Thread Rating:
  • 23 Vote(s) - 3.22 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery যেখানে যার নিয়তি/কামদেব
দ্বাবিংশতি পর্ব


মাকে নিয়ে যখন পৌছালাম দেখলাম দাদারা কেউ তখন আসেনি।উপরে উঠে বাবাকে দেখে মনে হলনা অসুস্থ।মাকে বসিয়ে দিয়ে অফিসে খোজ খবর নিয়ে জানলাম ইসিজি এক্স-রে ইউএসজি ইত্যাদি হয়ে গেছে ডাক্তার বাবু এসে দেখে বলবেন কি করতে হবে।বেরিয়ে দেখলাম দাদারা এসে গেছে আমাকে জিজ্ঞেস করল,কিছু বলল?

--আজ জানা যাবে অপারেশন হবে কি হবেনা।
--টাকা-পয়সার কথা কিছু বলল?
টাকা পয়সা নিয়ে দাদারা খুব চাপে আছে বুঝলাম।ছোড়দা বলল,আজ লোনের দরখাস্ত করেছি।
--টাকা পয়সা নিয়ে ভাবিস না কিছু একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে।ওদের আশ্বস্থ করার জন্য বললাম।
ছোড়দা কাছে এসে নীচু গলায় জিজ্ঞেস করল,মণিশঙ্কর অনেক টাকা বেতন পায় তাই নারে?
হেসে বললাম,আমি ওসব জিজ্ঞেস করিনি।তোর বন্ধু তুই জিজ্ঞেস করতে পারিস।
--ধ্যেৎ কি যে বলিস এসব জিজ্ঞেস করা যায়।
--বাবার সঙ্গে দেখা করেছিস?
--পরে যাব।মা-র সঙ্গে কথা বলছে এখন গেলে ডিস্টার্বড হবে।
মুচকি হাসলাম।মা পাশে থাকলে বাবার কাউকে দরকার হয়না।ঘণ্টার পর ঘণ্টা কি কথা বলে কে জানে।কথা যেন শেষ হতে চায়না।ছোড়দা ইশারায় মন আসছে দেখিয়ে চলে গেল।করিডোরে ভিজিটরসদের ভীড় বাড়ছে।মনকে একপাশে নিয়ে যেতে জিজ্ঞেস করল,কোনো খবর আছে?
--আজ জানা যাবে অপারেশন হবে কি হবেনা।বিপি বেশ লো।কিছু বলবে মনে হচ্ছে?
--না থাক।
--থাকবে কেন বলো।
--না মানে মি চৌধুরী ফোন করেছিলেন?  
--সে আবার কে?
--তোমার কিচ্ছু মনে থাকে না,তোমাকে বলেছিলাম এ্যাডভোকেট সলিলবাবুকে--।
--ও হ্যা কি বলছেন?
--সব হয়ে গেছে।
--গুড নিউজ।
--তোমাকে পরশু একবার কোর্টে যেতে হবে।এখন এই অবস্থায়..অবশ্য উনি বলেছেন ডেট পিছিয়ে নিতে পারবেন।
--পিছবে কেন?শোনো মন তুমি আমাকে নিয়ে যা ভাবছো তা নয় আমি সত্যকে সহজভাবে নিতে জানি।তবে অপারেশনের দিন আমাকে থাকতেই হবে।কি হবে তাতো বলা যায় না।
--যত বাজে কথা,ওসব একদম ভাববে না।
আমি হাসলাম মন আমাকে সান্ত্বনা দিচ্ছে।
--তুমি যাবে আমি জানিয়ে দিই?
--এটা মিটলে বিয়েটা না মিটলে শান্তি নেই। 
--খুব চিন্তায় আছো মনে হচ্ছে?
--কাউকে বিশ্বাস নেই।চিন্তা হবে না?
