Thread Rating:
  • 7 Vote(s) - 3.14 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery মেয়েমানুষের কেপ্ট by lekhak
#4
আট
 
শ্বাস্বতী প্রবল সুখ পাচ্ছিল এবার সুমনের কাছ থেকে। কিছুক্ষণ আগেও সুমনের অস্বাভাবিক লিঙ্গটা যেভাবে বেদনার সৃষ্টি করছিল এখন সেটা মধুর আঘাতে রূপান্তরিত। লিঙ্গ চুষে যেভাবে রসক্ষরণ হয়েছে, জেলি, ক্রীম ঐ জাতীয় কিছুরই এখন দরকার নেই। পুচপুচ করে যাচ্ছে ভেতরে ঢুকে। গোঙাতে গোঙাতে সুমনের কাঁধদুটোকে সবলে জড়িয়ে ধরছে শ্বাস্বতী। সুমনকে বলল, ও কি সুখ দিচ্ছো গো? যেভাবে ওটাকে ভেতরে তুমি পুরে দিচ্ছ, ব্যাথা নেই, কষ্ট নেই। তুমি কি সত্যি জাদু জানো? যেন রসেতে পুরো হাবুডুবু খাচ্ছে, সেইভাবেই বলল, এমন সুখ আমি সত্যি পাইনি সুমন।
সুমন বুঝতেই পারছিল, তুফানি গতিতে লিঙ্গ ভেতরে ঢুকে আছড়ে পড়ছে সুনামির মত। শ্বাস্বতী সুখে যেভাবে পাগল হয়ে উঠেছে, সহজে সুমনকে ছাড়বে না, আজ একটা কান্ড ঘটিয়েই ছাড়বে। হলও তাই। শ্বাস্বতী আঁক করে চিৎকার করে উঠল। ফেনিল অনন্তধারা বয়ে গেল যোনীর ভেতরে। আনন্দে শ্বাস্বতী সুমনকে বলে উঠলো, আমাকে ছেড়ো না সুমন, আমাকে ছেড়ো না।
 
যেন উন্মাদনার সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ল কামনার তীরে।
 
সারারাত সুমনের ঘরেই থাকবে মেয়েটা। ওকে ছেড়ে আর নিজের ঘরে ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে না। সুমনের বুকে মাথা রেখেই শ্বাস্বতী বলল, তুমি কি করো সুমন? চাকরি না ব্যাবসা? অনেক রাত করে ফেরো দেখি। মাঝে মধ্যে সকালেও ফিরতে দেখি তোমাকে। তোমার কি বড় ব্যাবসা আছে?
 
সুমন শ্বাস্বতীর কথার ঠিকমত জবাব দিতে পারছে না। ব্যাবসা তো বটেই। তবে এটা হল দেহ খাটিয়ে ব্যাবসা। এ ব্যাবসায় পুঁজি লাগে না। শুধু মেদহীন শরীর আর ফিগারটা ঠিক রাখলেই সুন্দরী মেয়েদের মন পাওয়া যায়। লিঙ্গটাও যদি বেশ বড়সড় হয়। শরীরের সাথে ওটাও তখন একটা প্লাসপয়েন্ট। সুমনকে যারা ভালবাসে, তারা যে ওর লিঙ্গের আকৃতির জন্যই এত পাগল, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
 
হঠাৎই শ্বাস্বতী একটা প্রস্তাব দিয়ে বসলো সুমনকে। বললো, সুমন তুমি যদি রাজী থাকো, তাহলে আমি একটা মনের কথা বলতে পারি তোমাকে।
 
সুমন বললো, কি?
 
শ্বাস্বতী বললো, আমিই যদি তোমাকে একটা কাজের অফার করি, রাজী হবে আমার কাজটা করতে?
 
সুমন ভালমতন জানে, কাজটা হল বাহানা। এর আগে অনেক মেয়েমানুষই সুমনকে কাজের লোভ দেখিয়ে কাছে টানার চেষ্টা করেছে। এতে একটা সুবিধাও আছে। বাঁধা মেয়েমানুষের মত সুমনও তার একমাত্র পুরুষ সঙ্গী হয়ে থাকবে। বাকীরা সহজে ওকে কব্জা করতে পারবে না। রতিক্রিয়ায় ওর মত ঝানু মালকে বাগে আনার জন্য এটা একধরনের টোপ।
 
শ্বাস্বতীকে তবুও ও বললো, কি কাজ?
 
