Thread Rating:
  • 27 Vote(s) - 3.37 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance মৌ কথা কও by Raunak_3
#8
অরিত্র দিদানদের দিকে ইশারা করে ওকে বোঝাবার চেষ্টা করলোওরা কি ভাববে।
 
মাথা নেড়ে বোঝালোকিছু ভাববে না।
 
অরিত্র ভাবছিল কি করবেদিদান দুরের একটা পাহাড় দেখে ঘাড় ঘুরিয়ে মৌ এর দিকে তাকিয়ে বললদেখপাহাড়টা কি সুন্দর লাগছে
 
উঁআমার ঘুম পাচ্ছেতোমরা দেখ। ছবি তুলছে তোপরে দেখে নেব।
 
ঘুম পাচ্ছে তো শুয়ে পড়
 
কোথায় শোবোতোমার নাতি বসে আছে তোওর দিকে পা রেখে কি করে শোবো?
 
কোথায় আবারওখানেই শো
 
দিদান বলে দিয়েছে শুতেঅতএবআর কি ভাবার আছেএমন একটা ভাব করে অরিত্রর কোলে মাথা রেখে সিটের উপরে পা ভাঁজ করে শুয়ে পড়ে এক হাত দিয়ে ওর কোমর জ়ড়িয়ে ধরল।
 
শুক্লাদি একটা শাল ব্যাগ থেকে বের করে অরিত্রকে দিয়ে বললগায়ে দিয়ে দিতেনা হলে শীত করবে। কোলের উপরে শুয়ে থাকায় আর ইচ্ছে মতো ছবি তোলা যাচ্ছিল না দেখে দিদানকে দিয়ে ক্যামেরা টা দাদুর কাছে পাঠিয়ে দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে বসে ছিল, মৌ মাথাটা একটু তুলে আরো ঘন হয়ে শুলে তাকিয়ে দেখলোঘুমোয় নিওর দিকে তাকিয়ে আছে দুষ্টুমি ভরা চোখেভাবখানা যেন এমনদেখলে তোকেমন শুয়ে আছি তোমার কোলে মাথা রেখে। সামনের সিটের দিকে ওর মাথার পেছনটা থাকায় দিদানরা তাকালেও বুঝতে পারবে না, ও না ঘুমিয়ে তাকিয়ে আছে । চোখ কুঁচকে কিছু যেন একটা বলতে চাইলে অরিত্র ইশারায় জিজ্ঞেস করলোকি?
 
বাঁ হাত বাড়িয়ে ওর ডান হাত টা দেখিয়ে নিজের মাথার দিকে আঙ্গুল তুলে বোঝালো ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে হবে। মাথায়কপালে আস্তে আস্তে করে হাত বুলিয়ে দিতে শুরু করলে চোখ বুজে শুয়ে থাকলোমনে হলএবারে ঘুমোবে। অরিত্র বাইরের দিকে তাকিয়ে থেকে ওর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে ভাবছিলবলে তো দিলামআমাকে একটু সময় দাওকথা যখন দিয়েছিআমাকে পারতেই হবে। গাড়ীর দুলুনি আর তার সাথে খুব প্রিয় কাউকে এত কাছে পাওয়ার উষ্ণ অনুভুতিমনে যতই চিন্তা থাকুক না কেনবুকের ভেতরে একটা সুখের অনুভুতি নিয়ে নিজেই কখন ঘুমিয়ে পড়েছে বুঝতে পারেনি।
 
রাস্তা ছেড়ে আস্তে আস্তে গাড়ীটা একটা সরু রাস্তায় নামিয়ে এগোতে এগোতে পবন জানালো ওর বাড়ী আর একটু নীচে। কিছুটা নামার পর ছোট্ট একটা পাহাড়ী গাঁ, পিকচার পোস্ট কার্ডের মতো সাজানো পাহাড়ের ঢালে সাজানো ছোট ছোট বাড়ী। আরো একটু নীচে পাহাড়ের ধাপে ধাপে চাষের জমি। পবন গাড়ীটাকে নামাতে নামাতে একটা বাঁকঘুরে কিছুটা উঠিয়ে একটা ছোট্ট বাড়ীর সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে জানালো ওরা পৌঁছে গেছে। দিদান নামার আগে ঘাড় ঘুরিয়ে অরিত্রদের দিকে তাকিয়ে থমকে গেল। ক্ষনিকের জন্য হলেও বুকের ভেতরে একটা স্বপ্ন উঁকি দিয়ে চলে যেতে চাইলে সেটাকে আটকে রাখার চেষ্টা করে বললশুক্লা দেখ……কি সুন্দর ঘুমোচ্ছে দুটোতেকি ভালো লাগছে দেখতে তাই না
 
