Thread Rating:
  • 17 Vote(s) - 3.47 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller টান (কালেক্টেড) 'Complete'
#25
পরের দিন ২ টর সময় দিপু গিয়ে উপস্থিত। একটু পরেই ছন্দা এলো বিয়ের পর আরো সুন্দরী হয়েছে, একটু মোটা হয়েছে। দীপুকে দেখে এগিয়ে এসে হাত ধরল
......প্রিয়, তুই আরো সুন্দর দেখতে হয়েছিস রে, কটা মেয়ে পটিয়েছিস ? ছন্দা হাসতে হাসতে জিজ্ঞাসা করলো
.......একটাও নারে। সমুদ্রের ঢেউয়ে প্রথমটা ভেসে যাওয়ার পর আর এগোইনি, এইবার যদি বাতাস উড়িয়ে নিয়ে যায়, কিম্বা লম্বা দীর্ঘ পথ চলতে যদি পথ হারিয়ে ফেলি, তাই আর না ...দীপুও হাসতে হাসতেই উত্তর দিল
.......শালা, কথা শোনাছিস, চান্স পেয়েছিস, তাই দিচ্ছিস । চল ভিতরে গিয়ে বসি, .....দুজনে ভিতরে বসলো
........বল, কি খাবি ...দিপু জিজ্ঞাসা করলো। " আর তোর্ ঘাড় ভেঙ্গে খাবনা, এখন থেকে আমি খাওয়াব " দিপুর মুখে হাসি ..." তবে এই সবের জন্য, তুই কৃতিত্য নিতে পারিস। রাধা মাসির সাথে যোগাযোগ না হলে কিছুই হত না, চিররিনী তোর্ কাছে থাকব আমি" ....দিপু একটু হেসে বলল।
.......রাধা মাসি তো তোকে যেন দত্তক নিয়েছে। বাপরে বাপ, তোর্ কথা আর ফুরায়না ,
...... হাঁ রে মাসি আমার সব। আমি কি বলি জানিস " তুম হি মাতা, পিতা ভি তুম হো, তুম হি বন্ধু, সখা ভি তুম হো ", যা বলবে তাই করব। এমনকি এই কথা পর্যন্ত দিয়েছি, যে যাকে বিয়ে করতে বলবে তাকেই করব, আর কাউর কথা শুনবনা। এই সবই তোর্ জন্য। যাক বর কোথায় , বাচ্চা হয়েছে?
........আবার কোথায়, সমুদ্রে, একটা ছেলে হয়েছে। দেখতে কিন্তু তোর্ মতো না।
........বেচে গেছিস, আমার মত দেখতে হলে তোকে ডিভোর্স দিত। একটা বিয়ে হয়ে গেছে, কোনমতে , আর একটা হওয়া কঠিন।
...এখনো ১০টা করতে পারি, বুঝেছিস, ....তরল স্বর ছন্দার কন্ঠে,
......তা পারিস, ১ মাস ২ মাস এর জন্য। তারা সমুদ্রে না চোলাই মদে ভেসে বেড়াবে। দিপু ছন্দার পিছনে লাগছে বেঅরা কে দিপু অর্ডার দিল, বেশ ভারিই, খিদেও পেয়েছে।
......তা বল কতদিন আছিস দিল্লিতে। ওহ তোকে একটা কথা বলা হয়নি, মাসি বলেছেকি, আমার জন্মদাত্রী, বা মা সম্বন্ধে ?
......হাঁ বলেছেন। এটা তো খুবই ভালো খবর, তোর্ জন্যে।
.......হাঁ, ভালই। আচ্ছা ছন্দা, তুই বলতে পারবি আর আমিও তোকেই খোলাখুলি জিজ্ঞাসা করতে পারি, সন্তানের প্রতি মাতৃস্নেহ কি চিরকালীন। তোর্ একটা ছেলে আছে , তাই জিজ্ঞাসা করছি।
......দ্যাখ প্রিয়, এই মুহুর্তে আমার ছেলে আকাশের নিচে সব চাইতে কাছের। ওই টুকু শিশু, জানে এই কোল সবচাইতে নিরাপদ। আমিও জানি আমার বুক ওর সবচাইতে মধুর, সবথেকে বেশি ওম। মনুষত্ব হারায়নি এইরকম প্রতিটি মায়ের একই মনোভাব। তোর্ সাথে এখন সম্পর্ক কিরকম?
