09-06-2020, 11:08 PM
(This post was last modified: 11-06-2020, 02:02 PM by kumdev. Edited 4 times in total. Edited 4 times in total.)
মণিদা ছোড়দার বন্ধু আমাদের বাড়ীতে কেউ তাকে পছন্দ করে না। পাড়ায় মণিদার খুব বদনাম।ছোড়দা আর মণিদা একসঙ্গে এমসিএ পড়ে।কম্পিউটারে মণিদা বেশ দক্ষ কোনো সমস্যা হলে ছোড়দা মণিদাকে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে আসে।বড়দা বলে, তোরা দুজনেই এমসিএ পড়ছিস তাহলে সাহায্যের জন্য ওকে ডাকতে হয় কেন?
--দ্যাখো বড়দা ওর এই ব্যাপারে আলাদা ন্যাক আছে সে তুমি বুঝবে না।
মণিদা এলেই তার চোখ রাডারের মত আমাকে খোজে আমি বুঝতে পারি।সামনে যাই না আড়াল থেকে দেখি। মণিদার বদনামের কথা ভেবে মণিদাকে দেখলে আমার গা ছম ছম করে। কি নিয়ে বদনাম মণিদার আমি ঠিক জানি না জানতে ইচ্ছে হয়। আমি ছোটো বলে সবাই আমাকে এড়িয়ে যায়। কম্পিউটারে বসে কি করছে মণিদা ছোড়দা পাশে বসে আছে। দোতলা থেকে মা মণি-মণি বলে ডাকাডাকি শুরু করেছে। আমি উপরে উঠে গেলাম। আমার নামও মণি মানে মণিমালা আর মণিদার নাম মণি শঙ্কর। খুব মজার তাই না?
--ঐ বদ ছেলেটা নীচে এসেছে তুই ওখানে কি করছিলি?
--কার কথা বলছো কে এসেছে? আমি তো আমার ঘরে পড়ছিলাম।
--খোকাটা কেন যে ঐ নোংরা ছেলেটাকে বাড়ীতে আনে? ছি-ছি এই বয়সে ওইসব?
মায়ের কথা বোধগম্য হয় না মণিদা কেন নোংরা আমার কৌতুহল আরো বাড়িয়ে দেয়।আমাদের কলেজের শ্রেয়া খুব পাকা ওর আবার লাভার আছে।একদিন ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম মণিদাকে সবাই কেন খারাপ বলে? হি-হি হাসিতে গড়িয়ে পড়ে আর কি?হাসি থামলে বলল,তোর দাদার বন্ধু তুই জিজ্ঞেস করতে পারিস না?
রাগ হয় বললাম,থাক তোকে বলতে হবে না।
--আমি ভাল জানি না শেখর আমাকে বলেছে দেবযানী আন্টির সঙ্গে নাকি কি সব করেছে।
--কি করেছে?
--অত বলতে পারবো না শেখর যা বলেছে তাই বললাম।
শেখর বানিয়ে বানিয়ে বলতেও পারে।জিজ্ঞেস করি,কি করে জানলো শেখর?
রেগে গেল শ্রেয়া বলল,দেখ মণি শেখর ওরকম ছেলে নয় লোকের নামে মিথ্যে বলে বেড়াবে।আর সবাইকে তো বলেনি শুধু আমাকে বলেছে। আমাকে ও সব কথা বলে।
লাভারের কথায় একেবারে গদগদ।শেখরকে আমি দেখেছি,দেখতে তেমন কিছু না। নিজের লাভারকে সব মেয়েই মনে করে উত্তম কুমার। মণিদার প্রতি আমার কোনো দুর্বলতা নেই আমি এড়িয়ে চলি বাড়ীর সবাই ওকে দুচ্ছাই করে বলে কেমন একটা মায়া জন্মে গেছে।কে জানে দেবযানী আন্টির সঙ্গে কি করেছে। তেরাস্তার মোড়ে হলুদ রঙের বাড়ীটা দেবযানী আণ্টিদের,স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকরি করে।পাড়ায় খুব একটা মেশে না সেই রাগ থেকেও বদনাম রটাতে পারে।দেবযানী আণ্টির পাশের বাড়ীটা ডলিপিসিদের, ডলিপিসি আমাদের পাড়ার মেয়ে বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ী চলে গেলেও বিধবা হয়ে আবার ফিরে এসেছেন ভাইয়েদের সংসারে। ডলিপিসির লাইফটা খুব স্যাড। বিদ্যাসাগরের বিধবা বিবাহ আন্দোলন পড়তে পড়তে আমার ডলিপিসির কথা মনে পড়তো। মাঝে মাঝে আমাদের বাড়ী আসে মায়ের সঙ্গে গল্প করতে। ডলিপিসিকে সবাই বলে গেজেট। পাড়ার সব খবর ডলিপিসির নখ দর্পনে। কে জানে ডলিপিসিই হয়তো মায়ের কানভারী করে থাকতে পারে। আসল সত্যিটা কি মণিদাই বলতে পারবে।
মণিদাকে নিয়ে এত কথা বলছি বলে ভাববেন না মণিদার প্রেমে পড়ে গেছি।আসলে বাড়ীর সব্বাই এমন দূরছাই করে বলে মনের মধ্যে মণিদা সম্পর্কে অদম্য কৌতূহল বাসা বাঁধে।