শুক্লাদি পেছন ফিরে দেখতে দেখতে বললতোমাকে তো কতবার বললামদাদুভাই এর সাথে খুব সুন্দর মানাবেদাদুভাই এর সাথে কথা বল
 
ভাবলেই তো আর বলা যায় না
 
 
 
ঘুম ভাঙ্গলো শুক্লাদির ডাকেএই দাদুভাইওঠএসে গেছি।
 
অরিত্র আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালোপাহাড়ের ধারে ছোট্ট একটা ছবির মতো বাড়িবাড়ীর এক দিকে ভুট্টার ক্ষেতআর একদিকে ছোট্ট একটা ফুলের বাগান। চোখ রগড়ে নিয়ে মৌ এর দিকে তাকালোপরম নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে। কাঁধে হাত রেখে আস্তে আস্তে নাড়া দিয়ে ওকে ডাকলোএইমৌওঠো।
 
ঘুম জড়ানো গলায় বললউঁঘুমোতে দাও না।
 
পবনের বাড়ী এসে গেছি তোওঠো।
 
 
 
আস্তে আস্তে উঠে বসে চোখ কচলে এদিক ওদিক তাকিয়ে বললকি সুন্দর জায়গাটাতাই না।
 
হুঁচলো
 
দিদানরা কোথায়?
 
সবাই ভেতরে গেছে
 
ততক্ষনে উনিশ কুড়ি বছরের একটি মেয়ে তাড়াতাড়ি করে এসে গাড়ীর কাছে এসে হাসিমুখে ওদের কে ভেতরে যেতে বললো। অরিত্র সামনের সিটটা লক খুলে নামিয়ে দিয়ে নেমে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে এদিক ওদিক দেখছিল, মৌ নেমে এলে মেয়েটা ওর দিকে এগিয়ে এসে জানালো ও পবনের বোন লছমী। ওদের দেরী দেখে বোধ হয় পবনও বেরিয়ে এলোবোনকে আদর মাখানো গলায় বকুনি দিয়ে বললদাঁড়িয়ে না থেকে জলদি ভাবীজীকে নিয়ে ভেতরে যেতে। পবনের পেছন পেছন একটা সাদা ধবধবে লোমে ঢাকা স্পানিয়েল বেরিয়ে এলোখুব বেশী হলে মাস তিনেক বয়স হবেঅরিত্রর দিকে তাকিয়ে দেখতে দেখতে দুবার ডেকে উঠলভাবখানা যেন বাইরে দাঁড়িয়ে আছো কেনভেতরে এসো।
 
দুটো মাত্র ছোট ছোট ঘর ওদের কিন্তু চারদিকে যত্নের ছাপ, কেউ আসবে বলে যে গোছানোর চেষ্টা করা হয়েছে তা নয়। পবনের মা খুব যত্ন করে খাওয়ালো। এমন বেশী কিছু নয়, গরম গরম হাতে তৈরী রুটী, কষা মাংশ, আচার আর টক দইআন্তরিকতা থাকায় আর কয়েকদিন হোটেলের খাওয়ার খাবার পর বাড়ীতে রান্না করা খাবার যেন অমৃত সমান হয়ে উঠল। শুধু তাই নয়, বেরোবার সময় টিফিন ক্যারিয়ারে করে পরোটা আর আলুর দম, সাথে আচার দিয়েদিলবিকেলে খাওয়ার জন্য।
 
