10-06-2020, 08:42 PM
[পচাত্তর]
রান্না শেষ বন্দনার মনে হল ধনেশ ফিরল।ভোরবেলা বেরিয়েছিল বালির লরি আসার কথা।তোয়ালে কাপড় নিয়ে বাথরুমে যাবে পিছন হতে জাপটে ধরে ধনেশ।বন্দনা বলল,আঃকি হচ্ছে কি?ছাড়ো।
বন্দনা ভাবে যখন ছিলনা তখন একরকম আবার এখন হয়েছে তাতেও জ্বালা।বাবু বলল,চলো একবার করি।
কলেজে যাবো না?খালি করলেই হবে?রাতে ভুষ-ভুষ করে ঘুমোবে এখন গরম চ্যাগাড় মেরে উঠেছে।
নটাই বাজেনি সোনা,চলো।কতক্ষন লাগবে?
সব সময় ভালো লাগে না।ঘরে গিয়ে বোসো চা দিচ্ছি।
ধনেশ ব্যাজার মুখে ঘরে ঢুকে গেল।বন্দনার খারাপ লাগে এত আশা নিয়ে এসেছিল।এক কাপ চা নিয়ে ধনেশকে দিয়ে টেবিলে ভর দিয়ে কাপড় কোমর অবধি তুলে পাছা উচু করে বলল,এসো ঝরিয়ে না দিলে অসস্তি হবে সারাদিন।
উৎসাহিত হয়ে দ্রুত চা শেষ ধনেশ বাড়া বের করে বলল,একটি চুষে শক্ত করে দাও তো?
একটূ আগে দাত মাজলাম,বাড়া মুখে নিতে পারব না।প্রত্যাখ্যাত হয়ে ধনেশ ডানহাতে বাড়াটা ধরে ঝাকাতে থাকে।ধনার কাণ্ড দেখে বন্দনার হাসি পায় বলে,এসো দাড়া করিয়ে দিচ্ছি।
ধনেশ বাড়াটা বন্দনার মুখের কাছে ধরল।বন্দনা বাড়াটা মুখে নিয়ে চুষতে লাগল। ধনেশ বলল,জানো কাগজে দিয়েছে বাই পাশ কাণ্ডে তিনটেকে ধরেছে পুলিশ।
মুখ হতে বাড়া বের করে হাত দিয়ে নাড়তে নাড়তে বন্দনা জিজ্ঞেস করে,ছুরি দিয়ে গুড ফালা ফালা করল সেই ব্যাপারে আর কোনো খবর দিয়েছে?
তোমার কলিগের স্বামীর ব্যাপারে?উনি কি বলছেন এ ব্যাপারে?
কদিন কলেজে আসছে না। বেচারির জন্য খারাপ লাগে।বন্দনা বলল,কঙ্কাকে সুন্দরী বলা যায় অথচ কি ভাগ্য দেখো?
একা একা সারা জীবন কাটাতে হবে।
একদিন নিয়ে এসো তিনজনে মিলে মজা করা যাবে।ধনেশের গলায় লোভের সুর।
করাচ্ছি মজা।বউ অসুস্থ শরীরে কষ্ট হয় ঠিক আছে,এখন তো আমি আছি তাহলে?বন্দনার গলায় উষ্মা।
রাগ করলে?হি-হি-হি এমনি মজা করলাম।
ধনেশ বাড়াটা বন্দনার গুদে ঢোকাবার চেষ্টা করে।বন্দনা বাড়ার দিকে তাকিয়ে মনে পড়ল কঙ্কার ফ্লাটে মনুর সেদিনের বাড়ার কথা।উফস পড়পড় করে ঢুকছিল যেন শূল ঢুকছে। ইতিমধ্যে ধনেশ বাড়া ভরে ঠাপাতে শুরু করেছে।বন্দনা ভাবছে উপরেই জগঝম্প ভিতরে কিছু টেরই পাওয়া যাচ্ছে না।ভিতরে পড়ল কি পড়ল না কিছুক্ষনের মধ্যেই নেতিয়ে পড়ল ধনেশ।
কঙ্কা সকাল সকাল নিজেকে তৈরী করে।আজ কলেজ যাবে শেফালীকে ডেকে বুঝিয়ে দিল রিক্তাকে কখন কি করে দিতে হবে।পেস্তা কাজুর বয়াম দেখিয়ে দিল।
শেফালী মনে মনে ভাবে বড় ভাগ্য করে এসেছিলি রে বুচি।
কঙ্কা বাথরুমে ঢুকে গেল।শেফালী রান্না ঘরে গিয়ে দুধ গরম করে কোকো মিশিয়ে রিক্তাকে দিতে গেল।
তুমি কেন মাম্মী কই?রিক্তা মুখ ফিরিয়ে বলল।
শেফালী অবাক হয় এই মেয়েরে পেটে ধরে বয়ে বেড়িয়েছে তার এই ব্যবহার?বলল,ম্যাডাম বাথরুমে গেছে কলেজ যেতি হবেনা তুমারে নিইই বসি থাকলি চলবে?
