23-06-2020, 05:23 PM
## ১৪
সৌমিন বাবু বললেন দেখ জাহিদ দা, তুমার চাকরীটা হচ্ছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে। সহকারি একাউন্টেন্ট। বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয়ে থেকে আমি সব কথা পাকা করে ফেলেছি। তুমি আজি একটা বায়ো ডাটা করে এনে আমাকে দিবে, আমি সেটা জমা দিয়ে পরের দিন ডাকযোগে তোমার স্থায়ী ঠিকানায় জয়েন লেটার পাঠিয়ে দিবো। এ নিয়ে কোন টেনশন নিওনা। আর সুখবর যে তুমার পোস্টিং ঢাকায় হচ্ছে। আগামি ৩ দিনের মধ্যে যাবতীর কাজ শেষ করে ফেলো। পাড়লে আমার অফিসে একবার যেয়ো। ৫-৬ দিনের মধ্যেই জয়েন করবে আশা রাখি। ঢাকায় তো কাওকে চিননা। তুমি আমার ঢাকার বাসায় উইঠো নাখাল পাড়ায়। কিছুদিন থেকে নাহয় নতুন বাসা খুজে নিবা। আমি বললাম দাদা আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো বুঝতে পারছিনা। আমি ডিসিশন নিয়ে নিছিলাম এই সপ্তাহের মধ্যে গ্রামে চলে যাবো। আসলে মানুষের জীবনের কখন কোন পথে পরিবর্তন এসে যায় তা উপরওয়ালাই জানেন। আমি আপনার কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ। সৌমিন বাবু হো হো করে হেসে বলল হরতন বুড়োটাকে দেন। অনেকদিন ধরেই আমার কানের সামনে ঢোল পিটিয়ে বাতিল করে দিচ্ছিলো। আসলে সরকারি চাকরির ব্যপার। সার্কুলার না হলে তো আর ঢুকানো যায়না। সার্কুলারটা কয়েকদিন পরেই দিবে মন্ত্রলানয় থেকে। সার্কুলার আর কি কাজ হয়? নাম মাত্র। লোকজন থাকলে হয়ে যায়। যদিও সামরিক সরকার একটু প্যাচ তো থাকেই। তা এবার বিয়ে থা করেই ফেলুন। আর একা বসে থাকা নয়। সুলেখা আমার দিকে মাথা নিচু করে তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে আছে সৌমিন দার মুখে বিয়ের কথাটা শুনেই। আমি চুপ করেই রইলাম। হরতন দা চিল্লিয়ে বলে উঠলো আরে আমি যদি '. হতাম তাহলে আজি পাত্রি খুজে এনে বিয়ে পরিয়ে দিতাম। ২৬-২৭ বছরের ছেলে। বিয়ের বয়স হয়ে গেছে আর কতদিন বসে থাকবে। তবে যাই হোক মেয়ে আমি খুজে আনবই '.ের ঘর থেকেই, তখন কিন্তু এই বুড়োটাকে তুমার বউকে দিয়ে রান্না বারা করে খাওয়াতে হবে। আমি তাদের কথা একমনে শুনে যাচ্ছি। সুলেখা বলে উঠলো বিয়ে কি গ্রামেই করবেন? নাকি এখানেই? এখানে হলে কিন্তু আমাদের বাড়িতে রেখেই করাবো। বেশখানিক্ষন তাদের সাথে সময় বিনিময় করলাম। বিকেলের দিকে সবাই বিদেয় নিলো আমিও নিলাম। সুলেখা এসে বলল চলে যাচ্ছেন? বাসায় যেয়ে কি করবেন, বিয়ে করলে তো সারাদিন বাসায় থাকবেন বঊকে নিয়ে, তখোন তো আমাদের মনে পরবেনা। থেকেই যান না আরো কিছুক্ষন। আমি বললাম বাড়ির ভিতরে ভালো লাগছেনা। বাহিরের খোলা আকাশের নিচে একটু হাটা হাটি করে বাসায় যাবো। কোথায় যাবেন? আমি কি সাথে আসতে পারি? আমি বললাম অবশ্যই আসতে পারেন, তবে এই চিপা গলির ভিতর তো আর হাটা হাটি করতে পারবেন না। আমি হয়তো কিছুটা দূরে নদীর ধারে যাবো। সুলেখাও সাথে যেতে চাইলো ।