.......তোকে খোলাখুলি বলছি, তুই কাউকে বলিসনা। আমিও চাই মাকে জড়িয়ে ধরতে কিন্তু বাধ বাধ লাগে। ৮ বছর বয়েসের পর এই ২২ বছরে দেখলাম। চিনতেও পারিনি, উনিও চিনতে পারেননি। খালি মনে হয়, আমার বেড়ে ওঠার সময় একটু যদি পাশে দাড়াতেন তাহলে জীবনের অনেক স্বপ্ন পূর্ণ হত। উনি নিজের দোষ অকপটে স্বীকার করেছেন।সময় লাগবে।এখনো সময় লাগবেরে,

""ছায়াময় মায়াময় বনপথ
ঘুমের আগেভাগে অনেকটা পথ যেতে হবে
ঘুমের আগেভাগে অনেকটা পুথ যেতে হবে"

এই গত ৫ মাসে ৩-৪ বার দেখা হয়েছে, কথা হয় ওই ১৫ দিনে একবার। বুঝি উনিও চান আমাকে, কিন্তু ওই ফেলে আসা দিনগুলি দুজনকেই পিছু ডাকে

.......একটু ঘন ঘন ফোন করিস না কেন? একদিন ডাক না কথা বলি
.......বলবি কথা, তাহলে চল , কাল মাকে একটা সারপ্রাইস দি। তুই এখানে চলে আয, তারপর আমার 'বুলেট' এ তোকে নিয়ে যাব সোজা ওনার ফ্যাক্টরি কাম অফিস এ। 'বুলেট টা এই ১০ দিন হলো কিনেছি। এতদিন MP সাহেবের রাজদূত চালাতাম। বেশিনা, যেতে আসতে আর কথা বলতে ধর ৩ ঘন্টা খুব বেশি হলে লাগবে। তুই শ্বশুর বাড়িতে বলে কাল আয। ....দিপুর কথা বলার ভঙ্গি আর স্বরের আন্তরিকতা ছন্দা কে ছুয়ে গেল। বুজতে পারল ও চাইছে ওর মায়ের সাথে বন্ধু বা কাছের মানুষদের পরিচয় করে দিতে, যেন একটু গর্ব ওর মাকে নিয়ে। স্মিত হাসিতে মুখ ভাসিয়ে ছন্দ রাজি হয়ে গেল।
. ..........ওহ, তোকে তো আসল কথাটাই বলিনি,আমার একটা বোন্ লাভ হয়েছে রে আমার নিজের বোন্। কি সুন্দর মেয়ে তুই দেখলে বুজবি ছন্দা ......দিপুর স্বরে এক অদ্ভূত প্রশান্তি , বোন্ কে নিয়ে
.........এটা তো দারুন খবর রে, একটু খুলে বল ....দিপু আস্তে আস্তে খুন বাদ দিয়ে সবই বলল, শেষে বলল হাসি মুখে
.......কি জানিস, তসলিমা নাসরিন এর কবিতার ওই শব্দ গুলোর মত

ভোরের বেলায় খড় কুড়াতে গিয়ে ,

আমার সাজি ভরে গেছে ফুলে

এত আমার কাম্য ছিল না তো। , .

পরেরদিন ৬টার সময় দিপু প্রথমে ফ্যাক্টরি গেল। সেখানে প্রায় ১০ টা অবধি থেকে দিপু অফিস এ আসল। সুরজ দীপুকে দেখেই " দিপু তোমার মা ৩ বার ফোন করেছিলেন, দেখা করতে বলেছেন। খুব জরুরি কাজ আছে" ..দিপু পূবার বাড়িতে ফোন করে পেলনা, সুরজ কে বলে গেল আবার ফোন করলে যেন বলে দেয় আজ দেখা করবে। এরপর বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়ে একটা নতুন জিন্স আর হালকা রঙের শার্ট পরে বুলেট নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। ছন্দা প্রায় ১২-৩০ নাগাধ আসল। ছন্দা আজ সালওয়ার কামিজ পড়েছে। বুলেট এ যেতে প্রায় ৪০-৪৫ মিনিট লাগলো। গেট এ দারওয়ান জিজ্ঞাসা করলো কার সাথে দেখা করবে। পুবার কথা বলতে জিজ্ঞাসা করলো এপয়েন্টমেন্ট আচ্ছে কিনা। ছন্দা তখন বলল
.....আরে, ও হামারা রিস্তেদার,....শুনেই সেলাম ঠুকে দরজা খুলে দিল। বুলেট পার্ক করে ভিতরে md চেম্বার এর সামনে গিয়ে দেখে লাল আলো জলছে । একটা বড় হলঘর জনা ২০ মেয়ে পুরুষ কাজ করছে। ৩ টে একটু ছোট ঘর কাঁচ দিয়ে ঘেরা। আর একটা বড়, বেশ বড় ঘর দরজায় নাম লেখা 'পূবা মালহোত্রা MD' ইংরাজি আর হিন্দিতে। দরজার সামনে যথারীতি দারওয়ান বা বেআরা দাড়িয়ে। দিপু গিয়ে বলল যে দেখা করবে। টুল ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে বলল, ভিতরে জরুরি মিটিং চলছে এখন দেখা করা যাবেনা। দিপু তখন একটা কাগজ নিয়ে বাংলায় বেশ বড় করে লিখল 'দিপু', কাগজ টা বেআরার হাতে দিয়ে বলল ভিতরে পাঠাতে। " সাহেব, এখন ঢুকলে ম্যাডাম খুব রাগ করবেন , এখন ঢোকা যাবেনা" একেবারে মুখ কাঁচু মাচু করে জবাব দিল। কি আর করবে বাইরেই বসে আছে।