Thread Rating:
  • 17 Vote(s) - 3.47 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller টান (কালেক্টেড) 'Complete'
#44
ডাকে
........দিপু, খেয়েনে, . ...মেয়েটি দিপুর সামনে হাটুমুড়ে বসলো. রাধা একটা টেবিল সরিয়ে আনতে,তাতে খাবার রেখে উঠেদাড়ালো. দিপু আবার সব ভুলে
মেয়েটিকে দেখছে.মেয়েটি উঠে দাড়িয়ে
........আর ভাত দেব, মাংশ? ....
,......না না আর লাগবেনা. এই বেশি. ....আবার মেয়েটিকে দেখল দিপু, তার চলে যাওয়া. ....মুখ ফিরিয়ে দেখল রাধা অল্পঅল্প হাসছে
.......কিরে কি দেখছিস, ওই ভাবে , ভালো লেগেছে? .....দিপু একটু হেসে "হাঁ' সূচক ঘাড় নাড়ালো. তারপর খাবার খেতেসুরু করলো. রাধা নানা রকম কথা বলে যাচ্ছে, দিপুর মাথায় কোনো
কথা ঢুকছেনা, খাবারের স্বাদ বুজতে পারছেনা.খালি কেএই কন্যা? কি নাম? খাবার শেষ করে, অপেখ্যা করছে আবার যদি দেখা যায়. না.
সে নেই. অনেক রাত্রে একা একা হেটেহেটে দিপু সিগারেট ধরিয়ে বাড়ি ফিরল. কিন্তু মাথার ভিতর সেই মেয়েটি,মাথায় ঘুরছে কবিতার শব্দ ""হেমন্তের অরন্যে আমি পোস্টম্যান"". বাড়ি ফিরে ঘরে ঢুকে, দেখল গিনি পূবার সাথে শুয়েছে, নিজের ঘরে বিরাট বিছানায় দিপু শুয়ে 'তার' কথাভাবতে ভাবতে
ঘুমিয়ে পড়ল. স্বপ্ন দেখল, একটা ইও ইয় নিয়ে বাচ্চা দিপু সারা বাড়ি খুশিতে ছুটে বেড়াচ্ছে. ঘুম ভাঙ্গলোগিনির ডাকে
......বাবা,বাবা, আর কত ঘুমাবে ওঠো.কত লোক এসেছে, বাড়িতে, আর তুমি ঘুমাচ্ছ......ওই অবস্থাতেই,গিনিকে তুলেবিছানায় নিয়ে দিপু
শুয়ে থাকলো.
......বাবা ছাড় , রাধা দিদা এসেছে কতক্ষণ হয়ে গেল,তোমায় খুজছে, আর খালি ঘুমাচ্ছে....গিনির ধমকে দিপু বিছানা থেকেউঠে বাথরুমে
ঢুকে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে, চিরকালের অভ্যাস মত বিছানা তুলে নিচে গিয়ে দেখল. জমিয়ে আড্ডা চলছে, রাধা,পুবা,কনা তপুর সবার ভিতর.
দীপুকে দেখেই সবাই চুপ করে গেল, কিন্তু হাসি টুকু থেকে গেল.
দিপু বসতে তপু উঠে গিয়ে চা নিয়ে এলো.
........কি ব্যাপার সবাই মিলে এতো সকালে আড্ডা মারছ, নিশ্চই কোনো মতলব আছে
.......হাঁ আছে, রাধাদির সাথে উপরে যা, রাধা দি তোকে বলবে.......পূবার মুখে হাসি
.......কি কথা , এখানে বল,.....দিপুর বুকে দামামা বাজতে সুরু করেছে
.......রাধাদিকে কথা দিয়েছিলি, মনে আছে? যা উপরে যা...কনা বলল এইবার. হাসি সবার মুখে, তপু পর্যন্ত ফিচকে হাসিদিয়ে যাচ্ছে
....রাধার সাথে উপরে উঠে ঘরে ঢুকতেই, রাধা দরজা বন্ধ করে দিপুর পাশে বসে
........কালকে ওই মেয়েটিকে ভালো লেগেছে, সত্যি করে বলবি ....রাধা যেন একটু গম্ভীর
.......হাঁ ,ভালো লেগেছে ...কিন্তু কেন?
......বিয়ে করবি, আমি যদি বলি?....দিপু ঘাড় নেড়ে হাঁ বলল....রাধা দু হাতে দীপুকে জড়িয়ে মুখ নিজের কাধের কাছে নিয়েকানে কানে আস্তে করে
......তোর সন্তান আমি নিতে পারিনি, তুই আমাকে একটা সন্তান দে. ও আমার মেয়ে বনি. তুই ওকে বিয়ে করবি......ছিটকেগেল দিপু ..
