19-06-2020, 04:58 PM
(This post was last modified: 19-06-2020, 05:52 PM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
ত্রয়োবিংশতি পর্ব
কটাদিন যেন ঝড় বয়ে গেল,দিনরাত সব একাকার।একবার আলিপুর আবার লেকভিউ কখনো যাদবপুর আর সল্টলেকের মধ্যে তাঁতির মাকুর মত যাওয়া আর আসা।ওপেন হার্ট অপারেশন করা হল।
গাড়ি নিয়ে একা আলিপুর কোর্টে গেলাম।মি চৌধুরি আমাকে নিয়ে তার চেম্বারে বসতে বলে চলে গেলেন।অতনুকে কোথাও নজরে পড়েনি।প্রায় ঘণ্টা খানেক পর চৌধুরী এসে বললেন,চলুন ম্যাডাম।তিন মিনিটের হাটা পথ নজরে পড়ল,অতনুকে জড়িয়ে ধরে নির্মলা সুন্দরী একটা বারান্দায় থেবড়ে বসে।আমি দোতলায় উঠে একটা ঘরে ঢুকলাম।জজ সাহেব বসে সামনে কাঠগড়া।সারি সারি বেঞ্চ পাতা।কয়েকজন কালো গাউন পরা উকিলের আনাগোনা।আমারই মত কিছু সাধারণ মহিলা পুরুষ বেঞ্চে বসে আছেন।চৌধুরীবাবুর কথামত আমিও বেঞ্চে বসলাম।চৌধুরীবাবু একজন উকিলের সঙ্গে নীচু গলায় কিসব আলাপ করছেন।মিনিট দশ পরেই আমার এবং অত্নুর নাম ধরে ডাকতে চৌধুরীবাবুর কথামত কাঠগড়ায় গিয়ে দাড়ালাম।অতনুও সেই কাঠগড়ায় উপস্থিত।গায়ে গায়ে ছোয়া লাগছে।আমি জজ সাহেবের দিকে তাকিয়ে ওর দিকে যাতে তাকাতে না হয়।জজ সাহেব জিজ্ঞেস করলেন,অতনু ব্যানার্জি আপনি স্বেচ্ছায় এখানে সই করেছেন?
অতনু বলল,হ্যা স্যার।
আমাকেও একই প্রশ্ন,আমিও বললাম,হ্যা স্যার।
জজ সাহেব কাগজে কিসব লিখে বললেন,মঞ্জূর।
চৌধুরীবাবু আমাকে নিয়ে গাড়ীতে তুলে দিলেন।গাড়ী স্টার্ট করতেই মোবাইল বাজে।কানে লাগাতে শুনতে পেলাম, এখনো হয়নি?
--এইমাত্র হল।
--তাহলে চলে এসো।
--শব্দ শুনতে পাচ্ছো না,আমি তো গাড়ীতেই।
উফস কি শান্তি।ভাবছিলাম কি হয় কি হয়।কাঠগড়ায় দাড়াতে দশ মিনিটের মধ্যে সব মিটে গেল।কাঠগড়ায় আমার পাশে ছেলে আর সামনে বেঞ্চে বসে মা নির্মলা সুন্দরী যেন আমাকে গিলে খাচ্ছিল।এরপর শনিবার যেতে হবে যাদবপুর।সেদিন দুজনে একসঙ্গে বেরিয়েছিলাম।এরই ফাকে নার্সিং হোম যাওয়া তো আছেই।শনিবার দুজনকে সই করতে হল।কয়েকজন লোক নিয়ে এসেছিলেন চৌধুরী বাবু।তারাও সই করল।তারপর আমাকে বলতে হল,অমুক অমুকের ছেলে মণিশঙ্করকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করলাম।মনও বলল,স্ত্রী হিসেবে গ্রহন করলাম।
রাতের খাওয়া শেষ হলে শুরু হল মনের পাগলামী।সারা বিছানা ফুলে ঢাকা দুটো মালা নিয়ে এসেছিল।ঘরে ডিম লাইট জ্বলছে।এই পরিবেশে আমিও কেমন নবোঢ়া বধূর মত লজ্জায় মনের দিকে তাকাতে পারছিলাম না।মন আমাকে উলঙ্গ করে দিয়ে নিজেও উলঙ্গ হল।তারপর একটা মালা আমার হাতে দিয়ে বলল,যে তোমার প্রিয় তাকে পরিয়ে দাও।আমি কম্পিত হাতে ওর গলায় মালা পরিয়ে দিলাম।মনও তার হাতের মালা আমার গলায় পরিয়ে দিল।আয়নায় প্রতিফলিত হয় দুটি নারী পুরুষ শরীরে একটি কার্পাসের টুকরো পর্যন্ত নেই।আমার মোটেই লজ্জা করছিল না।লজ্জা পেলাম তখন মন একটা বাক্স খুলে হীরের একটা নেকলেস বের করে আমার গলায় পরিয়ে দিল।এমন দিনে আমি কিছুই দিতে পারলাম না।চোখে জল এসে গেল।
মন জড়িয়ে ধরে বলল,কি হল মণি?