--আমিও তাই ভাবছি কাউকে বিশ্বাস নেই বিয়েটা হলে নিশ্চিন্ত হওয়া যায়।মন গম্ভির গলায় বলল।
হাসি চেপে  উড়ূনি দিয়ে ওর কপালের ঘাম মুছিয়ে দিয়ে বললাম,ইস চিন্তায় চিন্তায় বেচারির কি হাল হয়েছে।
বড়দাকে আসতে দেখে মন একটু সরে গেল।বড়দা চিন্তিত মুখে বলল,ডাক্তারবাবুর সঙ্গে কথা হল।ওপেন হার্ট সার্জারি হবে।একজায়গা হতে নালি কেটে হার্টে বসানো হবে।রবিবার অপারেশন করবেন।
--মাকে বলেছো?
--হ্যা বলব কিন্তু মুষ্কিল হচ্ছে--।দাদা আমাকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে বলল,তার আগে অন্তত সেভেন্টি জমা দিতে হবে।
--ঠিক আছে এখুনি দিয়ে দিচ্ছি।
--এখন নয় পরে দিলেও হবে।
--আমি বুধবার নাও আসতে পারি।আজই দিয়ে দিচ্ছি।কোথায় দিতে হবে তুমি চলো।
মনকে অপেক্ষা করতে বলে দাদার সঙ্গে নীচে নেমে গেলাম।ক্যাশ কাউণ্টারে সত্তর হাজারের একটা লিখে জমা দিলাম।
দাদা অবাক হয়ে দেখছিল।ক্যাশিয়ার বললেন,চেক নিচ্ছি কিন্তু লাস্ট পেমেণ্ট চেকে হবে না ক্যাশ দিতে হবে।
ব্যাগ থেকে মনের একটা কার্ড বের করে দিয়ে বললাম,কোনো অসুবিধে হলে এখানে জানাবেন।
ভদ্রলোক কার্ডে চোখ বুলিয়ে বললেন,ম্যাডাম আমি নিয়মের কথা বললাম।
আমেরিকা হতে মণির জন্য একটা বার্বি ডল এনেছিল।ব্যাটারি অন করলে হাত-পা নাড়িয়ে নাচে।অতনু ব্যাটারি অন করে পুতুলের নাচ দেখছে।আমেরিকায় বসে কত স্বপ্ন কল্পনার জাল বুনেছিল তখন এই সম্ভাবনার কথা একবারও মনে হয়নি।ফোনেও তাকে বলেনি কেউ।
বাবা ট্যাক্সি করে পৌছে দিয়েছে শুনে পশুপতিবাবুর উপর রাগ।পদ্মমাসী ফোড়ণ কাটছিল যে থাকবে না তাকে জোর করে আটকে রাখার কি দরকার?
 মেজাজ হারিয়ে অতনু বলেছিল,আপনি আমাদের বাড়ির ব্যাপারে কথা বলছেন কেন?তারপর অবশ্য স্যরি বলেছে।
নির্মলা সুন্দরি চা নিয়ে ঢুকলেন।চায়ের কাপ নামিয়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।অতনু জিজ্ঞেস করে,কিছু বলবে?
--পদ্ম একটা খবর এনেছে মেয়েটা চাকরি করে--।
--উফস মা এখনো ডিভোর্স হলনা তোমরা মেয়ে দেখতে শুরু করলে?
--বুধবার তো হয়েই যাবে।মেয়েটা অফিস আর বাড়ি কোনো বাজে আড্ডা --।
--আগের বারও খবর নিয়েছিলে শান্ত পাড়ায় মেশেনা।শুধু কলেজ আর বাড়ি--।
--কি করে জানব--।
--মা প্লীজ আমাকে একটু একা থাকতে দাও।  
নার্সিং হোম হতে বাসায় ফিরে মণিশঙ্কর বোঝাতে থাকে,শোনো ও যদি তোমার সঙ্গে কথা বলতে আসে একদম পাত্তা দেবে না।অবশ্য সলিলবাবু থাকবেন অসুবিধে হবে না।
--তুমি কি আমাকে বাচ্চা মেয়ে ভেবেছো?