দুজনে শীতলক্ষ্যার তীরে হাটতেছি। সুলেখা বলল জায়গাটা অনেক সুন্দর লাগছে আজ তাইনা? আমি বললাম হ্যা ঠিক বলেছো। একজন পুরুষ সাথে থাকলে সব কিছুই স্বর্গীয় সুন্দর লাগে। ও* আচ্ছা তাই?* আর মেয়েরা থাকলে কি সুন্দর লাগেনা? খোচাটা কি একদিকেই দিলেন? –নারী থাকলে অনেক সুন্দর লাগে কিন্তু সে সুন্দরের মধ্যে অনেক ভয় থাকে। সেই সুন্দরতা বেশীক্ষণ থাকেনা, কিছু সময় পর নারী সৌন্দর্যকে নষ্ট করে সাথে তাকেও নষ্ট করে ফেলে।
• কথা কিন্তু একদমই ঠিক না জাহিদ ভাই, হয়তো আপনার জীবনে একটা ঘটনা ছিল তাই আপনি নারীর প্রতি দোষ টানছেন।
• নাহ, সে কারনে নয়। আখির প্রতি আমার ভালোবাসা অনেক ছিল। তখোন খেলার সাথী বলো আর যেই সাথী বল আমার বয়স তো তেমন ছিলনা। অনেকটা মায়া জড়িত ভালবাসা ছিল তার প্রতি। আর সে তো আমাকে ইচ্ছে করে কষ্ট দেয়নি, তার প্রতি আমার কোন ক্ষোভ নেই। সে অনেক আগের কথা ওখানে নাহয় নাই গেলাম।
• তাহলে? তাহলে কেন বলছেন যে নারী সৌন্দরযকে গড়ে আবার নষ্ট করে।
• আসলে দোষটা নারীকে দিবনা, বিধাতা নারীকে সৃষ্টি করেছেন আবেগ দিয়ে। সুন্দরতা দিয়ে। পুরুষ তাকে দেখে প্রেমে পড়বে, ভালোবাসতে চাবে। কাছে টানতে চাবে। একজন নারীকে আপন করে নেয়ার মুহুরতে সে তার চারিদিকে অপার সৌন্দর্য, স্বর্গীয় সুখ সপ্ন দেখতে পায়। কিন্তু একজন মেয়ে সেটা বেশিক্ষন ধরে রাখতে পারেনা। সামান্য জোয়ারে তা ভেসে যায় স্রোতের টানে। লড়াই করার চেষ্টা করেনা। সে নিজেকে মারে সাথে অন্যকে।
• হুম, আসলে আপনারা বুঝবেন না। আমরা কতোটা অসহায়। সমাজের যে প্রান্তেই যান একজন পুরুষ দাড়াতে পারবে। একজন মেয়ে কি পাড়বে? তাকে বেশ্যা বলে গায়ে হাত দিতে চাইবে। যাই হোক আপনার কেমন মেয়ে পছন্দ সেটা বলুন।
• আচ্ছা সেই দুপুর থেকেই হরতন দা, তুমি আর সৌমিন দা কি শুরু করেছো বলোতো। আমি কি একবারো বলেছি যে আমার যৌবন রসাতলে চলে যাচ্ছে।
• হি হি হি, রাগ করে ফেললেন নাকি বাবু। আপন করে নিয়েছি আমরা তাই অধিকার দেখাই। বলুন বলুন। আমি পাত্রি দেখবো। আমার অনেক বান্ধবি আছে অবিবাহিত। কলেজে তো আমার এক বান্ধবীর জন্যে এক ছেলে পারেনা সারাদিন শুয়ে থাকবে রাস্তার মাঝে, শুধু একবার দেখার জন্যে। কি তাকে দেখবেন?
