, দুখের গল্প।"
অভি অনেক নাম শুনেছে ওই সিনেমাটার তাই ওকে দেখতে হবেই, কোনোরকমে পরীকে রাজি করায় সিনেমা হলে ঢুকতে। শেষ পর্যন্ত ওর কাতর মিনতির সামনে পরী হার মানে। নন্দনে খুব মানুষ সেইদিন ওই সিনেমা দেখতে এসেছিল, একে বর্ষাকাল তার ওপরে একটু অন্যধরনের সিনেমা বলে হলে লোকসংখ্যা কম। পরী ওর ডানদিকে বসে কাঁধে মাথা রেখে চুপ করে সিনেমা দেখতে থাকে।
সিনেমায় এক দৃশ্য ছিল যে, রাল্ফ ফিয়েন্স এক সকালে কাঁধে বন্দুক নিয়ে নিজের রুম থেকে বেড়িয়ে বারন্দায় দাঁড়ায়। তারপরে সেই বন্দুকের নল তাক করে সামনের জেলের খোলা জায়গার দিকে, যেখানে অনেক ইহুদী মজুর কাজ করছিল। একটা ছোটো ছেলে কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে একটা ছোটো ঘরের সিঁড়িতে বসে একটু বিশ্রাম করছিল। রালফ ফিয়েন্স তাঁর দিকে বন্দুক তাগ করে সেই ছোটো ছেলেটার মাথার মধ্যে গুলি চালিয়ে দেয়, প্রানহীন রক্তাক্ত দেহ লুটিয়ে পরে মাটির ওপরে। সেই দৃশ্য দেখে পরী ভয়ে চিৎকার করে ওঠে। অভির বুকের জামা খামচে ধরে বুকের ওপরে মুখ লুকিয়ে ফেলে।
পরী, "না না না, আমি এইরকম বীভৎস সিনেমা দেখতে পারব না। আমাকে এখানে থেকে নিয়ে চল, আমি আর এই সিনেমা দেখব না, প্লিস নিয়ে চলো আমাকে।"
অভি মিনতি করে, "বেবি, এটা শুধু একটা মুভি।"
পরী মুখ না উঠিয়েই বলে, "সত্য ঘটনার অবলম্বনে তৈরি, আমি আর দেখতে পারবোনা।"
অভি, "প্লিস বেবি।"
পরী বিরক্তি ভরা চাহনি নিয়ে ওর দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে বলে, "তুমি কেমন ধারা মানুষ? প্রেমিকরা তাদের প্রেমিকাদের নিয়ে কোথায় রোম্যান্টিক সিনেমা দেখতে যায় আর তুমি কিনা তোমার প্রেমিকা কে নিয়ে এই রকম উধভট একটা বেদনাদায়ক সিনেমা দেখাতে এনেছ।"
অভি, "ওকে বাবা, কি চাও তুমি? দেখতে চাও না চলে যেতে চাও?"
পরী, "না আমি আর এই সিনেমা দেখতে চাই না। আমাকে প্লিস এখান থেকে নিয়ে চলো।"
সিনেমার মাঝখানেই ওরা হল ছেড়ে বেড়িয়ে এল, অভির মন খারাপ হল বটে কিন্তু পরীকে দুঃখ দিয়ে সিনেমা দেখতে মন চাইল না। আকাশের দিকে তাকিয়ে পরী লক্ষ্য করল যে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে।
অভির দিকে ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে বলে, "অভি, বৃষ্টি নামলো বলে, কি করব? আমার শাড়ি ভিজে যাবে যে?"
অভি, "বারি ফিরে যাই চলো।"
বারির ফিরে যাবার কথা শুনে পরীর মন খারাপ হয়ে গেল। পরী ওকে বলল, "একদিনের জন্যও ঠিক করে বের হতে পারিনা। চলো না সেই আইস্ক্রিম পার্লারে যেখানে অরুনাকে নিয়ে গেছিলে।"
অভি আর পরী, ট্যাক্সি চেপে আউট্ট্রাম ঘাটের স্কুপ আইসক্রিম পার্লারে চলে আসে। পরীকে নিয়ে সেই একই জায়গায় বসে অভি, যেখানে অরুনাকে নিয়ে বসেছিল। পরী বড় কাঁচের জানালার বাইরে তাকিয়ে গঙ্গার দিকে একমনে তাকিয়ে থাকে, আকাশ কালো, জল কালো, মাঝে দিগন্তের দিকে একটু খোলা আকাশ, নয়নাভিরাম দৃশ্য।
পরী হেসে ওর দিকে তাকিয়ে বলে, "এই রকম রোম্যান্টিক জায়গা থাকতে তুমি কিনা আমাকে নিয়ে সিন্ডলারস লিস্ট দেখতে গেছ, কি মানুষ তুমি, অভি?"
