08-06-2020, 08:41 PM
[তেষট্টি]
ঠেলাঠেলিতে ঘুম ভেঙ্গে গেল চোখ মেলে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে ঋষি।কোথায় সে স্বপ্ন দেখছে নাকি?পাশে শায়িত এমাকে দেখে ধরফড়িয়ে উঠে বসল।এমার উরু অবধি উঠে যাওয়া লুঙ্গি টেনে নামিয়ে দিল।মনে পড়ল কাল রাতে সে এমার সঙ্গে শুয়েছিল।তার দিকে তাকিয়ে মিট্মিট করে হাসছে এমা, দাঁত দেখিয়ে বলল,ব্রাশ।
ঋষি খাট থেকে নেমে বাথরুমে গিয়ে এমার ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে এমার গলা জড়িয়ে ব্রাশ করে দিল।একটা বড় বাটিতে জল এনে মুখ ধুয়ে দিল।তারপর নিজের ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে দাঁত মাজতে মাজতে নীচে গিয়ে চা আর টিফিনের ফরমাশ করে উপরে উঠে বাথরুমে গিয়ে চোখ মুখ ধুয়ে সোফায় এসে বসল।
এমা জিজ্ঞেস করল,ইউ-নিভ-ইনভ?
ঋষির মনে হল ইউনিভার্সিটির কথা বলছে।বলল,এ অবস্থায় রেখে কি করে যাই বলো?
ননা-ননা–।বিছানায় চাপড় মারতে মারতে এমা বলতে থাকে।
ঋষি থামাবার জন্য বলল,ঠিক আছে যাবো।
এমা শান্ত হল।ক্যাণ্টিন হতে ডিমের পোচ টোস্ট দিয়ে গেল।ঋষি উঠে খাওয়াতে থাকে এমাকে।ইতিমধ্যে চাও দিয়ে গেল।ঋষির কাজের শেষ নেই।ওকে ফেলে কি ভাবে ইউনিভার্সিটি যাবে? না গেলেও অশান্তি করবে।ঋষি বলল,ড.হালদারকে বলে একজন ফিজিওথেরাপিস্টের ব্যবস্থা করছি।
এমা চায়ে চুমুক দিতে গিয়ে মুখ সরিয়ে নিল।ঋষি বলল,এই অবস্থায় ফিজিও ছাড়া হবে না।
আই দোন্ত ওয়ান্ত এনি আদার এলস তু তাচ মাই বদি।এমা বলল।
ঋষি অবাক বডী টাচ করলে ক্ষয়ে যাবে?ঋষি বলল,তুমি একজন ডাক্তার হয়ে এসব কি বলছো?দুহাতে এমার গাল ধরে ঋষি বলল,জিদ করেনা ফিজিও এখন একমাত্র চিকিৎসা।
এমা ফিক করে হেসে বাহাতের তর্জনি ঋষির বুকে ছুইয়ে বলল,ইউ-ইউ দু।
আমি?আমি কি এসব জানি?
মুখ ঘুরিয়ে কাত হয়ে পড়ল বিছানায়।ঋষি বুঝতে পারে রাগ করেছে।কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল, ঠিক আছে আমি করবো।এবার ওঠো স্নান করিয়ে খাইয়ে আমাকে বেরোতে হবে।না কি যাবো না?
