Thread Rating:
  • 30 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পরভৃত / কামদেব
[একষট্টি]


          বিছানায় শুয়ে ঘুম আসেনা।কঙ্কা মনে করার চেষ্টা করে ডা.হালদারকে কি কি কথা হয়েছিল? তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিল পুরোপুরি জ্ঞান ছিল না তখনকার বলা কথা কিছুই মনে করতে পারে না। সম্মোহিত অবস্থায় যা বলেছে তার অবচেতন মনের কথা।দিব্যেন্দুর কথা বলেছিল নিশ্চয়ই কিন্তু ঋষির কথা কি বলেছিল?কি ভাবলেন ভদ্রলোক ভেবে অস্বস্তি বোধ করে কঙ্কা।হয়তো ভেবেছেন একজন শিক্ষিকা হয়ে কি অধঃপতন!কঙ্কা জানে এসব কথা তিনি কাউকে বলবেন না প্রফেশন্যাল এথিক্স।বেশ কয়েকটা সিটিং হয়েছে।এখন অনেকটা ভালো বোধ করে। ড হালদারের খবর পায় ডলির কাছ থেকে।
কলেজে কারো সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে হত না, টিচারস রুমে একপাশে চুপচাপ বসে থাকে,ক্লাস থাকলে ক্লাসে যায়।একটু দূরে শিউলি আর ডলি নিজেদের মধ্যে কথা বলছে।ওদের একটা কথা কানে যেতে একটু কাছে গেল কঙ্কা।ডলি বলল,বোসো কঙ্কাদি।তোমার শরীর ভালো আছে?
কেন আমার শরীরের কি হবে?
ডলি অপ্রস্তুত হয় বলল,তোমাকে কেমন অন্যরকম লাগছে।
শিউলি বলল,তারপর কি হল বল।
সাইকিয়াট্রিস্ট দেখাবার পর একদম অন্যরকম।কঙ্কার সঙ্গে চোখাচুখি হতে হাসল ডলি।কঙ্কা জিজ্ঞেস করল,কাকে সাইক্রিয়াটিস্ট দেখালে?
আমার ননদ।ডলি হেসে বলল।
কেন কি হয়েছিল?
তেমন কিছু নয়।সারাদিন চুপচাপ থাকতো।কারো সঙ্গে কথা বলতো না।ছোটো ননদের বিয়ের পর কেমন খিটখিটে মেজাজ।
এর বিয়ে হয়নি?
বিয়ে হবে কি?কোন ছেলেকেই পছন্দ হয়না।এর ভাল চাকরি নয় ওর শিক্ষাগত যোগ্যতা কম।একটা না একটা বাহানা– বাধ্য হয়ে শ্বশুরমশায় ছোটমেয়ের বিয়ে দিয়ে দিলেন।ওরও তো বয়স হচ্ছে।
কাকে দেখিয়েছো?
ড.বৈদ্যনাথ হালদার।আমার হাজব্যাণ্ডের এক কলিগ ওর কথা বলেছেন।ডলি বলল।
এখন ভাল হয়ে গেছে?
বার পাঁচেক দেখাবার পর একেবারে নরম্যাল।তারপরই তো বিয়ে হল।শুনেছি ভালই আছে।শ্বশুরবাড়ির লোককে অবশ্য এসব কথা বলা হয়নি।
সত্যি মানুষের মন খুব জটিল।শিউলি বলল।
কঙ্কা মৃদু হাসল।সত্যি মানুষ নিজেকে নিজেই কতটা চেনে?