পরীর কাঁধে মাথা রেখে চুপ করে বসে থাকে অভি, পরী আইস্ক্রিম খেতে খেতে মাঝে মাঝে ওর মাথার গাল ঘষে দেয়। বাইরে ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে দিয়েছে। পরী ওকে বলে যে এবারে বারি ফেরা উচিত। তাড়াতাড়ি আইস্ক্রিম শেষ করে ট্যাক্সি চেপে বাড়ি পৌঁছায় ওরা। বাড়িতে কেউ ফিরে আসার আগেই বাড়ি ঢুকে পরে। সারাটা রাস্তা দু’জনে বেড়াল ছানার মতন মারামারি করেতে থাকে, পরী ওকে খেপিয়ে তোলে যে প্রেমিকা কে নিয়ে কেউ কি ওই রকম উধভট সিনেমা দেখতে যায়, আর অভি রেগে যায় কেননা ওই সিনেমাটা ওর খুব প্রিয়।
দরজা খুলে পরী সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠে, পেছনে অভি। হাল্কা গোলাপি রঙের সিফন শাড়িটা যেন আস্টেপিষ্টে কমনীয় দেহের সাথে লেপে গেছে। ফুলে ওঠা নিতম্বের দোলা দেখে অভির মন নেচে ওঠে, শাড়ির আঁচল একদিক থেকে সিঁড়িতে পরে পরীর পেছন পেছন ধাওয়া করছে যেন। অভি শাড়ির আঁচল টেনে ধরে আর আঁচল ওর বুক থেকে খসে যায়। আচমকা অভির এই ব্যাবহারে পরী চমকে ওঠে, শাড়ির অপর প্রান্ত ধরে মিনতির সুরে অভিকে বলে, "সোনা, প্লিস ছেড়ে দাও।"
অভি ওর কথায় কান না দিয়ে শাড়ির আঁচল টেনে ধরে সিঁড়ির দেয়ালের ওপরে চেপে ধরে পরীর কমনীয় দেহ। বুক থেকে আঁচল খসে গেছে, কাঁচুলি অনাবৃত উন্নত বক্ষ যুগল যেন কাচুলির ভেতর থেকে ঠেলে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। অভি নিজেকে আর সামলাতে পারে না। অভি নিজের শরীর ওর দেহের ওপরে চেপে ধরে। লজ্জা পেয়ে যায় পরী, হাত উঠে আসে বুকের ওপরে, ঢেকে নিতে চায় নিজের লজ্জা। শ্বাসের ফলে উন্নত বক্ষ ওঠা নামা করে আর মনে হয় যেন এই ফেটে পড়বে। অভি দু’হাত নিয়ে যায় অনাবৃত কোমরে, মৃদু চাপ দিতে শুরু করে পেটের দুপাশের নরম তুলতুলে নারী মাংস। প্রেমিকের হাতের ছোঁয়ায় পরীর শ্বাস উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভির কামনা ভরা চোখের সামনে পরীর মুখ। দু হাতে অভির জামার কলার মুঠি করে ধরে আর ওর প্রেমঘন চোখের দিকে তাকায়। লাল ঠোঁট জোড়া অল্প খোলা, অভির সারা মুখের ওপরে তপ্ত কামনার শ্বাস বয়ে যায়। অভির সিংহ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
প্রকাশ্য দিবালোক সিঁড়ির জানালা দিয়ে ওদের ওপরে পরে, পরী লজ্জায় লাল হয়ে ওকে বলে, "প্লিস সোনা এখানে নয়।"
অভির ভেতরে যেন এক ক্ষিপ্ত হায়না জেগে ওঠে, চেপে ধরে নিজের তলপেট পরীর তলপেটের ওপরে। কঠিন শলাকার পরশ বুঝতে দেরি হয় না পরীর। ঠিক তলপেটের ওপরে কঠিন অভি, মৃদু শীৎকার করে ওঠে পরী, "আহহহ... প্লিস সোনা এখানেই আমাকে পাগল করে তুলো না... প্লিস হানি..."