এমা বা-হাত তুলে ধরলো ঋষি টেনে ধরে উঠিয়ে বসালো।ঘড়ি দেখল ইউনিভার্সিটি যেতে হলে এখনই তৈরী হতে হয়।নিজের ঘরে গিয়ে বাথরুম সেরে এসে এমাকে কোলে নিয়ে কমোডে বসিয়ে দিয়ে বেরিয়ে এল।আলমারি খুলে একটা জামা আর একটা লুঙ্গি বের করে বাথরুমের হ্যাঙ্গারে রেখে ভাবে এবার স্নান করাবে কিভাবে?এই অবস্থায় অতশত ভাবলে হবে না।
জামা লুঙ্গি খুলে একপাশে ফেলে রাখল।তারপর এমাকে বুকে জড়িয়ে শাওয়ারের নীচে দাড়ালো।পরম নির্ভরততায় ঋষির বুকে মাথা এলিয়ে দিল।ঋষি বা-হাতে পাছা ধুয়ে দিল।সারা গা হাত দিয়ে কচলে কচলে ধুয়ে তোয়ালে দিয়ে গা মুছিয়ে দিল।হ্যাঙ্গার থেকে লুঙ্গি নিয়ে পরিয়ে জামা গায়ে দিয়ে কোলে করে হুইল চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে নিজেও স্নান কোরে নিল।ঘরে এসে চিরুণি দিয়ে এমার চুল ঠিক করে দিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল।প্রস্তুত হয়ে নীচে ক্যাণ্টিনে খাবারের কথা বলে উপরে উঠে এল।ঋষি দেখতে থাকে কেমন বাধ্য মেয়ের মত যা বলছে কোনো আপত্তি করছে না।
আজ ড.এমার চেম্বারে বসার কথা।ত্রিদিবেশবাবু ভাবছেন সব এ্যাপয়ণতমেণ্ট ক্যান্সেল কোরে দেবেন।তার আগে ডক্টর ম্যাডামকে একবার জিজ্ঞেস করা দরকার।অবশ্য এই অবস্থায় উনি আর কি বলবেন? নিয়ম মাফিক বলা আরকি। ঋষি খাইয়ে দাইয়ে মুখ ধুইয়ে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে চুমু খেয়ে বলল,লক্ষী হয়ে থাকবে।কিছু হলে আমাকে ফোন করবে কেমন?
এমা ঘাড় কাত করে সম্মতি জানালো।ঋষি বলল,তুমি আবার ভাল হয়ে উঠবে দেখবে একেবারে আগের মত।
এমা মিষ্টী কোরে হাসলো।ঋষি চলে গেল।ত্রিদিবেশবাবু ডাকতে গিয়েও ডাকলেন না।উপরে গিয়ে ম্যাডামকে জিজ্ঞেস করার কথা মনে হল।কাল থেকে ওর সঙ্গে দেখা হয়নি।দেখাও হবে জিজ্ঞেস করাও হবে।
এমা ফোনে কার সঙ্গে কথা বলছে।ত্রিদিবেশবাবু বাইরে দাঁড়িয়ে গলা খাকারি দিলেন।এমা ফোন রেখে বলল,আসুন।
ত্রিদিবেশবাবু ঢূকে জিজ্ঞেস করলেন,ম্যাডাম কেমন আছেন?
অনেকটা ভাল।
ম্যাডাম আপনার এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট গুলো ক্যান্সেল করে দিচ্ছি?
আপনি ড.হালদারের সঙ্গে কথা বলুন।উনি কি বলেন তারপর আমাকে বলবেন।
নীচে গিয়ে কিছুক্ষন পর ফিরে এলেন ত্রিদিবেশবাবু।ড.হালদারের সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে খুশি নন। ড.এমা জিজ্ঞেস করল,উনি কি বললেন?
বললেন কাজের মধ্যে থাকা ভাল।মিন মিন কোরে বললেন ত্রিদিবেশ বাবু।কিন্তু আপনি–।
সময় মত একজন লোক পাঠিয়ে দেবেন।আমাকে হুইল চেয়ারে নিয়ে বসিয়ে দিলেই হবে।
ত্রিদিবেশবাবু বললেন,আমি আসছি ম্যাম?
অদ্ভুত লাগে এই অবস্থায় কিভাবে পেশেণ্ট দেখবেন?ড.হালদার পেশেণ্টের অবস্থা না দেখেই বলে দিলেন।ত্রিদিবেশবাবু ভাবলেন তার এত চিন্তার দরকার কি?ম্যাডাম খিনকে বিষয়টা আগেই জানানো উচিত ছিল।
পরপর দুটো ক্লাস ছিল।একেএস আসেন নি ঋষী ক্লাস থেকে বেরিয়ে নীচে নেমে এল।এমা হয়তো এখন ঘুমোছে। কাল সারাদিন সারা রাত নিজের কথা ভাবার সময় হয়নি।সারাক্ষন ব্যস্ত ছিল এমাকে নিয়ে।একসময় মনে হয়েছিল লেখাপড়া বুঝি এখানেই শেষ।এমাই জোর করে পাঠালো।ভগবানের কাছে প্রার্থনা করে ওকে আর কষ্ট দিও না।একজন ভাল ডাক্তার সুস্থভাবে থাকলে সমাজেরই মঙ্গল।
আমাকে চিনতে পারো?