প্রায় ২০ মিনিট কেটে গেছে আবার গিয়ে বলল, ব্যাটা কিছুতেই যাবেনা। তখন ছন্দা গিয়ে ঠিক দরজার সামনে দাড়িয়ে বেশ উচু স্বরে বেআরা টাকে ধমক দিল। দু একটা স্টাফ ছুটে এলো, ছন্দ আর দিপু বেশ উচু স্বরেই কথা বলছে। ভিতরে বোধহয় শোনা যাচ্ছে।হঠাত এক ভদ্রলোক বেরিয়ে এলো, " কি ব্যাপার এত হল্লা কেন, কে আপনারা?" ছন্দ কিছু না বলে বেআরার থেকে কাগজ টা নিয়ে ভদ্রলোককে দিয়ে বলল
.....দয়া করে, এইটা ম্যাডাম কে দিন। আমরা অনেকক্ষণ অপেখ্যা করছি। এইটা দিলেই হবে, এতে নাম লেখা আছে। ভদ্রলোক কাগজটা নিয়ে কিছুই পড়তে পারলনা , একটু বিরক্তি প্রকাশ করেই ভিতরে ঢুকলো। ২০ সেকেন্ড এর ভিতরেই পূবা ছুটে বাইরে এসে " দি ..........পু " বলে বাচ্চা মেয়ের মত দীপুকে জড়িয়ে ধরল।
দুহাতে দীপুকে জড়িয়ে মাথা নামিয়ে চুমু খেল কপালে আর দুই গালে। দুই চোখ খুশির অশ্রু তে ভরপুর, দীপুকে নিজের বুকের সাথে নিয়ে
...... happy birthday, দিপু, শুভো জন্মদিন। সকাল থেকে তোকে আমি ১০ বার ফোন করেছি বাড়িতে আর অফিস এ। শুধু এই কথাটা বলব বলে,কিন্তু তুই নেই। আমি কিন্তু এইবার আর ভুলিনিরে দিপু।, ঠিক মনে রেখেছি। দুচোখ আর ধরে রাখতে পারছেনা আনন্দের অশ্রু।
.......ওহ, ওহ, আজ ২১ তারিখ, আরে আমার তো মনেই নেই। ছাড়, মা তোমায় একটা প্রনাম করি আজ। জন্মদিন , তুমি ঠিক মনে ভ্রেখেছ, আমার জীবনের অন্যতম স্বরনীয় দিন আজ মা, ছাড় প্রনাম করি। ...পূবা হাতের বন্ধন আলগা করতে দিপু মাথা ঝুকিয়ে দুই পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম করে মাথার চুলে হাত বলালো, পূবার চোখ আর কি পারে অশ্রু ধরে রাখতে! পূবা আবার দীপুকে জড়িয়ে ধরল।
.........মা, এই আমার সবচাইতে প্রিয় বন্ধু, ছন্দা, আমরা একসাথে পরতাম। ওর শ্বসুর বাড়ি দিল্লিতে। তোমাকে দেখতে এসেছে। ....ছন্দা এগিয়ে এসে প্রনাম করলো
.......আমি কিন্তু আন্টি বলতে পারবনা, মাসীমা বলব, রাগ করবে না তো। ...পূবা জলভরা চোখ হাসিয়ে ছন্দা কে জড়িয়ে ধরে " তাই বলবিরে মেয়ে, তাই বলবি, ".এরপর পূবা অঞ্চল দিয়ে চোখ মুছে, বিস্বযে হতবাক হয়ে যাওয়া সমস্ত স্টাফ এর দিকে তাকিয়ে " দেখো এ আমার ছেলে, প্রিয়দর্শি , আজ ওর জন্মদিন, আজ প্রথম এসেছে এখানে, আর এ ছেলের বন্ধু ছন্দা" ...সমস্ত স্টাফ হাসি মুখে "happy birthday , প্রিয়দর্শি " বলে উঠলো। " ম্যাডাম আপনার ছেলে বম্বে তে না গিয়ে দিল্লিতে কেন" একটি কম বয়েসী চ্যাংরা ছেলে টিপ্পনি কাটল। টিপ্পনি শুনে পূবা গর্ব ভরে দিপুর দিকে তাকিয়ে হেসে দিল। তারপর দুই জনকে দুই হাতে ধরে , প্রায় চোখ ঠেলে বেরিয়ে আসবে এইরকম অবস্থার বেআরার, পাস দিয়ে চেম্বার এ ঢুকলো। যাবার আগে বলে গেল "আজ তোমাদের বিকেলের চা /কফি আর কেক, আমার তরফে উপহার " আবার একচোট হাততালি আর হাসি উঠলো ঘরে । কেউ মনে করতে পারলনা সারা জীবনে পূবা ম্যাডামকে এইরকম মুডে দেখেছে। এ কোন পরশ পাথরের ছোয়া ?

চেম্বারের ভিতরের অবস্থাও তথৈবচ। প্রতিটি অফিসার হা করে পূবাকে দেখছে। হয়ত মনে মনে ভাবছে, " এই ছেলেটা তো রোজ আসতে পারে, তাহলে আমরা একটু সওয়াস্তি তে থাকি".
