Thread Rating:
  • 27 Vote(s) - 3.37 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance মৌ কথা কও by Raunak_3
#3
দুটো অপরিচিত মেয়ে যে মন থেকে চাইলে কত তাড়াতাড়িকাছাকাছি চলে আসতে পারে তা বোধ হয় রুপসা আর মৌকে না দেখলে বোঝা যেত না। মৌ এর ঘরে বিছানায় বসে দুজনে আড্ডা দিচ্ছেমনেই হচ্ছে নাওদের একটু আগে দেখা হয়েছেআরওদের একজন কথা বলতে পারে না। রুপসাই বেশি কথা বলছেমৌ কখোনো হাসি মুখেহাত বা মাথা নেড়ে ওর সাথে নীরবে কথা বলে যাচ্ছে।মাঝে একবার শুক্লাদি এসে ওদের কে কিছু স্ন্যকস আর কফি দিয়ে গিয়েছিল। অরিত্র ক্লাব থেকে ঘুরে এসে উপরে গিয়ে মৌ এর ঘরে উঁকি দিতেই রুপসা চেঁচিয়ে উঠলএই দাদাভাইভেতরে আয় নাতুই কি রেআমাদের কে ফেলে রেখে নিজে বেশ কেটে পড়লি।
 
আরে নাকেটে পড়িনিপুজ়োর মিটিং ছিলএকবার মুখটা দেখিয়ে এলাম। তোরা তো শুনলামজমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিস। তাকি নিয়ে আড্ডা হচ্ছে শুনি।
 
রুপসা মুখটা একটু গম্ভীরকরে বললউঁহুঁতোকে বলা যাবে নামেয়েদের গোপন আলোচনা ছেলেদের শুনতে নেইজানিস না নাকি?
 
ঠিক আছেআমি যাইতোরা আড্ডা দে
 
আরে বোস নাএমনি বললামআমাদের কি আবার গোপন কথা থাকতে পারেতোকে নিয়েই কথা হচ্ছিল
 
আমি আবার কি করলাম রে?
 
রুপসা চোখ ছোটো ছোটো করে বললওঃ আমি আবার কি করলামএখন না হয় ভাজা মাছটি উল্টে খেতে জানিস নাছোটো বেলায় কম দুষ্টু ছিলি নাকি
 
মৌ অরিত্র আর রুপসার দিকে তাকাতে তাকাতে মুখ টিপে হাসছে দেখে অরিত্র বললএকদম ওর কথায় বিস্বাস করবে না কিন্তুসাঙ্ঘাতিক ফাজিল মেয়ে
 
রুপসা ওর পিঠে একটা গাট্টা মেরে বললএই দাদাভাইভালো হবে না বলছিআমি ফাজিল? আর তুই কি?
 
আমি আবার কি? আমি খুব ভালোসবাই তো তাই বলে।
 
সে তো এখন বলেতুই এত দুষ্টুমি করতিস যে দাদু তোকে দুষ্টূ বলে ডাকতোভুলে গেছিস নাকি?
 
ডাকতো কি রেএখোনো মাঝে মাঝে ওই নামে ডাকে
 
পরের দিন সকালে যথারীতি অরিত্র পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছিল, রুপসা ওর কাঁধে হাত রেখে আস্তে আস্তে করে ঝাঁকালে চোখ খুলে একবার তাকিয়ে আবার ঘুমোবার জন্য চোখ বুজে ফেললোরুপসা ধপাস করে ওর পাশে বসে পড়ে বললএই দাদাভাই ওঠ না
 
অরিত্র কোল বালিশ টাকে আরো ভালো করে জড়িয়ে নিয়ে পাশ ফিরতে ফিরতে বললআর একটু ঘুমোতে দে না বাবাতাড়াতাড়ি উঠে কি করবো
 
রুপসা ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে দুষ্টুমি করে বললতোর জন্য কেউ একজন আসছেতাই তাড়াতাড়ি উঠবিআরকোলবালিশটা কে এমন করে জড়াবার কি আছেবাড়ীতে তো একজন আছেই জড়িয়ে ধরার জন্যতার কাছে যেতে পারছিস না?
 