• অবশ্যই দেখবো। যে ছেলে এমন এক সুন্দরি নারীর জন্যে রাস্তায় শুয়ে থাকে তাকে দেখার ও বিয়ে করার সৌভাগ্য যদি হয়। সে কি আমাকে পছন্দ করবে? আমার মত একজন ভবঘুরে ছেলেকে
• কেন করবেনা? অবশ্যি করবে। আপনি সুদরশন ছেলে। তবে জামা কাপর এত ঢোলা না পরলে আরো সুদর্শন লাগবে। আমি তাকে আজ-ই খবর দিবো হি হি হি……।। চলুন ওখানটায় বসি। পা ব্যথা করছে
সুলেখা তুমি অনেক সুন্দরি। তুমাকে দাদা বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেনা কেন? সুলেখা বলল আমি তো আপনাকে বললাম। বাবা চেষ্টা করেছিলো এক '.ের ছেলের সাথে,পারেনি। আর * ছেলেদের সাথে তো আমার বিয়ে আরো আগে হবেনা। তাদের জাত চলে যাবে ব্যাপার আছে। আমি বললাম যদি ধরো কোন * ছেলের সাথে তুমার বিয়ে ঠিক হয় তখন? সুলেখা হেসে বলল, আমার এতে কোন আপত্তি নেই। আমি যখন রাস্তায় পড়েছিলাম কই কোন '. তো এগিয়ে আসলোনা। রাতে তারা আমার গায়ে হাত দিতে চেয়েছে। সেখান থেকে একজন * লোক আমাকে তুলে এনেছেন। বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন। এমনকি তার পরিবার এর জন্যে তাকে ছেড়ে দূরে চলে গেছেন। আমার তো কোন * বিদ্ধ্যেশ নেই। আমার কাছে সবাই মানুষ। বাবা আমাকে মানুষ ধর্ম শিখিয়েছেন। ভগমানের মধ্যে মানুষকে ভালোবাসা খুজতে বলেছেন। মানুষকে অবহেলা বা দূরে সরিয়ে দেয়া না। আমি আসলেই অনেক ভাগ্যবান, উনার মত একজন মানুষকে আপন করে পেয়েছি। সন্ধ্যে হয়ে এলো বলে, চলুন আগানো যাক।
দুজনে পাশা পাশি হেটে যাচ্ছি। আসলেই চারিদিকটা আমার কাছে অন্যরকম লাগছে। এ এক অন্যরকম ভালো লাগা অনুভুতি। জীবনের অনেকটা পথে হেটে এসেছি বহু কষ্ট যন্ত্রনা আর অবহেলার মধ্যে। আজ সকাল থেকে আমার মন ভালো। উপরওয়ালাকে আমি মাঝে মধ্যে ধিক্কার দিতাম। তাহলে উনি কি আমাকে একটি দিন উপহার দিলেন? স্বর্গের সুখের একটি দিন। সুলেখার সাথে যখন আমার দেখা হয় আমার ভিতরে জোয়ার বইতে থাকে। এক মায়াবী আকর্ষণ আমাকে ঘীরে রাখে। এক মায়াবী বন্ধনে কে জানি আমাকে আটকে ফেলতে চায়। যেখান থেকে আমি ছুটতে চাইলেও আমার মন তাতে বাধা দেয়। কিশোরে প্রেমে পড়েছিলাম। আজ এই ভরা যৌবনে এ কিসের মায়া বইয়ে দিচ্ছে। আমি কি তাহলে আবার ভালবাসায় নিজেকে জড়িয়ে নিচ্ছি। ভাবতে ভাবতে হঠাত এক নিজের মধ্যে কম্পন অনুভুতো হলো, সুলেখার একটি কোমল হাতের স্পর্শ থেকে বয়ে যাওয়া তড়িৎ আমার সারা দেহের প্রতিটি কোনায় শিহরিত করে দিচ্ছে। সে অন্যদিকে মুখ করে, মুখে তার সেই সুন্দরতম হাসি নিয়ে হেটে চলেছে। যদি এ পথের কোন শেষ না হতো, পথ অজানা* থাকতো!! এতোদিন অজানা পথে হেটে আমি ক্লান্ত, কিন্তু আজ কেন মনে প্রানে চাচ্ছি পথ যেন হারিয়ে ফেলি।
রিক্সা দিয়ে সুলেখাকে গলির মাথায় নামিয়ে দিলাম। আমি বললাম তাহলে এখন যাই। -আচ্ছা শুনুন। এখোন কি নিজেকে হালকা লাগছে?
– হুম, উরন্ত পাখির মতো
– ঢাকায় চলে গেলে আসবেন না?
– আসবো না কেন? আমাকে যে এখানকার কিছু মানুষ আত্মার আত্মীয় বানিয়ে ফেলেছে। আমাকে যে আসতেই হবে। আর কিছু না হোক অন্তত…
– অন্তত কি?
