Thread Rating:
  • 27 Vote(s) - 3.44 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পরভৃত / কামদেব


[আটচল্লিশ]




             ঋষিকে এখন অন্য কাজ করতে হয় না। তাকে দেওয়া হয়েছে রিপোর্ট বিতরণের দায়িত্ব আর রোগীর এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট নথিভুক্ত করা।বলাবাহুল্য ড.এমার নির্দেশে এই পরিবর্তন।সকাল বেলা টেলিফোনের সামনে বসে একের পর এক কল আসতে থাকে খাতা মিলিয়ে ঋষি নাম নথিভুক্ত করতে থাকে।ঋষি বুঝতে পারে ড এমার চাহিদা।একজনকে প্রিয়া যাদবের নাম বলতে বলল,দেরী হোক আমি ড.এমাকে দেখাতে চাই।হঠাৎ নজরে পড়ে বাইরে ভজা আর সন্তু ঘোরাঘুরি করছে।টেবিল ছেড়ে উঠতে পারছে না কি করবে বুঝতে পারেনা ঋষি।এমন সময় ম্যানেজারবাবু এসে একজনকে ডেকে ঋষির জায়গায় বসতে বলে বললেন,সোমবাবু বাইরে আপনাকে ডাকছে।
ঋষি যারপরনাই বিস্মিত হয়।এই দেবেশবাবু তার সঙ্গে কোনোদিন ভাল ব্যবহার করেন নি।শুনেছে এখানে তার চাকরি হয় দেবেশবাবুর ইচ্ছে ছিলনা।হঠাৎ এই সদয় ব্যবহার কেন?
ঋষি বাইরে আসতে ভজা একটি লোককে ডেকে বলল,বস মাখনবাবু একে পাঠিয়েছে।
ঋষি দেখল বয়স বছর চল্লিশের কাছাকাছি ভদ্র চেহারা।
ঋষি বলল,আপনার নাম?
ভদ্রলোক বিগলিতভাবে বলল,বিশ্বনাথ রায়।আমি আপনাকে চিনি বস।
ঋষি মনে মনে হাসে এও তাকে বস বলছে।জিজ্ঞেস করল,মাখনবাবুর কাছে সব শুনেছেন?
বস আমি মাখনদার দোকানে কাজ করতাম।এখন দোকান ছোটো হয়ে গেছে তাই মাখনদা বলল, আপনার দোকানে কাজ করার কথা।বস আপনার দোকান কোথায়?
ঋষি বলল,একটু ধৈর্য ধরে শুনুন।নতুন দোকান করা হবে।মাখনবাবু আপনাকে কতটাকা দিত?
বিশ্বনাথ হতাশ হল বলল,মিথ্যে বলব না।যখন আগের দোকানে কাজ করতাম তখন তিন হাজার আর একবার টিফিন দিত।
ঠিক আছে আপনাকে তিন হাজার দেওয়া হবে।
ভজা বলল,বস কি বাত হাতী কি দাত।
বিশ্বনাথ বলল,সে বুঝেছি কিন্তু কবে থেকে দোকান চালু হবে বলবেন।মানে বস কবে থেকে কাজে লাগব বলবেন খবর দিলেই চলে আসব।
কাল থেকেই আপনি বহাল হলেন।
বিশ্বনাথ অবাক হল কাল থেকেই বহাল?ঋষি বলল,শুনুন ফাকা দোকান ভজা কাঠের মিস্ত্রী এনে দেবে আপনি তাদের দিয়ে টেবিল তাক যেখানে যা করতে হবে করিয়ে নেবেন।পারবেন না?
কেন পারব না বস।টাকাটাই আসল।টাকা দিলে কিইনা হয়?বিশ্বনাথ উৎসাহিত হয়।
লোকটি বেশি কথা বলে। ঋষী বলল,সেজন্য ভাবতে হবে না।দোকানের এককোনে থাকবে ক্যাশিয়ারের বসার জায়গা।কাঠের কাজ শেষ হলে বাজারে যাবেন ওষুধ কিনতে।ইতিমধ্যে ওষুধের তালিকা করে ফেলবেন।
বস কিছু ওষুধের জন্য একটা ফ্রিজ কিনতে হবে।অবশ্য পরে কিনলেও চলবে।সেই ওষুধ এখন তুলবো না।
পরে নয়।যা যা দরকার ভজাকে বলবেন।কারো পাচটা ওষুধ লাগবে চারটে আছে একটা নেই এমন যেন না হয়।কাস্টোমারদের মনে এমন ধারনা হতে হবে কোহিনুরে সব পাওয়া যাবে।কিছু জিজ্ঞাসার আছে?
