27-02-2019, 03:17 PM
তমসা উদ্ঘাটন (#01)
বাড়ির সবাই নববধুকে বরন করে নেবার জন্য আগে থেকেই দরজায় উপস্থিত ছিল। অভির মা, দিদা, মেঘনা এবং আরও অনেকে। গাড়ি থেকে নেমে অভি লক্ষ্য করল যে পরী আর মৈথিলী দুজনের মধ্যে বেশ হৃদ্যতা গড়ে উঠেছে। পরীর হাসিখুসি মুখ দেখে অভির বেশ ভাল লাগল। উৎসুক নয়নে অভি তাকিয়ে ছিল পরীর দিকে কখন একবার চারচোখ এক হয়। মায়ের দিকে গুটি পায়ে এগিয়ে গেল অভি। বাবা এককোণে দাঁড়িয়ে ছিলেন, অভি কে দেখে কাছে ডাকলেন। কনের বাড়ির কুশল মঙ্গল আর রাতের কথা জিজ্ঞেস করলেন। অভি মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দিল যে রাতে কোন অসুবিধা হয়নি।
মৈথিলীকে বরন করার পরে, পরী ওকে নিয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করল। বাড়িতে ঢুকে পড়ার আগে চোরা চাহনি দিয়ে গেল অভির দিকে।
কিছু পরে মৃগাঙ্ক এসে অভিকে ওদের সাথে যেতে বলল। মৃগাঙ্কর বাড়ি দিদার বাড়ির কাছেই। অভি উত্তরে জানাল যে ও জামা কাপড় বদলে ওদের সাথে ওদের বাড়ি যাবে।
বাড়ি ঢোকা মাত্রই মা জিজ্ঞেস করলেন যে ওর শালটার কি হল। অভি জানিয়ে দিল যে রাতে পরীর খুব ঠাণ্ডা লাগছিল তাই ওর শাল পরী নিয়ে নিয়েছে। মা ওর কথা শুনে খুশি হয়ে বললেন যে ভাল কাজ করেছিস। বাথরুমে ঢুকতে যাবে অভি, ঠিক এমন সময়ে পরী এসে মাকে জড়িয়ে ধরল। মায়ের কাঁধের পাশ থেকে অভির দিকে দুষ্টু মিষ্টি হেসে মায়ের গালে চুমু খেল। মা পরীকে এক মৃদু বকুনি দিয়ে বলল রাতের জামাকাপড় বদলে নিতে।
পরী মাকে জিজ্ঞেস করল যে মা ওর মায়ের সাথে কথা বলেছেন কি না। মা উত্তর দিলেন যে রাতের বেলা সবকিছু মিটে যাবার পরে তিনি দিদার সাথে পরীর ব্যাপারে কথা বলবেন।
পরী আদর করে মায়ের গালে চুমু খেয়ে বলল, "তুমি আমার খুব ভাল দিদি। আজ থেকে আমি তোমাকে ছোটমা বলে ডাকব।"
মা ওর গালে আদর করে বলল, "তুই মা, চিরকাল আমার চোখের মনি ছিলিস। কতদিন তোকে দেখিনি। আয় কাছে বস, তোকে দুচোখ ভরে একবার দেখি।"
অভি, বাথরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে মা মেয়ের আদর দেখতে থাকে। মা ওর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, "কিরে কি দেখছিস? চুপিচুপি মা মেয়ের কথা শুনছিস?"