--তোমাকে কিছুই দিতে পারলাম না।
মন পাঁজাকোলা করে আমাকে তুলে বলল,সবই তো দিয়েছো আর কত দেবে?মাথা নীচু করে ঠোটের পরে ঠোট রাখে।
আমি গলা জড়িয়ে ধরি।
--কাল অপারেশন হয়ে যাক।তারপর আমাদের ফুলশয্যা--হনিমুন।চলো এবার ঘুমিয়ে পড়ি।
--এই ভাবে?
--কেন খারাপ লাগছে?
আমরা শুয়ে পড়লাম,সেদিন মন কিছু করবে না ভাবিনি।
সকাল-সকাল খেয়েদেয়ে দুজনে একসঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম।বাড়ী গিয়ে মাকে তুললাম ফাল্গুণীও উঠল।মন সামনে পিছনে মা আমি ফাল্গুণী।ভিজিটিং আউয়ারস নয় বাইরেই ঘোরঘুরি করতে হচ্ছে।ট্যাক্সি নিয়ে বড়দা বৌদি আর ছোড়দা এল।বড়দা ভিতরে গিয়ে খোজ নিয়ে এল বাবা অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেছে।বুকের মধ্যে ঢীপ ঢিপ করছে।সিনেমায় দেখেছি কিভাবে অপারেশন করে।রোগীর আত্মীয়রা বাইরে অপেক্ষা করে।কিছুক্ষন পর ডাক্তার বেরিয়ে এসে বলল,স্যরি।বুকের মধ্যে ধড়াশ করে উঠল।কি আবোল তাবোল ভাবছি।
দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ধরে গেছে দাদা বৌদি ভিতরে গিয়ে বসেছে।গাড়ীর কাছে গিয়ে দেখলাম মা চোখ বুজে হেলান দিয়ে বসে।ফালগুনী সামনে চিবুক রেখে বসে আছে।জিজ্ঞেস করলাম,মা ভিতরে গিয়ে বসবে?
মা চোখ মেলে বলল,না থাক এখানেই ঠিক আছি।
আমি মনকে নিয়ে ভিতরে গিয়ে বসলাম।কিছুক্ষন পর একটা গাড়ী এসে থামতে দেখলাম এক ভদ্রমহিলা চোখে সানগ্লাস বছর পয়তাল্লিশ বয়স ঋজু দেহ গাড়ী থেকে নামতেই দারোয়ান এগিয়ে গিয়ে সেলাম করল।ভদ্রমহিলা লিফটে উঠে উপরে চলে গেলেন।মনকে বললাম, ভদ্রমহিলা মনে হয় ডাক্তার।
মন উঠে একটু ঘুরে এসে বলল,উনি ডাক্তার নয় মিসেস সোম।
--ভদ্রমহিলা বেশ স্মার্ট।
ভিজিটিং আউয়ারস শুরু হয়েছে লোকজন আসছে। এখন উপরে যাওয়া যায় কিন্তু বাবা তো বেডে নেই।
একজন বলল, রমেশ চক্রবর্তির বাড়ী থেকে কে এসেছেন?
ছোড়দা এগিয়ে যেতে বলল,উনি কে?
--আমার বাবা।
--অপারেশন ভালো হয়েছে,উনি ভালো আছেন।কাল সেকেণ্ড হাফে ডিসচার্জ করা হবে।
--আচ্ছা এখন কথা বলা যাবে?
--ওকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।দেখা করতে হলে অন্তত ঘণ্টা তিনেক অপেক্ষা করতে হবে।ক্যাশে গিয়ে জেনে নিন কত কি দিতে হবে।
--সেকেণ্ড হাফ খালি টাকা খাওয়ার ধান্দা।
মাকে সবকথা বলতে মা কেদে ফেলে বলল,মণি আমাকে মিথ্যে বলছিস নাতো?
