Thread Rating:
  • 28 Vote(s) - 3.39 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance নষ্ট গলির মেয়ে (পতিতা) যখন বউ (সম্পূর্ণ)
#49
পর্ব-৪০
-----------------------------------




হসপিটালের বেডে শুয়ে আছে আনিকা। মাথার কাছেই দাঁড়িয়ে আছে আনিকার পরিবারের সদস্যরা। ঘন্টা দেড়েক আগে জ্ঞান ফিরেছে ওর। পুরো তিনঘন্টা পর মেয়েটার জ্ঞান ফিরেছে৷ ঘুমের ঔষধ খেয়েছিলো৷ কেনো খেয়েছিলো সে ব্যাপারে কিছু জানা নেই পরিবারের সদস্যদের। রুমের বাহিরে বসে আছে মায়া৷ মুখোমুখি চেয়ারটাতে বসে আছে সোহান। সকালে ঘুম থেকে উঠে মায়াকে যখন বাসার কোথাও খুঁজে পাচ্ছিলো না তখন শামীম এসে জানালো মায়া ঘুম থেকে উঠে নাস্তা না করেই কোথাও তড়িঘড়ি করে বের হয়ে গেলো। কোথায় গেছে সে ব্যাপারে জানা নেই শামীমের। অবশেষে মায়াকে ফোন করে জানতে পারলো আনিকার কথা। খবরটা পেয়েই হসপিটাল চলে এলো সোহান। প্রিয়তমা স্ত্রীর পরম প্রিয় বান্ধবী হলো আনিকা। নিশ্চয়ই এতক্ষণে মায়ার হাল বেহাল হয়ে গেছে৷ তাই ওকে সঙ্গ দিতে সোহানের এখানে আসা। আপাতত দুজনই চুপচাপ বসে আছে। কারো মুখে কোনো কথা নেই। কেবিনের দরজায় এসে দাঁড়ালো আনিকার ভাই। বললো,

- মায়া,,,,
- জ্বি ভাইয়া?
- এক কাজ করো তুমি বাসায় চলে যাও। অনেকক্ষণ হলো এখানে এসেছো। ভাইয়াও কাজ ফেলে এখানে বসে আছেন৷ তাছাড়া আনিকা এখন ভালো আছে। শুধুশুধু কষ্ট করে এখানে বসে থেকো না।
- কিসের কষ্ট! কি যে বলেন না! আমি থাকি এখানে। সমস্যা নেই।
- আমরা আছি তো। তুমি চিন্তা করো না।
- না ভাইয়া। আমি.....
- তোমাকে যেটা বলি সেটা শুনো। আনিকাকে বোধহয় কাল রিলিজ করে দিবে। তুমি কাল বাসায় চলে এসো। দুই তিনদিন আনিকার সাথে সময় কাটিয়ে যেও। ওর ভালো লাগবে। তাছাড়া তোমার সাথে ওর ব্যাপারে কথাও আছে। তুমি বাসায় আসলে ঠান্ডা মাথায় সেসব শুনবো।
- জ্বি।
- ভাইয়া আপনার কোনো আপত্তি নেই তো মায়া যদি দুই তিনদিনের জন্য আমাদের ওখানে থেকে আসে?
- আরে নাহ, সমস্যা হবে কেনো? মায়ারও অনেকদিন হয় কোথাও গিয়ে একটু বেড়ানো হচ্ছে না৷ পড়া বিজনেস সংসার সব মিলিয়ে বেচারী একদম হাঁপিয়ে যাচ্ছি। একটু ব্রেক দরকার। ভালোই হবে দুই তিনদিন আপনাদের ওখান থেকে বেড়িয়ে আসলে। মায়ার মাইন্ড রিফ্রেশ হবে আনিকাও সঙ্গ পাবে।
- তাহলে মায়া আনিকাকে রিলিজ করে বাসায় নেয়ার পর তোমাকে ফোন করে জানাবো।
- জ্বি। আমি ওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসি।
- হুম, হুম যাও।

কেবিনের দরজা ঠেলে ভিতরে গেলো মায়া। আনিকা চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে৷ আনিকার কপালে হাত রাখলো মায়া।
- আনিকা, আমি আসি। কাল তোর সাথে দেখা হবে।

চোখ বন্ধ রেখেই মায়ার হাতের কব্জি চেপে ধরলো আনিকা। ফোঁপাচ্ছে সে। চোখের কোন বেয়ে পানি ঝরছে।

- কাঁদবি না তো। তোকে কাঁদতে দেখলে কষ্ট হয়।
-................
- এই তোকে না করেছি কাঁদতে।
- ও কিভাবে পারলো?
- চুপ। শুনবো। সব শুনবো। এখন না। কাল যাবো তোর বাসায়। তিন চারদিন থাকবো তোর সাথে। তখন সব শুনবো।
- সত্যিই আসবি তো?
- হ্যাঁ আসবো।