এইরুপসাভালো হবে না বলছি
 
ইসভালো হবে না বলছিকি করবি রে তুই আমারব্যাটা বুদ্ধুরামকিচ্ছু বুঝিস না
 
অরিত্র ঘুরে শুয়ে রুপসার দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে গিয়ে থেমে গেলখুব প্রিয় কেউ একজন হাতে একটা ট্রেতিনটে চায়েরকাপ তাতেওর দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
 
 
 
রবিবারের বাজার টা সাধারনত অরিত্র ই করে, মোটামুটি সারা সপ্তাহে কি কি লাগতে পারে দেখে নিয়ে চলে আসে। বাজার থেকে ফিরে ক্লাবে গিয়ে একবার ঘুরে এলোকালচারাল প্রোগ্রামের মিটিং ছিলএবারে ওকে জয়েন্ট সেক্রেটারী করে দিয়েছে জোর করেনা গেলে খারাপ দেখাতোক্লাব থেকে ফিরে এলে দিদান বললোরুপসা তোকে দুবার খুঁজে গেছে। ঘরে ঢুকে দেখে দুজনে কালকের মতো গল্প করছেরুপসা সরে গিয়ে ওকে বসতে বলে বললখুব মজা করছি রে দাদাভাইআমি কিন্তু সব বলে দিয়েছিবলেই মুখ টিপে হাসতে শুরু করল
 
সব বলে দিয়েছিস মানেবুঝলাম নাকি বলেছিস?
 
আরে সেই যে তোর আমাদের বাড়ী থেকে পালাতে গিয়ে বাগানে পা মুচকে সারা রাত বৃষ্টির মধ্যে পড়ে থেকে ধুম জ্বর এসে গিয়েছিল
 
অরিত্র হেসে ফেলে বললও আচ্ছাকি জন্য পালাতে গিয়েছিলাম সেটাও বলেছিস নাকি?
 
বলবো না মানেওটাই তো আসল ব্যাপারনা বললে কি করে বুঝবে।
 
রুপসাতুই না একটা যা তালজ্জা বলে কিছু নেইওটা আবার কেউ বলে নাকি।
 
রুপসা হেসে ফেলে বললদাদাভাইমাঝে মাঝে আমার কি মনে হয় জানিস? তুই বোধ হয় ছেলেদের মতো দেখতে একটা মেয়ে... তোকে চুমু খেতে ইচ্ছে হয়েছিলতাই খেয়েছিলামএতে আবার লজ্জার কি আছে? বয়স কম ছিল
 
থাক তোকে আর পাকামো করতে হবে নানিজের মাথা টা খারাপ আর এখন ওর মাথা টা খারাপ করছিস।
 
রুপসা মৌ এর দিকে তাকিয়ে বললজানো তোদাদাভাই তার পর প্রায় এক বছর আমার সাথে কথা বলেনিকত সাধ্য সাধনা করে যে বাবুর রাগ ভাঙ্গাতে হয়েছিল সে আমি জানি
 
 
 
রবিবার দুপুরে এমনিতে খেতে কিছুটা দেরী হয়, আজ দিদান আর শুক্লাদি দুজনে মিলে রুপসা এসেছে বলে অনেক রকম রান্না করতে গিয়ে আরো একটু বেশী দেরী হয়ে গিয়েছিল। অরিত্র খাওয়ার পর কিছুক্ষন গড়িয়ে নিয়ে উঠে পড়ল, সবাই বোধ হয় ঘুমোচ্ছে ভেবে ছাদে গিয়ে চুপ করে নদীর দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলমাঝে মাঝে মনটা খুব অশান্ত হয়ে উঠছেকি করবে কিছু বুঝে উঠতে পারছিল নাকখন যে রুপসা এসেছে বুঝতে পারেনি। রুপসার ডাকে ফিরে তাকালোকি রে দাদাভাইকি ভাবছিস?
 
কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললনাসেরকম কিছু নাএমনি ই ঘুম আসছিল না
 
দাদাভাই তুই তো ভবানীপুরের বাড়ীতে গিয়ে মাঝে মাঝে থাকতে পারিসছোড়দিরা খুব দুঃখ করছিল
 