--মনি বাচ্চা-বুড়োর কথা নয়।আবেগের বশে মানুষ কিইনা করতে পারে।
--এত যদি ভয় তাহলে আমার সঙ্গে চলো।
--এইতো বাচ্চাদের মত কথা।এখনো সেপারেশন হয়নি মামলা অন্যদিকে ঘুরে যেতে পারে।
মৌমিতা খুটিয়ে খুটিয়ে জিজ্ঞেস করে যখন জানলো মণি সত্তর হাজার দিয়েছে জিজ্ঞেস করল,নিজে চেকে সই করলো।
--কি মুষ্কিল বলছি ওর চেক তাহলে কে সই করবে?
--ঠাকুর-পো কিছু দেয়নি?
--ও লোনের দরখাস্ত করেছে।
--তুমি বিশ্বাস করলে?টাকা ওর আছে ভাব দেখাচ্ছে লোন করে দিচ্ছে।
--আচ্ছা তুমি এইসব নিয়ে পড়লে কেন বলতো?রোববার অপারেশন হবে আমি ভাবছি ভালোয় ভালোয় বাবা ফিরলে হয়।কদিনে কি চেহারা হয়েছে মায়ের।
--আমার মা একা একা কি করছে খোজ নিয়েছো কখনো? সত্যি কথা বললে সহ্য হবে কেন?
--মৌ তুমি কি চাইছো বলতো?তোমাকে বলিনি মাকে এখানে নিয়ে এসো।
--এই ভাগের সংসারে মাকে আনবো কি করে ভাবলে তুমি? 
--আমি কিছুই বুঝতে পারছি না তুমি ঠিক কি বলতে চাইছো।
--কোনো চাকরি করেনা ব্যাঙ্কে ওর অত টাকা হল কি করে আমাকে বুঝিয়ে দাও।
--টাকা না-দিলে দোষ আবার দিলেও বিপদ।তুমি আমাকে নাবলে মণিকেই জিজ্ঞেস করতে পারো।
মোবাইল বাজতেই মণিশঙ্কর স্পীকার অন করে বলল,হ্যালো?
--আপনি ফোন করেছিলেন?
--হ্যা বুধবার ম্যাডাম যাবেন।
--শনিবার সময় হবে?
--কেন বলুন তো?
--তাহলে রেজিস্ট্রিটা হয়ে যেতো।
--শনিবার একটু ব্যস্ত--।
মণিমালা বলল,কিসের ব্যস্ত?
--একমিনিট।মণিশঙ্কর বলল,পরেরদিন অপারেশন।
--তাতে কি হয়েছে?কতক্ষন লাগবে?
--তাহলে শনিবার বলে দেবো?
--হ্যা তুমি নিশ্চিন্ত হতে পারবে।
মণি শঙ্কর হেসে বলল,হ্যালো সলিলবাবু।
--হ্যা বলুন।
--ঠিক আছে শনিবার।অনেক ধন্যবাদ।
--আপনি যা করেছেন আমার মনে থাকবে।গুড নাইট।ফোন বন্ধ করে মণিশঙ্কর বলল,অপারেশনের আগেই আমরা আইনত স্বামী-স্ত্রী।
--তুমি কি করেছো?
--কি করলাম তুমি তো সব শুনলে।
--ঐযে উনি বললেন,আপনি যা করেছেন।
--ছাড় তো ওনার কথা, এসব উকিলি প্যাচপয়জার।
মণিমালা বুঝতে পারে মন কিছু চেপে যাচ্ছে।শাশুড়ী মা খেতে ডাকছেন।ওরা খেতে গেল।খাওয়া দাওয়ার পর নাইটি গায়ে শুয়ে পড়লাম।শোবার সময় আমি নীচে কিছু পরিনা।আমি মনের দিকে পিছন ফিরে শুয়ে আছি।আমার ঘাড়ে মনের নিশ্বাস পড়তে বুঝতে পারি ঘুরে শুয়েছে।নাইটি কোমর অবধি তুলে দিলাম।ও পাচ্ছা টিপতে ভালবাসে কিন্তু ও পাছায় হাত দেয়নি।অবাক হয়ে ঘুরে ওকে বললাম,কি হল?