শ্বাস্বতী বললো, তুমি বোধহয় জানো না, আমিও কোথায় চাকরি করি?
 
সুমন বললো, না আমি তো কিছুই জানি না।
 
শ্বাস্বতী বললো, জানি, তুমি নিজের কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকো। কিন্তু আমিও অ্যাড পাবলিশিং কোম্পানীতে চাকরি করি মিষ্টার। কোম্পানী আমাকে খারাপ মাইনে দেয় না। মাসে যা বেতন পাই, তাই দিয়ে হেসেখেলে আমাদের সংসারটা চলতে পারে। কোম্পানী থেকে আমাকে একটা নতুন ফ্ল্যাটও দেবে বলেছে সামনের মাসে। নিজের ব্যবহারের জন্য গাড়ী চাই বললে, তাও লোন করে দেবে ব্যাঙ্ক থেকে। শুধু স্বামীর সাথে, সংসারটাই যা করতে পারলাম না। তাই বলছিলাম-
 
সুমন বললো, তা কি?
 
শ্বাস্বতী সুমনের গলা জড়িয়ে ওকে চুমু খেয়ে বললো, তাই বলছিলাম, চলো না নতুন ফ্ল্যাটে তুমি আর আমি চলে যাই। এই বউ বাজারের পুরোনো বাড়ীতে থেকে কি করবে?
 
প্রস্তাবটা মন্দ নয়। কিন্তু সুমন ভাবলো, তার মানে শ্বাস্বতী ওর সাথে লিভ টুগেদার করতে চাইছে। পুরোন স্বামীর সাথে ডিভোর্স হওয়া না পর্যন্ত সুমনকে এখন থেকেই যৌনসুখের পার্টনার বানাতে চায়। নিজের রোজগার পাতি ছেড়ে দিয়ে সুমন শ্বাস্বতীর কেনা পুরুষ হয়ে থাকবে আর নিজের যাবতীয় প্রয়োজন মেটানোর জন্য তখন ওর কাছেই হাত পাততে হবে।
 
কিছুক্ষণ ভেবে নিয়ে সুমন বললো, সে তো বুঝলাম, কিন্তু আমার কাজ কারবারের কি হবে? তুমি জানো না। আমার একটা ছোট বোন আছে। মা পঙ্গু। জীর্ন শরীর তাকে অথর্ব করে রেখেছে। প্রতিমাসে গ্রামে সংসার খরচা চালানোর জন্য আমি একটা টাকা পাঠাই। এই লোকটাই যদি বেরোজগারী হয়ে পরে, তাহলে মা, বোনকে দেখবে কে?
 
শ্বাস্বতী যেন জানতো, সুমন এরকমই একটা উত্তর দেবে। ওকে বললো, কেন? তুমি কি ভাবছো? আমি তোমার জন্যও কিছু ভেবে রাখিনি?
 
ব্যাপারটা ঠিক বোধগম্য হচ্ছে না। মনটাও খচখচ করছে। সুমন বললো, আমি কাজকর্ম ছেড়ে দিয়ে তাহলে কি করব? সেটা বলবে তো?
 
শ্বাস্বতী সুমনের দুগালের ওপর দুটো হাত রেখে কপালে চুমুর স্পর্ষ দিয়ে বললো, আমি সব জানি, তুমি কি করে বেড়াও। অসংখ্য নারী মনে প্রাণে কামনা করে তোমাকে। তাদের বিশেষ চাহিদা মেটাতেই তোমাকে যেতে হয় তাদের কাছে। এক নারী যদি তোমার কাছে ভালবাসা চায়, সেটা কি পাপ? না অন্যায়? শ্বাস্বতী তোমাকেও একটা ভাল চাকরী পাইয়ে দেবে। আমারই অফিসে ম্যানেজমেন্ট এ একটা ভাল পোষ্ট খালি আছে। আমার বস হল, জয়িতা ম্যাডাম। তোমার জন্য যদি তার কাছে চাকরীর আবদারটা করি, উনি ফেরাতে পারবেন না। আমি ভেবেও রেখেছি তোমার কথা। তাই বলছিলাম-
 