বিশ্বনাথ বলল,কোহিনুর বুঝলাম না।
কোহিনূর ফার্মেসী।
বাঃ সুন্দর নাম।এখন ঘর খুজতে হবে।
ভজা আপনাকে নিয়ে যাবে।কাল গিয়ে যেন দেখতে পাই কাজ শুরু হয়ে গেছে।
ঋষি একটু আড়ালে ভজাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বলল,তুমি দেবেশবাবুকে কিছু বলেছো?
বিশ্বাস করো বস দেবেশবাবুই এসে জিজ্ঞেস করল।কিরে সন্তু ওকে কিছু বলেছি?
কাউকে সাক্ষী ডাকার দরকার নেই।তোমার কথাই যথেষ্ট।
শুধু বলেছি বসের কোনো তকলিফ না হয় দেখবেন।
ঋষি বুঝতে পারে সময় লাগবে এই স্টাইল বদলাতে।বিশ্বনাথকে বাইকে চাপিয়ে চলে গেল।
দেবেশবাবুর পরিবর্তনের কারণ বোঝা গেল।যাক একটা কাজ মিটল।

বেলা হয়েছে অফিস প্রায় ফাকা।স্নান খাওয়া দাওয়া করে আবার বসতে হবে।সকালে যাদের পরীক্ষা হল সবাই রিপোর্ট নিতে আসবে।আজ ড.এমার বসার দিন।ড.ঝাও আজ বসিবেন।এক সময় ঘোষবাবু কাছে এসে নীচু গলায় জিজ্ঞেস করল,মাইতি কিছু বলছিল?
ম্যানেজারবাবু? না কেন?
দেখলাম ম্যাডামের ঘরের দিকে গেল।
ম্যানেজার যেতেই পারে।
রহস্যময় হাসি হেসে ঘোষবাবু বলল,আপনি এখন ম্যাডামের নেক নজরে।
ঋষি ঘরে চলে গেল।রোহন থাপাকে খেতে দিয়েছে কাঞ্চা।বাপুকে খাইয়ে উপরে চলে যাবে।
ডএমার সঙ্গে বেশি ভাগ সময় কাটায়।স্নান করে ঋষি ক্যাণ্টিনে চলে গেল।অনেকে ভাত নিয়ে ঘরে বসে খায়।তাতে হাঙ্গামা ঘর মোছো বাসন নিয়ে ক্যাণ্টিনে দিয়ে এসো।ঋষি ঝামেলায় যেতে চায়না ক্যাণ্টিনেই সেরে নেয়।এখানে আসার পর থেকে ঋষির বইপড়া প্রায় বন্ধ।ভিজিটরদের জন্য কিছু ম্যাগাজিন রাখা হয় সেই সব নিয়ে দুপুরের সময় কাটে।ম্যাগাজিনগুলো এখন ফিল্মি জগতের দখলে কোন নায়িকা কোথায় কি করছে সেই সব স্ক্যাণ্ডালে ভরা।

ইউনিভারসিটি হতে বেরিয়ে দেখল প্রতিদিনের মত দাঁড়িয়ে আছে সন্দীপ।আজ একটা ফয়শলা করতে হবে কল্পনা স্থির করল।রোজ রোজ বাড়িতে অশান্তি ভাল লাগেনা।তাকে নিয়ে বাবা মার মধ্যে অশান্তি চরমে উঠেছে।রাগ করে মা বলেছে,তোর লজ্জা হয়না আমি হলে কবে বাড়ী ছেড়ে চলে যেতাম।কল্পনা কাছে যেতে সন্দীপ বলল,আজ মুড খারাপ মনে হচ্ছে?
দীপ কিছু একটা করো।সত্যি বলছি ঐ কল্পনার মত আমাকেও একদিন অপঘাতে মরতে হবে।
তোমার বাবা কি কিছু বলেছে?সন্দীপ জিজ্ঞেস করল।
সেতো রোজই বলছে।কাল যা হয়েছে জানি না কি হবে?
চলো কফি হাউসে বসে শুনবো।
দুজনে উপরে উঠে একটা কর্ণারে ফাকা টেবিলে বসল।পকোড়া কফির অর্ডার দিয়ে সন্দীপ জিজ্ঞেস করল,বলো কাল কি হয়েছে?