পবনদের বাড়ী থেকে বেরিয়ে গ্যাংটক যাবার জন্য বেরোতে বেরোতে দুটো বাজলো। আর একটু আগে বেরোতে পারলে ভালো হত কিন্তু খেয়ে ওঠার সাথে সাথে না বেরিয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে বেরোনো ভালো বলে পবনের মা আটকে দিয়েছিলো। বেরোনোর পরপরই আকাশ কালো করে এসে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছেএখন আর বৃষ্টি নেইমেঘের ফাঁক দিয়ে সুর্যের আলো পড়ে ভেজা গাছের পাতা ঝকঝক করছে। বেরোতে দেরী হয়েছে একটু কিন্তু খুব একটা নয় বলে পবন ধীরে সুস্থে গাড়ী চালাতে চালাতে এগোচ্ছে। অরিত্র ক্যামেরাটা নিয়ে ছবি তুলছিল, মনে পড়ল গতবার ফেরার সময় দাদু তিস্তার চরে নামতে চেয়েছিল কিন্তু দেরী হয়ে যাবে বলে চলে যেতে হয়েছিল। দাদুরা ঘুমোচ্ছে দেখে পবনকে ডেকে বলে দিল একটা ভালো জায়গা দেখেও যেন গাড়ী একেবারে নদীর ধারে নামিয়ে দেয়। মৌ বাইরের দিকে তাকিয়ে বসেছিল, পবনের সাথে কথা বলা হয়ে গেলে ওর দিকে তাকালে দুজনের চোখাচুখি হয়ে গেল, মৌ চোখের পলক না ফেলে ওর দিকে তাকিয়ে থেকে বললসবাই ঘুমোচ্ছে।
 
অরিত্র দাদুদের দিকে আর একবার তাকিয়ে দেখেবললহুঁ
 
একই ভাবে ওর দিকে তাকিয়ে বললআমরা ঘুমোইনি
 
কি বলতে চাইছে প্রথমটা বুঝতে না পেরে ওরদিকে তাকিয়ে থেকে বোঝার চেষ্টা করলযেন কিছু হয়নি এমন একটা ভাব করে চুপচাপ ওর দিকে তাকিয়ে আছেএকটু পরে মুখ ঘুরিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আবার আগের মতো বসে থাকলোঅরিত্রওর দিকে সরে গিয়ে বললহ্যাঁআমরা ঘুমোই নি
 
মুখ ঘুরিয়ে ওর চোখ চোখ রেখে জিজ্ঞেস করলতুমি কখন ফোন করবে
 
কি অদ্ভুত মেয়ে কে জানেকোথা থেকে কোথায় চলে গেলমেয়েরা যে কি চায় কে জানে ভাবতে ভাবতে বললযখন তুমি চাও
 
ইসযখন তুমি চাওতোমার কখন সময় হবে আমি কি করে জানবো
 
ইচ্ছে তো করে সারাদিন তোমার সাথে গল্প করতেঅনেক কিছুই তো বলতে ইচ্ছে করে কিন্তু সব কিছু তো আর যায় না বলা ভেবে বললউমমভাবছিসন্ধে সাড়ে পাঁচটা কি ছটা নাগাদ করবো
 
চোখ কুঁচকে কিছুক্ষন ওর দিকে তাকিয়ে থেকে বললঅফিস কখন ছুটি হবে?
 
আমি যখন ফোন করবো তখন ওখানে রাত এগারোটা মত হবে।
 
তাই? ঘুমোবে কখন?
 
তোমার সাথে কথা বলা হয়ে গেলে
 
আরআমি যদি ফোন না ছাড়ি?
 
ঘুমোবো নাব্যাসআবার কি
 
হুমঘুমোবো নাভালোপরের দিন অফিসে বসে ঘুমোবেআর ভাগিয়ে দিয়ে বলবেযাওবাড়ী ফিরে যাওএখানে থাকতে হবে নাখুব মজা হবেতাই না?
 
ওর কথা বলার ধরন দেখে হাসি পেয়ে গেল অরিত্ররমুখ টিপে হাসতে হাসতে বললআর যদি চাকরীটাই চলে যায়কি হবে?
 