ড হালদার কোথায় বসেন বিশদে জেনে নিল।
উনি সাজেস্ট করলেন কিছু একটা অবলম্বন বা বাচার লক্ষ্য  জীবনে থাকা প্রয়োজন।সন্তানকে অবলম্বন করে বেঁচে থাকে মা।অন্যথায় বেঁচে থাকা অর্থহীন।বেঁচে থাকার প্রতি মুহূর্তে মানুষের সামনে থাকতেই হবে একটা না একটা লক্ষ্য।
ডাক্তার হালদারের কথাটা বেশ অনুভব করতে পারছে।রিক্তা যখন ম্যাম-ম্যাম করে ডাকে মনের মধ্যে অনুভব করেছে একটা তরঙ্গ।কঙ্কার ঠোটে এক চিলতে হাসি ফোটে।বন্দনাদি যখন তার গায়ে পা তুলে দিয়েছিল ঐটূকু মেয়ে কেমন বলল,ম্যামের গায়ে পা দেবেনা?শেফালীর সঙ্গে কথা হয়েছে তার সন্তান হলে ম্যাডামকে দিয়ে দেবে।দু-দুটো সন্তান ওর পক্ষে পালন করা সম্ভব নাকি?তাছাড়া কানাই যদি বিয়েও করে দুটো সন্তান সহ রাজি হবে বলে মনে হয় না।এখন ভালয় ভালয় প্রসবটা
হয়ে গেলে নিশ্চিন্ত হওয়া যায়।শেফালীর স্ফীত উদর চোখের সামনে ভেসে ওঠে।এ জীবনে তার গর্ভ ধারণ হলনা।একটা দীর্ঘশ্বাস পাখার বাতাসে মিলিয়ে গেল।

কয়েকবার চেষ্টা করেও বাচ্চা বের হয়নি।পেশেণ্ট বেশ শক্ত মনের।ড.যাদব অপারেশনের কথা চিন্তা করেন।ওটী রেডি করতে বললেন।এমার সঙ্গে দেখা হতে হেসে জিজ্ঞেস করল ড.প্রিয়া,ভাবছি অপারেশন করব।
দরকার পড়লে করতেই হবে।অনর্থক ঝুকি নেওয়া ঠিক হবে না।
টেবিলের উপর পা ভাজ করা গুদ দেখা যাচ্ছে।এমা কাছে গিয়ে গ্লাভস পরে গুদ টিপে টেনে দেখে বলল, বেশ স্থিতিস্থাপক ভ্যাজাইনা ফরসেপ দিয়ে একবার ট্রাই করতে পারেন।
এমার উপদেশ ভাল লাগেনা আবার উপেক্ষাও করতে পারেনা ড প্রিয়া যাদব।নার্সকে নিয়ে  কোহিনূরের পা ফাক কোরে বলল,চেষ্টা করুন চেষ্টা করুন।
মাথাটা একটু দেখা যাচ্ছে ড.যাদব দু-পাশ দিয়ে ফরসেপ ঢুকিয়ে দিয়ে বলল,আরেক্টু-প্লীজ আরেক্টু–হচ্ছে আরেকটু–।’
কোহিনূর দাতে দাত চেপে কোত পাড়ে।ড.যাদব  মাথার নীচে বা-হাত রেখে ফরসেপ চেপে টানতে থাকে।

ড.এমা সাবান দিয়ে বেসিনে হাত ধুচ্ছিল।কান্না শুনে এসে দেখল।ছেলে হয়েছে।নীচে বাবুয়া দলবল নিয়ে অপেক্ষা করছিল।খবর গেল ছেলে হয়েছে কিন্তু এখন দেখা যাবে না।বাবুয়ার দল অপেক্ষা করে।ড.প্রিয়া যাদব গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেল।ভোরের আলো ফোটে বাবুয়ার ধৈর্য শেষ প্রায় এমন সময় খবর শুধু বাবা যেতে পারে।বাবুয়া উপরে ঊঠে এল বেগমের মুখে লাজুক হাসি।পাশে ছোট্ট খাটে একটি শিশু চোখ বুজে ঘুমোচ্ছে।
ঋষির চোখে ঘুম নেই।এমা ঢুকল মুখে হাসি বলল,ছেলে হয়েছে।
ঋষি উঠতে যাচ্ছিল এমা বাধা দিল এখন না।বাচ্চা দুধ খাচ্ছে।
ঋষি দুহাতে জড়িয়ে ধরে এমার বুকে মুখ রাখে।এমা ব্রেস্ট বের কোরে দিল।ঋষি চুকচুক করে চুষতে লাগল।ঋষির মাথার চুলে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে মাথা পিছন দিকে এলিয়ে পড়ল।এক সময় ব্রেস্ট ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,মম আসবে কথা বলব।কাল তোমার ক্লাস।মনে আছে তো?
