24-06-2020, 09:53 AM
## ১৯
মোবারকের শরীর ভালোনা কয়েকদিন ধরে। বাসায় পরে আছে। তার গায়ে ছেড়ে ছেড়ে দিয়ে জ্বর আসে। প্রচন্ড শীতে কাবু হয়ে গেছে একেবারে। শরীরের গিড়ায় গিড়ায় তার ব্যাথা করে। উঠে ডাক্তার এর কাছে যাবে সেটাও পারেনা। ৪- ৫ ওভাবেই বিছানায় পরে আছে। ভাবি ফিরেও তাকায় না। রান্না করে ফেলে রাখে। মোবারক উঠতে পারলে খায় তা নাহলে না খেয়ে থাকে। তাছাড়া প্রচন্ড জ্বরে মুখের রুচি চলে গেছে। ৪ দিনে শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে একেবারে। ৩ দিন আগে হরতন তা এসেছিল। ফার্মেসী থেকে কয়েকটা ট্যাবলেট কিনে দিয়ে গিয়েছিলেন, সাধারন জ্বর হয়েছে, চলে যাবে বলে সান্তনা দিয়েছিলেন। মোবারকের কাপুনির শব্দে বিল্ডিং কেপে যাবে অবস্থা। কিন্তু ভাবির সান্তনা দিবার কোন ইচ্ছা নেই, গা মুছে দিবে, মাথায় একটু জল দিবে তো দুরের কথা। আজ সকালে হরতন বাবু এসেছেন খোজ নিতে সাথে দুধ দিয়ে যেতে। কিন্তু তাকে দেখে বিচলিত হয়ে গেলেন। মোবারকের মৃতপ্রায় শরীর দেখে বলে উঠলেন হায় ভগবান আমি তো মনে করেছিলাম সাধারন জ্বর হবে, আপনার অবস্থা দেখে তো মনে হচ্ছেনা সাধারন। একেবারে যে কাহিল হয়ে গিয়েছেন। ডাক্তার এর কাছে গিয়েছিলেন দাদা? খাওয়া দাওয়া তো মনে হচ্ছে একদমি হচ্ছেনা। এ তো বড় দুশ্চিন্তার কথা। বৌদি কি বলে? ও বৌদি দাদা যে একেবারে পোতায়া যাচ্ছে, খেয়াল টেয়াল কি নিচ্ছনা? বৌদির মুখে কোন শব্দ নেই। হরতন দা বুঝতে পারলেন। বললেন, মান অভিমানে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিওনা। পরে সে অভিমান আজিবনের জালায় পরিনত হবে। আমার বৌ ছেলে পুলে আমার উপর অভিমান করে চলে গেছে। বুঝবে মরে গেলে। থাকতে মানুষ বুঝেনা, গেলে মানুষ দিশেহারা।*
– মোবারক দা?
• হুম?
• একেবারে ভেঙ্গে পড়েছেন? ডাক্তারের কাছে কি গিয়েছিলেন? যা অবস্থা দেখছি তাতে তো মনে হচ্ছে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।
• সেরে যাবে। আবার হাসপাতালের ভেজাল ভালো করতে যাবে কে। একেবারে পাতালে চলে গেলেই ভালো হয় দাদা। মাগিগুলার থিকা বাচতাম।
• আহা ওসব কথা বাদ দিন তো, আগে শরীর তারপর দুনিয়া। আপনাকে আজি ভর্তি করাতে হবে। আমি নিজে নিয়ে যাবো চিন্তা করবেন না। ও বৌদি গুছিয়ে নাও।
• দাদা ওকে ডাকা দরকার নেই, সারা রাত জ্বরে কেপেছি, বিড় বিড় করে তাকে কত ডেকেছি। এই ৪ দিনে মাগি একবারের জন্যেও কাছে আসেনাই। আমার মনে হয় ঐ পিশাচিনিরে দেখতে দেখতে আমি আরো অসুস্থ হইয়া গেছি। হাসপাতালে আপনি নিয়া চলেন। ওর যাওয়া লাগব না।
• তোমরা না বাবু কি শুরু করে দিয়েছ। সংসার ঝামেলা হবে ঠিক আছে। তাই বলে একেবারে জীবন মরনের প্রান্তে এসে ঝামেলা করবে? শুনো মোবারক দা মেয়ে মানুষ বড়ই অবুঝ। তাদের উপর এতো রাগ দেখিয়ে নিজের ক্ষতি করবেন না। এরা বেবুজ বলে নিজ থেকে ক্ষমা করে দিবেন। দেখেন না আমার বৌ এর উপরে আমার কোন অভিযোগ নেই কারো কাছে। আমি জানি সে আমাকে বড় ভালোবাসে, দূরে থাকছে কতোটা বছর। তারপরেও সেটা অভিমানের সুখ ভেবে ক্ষমা করে দিই। দাদা উঠে পরুন, গায়ে জল দিয়ে জামা কাপড় বদলিয়ে চলুন। আমি আছি চিন্তা করবেন না।