কি আবার হবেভালো হবেতোমাকে আর ভোর বেলা উঠে অফিস যেতে হবে নাআর আমাদেরকে রাত জেগে রাস্তার দিকে তাকিয়ে বসে থাকতে হবে না।
 
কিছুক্ষন দুজনেই চুপচাপদুজনেই হয়তো ভাবছিল কি বলবে বা চুপচাপ থাকলেও শরীরের ভাষায় হয়তো কথা হচ্ছিলকখোনো আড় চোখে তাকানোকখোনো বা একটু হাসিযে হাসির কোনো মানে নেইআবার হয়তো অনেক কিছুই লুকিয়ে আছে সেই ছোট্ট হাসির ভেতরে।
 
মৌ কোলের উপরে হাত রেখে বসেছিলখুব ইচ্ছে করছিল ওকে একবার ছুঁতে। ওর দিকে কিছুটা সরে গেলে বাইরের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে তাকালোচোখে চোখ রেখে আলতো করে হাতের উপরে হাত রেখে চাপ দিলে কেমন যেন অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষনতারপর চোখ বুজে খুব প্রিয় কারুর স্পর্শ নিজের বুকের ভেতরে অনুভব করতে করতে অস্ফুট স্বরে বললকিছু বলছো না তো?
 
ভাবছিকি বলবো।
 
শোবে?
 
কোথায়?
 
আমার কোলে।
 
অরিত্র ভাবছিলও কি করে বুঝলোআমার মনের কথা। আর কিছু না বলে ওর কোলে মাথা রেখে শুলে আস্তে আস্তে চুলের ভেতরে আঙ্গুল দিয়ে বিলি কাটতে কাটতে চোখের পলক না ফেলে তাকিয়ে ছিল। মেয়েলী সুগন্ধ বুক ভরে নিয়ে ওকে দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল আর কিছু চাই নাওর দু চোখে খুশির ঝিলিকএকটু ঝুঁকে যেন আরো ভালোভাবে ওকে দেখতে চাইলোএত কাছে ওর উদ্ধত যৌবনের উপস্থিতিখুব ইচ্ছে করছিল সেই আকাঙ্খিত অজানা অচেনাকে মুখ গুঁজে অনুভব করতেআরো একটু ঝুঁকে কপালে ওর নাক লাগিয়ে আলতো ভাবে ঘষে দিয়ে মুখ তুলে নিলদু চোখের খুশি এখন ওর সারা মুখে ছড়িয়ে পড়েছেযেনজীবনের সব কিছু পাওয়া হয়ে গেছেআর কিছু চাই নামুগ্ধ চোখে ওর দিকে তাকিয়ে থাকলেআলতো ভাবে ওর গালে আঙ্গুল বোলাতে বোলাতে বললকি দেখছো?
 
উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকলে আবার জিজ্ঞেস করলএইবলো নাকি দেখছো।
 
হাসি মুখে জবাব দিলখুব মিষ্টি একজন কে দেখছি
 
তাই?
 
হুঁ।
 
খুব মিষ্টি তো দুষ্টু একজন কাছে আসতে চায়না কেন?
 
কে বলেছে কাছে আসতে চায় না? এই তো এসেছে
 
চায় না তোভীষন দুষ্টুখালি আমাকে কষ্ট দেয়
 
আর দেবে না
 
জানি
 
চোখে চোখ রেখে আস্তে আস্তে বললএই.. আর একটু উঠে শোও নাওদিকে তো পা রাখতে অসুবিধা হচ্ছে। উঠে শুতে গেলে ওর কোমল বুক ছুঁয়ে থাকলো গালের পাশে, গাড়ীর ঝাঁকুনিতে সেই আকাঙ্খিত স্পর্শ মাঝে মাঝে আরো নিবীড় হয়ে উঠছিল, মৌ ওর মাথার পেছনে হাত রেখে আরো কাছে টেনে নিয়ে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে ফিস ফিস করেবললঘুমোবে?
 
উঁ হুঁতোমাকে দেখবো কি করে।
 
মুখ নামিয়ে নিয়ে এসে আলতো করে নাক দিয়ে কপালে ঘষে দিয়ে বললআজকেই সব দেখে নিলে পরে কি দেখবে?
 
সারা জীবন দেখলেও শেষ হবে না।
 
তাই?
 