পরী মায়ের কোলে মাথা রেখে বিছানায় শুয়ে পড়ল। মা ওর চুলে বিলি কাটতে থাকে আর ছোট্ট বিড়ালের মতন পরী মায়ের আদর খেতে থাকে।
মা মেয়ের অতিরিক্ত প্রেম আর সহ্য হল না অভির। জামা কাপড় বদলানর জন্য বাথরুমে ঢুকে গেল। বেশ খানিকক্ষণ পরে বাথরুম থেকে বেড়িয়ে দেখে, পরী মায়ের কোলে মাথা গুঁজে কাঁদছে আর মায়ের চোখেও জল। অভি মাকে জিজ্ঞেস করল যে কি হয়েছে। মা কিছু উত্তর দিলেন না, শুধু বললেন চলে যেতে।
ঠিক সেই সময়ে বাইরে থেকে মৃগাঙ্কর ডাক শুনে অভি ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল। ঘরের মধ্যে ক্রন্দন রত অভির ভালবাসার দুই প্রতিমা, এক মা এক পরী। মৃগাঙ্কর বাড়ির দিকে যেতে যেতে অভি ভাবতে চেষ্টা করে যে কি কারনে মা আর পরী কাঁদতে পারে। ওর মাথায় কোন কারন খুঁজে পেলে না। মৃগাঙ্ক জানাল যে কিছুক্ষণের মধ্যেই সুব্রতও ওদের সাথে ড্রিঙ্ক পার্টিতে যোগদান করবে।
মৃগাঙ্কর বাড়ি পৌঁছে অভি লক্ষ্য করল যে সুব্রত আগে থেকেই বাড়িতে উপস্থিত। তিন তলার ঘরে মদের আসর বসেছে, সমির বারটেন্ডার, সবাই কে গ্লাসে মদ ঢেলে দিচ্ছে। সমির, মৃগাঙ্কর সুব্রতর আর অভির মাঝে শুধু মাত্র সুব্রতর বিয়ে হয়েছিল, বাকিরা অবিবাহিত। হাসি ঠাট্টা মজা মিলিয়ে মদ্য পান চলতে লাগল। সমির বেশ পটু হাতে গ্লাস ধরিয়ে দিচ্ছে ওদের কে। সুরার নেশা সুব্রতর আর মৃগাঙ্কর রক্তে লেগে গেছে।
মদের ঝোঁকে মৃগাঙ্ক বলে ফেলল, "গুরু, আমি শুচিস্মিতাকে ভালবাসি।"
সুব্রত ওর কাধ চাপড়ে বলল, "বোকা... তুই ত একটা মস্ত গাধা। এতদিন চুপ করে ছিলিস।"
কথা শুনে অভির মনে হল যেন কেউ ওর কানের ওপরে গরম সিসে ঢেলে দিয়েছে। গ্লাসে চুমুক দিতে ভুলে গেল, এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মৃগাঙ্কর দিকে, "শালা বলে কি?"
মৃগাঙ্ক সুব্রতকে বলল, "তোর বড়দার ভয়ে ত আমি কিছু বলতেই পারিনি।"
সুব্রত, "বড়দা আমাদের বাবার মতন। বড়দা যতই রাগি হক না কেন, একদম নারকেল আমার বড়দা। ওপরটা শক্ত কিন্তু ভেতরটা একদম নরম আর জলে ভর্তি।"
মৃগাঙ্ক, "ঠিক আছে তাই হবে। আমি তাহলে তোর বড়দার সাথে কথা বলব।"
মৃগাঙ্কর কথা শুনে অভির মনে হল যেন টেনে এক চড় কসিয়ে দেয় মৃগাঙ্কের গালের ওপরে, "শালার কিনা আমার প্রেমিকার ওপরে নজর?" কোন রকমে নিজেকে সামলে নিয়ে, এক ঢোকে পুর গ্লাসটা গোলায় ঢেলে দেয়। রক্তের সাথে মদ মিশে গিয়ে মাথা ঝিনঝিন করে ওঠে।
সুব্রত অভির দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বলে, "এই ছেলে, এই অভিমন্যু। কিছু বল..."
ধুক করে ওঠে অভির বুক। হাতের সামনে ছিল রামের বোতল, একটানে ছিপি খুলে নিয়ে কিছুটা গোলায় ঢেলে নিল। দাতে দাঁত পিষে জিজ্ঞেস করল, "আমার কি বলার আছে?"