পূবা চেয়ার এ বসে, হাসি পূবার মুখে চিরস্তায়ী হয়েছে, " এ আমার ছেলে প্রিয়দর্শি, আজ ওর জন্মদিন আর এ ছন্দা , তারপর অফিসার দের দিকে তাকিয়ে " এনারা আমার সহকর্মী, অফিসার" প্রতেকেই দীপুকে অভিনন্দন জানালো,হাতে হাত মিলিয়ে। দিপু আর ছন্দা বসতে পূবা মিটিং সেইদিনকার মত শেষ করে পরের দিন বসবে বলে ঠিক করলো। পিছনের ছোট রেফ্রিজারেটর থেকে একটা বড় টিফিন বাক্স বার করে বিয়ারাকে তিনটে প্লেট আর চামচ দিতে বলল। টিফিন বাক্স খুলতেই দিপু সাগ্রহে তাকিয়ে দেখল পায়েশ। সঙ্গে সঙ্গে আঙ্গুল দিয়ে তুলে মুখে দিল
.... ওহ, কতদিন পর, পায়েশ, খাব। মা ছন্দা কিন্তু পায়েশ খায়না,
........না মাসীমা, গুল ঝাড়ছে, পায়েশ আমি খুব ভালো খাই। ও নিজে সবটুকু খাবে বলে বলছে ...বলে দিপুর মাথায় আলতো করে চাটি দিল
.........ছন্দা, জন্মদিনে উপহার না দিয়ে তুই চাটি মারছিস, খুব খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু।
........যা যা , কি খারাপ হবে রে, নিজের জন্ম দিন মনে রাখতে পারেনা আবার বড় বড় কথা!
........বিখ্যাত লোকেরা নিজেরা মনে রাখে না অন্য রা মনে করিয়ে দেয়। সত্যি তোর্ বরটা বেচারী, তুই এইটা পর্যন্ত জানিসনা। ভাগ্গিস তোর্ শাশুড়ি নেই, থাকলে তোকে ঝাঁটা পেটা করতেন। আবার ছন্দা এক চাটি মারলো, পূবা হাসি মুখে তাকিয়ে উপভোগ করছে। 'আচ্ছা এইরকম মুহূর্ত আমার জীবনে শেষ কবে এসেছে, কেন ঘন ঘন আসেনা এই মুহুর্তগুলো '..পূবা মনে মনে বলল। দিপুর প্লেট এ বেশি করে দিল, তিনজনেই চামচ দিয়ে খাচ্ছে, দিপু সব থেকে আগে শেষ করেই ছন্দার প্লেট থেকে চামচ দিয়ে তুলে নিল। চন্দা হা হা করতে করতেই চামচ মুখে
.........এইরকমই ও। কাটলেট খাচ্ছি দুজনে ও নিজের টা শেষ করেই " দেখি তোরটা কিরকম বানিয়েছে ' বলে আমারটা থেকে ভেঙ্গে খাবে, যেন আমার কাটলেট আলাদা করে বানিয়েছে।
..........দিপু তুই আমারটা থেকে খাবি, পূবা দীপুকে জিজ্ঞাসা করতেই, দিপু চামচ ডুবিয়ে পায়েশ তুলে নিল। পূবা সস্নেহে তাকিয়ে নিজের পায়েসের থেকে বেশিরভাগ অংশই তুলে দিল।
.........প্রিয়, এটা কিন্তু হ্যাংলামি, তুই আর খাস না। মাসিমাকে খেতে দে,
........মা তো ইচ্ছা মত বানিয়ে খেতে পারে, আমার কপালে জোটেনা। মা, তপুর জন্য আছে তো।
.......যাক তপুর ভাগ্গি ভালো তার দাদা এতক্ষণে তার কথা মনে করলো। সতি প্রিয়, তুই আর পাল্টালি না ...ছন্দা হাসি মুখে বলল। পূবা দিপুর খাওয়া দেখছে আর ভাবছে কি বঞ্চনা দিয়েছি আমি আমার নিজের প্রথম সন্তানকে। 'দিপু আমাকে ক্ষমা করিস বাবা, সারা জীবনের জন্য না পারিস এক মুহূর্ত বা এক পল এর জন্যেও আমাকে ক্ষমা করিস, সারা জীবন চেষ্টা করে যাব আর যেন তোকে বঞ্চিত না হতে হয়'
........মা, ছন্দা আমায় সারা কলেজ জীবন খাইয়েছে। আমার পয়সা থাকত না ওই খাওয়াত। সত্যি কারের বন্ধু আমার ছন্দা। ওকে কি দেওয়া যায় বলত, কিছু ধার অন্তত শোধ হোক
.......ওই চেষ্টা করিসনা প্রিয়। ঐটাই আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধন, কিছু দিয়ে ছিড়ে ফেলিস না
.......হাঁ দিপু, ঐটা শোধ করিসনা। সারা জীবন থাকুক, খুব কম লোকই পায় বন্ধুত্য, যত্ন করে রেখে দে। শোন আগামী শনিবার আমরা তিনজন,তপু আর ছন্দার যদি আপত্তি না থাকে তাহলে ওর শ্বশুর এক পাঁচতারা হোটেলে রাতের খাবার খাব। ছন্দা আমি তোর্ বাড়ি গিয়ে তোর্ শ্বশুর বলে আসব কেমন?
