Thread Rating:
  • 14 Vote(s) - 3.43 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী-Written By pinuram
#36
কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী (#23)

দেবেশ বলল, “না মনি আমি বিয়ে করিনি।”

কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করল মনিদিপা, “কেন করনি দেবু? আমি ত মরেই গেছিলাম।”

দেবেশ কোন কথা না বলে মাথা নিচু করে মনিদিপার কপালে কপাল ঠেকাল দেবেশ। ঠোঁট কাপছে মনিদিপার, চোখে জল টলমল।

মনিদিপার চোখে চোখ রেখে ওর গলায় সোনার হারখানি পড়িয়ে দিয়ে বলল, “এই হার তোমার মনি, এই হার আর কারুর গলায় শোভা পেতে পারেনা মনি। তুমিই ত বলেছিলে মনি, যেদিন আমি আমার ভালবাসা খুঁজে পাব সেদিন যেন তাকে আমি এই হার পড়িয়ে দেই। আজ তাকে পড়িয়ে দিলাম, মনি।”

দু’হাতে খামচে ধরল দেবেশের জামা। অস্ফুট চিৎকার করে উঠল মনিদিপা, “না দেবু, একি করলে তুমি। আমি পতিতা কলঙ্কিনী নারী, সমাজে তোমার পাশে দাঁড়ানোর শক্তি টুকু আমি হারিয়ে ফেলেছি। আমি লুকিয়ে আছি অনেক ভাল আছি দেবু।”

দুহাতে আঁজলা করে তুলে নিল মনিদিপার মুখ, গাল বেয়ে বয়ে চলেছে চোখের জল। দেবেশ ওর কম্পিত ঠোঁটের কাছে ঠোঁট এনে ফিসফিস করে বলল, “না মনি ওই কথা বল না। আমি তোমার পাপী, আমাকে ক্ষমা করে দাও মনি। আমি কোনদিন তোমাকে দুঃখ দেব না। তুমি কে সেটা আমি জানি। এই পৃথিবী যা জানে বা যা দেখেছে সেটা মিথ্যে।”

মনিদিপার বুক ভেঙ্গে ভালবাসার কান্না এসে গেল, প্রাণপণে জড়িয়ে ধরল দেবেশকে, “এতদিন পরেও তুমি আমাকে কাঁদাতে এসেছ।”

“না মনি না, আর আমি তোমাকে কাঁদাব না।” দেবেশ বারে বারে মনিদিপার কপালে গালে চুমু খেতে খেতে বলল।

দুজনাই একে অপরকে জড়িয়ে ধরে রইল। দেবেশের আলিঙ্গনের মাঝে বদ্ধ হয়ে মনিদিপা একটু খানি কেঁপে উঠল। মুখ উচু করে দেবেশকে জিজ্ঞেস করল, “কিন্তু তুমি আমার অতীত থেকে আমাকে কি করে লুকিয়ে রাখবে?”

দেবেশ ঠিক এই প্রশ্নের জন্য তৈরি ছিল। মনিদিপা কে বিছানার ওপরে বসিয়ে ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ওর হাত দুটি নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে উত্তর দিল, “বুকের মাঝে মনি। আমি ফ্রান্সে থাকি, সেখানে তোমাকে কেউ চিনবে না।”

মনিদিপার মনের ভেতরে নতুন ভয় ভর নিল, “আমার মা, কাকিমা কাকু? তারা ত জানে আমি মরে গেছি, তারা যখন জানতে পারবে তাদের কি বলবে তুমি?”

দেবেশ বলল, “আমার সাথে কলকাতা চল আমি সব সামলে নেব।”

মনিদিপা আঁতকে উঠল, “না দেবেশ না, আমি কলকাতা যাবনা। কি মুখ নিয়ে যাব আমি ওদের সামনে, দেবেশ?”

দেবেশ বলল, “মনি, তোমার পাশে আমি আছি। আজ থেকে তোমার সব ভয়, সব দুঃখ কষ্ট আমার। কেউ তোমাকে ছুঁতে পর্যন্ত পারবে না, মনি। কিন্তু একবার তোমাকে কলকাতা যেতেই হবে। সাত বছর আগে তোমার সাথে সাথে জেঠিমাও মারা গেছিলেন। তোমাকে দেখে জেঠিমা মা সবাই বেঁচে উঠবে।”

মনিদিপা ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করল, “কিন্তু দেবু, ওরা যদি আমাদের সম্পর্ক না মেনে নেয়?”

দেবেশ অভয় দিয়ে বলল, “মনি, সে চিন্তা তোমার নয় আমার। আমার ওপরে আস্থা আছে তোমার?”

