Thread Rating:
  • 23 Vote(s) - 3.22 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery যেখানে যার নিয়তি/কামদেব
#78
[সপ্তদশ]


                   বাসায় ফিরে গুম হয়ে বসে থাকে ফাল্গুনী।অনেক প্রশ্ন মনের মধ্যে গিজ গিজ করছিল কিন্তু মণির মুখের দিকে তাকিয়ে সাহস হয়নি।যে শাড়ীটা পরেছে সেটাও খুব দামী।ব্যাগের মধ্যে গোছা গোছা নোট। সমুটা যাবে বলে যায়নি কি এমন কাজ পড়ল।আসুক আজ।আজকের কথা মাকে বলবে কিনা ভাবে।কোনো বড়লোকের সঙ্গে লটঘট পাকিয়েছে কে জানে।গাড়ীতে অবশ্য একাই ছিল।কাপড় চেঞ্জ না করেই শুয়ে পড়ে।মণির ফিগার ভালই এখন যেন মনে হচ্ছিল ফিল্ম স্টার।মনে হয় অনেক দামী কস্মেটিক ব্যবহার করে।

স্বামীর পাশে শুয়ে লাবণ্যর মনে পড়ে কত কথা।কি সুন্দর ছটফটে ছিল মানুষটা এখন দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না।বলতে পারে না সব বোঝে।মণিটা হয়েছে ওর বাবার মত।কোথায় কি করে বেড়াচ্ছে কে জানে,আঁচল দিয়ে চোখ মুছলেন।আলো কমে এসেছে একটু পরেই সন্ধ্যে হবে।লাবণ্য উঠে বসলেন।রমেশবাবু স্ত্রীর দিকে তাকাতে বললেন,চা করে নিয়ে আসি?
সোমেন বাসায় ফিরে বউকে শায়িত দেখে জিজ্ঞেস করল,মার্কেটিং হল?
তুমি এলে না কেন,একা একা ভাল লাগে?
তোমাকে তো বললাম ফোনে।
এই জানো আজ মণির সঙ্গে দেখা হল।
সমু কথাটা আমল দেয়না।ফাল্গুনি বলল,গাড়ী নিয়ে এসেছে নিউ মার্কেটে।
কার কথা বলছো?
তোমার বোন।
তোমার সঙ্গে মণির দেখা হয়েছিল?আমাকে বলোনি কেন?কেমন আছে?
তাই তো বলছি শাসালো কোনো পার্ট ধরেছে--।
শাট আপ।মণি তোমার বন্ধু ছিলনা?ওতো চলে গেছে তাও ওকে রেহাই দেবে না?
নিজের ইচ্ছেতে চলে গেছে কেউ ওকে যেতে বলেছে?
প্লীজ ফাল্গুনি একটু দয়া করো।
থাক অনেক নাটক হয়েছে।এখন ভালমানুষী হচ্ছে বাবার এঞ্জিওপ্লাস্টি করোনি কেন?
কিসের মধ্যে কি,সোমেন বিরক্ত হয়ে গামছা নিয়ে বাথরুমে চলে গেল।কিছুক্ষন পর বাথরুম হতে বেরিয়ে বলল, তোমাকে একটা অনুরোধ তুমি এসব কথা মাকে বলতে যেও না।  
রমেশবাবুর ঘরে এখন অক্সিজেন সিলিণ্ডার মজুত থাকে।শ্বাস কষ্ট হলে মাস্ক লাগিয়ে অক্সিজেন নিতে হয়।একবার ডাক্তার দেখানো হয়েছিল।ডাক্তারবাবু বললেন,চর্বি জমে রক্তনালী বন্ধ হয়ে গেছে।হৃদযন্ত্রে নাকি তিনতে ব্লক ধরা পড়েছে।হৃদযন্ত্রে এনজিওপ্লাস্টি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।তাতে কোনো লাভ হবে কিনা ভেবে তপেন আর বেশি এগোয় না।রান্না বান্না লাবণ্য দেবীই করেন।চুপচাপ বসে থাকার চেয়ে কোনো একটা কাজে ব্যস্ত থাকা ভাল।প্রথমদিকে খুব চিন্তা হত মেয়েটা কোথায় গেল কি খাচ্ছে কি করছে আর চোখ দিয়ে জল ঝরত।এখন অনেক সয়ে আছে কপালের উপর সব দায় তুলে দিয়েছেন।
অফিস থেকে ফিরে মৌমিতা রান্না ঘরে গিয়ে দু-কাপ চা নিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল।তপেনকে চায়ের কাপ এগিয়ে দিয়ে বলল, সুদেব তোমায় কি বলছিল?
ওর শালা কাল ফিরবে।
শালা ফিরবে তোমাকে বলার কি হল?ও জানে না কি হয়েছে?
জানবে না কেন?দেখো আইনত এখনো ওর বউ।
কথাটা কি সুদেব বলল নাকি ওর শ্বশুরবাড়ি থেকে বলতে বলেছে?
আমি অত জিজ্ঞেস করিনি।দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,মণিটা কোথায় যে গেল।
স্বার্থপর।আমরা না হয় কেউ না একবার মা-বাবার কথা ভাবলি না।
ওর সঙ্গেও খুব ভাল ব্যবহার করা হয়নি।
মানে?কি বলতে চাইছ তুমি?তোমার বোনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছি?
কি মুষ্কিল আমি কি তোমার কথা বলেছি?
বলোনি আবার বলতে বাকী রাখোনি।তুমি আবার সুদেবের কথা মাকে বলতে যেও না।বলে না সুখে থাকতে ভুতে কিলোয়।আরে বাবা দু-বেলা খাওয়াটা তো জুটছিল।
আড়ালে গিয়ে তপেন চোখ মুছলো।

