Thread Rating:
  • 25 Vote(s) - 3.16 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery যেমন করে চাই তুমি তাই/কামদেব
#40
 


 ।।১৭।।


সকালে বহু খোজাখুজি করে নারায়নগঞ্জের চাষাড়ায় ডিএমের অফিসে গেল। অফিসের পিওন বলল বড়বাবু ডিএম বাংলোয় গেছেন,বসতে হবে। উনি আসতে আসতে নয়টা-দশটা বাজবে।তাকিয়ে দেখল অধিকাংশ চেয়ার খালি।একজন সুবেশা মহিলা বসে কাজ করছে।ডিএম বাংলো হেটে দশ মিনিট।
--অফিস কটা থেকে?বলদেব জিজ্ঞেস করে।
--অফিস নয়টা থেকে, তবে কাজ টাজ তেমন নাই বলে যে যার মতো আসেন। মাথার পরে মাইয়া মানুষ থাকলে যা হয়।অফিস চালানো কি যারতার কাম। 
--ভাই আপনের নামটা জানতে পারি? 
--তার আগে কন তো আপনে কি কামে আসছেন?
--আমি এই অফিসে বদলি হয়ে এসেছি।আমার নাম বলদেব।
লোকটা অবাক হয়ে বলদেবকে দেখে বলল, আমি আপনের চিনবার পারিনি।আমার নাম তৈয়ব আলি।একটু আগে যা বললাম সেইটা আবার কাউরে বলবেন না।

--আপনে যা বললেন সব হজম করে ফেলেছি।
--আসলে কি জানেন,পরিবার না থাকলে যা হয়--মানুষরে মানুষ বলে গ্রাহ্য করে না।এরে ধমকায় তারে ধমকায়--। 
--সাহেবের সাদি হয় নাই?
--সাদি হবে না ক্যান?সাহেব না মেম সাহেব,এই রকম ম্যাজাজি বউ নিয়া কেউ ঘর করতে পারে? যাক গিয়া বড় মানুষের কথায় আমাগো কাম কি? যান আপনে ঐ ছিটে গিয়া বসেন।সাহেবের আসনের সময় হইয়া গেছে।
বলদেব নির্দেশিত টেবিলের সামনে বসে। ধীরে ধীরে লোকজন আসা শুরু হয়েছে। জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে কেউ কেউ তাকে দেখছে।
--কি দরকার আপনার?
বলদেবের মনে হল তাকে উদ্দেশ্য করে সুবেশা মহিলাটি জিজ্ঞেস করছেন।তার দিকেই তাকিয়ে আছেন মহিলা।বছর পয়ত্রিশ/ছত্রিশ বয়স হবে।শ্যামলা রঙ শরীরের গঠন আকর্ষনীয়।
বলদেব ইতস্তত করে বলে, আমাকে বলছেন?
--কাউকে খুজছেন?
বলদেব উঠে গিয়ে বদলির নির্দেশটা এগিয়ে দিল।মহিলা পড়ে তার দিকে তাকিয়ে কিছু বোঝার চেষ্টা করেন।তারপর বললেন, এখানে বসো।
মহিলা একটা ফাইল বের করে কাগজ পত্র ঘেটে কি লেখালিখি করে একটা কাগজে সই করিয়ে নিয়ে বললেন, ওইখানে অপেক্ষা করো।
বলদেব ঠিক কোথায় দাঁড়াবে তা নিয়ে দ্বিধায় এদিক-ওদিক দেখছে হঠাৎ নজরে পড়ে দূর থেকে ইশারায় তাকে ডাকছে তৈয়ব আলি।বলদেব কাছে যেতে বলে,চলো ভাই ক্যাণ্টিনে গিয়ে বসি।হক সাহেব শীঘ্রি আসবেন না,ছ্যরের সঙ্গে ভিজিটিং-এ গেছেন।
ক্যাণ্টিনে দুজনে মুখোমুখি বসে।তৈয়ব আলি জিজ্ঞেস করে, মিনু ম্যাডাম কি বলতেছিল?
--ঐ মহিলা? কাগজ পত্র নিয়ে নিল।সই সাবুদ করালো।
--উনি হচ্ছেন সাহেবের খাস লোক।বাচাইয়া চলবা।
বলদেব লক্ষ্য করে একজন পুলিশ চা খেয়ে চলে গেল। এখানে পুলিশ কেন?
--এইটা ডিএমের অফিস,দরকার পড়লি এস পি সাহেবও আসেন এইখানে--। 
--তোইব মিঞা তুমি এইখানে? হক সাহেব আসছেন?