বাবু ওরফে ধনেশ ঘুম ভেঙ্গে উঠে দেখল শুটকি ঘুমোচ্ছে।রবিবার কলেজ ছুটি বন্দনা উঠে চায়ের জল চাপালো।হঠাৎ বাবুর আর্তনাদ শুনে ছুটে গিয়ে দেখল বাবু বউকে জড়িয়ে ধরে কাদছে।সুগন্ধার কষ বেয়ে গ্যাজলা বেরিয়ে আছে।নীচ থেকে মিস্ত্রীরা উপরে উঠে এল।বাবু ফোন করল,মাইতিবাবু প্লিজ একটা এ্যাম্বুলেন্স পাঠান।আমার বউ–।হু-হু কোরে কেদে ফেলল।
বন্দনার গা জ্বলে যায় আদিখ্যেতা দেখে।সারাক্ষন কবে মরবে এক চিন্তা এখন হেদিয়ে মরছে।পুরুষগুলো এরকম হারামী হয়।
এ্যাম্বুলেন্স এসে সুগন্ধাকে নিয়ে গেল সঙ্গে বাবুও গেছে।বন্দনা বাবুর ঘরে ঢুকে এটাসেটা দেখতে দেখতে নজরে পড়ল জলের গেলাস দিয়ে চাপা একটা কাগজ।চোখের সামনে মেলে দেখল যা ভেবেছি তাই।”ধনেশ,দিদিমণিকে নিয়ে সুখে থাকো।পথের কাটা হয়ে থাকতে চাইনা।মেয়েটাকে বঞ্চিত কোরো না।চললাম।সুগন্ধা।”এক নিশ্বাসে পড়ে একবার এদিক-ওদিক দেখে কাগজটা জামার মধ্যে ঢূকিয়ে ফেলল।হাপাতে হাপাতে নিজের ঘরে এসে শুয়ে পড়ল।আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতে এক সময় চোখ লেগে যায়।
মজুরদের ডাকে ঘুম ভাঙ্গল।ইস কর বেলা হয়ে গেছে।একজন বলল,দিদিমণি আপনাকে ডাইকছে বটে।
কে বাবু ফিরেছে?
আজ্ঞে পুলিশ।
বুকের মধ্যে ধড়াস করে উঠল।হাত দিয়ে জামার নীচে কাগজটা অনুভব করার চেষ্টা করল, আছে।বন্দনা গিয়ে দেখল বাবুর ঘর তোলপাড় করছে পুলিশ।তাকে দেখে পুলিশ জিজ্ঞেস করল,আপনি?
বন্দনা নিজের ঘর দেখিয়ে বলল তাদের বাড়ী ফ্লাট করছে তাকে এখানে থাকতে দিয়েছে।
কতদিন আছেন?
আমি কলেজ টিচার।দিন পনেরো কুড়ি হবে।
এদের মধ্যে সম্পর্ক কেমন ছিল?
মনে হয় ভালই।কিছুকাল আগে বোম্বাই গিয়ে অনেকটা টাকা খরচ করে চিকিৎসা করিয়ে এনেছেন।
এতকথা আপনি কি করে জানলেন?
বন্দনা বুঝতে পারে বেশি কথা বলা ঠিক দ্রুত শুধরে নিয়ে বলল, না মানে প্রোমোটারের কাছে শুনেছি।
একটা কাগজ এগিয়ে দিয়ে  বলল,আপনার নাম কলেজের নাম লিখে দিন। বন্দনা লিখতে থাকে।পুলিশ জিজ্ঞেস করল,এখানে কোনো কাগজের টুকরো দেখেছেন?