কল্পনা ফিক করে হেসে বলতে শুরু করে।কাল সিনেমা দেখে বাসায় ফিরে দেখি এক মূর্তিমান বসার ঘরে বসে আছে।আল্পনার সঙ্গে খুব ভাব জমিয়েছে।আমি ফিরেছি শুনে বাবা এঘরে এসে বলল,এত রাত অবধি তোমার ক্লাস হচ্ছিল?মা থামাবার চেষ্টা করে বাইরের লোকের সামনে হচ্ছে কি?বাইরের লোক কেন তোমার মেয়ের কীর্তি দুনিয়ার লোকের জানতে বাকী নেই।শেষে বাবা বলল,হাতমুখ ধুয়ে এঘরে এসো।সুব্রত অনেকক্ষন এসে বসে আছে।তারপর মুখে হাসি টেনে বাবা আবার বসার ঘরে চলে গেল।আমি যেই অবস্থায় ছিলাম সেইভাবেই বসার ঘরে যেতে বাবা আলাপ করিয়ে দিল,আমার মেয়ে কল্পনা এম এ পড়ছে।আর এ সুব্রত আমার কলিগের ছেলে ব্যাঙ্কে আছে।
সুব্রত বলল,মেশোমশায় ওকে আমি আগে দেখেছি।
বাবা ভয় পেয়ে গেল কোথায় কারো সঙ্গে দেখেছে কিনা?সুব্রত বলল,মেশোমশায় আপনাদের সময় ছিল আলাদা।আজকাল ভাল করে খোজ নিলেই দেখবেন সব মেয়েরই বিয়ের আগে কারো না কারো সঙ্গে এ্যাফেয়ার থাকে বিয়ের পর সেসব এর কেউ মনে রাখে না।তবে আমার একটাই কথা ঠামমার বয়স হয়েছে কার কখন কি হয় নিশ্চিত করে কে বলতে পারে।
মুকুন্দবাবু তাল মেলালেন,সেতো বটেই বিধুবাবু আমার সিনিয়র কলিগ–তোমার বাবা চেনেন।রিটায়ার হতে বছর দুই বাকী।রাতে খাওয়া দাওয়া করে দিব্যি শুতে গেলেন।সকালে আর ঘুম ভাঙ্গলো না।
সুব্রত বলল,তাহলে বুঝতেই পারছেন?বিয়েটা দু-মাসের মধ্যেই সেরে ফেলতে চাই।বিয়ে মানেই হাতা-খুন্তি ঠেলো আমাদের বাড়ী সেরকম নয়।এমএ, পিএইচডি করার যথেষ্ট সময় থাকবে।আপনার উপর চাপও কমবে।
মুকুন্দবাবু বিগলিত গলায় বললেন,সেতো ঠিকই বাবা।আল্পনার সামনের বছর গ্রাজুয়েশন শেষ হবে–খরচ তো কম নয়।
একটা পকোড়া মুখে দিয়ে সন্দীপ বলল,বোকাচোদা তো হেভি সেয়ানা।
এই মুখ খারাপ করবে না।
সন্দীপ মুচকি হেসে মেঝতে পা ঠুকতে ঠুকতে কল্পনার দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকে।কল্পনা জিজ্ঞেস করল,কি দেখছো?
তোমাকে দেখছি রাণী।
শুধু দেখলেই হবে কিছু করবে না?
করব বিয়ের পর সবই করব।
কল্পনার মুখ লাল হয় বলে,করাচ্ছি অসভ্য কোথাকার।
সন্দীপ গম্ভীর হয়ে বলল,শোন শনিবার তুমি বেরোবার আগে বাড়ীতে বলবে রাতে ফিরবে না বন্ধুর বাড়ী নেমন্তন্ন আছে।
মানে?ভ্রূ কুচকে কল্পনা বলল।
আগে আগে দেখো হোতা হ্যায় কেয়া?