হরতন দা মোবারককে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিলো। ভাবি হরতন দার সাথে এসেছিল। দিনে দুবার এসে খাবার দিয়ে চলে যায়। হরতন দা প্রায় সময়ে অসময়ে বহুবার ঢু দিয়ে যায়। সুলেখাও একবার এসেছিল। ভালো করে রেধে এনেছে অনেক কিছু। ডাক্তার বলেছে টাইফয়েড হয়েছে। অবহেলা করলে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে। কয়েকদিন হাসপাতালে রাখতে হবে। এর মধ্যে হরতন দা জাহিদের অফিসের ফোন দিয়ে জানিয়েছে। শুক্রবার সকালে দেখতে আসবে বলেছে। হাসপাতালের অবস্থা দেখে মোবারক আরো অসুস্থ। বাথরুমের দরজা যেকোনো মুহূর্তে খুলে পরে যাবে। এক এক কেবিন ১০-১৫ জন মানুষ। এর মধ্যে নারী পুরুষের সমাহার। সারা রাত ঘুমাতে পারেনা এদের জালায়। মেঝেতে আবার এদের অভিভাবকরা বিছানা করে শুয়ে থাকে। মধ্য রাত পর্যন্ত তাদের পারিবারিক আলাপের জালায় থাকা যায়না। কার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন কোন পুরুষের সাথে, পুরুষ দেখতে কেমন? বোবা না কানা সব উদ্ভট কথা বার্তা। জামাই প্রশংসায় তারা পঞ্চমুখ। কোন পুরুষের মুখে পুত্রবধু প্রশংসায় পঞ্চমুখ পাওয়া খুবি দুস্কর। মহিলাদের জীবনে পুরুষ ছাড়া আর কোন শব্দ নেই। তারা শান্তি পুরুষ, তাদের অশান্তিও পুরুষ। ভালবাসা দিলে তারা ভালোবাসার বীপরিতে ভালোবাসা নামক গাছের কিছু ফল দাবি উথাপন করে বসবে, যেমন তার টাকা লাগবে। তার শাড়ি গহনা যথেষ্ট থাকলেও বলবে কিনে দিতে হবে আবারো। সামনের ঈদ এ তাকে এতো টাকা দামের শাড়ি দিতে হবে। কিন্তু কোন পুরুষ ভালোবাসার বিনিময়ে বলেনা ওগো বউ আমাকে একটা লুঙ্গি কিনে দিও। স্ত্রিরা যদি চাকরি করে তাও বলবেনা যে কিছু কিনে দেও।
আজ একদমি অফিসে মন বসতেছেনা জাহিদের। কাজ নেই। সকাল থেকে আজাইরা বসে আছে। মাসের প্রথম ১০ দিন ও শেষ ১০ দিন কিছুটা চাপ থাকলেও মাঝখানের দিনগুলো বসে বসে হাওয়া খেয়ে পার করেন। একবার চিন্তা করলো নারায়গঞ্জে চলে যাই, মোবারককে দেখে আসি। অফি্সের সামনে চায়ের দোকানে চা খেতে লাগলো। কিছুক্ষন আকাশের দিকে তাকিয়ে সিগারেট টেনে পরিবেশ দুষিত করলো। পকেট থেকে টাকা দিতেই অন্তরার দেয়া ঠিকানাটা নজরে আসলো। সেই যে দিয়েছে ঢাকায় এসে একবারো মনে হয়নাই অন্তরা নামে কোন মেয়ে আমাকে ঠিকানা দিয়েছে। ওর বাসা থেকেও ঘুরে আসা যায়। ওই এলাকায় যদি থাকার বাসা পাওয়া যায়।
মহাখালি হয়ে নাবিস্কো চলে গেলো জাহিদ। ঠিকানায় বাসা পাওয়া খুবি মুশকিল। অবশেষে পেলো। একটা ৩ তলার মত বিল্ডিং, তার আসে পাশে বস্তি দিয়ে ঘেরা। দেখতে ভুতুরে অবস্থা। বিল্ডিঙের ঢুকে কোন বাসায় ঢুকবো বুঝতেছেনা। অন্তরা ঠিকানা দিয়েছে ঠিকি কিন্তু কত তলা আর কন পাশের ফ্লাটে থাকে এটা বলেনি। বিসমিল্লাহ বলে নিচ থেকেই শুরু করে দিল খোজা, প্রথম নক করা বাসা থেকে জানা গেলো সে থাকে তিন তলায় দিখিনের ফ্লাটে। বিল্ডিঙ্গের বাহিরের দিকটা দেখতে মন্দ হলেও ভিতরটা বেশ পরিষ্কার। সিড়িগুলো সুন্দর করে পাকা করে। রুমের অবস্থা কেমন কে জানে। ঢাকা শহর তো সব চিপা চাপার এলাকার। যেখানেই যাই রাস্তা নেই, ড্রেইনের পাশ ধরে হাটা লাগে। পারলে ড্রেইনের মাঝ দিয়েও মানুষ চলে যদি এক সাথে দুজন মানুষ হাট চলা করে।
নারায়নগঞ্জের একদিক খোলা মেলা সেখানে কোন মানুষ থাকেনা। আরেক দিকে মানুষের হাট, পা রাখা বড় দায়। দরজায় কড়া নারলাম
• আরে জাহিদ তুই? আমি তো মনে করছিলাম আবিনা? এসে পড়লি তাহলে? আয় আয় ভিতরে আয়। একাই এসেছিস?