রাধার কাধ ধরে ঝাকিয়ে,বিস্মিত চোখে
.......মাসি, এটা incest এ হয় না,হওয়া উচিত না. কি বলছ তুমি....প্রায় চিত্কার করে উঠলো. রাধা আবার দীপুকে জড়িয়েধরে চুপ করে
বসে থাকলো. দিপু বুজতে পারল,রাধা কাদ্গছে. দু হাতে আরো জোরে জড়িয়ে ধরল দিপু,একটু পর দুজনেইনিঃশব্দে কাঁদতে থাকলো. বেশ
কিছু সময় পর
.....ঠিক আছে আর বলবনা. আমি কিন্তু মন থেকেই চেয়েছিলাম. তোর আমার ভালবাসা, আমি তোর আর বনির সন্তানেরভিতর পেতামরে
দিপু. ...দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে চুপ করে রইলো রাধা. ...দিপু রাধাকে জড়িয়ে,
.......কাল বনিকে দেখার পর থেকে ঘুরে ফিরে খালি ঐমুখ ভেসে আসছে, কিন্তু তোমার আমার সম্পর্ক,তার কি হবে মাসি?
........থাকবে. চিরকাল থাকবে. বিয়ে করলে বা না করলে, দুই ক্ষেত্রেই থাকবে.তুই আমার ভালবাসা রে দিপু. আমি তুইযতই লুকিয়ে
রাখতে চাইনা,সবাই বোঝে. আমার ধারণা সব জেনেও পুবা মেনেও নিয়েছে. খালি তুই মানতে পারলিনা. ...দিপুআরো আবেগে রাধাকে জড়িয়ে
.......যাই হোক তোমাকে ছাড়তে পারবনা. তোমার মেয়ে মানতে পারবে?
.......আর তো দৈহিক সম্পর্ক আমাদের হবে নারে, তাই ওর না মানার কি আছে!
.......গিনি, তার কি হবে, তাকে ছাড়া কি করে বাচব?
এইবার রাধা কান্না ভেজা চোখে আলতো করে চড় মারলো দীপুকে
.........বনি সব জেনেই রাজি হয়েছে. বনির ও একটা ৮ বছরের ছেলে আছে, তার কি হবে?
.......সে গিনির ভাই হবে,আর আমার ছেলে
......... শ্র্রীর দিদি হবে গিনি আর বনির মেয়ে. ....রাধা উত্তর দিল.
.........তুমি আমায় ভালো বাসবে তো... দিপু এইবার কিছুটা তরল ......দিপুর মুখ ধরে রাধা স্থির চোখে চেয়ে রইলো.তারপরনিজের ঠোট
দিপুর ঠোটএ লাগিয়ে একটি দীর্ঘ চুম্বন দিয়ে........
.........চির জীবন বাসব.কিন্তু এই আমাদের শেষ বন্ধ ঘরে একা একা থাকা আর শেষ চুম্বন....এইবার দিপু রাধাকে জড়িয়েঅনেকক্ষণ চুমু
খেয়ে
....যাও লাগাও. তবে, একটা শর্ত আছে, বধুবরণ কিন্তু মা করবে. বিধবা বলে পারবেনা, মানবনা.
.......আমিও তাই চাই রে দিপু. চল নিচে চল.......এরপর পুবাকে বোঝানো প্রায় দুঃসাধ্য কাজ হলো. অবশেষে ঠিকহলো,পুবা আর কনা
এক সাথে করবে.
........তোমার মাস্টারমশাই বেচে থাকলে, তোমায় মজা দেখাত. ......দিপু তার মাকে বলল.
.......তাহলে তো সব কিছুই অন্যরকম হত রে বোকা.