রেস্টুরেন্টে চুপচাপ বসে খাবার খাচ্ছে মায়া আর সোহান। এভাবে চুপ করো বসে থাকতে ভালো লাগছে না সোহানের। মায়াকে স্বাভাবিক ভাবপ কথা না বলতে দেখলে ভিতরে উশখুশ চলতে থাকে। নীরবতা ভেঙে কথা বলতে শুরু করলো সোহান।

- খাবারটা বেশ ভালো। তাই না?
- হুম।
- আরো কিছু অর্ডার করবো?
- আরে নাহ। পাগল নাকি? কে খাবে এত খাবার?
- আমার গিফট কোথায়?
- বাসায়। আলমারিতে আছে।
- কি কিনেছো?
- বাসায় যেয়ে দিয়ে দিবো। তখন দেখে নিবেন।
- শুনো না....
- হুম।
- মনটা খারাপ করে রেখো না তো। ভালো লাগে না তোমাকে এভাবে দেখতে। জানি তোমার মনটা খারাপ। তবুও ভালো লাগছে না তোমাকে এমন মনমরা দেখতে।
- হাসি না আসলে কি করবো?
- ঠিকাছে হাসি আসছে না। কিন্তু কথা তো বলতে পারো। কথা বলো আমার সাথে।
- ভালো আছেন?
- খুব প্রিয় কেও যখন ভালো থাকে না তখন আমি কি করে ভালো থাকি?
- আসলে ওর জন্য চিন্তা হচ্ছে।
- আচ্ছা ও এমন করলো কেনো?
- পুরো ঘটনা জানি না। তবে আন্দাজ করতে পারছি।
- কি?
- একজনের সাথে প্রেম চলছে তিনবছর যাবৎ। নাম শোভন। সিরিয়াস পর্যায়ের প্রেম। এতদিন শোভন ভাই বিয়ে করবো বিয়ে করবো বলে পাগল করে ফেলেছিলো। আনিকাও সেসব শুনে একদম আহ্লাদে গদগদ।
- হুম। তারপর?
- মাস তিনেক আগে শুনেছিলাম উনি আনিকাকে প্রস্তাব দিয়েছে ফিজিক্যালি ইনভলভ হওয়ার জন্য। আনিকা দোটানায় ভুগছিলো ব্যাপারটা নিয়ে। আমার সাথে শেয়ার করলো। আমি ওকে কড়া গলায় না করেছি এমন কিছু যেনো না করে৷ আমার না শুনে জিজ্ঞেস করলো বা করছি কেনো? শোভন ভাই তো ওকে বিয়ে করবেই। তাহলে অসুবিধা কোথায়? তখন ওকে বুঝালাম এই লোকের সাথে বিয়ে হবেই তার গ্যারান্টি কি? নাও তো হতে পারে। লোকটা যে দুদিন পর পরিবর্তন হবে না তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে? আর ভাগ্য নামে কিছু আছে। ভাগ্যে যদি বিয়েটা না লিখা থাকে তাহলে কি বিয়ে সম্ভব? ভাগ্যে কি আছে তা তো আর ও জানে না।
- এরপর কি ও তোমার কথা মেনে নিয়েছে?
- হুম মেনেছিলো তো। আমি ওকে কয়েকদফা জিজ্ঞেস করেছি এ ব্যাপারে। ও প্রতিবারই বলেছে ওরকম কোনো সম্পর্কে ও জড়ায়নি। তবে মাসখানেক যাবৎ লক্ষ্য করছি শোভন ভাইয়ের সাথে ওর বেশ ঝামেলা যাচ্ছে। মন মেজাজ বেশ খারাপ থাকে। পুরো ঘটনা বলে না উনার সাথে সমস্যা কি হয়েছে।
- পুরো ঘটনা হলো তোমার বান্ধবী মিথ্যা বলেছে। ছেলে মজা নিতে এসেছে৷ মজা পেয়েছে। এখন তোমার বান্ধবীর আর কোনো প্রয়োজন নেই তাই ব্রেকআপ করতে চাচ্ছে অথবা করে ফেলেছে।
- আমারও তাই মনে হচ্ছে। ব্যাপারটা আরো আগেই সন্দেহ হয়েছিলো। কিন্তু ও স্বীকার না করলে কি করবো বলো?
- সেটাই৷ অস্বীকার করলে তো আর কিছু করার নেই। টেনশন নিও না তো। সব ঠিক হয়ে যাবে।
- আজ আমাদের এ্যানিভারসারি। অথচ আমি অন্য চিন্তায় ডুবে আছি। সরি। আসলে চিন্তাটা মাথা থেকে ঝাঁড়তে পারছি না।
- তুমি তো এই স্বভাবেরই। মাথায় কোনো পোকা ঢুকলে সেই পোকা মাথার মধ্যে নড়াচড়া করতেই থাকে।



চলবে.....
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
[+] 2 users Like Biddut Roy's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: পতিতা যখন বউ - by X men - 13-06-2020, 12:58 AM
RE: নষ্ট গলির মেয়ে (পতিতা) যখন বউ - by Biddut Roy - 13-06-2020, 08:05 PM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)