– আচ্ছা আমি এখন যাই। পরে একদিন কথা হবে। দোকান থেকে একটা সিগারেট কিনে বাসার দিকে হাটা দিলাম।
সৌমিন বাবু বললেন দেখ জাহিদ দা, তুমার চাকরীটা হচ্ছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে। সহকারি একাউন্টেন্ট। বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয়ে থেকে আমি সব কথা পাকা করে ফেলেছি। তুমি আজি একটা বায়ো ডাটা করে এনে আমাকে দিবে, আমি সেটা জমা দিয়ে পরের দিন ডাকযোগে তোমার স্থায়ী ঠিকানায় জয়েন লেটার পাঠিয়ে দিবো। এ নিয়ে কোন টেনশন নিওনা। আর সুখবর যে তুমার পোস্টিং ঢাকায় হচ্ছে। আগামি ৩ দিনের মধ্যে যাবতীর কাজ শেষ করে ফেলো। পাড়লে আমার অফিসে একবার যেয়ো। ৫-৬ দিনের মধ্যেই জয়েন করবে আশা রাখি। ঢাকায় তো কাওকে চিননা। তুমি আমার ঢাকার বাসায় উইঠো নাখাল পাড়ায়। কিছুদিন থেকে নাহয় নতুন বাসা খুজে নিবা। আমি বললাম দাদা আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো বুঝতে পারছিনা। আমি ডিসিশন নিয়ে নিছিলাম এই সপ্তাহের মধ্যে গ্রামে চলে যাবো। আসলে মানুষের জীবনের কখন কোন পথে পরিবর্তন এসে যায় তা উপরওয়ালাই জানেন। আমি আপনার কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ। সৌমিন বাবু হো হো করে হেসে বলল হরতন বুড়োটাকে দেন। অনেকদিন ধরেই আমার কানের সামনে ঢোল পিটিয়ে বাতিল করে দিচ্ছিলো। আসলে সরকারি চাকরির ব্যপার। সার্কুলার না হলে তো আর ঢুকানো যায়না। সার্কুলারটা কয়েকদিন পরেই দিবে মন্ত্রলানয় থেকে। সার্কুলার আর কি কাজ হয়? নাম মাত্র। লোকজন থাকলে হয়ে যায়। যদিও সামরিক সরকার একটু প্যাচ তো থাকেই। তা এবার বিয়ে থা করেই ফেলুন। আর একা বসে থাকা নয়। সুলেখা আমার দিকে মাথা নিচু করে তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে আছে সৌমিন দার মুখে বিয়ের কথাটা শুনেই। আমি চুপ করেই রইলাম। হরতন দা চিল্লিয়ে বলে উঠলো আরে আমি যদি '. হতাম তাহলে আজি পাত্রি খুজে এনে বিয়ে পরিয়ে দিতাম। ২৬-২৭ বছরের ছেলে। বিয়ের বয়স হয়ে গেছে আর কতদিন বসে থাকবে। তবে যাই হোক মেয়ে আমি খুজে আনবই '.ের ঘর থেকেই, তখন কিন্তু এই বুড়োটাকে তুমার বউকে দিয়ে রান্না বারা করে খাওয়াতে হবে। আমি তাদের কথা একমনে শুনে যাচ্ছি। সুলেখা বলে উঠলো বিয়ে কি গ্রামেই করবেন? নাকি এখানেই? এখানে হলে কিন্তু আমাদের বাড়িতে রেখেই করাবো। বেশখানিক্ষন তাদের সাথে সময় বিনিময় করলাম। বিকেলের দিকে সবাই বিদেয় নিলো আমিও নিলাম। সুলেখা এসে বলল চলে যাচ্ছেন? বাসায় যেয়ে কি করবেন, বিয়ে করলে তো সারাদিন বাসায় থাকবেন বঊকে নিয়ে, তখোন তো