Thread Rating:
  • 30 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পরভৃত / কামদেব
#93
[চল্লিশ]


       ভোরের আলো তখনো ফোটেনি ঋষির ঘুম ভেঙ্গে গেল।চোখ মেলে বোঝার চেষ্টা করল কোথায় সে।নজরে পড়ল একটা হাত তার কোমর জড়িয়ে ধরে আছে।তার শরীরে কার্পাসের চিহ্নমাত্র নেই,পাশে শায়িত মহিলাও উলঙ্গ, ধড়ফড়িয়ে উঠে বসল। আবছা মনে পড়তে থাকে কাল রাতের ঘটনা।দেওয়ালে বিশাল ছবিটা কেমন চেনা-চেনা লাগে। লীলাবতীর ঘুম ভেঙ্গে গেল।ঋষি জিজ্ঞেস করল,সারা রাত এখানে ছিলাম?
লীলাবতী ঠোটে আঙুল ছুয়ে চুপ করতে বলল।তারপর ফিসফিস কোরে বলল,মাতাজী ডাকলে আর কখনো এসো না।তোমাকে দাওয়াই দিয়েছিল।কেড়ে না নিলে তুমি সবটা খেয়ে নিতে।তোমার হুশ ছিল না রাতে খুব কষ্ট করে তোমাকে খাইয়েছি।তুমি বোসো আমি তোমার পোশাক এনে দিচ্ছি।লীলাবতী লাল কাপড় জড়িয়ে চলে গেল।কিছুক্ষন পর ফিরে এসে বলল,এখন শরীর কেমন?তুমি বাথরুম যাবে?
আচ্ছা ঐ ছবিটা কার?
উনিই মাতাজী।কথা বোলোনা যাও ফ্রেশ হয়ে নেও।
লীলাবতী বাথরুম দেখিয়ে দিল।ঋষী কমোডে বসে রাতের কথা ভাবার চেষ্টা করে সব স্পষ্ট মনে করতে পারেনা।লীলাবতী বলছিল দাওয়াই দিয়েছিল কিসের দাওয়াই?লীলাবতী এখানকার সন্ন্যাসিনী তাহলে তাকে এসব বলছে কেন?
বাথ্রুম সেরে বেরিয়ে আসতে লীলাবতী জিজ্ঞেস করল,এখন চাঙ্গা লাগছে?আমি তোমাকে বলেছি এসব মাতাজীকে বোলো না।মাতাজী হঠযোগ জানে।ঐসব দিয়ে মানুষকে চমক দেয়।তুমি সাদি করেছো?
আমি এখন পড়ছি সাদি করিনি।আচ্ছা এসব তুমি আমাকে বলছো কেন?
ইউ আর ভেরি সিমপল এ্যাণ্ড অনেস্ট।তোমার মা নেই?
মারা গেছেন।কেন?
রাতে আমাকে জড়িয়ে ধরে মা-মা করছিলে।লীলাবতী হাসল, তুমি এই নম্বরটা রেখে দাও ইচ্ছে হলে ফোন কোরো।এখন যাও।
ঋষি দেখল লায়লি সিং তারপর নম্বর।জিজ্ঞেস করল,তুমি লায়লি?
কিসি কো বোলনা মৎ।
একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
লীলাবতী বলল,জানি কি জিজ্ঞেস করবে?
তাহলে বলো কেন এত অল্প বয়সে সন্ন্যাসিনী হলে?
ঠোটে ঠোট চেপে পায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে লায়লি।ঋষি বলল,থাক আপত্তি থাকলে বলতে হবে না।
আমি সন্ন্যাসিনী হইনি আমাকে জবরদস্তি বানাইছে।মৃদু স্বরে বলল লায়লী।
মানে?