ওভাবে বলছো কেন?কঙ্কা বাথরুম হতে বেরিয়ে বলল।শেফালীর হাত থেকে কোকোর গ্লাস নিয়ে রিক্তাকে খাওয়াতে খাওয়াতে বলল,আমি কলেজে যাব তুমি লক্ষ্মী হয়ে থাকবে?
আমিও কলেজে যাব।
যাবেই তো।আরেকটু বড় হও।এত ছোটোদের কলেজে নেবে না।
সন্দীপ বেরোবার আগে কল্পনা মনে করিয়ে দিল আজ কিন্তু ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।মস্তানটার উপর এত ভরসা সন্দীপের বিরক্তিকর লাগে।পরক্ষনে মনে হল এখন মস্তানদের জমানা বলল,ঠিক আছে তুমি রেডি হয়ে থাকবে।
আকাশে ছাই রঙের মেঘ।নরম আলো ফুটেছে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে কঙ্কা বেরিয়ে পড়ল।মনের মধ্যে একটা আশঙ্কা নেই তানয়।দিব্যেন্দু এখন তার স্বামী নয়।অটো হতে নেমে কলেজে ঢুকতেই ডলি বলল,কঙ্কাদি কদিন আসেন নি শরীর ভালো তো?
কঙ্কা হাসল ভাবখানা তেমন কিছুনা।বন্দনাদিকে দেখছেনা আসে নি নাকি?টিচার্স রুমে এপাশে ফিস ফিস আলোচনা চলছে।
তিনজন ধরা পড়েছে।
আমার মনে হয় আরো বেশি ছিল।
কেন মনে হচ্ছে?
তিনজনে করলে কেউ মরে নাকি?
আগে বেরিয়েছিল মেয়েটা * এখন বলছে .,পরী না কি নাম।কোনটা ঠিক কে জানে।
* মুস্লিম যাইহোক একজন মহিলার উপর জানোয়ারগুলো অত্যাচার করেছে সেটা তো ঠিক।
কঙ্কা বুঝতে পারে কি নিয়ে আলোচনা হচ্চে।আরতি বলল,ঐ ওরা তো সকাল থেকে রাত্তির পর্যন্ত একের পর এক--কই মরচে?আসলে ধরা পড়ার ভয়ে মেরে ফেলেছে। কঙ্কার মনে মনে হাসে আরতি ব্রথেলের কথা বলছে।লাস্ট পিরিয়ড করে ফিরে এসে দেখল বন্দনাদি বসে আছে।আর একটা পিরিয়ড হলেই ছুটির ঘণ্টা বাজবে।কঙ্কার আশঙ্কা ভুল কেউ দিব্যেন্দুর ব্যাপারে উচ্চবাচ্য করেনি।বন্দনাদির দিকে তাকিয়ে বলল,কখন এলে?
একটু দেরী হয়ে গেছে।বন্দনাদি হাসল।
তোমার ক্লাস শেষ?
হ্যা তোর জন্য বসে আছি।যাবি তো?
কলেজ থেকে বেরিয়ে হাটতে হাটতে বলল বন্দনাদি,বেরোচ্ছি অমনি বাবুর বেগ উঠেছে।
বেশ ভালোই আছো তাহলে?
ধুস পারে নাকি?বয়স হয়েছে না?বন্দনাদির মুখে দীর্ঘশ্বাস।
তোমার কি বয়স হয়নি?
বন্দনাদি মুখ ঘুরিয়ে কঙ্কার দিকে তাকিয়ে বলল,মেয়েদের বয়সে কিছু হয়না ওদের বয়স হলে আগের মত পারেনা।ও বলছিল একদিন নিয়ে এসো বাড়ীতে।তোর সঙ্গে আলাপ করতে চায়।
কঙ্কা বিরক্ত হল।ঋষি ঠিকই বলেছিল।বন্দনাদিকে সেদিন নিয়ে যাওয়াই ভুল হয়েছিল।
কিরে যাবি?বন্দনাদি জিজ্ঞেস করল।
তোমার বাসায়?এখন কোথাও যেতে ইচ্চে করেনা।
স্বাভাবিক।শুনলাম ঐ জায়গা নাকি একেবারে জড়িয়ে জরায়ু ছিড়ে গেছিল?