ঋষি চমকে তাকিয়ে দেখল তার সামনে দাঁড়িয়ে পর্ণা।একটু হলেই ধ্বক্কা লেগে যেতো।
ঋষি হেসে বলল,তোমাকে মানে আপনাকে একবার যে দেখেছে তার পক্ষে সহজে ভোলা কি সম্ভব?
উ-বাবআঃ বেশ মেয়ে পটানো কথা বলতো তুমি?তাহলে কলেজে মেনিমুখো হয়েছিলে কেন?
যা মনে এল তাই বললাম।এখন আপনি–।
আবার আপনি কেন?তোমার কি ফার্স্ট ইয়ার?
হ্যা।
আগের বছর ভর্তি হলে এক ক্লাসে পড়তে পারতাম।
ব্যাড লাক।ঋষি দুঃখিত মুখে বলল ।
দেখো সব কিছু ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিও না।পর্ণার মনে একটা প্রশ্ন উকি দিল বলল,চলো চা খাবে?
ঋষি বলল,ক্যাণ্টিনের দিকেই যাচ্ছিলাম।
দুজনে ক্যাণ্টিনে ঢুকে একটা ফাকা টেবিলে বসল।পর্ণার মনে দ্বন্দ্ব জিজ্ঞেস করবে কিনা?বেয়ারা চা দিয়ে গেল।পর্ণার চোখের তারায় চঞ্চলতা ঋষির নজরে পড়ে।
একটা কথা জিজ্ঞেস করব সত্যি করে বলবে? কাপের হাতল নাড়তে নাড়তে পর্ণা জিজ্ঞেস করল।
খামোখা মিথ্যে বলতে যাবো কেন? অনুমান করার চেষ্টা করে কি বলতে পারে পর্ণা?আজ যেচে এত কথা বলছে যদি কলেজে বলতো তাহলে অন্যরকম কিছু হয়ে যেতো।
পর্ণা জিজ্ঞেস করল,কলেজে আমাকে তোমার ভাল লাগতো না?
তোমাকে এখনো ভাল লাগে।
বুঝতে পারছে না নাকি বুঝেও না বোঝার ভান করছে?পর্ণা বলল,আমি কি মিন করছি তুমি সত্যিই বুঝতে পারোনি?
ঋষি ভাবে এখন সেসব কথার কি মূল্য আছে?আবার ভাবে যেকথা বলি-বলি করে বলা হয়নি আজ বলে দিই মনের মধ্যে জমিয়ে রেখে কি হবে?ঋষি বলল,যখন বিএ-তে ভর্তি হলাম কলেজে অনেক ভালো লাগার মধ্যে একটা ভালোলাগা ছিল পর্ণা মিত্র।
পর্ণার শরীরে বিদ্যুতের শিহরণ অনুভুত হয়।ঋষি বলতে থাকে,সারাক্ষন তুমি কাছে থাকো আর না থাকো মন জুড়ে ছিলে তুমি।
তুমি সে কথা বলোনি কেন?পর্ণার গলায় ব্যাকুলতা।
বলতে ইচ্ছে হত কিন্তু তুমি না বলে দিলে তোমাকে পাওয়া এবং পাওয়ার আশা দুটোই নষ্ট হয়ে যাবে এই আশঙ্কায় বলা হয়ে ওঠেনি।নাইবা পেলাম আশাটা অন্তত বেচে থাকুক।
ইচ্ছেটা এখনোও আছে?পর্ণা জিজ্ঞেস করল।
ঋষি হাসলো বলল,বর্ষার ফুল শীতে ঝরে যায়।
পর্ণার মুখ ম্লান হয়ে গেল সব কিছু উড়িয়ে দেবার ভঙ্গীতে জিজ্ঞেস করল্,মনে হচ্ছে অন্য কাউকে পেয়েছো?দরজার দিকে তাকিয়ে ডাকল,এই কল্পনা।
কল্পনা কাছে এসে জিজ্ঞেস করল,ক্লাস নেই?