সুমন অবাক। শ্বাস্বতী কি করে ওর এই পেশাটার কথা জানতে পারলো? ওতো সেভাবে কোনদিন বুঝতে দেয় নি।
 
শ্বাস্বতী বললো, আমি তোমাকে দুদিন দেখেছি, দুটো মেয়েছেলের সাথে ট্যাক্সিতে উঠতে। তখনই বুঝেছিলাম তুমি অনেক মেয়েকে খুশী করো। জানোতো আমাদের মেয়েদের চোখ। আমরা একবার দেখলেই সব বুঝতে পারি।
 
শ্বাস্বতীর কথার জবাবে সুমন কি বলবে বুঝতে পারছে না। নতুন এক সখি জুটেছে, সে এখন তাকে তার সখা বানাতে চাইছে। যেন এর ইচ্ছে নয়, অসংখ্য নারীগমনে সুমনের ক্ষয় হোক। সুমনের পৌরুষ আর যৌবনটাকে এখন একা ভোগ করতে চায় শ্বাস্বতী। যেন কাউকে ভাগ দেবার পক্ষপাতী নয় ও। এক অলিখিত চুক্তি। বিনিময়ে সুমন নিয়মিত যৌনসুখ দেবে একমাত্র শ্বাস্বতীকেই।
 
ওর দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে সুমন বললো, কিন্তু আমি তো কোনদিন চাকরী করিনি। গ্রাম থেকে এসেছি, লেখাপড়াও বিশেষ করিনি। আমার দ্বারা এ কাজ কি করা সম্ভব?
 
শ্বাস্বতীও নাছোড়বান্দা। সুমনের দুটো হাত ধরে মিনতি করে বললো, ওসব নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। তোমার কাজ জোটানোর দায়িত্ব শুধু আমার। তুমি শুধু আমার আবদারটা রাখবে। প্রতিমাসে গ্রামে টাকা পাঠানোর দায়িত্বটাও আমি নেবো। শুধু, তুমি আমাকে ছেড়ে যেও না সুমন। আমাকে ছেড়ে যেও না। বলেই সুমনের বুকে মুখ ঘষতে লাগল শ্বাস্বতী।
 
স্বার্থ আর শর্তের ব্যাপারটা একটু একটু করে ভালবাসার দিকে মোড় নিচ্ছে। সুমন এখনও বুঝে উঠতে পারছে না কি করবে। ও শ্বাস্বতীকে বললো, আমাকে দুদিন সময় দাও। আমি ভেবে বলবো।
 
শ্বাস্বতী দেখলো, কিছু যখন করার নেই, ও সুমনকে বললো, আচ্ছা তাই হবে। তুমি ভেবে নিয়ে আমাকে তোমার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিও।
 
নয়
 
সুমন এমন পরিস্থিতিতে আগেও পড়েছে। সব মেয়েরাই যেন ওর জীবনটাকে কিনে নিতে চায়। ব্যক্তিত্বের সংঘাতে স্বামীর সাথে সম্পর্ক যখন ভেঙে চূড়ে তছনছ হয়ে যায়, তখনই নারীদের প্রয়োজন হয়ে পড়ে সুমনের। একাকীত্ম ঘোচাতে শেষ জীবনে মেয়েদের অবলম্বন হিসেবে সুমনকে তখন তাদের ভীষন ভাবে দরকার। সুমনের অভিধানে ভালোবাসা শব্দটা অনেক দিন আগেই হারিয়ে গেছে। শুধু শাস্বতী কেন, মেয়েরা শুধু ভালোবাসার নামে গৃহপালিত পশুর মতন ওর গলায় এক অদৃশ্য শেকল পরিয়ে দিতে চায়। সুমন জানে, শাসন, শোষন ওরাই করবে আর সুমনকে ব্যবহার করবে বিছানায় যৌনসুখটুকু পাওয়ার জন্য। শরীরের নিচে শুয়ে তৃপ্ত হওয়ার আনন্দটা যে আছে।
 
শাস্বতীর প্রস্তাবটা শুনে ও ইচ্ছে করেই ওকে হ্যাঁ বললো না। মনে মনে ঠিক করল, শাস্বতীর ভালোবাসাটা খাঁটি কিনা আরো কিছুদিন যাচাই করে দেখে নিতে হবে। তারপরে ওকে ওর সন্মতি জানাবে।
 
সারারাত শাস্বতী সুমনের ঘরেই পরে রইল। সুমনকে ও জিজ্ঞাসা করল, তুমি এ পেশায় এলে কি করে সুমন?
 