........তাহলে মা, কৌশিক কেও বল, ও চলুক আমাদের সাথে ,
........ইশ, ভুলে গেছিলাম রে, তুই কৌশিককে বল, আমরা সবাই যাব। চল ফ্যাক্টরি দেখাই ।
বিরাট ফ্যাক্টরি। প্রায় এক একর এর উপর খালি ফ্যাক্টরি। ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাচ্ছে পূবা । ..." দিপু, আমরা ওই রেল এর এঙ্গেল এর উপর আর নির্ভর করবনা। ভেঙ্গে বলতে গেলে রেল এর উপরেই নির্ভরতা কমিয়ে দেব। এই দ্যাখ, এইটা হচ্ছে, grating, প্রতিটি বড় ফ্যাক্টরি তে দেখবি, মেঝেতে স্টিল এর এইরকম সারি সারি পাত দেওয়া মেঝে পাতা আছে। ভারী জিনিস নিয়ে যেতে যাতে না মেঝে ভেঙ্গে যায়, আরো অনান্য কারণে এই grating লাগে। অটোম্যাটিক মেশিন এ বানানো যায় আর খরচ কম পরে, সেই মেশিন ইম্পোর্ট করতে হবে। সাউথ কোরিয়ার এক কোম্পানি বানায়। কিন্তু দাম প্রায় কোটি টাকা। ব্যাঙ্ক থেকে পেয়ে যাব কিন্তু যথেষ্ট অর্ডার না পেলে debt service করতে পারবনা। তাই এখন হাতে ওয়েল্ডিং করে করছি। কিছুদিন দেখি তারপর ইম্পোর্ট করব। ভারতে একমাত্র পুনে তে একটি কোম্পানি ওই মেশিন ইম্পোর্ট করেছে। দেখা যাক কি হয়।একজন কাজ জানা ইঞ্জিনিয়ার দরকার ওই অটোমেটিক মেশিন চালানোর জন্য। তুই, লোহার পাত একদিকে ঢুকিয়ে দিলি অন্য দিক দিয়ে সাইজ মত বেরিয়ে আসবে। কিন্তু পাত গুলোর জোড়া লাগানোর জন্য ওয়েল্ডিং দরকার। ঐটাই সবচাইতে গুরুত্যপূর্ণ , কেননা ওয়েল্ডিং ঠিক না হলে একটু জোরে চাপ পারলেই ভেঙ্গে যাবে। ওয়েল্ডিং এ বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার দরকার ওই মেশিন চালাতে। আর ওই দিকে চল, এই টা হচ্ছে 'বাস্কেট।'. থার্মাল পাওয়ার ইউনিট এ এইগুলো লাগে। কয়লা পড়ালে যে ধোয়া বেরও সেইটা এই বাস্কেট এর ভিতর দিয়ে পাস করে। এইটার খুব ডিমান্ড আছে। কলকাতার ২ টো কোম্পানি বানায় এবং ভালো বাজার ধরেছে। আমরাও কিছু পেয়েছি, উত্তর ভারতের ইউনিট গুলোতে আমরা ধরার চেষ্টা করছি। ট্রান্সপোর্ট খরচা আমাদের কম হবে আর কলকাতার থেকে কম দামে দিতে পারব। ঠিক ঠাক চললে ৩ বছরের ভিতর ভালো ব্যবসা দেবে এই দুটো।এইবার ঐদিকে চল, ইলেকট্রিকাল ডিভিশন। এইগুলো হলো কন্ট্রোল প্যানেল, যে কোনো বড় ইন্ডাস্ট্রি তে এই গুলো লাগে। অটোমেটিক মেশিন গুলো কে ঠিক ভাবে চালাতে কন্ট্রোল প্যানেল ভিশন জরুরি। ইলেকট্রিসিটি ঠিক ঠাক পাঠানোর সিগনাল এই গুলো করে। চেষ্টা করছি, একটি বাইরের কোম্পানি যারা ইলেকট্রনিক্স সার্কিট বানায় তাদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের থেকে ওই সার্কিট এনে আমরা প্যানেল বানাবো, তাতে আরো ভালো ভাবে এই গুলো চলবে কোনো রকম অসুবিধা হলে সার্কিট নিজের থেকেই কাজ করবে। Baldor বলে একটি কোম্পানির সাথে মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে।এ ছাড়াও কোরিয়ার কোম্পানি আছে, তবে baldor খুবই নাম করা। দেখাযাক কি হয়। পশ্চিম বাংলায় কন্ট্রোল প্যানেল প্রচুর বানায়, খুবই ভালো মানের। এখন আমরা বছরে তা ১ কোটি মত ব্যবসা হয় এটাতে । এটাকে বাড়াব।“