না রেতুই যতটা সোজা ভাবছিসতা নয়উপরের ঘরটা তে গেলেই মনে হয় বাবা বসে আছেবুকের ভেতর টা কেমন যেন গুমরে ওঠেশুনেছি বাবা নাকি আমাকে খুব ভালোবাসতোঅফিস থেকে ফিরে আগে আমাকে কোলে নিয়ে আদর তারপরঅন্য কাজগত বছর একদিন গিয়ে থাকার চেষ্টা করেছিলামসারারাত ঘুমোতে পারিনিখালি মনে হচ্ছিলমা বাবাআমার দুদিকে বসেবার বার বলছেদুষ্টুতোর দাদু দিদান খুব অসহায়ওদের কে কোনো কষ্ট দিস না রেতুই তো জানিসরুপসাদাদু, দিদান আর শুক্লাদির আমি ছাড়া আর কেউ নেই, তিনটে মানুষ আমার মুখ চেয়ে বেঁচে আছেওদের কষ্ট হবে ভেবে আমি কোথাও যেতে পারিনাঅফিস থেকে বার বার চাপ দিচ্ছে দু বছরের জন্য সিডনি যেতেকোনো রকমে আটকে রেখেছি কিন্তু সামনের ডিসেম্বরে অন্তত দু মাসের জন্য যেতে হবেই। জানিনা কি হবেদেখা যাকযদি আটকাতে পারিচাকরীটা ছেড়ে দেবো ভেবেছিলাম কিন্ত যেখানে জয়েন করবো সেখানেও তো একই রকম কিছু হতে পারে ভেবে আর এগোই নিজানি না আমার জীবনে কেন এত সমস্যাতোরা উপর থেকে হয়তো মনে করিস আমার মতো সুখী আর কেউ নেইএত সম্পত্তিদাদুর যা আছে আমি পাবোওদিকে ভবানীপুরে এত বড় বাড়ীর ভাগবম্বের মতো জায়গায় দু দুটো ফ্ল্যাটভালো চাকরীকিন্তু মনের ভেতরে যে কি আছে আমিই জানিভীষন ভয় করতোযার সাথে বিয়ে হবে সে দাদুদের কে মানিয়ে যদি না নিতে পারেতার পর জীবনে এলো মৌযার দাদুদের কে মানিয়ে না নেবার কথা ভাবার কোনো প্রশ্ন উঠছে না কিন্তু
 
রুপসা চুপ করে ওর কথা শুনছিলথেমে যেতে দেখে ওর দিকে তাকালোকিন্তু কি দাদাভাইআমি যতদুর বুঝেছিমৌ তোকে ভীষন ভাবে চায়
 
জানি
 
তাহলে? আটকাচ্ছে কোথায়?
 
ওর অতীতআমরা তো কেউ জানিনা ও কে
 
দাদাভাইঅতীত নিয়ে ভেবে কি লাভ আছে আমি জানি না
 
জানি লাভ নেইকিন্তুএমনও তো হতে পারে ওর কেউ খুব কাছের আছেকোনোদিন যদি ওর স্নৃতি ফিরে আসে আর ও তার কাছে ফিরে যেতে চায়আমার কি উচিত হবে ওকে আটকানোনাকিআমি পারবো
 
দাদাভাইএখানে অনেক গুলো যদি আছেএমন ও তো হতে পারেতুই যা ভাবছিস তা নয়… I feel…if you want to see the Light then you have to face the Dark….
 
অরিত্র কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর বললজানিআমি কাউকে বোঝাতে পারবো না
 
বিকালে রুপসা আর মৌকে নিয়ে ভবানীপুরের বাড়ীতে যেতে হবে, জেঠিমা আর পুবালীদি রুপসার কাছ থেকে মৌ এর ব্যাপারে শুনে ফোনেই খুব হইচই করে বলেছে একবার ওদের ওখানে নিয়ে যেতেই হবে। অরিত্র ওদের কে যে আগে জানায়নি তার জন্য দুজনেই খুব অভিমান করে বলেছেতুই কি আমাদের পর ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারিস না।পরে জানাবো ভেবেছিলামতারপর আর নানান ঝামেলায় জানানো হয়ে ওঠেনি বলে ওদের কে কোনোরকমে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ঠান্ডা করেছে। দুটো নাগাদ বেরোতে হবে, না হলে ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে যাবে বলে অরিত্র রুপসা কে তাড়া লাগালে কি হবেসেই যে সাজতে বসেছে দুজনেওঠার নামই করে না। রুপসা মৌকে একটু একটু করে সাজিয়ে আরো অপরুপা করে তুলছিলআই লাইনার টা খুব সাবধানে চোখের পাতায় বোলাতে বোলাতে ওর দিকে তাকিয়ে হাত যেন আটকে গেলকি সুন্দর টানা টানা মায়াবী চোখদেখলেই ভালোবাসতে ইচ্ছে করবে
 
মৌ এর মুখটা দুহাতে আলতো করে ধরে বললএইমৌ
 
মৌ রুপসার দিকে তাকালো জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালে ওর চোখে চোখে রেখে ফিসফিস করে বলল……এইতুমি আমার বৌদি হবে?
 