সুমন একে একে পুরোনো ঘটনাগুলো সব বলতে লাগল শাস্বতীকে। সেই সুন্দরী থেকে শুরু, তারপর গৌরী কিভাবে ওকে ফাঁদে ফেলেছিল। আজও সুমন ভাবে, সেদিনের সেই রাত, যেন মরণ রাত হয়ে গিয়েছিল সুমনের কাছে। বিকাশদা ঐভাবে ঘরের মধ্যে গৌরীর সাথে সুমনকে দেখে ফেলায় সুমনের তখন বিকাশদার পায়ের ওপর লুটিয়ে পরা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। সুমনকে তখন বিকাশের প্রায় মেরে ফেলার মতন অবস্থা। হাতে নাতে ধরা পড়ে সুমনের তখন করার কিছুই ছিল না। রান্নাঘর থেকে বিকাশ একটা বড়সড় দা নিয়ে চলে এসেছে সুমনের গলায় কোপ বসাবে বলে। সুমন তার আগেই থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে বিকাশদার পা দুটো ধরে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল মাটীতে। কিছুতেই পা ছাড়বে না। কেঁদে কেঁদে বলতে লাগল, ও দাদা, ও দাদা। তুমি আমায় ক্ষমা করো। আমি আসিনি, আমি আসিনি, তোমার বউই ডেকেছে আমাকে।
 
-বউ ডাকলেই তুই আসবি? কেন এসেছিস বল হারামজাদা। নইলে এক কোপে এখানেই শেষ করে দেব তোকে।
 
হাউ হাউ করে কেঁদে কেটেও সুমন কিছুতেই বোঝাতে পারছে না বিকাশদাকে। ওর কোন দোষ নেই, দোষ শুধুমাত্র গৌরীর। সুমনকে দেখার পর থেকেই কামনার বীভৎস আগুনে জ্বলছে গৌরী। ওকে টাকা দেবার নাম করে এখানে ডাকে, তারপর যৌন সঙ্গমে মাততে চায় সুমনের সঙ্গে। দিনে দিনে যেন এক মাদী মাকড়শার মতই গ্রাস করে ফেলেছে সুমনকে। আজ ও অনুতপ্ত। যদি বিকাশদা ওকে ক্ষমা করে দেয়, আর কোনদিন আসবে না এখানে। দরকারে গ্রাম ছেড়েও চলে যাবে। পাপ করেছে, তাই পাপের প্রায়শ্চিত্ত সুমন করতে চায়।
 
বিকাশের রাগ কিছুতেই কমছিল না। ইচ্ছে হচ্ছিল দা ছেড়ে, হাত দিয়ে সুমনের টুটিটা চেপে ধরতে। বউ অবৈধ কাজ করেছে বলে বউকে ক্ষমা নেই, কিন্তু তার আগে সুমনের একটা ব্যবস্থা করতে হবে। ও যা বলছে একবিন্দুও বিশ্বাস হচ্ছে না বিকাশের। ইচ্ছে না থাকলে এতরাতে ঐ বা কেন আসবে এখানে? বউয়ের চরিত্র খারাপ। গৌরীকে বিকাশের চিনতে বাকী নেই, কিন্তু বিকাশের বিশ্বাস হচ্ছে না, সুমন এই জঘন্য কাজটা করতে পারে কি করে? ও তো সুন্দরী বলে একটা মেয়েকে ভালবাসে। বিকাশ জানে। তাহলে কেন গৌরীর ক্ষপ্পরে পড়ে নিষিদ্ধ কাজকর্ম করতে এই রাতদুপুরে এসেছে। মাথায় রক্ত উঠে বিকাশ তখন সুমনের পিঠে দমাদ্দম লাথি মারতে শুরু করেছে। চুলের মুঠি ধরে বারবার আছড়ে ফেলছে সুমনকে। আর সুমন লাথি খেয়ে মাটিতে পরে কাতরাচ্ছে।
 