এ ঘরে এই প্রথম ঢুকলাম।
বিকেলের মধ্যেই ধনেশ রঞ্জন সরকারকে প্রমাণের অভাবে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হল।মায়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে স্বামীকে নিয়ে সুজাতা ঘোষ ছুটে এসেছে।পোস্ট মর্টেমের পর দেহ পেতে রাত হয়ে গেল।মেয়ে মায়ের মুখাগ্নি করলেও নাকি বাবার সঙ্গে একটি কথাও বলেনি।
শ্মশান থেকেই শ্বশুরবাড়ি চলে যায়।ধনেশ বাসায় ফিরে বন্দনার বুকে মাথা রেখে কি কান্না। বন্দনা সান্ত্বনা দিল “আমিতো আঁছি।”
ত্রিদিবেশবাবুকে নিয়ে ড.এমা দমদম বিমান বন্দরে গেল।যাবার আগে ঋষিকে বলে গেছে নতুন জামা প্যাণ্ট পরবে।
প্লেন সময় মতো পৌছেছে বেশি দেরী করতে হল না।এমাকে জড়িয়ে ধরে খুব আদর করলেন খিন কিল।এমা জিজ্ঞেস করল,ড্যাড কেমন আছে?
ম্যাডাম খিন কিল বিরক্তি নিয়ে বললেন,যেমন থাকে।
ত্রিদিবেশ ভাব করে যেন মা মেয়ের কথা কিছুই শুনতে পায়নি।ডিকিতে মাল পত্তর তুলে দিয়ে মেয়েকে নিয়ে পিছনে বসলেন ম্যাডাম খিন সামনে ড্রাইভারের পাশে ত্রিদিবেশ বাবু।গাড়ী ছুটে চলল গন্তব্যের দিকে।এমা ভাবছে ঋষির কথা।কিভাবে মমকে ব্যাপারটা বলা যায়।মম অবশ্য সব খবর নিয়েই এসেছে।তাতে এমারই  সুবিধে বেশি বলতে হবে না।এমা জিজ্ঞেস করল,কদিন থাকবে তো?
ইচ্ছে ছিল কিন্তু রাজের হাতে দায়িত্ব দিয়ে শান্তিতে কোথাও থাকা যায়?
বাইরের  লোকের সামনে ড্যাডকে নিয়ে কোনো কথা হোক এমার ইচ্ছে নয়।সে আরা কথা বাড়ায় না।এমা জানে গ্রাণ্ড মমের উপর মমের ক্ষোভ।ড্যাডের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন তিনিই।মমকে শারীরিভাবে খুশি করতে পারেনি ড্যাড।এইজন্য বাঙালীদের পছন্দ নয়।তাছাড়া ড্যাডের দোষ আছে মমকে সম্পত্তির উত্তরাধিকার করা ড্যাড ভালভাবে মেনে নিতে পারেনি।তাদের সমাজে মেয়েরাই সংসারের কর্তৃ।বাঙালীদের মধ্যে অন্যরকম।ঋষি বাঙালী হলেও টাকা পয়সার ব্যাপারে নিষ্পৃহ।কিন্তু মমকে সেকথা কিভাবে বোঝাবে? প্যারাসাইটের মত ঋষি তাকে এমনভাবে জড়িয়ে ধরেছে কিছুতেই
ওকে বিচ্ছিন্ন করা এমার পক্ষে অসম্ভব। সত্যি কথা বলতে কি সেই তাকে প্ররোচিত করেছে।
আওয়াজ পেয়ে বাইরে উকি দিয়ে দেখল ঋষি। এই প্রথম নার্সিং হোমের মালকিনকে দেখল। যেমন ধারণা ছিল ম্যাডামকে দেখলে অত বয়স্ক মনে হলনা।খাটো ঝুলের রঙীন পায়জামা গায়ে শার্ট ফ্রকের মাঝামাঝি একধরণের ছিটের জামা।মাথায় ঝাকড়া চুল ছেলেদের মত ছোটকরে ছাটা।লম্বায় এমার চেয়ে কিছুটা থাটো।এমা হয়তো ওর বাবার ধাত পেয়েছে। গটগট করে এমার ঘরে ঢুকে গেলেন।নার্সিং হোমের একজন কর্মী লাগেজ নিয়ে পিছনে।
আবার বিছানায় এসে বসল।জানলা দিয়ে বাইরে তাকালো রাস্তায় আলো জ্বলে উঠেছে।কি হতে চলেছে ভেবে ঋষির টেনশন হয়।ফ্যাকাশে হাসি ফোটে মুখে।নিজেকে বোঝায় এত ভাবার কি আছে,ভালমন্দ যাহাই ঘটুক সত্যরে লও সহজে।ফোন বাজতে দেখল ভজা।
কানে লাগিয়ে বলল,বলো।
বস আমরা যাচ্ছি?