ছিল।পুরানো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হল কথা বলছিলাম।ঋষী আমার সঙ্গে পড়ত।
কল্পনা বলল,ওকে আমি চিনি আমাদের অঞ্চলে থাকতো।
ঋষি হাসল বলল,হ্যা ওকে আগে অনেক দেখেছি।
পর্ণা উঠে দাঁড়িয়ে বলল,তোরা গল্প কর।আচ্ছা ঋষি তার নামটা জানতে পারি?
নাম বললে চিনবে?তার নাম এমা।
সুন্দর নাম।নামটা আগে শুনেছি মনে হচ্ছে।তুমি বানিয়ে বলছো না তো? পর্ণা চলে গেল।
ঋষি জিজ্ঞেস করল,পর্ণাকে কি করে চিনলেন?আপনার তো ইতিহাস?
হ্যা,এখানেই আলাপ।
বেয়ারা দু-কাপ চা দিয়ে গেল।ঋষি বলল,এইমাত্র চা খেলাম।
আরেক বার খান।কল্পনা কাপ ঠেলে দিল।
ঋষি চায়ে চুমুক দিয়ে বলল,এক সময় আপনার সঙ্গে কথা বলার খুব ইচ্ছে হয়েছিল–।
আমার সঙ্গে?
আপনাকে সাবধান করে দেবার জন্য কিন্তু শেষ পর্যন্ত বলতে পারিনি।
কল্পনা বুঝতে পারে কোন ব্যাপারে ঋষী বলতে চাইছে বলল,বুলুর কাছে কিছুটা শুনেছিলাম।
বুলু মানে তমালের বন্ধু?যাক ঝামেলা মিটে গেছে শুধু শুধু একটা নির্দোষ মেয়ে কেবল আপনার নামের সঙ্গে মিলের কারণে অকালে মারা গেল।
সত্যি আমি দুঃখিত।আশিস এত নীচে নামতে পারে কোনোদিন ভাবিনি।
আপনি লাকি নিজেকে ঠিক সময়ে সরিয়ে নিয়েছেন।ক্যজুয়ালি বলল ঋষি।
কল্পনাকে বিমর্ষ দেখায় ঋষির মনে হল তার কথায় আহত হয়নি তো?কল্পনা আমার কথায় কিছু মনে করলেন?
কল্পনা মুখে হাসি টেনে বলল,না না আপনি বললেন লাকি সেটাই ভাবছি।
মানে?
আরেকদিন বলব।দেখা তো হবেই।আপনার চা ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে।
দু-কাপ চা খেলাম।পয়সা দিতে হলনা আমিও খুব লাকি।ঋষি মজা করে বলল।
কঙ্কা খাটে আধশোয়া হয়ে পর্ণ গ্রাফী পড়ছে।পুরানো বই।ঘড়ির দিকে দেখল সবে চারটে বাজে।রিক্তা বোধ হয় শেফালিকে বিরক্ত করছে।বিকেল হলেই বাইরে বেরোবার বায়না করবে।শেফালীর পক্ষে এখন বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়।দরজা খোলার শব্দ হল।কঙ্কা কান খাড়া করে এখন কে আসতে পারে?কোনো সাড়া শব্দ নেই তাহলে কি শেফালী মেয়েকে নিয়ে বের হল?গলা তুলে ডাকল,শেফালী।
শেফালী এসে দাড়ালো।ধনুকের মত বেকে গেছে শরীরটা।পেট ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে।কঙ্কা জিজ্ঞেস করে,রিক্তা কোথায় ঘুমোচ্ছে?
বাইরে ঘুরতি গেল।কিছুতেই থাকতি চায়না কি করবো?
একা একা--।
না একা না।
কঙ্কা বুঝতে পারে ফোন কোরে কানুকে ডেকে এনেছিল।কঙ্কার বুকের মধ্যে ঢিপ ঢিপ করে।খাট থেকে নীচে নেমে শেফালীর কাছে এসে পেটের উপর হাত রাখে।বুকের কাছে শাড়ীর বাধন।টেনে খুলে দিল।শেফালী অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।ম্যাডাম কি করতি চায়?কঙ্কা সায়া খুলে উলঙ্গ করে দিল।তারপর পেটের উপর হাত বোলাতে থাকে।ম্যাডামের কাণ্ড দেখে মিটমিট কোরে হাসে শেফালী।কঙ্কা এরপর অদ্ভুত কাণ্ড করে।নাইটী খুলে নিজেকে উলঙ্গ করে ফেলল।পাশাপাশি দাড়ালো শেফালীকে জিজ্ঞেস করে,এতবড় পেট তোমার অসুবিধে হয়না?