দিপু হাঁ করে দেখছে আর ভাবছে একটি মহিলা একা এই জায়গায় দাড় করিয়েছে। অনেক কিছু জীবনের ছাড়তে হয়েছে।স্বার্থপর হতে হয়েছে, কিন্তু স্বার্থপর না হলে ব্যবসার ক্ষেত্রে সফলতা আসতনা। জীবনের যে কোনো ক্ষেত্রে সফলতা পেতে গেলে স্বার্থপর হতে হয়। নিজের লক্ষের দিকে স্থির নজর রাখতে হয়। অর্জুন যেমন মাছের চোখ দেকতে পেয়েছিলেন , সেইরিকম দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হয়। মারাদোনা, সারা জীবন খালি ফুটবল এর উপর চোখ রেখেছে, আর কোনো কিছুতে না, ক্রিকেট এর ওই ছেলেটি, তেন্ডুলকার, জীবনে খালি ক্রিকেট ছাড়া আর কিছু ভাবেনি। সফলতা পেতে হলে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হবেই,, দুনিয়া জোড়া বিখ্যাত এক চিত্র শিল্পী তার শিল্প কলার জন্য স্ত্রী পুত্র সবাইকে ত্যাগ করে চলে গেছিলেন খালি ছবি আকবেন বলে। মা, আমি বঞ্চিত হয়েছি, তুমি আমাকে দেখনি, পাশে দাড়াও নি, কিন্তু তুমি তোমার নিজের লক্ষে স্থির ছিলে। মা হিসাবে হয়ত তুমি অসফল অন্তত আমার ক্ষেত্রে কিন্তু তোমার নিজের জগতে তুমি সফল, এই সফলতার জন্য তোমায় কুর্নিশ করি মা, গর্ব হচ্ছে, তুমি আমার মা।
...........কি রে দিপু কি ভাবছিস, চল চা খাব ....তিনজনে পূবার চেম্বার এ বসলো। পূবার একেবারে বাঁ দিকে দিপু আর ডান দিকে ছন্দা। হঠাত


........ওহ, মা একটা কথা বলতে ভুলেই গেছি। খুব একটা ভালো কথা না, মেজোকাকা তার অংশ বিক্রি করে দিছে। ৪৫ লক্ষ দাম ধরেছে। ঐখানে এখন যা দাম তাতে ঠিকই আছে। ৪ টে ঘর খাবার জায়গা পিছনে প্রায় ১ কাঠার উপরে ফাকা জমি।ছোটকা ফোন করেছিল, বলল আমাকে কিনতে। ...দিপু হাসতে হাসতে এরপর বলল " ৪৫ লক্ষ্য জীবনে দেখিনি, আমায় বিক্রি করলেও হবেনা, ছোটকা বলছে আমায় কিনতে" ....পূবা একটু গম্ভীর হয়ে গেল। ছন্দার দিকে তাকিয়ে কি ভাবলো
.......শোন দিপু, ওইটা তুই কিনবি। টাকা আমি দেব, কিন্তু তুই কিনবি ...দিপু অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল,
......আমি কেন, তাহলে তুমি কেন, তোমার টাকায় তুমি কেন, তা নাহলে তপুর নাম কেন ...পূবা একটু মাথা ঝাকালো
......না পবিত্র আমাকে বিক্রি করবেনা। পবিত্র আর ওর বউ দুটিই কুচুত্কুরে, কিছুতেই আমাকে বিক্রি করবেনা। তুই কিনবি , কিনে তপুর নাম গিফট করবি। income tax আমি সামলাবো, ও নিয়ে তোকে ভাবতে হবেনা। তুই পুনুর সাথে যোগাযোগ কর, ওকে সব বল। পবিত্রর সাথেও যোগাযোগ করে ন্যাকামি করে কথা বলবি, কাজ হাসিল করার জন্য। আমার কথা ঘুনাক্ষরেও ওকে জানাবিনা এমনকি আমার সাথে যোগাযোগ হয়েছে এইটাও বলবিনা। ওকে সব বলে আমার কলকাতার উকিলের সাথে কথা বলে বায়না করবি। আর যদি তোকে বিক্রি না করতে চায় তা হলে ওই অংশ জীবনে যাতে না বিক্রি করতে পারে সেই ব্যবস্থা করব। আমার সন্তানদের জন্য আমি অনেক কিছুই করতে পারি। যদি ও রাজি হয় তাহলে দিল্লিতে রেজিস্ট্রি হবে। ওই ব্যবস্থা আছে, পশ্চিম বাংলায় স্ট্যাম্প ডিউটি বেশি বলে এখানে রেজিস্ট্রার অফ আসুয়ারেন্স এ করা যায়। এইটা আয়িন সম্মত কাজ। তুই কথা বলে আগে মানেজ কর তারপর আমায় বলবি।

.....অত টাকা, তুমি আমার নাম দেবে? ..পূবা হাসি মুখে দিপুর দিকে তাকিয়ে হেসে মাথা নেড়ে হাঁ বলল।
........তোকে তো দেব, ভয় কিসের, আমার কোনো অসুবিধা হবে না। এতদিন অনেক কিছু ত্যাগ করে কারখানা মিছিমিছি চালাইনি, ও নিয়ে তুই ভাবিসনা। আমার প্লান আছে ২০০০ সালে ৫০ কোটি তে নিয়ে যাবার, দেখা যাক কি হয়। একজন ভালো কাজ জানা ইঞ্জিনিয়ার দরকার, ওই ব্যাপারে আমার খামতি আছে।
.........ছন্দা, ৫০ কোটিতে কত শুন্য লাগে রে? গম্ভীর স্বরে দিপুর প্রশ্ন
.......তুই অঙ্কে আমার চাইতে ভালো, তুই বল ...... ছন্দা হাসতে হাসতে উত্তর দিল।
.....খাতা পেন্সিল দে, তা নাহলে বলতে পারব না ...দিপুর ছোট উত্তর ...পূবা হাসি মুখে দেখছে