হুঁ
 
চোখের পলক না ফেলে দুজন দুজনের দিকে তাকিয়েছিল, ভুলে গেছে হয়তো ওরা একা নয়। মাঝে মাঝে চোখ চলে যাচ্ছিল অন্য দিকে, কোনটা ছেড়ে কোনটা দেখবে ঠিক করতে না পেরে, গালের হালকা গোলাপি আভা, এক গোছা অবাধ্য রেশম কোমল চুল বারে বারে মুখের উপর এসে চোখ ঢেকে দিয়ে বলতে চাইছে নাকি? এইএখনই এতো দেখো নাওই নরম লাল ঠোঁটমনে হল তির তির করে কাঁপছেমন মানতে চাইলো নাকিছু পাবার ইচ্ছে নিয়ে ওর চোখে চোখ রেখে নীরবে জানালো কি চাইচোখের ইশারায় উত্তর এলোকি করে দেবোকেউ দেখে ফেললে? দাও নাখুব ইচ্ছে করছেউত্তর এলো উমমমদাঁড়াওভাবি। আস্তে করে বললএকটু ওঠোনা।
 
কেন? লাগছে?
 
উঁ হুঁ
 
মাথা তুলে একটু সরে গেলে গায়ের শালটা দিয়ে নিজের মাথা ঢেকে নিয়ে ইসারা করলো আবার শুতে। আগের মতো শুয়ে পড়লে বুকে চেপে নিয়ে মুখ নিচু করে এগিয়ে এলোশালটা দিয়ে ওকেও ঢেকে নিয়ে। এতো কাছে দুজনের ঠোঁট, শালের অবগুন্ঠনের আড়ালের আবছা আলোয় দুজনেরই চোখে আকাঙ্খাকইচুমু দাও। অপেক্ষা করতে করতে চোখ বুজে এলো দুজনেরএই ভেবেআগে ও দিক। কেউ জানে না কে আগে কার ঠোঁট ছুঁয়েছেশুধু বুঝেছে ওরা একে অপরকে ছুঁয়ে আছে। শুধু ছুঁয়ে থাকলেও যে এতো ভালো লাগতে পারে জানা ছিল না কারুরইসময় কেটে যাচ্ছেহালকা নিশ্বাস আস্তে আস্তে ঘন হয়ে উঠলহয়তো বুক ভরে স্বাস নেওয়ার জন্য এক পলকের জন্য দুজনে দুজনের স্পর্শ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। চোখ মেলে তাকালো দুজনেকে জানে কে আগেচোখের ইশারাআরো চাইলাজুক হাসিতে বোঝালোইসলজ্জা করছেতুমি নাও। উঁ হুঁতুমি এসোদুজনেরই চোখ বুজে গেল আবারআলতো চুমুর অস্পষ্ট মিষ্টি আওয়াজএকের পর এককিন্তুনেই কোনো তাড়াহুড়োকারুর ঠোঁটে আর একজনের আলতো কামড়অসহ্য সুখের অস্ফুট আঃ আওয়াজ কারুর গলায়আরো পাওয়ার আশায় অপরজন নিজেকে আরো এগিয়ে দিয়েছেপাশ দিয়ে বোধ হয় একটা গাড়ী খুব জোরে হর্ন দিয়ে পেরিয়ে গেল।সম্বিত ফিরে এলো হয়তো এক সাথেই দুজনেরঅবগুন্ঠনের আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে বুকের উপরে শুয়ে থাকা দুষ্টুটার গালে আদরের আলতো চিমটি দিয়ে চোখের ভাষায় বোঝালোখুব শখনাসবাই এতো কাছেওইভাবে না কামড়ালে হোতো না?
 
ভালো ছেলেটা আবার ছোটোবেলার মতো দুষ্টু হয়ে গিয়ে হাসি মুখে বোঝালোআরো করবোদুষ্টুমি।
 
আকাঙ্খিত উত্তরটা পেয়ে গেলে প্রত্যুত্তর এলোইসবয়ে গেছে।
 
 
 
পবন গাড়ীটাকে একেবারে তিস্তার পাশে নামিয়ে দিয়েছে। এর আগে দুর থেকে তিস্তার আপন খেয়ালে বয়ে যাওয়া দেখে মুগ্ধ হয়েছে কিন্তু এত কাছ থেকে এই প্রথম সেই উচ্ছল প্রানচঞ্চল সুন্দরী কিশোরী তিস্তাকে ছুঁতে পেরে ভীষন ভালো লাগছিল। এই বয়সেও দাদুরা যেন বাচ্চাদের মতো খুশীতে ফেটে পড়ছে।
 