--উফস মা কিছু হলে আমি কি শান্ত থাকতে পারতাম?
কটাদিন যেন ঝড় বয়ে গেল,দিনরাত সব একাকার।একবার আলিপুর আবার লেকভিউ কখনো যাদবপুর আর সল্টলেকের মধ্যে তাঁতির মাকুর মত যাওয়া আর আসা।ওপেন হার্ট অপারেশন করা হল।
গাড়ি নিয়ে একা আলিপুর কোর্টে গেলাম।মি চৌধুরি আমাকে নিয়ে তার চেম্বারে বসতে বলে চলে গেলেন।অতনুকে কোথাও নজরে পড়েনি।প্রায় ঘণ্টা খানেক পর চৌধুরী এসে বললেন,চলুন ম্যাডাম।তিন মিনিটের হাটা পথ নজরে পড়ল,অতনুকে জড়িয়ে ধরে নির্মলা সুন্দরী একটা বারান্দায় থেবড়ে বসে।আমি দোতলায় উঠে একটা ঘরে ঢুকলাম।জজ সাহেব বসে সামনে কাঠগড়া।সারি সারি বেঞ্চ পাতা।কয়েকজন কালো গাউন পরা উকিলের আনাগোনা।আমারই মত কিছু সাধারণ মহিলা পুরুষ বেঞ্চে বসে আছেন।চৌধুরীবাবুর কথামত আমিও বেঞ্চে বসলাম।চৌধুরীবাবু একজন উকিলের সঙ্গে নীচু গলায় কিসব আলাপ করছেন।মিনিট দশ পরেই আমার এবং অত্নুর নাম ধরে ডাকতে চৌধুরীবাবুর কথামত কাঠগড়ায় গিয়ে দাড়ালাম।অতনুও সেই কাঠগড়ায় উপস্থিত।গায়ে গায়ে ছোয়া লাগছে।আমি জজ সাহেবের দিকে তাকিয়ে ওর দিকে যাতে তাকাতে না হয়।জজ সাহেব জিজ্ঞেস করলেন,অতনু ব্যানার্জি আপনি স্বেচ্ছায় এখানে সই করেছেন?
অতনু বলল,হ্যা স্যার।
আমাকেও একই প্রশ্ন,আমিও বললাম,হ্যা স্যার।
জজ সাহেব কাগজে কিসব লিখে বললেন,মঞ্জূর।
চৌধুরীবাবু আমাকে নিয়ে গাড়ীতে তুলে দিলেন।গাড়ী স্টার্ট করতেই মোবাইল বাজে।কানে লাগাতে শুনতে পেলাম, এখনো হয়নি?
--এইমাত্র হল।
--তাহলে চলে এসো।
--শব্দ শুনতে পাচ্ছো না,আমি তো গাড়ীতেই।
উফস কি শান্তি।ভাবছিলাম কি হয় কি হয়।কাঠগড়ায় দাড়াতে দশ মিনিটের মধ্যে সব মিটে গেল।কাঠগড়ায় আমার পাশে ছেলে আর সামনে বেঞ্চে বসে মা নির্মলা সুন্দরী যেন আমাকে গিলে খাচ্ছিল।এরপর শনিবার যেতে হবে যাদবপুর।সেদিন দুজনে একসঙ্গে বেরিয়েছিলাম।এরই ফাকে নার্সিং হোম যাওয়া তো আছেই।শনিবার দুজনকে সই করতে হল।কয়েকজন লোক নিয়ে এসেছিলেন চৌধুরী বাবু।তারাও সই করল।তারপর আমাকে বলতে হল,অমুক অমুকের ছেলে মণিশঙ্করকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করলাম।মনও বলল,স্ত্রী হিসেবে গ্রহন করলাম।
রাতের খাওয়া শেষ হলে শুরু হল মনের পাগলামী।সারা বিছানা ফুলে ঢাকা দুটো মালা নিয়ে এসেছিল।ঘরে ডিম লাইট জ্বলছে।এই পরিবেশে আমিও কেমন নবোঢ়া বধূর মত লজ্জায় মনের দিকে তাকাতে পারছিলাম না।মন আমাকে উলঙ্গ করে দিয়ে নিজেও উলঙ্গ হল।তারপর একটা মালা আমার হাতে দিয়ে বলল,যে তোমার প্রিয় তাকে পরিয়ে দাও।আমি কম্পিত হাতে ওর গলায় মালা পরিয়ে দিলাম।মনও তার হাতের মালা আমার গলায় পরিয়ে দিল।আয়নায় প্রতিফলিত হয় দুটি নারী পুরুষ শরীরে একটি কার্পাসের টুকরো পর্যন্ত নেই।আমার মোটেই লজ্জা করছিল না।লজ্জা পেলাম তখন মন একটা বাক্স খুলে হীরের একটা নেকলেস বের করে আমার গলায় পরিয়ে দিল।এমন দিনে আমি কিছুই দিতে পারলাম না।চোখে জল এসে গেল।
মন জড়িয়ে ধরে বলল,কি হল মণি?