এক মিনিট আমি আসছি।ঋষি বলল।
দ্রুত সিড়ি বেয়ে নীচে নেমে গেল।কোহিনূর তখনো নামেনি বাবুয়া উপরে গেছে।নীচে বাইক নিয়ে কেতো আর ভজা দাড়িয়ে।ঋষিকে দেখে বলল,তোমায় হেভি লাগছে বস।
ঋষি নিজের পোশাকের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসল।  জিজ্ঞেস করল,কিসে যাবে?
একটা দাঁড়িয়ে থাকা অটো দেখিয়ে বলল,এটুকু পথ ট্যাক্সি যেতে চাইছে না।
আর সব কোথায়?
ভজা মুখ নামিয়ে নিল।কেতো বলল,সব বরেনদার চামচা হয়ে গেছে বস।
কোহিনুর লিফটে ছেলেকে নিয়ে নামল।ঋষি দেখল,ড্যাব-ড্যাব করে চেয়ে আছে ছেলে।এখনই বোঝার কথা নয় তবু মনে হল মায়ের মত দেখতে হয়েছে।লাজুক মুখে দাঁড়িয়ে বাবুয়া।ওরা অটোতে উঠতে ঋষি বলল,কেতোর কাছে সব শুনলাম।পরে এই নিয়ে কথা বলব।অটো স্টার্ট করতে বাইক ওদের অনুসরণ করে।ঋষি মনে মনে কামনা করে ওরা সুখী হোক।সবাই চলে গেল ভজা আর কেতো বাবুয়াকে ছেড়ে যায়নি।ওদের জন্য কিছু না করলে ওরাই বা কতদিন থাকবে?
মাথার উপর তারা ঝলমল আকাশ।নার্সিংহোমের নীচে একটা এ্যাম্বুলেন্স এসে দাড়াল।স্ট্রেচারে করে লিফটের ভিতর নিয়ে গেল।মধ্য বয়সী মহিলা মনে হল। ফোন বাজতে দেখল এমা।কানে লাগিয়ে বলল,বলো।
যেখানে থাকো এক্ষুনি উপরে এসো।
ঋষি উপরে উঠে নিজের ঘরে ঢূকতে এমা চা খাবার দিয়ে বলল,তোমাকে নার্ভাস মনে হচ্ছে? ঋষি বোকার মত হাসল।এমা বলল,আমার কাছে এসো।ঋষি কাছে যেতে বুকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষন এমার শরীর হতে ঋষির শরীরে যেন উত্তাপ সঞ্চারিত হয়।বাহু বন্ধন হতে মুক্ত করে বলল, খেয়ে আমার ঘরে এসো।জরুরী কথা আছে।
ঋষি দ্রুত চা শেষ করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করে ধীর পায়ে এমার দরজার কাছে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল,আসতে পারি?
এমা বেরিয়ে এসে ঋষিকে ভিতরে নিয়ে বসতে বলে ভিতরে চলে গেল।কিছুক্ষন পর মাকে নিয়ে এসে বলল,মম এ ঋষি এম এ পড়ছে।ঋষি মম তোমার সঙ্গে আলাপ করতে চায়।মম বাংলা বলতে পারে।
এমার মা উল্টোদিকের সোফায় বসে এমাকে ইশারায় যেতে ইঙ্গিত করলেন।এমা পাশের ঘরে চলে গেল।ম্যাডাম খিন আপাদ মস্তক ঋষিকে দেখতে থাকেন।এক সময় জিজ্ঞেস করলেন,তোমার নাম কি?