দেবেশের মুকের দিকে তাকাল মনিদিপা, না এবারে ওর চোখ সত্যি কথা বলছে। মনিদিপা নির্ভয়ে দেবেশের সাথে যেতে পারে। দেবেশের মাথা নিজের বুকের ওপরে জড়িয়ে ধরে উত্তর দিল, “তোমার সাথে আমি যমের বাড়ি যেতেও রাজি আছি।”

দেবেশ একটু মজা করে, মনিদিপার বুকে নাক ঘষে জিজ্ঞেস করল, “রাতের ডিনার কি বাইরে খাবে না রুম সার্ভিস ডেকে নেব।”

সাত বছর পরে মনিদিপা যেন আবার নিজেকে খুঁজে পেল। দুম করে একটা কিল মেরে বলল, “তোমার দুষ্টুমি আর গেল না, বল। তোমার বন্ধুরা কি বলবে আর আমার হোটেল থেকে জিনিস পত্র ত আনতে যেতে হবে নাকি?”

দেবেশ উত্তর দিল, “ধুর বাবা, ঠিক আছে চল।” কিছুক্ষণ পরে দেবেশ বলল, “আমিও নিজের জিনিস গুছিয়ে নেই।”

তারপরে দেবেশ নিজের জিনিস গোছাতে সুরু করল, সেই দেখে মনিদিপা ওকে জিজ্ঞেস করল, “কি ব্যাপার, তুমি কেন জিনিস গোছাচ্ছ?”

দেবেশ উত্তর দিল, “আজ রাতেই আমারা বেড়িয়ে পরি। কাল সকালের মধ্যে দিল্লী পৌঁছে যাব তারপর সকালের ফ্লাইট ধরে কলকাতা।”

চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে মনিদিপা, “মানে? এখুনি।”

দেবেশ মনিদিপার হাত ধরে অনুরধ করল, “হ্যাঁ মনি, এখুনি। আমার আর দেরি করতে মন চাইছে না। চল মনি, কলকাতা চল।”

মনিদিপা কাতর চোখে তাকিয়ে উত্তর দিল, “দেবু, আমার কিন্তু খুব ভয় করছে, কি হবে দেবু…”

ওকে আসস্থ করে উত্তর দিল, “মনি আর চিন্তা করোনা, প্লিস।”

ওরা দুজনে বেড়িয়েই দেখল যে রুমের সামনে বাকি চারজন দাঁড়িয়ে আছে। দেবেশকে দেখে অনির্বাণ বলে উঠলো, “কিরে ভাই বৌদি কে পেয়ে আমাদের কথা বেমালুম ভুলে গেলি? একবার বউদির সাথে আলাপ করিয়ে দিবি না।”

ভিশাল মনিদিপার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল, “আমি ভিশাল, এই গাধাটার সাথে আইআইটি তে পড়তাম” তারপরে বাকিদের সাথেও আলাপ করিয়ে দিয়ে বলল, “আপনাদের দুজনের একটা ছবি তুলবো আমি, প্লিস একটা রোম্যান্টিক পোস দেবেন।”

মনিদিপা লজ্জায় লাল হয়ে দেবেশের দিকে তাকিয়ে রইল। দেবেশ প্রথমে একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল তারপরে মনিদিপার কে জড়িয়ে ধরে বলল, “মনি, লজ্জা পেয় না।”

দেবেশের হাতে ব্যাগ দেখে অনির্বাণ ওকে জিজ্ঞেস করল, “কিরে কোথাও যাচ্ছিস নাকি?”

মনিদিপার দিকে তাকিয়ে দেবেশ উত্তর দিল, “হ্যাঁ রে আমাকে কলকাতা যেতে হবে, তাই রাতেই বেড়িয়ে যাবো।”

নিলাঞ্জন একটু ক্ষুণ্ণ হয়ে জিজ্ঞেস করল, “যাঃ মাল, ভাবলাম কিনা আজ রাতে একটু মজা হবে। আবার তোদের সাথে কবে দেখা হবে তার নেই ঠিক।”

দেবেশ বলল, “না ভাই আবার দেখা হবে তোদের সাথে, নাহলে এবারে আমার বাড়িতে, বোরদে’তে সবার নিমন্ত্রন রইল।” দেবেশ ওর বন্ধুদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলার পরে বেড়িয়ে পড়ল।

হোটেল থেকে মনিদিপার জিনিস পত্র নিয়ে একটা গাড়ি ভাড়া করে রওনা দিল দিল্লীর দিকে। রাতের অন্ধকার কেটে গাড়ি এগিয়ে চলেছে দিল্লীর দিকে। ল্যাপটপ বের করে অনলাইন প্লেনের টিকিট কেটে নিল দেবেশ। সারাটা রাত দেবেশের কাঁধে মাথা রেখে চুপ করে চোখ বন্ধ করে থাকল মনিদিপা। অনেকদিন পরে বুকের মাঝে অনেক হালকা লাগছে ওর।

মনিদিপার মুখের দিকে তাকিয়ে দেবেশ ওর মনের সব কথা বুঝে ফেলল, মনিদিপাকে কাছে টেনে বলল, “মনি চিন্তা কর না আর।”

মিষ্টি হাসি হেসে জবাব দিল মনিদিপা, “না আর ভয় নেই আমার, তুমি আছো ত আমার সাথে।”

""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !! Sad

[+] 3 users Like Kolir kesto's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী-Written By pinuram - by Kolir kesto - 27-06-2020, 05:13 PM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)