সেদিনের ঐ করুন দৃশ্য মনে করতে করতে সুমন আজও ভাবে, বিকাশদা কিন্তু এতকিছু পরেও নিজের বউয়ের গায়ে একবারও হাত দেয়নি। বউয়ের সামনে সুমনকে চড় মেরেছে, লাথি মেরেছে, কিন্তু বউকে মারে নি। পরে শুনেছিল, গৌরীকে নাকি বিচ্ছেদ দিতে চেয়েছিল বিকাশদা। কিন্তু গৌরী ক্ষমা চেয়ে নেওয়াতে, বিকাশদার রাগও পরে পড়ে যায়। সেই চরিত্রহীনা গৌরী নাকি দিব্যি ঘর করছে এখন বিকাশদার সাথে, নিষ্ঠুর ভাবে সুমনের জীবনটাকে নষ্ট করে।
 
পুরোনো ঘটনাগুলো বলতে বলতে সুমনের ভেতর দিয়ে যেন যন্ত্রণাটা ফুটে বেরোচ্ছিল।
 
শাস্বতী বলল, সুন্দরীকে তো তুমি ভালবাসতে। তার কি হল? আর গৌরীর ক্ষপ্পরেই বা তুমি পরলে কি করে? সেদিনের রাতের ঐ ঘটনার আগে তুমি কবার গেছিলে গৌরীর কাছে? মেয়েটা কিভাবে তোমাকে কব্জা করেছিল? কোন বাধ্যবাধকতা ছিল? যে গৌরীর কাছে তোমায় যেতেই হবে?
 
সুমন বলল, আমি প্রথমটা বুঝতে পারিনি। মা যখন বলল, বিকাশের কাছে তোর যাবার দরকার নেই। আমি আর গেলাম না। এদিকে কাজ কি করব? সারাদিন বসে বসে তাই শুধু চিন্তা করছি। বিকেল হতেই খেয়াল হল, সুন্দরীকে বলে এসেছিলাম, ওর সাথে পুকুর পাড়ে দেখা করব। সেই মত জামা প্যান্ট গায়ে দিয়ে বেরোলাম। কিছুটা এগিয়েছি, এমন সময় দেখি গৌরী আবার আসছে। সকালে একবার দেখেছিলাম, আবার বিকেলেও দেখলাম। বিকাশদা বাড়ী থাকে না। আর ও এভাবে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়।
 
এবার আমার পথ আগলে নিজেই দাঁড়িয়ে পড়ল আমার সামনে। আমি ভাবছি, বিকাশদার বউ এমন কেন করল? কিছু না বলে হঠাৎই আমার হাতে একটা চিরকূট গুঁজে দিল। তারপর কোমর বেঁকিয়ে আমার দিকে দুবার মুখ ঘুরিয়ে ফিক ফিক করে হাসতে হাসতে চলে গেল।
 
আমি ভাবছি, এই ছোট্ট কাগজখানা আমার হাতে নতুন বউটা কেন গুঁজে দিল। ঐ কাগজের মধ্যে কি আছে?
আমি চিরকূটটা খুললাম। দেখলাম ওতে লেখা রয়েছে, আজ সন্ধেবেলা আমার ঘরে একবার এসো না। তোমার সাথে কথা আছে। আমি বিকাশদার বউ।
 
সুমন বলল, সকালবেলা ও আমাকে দেখেই প্ল্যানটা খাটিয়ে রেখেছিল। ঘরে বসে চিরকূটটা লিখে রেখেছিল, সুযোগ পেলে আমার হাতে তুলে দেবে। বিকেলে আচমকাই ওকে আবার দ্বিতীয়বার দেখতে পাবো ভাবতে পারিনি। ছোট্ট কাগজটা হাতে নিয়ে আমার মনে পড়ল মায়ের কথাটা। মা বলেছিল, বিকাশদার নতুন বউটা ভাল নয়। তোর ওখানে যাবার দরকার নেই। মার কথা মনে করে আমি সঙ্গে সঙ্গে ঐ ছোট কাগজটা ছুঁড়ে ফেলে দিলাম, আর মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম, শুধু বিকেলে কেন? কোনদিনই আমি তোমার ঘরে যাব না। তুমি একটা খারাপ বউ। ও আমি এমনিতেই বুঝে গেছি।
 