সুব্রত ওর দিকে হেসে উত্তর দিল, "যা কিছু। তোমার কথা, তোমার গার্লফ্রেন্ডের কথা।"
ওর কথা শুনে যেন অভির প্রানে বাতাস এল, "যাক সুব্রত আমাদের সম্পর্কের কথা কিছু জানে না।"
হেসে জবাব দিল অভি, "না আমার কোন গার্লফ্রেন্ড নেই। কলেজের সবাই খালি বই পড়া মাগি।"
ওই কথা শুনে সবাই হেসে ফেলে।
মৃগাঙ্ক নাছরবান্দা, "ভাই সুব্রত, আমি শুচিস্মিতাকে বিয়ে করব।"
ওর কথা শুনে সুব্রত বলল, "সে গুড়ে বালি। পরীর মাথায় নিশ্চয় কিছু একটা চলছে আর সেই জন্য"
অভির দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বলল, "ওর মা, আমাদের উলুপিদি আমার বিয়েতে এখানে এসেছেন। আমি খুব ভাল ভাবে বুঝতে পারছি যে আজ কালের মধ্যে এক বিশাল ঝড় আসবে বাড়িতে। আর সেই ঝড়ে অনেক কিছু বদলে যাবে। আমার ছোটবেলার কথা বিশেষ কিছু মনে নেই তবে মায়ের মুখে শুনেছি যে উলুপিদি আমাদের সংসার টাকে নিজের সংসারের মতন করে ভালবাসতেন, বিশেষ করে পরীকে। বাবা মারা যাওয়ার পরে উলুপিদি আমাদের সংসারটাকে টেনে ছিলেন। আমরা সবাই তখন খুব ছোটো। আমাদের ভাত কাপড়ের যোগাড় তিনি করেছিলেন সেই সময়ে। অনেক জল গড়িয়ে গেছে, অনেক দিন কেটে গেছে। আমাদের মধ্যে নিশ্চয় কিছু একটা ঘটে ছিল যার জন্য আজ পর্যন্ত উলুপিদি আমাদের বাড়িতে আর পা রাখেননি। আমি হলফ করে বলতে পারি যে উনি যখন এ বাড়িতে পা রেখেছেন তখন বিশাল কিছু একটা ঘটতে চলেছে।"
অভির মাথা থেকে মদের ঘোর কেটে গেল। কথা বলার মধ্যে সুব্রত গ্লাস নিচে রেখে দিয়েছে। দু’চোখ লাল, কিঞ্চিত জলে টলটল করছে চোখ। সামির দেখল পরিবেশ বেশ সঙ্গিন হয়ে উঠছে। একথা সেকথা বলে পরিবেশটাকে একটু হালকা করতে চেষ্টা করল সমির। কিন্তু সুব্রত থামতে নারাজ, ওর রক্তে যেন আগুন লেগেছে।
বাড়ির সবাই নববধুকে বরন করে নেবার জন্য আগে থেকেই দরজায় উপস্থিত ছিল। অভির মা, দিদা, মেঘনা এবং আরও অনেকে। গাড়ি থেকে নেমে অভি লক্ষ্য করল যে পরী আর মৈথিলী দুজনের মধ্যে বেশ হৃদ্যতা গড়ে উঠেছে। পরীর হাসিখুসি মুখ দেখে অভির বেশ ভাল লাগল। উৎসুক নয়নে অভি তাকিয়ে ছিল পরীর দিকে কখন একবার চারচোখ এক হয়। মায়ের দিকে গুটি পায়ে এগিয়ে গেল অভি। বাবা এককোণে দাঁড়িয়ে ছিলেন, অভি কে দেখে কাছে ডাকলেন। কনের বাড়ির কুশল মঙ্গল আর রাতের কথা জিজ্ঞেস করলেন। অভি মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দিল যে রাতে কোন অসুবিধা হয়নি।
মৈথিলীকে বরন করার পরে, পরী ওকে নিয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করল। বাড়িতে ঢুকে পড়ার আগে চোরা চাহনি দিয়ে গেল অভির দিকে।
কিছু পরে মৃগাঙ্ক এসে অভিকে ওদের সাথে যেতে বলল। মৃগাঙ্কর বাড়ি দিদার বাড়ির কাছেই। অভি উত্তরে জানাল যে ও জামা কাপড় বদলে ওদের সাথে ওদের বাড়ি যাবে।
বাড়ি ঢোকা মাত্রই মা জিজ্ঞেস করলেন যে ওর শালটার কি হল। অভি জানিয়ে দিল যে রাতে পরীর খুব ঠাণ্ডা লাগছিল তাই ওর শাল পরী নিয়ে নিয়েছে। মা ওর কথা শুনে খুশি হয়ে বললেন যে ভাল কাজ করেছিস। বাথরুমে ঢুকতে যাবে অভি, ঠিক এমন সময়ে পরী এসে মাকে জড়িয়ে ধরল। মায়ের কাঁধের পাশ থেকে অভির দিকে দুষ্টু মিষ্টি হেসে মায়ের গালে চুমু খেল। মা পরীকে এক মৃদু বকুনি দিয়ে বলল রাতের জামাকাপড় বদলে নিতে।
পরী মাকে জিজ্ঞেস করল যে মা ওর মায়ের সাথে কথা বলেছেন কি না। মা উত্তর দিলেন যে রাতের বেলা সবকিছু মিটে যাবার পরে তিনি দিদার সাথে পরীর ব্যাপারে কথা বলবেন।
পরী আদর করে মায়ের গালে চুমু খেয়ে বলল, "তুমি আমার খুব ভাল দিদি। আজ থেকে আমি তোমাকে ছোটমা বলে ডাকব।"
মা ওর গালে আদর করে বলল, "তুই মা, চিরকাল আমার চোখের মনি ছিলিস। কতদিন তোকে দেখিনি। আয় কাছে বস, তোকে দুচোখ ভরে একবার দেখি।"
অভি, বাথরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে মা মেয়ের আদর দেখতে থাকে। মা ওর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, "কিরে কি দেখছিস? চুপিচুপি মা মেয়ের কথা শুনছিস?"