মৌ ছোট ছোট রঙ্গীন নুড়ি কুড়িয়ে জড় করছে,মাঝে মাঝে দৌড়ে এসে দেখাচ্ছে কি সুন্দর একটা নুড়ি পেয়েছেমনে হচ্ছিল সামান্য একটা পাথরের টুকরো নয়হীরে জহরত পেয়েছে। কিছুক্ষন ওদের সাথে থাকার পর একটা ফোন আসায় একটু দুরে একটা পাথরের উপর বসে ফোনে কথা বলা হয়ে গেলে চুপ করে বসে দেখছিল তিস্তার পাথরে ধাক্কা খেতে খেতে বয়ে যাওয়া। এক এক করে দাদুরা এসে আসে পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল।মৌ তখোনো নুড়ি কুড়িয়ে যাচ্ছেকখোনো জলে পা ডুবিয়ে ঠান্ডা সহ্য করতে না পেরে বাচ্চাদের মতো ছটপট করে উঠে পা তুলে নিচ্ছে। দিদান হাসতে হাসতে বললদেখোকেমন বাচ্চাদের মতো করছেএত সরল মেয়েটা। প্রথমে বোধ হয় খেয়াল করে নি সবাই একটু দুরে বসে আছে, দেখতে পেয়ে দৌড়ে এসে দিদানের হাত ধরে বললও দিদান চলো না
 
ফিরে এলি কেনবেশ তো হুটোপুটি করছিস
 
চলো নাএকা একা ভালো লাগে নাকি
 
আচ্ছা ঠিক আছেছোটো দিদান কে নিয়ে যা
 
কিছুক্ষন পরে ছোটো দিদান ফিরে এলোউঃ বাবাএইবয়সে পারা যায় নাকিকি মেয়েরে বাবাবাড়ীতে এত চুপচাপ থাকে, এখানে এসে দেখোকি করছে।
 
অরিত্র নিজের মনে ভাবছিলতুমি বুঝবে না শুক্লাদি,শুধু তুমি কেন, আমি ছাড়া আর কেউ জানে ওই খুশীর কারন কি। ও যে ওর ভালোবাসাকে পেয়ে গেছে।ওর মতো সুখী আর কেউ নেই। ও যে আর নিজের ভেতরের সেই খুশী আটকে রাখতে পারছে নাসবাই কে ডেকে ডেকে ও নীরবে বলতে চাইছে… ‘আমার মতো সুখি কে আছে? আয় সখি আয় আমার কাছেসুখী হৃদয়ের সুখের গানশুনিয়া তোদের জুড়াবে প্রান
 
 
 
ওদের কথার মাঝে পবন ওদের কাছে এসে জানালো রাস্তায় নাকি একটা গাড়ী উলটে গিয়ে রাস্তায় জ্যাম আছে, একটু হাতে সময় না নিয়ে এগোলে রাত হয়ে যেতে পারে। বাধ্য হয়ে উঠতে হল, গাড়ীতে ওঠার আগে অরিত্র হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করলএত গুলো নুড়ি নিয়ে কি করবেআমাদের বাড়ীতে এত জায়গা নেই রাখার
 
মুখ ভেঙ্গিয়ে দিয়ে বললআমার বয়ে গেছে তোমার বাড়ীতে রাখতেআমি আমার দাদুর বাড়ীতে রাখবো।
 
ইসদাদুর বাড়ীতে রাখবেওটা আমার ও বাড়ী
 
ঘোড়ার ডিমতোমার বাড়ী ভবানীপুরেএখানে দাদুরা খালি থাকতে দিয়েছেও দিদানবলো নাআমি ভুল বলছি নাকি
 
দিদান হাসতে হাসতে বললআচ্ছা বাবাগাড়ীতে ওঠ তো আগেদেরী হয়ে যাবে।
 
গ্যাংটকে পৌঁছোবার একদিন পর বিকেলে সবাই মিলে মিলে মলে গেছে কিছু কেনাকাটা করার জন্য। পবন ওদের কে নামিয়ে দিয়ে চলে গেছে গাড়ী পার্ক করতে। গ্যাংটকে এটাই একটা অসুবিধা, সরু রাস্তা বলে পুলিশ যেখানে সেখানে গাড়ী রাখতে দেয় না। হাঁটতে হাঁটতে সবাই মিলে একসাথে এগোচ্ছিল, একটা ফোন আসায় কথা বলতে গিয়ে অরিত্র একটু পিছিয়ে পড়েছে। কেউ যেন পাশে একটু দূর থেকে এই অরিত্র বলে ডাকলো। এখানে আবার কে ডাকবে ওকেভাবতে ভাবতে তাকিয়ে দেখে শৌভিকওর কলেজের বন্ধু। সাথে ওর মা বাবা আর বোন সুস্মিতা।
 