ঠোঁট চেপে ধরে ওই রসালো ঠোঁটে জোড়ার ওপরে, থামিয়ে দেয় পরীর শীৎকার, মুখের ভেতরে টেনে নেয় পরীর শ্বাস আর লালার মধু। পরী দুহাতে ওর মাথা আঁকড়ে ধরে। কম্পিত উন্নত বক্ষ যুগল, অভির প্রসস্থ বুকের ওপরে লেপে যায় মাখনের মতন, পরী যেন গলে গিয়ে প্রলেপ লাগিয়ে দেয় নিজেকে। তীব্র কামনার আগুনে পরী অভির নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে দাঁতের মাঝে আর আলতো আলতো চাপ দিতে শুরু করে। কামরের সেই স্পর্শ অভিকে উন্মাদ করে তোলে, হাত নামিয়ে নিয়ে আসে পরীর কোমল সুগোল নিতম্বের ওপরে আর চেপে ধরে দুই নারী মন্ড কঠিন থাবার মাঝে। নখ বসিয়ে দেয় শাড়ির ওপরে দিয়ে আর পিষে ধরে কোমল নারী মাংস। দুহাতে চেপে ধরে পরীকে মাটি থেকে উঠিয়ে নেয়, পরী নিজের ভার অভির ওপরে ছেড়ে দেয় আর দুহাতে ওর গলা জড়িয়ে ধরে। কোলে তুলে বসার ঘরে ঢুকে ডিভানের ওপরে ছুঁড়ে দেয় পরীর কমনীয় শরীর। ডিভানে শুয়েই পরী ওর আঁচল গুটিয়ে নিয়ে বুকের কাছে জড় করে ধরে মিনতি করে অভির কাছে, "প্লিস এখুনি শুরু করো না সোনা, বাবু যেকোন মুহূর্তে বাড়ি ফিরে আসবে।"
এক টানে জামার বোতাম খুলে ফেলে অভি, জামা ছুঁড়ে ফেলে মাটিতে। প্রেমিক অভি লালসার লেলিহান শিখায় জ্বলে এক বুভুক্ষু হায়নার ন্যায় হয়ে উঠেছে। হিংস্র চোখে ক্ষুধার্ত দানবের মতন তাকিয়ে থাকে পরীর দিকে। বিছানার ওপরে চড়ে পরীর দিকে এগিয়ে যায় আর পরী ওর চোখের ভাষা দেখে ভয়ে দেয়ালের দিকে পিছিয়ে যায়। এ কোন অভিমন্যু, এত ওর প্রানের অভি নয়, কেঁপে ওঠে পরীর বুক। ওর পা ধরে টান মারে অভি, এক লাথি মারে অভির বুকের ওপরে। অভির হাত পৌঁছে যায় শাড়ির গিঁটের ওপরে, নাভির চারদিকের নরম মাংসে নখ বসিয়ে খামচে ধরে। পরী বারংবার অভিকে শান্ত হতে কাতর মিনতি জানায় কিন্তু ক্ষুধার্ত অভি উন্মাদ হয়ে উঠেছে। পেটের ফর্সা ত্বকের ওপরে নখের আঁচরে লাল হয়ে ওঠে।
পরী চিৎকার করে ওঠে ক্ষিপ্ত নাগিনীর মতন, "আমাকে ছেড়ে দাও অভি। আমার লাগছে।"
কি হয়েছিল সেদিন অভির, কিছুই জানে না, কোন কারন নেই তাও পরীর ওপরে যেন ওকে খুবলে খাবার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। পরীর চিৎকারে অভির সম্বিৎ ফেরে, ওর চোখের দিকে তাকিয়ে দেখে, পরীর গাল বেয়ে প্রচন্ড বেদনার অশ্রু গরাচ্ছে। ডুকরে কেঁদে ওঠে পরী, কম্পিত ঠোঁটে ধিক্কার জানায়, "ছেড়ে দাও আমাকে, তুমি আমার অভি নও।"
অভি তাও ছাড়েনা পরীকে, ওর কাতর মিনতি অভির কানে পৌঁছায় না। বুকের কাঁচুলি হাতের মুঠির মধ্যে নিয়ে একটান মারে আর পরপর করে ছিঁড়ে ফেলে হালকা গোলাপি রঙের বক্ষ আভরন। ভেতরের অন্তর্বাস সরে যায় বুকের অপর থেকে। বাম হাতে চেপে ধরে পরীর কোমল অনাবৃত বক্ষ।
বুকের আভরন ছিঁড়ে যেতেই, মর্মাহত পরী প্রাণপণে চিৎকার করে ওঠে, "দূর হয়ে যাও তুমি, তুমি কিছুতেই আমার অভিমন্যু হতে পার না, তুমি একটা জানোয়ার।"