ঋষভ সোম ম্যাডাম।
ডাক্তার ম্যাডামের সঙ্গে কিভাবে আলাপ?
ঋষি ভাবতে থাকে কোথা থেকে শুরু করবে।
ম্যাডাম খিন হেসে বললেন,ভুলে গেছো?
না ম্যাডাম।ডিটেলসে বলব?
সারটেনলি।
ঋষি মোটোর এ্যাক্সিডেণ্ট থেকে শুরু করে যা যা ঘটেছে পর পর বলতে থাকে।ম্যাডাম খিনের ভ্রূ কুচকে যায়।জিজ্ঞেস করেন  বাড়ির কেউ তোমার খোজ করেনি?
বাবা মা মারা গেছেন,দিদির আশ্রয়ে ছিলাম।
এখন ডাক্তারের আশ্রয়ে?ভ্যাগাবণ্ড?
ঋষি কোনো উত্তর দিলনা।ভদ্র মহিলা তাকে অপমানিত করতে চাইছেন বুঝতে পারে।
মাডাম খিন বললেন,কোন সাবজেক্টে এম এ পড়ছো?
এবার ইংলিশ এম এ-তে ভর্তি হয়েছি।
ডাক্তার ভর্তি করেছে?
হ্যা ম্যাডাম।
তুমি জানো বর্মায় আমাদের বিরাট কাঠের ব্যবসা,চারটে কাঠের বাগান আছে।ইণ্ডিয়াতেও আমরা কাঠ সাপ্লাই করি?
আমি জানতাম না ম্যাডাম।
এই নার্সিং হোম আমার?
এটা এমা আমাকে বলেছে।
ম্যাদাম খিন চিবুকে হাত বোলাতে বোলাতে কিছু ভাবতে থাকেন।ঋষি অধৈর্য হয়ে উঠেছে কতক্ষনে তার ইন্টারভিউ শেষ হবে।ম্যাডাম খিন বললেন,তুমি আমার সঙ্গে বর্মায় চলো।একেবারে মালামাল হয়ে যাবে।
কাল থেকে ইউনিভার্সিটি যাবার কথা উনি বলছেন বর্মায় যাবার কথা।
কি ভাবছো?তাহলে ব্যবস্থা করতে বলি?ম্যাডাম খিন তাগাদা দিলেন।
এমাকে জিজ্ঞেস না করে এখনই কিছু বলতে পারছি না।
আমি এমার মম।
জানি।সেজন্য আপনার সঙ্গে কথা বলছি।আদারওয়াইজ আপনি এবং আপনার বিশাল সম্পত্তির ব্যাপারে কোনো আগ্রহ আমার নেই।মাপ করবেন ম্যাডাম আমি উঠছি।
ঋষি নিজের ঘরে ফিরে গেল।এমা ঢুকে বলল,তুমি এটা কি করলে মম?
যা করেছি তোমার ভালর জন্যই করেছি।
তুমি একবার আমার ভাল করেছো।এনাফ ইজ এনাফ প্লীজ লেট মী থিঙ্ক ফর মিসেলফ।
ফোন বেজে উঠতে এমা কানে লাগিয়ে বলল,বলুন।কে পেশেণ্টের ভাই এসেছে..পেমেণ্ট? ড.মুখার্জি নেই?… আচ্ছা আমি আসছি।
২১৯ নম্বরের পেশেণ্ট প্যারালাইজড ডান দিক পড়ে গেছে।হুইল চেয়ারে মুভ করতে হয়।হাজব্যাণ্ড ভর্তি করে দিয়ে গেলেও আর আসছেন না।ভদ্রমহিলার ভাই এসেছে কিন্তু এত রাতে?এমা ড.মুখার্জিকে ফোনে ধরে কথা বলল।মমকে বলল,আমি আসছি।
ফিমেল ওয়ার্ডে যেতে দেখল সঞ্চিতা চৌধুরী তৈরী।অনেকদিন পর মুখে হাসি দেখল।বেচারী স্বামী আসছে না দেখে খুব আপসেট হয়ে পড়েছিল।
কাছে যেতে সঞ্চিতা বলল,ম্যাডাম আমার ভাই এসেছে।ড.এমা ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল,দিদিকে নিয়ে যাবেন?