পরী মায়ের কোলে মাথা রেখে বিছানায় শুয়ে পড়ল। মা ওর চুলে বিলি কাটতে থাকে আর ছোট্ট বিড়ালের মতন পরী মায়ের আদর খেতে থাকে।
মা মেয়ের অতিরিক্ত প্রেম আর সহ্য হল না অভির। জামা কাপড় বদলানর জন্য বাথরুমে ঢুকে গেল। বেশ খানিকক্ষণ পরে বাথরুম থেকে বেড়িয়ে দেখে, পরী মায়ের কোলে মাথা গুঁজে কাঁদছে আর মায়ের চোখেও জল। অভি মাকে জিজ্ঞেস করল যে কি হয়েছে। মা কিছু উত্তর দিলেন না, শুধু বললেন চলে যেতে।
ঠিক সেই সময়ে বাইরে থেকে মৃগাঙ্কর ডাক শুনে অভি ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল। ঘরের মধ্যে ক্রন্দন রত অভির ভালবাসার দুই প্রতিমা, এক মা এক পরী। মৃগাঙ্কর বাড়ির দিকে যেতে যেতে অভি ভাবতে চেষ্টা করে যে কি কারনে মা আর পরী কাঁদতে পারে। ওর মাথায় কোন কারন খুঁজে পেলে না। মৃগাঙ্ক জানাল যে কিছুক্ষণের মধ্যেই সুব্রতও ওদের সাথে ড্রিঙ্ক পার্টিতে যোগদান করবে।
মৃগাঙ্কর বাড়ি পৌঁছে অভি লক্ষ্য করল যে সুব্রত আগে থেকেই বাড়িতে উপস্থিত। তিন তলার ঘরে মদের আসর বসেছে, সমির বারটেন্ডার, সবাই কে গ্লাসে মদ ঢেলে দিচ্ছে। সমির, মৃগাঙ্কর সুব্রতর আর অভির মাঝে শুধু মাত্র সুব্রতর বিয়ে হয়েছিল, বাকিরা অবিবাহিত। হাসি ঠাট্টা মজা মিলিয়ে মদ্য পান চলতে লাগল। সমির বেশ পটু হাতে গ্লাস ধরিয়ে দিচ্ছে ওদের কে। সুরার নেশা সুব্রতর আর মৃগাঙ্কর রক্তে লেগে গেছে।
মদের ঝোঁকে মৃগাঙ্ক বলে ফেলল, "গুরু, আমি শুচিস্মিতাকে ভালবাসি।"
সুব্রত ওর কাধ চাপড়ে বলল, "বোকা... তুই ত একটা মস্ত গাধা। এতদিন চুপ করে ছিলিস।"
কথা শুনে অভির মনে হল যেন কেউ ওর কানের ওপরে গরম সিসে ঢেলে দিয়েছে। গ্লাসে চুমুক দিতে ভুলে গেল, এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মৃগাঙ্কর দিকে, "শালা বলে কি?"