মৌ আস্তে আস্তে করে চোখ নামিয়ে নিলএকটু আগেই যে মুখে হাসি ছিলএখন সেখানে যেন শ্রাবনের মেঘরুপসা বুঝতে পারছিল না ওর মনের ভাষাযেটুকু বুঝেছে তাতে তো একবার ও মনে হয়নি যে ও দাদাভাই কে পছন্দ করে না
 
এই আমার দিকে তাকাওদাদাভাইকে কি তোমার ভালো লাগে না?
 
একবার চোখ তুলে ওর দিকে তাকিয়ে মুখ নাবিয়ে নিলএকটু একটু করে শ্রাবনের মেঘ সরে গিয়ে ওর মিষ্টি মুখে লাজুক হাসি ফিরে এসে বোঝালোভীষন ভালো লাগে
 
তাহলে?
 
দু চোখের ভাষায় বোঝালোশুধু কি আমার ভালো লাগলে হবে?
 
রুপসা একটু চুপ করে থেকে বললজানিআমার দাদাভাই টা কিবুক ফেটে গেলেও মুখ ফুটবে নাওর কেন যে মনের ভেতরে এত কিন্তু বুঝি না। একটু থেমে মৌ এর কাঁধে হাত রেখে হাসি মুখে বললতুমি পারবে না আমার বুদ্ধু দাদাভাই টাকে দিয়ে বলাতে যে ও তোমাকে চায়?
 
জেঠিমা আর পুবালী খুব খুশী ওদেরকে পেয়ে। সবাই মিলে গল্প করতে করতে জেঠুও অফিস থেকে ফিরে এলো। কোনো রকমে জেঠিমা আর পুবালীদিকে বোঝাতে পারলেও জেঠুকে বোঝানো খুব মুশকিল হয়ে গেল, সেই এক প্রশ্নঅরিত্র কেন এই বাড়ীতে আসে না। খুব দুঃখ করে বললোআমি জানি তোর কষ্টটা কোথায়কিন্তু একটা কথা তুই বুঝতে চাস নাতোর ও যেমন মা বাবা কে হারানোর দুঃখ আছে, আমারও কি কম কষ্ট হয় নিজের ছোটো ভাইকে আর বৌমাকে হারিয়ে। তাছাড়াতুই একবার ভাবআমাদের তিন ভাই এর ছেলে মেয়েদের ভেতরে তুই এক মাত্র ছেলেএকটা মেয়ের তো বিয়ে হয়ে গেছে পুবালীরও বিয়ের চেষ্টা চলছেআর বাকি থাকলো রুপসাওরা সবাই চলে গেলে আমরা কাকে নিয়ে থাকবো বলতো?...জানি তুই ছাড়া তোর দাদু দিদানের আর কেউ নেইতবুও আমাদেরও তো তোর উপরে একটা অধিকার আছে
 
অরিত্র কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললজানিতোমাদের জন্যও আমার কিছু কর্তব্য আছেআর জানি বলেই মাঝে মাঝে নিজের উপরে একটা ধিক্কার আসেসব দিক বজায় রাখতে পারিনাআমি বোধ হয় একটা অপদার্থকি করবো বুঝতে পারি না
 
ওদের কথার মাঝে জেঠিমা চলেএলদুজনেরই মুখ থমথমে দেখে বললতুমি কি বলোতোছেলেটা এতদিন পর এলোআর তুমি ওকে নিয়ে পড়ে গেলেওর দিকটাও একবার ভেবে দেখোএইটুকু বয়সে ওকে যা দায়িত্ব নিতে হয়কটা ছেলে নেয় বলোতো
 
জেঠু কিছু বলতে যাচ্ছিল দেখে জেঠিমা থামিয়ে দিয়ে বললোআরে বাবাএত চিন্তা করার কিছু নেইআমাদের ছেলেটাকে আর একটু বড় হতে দাওবিয়ে হোকআস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে
 
হলেই ভালো
 
আচ্ছা শোনোতোমার সাথে একটা কথা আছেদুষ্টু আছেওর সামনেই সেরে নেওয়া ভালো
 
জেঠু হেসে ফেলে বললতুমি এখোনো ওকে দুষ্টু বলা ছাড়লে না
 
জেঠিমা অরিত্রর পাশে বসে বললও আমার কাছে চিরকাল দুষ্টুই থাকবেকি রেতুই আবার দুষ্টু বললে রাগ করিস না তো?
 