কি করবো বলুন?জামাইবাবুর সঙ্গে দেখা করেছিলাম।কিছু টাকা দিয়ে বলল,আমার পক্ষে ওর দেখভাল করা সম্ভব নয়।
উনি স্বামী তাহলে কে দেখবে?স্যরি ব্যক্তিগত ব্যাপারে কথা বলে ফেললাম।
বেশি চাপাচাপি করলে ডিভোর্সের ভয় দেখালো।কি করব বলুন?
কিসে নিয়ে যাবেন?এ্যাম্বুলেন্স লাগবে?
না ট্যাক্সিতে নিয়ে যাবো।ম্যাডাম একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
এমা বুঝতে পারে প্রাইভেটলি কথা বলতে চায়।বলল,চলুন।
কিছুটা সরে এসে ভাই জিজ্ঞেস করল,কোনোদিন কি ভালো হবে না?
ড.এমা অনুমান করেছিল এই প্রশ্নই করবে।ড.এমা বলল,আপনাকে খোলাখুলি বলছি।একটু আগে ড.মুখার্জির সঙ্গে কথা হয়েছে।উনি সব লিখে দিয়েছেন।ফিজিও থেরাপি করতে হবে।কতদিন লাগবে এখনি বলা সম্ভব নয়।ভাল হবে না তা নয়।যে অবস্থায় এসেছিলেন তার থেকে এখন অনেক উন্নতি করেছেন।কথা বেশ স্পষ্ট হয়েছে।নীচে গিয়ে বিল মিটিয়ে ট্যাক্সি নিয়ে আসুন এরা মিসেস চৌধুরীকে ট্যাক্সিতে তুলে দেবে।উইশ ইউ বেস্ট।
ড.এমাকে বিমর্ষ মনে হয়।মি.চৌধুরী লোকটা পাষণ্ড স্ত্রী পক্ষাঘাতে আক্রান্ত এখন তাকেই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।টাকা দিয়েই দায়িত্ব শেষ করলেন।মানুষ এত নীচ কিভাবে হয়।নিজের ঘরে না গিয়ে ঋষির ঘরে গেল।ঋষি চোখ বন্ধ করে শূয়ে আছে।এমার সাড়া পেয়ে উঠে বসল।এমা জিজ্ঞেস করল,মমের সঙ্গে কথা হয়েছে?
ঋষি  ফ্যাকাশে হেসে বলল,মনে হল ওর পছন্দ নয়।
মমকে তোমার পছন্দ হয়েছে?
মানে?
মম কি তোমাকে বিয়ে করতে রাজি নয়?
ড.এমা সব সময় খুব গম্ভীর সবাই ওকে খুব সমীহ করে চলে।এই গাম্ভীর্যের পিছনে একটা রসিক মন লুকিয়ে আছে ঋষির জানার সুযোগ হয়েছে।এমা বলল,বিয়ে আমি করবো।কাকে করব না করব সেটা স্থির করার দায়িত্ব আমার।উঠে দাঁড়াও।
ঋষি জানে কেন উঠে দাড়াতে বলছে।এমা দু-হাতে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে ছেড়ে দিয়ে বলল,আজ এখানেই খাবে।খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি।'
[+] 3 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
পরভৃত / কামদেব - by kumdev - 26-05-2020, 07:34 PM
RE: পরভৃত / কামদেব - by kumdev - 08-06-2020, 12:18 PM



Users browsing this thread: 9 Guest(s)