আজ অতনুর ফেরার কথা।নির্মলা সুন্দরীর ফ্রেণ্ড এসেছে বড় মেয়ে অনিমাও সকাল বেলা হাজির।পশুপতি বাবু ভাবছেন কি বলবেন অতনুকে।অনিমা ঢুকে জিজ্ঞেস করল তোমার শরীর কেমন আছে বাবা?
পশুপতিবাবু চোখ তুলে মেয়েকে দেখে বললেন,সুদেব আসবে না?
ও কি করে আসবে?
তোমার ভাই আসছে ?সুদেব বলেছিল?
হ্যা অতনু আসছে সুদেব ওর বড়দাকে বলেছিল।
শুনে কি বলল?

কোনো উচ্চবাচ্য করেনি।
হুউম পশুপতি ভাবেন কথাটা ওর মার কানে তোলা দরকার ছিল।
 পাশের ঘরে নির্মলা বন্ধুর সঙ্গে আলাপ করছে।পদ্মরানি বন্ধুকে বলল,আমি তোকে আগে বলিনি অমন গনগনে আগুণে রূপ কেউ ছিলনা বললে হবে?
এই বউটা হয়েছে অপয়া।ওর জন্য আজ তনিমার এই অবস্থা।

তুই বললি বউটা খুব পয়া বিয়ে হতেই আমেরিকা যাবার সুযোগ পেল।তনিমা কোথায় ওকে দেখছিনা।
আছে ওর ঘরে।ও যাবে না।
কিছু হয়নি তো?দেখিস আজকালকার ছেলে মেয়েদের বিশ্বাস নেই।আমাদের সময় কি আর আছে?
বলছে তো কিছু হয়নি।সেদিন অত রাত করে ফিরল বলেই সন্দেহ হচ্ছে।
স্বল্পবাসে ছবি তুলছিল প্রথমে বুঝতে পারনি।কোন এক বড় কোম্পানীর বিজ্ঞাপনের জন্য মডেল।শুভ একাই ছিল, হঠাৎ এরকম করবে কল্পনাও করেনি।বাধা দিয়েছিল কিন্তু তেমন জোরালো নয়। ছবি তুলতে তুলতে তোমাকে দেখে এমন এক্সাইটেড হয়ে গেলাম,স্যরি।মিথ্যে কথা বলার জায়গা পায়না কণ্ডোম কিনে নিয়ে এসেছে বলে কিনা এক্সাসাইটেড হয়ে গেছে।তুমি চাইলে বিয়ে করতে পারি।কিন্তু ওর যা চাকরি আজ আছে কাল নেই।বড়দিকে ঢুকতে দেখে চিন্তায় ছেদ পড়ে।
কিরে তুই নাকি যাবি না?ভাইটা এতদিন পরে আসছে।
আমার শরীর ভাল নেই।
তনু সত্যি করে বলতো ঐদিন কি হয়েছিল?
কি আবার হবে?
কোনো ভদ্রবাড়ীর মেয়ে অতরাত অবধি বাড়ীর বাইরে থাকে?
গাড়ী ঘোড়া ছিলনা হেটে ফিরেছি এর মধ্যে ভদ্র-অভদ্র কেন আসছে?
নীচে গাড়ি এসেছে। সবাই চলে গেল বিমান বন্দরে,বাড়ীতে পশুপতিবাবু আর তনিমা। ইজি চেয়ারে শরীর এলিয়ে দিয়ে এলমেলো ভাবছেন পশুপতি।সুদেব আর আসেনা,বউমা চলে যাবার পর ওর মধ্যে একটা অস্বস্তি লক্ষ্য করেছেন।অতনুর সম্বন্ধটা ওর মাধ্যমেই হয়েছিল।কলিং বেলের শব্দ হতে সোজা হয়ে বসলেন।এর মধ্যেই ওরা ফিরে এল?চারটের সময় প্লেন ল্যাণ্ড করার কথা।ঘড়ির দিকে তাকালেন পাঁচটা বেজে গেছে।তনিমা এসে বলল,বাবা এক ভদ্রলোক এসছেন তোমার সঙ্গে কথা বলতে চান।
এখন আবার কে এল? বউমার বাড়ীর লোক হলে তনু চিনতো। জিজ্ঞেস করলেন,কে কেন কিছু বলেছে?
তোমাকেই বলবেন।
বিরক্তি সহ বললেন,বৈঠকখানায় বসতে বল আর বলবি আজ একটু ব্যস্ত বেশি সময় দেওয়া যাবে না। 
তনিমার সঙ্গে এসে ভদ্রলোক দেখিয়ে দেওয়া সোফায় বসলেন।নতুন সোফা মনে হল বিয়েতে আমদানী।পশুপতি ঢুকতে ভদ্রলোক সোফা দেখিয়ে বললেন,বসুন।