কঙ্কা বিরক্ত হয় ঐসব কথা ছাড়া কি অন্যকথা মনে আসেনা।বিয়ের পর আলহাদে গদগদ। কঙ্কা বলে, আমাকে এসব জিজ্ঞেস করছো কেন বলতো?
ঠিকই তুই কি করে জানবি?লোকটা একটা জানোয়ার। তোর কি দোষ?তুই ওসব নিয়ে ভাবিস না।ধনি খুব দুঃখ করছিল তোর জন্য।
আদর করে নাম দিয়েছে ধনি মনে মনে হাসে বলল, ওসব নিয়ে ভাবছিনা।অন্যকিছু দরকারে ব্যস্ত আছি।
তোকে একটা কথা বলবো?ঐসব ঝি-চাকরের মেয়েকে অমন আস্কারা দিস না।
কঙ্কার বুকে যেন সুচ বিদ্ধ হল।মুখে একটা কটু কথা এসে গেছিল কিন্তু বলল না। এই মহিলার পাশাপাশি হাটতেও ঘেন্না করছে।রিক্তাকে নিয়ে দোকানে গেছিল দোকানদার জিজ্ঞেস করেছিল,এ আপনার কাজের মেয়ের মেয়ে না?কঙ্কার মনে হল রিক্তাকে নিয়ে বাচতে হলে এ অঞ্চল ছেড়ে অন্যত্র দূরে কোথাও চলে যেতে হবে।
এখন একটু হালকা লাগছে কলেজে আসার সময় অস্বস্তি হচ্ছিল কলেজে কি পরিস্থিতির সামনে পড়তে হবে।যাক ব্যাপারটা সহজ হয়ে গেছে।
খুব একটা ভরসা না থাকলেও সাইট থেকে তাড়াতাড়ি ফিরে এসে সন্দীপ কল্পনাকে নিয়ে এল খিন কিল নার্সিং হোমে।ওয়েটিং রুমে ঢুকতে গিয়ে বাধা। এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট আছে?
এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট লাগবে না ড.এমাকে বললেই হবে।
লোকটি ওদের একটা কাউণ্টারের সামনে নিয়ে ফোকরে মুখ রেখে কি বলতে ভিতর থেকে জবাব এল,এমাসে হবে না পরের মাসে সেভেন্টিথ আফটার ফাইভ পিএম।
সন্দীপ বিরক্তি নিয়ে কল্পনাকে দেখল ভাবখানা হলতো?কল্পনা এগিয়ে গিয়ে ঋষির লেখা চিরকুট এগিয়ে দিয়ে বলল,দয়া করে এইটা ওকে দেখাবেন?
কি এটা? লোকটা কি বুঝলো কে জানে বলল,ঠিক আছে পাঠিয়ে দিচ্ছি বাইরে অপেক্ষা করুন।
কল্পনাকে পাশে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,তুমি কি অপেক্ষা করবে?
এতদুর থেকে এসেছি দেখি না কি হয়?কল্পনা দ্বিধা জড়িত গলায় বলল।
একের পর এক ডাক আসছে ভিজিটরস রুম প্রায় ফাকা হতে চলল।সন্দীপ কোথাও গেছে হয়তো সিগারেট ফুকতে।কল্পনার অস্বস্তি হয় সন্দীপ ফিরলে কি বলবে?
ঋষি সাধুর মোড়ে ভজাদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছে।আজ এমার চেম্বার আছে শীঘ্রি ডাক পড়ার সম্ভাবনা নেই।চায়ের কাপ এগিয়ে দিয়ে কোহিনুর বলল,বস বিচ্ছুটার একটা নাম ঠিক করে দাও।
কোহিনুর বয়সে বড় এখন ঋষিকে তুমি-তুমি বলে।ঋষী মনে মনে ভাবে নামে কি এসে যায়।বৃক্ষ তোমার নাম কি?ফলেন পরিচিয়তে।তবু মানুষ অনেক আশা স্বপ্ন নিয়ে সন্তানের নামকরণ করে।ঋষি হেসে বলল,বাবুলাল তুমি একটা পছন্দের নাম দাও। বাবুলাল বলল,না বস তুমি দাও কে কোথায় হারিয়ে যাবে বড় হয়ে ইয়াদ করবে চাচা এইনাম ওকে দিয়েছিল।
চুপ করো খালি অশুভ কথা।কোহিনুর ধমক লাগালো।
তুই অশুভ কথা ভাবছিস বস অন্য কোথাও যেতে পারেনা?বস তুমি একটা নাম দাও।তোমাকে বস বলি কিন্তু আমি তোমার বড়ভাইয়ের মত।
ঋষি ভাবে এত ছোটো পরিসর অথচ এদের মন কত বড়।ফোন বাজতে উঠে ঘরের বাইরে গিয়ে কানে লাগালো।হাতের তালু দিয়ে চোখ মুছে বলল,হ্যালো?...ও তুমি এসেছো?...ড.এমাকে কাগজটা পাঠিয়ে দিয়েছো?...ঠিক আছে ওয়েট করো।
ঋষির সঙ্গে কথা বলে কল্পনার মনে ভরসা এল। সেই লোকটা একটু দূরে দাঁড়িয়ে দেশলাই কাঠি দিয়ে দাত খুটছে।ভীড় নেই লোকটির ব্যস্ততাও নেই।কল্পনা উঠে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,চিঠিটা ম্যাডামকে দিয়েছেন?