এক হাতে বুকের কাপরে বুকের ওপরে কোন রকমে গুটিয়ে, ডান হাতে সজোরে এক থাপ্পর লাগিয়ে দেয় অভির গালে। চোখের চশমা খুলে মেঝেতে পরে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। অভি ওর বুক ছেড়ে দেয়। পরী আবার এক থাপ্পর কষিয়ে দেয় অভির গালে। আবার চিৎকার করে ওঠে ওর দিকে, "তুমি একটা জানোয়ার, তুমি পশু হয়ে গেছ অভি। আমি যে অভিমন্যু কে চিনতাম সেই অভি তুমি নও, আমার চোখের সামনে থেকে চলে যাও, অভি। দূর হয়ে যাও, আমি তোমাকে ঘৃণা করি।"
থাপ্পর খেয়ে অভির গাল লাল হয়ে যায়, ওর পশু সুলভ ঘোর কেটে যায়। চোখ বন্ধ করে পায়ের কাছে মাথা নিচু করে পরে যায়। কোনোরকমে গায়ের কাপড় বুকের কাছে গুটিয়ে নিয় কেঁদে ফেলে পরী। অভি আর ভাবতে পারেনা, কি হয়েছিল ওর, কেন ওর মধ্যে হটাত করে এক বুভুক্ষু হায়না জন্ম নিয়েছিল? উত্তর নেই অভির কাছে।
দেয়ালে মাথা ঠুকে কাঁদে পরী, "কেন কেন, তুমি আমার সাথে এই রকম ব্যাবহার করলে? কেন?"
পরিতাপের জল অভির চোখে দিয়ে গড়িয়ে পরে। পরীর পায়ের ওপরে মাথা রেখে কেঁদে ফেলে অভি, ফর্সা পা ভিজে যায় অভির চোখের জলে। অনেকক্ষণ ধরে দুজনে কাঁদে, পরীর কাছে ভর্তসনা জানাবার ভাষা নেই আর অভির কাছে ক্ষমা চাইবার ভাষা নেই। বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। অনেক পরে পরী কোন রকম নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে, নিজের ঘরে ঢুকে যায় আর দরজা বন্ধ করে দেয়। পরিতপ্ত অভি দেয়ালে মাথা ঠোকে বারবার। বারংবার নিজেকে প্রশ্ন করে, "কেন অভিমন্যু কেন, তুমি তোমার প্রেমিকার সাথে এই জানয়ারের মতন ব্যাবহার করলে।"
উত্তর নেই অভির কাছে।
ভাগ্যবশত অভির কাছে আরও একটা চশমা ছিল। বাবা মা ফিরে আসার পরে, সারা বিকেল ওরা একে ওপরে দিকে তাকাতে পারেনি। দুজনেই অবিশ্বাস্যভাবে চুপ করে যায়। কান্নার জন্য পরীর চোখ মুখ লাল হয়ে যায়। মা পরীকে কারন জিজ্ঞেস করাতে, পরী জানায় যে বিকেলে একটু বেশি ঘুমিয়ে পড়েছিল তাই চোখ মুখ লাল।
কোনরকম রাতের খাবার খেয়ে শুতে চলে যায় অভি। সারা রাত ঘুমাতে পারেনা অভি, ওর কানে পরীর কান্না বার বার ধাক্কা দেয়, "তুমি একটা জানোয়ার, তুমি পশু হয়ে গেছ অভি। আমি যে অভিমন্যু কে চিনতাম সেই অভিমন্যু তুমি নও।"
সকালে অভির দেরি করেই ঘুম ভাঙ্গে। নিচে নেমে দেখে যে বাবা মা কাজে বেড়িয়ে গেছেন, ঘরের মধ্যে কোথাও কোন আওয়াজ নেই, সারা বাড়ি যেন অস্বাভাবিক ভাবে নিস্তব্ধতার আঁচলে মোড়া। চুপ করে বসার ঘরে গিয়ে বসে, দেয়াল গুলো যেন ওর দিকে রেগে মেগে তাকিয়ে আছে, মাথার ওপরের ছাদ যেন ওর ওপরে হুমড়ি খেয়ে পড়বে। দরজা জানালা যেন ওকে বারংবার ধিক্কার জানাচ্ছে যে ও একটা নোংরা বীভৎস বুভুক্ষু জানোয়ার। টি.ভি চালায় অভি, কিন্তু সেই টি.ভির আওয়াজ ওর কান পর্যন্ত পৌঁছায় না।
কিছু পরে পর্দার আড়ালে পরীর পায়ের আওয়াজ শুনে চমকে ওঠে। বসার ঘরের পর্দা সরিয়ে পরী চায়ের কাপ নিয়ে ঘরে ঢুকে ওর দিকে ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে থাকে। লজ্জায় আর পরিতাপে অভি মাথা তুলে তাকাতে পারেনা। মুখ নিচু করে পাথরের মতন সোফায় বসে থাকে চুপ করে। কিছু পরে মাথা উঠিয়ে পরীর দিকে তাকায়। পরী ওর দিকে জল ভরা চোখে তাকিয়ে থাকে। সামনে এসে টেবিলের ওপরে সায়ের কাপ রেখে ওকে জিজ্ঞেস করে, "কাল কি হয়েছিল তোমার?"