অবাক লাগে তার বাড়ি তাকেই বসতে বলছে?সোফায় বসতে বসতে জিজ্ঞেস করলেন,কি ব্যাপার বলুন।
অতনুবাবুর একটা কনসেণ্ট লেটারের জন্য এসেছি।
আজ আসার কথা এখনো আসেনি।আপনি কি ওর অফিস হতে এসেছেন?
ঠিক আছে আমি অপেক্ষা করছি।আমি সলিল চৌধুরী মিসেস মণিমালার এ্যাডভোকেট।
পশুপতিবাবু নড়ে বসলেন।সন্দিগ্ধ চোখে বললেন,অতনু আজ ফিরবে বউমা কি জানে না?
মাপ করবেন শি ইজ লেস ইন্টারেস্টেড।
পশুপতি মনে মনে নিজেকে শক্ত করে বললেন,দেখুন মি চৌধুরী বিয়েটা ছেলেখেলা নয়।
আমার ক্লায়েণ্টও সেরকম মনে করেন।সেজন্যই তিনি ডিভোর্সের কথা বলছেন।
তিনি বললেই তো হবে না আমার ছেলেও রাজী কিনা দেখতে হবে।
আপনি ঠিক বলেছেন।সেজন্যই তার কন্সেণ্ট নিতে এসেছি।মিউচুয়ালি হলে আমার ক্লায়েণ্ট খুবই কন্সিডারেট তিনি কোনো খোরপোশ দাবী করবেন না। 
পশুপতির মাথা ধরে যায় তিনি উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,একটু বসুন চা খাবেন তো?
পশুপতি নিজের ঘরে এসে বসলেন।তনিমা ঢুকে জিজ্ঞেস করল,বাবা তোমার শরীর খারাপ লাগছে?
মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,ওকে এক কাপ চা দাও।
তনিমা চলে যেতে পশুপতিবাবু টেলিফোনের ডায়াল ঘোরালেন।কানে দিয়ে শুনলেন রিং হচ্ছে।
হ্যালো বেয়ান আমি পশুপতি বলছি অতনুর বাবা।ওপাস থেকে সাড়া না পেয়ে বললেন,আপনার জামাই আজ ফিরছে শুনেছেন?
হ্যা ভালো আছেন?
বেয়ান বউমাকে একটু ফোনটা দেবেন?
মণি এখানে থাকে না।
থাকে না মানে কোথায় গেছে?
বলতে পারবো না।
কম্পিত হাতে পশুপতি রিসিভার নামিয়ে রাখলেন।রুমালে ঘাম মুছে বৈঠকখানায় এসে দেখলেন,মি চৌধুরী আয়েশ করে চা পান করছেন।পশুপতিবাবু সোফায় বসে বললেন,আচ্ছা মি চৌধুরী  বিষয়টা কোনোভাবে মিট্মাট করা যায় না?
সলিলবাবু চায়ে চুমুক দিয়ে হাসলেন।চা শেষ করে বললেন,ম্যাডাম মানে আমার ক্লায়েণ্টের কাছে বিষয়টা  ক্লোজ চ্যাপ্টার।ঠিক আছে আপনি ভাবুন সবার সঙ্গে কথা বলুন।মিউচুয়ালি যাবেন নাকি--সেটা আপনাদের ব্যাপার।একটা কথা মনে রাখবেন এর সঙ্গে আপনার ছোটোমেয়ের বিষয়টা জড়িয়ে আছে।কোর্ট কাছারির ব্যাপার কোথা থেকে কি এসে যায় কে বলতে পারে। এই নিন আমার কার্ড,দরকার হলে ফোন করবেন।আমি আপনাদের ওয়েল উইশার।
সলিলবাবু উঠে দাড়াতে পশুপতিবাবু বললেন,কি জানেন আমার ছেলেটা খুব ইমোশনাল।এসে যদি শোনে মানে--।
বুঝতে পারছি।আপনাকে ভাল লেগেছে বলেই বলছি,রিয়ালিটি এবং ইমোশন অনেকটা অন্ন ব্যঞ্জনের মত।ব্যঞ্জন খাদ্যকে সুস্বাদু করে ঠিকই কিন্তু তাকে খাদ্য বলা যায় না।আচ্ছা আসি।  
[+] 4 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: যেখানে যার নিয়তি/কামদেব - by kumdev - 16-06-2020, 01:44 PM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)