ঘরের একটু আগের গুমোট হাওয়াটা কেটে যাওয়াতে সবারই ভালো লাগছিল। অরিত্র হেসে বললরাগ করবো কেনছোটো বেলায় তো কম জ্বালাইনি তোমাদেরকে।
 
জেঠু হো হো করে হেসে ফেলে বললতোর দুষ্টুমি চলে গেলেও নামটা থেকেই গেলকি বল। তারপর জেঠিমার দিকে তাকিয়ে বললবলোকি বলবে বলছিলে
 
বড়দি পুবালীর জন্য একটা ভালো ছেলের কথা বললো আজনিজে খুব একটা বিশেষ কিছু জানে নাভালো ছেলে শুনে তাড়াতাড়ি করে খবরটা দিয়ে বলেছে সব কিছু দেখে নিতেটিসিএস এ কাজ করেদুষ্টুতুই যদি একটু খোঁজ খবর নিয়ে বলতে পারিসবুঝতেই পারছিসএকটা মাত্র মেয়েআজকাল যা হচ্ছেখুব চিন্তা হয়তোর জেঠুরতো অফিস ছাড়া আর কিছু জানা নেইখোঁজ নিতে বললে কবে বাবুর সময় হবে তার ঠিক নেই
 
জেঠিমা তুমি চিন্তা কোরোনাতুমি ডিটেলস টা দিয়ে দাওআমি সামনের সপ্তাহের ভেতরে খোঁজ নিয়ে নিচ্ছিছোড়দি জানেতো? না হলে আবার সেই আগের বারের মতো কান্নাকাটি জুড়ে দেবে।
 
নানাঅনেক বোঝানোর পর রাজী হয়েছেএখন আর কোনো সমস্যা নেইওর একটাই শর্তবিয়ের পরেও চাকরী করতে দিতে হবেনা হলে এত পড়াশোনা করে কি লাভ।
 
ঠিকই তো বলেছে
 
জ্জেঠু জেঠিমার সাথে কথা বলতে বলতে পুবালী এসে অরিত্রর হাত ধরে টেনে বললএই ভাইচলআমাদের সাথে গল্প করবিকি খালিবড়দের সাথে মুখ গোমড়া করে বসে আছিস।
 
অরিত্র পড়ে যেতে যেতে সামলে নিয়ে বললআচ্ছা বাবাচলযাচ্ছিকোন দিকে যাই বলতোতোর সাথে গল্প না করলে অভিমান করে বসে থাকবিজেঠু জেঠিমাকে একটু সময় না দিলে তাদেরও খারাপ লাগবে।
 
পুবালী হাসতে হাসতে বললএক কাজ কর নাআজকাল কি সব গাড়ী বেরিয়েছে নাসব জায়গায় চলেওই একটা কিনে ফেলতাহলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না, অফিস ফেরত হুস করে চলে আসবি।
 
জেঠু হাসতে হাসতে বললহ্যাঁআসার সময় তোকেও তুলে নিয়ে এলে আরো ভালো হয়
 
অরিত্র সামনের সপ্তাহের জন্য অপেক্ষা না করে পরের দিনই ওদের অফিসের এইচআর এর অনিন্দ সেন কে ফোন করে পুবালীর জন্য যে ছেলেটির খোঁজ এসেছে তার ব্যাপারে কথা বলে নিলসেন দা নিজের প্রফেশানের সুবাদে অনেকের সাথে পরিচয় আছে যারা বিভিন্ন কোম্পানীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেএছাড়া ও নিজে এর আগে অনেক কোম্পানী ঘুরে আসায় পরিচিতি বেড়েছেওনার পক্ষে খোঁজ নেওয়াটা খুব একটা বড় কিছু নাও হতে পারে। সেন দা মাত্র দিন তিনেকের মধ্যে ছেলেটির হাঁড়ির খবর অব্দি জোগাড় করে অরিত্রকে ফোনে সব জানিয়ে দিল। সব দিক থেকে মোটামুটি ভালোইএগোনো যেতে পারে বলে মনে হতে অরিত্র জেঠিমাকে ফোনে সব জানিয়ে দেবার পর আলাদা করে ছোড়দি কে ও জানাতে হল, পুবালী বার বার করে বলে দিয়েছিলওকেও জানাতে। পুবালীর সাথে কথা বলার সময় রুপসা পাশে ছিল, অরিত্রর কথা বলা হয়ে গেলে রুপসা ফোনটা প্রায় কেড়ে নিয়েপ্রথমেই ওর স্বভাব মতো এক নাগাড়ে কিছুক্ষন বকে গেলদিদিভাইএ তো সোনার টুকরো ছেলে মনে হচ্ছে রেতাই বলে আবার কিছু না দেখে রাজী হবি না কিন্তুজেঠিমারা যা করবে করুকতুই কিন্তু মাঝে মাঝে দেখা করবিনা হলে বুঝতে পারবি নাভেতরে ভেতরে কিছু গন্ডগোল আছে কিনাসব যদি দেখিস ঠিক আছে তবেই রাজী হবি।ওদিক থেকে পুবালী কিছু একটা বললেরুপসা হেসে ফেলে বললঠিক আছে রে দিদিভাইরাখি এখনজানাস কিন্তু।
 