আমাদের মনে পরবেনা। থেকেই যান না আরো কিছুক্ষন। আমি বললাম বাড়ির ভিতরে ভালো লাগছেনা। বাহিরের খোলা আকাশের নিচে একটু হাটা হাটি করে বাসায় যাবো। কোথায় যাবেন? আমি কি সাথে আসতে পারি? আমি বললাম অবশ্যই আসতে পারেন, তবে এই চিপা গলির ভিতর তো আর হাটা হাটি করতে পারবেন না। আমি হয়তো কিছুটা দূরে নদীর ধারে যাবো। সুলেখাও সাথে যেতে চাইলো ।
দুজনে শীতলক্ষ্যার তীরে হাটতেছি। সুলেখা বলল জায়গাটা অনেক সুন্দর লাগছে আজ তাইনা? আমি বললাম হ্যা ঠিক বলেছো। একজন পুরুষ সাথে থাকলে সব কিছুই স্বর্গীয় সুন্দর লাগে। ও* আচ্ছা তাই?* আর মেয়েরা থাকলে কি সুন্দর লাগেনা? খোচাটা কি একদিকেই দিলেন? –নারী থাকলে অনেক সুন্দর লাগে কিন্তু সে সুন্দরের মধ্যে অনেক ভয় থাকে। সেই সুন্দরতা বেশীক্ষণ থাকেনা, কিছু সময় পর নারী সৌন্দর্যকে নষ্ট করে সাথে তাকেও নষ্ট করে ফেলে।
• কথা কিন্তু একদমই ঠিক না জাহিদ ভাই, হয়তো আপনার জীবনে একটা ঘটনা ছিল তাই আপনি নারীর প্রতি দোষ টানছেন।
• নাহ, সে কারনে নয়। আখির প্রতি আমার ভালোবাসা অনেক ছিল। তখোন খেলার সাথী বলো আর যেই সাথী বল আমার বয়স তো তেমন ছিলনা। অনেকটা মায়া জড়িত ভালবাসা ছিল তার প্রতি। আর সে তো আমাকে ইচ্ছে করে কষ্ট দেয়নি, তার প্রতি আমার কোন ক্ষোভ নেই। সে অনেক আগের কথা ওখানে নাহয় নাই গেলাম।
• তাহলে? তাহলে কেন বলছেন যে নারী সৌন্দরযকে গড়ে আবার নষ্ট করে।
• আসলে দোষটা নারীকে দিবনা, বিধাতা নারীকে সৃষ্টি করেছেন আবেগ দিয়ে। সুন্দরতা দিয়ে। পুরুষ তাকে দেখে প্রেমে পড়বে, ভালোবাসতে চাবে। কাছে টানতে চাবে। একজন নারীকে আপন করে নেয়ার মুহুরতে সে তার চারিদিকে অপার সৌন্দর্য, স্বর্গীয় সুখ সপ্ন দেখতে পায়। কিন্তু একজন মেয়ে সেটা বেশিক্ষন ধরে রাখতে পারেনা। সামান্য জোয়ারে তা ভেসে যায় স্রোতের টানে। লড়াই করার চেষ্টা করেনা। সে নিজেকে মারে সাথে অন্যকে।
• হুম, আসলে আপনারা বুঝবেন না। আমরা কতোটা অসহায়। সমাজের যে প্রান্তেই যান একজন পুরুষ দাড়াতে পারবে। একজন মেয়ে কি পাড়বে? তাকে বেশ্যা বলে গায়ে হাত দিতে চাইবে। যাই হোক আপনার কেমন মেয়ে পছন্দ সেটা বলুন।
• আচ্ছা সেই দুপুর থেকেই হরতন দা, তুমি আর সৌমিন দা কি শুরু করেছো বলোতো। আমি কি একবারো বলেছি যে আমার যৌবন রসাতলে চলে যাচ্ছে।
• হি হি হি, রাগ করে ফেললেন নাকি বাবু। আপন করে নিয়েছি আমরা তাই অধিকার দেখাই। বলুন বলুন। আমি পাত্রি দেখবো। আমার অনেক বান্ধবি আছে অবিবাহিত। কলেজে তো আমার এক বান্ধবীর জন্যে এক ছেলে পারেনা সারাদিন শুয়ে থাকবে রাস্তার মাঝে, শুধু একবার দেখার জন্যে। কি তাকে দেখবেন?