শাস্বতী সুমনের বুকের ওপর মাথাটা রেখে বলল, তোমার জীবনটা খুব কষ্টের না? একটা মেয়ের জন্য তুমি সুন্দরীকে হাতছাড়া করলে। তারপর কি হল বলো।
 
সুমন বলল, আমি তার একটু পরেই সুন্দরীর সাথে মিলিত হলাম। তবে ওকে এই ব্যাপারটা নিয়ে কিছু বললাম না। সুন্দরী আমাকে বলল, শোনো, বড্ড ভুল হয়ে গেছে। বাবা নেই, মা নেই। আমি এই সুযোগে তোমাকে কাল বাসায় ঢুকিয়েছি। কিন্তু মনে হচ্ছে, কারুর না কারুর কাছে আমি কিন্তু ধরা পরে গেছি। আমার ভীষন ভয় হচ্ছে।
 
সুমন শাস্বতীকে বলল, সুন্দরীকে আমি বললাম, কেন, একথা বলছ কেন? কেউ তো আমাদের দেখতে পায়েনি। তোমার বাড়ীর আশেপাশে কেউ তো ছিল না কাল রাত্রে। তবে কেন? কিসের ভয়?
 
সুন্দরী বলল, মনে হচ্ছে তোমার বাপু, আমাদের এই ব্যাপারটা জেনে গেছে। তুমি চলে যাবার পরেই তোমার বাপু এসেছিল আমার ঘরে। ভাগ্যিস তুমি তখন নেই। আমি দরজা খুলে দেখি তোমার বাপু দাঁড়িয়ে। আমাকে বলল, সুমন আছে এখানে?
 
আমি বললাম, না তো। সুমন কেন থাকবে এখানে?
 
তোমার বাপু রেগেমেগে বলল, তুই সুমনের সাথে প্রেম করিস? আমার ছেলেটার মাথা খাচ্ছিস। তোর বাপু ফিরলে আজ সব বলব তাকে।
 
আমি ভয়ে বললাম, না না আমি কিছু করিনি। সুমনের সাথে আমার মেলামেশা নেই।
 
তোমার বাপু চোখ রাঙিয়ে বলল, কোনদিন যদি দেখি, সুমনের সাথে তুই মেলামেশা করছিস, তাহলে কিন্তু তোর বাপুকে আমি সব লাগিয়ে ছাড়বো। লুকিয়ে লুকিয়ে মেলামেশা সব ছুটে যাবে একদিনে। খবরদার ওর সাথে আর দেখা করবি না। এই আমি বলে দিচ্ছি।
 
সুন্দরী বলল, তোমার বাপুতো চোখ রাঙিয়ে চলে গেল। তোমার খোঁজে বাড়ী অবধি এসেছে। আমি ভাবছি তোমার সাথে যখন দেখা হবে, না জানি কি কান্ডটাই না তখন ঘটবে। আচ্ছা সুমন, এরপরে আমাদের আবার দেখা হবে তো? তোমার আমার বিয়েটা শেষ পর্যন্ত যদি না হয়? কি হবে? আমি পারবো না তোমাকে ছাড়া থাকতে।
সুমন শাস্বতীকে বলল, সেদিন পুকুরপাড়ে আমার বুকে মাথা রেখে সুন্দরী অনেক ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদেছিল।
 
কিন্তু তারপরে যখন সব ওলোটপালোট হয়ে গেল। ও আমাকে ছেড়ে অন্য জায়গায় বিয়ে করে ফেললো। সেদিন বলেছিল আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে না। এখন দিব্যি অন্য স্বামীর সাথে ঘর করছে।
 
শাস্বতী বলল, সুন্দরী কথা রাখলো না কেন? কেন ওর অন্যজায়গায় বিয়ে হল? সব কি ঐ গৌরীর জন্য?
 