.......দিপু আরেকটা কথা। তুই দীপক কে বল আমি একদিন তোদের ফ্যাক্টরি দেখতে যাব। দীপকের বাড়িতে সেইদিন খাব। আমি তোদের সাহায্য করতে চাই, তোরা আর আমার প্রতিদন্ধি না, বন্ধু। ...এরপর বেশ বড় করে হাসি মুখে
………আমি আমার বন্ধুর সংখ্যা বাড়াতে চাই। দীপকের বাবার মৃত্যু ওদের খুব অসুবিধায় ফেলেছিল, এইটা ঠিক দীপক চেষ্টা চালিয়ে গেছে আর তোকে পেয়ে ওদের উপকার হয়েছে। আর শোন, এরপর তোর্ সবকটা বন্ধুর সাথে আমায় পরিচয় করিয়ে দিবি, দীপককে বলনা বাকি বন্ধুদেরও সেইদিন বলতে, তাহলে সেই দিনই পরিচয় হবে। .....দিপু অবাক নয়নে মাকে দেখছে, এ কোন পূবা মালহোত্রা ! পূবার আজকে নাম হওয়া উচিত সুস্মিতা। মুহুর্তের জন্য হাসি মুখ থাকে যায়নি
.......দিপু আমার ফ্যাক্টরি আর অফিস কিরকম লাগলো বললি না তো ? ...দিপু চুপ করে পুবার দিকে তাকিয়ে দু হাত দিয়ে পূবার টেবিল এ রাখা হাত ধরে নিজের মাথা অল্প একটু এগিয়ে, চোখ বন্ধ করে, পূবার কপালে ছয়ালো।কোনো শব্দ না করেও স্তব্দতার শব্দে লাখো শব্দ নিঃশব্দে অনুভূত হয় । পূবা একটা হাত দিপুর মাথায় রেখে চোখ বুজে অনুভব করলো শরীরের সমস্ত স্নায়ু তন্ত্রএ অনুরণিত হচ্ছে দিপুর নিস্তব্দতার বার্তা " তুমি আমার মা "।
এই স্বর্গীয় ছবির একমাত্র সাক্ষী ছন্দা স্মিত হাসি মুখে, বুকে চিন চিন ব্যথা অনুভব করলো তার এক রত্তি দস্সু টার জন্য।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টার একটু পরে দিপু, পূবা , তপু, কৌশিক, ছন্দা আর ছন্দার শ্বশুর অসীম গুহ দিল্লির সবচাইতে নামী হোটেলের রেস্টুরান্ট এ এসে উপস্থিত হলো। আগের থেকেই পূবা টেবিল বুক করে রেখেছিল, তাই কোনার দিকে একটা বড় টেবিল এ ৩ জন করে বসলো। দিপু কৌশিক আর তপু একদিকে আর পূবা , পাসে ছন্দা আর তার পাসে অসীম।
পূবা ছন্দার ছেলেকে দেখেই নিজের কোলে নিয়ে নিল
,......কতদিন পর কোলে নিলাম বাচ্চা, তপুর পর আজ ....আদর সাথে বাচ্চার সাথে কথা। শিশুটি এত লোক দেখে ভয় তো দুরে থাক খল খল করে হেসে যাচ্ছে,আর এর জামা তো এই গ্লাস এর জলে হাত, কখনো মা বা দাদুর দিকে হাত বাড়াচ্ছে, ১ মিনিট এর ভিতর টেবিল প্রানবন্ত হয়ে উঠলো অতি ক্ষুদ্র আঙ্গুল, আর তার সঞ্চালনে। অসীম বেশ সু পুরুষই এখনো আছেন। দেখে বোঝা যায়না ৫১ বছর বয়েস আর যথেষ্ট রসিক। বসেই
.........আরে ,এ যে দেখি bachelor আর married ক্রিকেট ম্যাচ , তা হোক। শোন সবাই, পূবা দেবী আপনিও শুনুন, আমরা প্রথমে খুব অল্প পানীয় নেব। তপু নেবে কিনা সেটা তপুর দাদা আর মা ঠিক করবে, তবে আমি বলি অল্প নিলে .....বলে পূবার দিকে তাকালেন। পূবা দিপুর দিকে তাকালো চোখে জিজ্ঞাসা
.........তপু, তুই কি আজ একটু আরো পাকবি, ইচ্ছা করছে কি? ভনিতা না করে বল .......দিপু বেশ গম্ভীর হবার চেষ্টা করছে কিন্তু হাসি চাপতে পারছেনা
........কি? কি না করে? ভনিতা মানে কি মা? ....তপু দিপু আর পূবার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো ...পূবা হেসে দীপুকে ইঙ্গিত করে দেখালো " দাদা, কি মানে রে?"
.........খুব সোজা মানে রে তপু, এই ধর তুই কাউর সাথে প্রেম করতে চাস, কিন্তু এমন ভাব দেখাস যে প্রেম জিনিষটা যে কি সেটাই তুই জানিস না, এইটা ভনিতা ..তপু ঝাপিয়ে পড়ল দিপুর উপর দুম দুম করে কিল মারতে লাগলো।
.........আর কোনো উধাহরণ মাথায় আসলোনা , প্রেম, তুই কর গিয়ে আমার দরকার নেই। রাগ আর হাসি মিশিয়ে তপু আবারো কিল মারলো
........আরে আমি তো করতেই চাই, তোকে বললাম তোর্ বন্ধুদের সাথে আলাপ করিয়ে দিতে, তুই পাত্তাই দিলিনা এতদিন হয়ে গেল, কি হলো আলাপ করাবি না?