মৃগাঙ্ক সুব্রতকে বলল, "তোর বড়দার ভয়ে ত আমি কিছু বলতেই পারিনি।"
সুব্রত, "বড়দা আমাদের বাবার মতন। বড়দা যতই রাগি হক না কেন, একদম নারকেল আমার বড়দা। ওপরটা শক্ত কিন্তু ভেতরটা একদম নরম আর জলে ভর্তি।"
মৃগাঙ্ক, "ঠিক আছে তাই হবে। আমি তাহলে তোর বড়দার সাথে কথা বলব।"
মৃগাঙ্কর কথা শুনে অভির মনে হল যেন টেনে এক চড় কসিয়ে দেয় মৃগাঙ্কের গালের ওপরে, "শালার কিনা আমার প্রেমিকার ওপরে নজর?" কোন রকমে নিজেকে সামলে নিয়ে, এক ঢোকে পুর গ্লাসটা গোলায় ঢেলে দেয়। রক্তের সাথে মদ মিশে গিয়ে মাথা ঝিনঝিন করে ওঠে।
সুব্রত অভির দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বলে, "এই ছেলে, এই অভিমন্যু। কিছু বল..."
ধুক করে ওঠে অভির বুক। হাতের সামনে ছিল রামের বোতল, একটানে ছিপি খুলে নিয়ে কিছুটা গোলায় ঢেলে নিল। দাতে দাঁত পিষে জিজ্ঞেস করল, "আমার কি বলার আছে?"
সুব্রত ওর দিকে হেসে উত্তর দিল, "যা কিছু। তোমার কথা, তোমার গার্লফ্রেন্ডের কথা।"
ওর কথা শুনে যেন অভির প্রানে বাতাস এল, "যাক সুব্রত আমাদের সম্পর্কের কথা কিছু জানে না।"
হেসে জবাব দিল অভি, "না আমার কোন গার্লফ্রেন্ড নেই। কলেজের সবাই খালি বই পড়া মাগি।"
ওই কথা শুনে সবাই হেসে ফেলে।
মৃগাঙ্ক নাছরবান্দা, "ভাই সুব্রত, আমি শুচিস্মিতাকে বিয়ে করব।"
ওর কথা শুনে সুব্রত বলল, "সে গুড়ে বালি। পরীর মাথায় নিশ্চয় কিছু একটা চলছে আর সেই জন্য"
অভির দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বলল, "ওর মা, আমাদের উলুপিদি আমার বিয়েতে এখানে এসেছেন। আমি খুব ভাল ভাবে বুঝতে পারছি যে আজ কালের মধ্যে এক বিশাল ঝড় আসবে বাড়িতে। আর সেই ঝড়ে অনেক কিছু বদলে যাবে। আমার ছোটবেলার কথা বিশেষ কিছু মনে নেই তবে মায়ের মুখে শুনেছি যে উলুপিদি আমাদের সংসার টাকে নিজের সংসারের মতন করে ভালবাসতেন, বিশেষ করে পরীকে। বাবা মারা যাওয়ার পরে উলুপিদি আমাদের সংসারটাকে টেনে ছিলেন। আমরা সবাই তখন খুব ছোটো। আমাদের ভাত কাপড়ের যোগাড় তিনি করেছিলেন সেই সময়ে। অনেক জল গড়িয়ে গেছে, অনেক দিন কেটে গেছে। আমাদের মধ্যে নিশ্চয় কিছু একটা ঘটে ছিল যার জন্য আজ পর্যন্ত উলুপিদি আমাদের বাড়িতে আর পা রাখেননি। আমি হলফ করে বলতে পারি যে উনি যখন এ বাড়িতে পা রেখেছেন তখন বিশাল কিছু একটা ঘটতে চলেছে।"
অভির মাথা থেকে মদের ঘোর কেটে গেল। কথা বলার মধ্যে সুব্রত গ্লাস নিচে রেখে দিয়েছে। দু’চোখ লাল, কিঞ্চিত জলে টলটল করছে চোখ। সামির দেখল পরিবেশ বেশ সঙ্গিন হয়ে উঠছে। একথা সেকথা বলে পরিবেশটাকে একটু হালকা করতে চেষ্টা করল সমির। কিন্তু সুব্রত থামতে নারাজ, ওর রক্তে যেন আগুন লেগেছে।