সুমন বলল, হ্যাঁ। গৌরীর জন্যই তো আমি সুন্দরীকে হারালাম। সেদিন সুন্দরী আমার গালে একটা চড় মেরেছিল, বলেছিল তুমি খুব খারাপ। খুব খারাপ। আর কোনদিন তোমার মুখ দেখতে চাই না আমি। পরনারীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক করেছ, তুমি নীচ, তুমি নীচ। এত নীচে নামবে আমিও ভাবতে পারিনি।
 
সুমন শাস্বতীকে বলল, আমি সেদিন সুন্দরীর কথায় দূঃখ পাইনি, দোষ আমারো ছিল। বিকাশদাকে বলেছিলাম, গ্রাম ছেড়ে চলে যাব। সেই আমাকে চলে আসতে হল, মা আর বোনকে ছেড়ে। অনেকদিন হয়ে গেল আমি ওখানে যাই না। প্রতিমাসে বোনকে একটা টাকা পাঠাই। আর ভাবি কবে মাকে আর বোনকে ওখান থেকে আমি নিয়ে আসতে পারব।
 
শাস্বতী বলল, আর তোমার বাবা? তার হঠাৎ-?
 
সুমন বলল, বাবাকে যে এভাবে হারাবো কল্পনাও করতে পারিনি। সন্ধেবেলা বাড়ী ফেরার সময় রাস্তায় বাবার বুকে হঠাৎই একটা যন্ত্রণা শুরু হয়। আমি তখনও সুন্দরীর সাথে। কিছুক্ষণ কথা বলার পর সুন্দরী বলল, যাই, মা বাবা বিয়েবাড়ী থেকে ফিরবে। আমাকে না দেখলে তখন আবার আরেক কেলেঙ্কারী ঘটবে।
 
আমি সুন্দরীকে বিদায় দিয়ে মন খারাপ করেই বাড়ীতে ফিরছি। হঠাৎই দেখি আমাদের গ্রামেরই একটা বাচ্চা ছেলে ছুটতে ছুটতে আসছে। আমার কাছে এসে হাঁফাতে হাঁফাতে বলল, ও সুমনদা। শীগগীর বাড়ী যাও। তোমার বাবা রাস্তায় আসতে আসতে পরে গেছে।
 
আমি আঁতকে উঠে বললাম, সেকী কেন?
 
ছেলেটা বলল, জানি না। মনে হয় তোমার বাবার কিছু একটা হয়েছে। বাড়ীর সামনে গেছিলাম। দেখলাম খুব ভীড়। তোমার মা আর বোন কান্নাকাটি করছে।
 
ওর কথা শুনে আমি তখনই ছুট লাগালাম বাড়ীর দিকে। বাড়ীর সামনে গিয়ে দেখলাম, বাবাকে যারা চেনে তারা সবাই জটলা করেছে ওখানে। সবাই নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছে। আমি তখনো কিছুই বুঝতে পারছি না। ঘরে ঢুকে দেখি বাবার নিথর দেহটা পরে আছে মেঝেতে। বোন বাবার মাথাটা কোলে নিয়ে হাউহাউ করে কাঁদছে। মার মুখে কোন কথা নেই। শোকে পুরো আচ্ছন্ন। হঠাৎই বুকে ব্যাথা অনুভব করে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটেছে বাবার। ডাক্তারকে খবর দেবার সময়টুকুও দেন নি। আমি যাবার আগেই সব শেষ।
 