কাঞ্চার ঠেলাঠেলিতে ঋষি চোখ মেলে বুঝতে পারে সে ঘুমিয়ে পড়েছিল।দুপুরে সে ঘুমায় না।তাড়াতাড়ি একটা জামা গলিয়ে বাইরে এসে দেখল তার কাউণ্টারের সামনে লাইন।এত বেলা হয়ে গেছে?জায়গায় বসে রিপোর্ট বিলি করতে লাগল।কাজটা সহজ নয় বিল দেখতে হবে ফুল পেমেণ্ট করা হয়েছে কিনা?করা না হলে বাকী টাকা নিয়ে খাতায় এণ্ট্রি করে পেইড ছাপ মারো।
গাড়ী এসে থামতে সস্ত্রীক বিডি মুখার্জি নামলেন।প্রায় মাস খানেক আগে এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট নিয়েছেন,আজ এসেছেন দেখাতে। ভিজিটরস রুমে ঢুকতে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়।
নজরে পড়ল রিপোর্ট বিতরণ কাউণ্টারে বসা ছেলেটাকে গভীরভাবে লক্ষ্য করে।ভাল করে দেখল আঁখি হ্যা ঋষিই তো।সঙ্গে বিডি রয়েছে না হলে কাছে গিয়ে আলাপ করতো।ভিজিটরস রুমে বসে অবাক হয়ে ভাবে ফার্স্ট ক্লাস অনার্স শেষে এই চাকরি?একবার মনে হল ঋষিই তো? না না ঋষিকে অনেক ঘনিষ্ঠভাবে চেনে তার ভুল হবে না।ডাক এল আঁখি মুখার্জি।কব্জি উলটে ঘড়ি দেখল পৌনে নটা।এখানে সব কিছু ঘড়ি দেখে যাকে যা সময় দিয়েছে প্রায় সেই সময়ে ডাক পড়বে।ডাক্তারের ঘরে ঢুকতে গেলে বিডিকে বাধা দেওয়া হয়,শুধু পেশেণ্ট।
আঁখি ভিতরে ঢুকতেই একজন নার্স তাকে ওজন যন্ত্রে দাড় করিয়ে ওজন নিল।তারপর ড.এমার সামনে চেয়ারে বসতে বলল।বসতেই ড.এমা বলল,বলুন মিসেস মুখার্জি?
আঁখি অবাক নামও জানে?এমা জিজ্ঞেস করল,কবে বন্ধ হয়েছে?দেখি চোখ দেখি?
আঁখি বলল,রিপোর্ট বিলি করছে ঋষি এখানে চাকরি করে?
ড.এমা শুনলেন কি শুনলেন না বললেন,এ্যানিমিয়া মনে হচ্ছে।
আঁখি বলল,ইংরিজি অনার্স ফার্স্ট ক্লাস ঋষি–।
এমা কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞেস করলেন,কোনো অসুবিধে হয়?
না ম্যাডাম।ঋষি কি এখানে চাকরি করে?
ড.এমা বললেন,হুম ঐ টেবিলে শুয়ে পড়ুন।
একজন নার্স ধরে নিয়ে টেবিলে শুইয়ে প্রেশার নিতে থাকে।আঁখি ভাবে ডাক্তার কি কানে শোনে না?এতবার বলল, কোনো উত্তরই দিল না।প্রেশার মাপা শেষ হলে ড.এমা কোমরের কাপড় ঢিলা করে পেট টিপে টিপে কি বোঝার চেষ্টা করে।তারপর নিজের চেয়ারে ফিরে যেতে গিয়ে বললেন,সঙ্গে কে আছে ডাকুন।
আঁখিকে ডাকতে হয়না নার্সটাই বিডিকে ডেকে ভিতরে এনে বসতে বলল।
এমা বললেন,মি.মুখার্জি দেখলাম ঠিক আছে।এ্যানিমিক মনে হয় ওষুধ লিখে দিলাম।একটা ব্লাড করতে বলেছি।প্রোবাবল টাইম লিখে দিয়েছি–।
বিডি বললেন,কমপ্লিট রেস্ট নাউ?
বাড়ীতে রান্না কে করে?
কুক আছে।
মিসেস মুখার্জি কি করেন?
আঁখি বলল,আমার মেয়ে আছে তাকে স্কুলে দিয়ে আসা নিয়ে আমাকেই করতে হয়।
ভেরি গুড।শরীরকে আইডিল ফেলে রাখবেন না।এক্টু সাবধানে চলাফেরা করবেন।
আঁখি বলল, ঐখানে যে ছেলেটা ঋষি--।
একগাল হাসল ড.এমা।নেক্সট?
আঁখি উঠে পড়ল।বিডির সামনে ঋষির কথা আর জিজ্ঞেস করা হল না।বাইরে বেরিয়ে দেখল ঋষি নেই কাউণ্টার ফাকা।বিডি বলল,তুমি গাড়ীতে গিয়ে বোসো।
বিডি একটা কাউণ্টারে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে বলল,পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে হলে এখান থেকে লোক গিয়ে ব্লাড নিয়ে আসতে পারে।
রাস্তায় পায়চারি করে ঋষি।আঁখি মুখার্জিকে দেখেছে।পাড়ায় ফিরে রাস্ট্র করবে নাতো?পুলিশের কানেও যাওয়া অসম্ভব নয়। টুকুনের স্কুলে বড়দির সঙ্গে কথা না হলেও দেখা হয়।বড়দি শুনলে দুঃখ পাবে।কি হয়েছে আঁখি মুখার্জির?দেখে তো মনে হলনা অসুস্থ?সাহেবী পোশাকে সঙ্গে বোধ হয় ওর স্বামী?