.........মা! দাদা কিন্তু পিছনে লাগছে, ভালো হবেনা কিন্তু
.........পিছনে কোথায় ও তো সামনেই লাগছে, কি ছন্দা তুমি কি বল .....গম্ভীর মুখে কৌশিক বলল
........ওহ। তুমিও আছ সাথে, পড়ব না তোমার কাছে, ...তপু হাসি মুখেই উত্তর দিল
.........কি পড়বি না রে তপু , প্রেম এ পরবি না ? ......খুব গম্ভীর মুখে দিপু জিজ্ঞাসা করলো .....সবাই হো হো করে হেসে উঠলো, এমনকি ছন্দার ছেলে পর্যন্ত তৈয় , তৈয় করে সবার সাথে হি হি করে হেসে উঠলো. তপু আবারো কিল মারতে লাগলো দীপুকে, সাথে অনুযোগ ,," মা তুমি কিছু বলছ না কেন? তখন থেকে আমার পিছনে লাগছে?
........আবার পিছনে, আরে বাবা প্রিয় তো সামনেই লাগছে ......কৌশিক এবার যোগ দিল, তপু এইবার উঠে পড়ছে রেগে। দিপু হাত ধরে বসিয়ে জড়িয়ে ধরে পকেট থেকে সবচাইতে বড় ক্যাডবেরি বার করে দিল ...." এইবার একটু হাস" বলে গালে চুমু।
..........তপু যে কোনো জিনিসই সবাইকে দিয়ে খেতে হয়, এইটা কিন্তু আমি তোমাকে শিখিয়েছি………..কৌশিকের গম্ভীর স্বর বলল ,হাত পেতে,হাসি মুখে .......তপু এইবার হেসে ক্যাডবেরি ভেঙ্গে প্রতেক কে দিল
........কৌশিক, তুই খুব ভালো শিক্ষক ....আবার দিপুর টিপ্পনি
.........তোর্ বন্ধু, সে ভালো শিক্ষক না হয়ে যায়। তুই যে কি জিনিস আমার চাইতে ভালো এখানে আর কেউ জানেনা। একের নম্বরের বিচ্ছু .....এই প্রথম ছন্দা কিছু বলল হাসতে হাসতে
..........আচ্ছা কৌশিক, তুই আর আমি একসাথে ১৪ বছর পরেছি। আমি কি বিচ্ছু , তুই আমাকে সাপোর্ট দে ......দিপু যেন দয়া চাইছে .....কৌশিকএর মুখ দিপুর দিকে তাকিয়ে হাসছে
....কৌশিকের কথা শেষ হওয়ার আগেই পানীয় হাজির। ছন্দা আর তপু বিয়ার বাকিরা স্কচ। দিপু আর কৌশিক প্রথমেই পূবার দিকে তাকিয়ে চোখ দিয়ে অনুমতি চাইল, পূবা ঘাড় নাড়িয়ে সায় দিল, অসীম স্কচ এ চুমুক দিয়ে
......এর সাথে তুলনা চলে একমাত্র কালিমার্কা এক নম্বরের। প্রিয়, কৌশিক খেয়ে দেখেছ কখনো? .......প্রিয় ঘার নাড়াল, কৌশিক ও তাই।
.......আসলে আমাকে বাড়িতে তারাতারি ফিরতে হত। অফ, ওই কাকিমা, জেগে বসে থাকবে কখন আমি ফিরব। কতদিন বলেছি তুমি খাবার ঢাকা দিয়ে রাখবে, 'না, তুই দিনে একবার খাস, কি লাগে না লাগে, ঢাকা দেওয়া ঠিকনা'। এখন বুঝি, এর পিছনে সুক্ষ কারণ ছিল, জেগে বসে থাকলে আমি তারাতারি বাড়ি ফিরব আর সামনে বসে খাওয়ালে মদ খেয়ে ফিরবনা তাই জেগে থাকত। একদিন কালী পুজোর দিন বলে গেছিলাম, সেই দিন খেয়ে দেখেছি। গন্ধ বাদ দিলে সত্যি ভালো।
..........গন্ধ কাটানোর জন্য কোক মিশিয়ে নিলেই হয়, আমি IMFL কখনো খাইনা , বিশ্রী একেবারে। বিদেশে থাকতে এমন কোনো দামী পানীয় নেই খাই নি, কিন্তু এক নম্বরের সাথে প্রেম হয়েছিল।শিবপুরে পড়ার সময় ঐটাই আমাদের প্রেম ছিল। পূবা দেবী, ওই খেয়েই জীবন নিয়ে ওই রকম ফিলোযোফিস করা যায়,

মনে করো,গাড়ি রেখে ইস্টিশান দৌড়ুচ্ছে ,নিবন্ত ডুমের পাশে তারার আলো মনে কর, জুতো হাটছে, পা রয়েছে স্থির --আকাশ-পাতাল এতল -বেতোল মনে কর,শিশুর কাঁধে মড়ার পাল্কি ছুটেছে নিমতলা-পরপারে বুড়োদের লম্বালম্বি বাসরঘরী নাচ সে বড়ো সুখের সময় নয়,
সে বড়ো আনন্দের সময় নয়
[+] 5 users Like pnigpong's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: টান (কালেক্টেড) - by pnigpong - 27-06-2020, 08:41 AM



Users browsing this thread: 8 Guest(s)