সীতা এলো একটু দেরী করে. পরীখ্যা দিয়ে সোজা এয়ারপোর্ট গিয়ে এসেছে. বিয়েবাড়িতে রাধাকে প্রনাম করতেই, রাধা একটুহকচকিয়ে
গিয়ে তাকালো. একটু সময় মাত্র, তারপরেই চেঁচিয়ে উঠলো,
........সীতা তুই. আয় মা আয় বুকে আয়. অসাধ্য সাধন করেছিস তুই. ...তারপর সবাইকে উদেশ্য করে .....দেখো তোমরাসীতা এসেছে. আমাদের গর্ব সীতা. বনি, এই সীতা, তোর খুব কাছের বন্ধু হবে...বনি
চেয়ার থেকে উঠে এসে জড়িয়ে ধরল
.........গার্জেন, তোমার সংসারে আরো দুটি প্রাণী বাড়লো. কোথাও যেতে পারবেনা. ওখানেই থাকতে হবে আমাদের সবারসাথে. কিছুতেই
ছাড়বনা তোমায়. ...সীতা অবিভুত হয়ে জড়িয়ে ধরল. নিজের হাতে বোনা একটা দারুন সুন্দর টেবিল এরঢাকনা দিল বনিকে. একটু একলা পেয়ে দীপুকে
ডেকে
......মাসি সত্যি খুব বড় হৃদয়ের, না হলে কেউ নিজের জিনিসকে অন্যের হাতে তুলে দেয়.....বলেই দিপুর দিকে তাকিয়েচোখ মেরে
হেসে দিল. দিপু চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে হেসে ফেলল
.......সত্যি, ভগবান মেয়েদের যে কি দিয়ে বানিয়েছেন, সুধু তিনিই জানেন.
পরেরদিন, কনে বিদায়ের সময় উপস্থিত. রাধার মুখে চোখে এক অদ্ভূত প্রশান্তি বিরাজমান. সব চাইতে আখান্কিত কিছু পেলেযা হয় সেই
রকম. দিপু বনি কে নিয়ে এসে সামনে দাড়িয়ে হাসি মুখে চেয়ে রইলো একটু সময়. তারপর পায়ে হাত দিয়েপ্রনাম করে
........এইবার থেকে কি বলে ডাকব, মা না মাসি?
.......তুই আমার দিপু. তোর যখন যেটা মনে হবে তাই বলবি. দুটিই শুনতে মন চায়রে.

ভট্টাচার্জি বাড়িতে আজ মহা ধুমধাম. বাড়ির একমাত্র ছেলে আজ নববধুকে নিয়ে আসছে. পূবা দারুন উত্তেজিত.কিন্তু একঅজানা আশঙ্কাও
হানা দিচ্ছে মনে
.........কনা, আমার বরণ করা কি ঠিক হবে, বল না রে. কি রে চৈতি কিছু বল? পূবার গলায় উদ্বেগ.
.......কিছু হবে না দিদি. ছেলের জন্য মা যা করবে তাই ঠিক, কেন অমঙ্গল হবে.......তবুও পূবার মন মানেনা. শেষমেষতার'মাস্টারমশাই
'এর ছবির সামনে দাড়িয়ে অনেকক্ষণ কি সব বিড়বিড় করলো. তারপর একটা দামী গরদের লালপারেরশারী পরে অনেক বছর পর, বড় করে
কপালে সিন্দুর লাগিয়ে তলার ঘরে অপেখ্যা করছে. প্রণব পুবাকে দেখে এগিয়ে গিয়েঅবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো. একটু যেন অপ্রস্তুত পূবা.
প্রণব ঝুকে ঝপ করে প্রনাম করে
.......ঠারেন, আজ কের মত এত সুন্দর রূপ তোমার কোনদিন হয়নি. একেবারে জগত্ধাত্রী দেবী তুমি. ...পাশে দাড়িয়ে পবিত্রঘার নেড়ে সায় দিল. দীপুকে নিয়ে কৌশিক এলো, সাথে তপু. নেমেই মায়ের ওই চেহারা দেখে ,
......মা দারুন. মা দারুন....... বরণডালা নিয়ে পূবা এগিয়ে এলো,দু পাশে কনা আর চৈতি ধরে আছে. নববধুর কপালে ছুইয়েদিপুর কপালে
ছুইয়ে দিল.চোখের জল ধরে রাখতে পারছেনা. দিপু ,কোথায় যেন হারিয়ে গেছে মায়ের রূপ দেখে.নিজের মনেবলছে " সারা জীবন মা, হৃদয়ে
তোমার এই রূপ কল্পনা করেছি, আজ পেলাম" .লালপেড়ে শারী, কপালে সিন্দুর, খোলা চুলপিঠে ছড়ানো, চোখে আনন্দের জল, সত্যি অপূর্ব সুন্দর 'মা' আজ পূবা. মাথা ঝুকিয়ে প্রনাম করে
......বনি, এই আমার মা. প্রনাম কর.



[Image: 106058323-2482166102074636-7031969710950435636-n.jpg]
[+] 4 users Like pnigpong's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: টান (কালেক্টেড) - by pnigpong - 28-06-2020, 12:23 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)