Thread Rating:
  • 14 Vote(s) - 3.43 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী-Written By pinuram
#29
কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী (#19)

ওই কাগজে লেখা, “উইথ লাভ ফর এভার ইওরস, মনিদিপা চৌধুরী।”

প্যাকেট’টা খুলে দেখল যে ওতে কড়কড়ে হাজার টাকার নোটের তাড়া, দেড় লাখ টাকা। কিছুই ঠিক করে বুঝে উঠতে পারছে না দেবেশ। চোখের সামনে মনীষার মুখ আর তার সাথে মনিদিপার মুখ কিছুতেই মিলয়ে নিতে পারছে না। কিন্ত এই কাগজ মিথ্যে নয়, ওই হাতের লেখা ও ভাল ভাবে চেনে। ওই হাতের লেখা দেখে চোখ ফেটে জল বেড়িয়ে এল দেবেশের, একি করল সে। একজন কে পেতে গিয়ে আরেক জনের শরীরের সাহায্য নিল। সামনে রিতিকা, যে ওকে বিয়ে করবে, হাতে মনিদিপার চেক, সেই ভালবাসার পাত্রি মনিদিপা, যে এমনকি টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে আর রিতিকাকে বরন করে নেবার সুযোগ দিয়েছে। রিতিকা ওর রজনীগন্ধা, সুন্দর কোমল নির্মল ফুল আর মনিদিপা ওর হাসনাহেনা, মাদকতায় ভরা এক ভালবাসা।

না আর ভাবতে পারছে না দেবেশ, হাতের মুঠিতে কাগজ’টা প্রাণপণে শক্ত করে ধরে আরেক হাতের মুঠিতে সোনার হার। নিজের কপালে করাঘাত করল দেবেশ। হৃদয় ফাটিয়ে আর্তনাদ করে উঠল, “মনিদিপআআআআআ…” না সে নাম ঠোঁটে এল’না ওর, বুকের আর্তনাদ, বুকের মাঝেই রয়ে গেল। মেঝের ওপরে বসে পড়ল দেবেশ।

রিতিকা দেবেশের জল ভরা চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারল খুব বড় একটা অঘটন ঘটে গেছে। বিছানার চাদর জড়িয়ে নেমে এল দেবেশের পাশে, বুকের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে রিতিকার, কি হল দেবেশের।

রিতিকা কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করল, “কি হয়েছে, হানি?”

রিতিকার গলা শুনে পৃথিবীতে ফিরে এল দেবেশ। কি বলবে রিতিকাকে, ভাষা হারিয়ে ফেলেছে দেবেশ। রিতিকা ওর হাত থেকে কাগজ’টা নিয়ে দেখল ওতে কি লেখা আছে। লেখা পড়ে রিতিকার চোখ ফেটে জল বেড়িয়ে গেল। বুকের মাঝে কেউ যেন দুমদাম করে হাতুরি মারতে শুরু করে দিল।

কান্না ভেজা গলায় জিজ্ঞেস করল রিতিকা, “এটা কি দেবেশ?”

কি উত্তর দেবে রিতিকাকে, কাঁপতে কাঁপতে দেবেশ বলল, “আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারব না, রিতিকা?”

দেবেশের কথা শুনে রিতিকার মুখ শুকিয়ে গেল, কেউ যেন ওর সারা শরীরের রক্ত শুষে নিয়েছে। বুক ফাটিয়ে আর্তনাদ করে উঠল রিতিকা, “কি হয়েছে তোমার দেবেশ, আমাকে বল।”

রিতিকার দিকে তাকিয়ে দেবেশ জিজ্ঞেস করল, “আমি খুব বড় পাপী রিতিকা। আমায় বিয়ে করলে তুমি সুখী হবে না। তুমি চলে যাও আমাকে ছেড়ে।”

রিতিকা জড়িয়ে ধরল দেবেশকে, “কি যাঃতা বলছ তুমি, তোমার চোখ দেখে আমার ভয় করছে হানি। কি হয়েছে তোমার?”

দেবেশ দাতে দাঁত চিপে রিতিকার হৃদয় ভেঙ্গে দিল। চেঁচিয়ে উঠল দেবেশ, “আই হেট ইউ রিতিকা, তুমি সুবিধা বাদি মেয়ে। আমি সুইজারল্যান্ডের চাকরি পেলে তবে তুমি আমাকে বিয়ে করবে না হলে তুমি আমাকে করতে না। এই রকম সুবিধা বাদি তুমি। আই হেট ইউ রিতিকা।” কথাগুল বলতে দেবেশের বুক ফেটে যাচ্ছিল কিন্তু ওকে ওর মনিদিপাকে খুঁজতে হবে, এই হার মনিদিপার গলার, এই হার আর কাউকে ও পরাতে পারবে না, মরে গেলেও পারবেনা।