অসুবধে হবে ক্যান?আপনের হলি দেখতেন ভালই লাগে।মাঝে মাঝে ভিতরে নড়াচড়া করে বুঝা যায়।
কঙ্কার কথাটা ভাল লাগেনা।লক্ষ্য করল চেরাটা হা-হয়ে আছে।হাত দিতে বুঝতে পারে ভিজে ভিজে।পেটের মধ্যে মোচড় অনুভব করতে উঃমাগো করে উঠল শেফালী।
কঙ্কা মুখ তুলে জিজ্ঞেস করে,কি হল?
শত্রূটা ভিতরে শান্ত হয়ে থাকলি তো।
নিজের অস্বাভাবিক আচরন বুঝতে পেরে কঙ্কা নাইটী পরে ঘর থেকে বেরিয়ে ব্যালকনিতে চলে গেল।
খিন কিল নার্সিং হোমের ভিজিটিং রুমে সবাই অপেক্ষা করছে।বাইরেও কিছু লোকের জটলা।এক ভদ্রলোক চেম্বার থেকে বেরোতে আরেক ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করল,আচ্ছা ম্যাডামের কিছু হয়েছে?
বুঝলাম না।হুইল চেয়ারে বসে কিন্তু দেখে কিছু বোঝা গেলনা।আমাকে অপারেশনের ডেট দিলেন।
কিসের অপারেশন?
এ্যাপেন্ডিক্স।ম্যাডাম বললেন ভয়ের কিছু নেই অপারেশনের পরেরদিনই ছেড়ে দেবেন।
এই অবস্থায় উনি অপারেশন করবেন?
অপারেশন কবে হয়ে যেতো।ওনার ডেট পাচ্ছিলাম না বলে দেরী হল।একটা কথা বলি শুনুন উনি যদি অন্ধও হতেন তাতেও কিছু যায় আসেনা।
এমা চেম্বার এ্যাটেণ্ড করেছে শুনে মাথায় আগুণ জ্বলে উঠল।নার্সের বাধা ঠেলে ভিতরে ঢূকতে এমা মাথা নীচু করে বসে থাকে।তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বেরিয়ে এল।সোজা চলে গেল ম্যানেজারের ঘরে।ঋষি কিছু বলার আগেই ত্রিদিবেশ বলতে শুরু করেন, ড.হালদার বললেন, স্বাভাবিক জীবন থেকে সরিয়ে রাখা ঠিক নয় তাহলে ক্রমশ আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে যাবে।তাতে পঙ্গুত্ব শরীর হতে মনে গেড়ে বসবে।পেশেণ্টের পক্ষে ক্ষতিকর।
ঋষি উপরে উঠে নিজের ঘরে বিছানায় এলিয়ে পড়ল।ড.হালদারের কথা নিয়ে মনে মনে নাড়াচাড়া করতে থাকে।ঠিকই মনের রেজিসস্টাণস পাওয়ার নষ্ট হয়ে গেলে ওষুধে কোনো কাজ হবে না।মানুষ কাজ কোরে মনের জোরে সেই মনই যদি ভেঙ্গে যায়–ঋষির মনের উত্তাপ ক্রমশ নামতে থাকে।ড হালদার অবশ্য বলেছিলেন শি ইজ মেণ্টালি ফুল্লি এ্যালার্ট।
কতই বা বয়স এই বয়সে এমন উজ্জ্বল একটা জীবন ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাবে?চোখের কোলে জল টলটল করে।একদিন সময় করে ডাক্তার হালদারের সঙ্গে এমার ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করবে।
ত্রিদিবেশ মাইতি সংকটে পড়েছেন।ম্যাডাম চেয়ার পারসনকে ব্যাপারটা জানানো ঠিক হবে কিনা।দেখে প্যারালাইযড বলে মনে হচ্ছে না।আবার অত নামকরা ডাক্তার বিএন হালদারের কথাও উড়িয়ে দেওয়া যায়না।দু-একটা দিন দেখা যাক তারপর ভেবেচিন্তে কিছু করা যাবে।