--তোমাকে কিছুই দিতে পারলাম না।
মন পাঁজাকোলা করে আমাকে তুলে বলল,সবই তো দিয়েছো আর কত দেবে?মাথা নীচু করে ঠোটের পরে ঠোট রাখে।
আমি গলা জড়িয়ে ধরি।
--কাল অপারেশন হয়ে যাক।তারপর আমাদের ফুলশয্যা--হনিমুন।চলো এবার ঘুমিয়ে পড়ি।
--এই ভাবে?
--কেন খারাপ লাগছে?
আমরা শুয়ে পড়লাম,সেদিন মন কিছু করবে না ভাবিনি।
সকাল-সকাল খেয়েদেয়ে দুজনে একসঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম।বাড়ী গিয়ে মাকে তুললাম ফাল্গুণীও উঠল।মন সামনে পিছনে মা আমি ফাল্গুণী।ভিজিটিং আউয়ারস নয় বাইরেই ঘোরঘুরি করতে হচ্ছে।ট্যাক্সি নিয়ে বড়দা বৌদি আর ছোড়দা এল।বড়দা ভিতরে গিয়ে খোজ নিয়ে এল বাবা অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেছে।বুকের মধ্যে ঢীপ ঢিপ করছে।সিনেমায় দেখেছি কিভাবে অপারেশন করে।রোগীর আত্মীয়রা বাইরে অপেক্ষা করে।কিছুক্ষন পর ডাক্তার বেরিয়ে এসে বলল,স্যরি।বুকের মধ্যে ধড়াশ করে উঠল।কি আবোল তাবোল ভাবছি।
দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ধরে গেছে দাদা বৌদি ভিতরে গিয়ে বসেছে।গাড়ীর কাছে গিয়ে দেখলাম মা চোখ বুজে হেলান দিয়ে বসে।ফালগুনী সামনে চিবুক রেখে বসে আছে।জিজ্ঞেস করলাম,মা ভিতরে গিয়ে বসবে?
মা চোখ মেলে বলল,না থাক এখানেই ঠিক আছি।
আমি মনকে নিয়ে ভিতরে গিয়ে বসলাম।কিছুক্ষন পর একটা গাড়ী এসে থামতে দেখলাম এক ভদ্রমহিলা চোখে সানগ্লাস বছর পয়তাল্লিশ বয়স ঋজু দেহ গাড়ী থেকে নামতেই দারোয়ান এগিয়ে গিয়ে সেলাম করল।ভদ্রমহিলা লিফটে উঠে উপরে চলে গেলেন।মনকে বললাম, ভদ্রমহিলা মনে হয় ডাক্তার।
মন উঠে একটু ঘুরে এসে বলল,উনি ডাক্তার নয় মিসেস সোম।
--ভদ্রমহিলা বেশ স্মার্ট।
ভিজিটিং আউয়ারস শুরু হয়েছে লোকজন আসছে। এখন উপরে যাওয়া যায় কিন্তু বাবা তো বেডে নেই।
একজন বলল, রমেশ চক্রবর্তির বাড়ী থেকে কে এসেছেন?
ছোড়দা এগিয়ে যেতে বলল,উনি কে?
--আমার বাবা।
--অপারেশন ভালো হয়েছে,উনি ভালো আছেন।কাল সেকেণ্ড হাফে ডিসচার্জ করা হবে।
--আচ্ছা এখন কথা বলা যাবে?
--ওকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।দেখা করতে হলে অন্তত ঘণ্টা তিনেক অপেক্ষা করতে হবে।ক্যাশে গিয়ে জেনে নিন কত কি দিতে হবে।
--সেকেণ্ড হাফ খালি টাকা খাওয়ার ধান্দা।
মাকে সবকথা বলতে মা কেদে ফেলে বলল,মণি আমাকে মিথ্যে বলছিস নাতো?
--উফস মা কিছু হলে আমি কি শান্ত থাকতে পারতাম?