বাবা চলে গেল। অকস্মাৎ বাবার এই মৃত্যু আমার জীবনটা যেন কোথা থেকে কি হয়ে গেল। ভাবিনি, যে মানুষটা জীবিত থাকাকালীন সংসারটাকে সচল রেখেছিলেন, তার হঠাৎই চলে যাওয়া মানে, মা, বোন আর আমার তিনজনেরই চোখে তখন অন্ধকার দেখা। বাবা বলতেন, তুই মানুষ হলি না। আমি মরলে এ সংসারের কি দশা হবে, ভেবে দেখিস। কেউ এসে দেখবে না, কেউ সাহায্য করবে না। এ দুনিয়ার নিয়মই তাই। মানুষ স্বার্থ ছাড়া একপাও চলে না। নির্বোধের মতন গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরেছি এতদিন। আমি মনে করতাম, আমি যা চাইব তাই হবে। আমার এত সুন্দর চেহারা। আমার স্বাস্থ্য ভালো। কেউ যদি আমাকে সিনেমায় একটা সুযোগ করে দেয়। আমার নায়ক হওয়ার স্বপ্ন তখন পুরণ হবে। আমি হবো বাংলা সিনেমার নায়ক সুমনকুমার। দূর থেকে লোকে দেখে বলবে, ঐ দেখো সুমনকুমার আসছে।
 
সুমন শাস্বতীকে বললো, মানুষ যেটা ভাবে, সেটাতো কখনও হয় না। একগাদা মেয়েমানুষের সাথে শুয়ে আমি যে পুরুষ বেশ্যায় পরিণত হবো, সেদিন একবারও তা ভাবিনি। গৌরীকে সেদিন দেখে বুঝেছিলাম ও একটা কামপিপাসু নারী। কিন্তু তারপরে উর্মিলা, বাসন্তী, সবার মধ্যেই তো ওই গৌরীর ছায়াটাই দেখলাম। সবাই আমাকে তাদের বেড পার্টনার করে নিতে চায়। প্রেম, ভালবাসা সবই উবে গেছে এই পৃথিবী থেকে। শরারে কেবল প্রবল কামোচ্ছ্বাস। কামনার কোন বাছবিচার নেই। আমার শরীরটা পাওয়ার জন্য বিবাহিত মহিলারা শুধু কামনায় ছটফট করে মরে।
 
শাশ্বতী বললো, কিছু করার নেই সুমন। তোমার শরীরটাই এরকম। আমিও তো তোমার সঙ্গ আকাঙ্খায় উন্মাদ হয়ে উঠেছিলাম এতদিন। মেয়েদের শরীরে যৌন খিদের কাকড়া যখন দাপাদাপি করে, তখন তারা পাগল হয়ে যায়। কিভাবে পাবে সেই যৌনআনন্দের রোমাঞ্চকর সুখ? ভাবতে গিয়ে তারা বিভোর হয়ে পড়ে। যারা তোমার সঙ্গ চেয়েছে, তারা এই কারনেই চেয়েছে। সুমনকে তারা বেড পার্টনার হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছে। এতে তাদের দোষের কিছু নেই।
 
মেয়ে হয়ে অন্য মেয়ের হয়ে সাফাই গাইবে, সুমন যেন এমনটাই ভেবেছিল। ও শাস্বতীকে বললো, তুমিও তাহলে সেটাই চাও? আমাকে বেড পার্টনার হিসেবে ব্যবহার করতে? সুমন তোমার এই কাকড়ার দাপাদাপিকে শান্ত করবে, যৌন আনন্দের রোমাঞ্চকর সুখ দেবে। এর জন্যই তুমি আমার সব দায়িত্ব নেবে? বলো তাহলে ঠিক বলছি কিনা?
শাস্বতী বললো, তুমি যদি বিশ্বাস না করো, আমার কিছু করার নেই। কিন্তু আমিও আবার বিয়ে করতে চাই। ঘর বাঁধতে চাই। কাউকে নিয়ে বাকী জীবনটা সুখে কাটাতে চাই। এ আমার বিবাহিত বহির্ভূত কোন জীবন নয়। এক সুপুরুষ, স্বাস্থ্যবান, গ্রাম্যযুবককে ভাল বেসেছি আমি। সে যদি আমারই জীবনছবির নায়ক হয়, তাতে কোন দোষ আছে কি?
 
সুমন শাস্বতীর চোখের দিকে একবার ভালো করে তাকালো। ওর চোখের দৃষ্টিতে সেই সত্যিটা আছে কিনা যাচাই করার চেষ্টা করলো। দেখলো শাস্বতী যেন ভেতর থেকে বলছে কথাগুলো। এর মধ্যে কোন ফাঁক নেই।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: মেয়েমানুষের কেপ্ট by lekhak - by pcirma - 04-06-2020, 11:19 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)