• কেন সাথে কি আর কেও আসার কথা নাকি? আমি তো একলা মানুষ। একেলা বৈরাগি। বৈরাগিনির সন্ধানে আছি।
• নাহ মনে করলাম যদি আবার বৌ নিয়ে আসিছ। তোরা তো খোজ খবর না দিয়া বিয়া করিছ, দেখ আমি বিয়া করছি সবাইরে জানাইসি। কিন্তু সাফায়েত, শাহাদাত ওরা বিয়ে করলো আমাকে এক্তাবারের জন্যে জানাইলোনা।
• হুম তোর বিয়েতে সবাই এসেছে ঠিক শুধু হরিপদ স্যার ছাড়া। আর তুই তো বিয়ে কইরা জামাই সেবা করার জন্যে ঢাকায় চলে এলি। তোরে পাবে কই?
• দ্যাখ মশকরা করবিনা। চাইলে সবি হয়, এর জন্যে মনের টান লাগে বুঝলি।
মোবারকের শরীর ভালোনা কয়েকদিন ধরে। বাসায় পরে আছে। তার গায়ে ছেড়ে ছেড়ে দিয়ে জ্বর আসে। প্রচন্ড শীতে কাবু হয়ে গেছে একেবারে। শরীরের গিড়ায় গিড়ায় তার ব্যাথা করে। উঠে ডাক্তার এর কাছে যাবে সেটাও পারেনা। ৪- ৫ ওভাবেই বিছানায় পরে আছে। ভাবি ফিরেও তাকায় না। রান্না করে ফেলে রাখে। মোবারক উঠতে পারলে খায় তা নাহলে না খেয়ে থাকে। তাছাড়া প্রচন্ড জ্বরে মুখের রুচি চলে গেছে। ৪ দিনে শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে একেবারে। ৩ দিন আগে হরতন তা এসেছিল। ফার্মেসী থেকে কয়েকটা ট্যাবলেট কিনে দিয়ে গিয়েছিলেন, সাধারন জ্বর হয়েছে, চলে যাবে বলে সান্তনা দিয়েছিলেন। মোবারকের কাপুনির শব্দে বিল্ডিং কেপে যাবে অবস্থা। কিন্তু ভাবির সান্তনা দিবার কোন ইচ্ছা নেই, গা মুছে দিবে, মাথায় একটু জল দিবে তো দুরের কথা। আজ সকালে হরতন বাবু এসেছেন খোজ নিতে সাথে দুধ দিয়ে যেতে। কিন্তু তাকে দেখে বিচলিত হয়ে গেলেন। মোবারকের মৃতপ্রায় শরীর দেখে বলে উঠলেন হায় ভগবান আমি তো মনে করেছিলাম সাধারন জ্বর হবে, আপনার অবস্থা দেখে তো মনে হচ্ছেনা সাধারন। একেবারে যে কাহিল হয়ে গিয়েছেন। ডাক্তার এর কাছে গিয়েছিলেন দাদা? খাওয়া দাওয়া তো মনে হচ্ছে একদমি হচ্ছেনা। এ তো বড় দুশ্চিন্তার কথা। বৌদি কি বলে? ও বৌদি দাদা যে একেবারে পোতায়া যাচ্ছে, খেয়াল টেয়াল কি নিচ্ছনা? বৌদির মুখে কোন শব্দ নেই। হরতন দা বুঝতে পারলেন। বললেন, মান অভিমানে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিওনা। পরে সে অভিমান আজিবনের জালায় পরিনত হবে। আমার বৌ ছেলে পুলে আমার উপর অভিমান করে চলে গেছে। বুঝবে মরে গেলে। থাকতে মানুষ বুঝেনা, গেলে মানুষ দিশেহারা।*
– মোবারক দা?