কাছে গেলে শৌভিক জিজ্ঞেস করলএই তুই কি রে? সেই যে হঠাত আসা বন্ধ করে দিলিকি ব্যাপার বলতো? তারপরে তোর বাড়ীতে দু তিন বার গেছি তোর খোঁজেকেউ বলেনি তোকে?
 
ভুলে গেছে হয়তোএই এমনিসময় পাই না রে একেবারে।
 
সময় পাস না ঠিক আছেফোন করতে পারিস তো নাকিতাও করা যায় নাকতবার ফোনে চেষ্টা করেছিখালি সুইচড অফতারপর অবশ্য আর করিনি।
 
ফোনটা ট্রেনে চুরি হয়ে গিয়েছিলআর তোর নাম্বারটা আসলে মনে ছিল নাআর একবার দেসেভ করে নি।
 
ওর মা পাস থেকে বললঅন্য কিছু ব্যাপার নেই তোএত বছরের সম্পর্ক
 
না না মাসীমাঅন্য কিছু ব্যাপার নেইআপনারা কবে এসেছেন?
 
আমরা এই তো আজ দুপুরে এলামতোমরা?
 
আমরা পরশু এসেছি
 
মাসীমার সাথে কথা বলতে বলতে সুস্মিতার দিকে তাকালোঅন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দেখে কিছুটা নিশ্চিন্ত হয়ে ভাবলোযাকসবাই আছে যখন কিছু বলবে না। আরো কিছুক্ষন কথা বলেদাদুরা অপেক্ষা করছেআসছি বলে এগোতে গেলেসুস্মিতা দেখা হবার পর এই প্রথম কথা বললঅরিত্রদা একটু দাঁড়াও নামা তোমরা দোকানে যাওআমি এখুনি আসছি
 
বাধ্য হয়ে দাঁড়াতে হলমাসীমারা সামনের দোকানটাতে ঢুকে গেলেসুস্মিতা জিজ্ঞেস করলকেমন আছো?
 
মোটামুটি তুমি?
 
একটু হাসলোকিন্তু তা যেন ব্যাথাভরা এই যেমন দেখছো। একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
 

 
না এর কারনটা জানাতে কি খুব অসুবিধা ছিল?
 
অরিত্র কি বলবে বুঝতে পারছিল নাওকে চুপ করে থাকতে দেখে বললঠিক আছেবলতে হবে নাসব কিছু তো আর বলা যায় না। ছোট্ট একটা নিশ্বাস ফেলে বললআমি কিন্তু তোমাকে সত্যিই ভালোবেসে ছিলামহয়তো আজও বাসিনা হলে এখোনো মাঝে মাঝে মনে পড়ে যায় কেন খুব খারাপ লেগেছিলযাক সেসব কথাতুমি কি এখোনো একা?
 
একা নইতবে হয়তো কোনোদিন আবার একা হয়েও যেতে পারি
 
অবাক হয়ে গিয়ে বললমানে?
 
আমি নিজেও জানি না।
 
কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললঠাট্টা করছো? যাকগেভালো থেকো সামনের বছর আমার বিয়ে ডেটটা শুধু ঠিক হয়নিআসবে?
 
বুকের ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলোএকটা মানুষ সবাইকে খুশী করতে পারে নাযতই চেষ্টা করুকভাবতে ভাবতে জিজ্ঞেস করলমা বাবার দেখে দেওয়া?
Like Reply


Messages In This Thread
মৌ কথা কও by Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:20 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:20 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:21 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:22 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:23 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:24 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:25 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:26 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:26 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:27 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:29 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:30 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:31 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:32 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:40 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:42 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:43 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:44 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:46 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:50 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:50 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:56 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:56 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)