অরিত্র ওর হাত থেকে ফোনটা নিয়ে হেসে ফেলে বললএই রুপসাতুই কি ছোড়দির ঠাকুমা নাকি রেএমন ভাব করছিস যেনসব কিছু জেনে বুঝে গেছিস।
 
এই দাদাভাইভালো হবে না কিন্তুতুই কিছু বুঝিস না বলে কি আমি কিছু বুঝবো না নাকি।
 
আমি আবার কি বুঝি না রে?
 
তুই কিচ্ছু বুঝিস নাহাঁদারাম কোথাকারআমি যদি তুই হতামকবেই I Love You বলে দিতাম
 
খুব সোজা না? নিজে তো আজ অব্দি একটা জোটাতেও পারলি না।
 
রুপসা চোখ ছোটো ছোটো করে ওর দিকে তাকিয়ে বললএই দাদাভাইবাজে বকবি নাঅনেক আগেই আমি জোগাড় করে ফেলেছিলামরাজী না হলে কি করবো?
 
আমি বাজে বকছি নাকি তুই বাজে বকছিস রে? তুই কাউকে জোগাড় করলে আমাকে না বলে থাকতে থাকলি কি করে?
 
রুপসা ফিক করে হেসে ফেলে বললতোকে আবার আলাদা করে কি জানাবো? এই জন্যই তো তোকে হাঁদারাম বলি
 
মানে?
 
মানে আবার কিওটা তো তো তুই ছিলি রেবুঝলিই না আমার ভালোবাসা কতটা খাঁটি ছিলপ্রথম প্রেমকি রোমান্টিক হয়
 
দাঁড়া তোর রোমান্টিক হওয়া আমি দেখাচ্ছিঅসভ্যফাজিল মেয়ে কোথাকার
 
এই দাদাভাইচুলে হাত দিবি না কিন্তুখুব খারাপ হয়ে যাবে
 
ওদের ভাই বোনের খুনসুটির মাঝে মৌ ঘরে ঢুকলো একটা প্লেটে কিছু স্ন্যাক্স আর কফি নিয়ে, এতক্ষন দিদানের সাথে কিচেনে ছিল, গালের এক দিকে বোধ হয় হলুদের দাগ, নাকের ডগায় বিন্দু বিন্দু ঘাম। একেবারে শেষের দিকে আসায় বুঝতে পারছিল না ব্যাপারটা কিদু হাতে খাবারের ট্রে টা ধরে দাঁড়িয়ে থেকেএকবার অরিত্রর দিকে আর একবার রুপসার দিকে তাকাতে তাকাতে বোঝার চেষ্টা করছিল কি ব্যাপার।
 
অরিত্র ওর অবস্থা দেখে বললআমার দিকে তাকিয়ে লাভ নেইআমি বলতে পারবো নাওই ফাজিল মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করযত বড় হচ্ছে তত ফাজলামো বাড়ছে
[+] 1 user Likes pcirma's post
Like Reply


Messages In This Thread
মৌ কথা কও by Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:20 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:20 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:21 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:22 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:23 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:24 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:25 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:26 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:26 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:27 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:29 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:30 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:31 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:32 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:40 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:42 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:43 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:44 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:46 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:50 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:50 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:56 PM
RE: মৌ কথা কও Raunak_3 - by pcirma - 25-02-2019, 12:56 PM



Users browsing this thread: 7 Guest(s)