• হুম?
• একেবারে ভেঙ্গে পড়েছেন? ডাক্তারের কাছে কি গিয়েছিলেন? যা অবস্থা দেখছি তাতে তো মনে হচ্ছে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।
• সেরে যাবে। আবার হাসপাতালের ভেজাল ভালো করতে যাবে কে। একেবারে পাতালে চলে গেলেই ভালো হয় দাদা। মাগিগুলার থিকা বাচতাম।
• আহা ওসব কথা বাদ দিন তো, আগে শরীর তারপর দুনিয়া। আপনাকে আজি ভর্তি করাতে হবে। আমি নিজে নিয়ে যাবো চিন্তা করবেন না। ও বৌদি গুছিয়ে নাও।
• দাদা ওকে ডাকা দরকার নেই, সারা রাত জ্বরে কেপেছি, বিড় বিড় করে তাকে কত ডেকেছি। এই ৪ দিনে মাগি একবারের জন্যেও কাছে আসেনাই। আমার মনে হয় ঐ পিশাচিনিরে দেখতে দেখতে আমি আরো অসুস্থ হইয়া গেছি। হাসপাতালে আপনি নিয়া চলেন। ওর যাওয়া লাগব না।
• তোমরা না বাবু কি শুরু করে দিয়েছ। সংসার ঝামেলা হবে ঠিক আছে। তাই বলে একেবারে জীবন মরনের প্রান্তে এসে ঝামেলা করবে? শুনো মোবারক দা মেয়ে মানুষ বড়ই অবুঝ। তাদের উপর এতো রাগ দেখিয়ে নিজের ক্ষতি করবেন না। এরা বেবুজ বলে নিজ থেকে ক্ষমা করে দিবেন। দেখেন না আমার বৌ এর উপরে আমার কোন অভিযোগ নেই কারো কাছে। আমি জানি সে আমাকে বড় ভালোবাসে, দূরে থাকছে কতোটা বছর। তারপরেও সেটা অভিমানের সুখ ভেবে ক্ষমা করে দিই। দাদা উঠে পরুন, গায়ে জল দিয়ে জামা কাপড় বদলিয়ে চলুন। আমি আছি চিন্তা করবেন না।
হরতন দা মোবারককে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিলো। ভাবি হরতন দার সাথে এসেছিল। দিনে দুবার এসে খাবার দিয়ে চলে যায়। হরতন দা প্রায় সময়ে অসময়ে বহুবার ঢু দিয়ে যায়। সুলেখাও একবার এসেছিল। ভালো করে রেধে এনেছে অনেক কিছু। ডাক্তার বলেছে টাইফয়েড হয়েছে। অবহেলা করলে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে। কয়েকদিন হাসপাতালে রাখতে হবে। এর মধ্যে হরতন দা জাহিদের অফিসের ফোন দিয়ে জানিয়েছে। শুক্রবার সকালে দেখতে আসবে বলেছে। হাসপাতালের অবস্থা দেখে মোবারক আরো অসুস্থ। বাথরুমের দরজা যেকোনো মুহূর্তে খুলে পরে যাবে। এক এক কেবিন ১০-১৫ জন মানুষ। এর মধ্যে নারী পুরুষের সমাহার। সারা রাত ঘুমাতে পারেনা এদের জালায়। মেঝেতে আবার এদের অভিভাবকরা বিছানা করে শুয়ে থাকে। মধ্য রাত পর্যন্ত তাদের পারিবারিক আলাপের জালায় থাকা যায়না। কার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন কোন পুরুষের সাথে, পুরুষ দেখতে কেমন? বোবা না কানা সব উদ্ভট কথা বার্তা। জামাই প্রশংসায় তারা পঞ্চমুখ। কোন পুরুষের মুখে পুত্রবধু প্রশংসায় পঞ্চমুখ পাওয়া খুবি দুস্কর। মহিলাদের জীবনে পুরুষ ছাড়া আর কোন শব্দ নেই। তারা শান্তি পুরুষ, তাদের অশান্তিও পুরুষ। ভালবাসা দিলে তারা ভালোবাসার বীপরিতে ভালোবাসা নামক গাছের কিছু ফল দাবি উথাপন করে বসবে, যেমন তার টাকা লাগবে। তার শাড়ি গহনা যথেষ্ট থাকলেও বলবে কিনে দিতে হবে আবারো। সামনের ঈদ এ তাকে এতো টাকা দামের শাড়ি দিতে হবে। কিন্তু কোন পুরুষ ভালোবাসার বিনিময়ে বলেনা ওগো বউ আমাকে একটা লুঙ্গি কিনে দিও। স্ত্রিরা যদি চাকরি করে তাও বলবেনা যে কিছু কিনে দেও।