বলদেব দেখে পুলিশটা কখন তাদের টেবিলে এসে দাড়িয়েছে। তৈয়ব আলি দাঁড়িয়ে বলে, সালাম হাবিলদার সাহেব। উনি আউটিঙ্গে গেছেন,কিছু দেবার থাকলে মিনু ম্যডামকে দিয়ে যান। 
তোইয়বের পরামর্শে বলদেব সেদিন অফিস ছেড়ে বেরিয়ে গেল। বার বার মনে করিয়ে দিল নটার মধ্যে কাল পৌছাতে হবে।
রাস্তাঘাটের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ছোট ছোট পুকুর হয়ে আছে, বৃষ্টি বাদলা দিনে এই এলাকার অবস্থা খুবি খারাপ হয়ে যায় চলার মতো অবস্থা নেই। কাচা পাকা রাস্তা। মাঝে মধ্যে দু একটা বাস আসা যাওয়া করে। বাকি সবই ছোট ছোট ভটভটি। গৌরিপুরে এই যানবাহনগুলা দেখা যায়। ময়মনসিংহ আসা যাওয়া করে। সামনের দিকে হাতল ধরে ঘুরিয়ে স্টার্ট দিতে হয়। এর ভিতরে যে একবার বসবে তার কোমর ব্যথা আজিবনের জন্যে ভালো হয়ে যাবে। আর যার কোমরে ব্যাথা নেই তার কোমর ব্যথা নিয়ে বাসায় ফিরতে হবে। শব্দের চোটে থাকা যায়না। এক মাইল দূর থেকেও এর শব্দ শুনা যায়। আবার সামনে আসলে হুইসেল মারে, হাস্যকর। কোনমতে গা বাচিয়ে দারোগাবাড়ি ফিরে এল বলদেব। 
তালা চাবি খুলে ঘরে ঢুকতে গিয়ে খেয়াল হয় চারদিকে জঙ্গল হয়ে রয়েছে।পরিস্কার করে গাছ লাগালে চেহারা বদলে যাবে। আম্মুকে জিজ্ঞেস করা দরকার।আট বাই দশ ছোট ঘর পরিস্কার করে বেশ বড় লাগছে।জিজ্ঞেস করা হয়নি কত টাকা দিতে হবে। জামা খুলে যোগাসন করতে বসে।
পদ্মাসন ধনুরাসন সর্বাঙ্গাসন মৎসাসন--প্রায় আধ ঘণ্টা সময় লাগে।তারপর প্রানায়াম,চোখ বুজে বসে থাকে। কত কি মনে পড়ে জয়নাল সাহেব মেমসাহেব আব্দুল আমিনা।বিচিত্র মানুষ বিচিত্র জগত। বেলা গড়াতে থাকে।কে যেন কড়া নাড়ছে? কে আম্মু?তাড়াতাড়ি গায়ে জামা চাপিয়ে দরজা খুলতে দেখল মুমতাজ বেগম।
--আসেন ভাবিজান।
মুমতাজ খাবারের প্লেট নামিয়ে রেখে জিজ্ঞেস করে,আম্মু জিজ্ঞেস করলেন ছাত্রকে কখন পাঠাবেন? 
বলদেবের খেয়াল হয় মনুকে পড়াবার কথা।লেখাপড়ার সাথে সম্পর্ক নেই কতকাল। কথা যখন দিয়েছে পড়াতেই হবে।একটু ভেবে বলে,আমি একটু শরীর চর্চা করি,সাড়ে সাতটায় আসলে অসুবিধা হবে?
--আপনে খেয়ে নেন।
--ভাবি আপনে আমারে তুমি বলবেন।
মুমতাজ মুচকি হেসে চলে গেল। মনে হয় লোকটা ভারি সাদাসিধা,কেমন পড়াবে কে জানে। 
অনেক কিছু করেছে জীবনে মাস্টারীটা বাকী ছিল।আম্মু তারে মাস্টার বানায়ে দিল। কিছুক্ষন পর বই খাতা নিয়ে মনু ঢুকল। সঙ্কুচিতভাবে একপাশে দাঁড়িয়ে থাকে। নতুন লোক স্বাভাবিক বলদেব বোঝে। বলদেব উঠে গিয়ে নিয়ে আসে। চৌকির একপাশে বসিয়ে জিজ্ঞেস করে, আমারে তোমার পছন্দ হয়েছে?
মনু ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানায়। 
--কি অঙ্ক করো?
--যোগ বিয়োগ গুণ ভাগ।
--কোন অঙ্ক তোমার কঠিন মনে হয়?
--গুণ আর ভাগ।
--শক্ত লাগে?
মনু মাথা নেড়ে সায় দেয়। 
--আমি একেবারে নরম করে দেবো দেখবে আর তোমার শক্ত মনে হবে না। 
মনুর মুখে হাসি ফোটে।
--হাসো ক্যান?
--অঙ্ক নরম হয় নাকি?