ওর গলার আওয়াজ শুনে আর থাকতে পারেনা অভি। পরীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ওর কোমর জড়িয়ে ধরে পেটের ওপরে মুখ লুকিয়ে নেয়। কাঁদো কাঁদো স্বরে বলে, "আমি জানিনা পরী, আমি সত্যি জানি না আমার কি হয়েছিল।"
পরী ওর মাথা নিজের দিকে তুলে ধরে আবার জিজ্ঞেস করে, "কি হয়েছিল তোমার?"
চিকচিক করছে পরীর চোখ, ঠোঁটে লেগে মৃদু হাসি। অভির হৃদয় যেন কেউ মুঠির মধ্যে করে নিয়ে মুচরে দেয় আর বিবেক ওকে ধিক্কার জানায়। আবার জিজ্ঞেস করে পরী, "আমার অভি ত ওইরকম ছিল না। তুমি কেন আমার সাথে হায়নার মতন ব্যাবহার করলে সত্যি বলোতো?"
কেঁদে ফেলে অভি, "আমি সত্যি বলছি পরী, আমি জানিনা কেন আমি কাল তোমার সাথে ওইরকম ব্যাবহার করেছিলাম। এই শেষবারের মতন আমাকে ক্ষমা করে দাও পরী।"
পরী সোফায় বসে অভির মুখ দুহাতে আঁজলা করে ধরে ওর চোখের দিকে তাকায়। আঙুল দিয়ে গালের জলের দাগ মুছিয়ে বলে, "তুমি একটা ভীষণ শয়তান ছেলে।" নাকে নাক ঘষে বলে, "তুমি একটা জানোয়ার, একটা পশু তুমি।"
চোখের থেকে চশমা খুলে টেবিলের ওপরে রেখে দেয়। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে অভির ঠোঁটের কাছে এনে ধরে, ওকে চা খেতে বলে। অভি ওর কোমর প্রাণপণে জড়িয়ে ধরে ওকে মিনতি করে বলে, "আমার এই ব্যাবহারের জন্য তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবেনা ত?"
হেসে ফেলে পরী, "কি করে যাই বলো, তোমাকে ছেড়ে? তুমি শয়তান, তুমি পশু হতে পারো, কিন্তু তুমি যে গাধা একটা। আমাকে ছাড়া তুমি জীবনে এক পা ও চলতে পারবে না। আমি কি করে আমার সেই ছোট্ট রাজকুমার কে ছেড়ে চলে যাই বলো ত? আমি ত তাকে ছেড়ে যেতে পারিনা। ওই কথা কখন মুখে আনবে না, যে আমি তোমাকে ছেড়ে চলে যাবো। এবারে চা খেয়ে নাও।"
অভির ঠোঁটের কাছে চায়ের কাপ ধরে চা খাইয়ে দেয়। চা খাওয়ানোর পরে বাইরে তাকিয়ে দেখে যে ঝিরঝির বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টির দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে অভিকে বলে, "বাইরে দেখ, মেঘের দেবতারা আকাশ থেকে আমাদের আশীর্বাদ করছেন। চলো না ছাদে গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে মজা করি।"
পরী অভির হাত ধরে ধরে টানতে টানতে ছাদে নিয়ে গেল। ওর মুখের হাসি ফিরে এসেছে দেখে অভির মরা গাঙ্গে জোয়ার এল যেন। ছাদে উঠেই ওর হাত ছেড়ে দৌড়ে গিয়ে ছাদের মাঝে দাঁড়িয়ে পরে, বৃষ্টির মাঝে। চোখ বন্ধ করে মাথা উঁচু করে, হাত দুটি দুপাশে ছড়িয়ে যেন বৃষ্টিকে আহবান জানায় ওকে ভিজিয়ে দেওয়ার জন্য। অভি হাসে আর পরী দিকে তাকিয়ে থাকে। পরনের কাপড় ভিজে গিয়ে কোমরের নিচ থেকে পুরো অঙ্গে লেপটে গেছে। পরী যেন শিশিরে ভেজা জুঁই। লম্বা ঘন কালো চুল বেয়ে টপ টপ করে জল বেয়ে চিবুকের নিচে গিয়ে অল্প জমে ওঠে তারপরে টপ টপ করে নিচে পড়তে থাকে। সামনে দাঁড়িয়ে যেন স্বর্গের অপ্সরা মেনকা, এই যেন সাগর জলে স্নান সেরে ওর চোখের সামনে উঠে এসেছে।