লোকটি হতচকিত চিনতে পেরে বলল,তখনি পাঠিয়ে দিয়েছি।
কিছু বলেছেন?
সেটা বলতে পারব না।আমি তো যাইনি।
সন্দীপ আসতে বিমর্ষমুখে বলল,কি করি বলতো?
কি করবে এবার বাড়ী চলো।
এমন সময় ডাক এলো,মিসেস কল্পনা।
কল্পনা বুঝতে পারেনা কি করবে।লোকটা বলল,কল্পনা আপনার নাম?তাহলে চলে যান।সন্দীপকে বলল,আপনি এখন না, ডাকলে যাবেন।
কল্পনা ভিতরে ঢুকতেই একজন নার্স এগিয়ে এসে তার ওজন নিল প্রেশার মাপলো।তারপর ড.এমার সামনে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিল।
ড.এমার হাতে ঋষির লেখা চিরকুট।মুখে কৌতুকের হাসি।
আপনার নাম কল্পনা?
হ্যা কল্পনা দত্ত।
মনে করুন আপনার নাম আছে এক নম্বরে তার আগে কেউ ঢুকলে আপনি বিরক্ত হবেন না?
কল্পনা কি বলবে বুঝতে পারে না।
ড.এমা বললেন,সেজন্য আপনাকে এতক্ষন অপেক্ষা করতে হল।
এমন সময় একটি ছেলে এক প্লেট মিষ্টি এনে দিল।ড.এমা বললেন,খেতে খেতে কথা বলুন।
কল্পনা কিছুটা সহজ সন্দেশে কামড় দিয়ে বলল,আপনি ঠিকই বলেছেন।আমাকে বললে চলে যেতাম।
ওহ গড।আপনি আপনার বন্ধুকে চেনেন না?ও একটা গুণ্ডা।চলে গেলে আমার অবস্থা কি হতো?
কল্পনা ধন্দ্বে পড়ে যায় ড.এমা তাহলে ঋষিকে ভয় পায়?ঋষিকে ভালোই চেনে মনে হচ্ছে।খাওয়া হয়ে গেলে একটা টেবলে শুইয়ে হাতে গ্লাভস পরে ভিতরে হাত ঢুকিয়ে পরীক্ষা করে কি বোঝার চেষ্টা করলেন।তারপর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে বললেন,সব ঠিক আছে।তারপর কাগজে কবে সম্ভাব্য তারিখ লিখে দিয়ে বললেন,এখানে ভর্তি হলে এই নম্বরে ফোন করবেন।সঙ্গে কে এসেছে?
আমার স্বামী এসেছে।
ড.এমা ইশারা করতে নার্স সন্দীপকে ভিতরে ডেকে আনলেন।ড.এমা বললেন,মি দত্ত এভ্রিথিং ওকে।কোনো চিন্তা করবেন না।
বাইরে বেরিয়ে সন্দীপ বলল,কি ব্যাপার বলতো?আমাকে মিষ্টি দিয়ে গেল।তুমি কিছু বলেছো?
আমাকেও খুব খাতির করলেন। ঋষির পরিচয় মনে হল ড.এমা জানেন।
এখন গুণ্ডা বদমায়েশের জমানা।সন্দীপ বলল।
কল্পনার কথাটা খারাপ লাগলেও ভেবে দেখল সন্দীপ মিথ্যে বলেনি।গাড়িতে উঠে সামনে সন্দীপের পাশে বসে ঋষির কথা ভাবে কল্পনা।আশিসের কাছে শুনেছিল একটু-আধটু।ছেলেটা গ্রাম থেকে এসেছে।বাবা-মা নেই দিদির বাসায় থাকে।সত্যি মানুষ কত বদলে যায়।