বলদেব টের পায় নামতা ভাল করে শেখে নাই।তাছাড়া হাতের সংখ্যা প্রায়ই ভুলে যায়। প্রথমে নামতা সাড়্গড় করা দরকার। 
--শোন মনু আমরা এখন একটা খেলা খেলবো।
--জ্বি।
--আমি যা বলব তুমি তাই বলবা। 
একথায় মনু অত্যন্ত আশ্বস্থ এবং উৎসাহিত বোধ করে। খেলার কথা বলায় নতুন শিক্ষকের প্রতি দ্বিধারভাব কেটে যায়।বলদেব নানা ভঙ্গি এবং সুর করে বলে, দুই এক্কে দুই। 
মাস্টার মশায়ের অঙ্গ সঞ্চালন দেখে হেসে গড়িয়ে পড়ে মনু।এ তার কাছে নতুন অভিজ্ঞতা। 
--কি হল এ খেলা ভাল লাগছে না? খেলতে ইচ্ছে না হলে পড়।
পড়ার কথায় মনু তাড়াতাড়ি হুবহু বলদেবকে নকল করে বলে, দুই এক্কে দুই। 
এইভাবে শিক্ষক-ছাত্রের খেলা চলতে লাগল।বস্তুত মনুর ভালই লাগে খেলাটা। মইদুল নেত্রকোনা থেকে ফিরে এসেছে। রাত হয়েছে দেখতে এল ছেলে কি করছে।ঘরের কাছে এসে ডাকতে গিয়েও থেমে যায়।কান পেতে শোনে ভিতরে কি হচ্ছে। এ কেমন পড়া? বেশ মজা লাগে মইদুলের। গলা খাকারি দিতে ভিতর থেকে আওয়াজ আসে,কে-এ-এ?
--মাস্টার মশায় আমি।
--আব্বু--।বাবার গলা চিনতে পারে মনু।
বলদেব উঠে দরজা খুলে বলে,আসেন। বড়ভাই দয়া করে আপনে আমারে মাস্টার মশায় বলবেন না।
--চলো,রাত হয়েছে।আম্মু খেতে ডাকতেছেন।
--উপরে যাবো আমি?
--আম্মু তাই বললেন।
বলদেব অভিভুত হয়।এক এক সময় মনে হত সে অতি হতভাগা।আবার ভাবে তাহলে তার কপালে এত স্নেহ ভালবাসা জোটে কি করে।
--মনু যাও। বড়ভাই আমি আসতেছি আপনে যান। মনু বাবার সঙ্গে চলে গেল।
সবাই খেতে বসেছে।রহিমা বেগম পরিবেশন করেন।মুমতাজ সাহায্য করছে।একসময় নাতিকে জিজ্ঞেস করেন রহিমা বেগম, দাদুভাই কেমন পড়লা?
--পড়ি নাই।আজ খেলছি।
রহিমা বেগমের কপালে ভাজ পড়ে, মইদুল মুখ টিপে হাসে। মুমতাজ তার মরদের হাসি দেখে ধন্দ্বে পড়ে যায়।
বলদেব জিজ্ঞেস করে, মনু এখানে কয়জন দাঁড়িয়ে?
--দুই জন।
--এর দুই গুনা হলে কতজন?
--চারজন।
--তার দুই গুনা হলে?
--আট জন।
--আম্মু খেলাটা মজার না?
রহিমা বেগম আশ্বস্ত হয়ে বলেন,ভাল করে খাও বাবা।তারপর দুলুমিঞার দিকে ফিরে বলেন, ওদিককার খবর সব ভাল তো?
--ভালই তো দেখলাম।টুনটুনি ইদের সময় আসবে।বলছে, আম্মুরে চিন্তা করতে মানা কোরো। 
--মেয়েটা সেই আগের মতই আছে।একটু বুঝে চলবে না।মেয়েমানুষের অত জিদ ভাল না।
--আব্বুই ওরে আদর দিয়ে মাথাটা--।আম্মুর দিকে তাকিয়ে কথাটা শেষ করতে পারেনা। 
--আম্মু তুমি বলতে চাও মেয়েরা সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করবে?সায়েদ এতক্ষনে কথা বলে। 
ঠাকুর-পোর কথা শুনতে ভাল লাগে মুমতাজের। কৌতুহলি হয় শ্বাশুড়ি কি বলে শোনার জন্য।রহিমা বেগম বলেন,তুই চুপ কর। তুই যখন সংসার করবি তখন তোর নিয়ম খাটাবি। 
বলদেবের বেশ কাটতে লাগল।সকালে অফিস সন্ধ্যে বেলা যোগাসন তার পর ছেলে পড়ানো। তোইয়ব আলির ঘুষের প্রতি আকর্ষণ থাকলেও মানুষটা খারাপ না।অবসর মিললে অফিসের নানা কথা শুনায়।মিনু ম্যাডামের স্বামী থাকতেও হক সাহেবের সাথে ঢলাঢলি। ডিএম জেনিফার আলম ভীষণ পুরুষ বিদ্বেষী। হক সাহেব ভাল মানুষ মিনু ম্যাডামরে দেখলে ন্যাতায়ে পড়ে।মিনু ম্যাডামকে বলদেবের খারাপ লাগেনা,বেশ মিষ্টি ব্যবহার।গায়ে ভারী সুন্দর গন্ধ।অল্প দিনেই বলদেব বেশ মানিয়ে নিয়েছে।
[+] 1 user Likes kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: যেমন করে চাই তুমি তাই/কামদেব - by kumdev - 27-06-2020, 12:26 PM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)