চোখে মুখের জল মুছে অভির দিকে তাকিয়ে জোরে ডাক দেয়, "কি হল, ওখানে দাঁড়িয়ে কেন? এখানে এস।"
মৃদু হেসে অভি উত্তর দেয়, "ভুলে গেছ? কয়েক দিন আগেই কিন্তু তুমি জ্বর থেকে উঠছ।"
খিলখিল করে হেসে ফেলে পরী, "না না ভুলিনি, আবার পড়লে তুমি আছো ত আমাকে দেখার জন্য।"
মাথা নাড়ায় অভি, "তুমি শুধরবে না তাই না।"
অভি বৃষ্টির মধ্যে, ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। পরী ওর চোখে দেখে বুঝতে পারে যে অভি কি করতে চলেছে, দু পা পেছনে সরে যায়। অভি আবার দু’পা ওর দিকে এগিয়ে যায় আর পরী আবার দু’পা পিছিয়ে যায়, এ যেন এক বিড়াল আর ইঁদুরের খেলা। অভির চোখে দুষ্টুমির হাসি, একবার হাতে পেলে হয় পরী।
পরী ওর চোখের হাসি দেখে এক দৌড়ে অভির ঘরে ঢুকে পড়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। অভি মাথা দোলায়, "দুষ্টু মেয়ে, কত লুকোচুরি খেলবে আমার সাথে।"
বন্ধ দরজার অন্য পাশ থেকে পরী জোরে বলে ওঠে, "এস না, দেখি কেমন ধরতে পারো।"
দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকে পড়ে অভি, পরী বিছানার পাসে দাঁড়িয়ে তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে থাকে। চোখে মুখে সেই পুরানো হাসি।
অভি ওর হাসি দেখে জিজ্ঞেস করে, "শয়তান মেয়ে, আমার ভেতরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে তারপরে আবার দুরে ঠেলে দেওয়া হয় কেন?"
পরী ওকে উলটো প্রশ্ন করে, "সবসময়ে কি তোমার শয়তানি করার ইচ্ছে জাগে? কখন কি আমাকে একটু জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে না, একবার অন্তত্ত আদর করে জড়িয়ে ধরে আকাশের দিকে চেয়ে থাকতে। তুমি জড়িয়ে ধরলে মনে যেন এক অনাবিল শান্তির ছায়া নেমে আসে, আমি নিরুদ্বেগে তোমার কোলে মাথা রেখে যেন ঘুমিয়ে পড়তে পারি।"
পরীর কথা শুনে অভির মন ভারী হয়ে যায়, পরিতাপ ঢেকে দেয় ওর হৃদয়কে। অভি ওর দিকে দু’পা এগিয়ে যায়, পরী বলে ওঠে, "আমি কিন্তু একদম ভিজে গেছি, একদম কাছে আসবে না।"
অভি হাত ভাঁজ করে মাথার ওপরে বাড়ি মারে, পরীর দিকে এগতে আর সাহস করেনা। ভারাক্রান্ত মনে জিজ্ঞেস করে, "তাহলে তুমি আমাকে ক্ষমা করনি, তাই ত?"
বিছানার ওপরে ভিজে তোয়ালে ছুঁড়ে ফেলে অভির সামনে এগিয়ে আসে। অভির কলার ধরে উঁচু হয়ে নাকে নাক ঠেকায়। অভির নিস্পলক কাতর চোখের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বলে, "তুমি ত ক্ষমার যোগ্য নও। তবে একটা শর্তে ক্ষমা করতে রাজি আছি, যদি তুমি আমার ছবি আঁকো।"