এখন যাও জয়াবতীর হাজার আঁখে।পরে বলব।ঋষির গলা জড়িয়ে চুমু খেয়ে একরকম ঠেলে বের করে দিল।
রাস্তায় নেমে ঘড়ি দেখল সাতটা বাজে।রাতে হুশ ছিলনা লায়লী খাইয়ে দিয়েছে।নারী জাতির প্রতি ঋষির শ্রদ্ধা আরো বেড়ে গেল।লায়লী তারই সমবয়সী প্রায় তবু এই অবাঙ্গালী কিশোরীর মধ্যে মাতৃসত্তার উপস্থিতি টের পায়।হাতে সময় আছে হাটতে হাটতে একটা চায়ের দোকানে ঢুকে চায়ের ফরমাশ করল। লায়লীর নম্বরটা ফোনে সেভ করে রাখল।
টেবিলে রাখা কাগজ টেনে নিয়ে চোখ বোলাতে থাকে।নজরে পড়ল বিএ-তে গত বছরের চেয়ে ভাল ফল হয়েছে.৩.২১% বেড়েছে।বিএসসিতে ৪% বেড়েছে।দশটার মধ্যে কলেজ গেলেই হবে।একটা চিন্তা সারারাত কোথায় ছিল বড়দিকে কি বলবে?ভাল রেজাল্ট হলে চাপা পড়ে যাবে সব কিছু।তখন বন্ধুর বাড়ি কিছু একটা বানিয়ে বললেই হবে।লায়লি সন্ন্যাসী হতে চায়নি ওকে জোর করে সন্ন্যাসী বানানো হয়েছে।কারা বানিয়েছে লায়লি কেন প্রতিবাদ করল না?প্রশ্নগুলো জালে বদ্ধ মাছের মত ছটফট করে মনে।চা বিস্কুট খেয়ে এতক্ষন বসে আছে দোকানদার ঘুরে ফিরে তাকে লক্ষ্য করছে।কি ভাবছে কে জানে ঋষি উঠে পড়ল।দাম মিটিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে চেপে বসলো।
দু-একজন বসে আছে,কখন ছাড়বে?যখনই হোক ছাড়বে তো বটে।বাদিকের জানলা ঘেষে বসল, ডানদিক দিয়ে রোদ ঢুকবে।আচ্ছা গিয়ে যদি দেখে লিস্টে নাম নেই তাহলে?তাহলে আর বাসায় ফিরবে না।কঙ্কাকে বলবে আমি তোমার কাছে চলে এলাম বরাবরের মত।না একেবারে হালি শহর তারপর দেবুদার কবিরাজি ওষুধ নিয়ে ট্রেনে ট্রেনে ফেরি করবে।ঋষির ঠোটে হাসি ফোটে যত আজেবাজে চিন্তা।বাসে লোক ভরে গেছে।স্নান সারা ধোপ দুরস্ত জামা কাপড় সব অফিসযাত্রী সম্ভবত।এবার ছাড়বে মনে হয়।
ঋষির পাশে বসে থাকা ভদ্রলোক পান চিবোতে চিবোতে বলল,ঘোষবাবু আপনার মেয়ে এবার পরীক্ষা দিয়েছিল না?আপনি অফিস যাচ্ছেন?
পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ঘোষবাবু বললেন,অফিস না যাবার কি হল?ওর মা যাবে।অনেকে আগেই জেনে নিয়েছে মাতাজীর কাছে।
ঐসবে বিশ্বাস করেন?
বিশ্বাসের কথা নয়।দেখছি বহু দুরদুর থেকে লোকজন আসছে আমি ভাবছি কিছু ফল না পেলে আসবে কেন?
সন্ন্যাসিনী গুলো দেখেছেন?কৃচ্ছসাধন করলে চেহারায় ঐ রকম জেল্লা আসে?ঘোষবাবু মাথা নীচু করে ফিসফিস করে বলল,একজন বাচ্চা সন্ন্যাসিনী এসেছে দেখেছেন?
পান চিবানো লোকটি বলল,লীলাময়ী খ্যা-খ্যা-খ্যক।মনে হয় ফরেনার। 
এই বয়সে তোর সংসারে এত বৈরাগ্য কেন?