দেবশের কথা শুনে রিতিকা জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠল, “না হানি আমার সুইজারল্যান্ড চাই না, প্লিস ওই রকম ভাবে আমাকে ফেলে দিও না। তুমি আমাকে যেখানে রাখবে সেখানে থাকতে আমি রাজি। তোমার সাথে আমি কলকাতা যেতেও রাজি।”

দেবেশ দেখল রিতিকাকে কিছুতেই বোঝানো যাচ্ছে না, বুক ফেটে যাচ্ছে দেবেশের। নিরুপায় হয়ে দেবেশ শেষ পর্যন্ত হাতের মুঠি খুলে ওকে সোনার হার’টা দেখাল।

রিতিকার চোখে জল নিয়ে দেবেশের হাত থেকে সোনার হার’টা নিয়ে নিল।

কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করল “এটা কি?”

দেবেশ কান্না জড়িত স্বরে উত্তর দিল, “এটা আমার ভালবাসা। আমার জেঠিমা আমাকে দিয়েছিল আর বলেছিল যে আমি যেন আমার বউয়ের গলায় পড়িয়ে দেই। আজ রাতে এই হার তোমার গলায় পড়িয়ে চিরকালের জন্য নিজের করে নিতে চেয়েছিলাম আমি। এই হার আমার প্রথম ভালবাসা, মনিদিপার। মনিদিপা সুইসাইড করে আর আমাকে ওর এই হার দিয়ে যায়। আজ আমি আমার মনিদিপা কে খুঁজে পেয়েছি। রামাচন্দ্রনের সাথে যে মনীষা রাত কাটিয়ে ছিল সে আমার মনিদিপা। মনিদিপা বেঁচে আছে, আমি ওর হার আর কারুর গলায় দিতে পারব না। এই হার আমি তোমাকে পড়িয়ে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারলাম না, রিতিকা। রিতিকা আমি পাপী, আমাকে ক্ষমা কর।”

রিতিকার পায়ে লুটিয়ে পড়ল দেবেশ। সোনার হার হাতে নিয়ে পাথর হয়ে গেল রিতিকা। ওর গা হাত পা, ঠান্ডা হয়ে গেছে দেবেশের কথা শুনে। হৃদয় ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে রিতিকার। দু’চোখে যেন অস্রু নয়, রক্তক্ষরণ হচ্ছে। অনেকক্ষণ পরে চোখের জল মুছে রিতিকা সোনার হার’টা দেবেশের হাতে দিল। দেবেশ তাকিয়ে রইল রিতিকার লাল চোখের দিকে।

হৃদয় ভাঙ্গা এক হাসি দিয়ে রিতিকা দেবেশকে বলল, “আজ রাতের জন্য একবার’টি এই হার আমার গলায় পড়িয়ে দাও, হানি। আমি কাল সকালে তোমাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাবো।”

কাঁপা হাতে দেবেশ রিতিকার গলায় ওই সোনার হার পড়িয়ে দিল। দুজন দুজনাকে জড়িয়ে ধরে নরম বিছানায় উঠে গেল। শেষ বারের মতন প্রান ঢেলে নিজেকে উজাড় করে দিল, রিতিকা। চোখে জল নিয়ে, দেবেশ নিজেকে সপে দিল রিতিকার প্রেমঘন বাহু পাশে। যেন এই রাতের আর শেষ নেই।

এক সময়ে ক্লান্ত হয়ে রিতিকার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ল দেবেশ। সারা রাত দেবেশ কে জড়িয়ে কেঁদে গেল রিতিকা। পুব আকাশে সূর্য উঠছে, ঘরের মধ্যে নতুন সূর্যের আলো, কিন্তু রিতিকার হৃদয় আজ কালো মেঘ। খুব সাবধানে, আস্তে আস্তে কপালে চুমু খেল, ঠোঁটে চুমু খেল, বুকে চুমু খেল রিতিকা, পাছে দেবেশ জেগে যায়। গলা থেকে খুলে নিল সোনার হার আর পড়িয়ে দিল দেবেশের গলায়। ঠিক বাঁ বুকের ওপরে যেখানে হৃদয় খানি ধুকপুক করছে, সেখানে চুমু খেল রিতিকা।

একটা কাগজে লিখল, “আই উইল রিমেম্বার ইউ ফরেভার। আমার শুভেচ্ছা আর ভালবাসা তোমার সাথে থাকবে। আমার সামনে আর কোনদিন এসো না। নিজের ভালবাসার খোঁজে যাও, হানি।”

তারপরে আর পেছন ফিরে তাকাল না, নিজের জামা কাপড় পরে বেড়িয়ে গেল রুম থেকে।

""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !! Sad

[+] 3 users Like Kolir kesto's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী-Written By pinuram - by Kolir kesto - 26-06-2020, 11:31 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)