• অবশ্যই দেখবো। যে ছেলে এমন এক সুন্দরি নারীর জন্যে রাস্তায় শুয়ে থাকে তাকে দেখার ও বিয়ে করার সৌভাগ্য যদি হয়। সে কি আমাকে পছন্দ করবে? আমার মত একজন ভবঘুরে ছেলেকে
• কেন করবেনা? অবশ্যি করবে। আপনি সুদরশন ছেলে। তবে জামা কাপর এত ঢোলা না পরলে আরো সুদর্শন লাগবে। আমি তাকে আজ-ই খবর দিবো হি হি হি……।। চলুন ওখানটায় বসি। পা ব্যথা করছে
সুলেখা তুমি অনেক সুন্দরি। তুমাকে দাদা বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেনা কেন? সুলেখা বলল আমি তো আপনাকে বললাম। বাবা চেষ্টা করেছিলো এক '.ের ছেলের সাথে,পারেনি। আর * ছেলেদের সাথে তো আমার বিয়ে আরো আগে হবেনা। তাদের জাত চলে যাবে ব্যাপার আছে। আমি বললাম যদি ধরো কোন * ছেলের সাথে তুমার বিয়ে ঠিক হয় তখন? সুলেখা হেসে বলল, আমার এতে কোন আপত্তি নেই। আমি যখন রাস্তায় পড়েছিলাম কই কোন '. তো এগিয়ে আসলোনা। রাতে তারা আমার গায়ে হাত দিতে চেয়েছে। সেখান থেকে একজন * লোক আমাকে তুলে এনেছেন। বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন। এমনকি তার পরিবার এর জন্যে তাকে ছেড়ে দূরে চলে গেছেন। আমার তো কোন * বিদ্ধ্যেশ নেই। আমার কাছে সবাই মানুষ। বাবা আমাকে মানুষ ধর্ম শিখিয়েছেন। ভগমানের মধ্যে মানুষকে ভালোবাসা খুজতে বলেছেন। মানুষকে অবহেলা বা দূরে সরিয়ে দেয়া না। আমি আসলেই অনেক ভাগ্যবান, উনার মত একজন মানুষকে আপন করে পেয়েছি। সন্ধ্যে হয়ে এলো বলে, চলুন আগানো যাক।
দুজনে পাশা পাশি হেটে যাচ্ছি। আসলেই চারিদিকটা আমার কাছে অন্যরকম লাগছে। এ এক অন্যরকম ভালো লাগা অনুভুতি। জীবনের অনেকটা পথে হেটে এসেছি বহু কষ্ট যন্ত্রনা আর অবহেলার মধ্যে। আজ সকাল থেকে আমার মন ভালো। উপরওয়ালাকে আমি মাঝে মধ্যে ধিক্কার দিতাম। তাহলে উনি কি আমাকে একটি দিন উপহার দিলেন? স্বর্গের সুখের একটি দিন। সুলেখার সাথে যখন আমার দেখা হয় আমার ভিতরে জোয়ার বইতে থাকে। এক মায়াবী আকর্ষণ আমাকে ঘীরে রাখে। এক মায়াবী বন্ধনে কে জানি আমাকে আটকে ফেলতে চায়। যেখান থেকে আমি ছুটতে চাইলেও আমার মন তাতে বাধা দেয়। কিশোরে প্রেমে পড়েছিলাম। আজ এই ভরা যৌবনে এ কিসের মায়া বইয়ে দিচ্ছে। আমি কি তাহলে আবার ভালবাসায় নিজেকে জড়িয়ে নিচ্ছি। ভাবতে ভাবতে হঠাত এক নিজের মধ্যে কম্পন অনুভুতো হলো, সুলেখার একটি কোমল হাতের স্পর্শ থেকে বয়ে যাওয়া তড়িৎ আমার সারা দেহের প্রতিটি কোনায় শিহরিত করে দিচ্ছে। সে অন্যদিকে মুখ করে, মুখে তার সেই সুন্দরতম হাসি নিয়ে হেটে চলেছে। যদি এ পথের কোন শেষ না হতো, পথ অজানা* থাকতো!! এতোদিন অজানা পথে হেটে আমি ক্লান্ত, কিন্তু আজ কেন মনে প্রানে চাচ্ছি পথ যেন হারিয়ে ফেলি।
রিক্সা দিয়ে সুলেখাকে গলির মাথায় নামিয়ে দিলাম। আমি বললাম তাহলে এখন যাই। -আচ্ছা শুনুন। এখোন কি নিজেকে হালকা লাগছে?
– হুম, উরন্ত পাখির মতো
– ঢাকায় চলে গেলে আসবেন না?
– আসবো না কেন? আমাকে যে এখানকার কিছু মানুষ আত্মার আত্মীয় বানিয়ে ফেলেছে। আমাকে যে আসতেই হবে। আর কিছু না হোক অন্তত…
– অন্তত কি?
– আচ্ছা আমি এখন যাই। পরে একদিন কথা হবে। দোকান থেকে একটা সিগারেট কিনে বাসার দিকে হাটা দিলাম।
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!