ঋষি বুঝতে পারে লীলাময়ী মানে লীলাবতীর কথা বলছে।প্রশ্নটা তারও মনে এসেছিল।এত কম বয়সে লায়লী কেন এই জীবনের পথে?মঠে আসার জন্য ঋষির মনে এখন কোনো খেদ নেই।মঠে না এলে লায়লীর সঙ্গে দেখা হত না।লায়লীকে তার ভাল লেগেছে।নিজের যৌনাঙ্গ ইচ্ছে মত কেমন ছোটো বড় করছিল মাতাজী।লায়লী বলছিল হঠযোগীরা নিজ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ইচ্ছেমত নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।অশুভ শক্তি কে বাবুলাল।শুভ শক্তির স্পর্শে অশুভ শক্তি সরে যাবে।লায়লীর কথা শোনার পর এসব কথা তত গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়না। এবার নামতে হবে ঋষি ওঠার জন্য প্রস্তুত হল।
মাতাজীর ঘুম ভাঙ্গল দশটা নাগাদ।লীলাবতীকে ডেকে জিজ্ঞেস করল,ছেলেটা কি করছে?
ডাকব?লীলাবতী জিজ্ঞেস করল।
মাতাজী মুখ টিপে হেসে বললেন,বহুৎ দম আছে,ধাত ভি স্বাদিস্ট।দেখোতো নিদ টুটলো কিনা?
লীলাবতী বেরিয়ে গেল কিছুক্ষন পর ফিরে এসে ত্রস্তভাবে বলল,মাতাজী ওকে দেখছি না।
মাতাজী সন্দিগ্ধ চোখে লীলাবতীকে দেখতে থাকে।মাতাজী জিজ্ঞেস করেন,এত সকালে ঘুম ভাঙ্গলো কি করে?
লীলাবতী মাথা নীচু কোরে দাঁড়িয়ে থাকে।মাতাজী বললেন,বেটার বড়িয়া যন্তর আছে।হ্যায় কোহি ইধার-উধার দেখো।
লীলাবতী মুখ টিপে হেসে আবার খুজতে গেল।মাতাজী বলল,এইসা হরবখত মিলবে না।করুনাময়ের কৃপা।

কলেজের সামনে ভীড় জমেছে ঋষি উঠে দাড়াতে ঘোষবাবু ঠেলে ঠুলে বসে পড়েন।কলাপসিবল গেট বন্ধ।দশটা বাজতে দেরী নেই এখুনি গেট খুলবে।ঋষি চেনা জানা কাউকে দেখছে না।দারোয়ান গেট খুলতে সবাই হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ল।দেওয়ালে লটকে দেওয়া হয়েছে সবাই হামলে পড়ে দেখছে।ঋষি অপেক্ষা করে ভীড় একটু পাতলা হোক।হঠাৎ নজরে পড়ল ভীড় ঠেলে বেরিয়ে আসছে বঙ্কা।এলোমেলো চুল কুচকে গেছে জামা।ঋষিকে দেখে হেসে বলল,সেকেণ্ড ক্লাস।তোর কি হল?
আমি এখনো দেখিনি।ঋষি বলল।
বঙ্কার ফোন বেজে উঠতে কানে লাগিয়ে বলল,হ্যা।তুমি কোথায়?…কখন ছুটি?আবার কি সেকেণ্ড ক্লাস…ঠিক আছে রাখছি।
বঙ্কার ঘর্মাক্ত চেহারা দেখে ভাবল আরেকটু ভীড় কমুক।কলেজের বাইরে এসে একটা গাছের নীচে দাড়ালো।ঘড়িতে বারোটা বাজে।সময় কত দ্রুত এগিয়ে চলেছে।সবাই ঢুকছে আবার বেরোচ্ছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে ঋষি। এবার দেখা যাক ভীড় কমেছে কিনা?গেটের দিকে এগোতে যাবে কোথা থেকে বাইক নিয়ে হাজির বাবুয়া।ঋষিকে দেখেই বলল,বস তুমি এখানে কাল সারাদিন হাবিস।খুজে খুজে হয়রন।একজন বলল,কলেজের দিকে পাওয়া যাবে।
কেন কিছু হয়েছে?
এখনো কিছু হয়নি তবে–খবর আছে।
কথা শেষ হবার আগেই একটা ছেলে এগিয়ে এসে হাসতে হাসতে বলল,কনগ্রাট ঋষি।বাবুয়াকে দেখে মুখের হাসি মিলিয়ে গেল বলল,আচ্ছা আসছি।
ঋষি ছেলেটির হাত চেপে ধরে বলল,এই অনিমেষ কি হল?তোর খবর কি?