আজ একদমি অফিসে মন বসতেছেনা জাহিদের। কাজ নেই। সকাল থেকে আজাইরা বসে আছে। মাসের প্রথম ১০ দিন ও শেষ ১০ দিন কিছুটা চাপ থাকলেও মাঝখানের দিনগুলো বসে বসে হাওয়া খেয়ে পার করেন। একবার চিন্তা করলো নারায়গঞ্জে চলে যাই, মোবারককে দেখে আসি। অফি্সের সামনে চায়ের দোকানে চা খেতে লাগলো। কিছুক্ষন আকাশের দিকে তাকিয়ে সিগারেট টেনে পরিবেশ দুষিত করলো। পকেট থেকে টাকা দিতেই অন্তরার দেয়া ঠিকানাটা নজরে আসলো। সেই যে দিয়েছে ঢাকায় এসে একবারো মনে হয়নাই অন্তরা নামে কোন মেয়ে আমাকে ঠিকানা দিয়েছে। ওর বাসা থেকেও ঘুরে আসা যায়। ওই এলাকায় যদি থাকার বাসা পাওয়া যায়।
মহাখালি হয়ে নাবিস্কো চলে গেলো জাহিদ। ঠিকানায় বাসা পাওয়া খুবি মুশকিল। অবশেষে পেলো। একটা ৩ তলার মত বিল্ডিং, তার আসে পাশে বস্তি দিয়ে ঘেরা। দেখতে ভুতুরে অবস্থা। বিল্ডিঙের ঢুকে কোন বাসায় ঢুকবো বুঝতেছেনা। অন্তরা ঠিকানা দিয়েছে ঠিকি কিন্তু কত তলা আর কন পাশের ফ্লাটে থাকে এটা বলেনি। বিসমিল্লাহ বলে নিচ থেকেই শুরু করে দিল খোজা, প্রথম নক করা বাসা থেকে জানা গেলো সে থাকে তিন তলায় দিখিনের ফ্লাটে। বিল্ডিঙ্গের বাহিরের দিকটা দেখতে মন্দ হলেও ভিতরটা বেশ পরিষ্কার। সিড়িগুলো সুন্দর করে পাকা করে। রুমের অবস্থা কেমন কে জানে। ঢাকা শহর তো সব চিপা চাপার এলাকার। যেখানেই যাই রাস্তা নেই, ড্রেইনের পাশ ধরে হাটা লাগে। পারলে ড্রেইনের মাঝ দিয়েও মানুষ চলে যদি এক সাথে দুজন মানুষ হাট চলা করে।
নারায়নগঞ্জের একদিক খোলা মেলা সেখানে কোন মানুষ থাকেনা। আরেক দিকে মানুষের হাট, পা রাখা বড় দায়। দরজায় কড়া নারলাম
• আরে জাহিদ তুই? আমি তো মনে করছিলাম আবিনা? এসে পড়লি তাহলে? আয় আয় ভিতরে আয়। একাই এসেছিস?
• কেন সাথে কি আর কেও আসার কথা নাকি? আমি তো একলা মানুষ। একেলা বৈরাগি। বৈরাগিনির সন্ধানে আছি।
• নাহ মনে করলাম যদি আবার বৌ নিয়ে আসিছ। তোরা তো খোজ খবর না দিয়া বিয়া করিছ, দেখ আমি বিয়া করছি সবাইরে জানাইসি। কিন্তু সাফায়েত, শাহাদাত ওরা বিয়ে করলো আমাকে এক্তাবারের জন্যে জানাইলোনা।
• হুম তোর বিয়েতে সবাই এসেছে ঠিক শুধু হরিপদ স্যার ছাড়া। আর তুই তো বিয়ে কইরা জামাই সেবা করার জন্যে ঢাকায় চলে এলি। তোরে পাবে কই?
• দ্যাখ মশকরা করবিনা। চাইলে সবি হয়, এর জন্যে মনের টান লাগে বুঝলি।
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!