--আচ্ছা মণি তুমি যদি কখনো জানতে পারো আমি ঘুষ খাই তোমার কেমন লাগবে?
রাত দুপুরে এ কেমন প্রশ্ন কয়েক মুহূর্ত ভাবলাম।পুরানো অনেক কথা মনে পড়ল।ভাবলাম কিছু প্রশ্ন দিনের পর দিন নাড়াচাড়া করেছি মনে মনে সেগুলো ওকে বলা দরকার আমাকে বুঝতে পারবে আমিও নিজেকে চিনতে পারব।আমি করতলে মাথা রেখে বললাম, শোনো মন তুমি তুললে তাই বলছি।তুমি দারিদ্র্যে বিরুদ্ধে লড়াই করে বড় হয়েছো এজন্য তোমার প্রতি ছিল আমার শ্রদ্ধাবোধ।যে ভালবাসায় শ্রদ্ধা থাকে না তাকে বলে লালসা।কিন্তু ভালবাসা প্রকাশের অন্তরায় আমাদের বাড়ীর সফিস্টিকেট মনোভাব।আমি তোমাকে চাপ দিয়েছিলাম ভিডিও চালাতে অনেক ভেবেছি দাদাকে চাপ দিতে পারতাম কিম্বা কোনো মেকানিককে?কিন্তু তোমাকে এক অধিকার বোধ হতে পীড়াপিড়ি করেছিলাম।দেবযানী আণ্টির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলো না।বিয়ের পর যখন আমি গাড়ীতে উঠছি তোমাকে দেখলাম অপলক তাকিয়ে আছো।আমি চোখের জল সামলাতে পারিনি সবাই ভেবেছিল বাড়ী ছেড়ে যাচ্ছি তাই।তুমি মেসেজ করতে বিরক্ত হতাম কিন্তু তোমাকে ব্লক করিনি।তুমি ডাকলে মুখে যাব না বললেও মনের সায় মেলেনি।যেদিন শ্বশুর মশায় আমাদের দেখলেন,সেদিন নিজেকে লজ্জিত মনে হয়নি।যখনই দুঃখ পেয়েছি তোমার কথা মনে পড়েছে।কেন? এ প্রশ্ন বারবার নিজেকে করেছি।দিনের পর দিন মনে মনে যে ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছি সেটা টলে গেলে কষ্ট পাব বইকি?স্ত্রীর দাবী পূরণে স্বামী অসৎ পথে যাচ্ছে না স্ত্রী ক্ষুব্ধ হবে কিন্তু অবচেতনে বাড়বে শ্রদ্ধা।বিয়ে হয়নি তাহলে কোন ভরসায় তোমার সঙ্গে এক বিছানায় শুয়ে আছি?
--আর বলতে হবে না বুঝেছি।শনিবার তো সব মিটে যাবে।
--আচ্ছা শনিবার দিনটা কি ভাল?
মন হো-হো করে হেসে ফেলে।
--হাসছো কেন?
--আমাদের বিপদ কি জানো?আমরা যুক্তি এবং সংস্কারকে একসঙ্গে নিয়ে চলতে চাই।একটু আগে তুমি বলছিলে তোমার মানসিকতা আর বাড়ীর সকলের মানসিকতা অর্থাৎ দুই পরস্পর বিরোধী মানসিকতাকে মিলিয়ে চলতে গেছিলে।পেরেছো কি?  
[+] 4 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: যেখানে যার নিয়তি/কামদেব - by kumdev - 19-06-2020, 12:03 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)