অনিমেষ বলল,সেকেণ্ড।তুমি ছুপা রুস্তম–ফার্স্ট ক্লাস মেরে দিয়েছো।
ঋষির সহপাঠী অনিমেষ দুজনেই ইংরেজিতে অনার্স।শবরীর টিউশনি অনিমেষই যোগাড় করে দিয়েছিল।ঋষি দুহাতে অনিমেষকে জড়িয়ে ধরে বলল,সত্যিই বলছো?
তুমি দেখোনি?অনিমেষ অবাক হল।
বাবুয়া বোকার মত তাকিয়ে আছে দেখে ঋষি বলল,বাবুয়া আমি পাস করেছি।এ অনিমেষ আমার ক্লাসফ্রেণ্ড।আমার অনেক উপকার করেছে।
অনিমেষ বলল,আরে তুমি নিজে গিয়ে একবার দেখে এসো।একদম ডানদিকে টপে লিস্ট।
বাবুয়া আমি আসছি।তুমি একটু দাড়াও।
অনিমেষ অস্বস্তি বোধ করে বাবুলালের সঙ্গে একা একা।হেসে বলল,আপনাকে চিনি।
তুমি বসের দোস্ত তো আমার ভি দোস্ত।
হ্যা-হ্যা আমি আসছি।অনিমেষ দ্রুত অন্যদিকে চলে যায়।পিছন ফিরে বাবুয়াকে দেখে মস্তানটা ঋষিকে বস-বস করছিল ভেবে অবাক হয়।
বাইক থেকে নেমে ভজা এদিক ওদিক দেখতে থাকে।কেতোর হাতে বাইক দিয়ে ভজা ভাবে গুরু কোথায় গেল?গাছতলায় বাবুয়াকে দেখতে পেয়ে হাপাতে হাপাতে এসে বলল,গুরু তুমি এখানে?তোমায় কোথায় না কোথায় খুজেছি?
ভজা বস পাস করেছে।খুশির গলায় বলল বাবুলাল।ভজার মুখ চোখ দেখে সন্দেহ হয় বাবুলাল জিজ্ঞেস করল,কি ব্যাপার কিছু হয়েছে?
শুনলাম কল্পনাকে কিডন্যাপ করেছে।ভজা বলল।
কিডন্যাপ করেছে?তোকে কে বলল?
দিলু অটো চালায়।
বাবুয়া চিবুকে হাত ঘষতে থাকে।ঋষি এসে কেতো ভজাকে দেকে বলল,আরে তোমরা সবাই?
বস কল্পনাকে কিডন্যাপ করেছে।ভজা বলল।
কিডন্যাপ?তুমি সিয়োর?কে করেছে?
মুন্না ছাড়া আর কে?কাল রাতে আশিসের সঙ্গে মিটিং হয়েছে।আমাদের কাছে খবর আছে।ভজা বলল।
বাবুয়া বলল,বস সেই খবর তোমাকে বলতে এসেছিলাম।ভজা চল।ভজা কেতোকে নিয়ে বাইক স্টার্ট করল।বাবুলাল বাইক স্টার্ট করতে ঋষি পিছনে উঠে বসল।
বস তুমি কোথায় যাবে?বাবুয়া জিজ্ঞেস করল।
কি বলছো কি পাড়ার মেয়ে আমি যাবো না?
বাবুলাল বাইক স্টার্ট করল।ঋষি পিছনে বসে ভাবতে থাকে আশিসদার এত অধঃপতন হয়েছে?প্রথমে মনে হয়েছিল রাগের মাথায় পাগলামী করছে।রাগ পড়ে গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে।মেয়েটা এরপর মুখ দেখাতে পারবে?
[+] 4 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
পরভৃত / কামদেব - by kumdev - 26-05-2020, 07:34 PM
RE: পরভৃত / কামদেব - by kumdev - 04-06-2020, 11:02 AM



Users browsing this thread: 7 Guest(s)