দূরে রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে হল কাল একবার সাধুর মোড়ে যাবে।কোহিনূরের দোকানে কাজ শুরু হল কিনা?একটা মোবাইল থাকলে খুব সুবিধে হতো। বিশ্বনাথবাবু লোকটাকে ভরসা করা যায়।একটু বেশি কথা বলে এই যা।কোহিনূর কি বলবো বলবো করে বলতে পারেনি।ওর মতামতকে গুরুত্ব না দিলে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে।ড.এমা বেরিয়েছে,ঘড়ি দেখল দশটা বাজতে চলেছে।এবার উপরে উঠে ফেমেল ওয়ার্ডে একবার ভিজিট করবে।এগারোটার মধ্যে ক্যাণ্টিনে যেতে হবে না হলে হরি মটর।
ঋষি ঘরে গিয়ে লাইট জ্বাললো।জামা খুলে দড়িতে ঝুলিয়ে চৌকিতে গা এলিয়ে দিল।বেচারি বাবুয়া বিনা অপরাধে জেলে আটকা পড়ে আছে।ভজা বলছিল ভাল উকিল দেবার কথা।কার সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলা যায়?পুলিশ বসকেও খুজছে ভজা বলছিল।
ডাক্তার দেখিয়ে শেফালীকে নিয়ে বাসায় ফিরে গম্ভীর কঙ্কা।শেফালী বুঝতে পারে খারাপ কিছু বলেছে ডাক্তার।কঙ্কা এসে সোফায় বসতে রিক্তা কোলে উঠে বসলো।কঙ্কা মাথায় হাত বোলাতে বোলতে বলল,এক্টু চা করো।
শেফালী রান্না ঘরে গিয়ে চা করতে থাকে।মেয়েটার আচরণ প্রথমে খারাপ লাগতো না। এখন  ম্যাম ম্যাম করে এমন করে যেন ম্যাডাম ওর সত্যিকারের মা। নিজির মারেই ভুলে গেছে।ম্যাডামের সামনে ওকে কিছু বলা যাবেনা।আড়ালে মারলেও ম্যাডাম ফিরলে লাগাবে।দু-কাপ চা নিয়ে কঙ্কাকে এক কাপ দিয়ে রান্না ঘরের দিকে যেতে কঙ্কা ডাকল, শেফালী এখানে বোসো।
শেফালী একটা চেয়ার টেনে বসল।বুঝতে পারে ডাক্তার কিছু বলিছে।
ডাক্তার কি বলল,শুনেছো?
শেফালী অবাক হয়ে তাকালো।
তুমি প্রেগ্ন্যাণ্ট।তোমার পেটে বাচ্চা এসেছে।
চা চলকে পড়ছিল প্রায় সামলে নিয়ে শেফালী মাথা নীচু কোরে থাকে।
তোমার স্বামী তো ছেড়ে চলে গেছে বহুকাল,তাহলে?
শেফালী চোখ তুলে ম্যাডামের দিকে তাকায়।
আমার কাছে কিচছু গোপন করবে না।এরকম কিভাবে হল?
তাহলি মনে হয় কাকুর কাজ।শেফালী চিন্তিতভাবে বলল।
কাকু কে?আমাকে সব খুলে বলো।
শেফালী ধীরে ধীরে যা যা হয়েছিল সব বলল।কেন তাকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দিয়েছিল সে কথাও বলল।
ঘোষবাবু?কাকলি ঘোষের হাজব্যাণ্ড?ছি-ছি-ছি।
ম্যাডাম বাচ্চা নষ্ট করা যাবেনা?
বুড়ো বয়সে ভীমরতি।
এখন কি স্বীকার যাবে?শেফালী বলল।
ডি এন এ টেষ্ট করলে সব বেরিয়ে যাবে।মুশকিল হচ্ছে বাচ্চা অনেক ম্যাচিওর মানে অনেক বড় হয়ে গেছে।কঙ্কা ভাবে শেফালী বাচ্চা নষ্ট করতে চায় আর একটা বাচ্চার জন্য সে কত ডাক্তার বদ্যি করেছে।
বাচ্চা নষ্ট করতে চাইছো কেন?

আমি গরীব মানুষ পালব কেমন করে?
আচ্ছা সেসব পরে দেখা যাবে  তুমি এখন রিক্তাকে কমপ্ল্যান করে দাও।
[+] 3 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
পরভৃত / কামদেব - by kumdev - 26-05-2020, 07:34 PM
RE: পরভৃত / কামদেব - by kumdev - 05-06-2020, 09:16 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)