03-06-2020, 11:25 PM
[আটত্রিশ]
ভোরবেলা প্রাতঃভ্রমণ সেরে রেওয়াজ করতে বসে সঞ্জনা।রবীন্দ্র ভারতীতে বি মিউজের ফাইন্যাল ইয়ার চলছে।মর্নিং ওয়াক ছুতো বঙ্কার সঙ্গে দেখা করা আসল উদ্দেশ্য।বেরিয়ে বঙ্কাকে দেখতে না পেয়ে অস্বস্তি বোধ করে। কতকগুলো চ্যাংড়া ছেলে কদিন হল দেখছে আসা যাওয়া করছে।বঙ্কার সঙ্গে দেখা হতেই সঞ্জনা বলল,একটু আগে আসবে।ঐ ছেলেগুলো থাকে একা একা ভয় করে আমার।
কাল আসব না।চিন্তিতভাবে বঙ্কা বলল।
কাল তোমার রেজাল্ট তাই না?অত ভাবছো কেন পাস করে যাবে।
না ভাবার কি আছে?বঙ্কা হেসে বলল।
দেখছি ভাবছো।সঞ্জনা বলল।
আমি ঐ ছেলেগুলোর কথা ভাবছি।
ওদের নিয়ে ভাবার কি হল?আর ওদের সঙ্গে লাগতে যেওনা বাজে ছেলে।
একদিন সকালে ঋষিকে নিয়ে আসবো।ঋষী ওদের ওষুধ জানে। বঙ্কা বলল।
ঋষি নামটা অনেকবার শুনেছে।রকে বসে থাকতেও দেখেছে।ওর সঙ্গে কথা বলার খুব ইচ্ছে।পথেঘাটে দেখা হলেও এমন মুখ গোমড়া করে থাকে সাহস হয়না।একদিন বঙ্কিম আলাপ করিয়ে দিয়েছিল একেবারে ঘেমেনেয়ে অস্থির।সঞ্জনা অবাক হয় ও নাকি একবার মস্তানদের মেরেছিল।সঞ্জনা বলল,ঋষি নাকি একবার বাবুয়া মস্তানকে মেরেছিল?
ঠিক মারেনি।এমন ধাক্কা দিয়েছিল ব্যাটা চিতপাত।
কিছু করল না?ওরা তো গুণ্ডা।
ওর দলের ছেলেরা মুখিয়ে উঠলেও বাবুয়াই ওদের আটকে দেয়।
একটা কথা বলবো?সঞ্জনার মনে সঙ্কোচ।
বঙ্কা ঘাড় ঘুরিয়ে সঞ্জনাকে দেখল।সঞ্জনা বলল,বাবুয়ার বাইকের পিছনে একদিন দেখলাম তোমাদের ঋষিকে।
আমিও শুনেছি।ঋষী ছেলেটা একটু অন্যরকম।
এ্যাণ্টিশোস্যালদের সঙ্গে মেশে কেন?
বঙ্কা হাসল।বঙ্কার হাত ধরে সঞ্জনা জিজ্ঞেস করল,হাসছো কেন?
বললাম না ও অন্যরকম।ওর মতে সবাই সোশাল এ্যাণ্টি বলে কিছু নেই।
সঞ্জনা খিল-খিল করে হেসে উঠলেও ঋষি সম্পর্কে কৌতুহল আরো বেড়ে গেল।দুজনে নীরবে পথ চলতে থাকে।ঝিলের হাওয়ায় ভাল লাগে। সঞ্জনা জিজ্ঞেস করল,তোমাদের আশিসদার পাগলামী ছেড়েছে?
বঙ্কার মুখের ভাব বদলে যায় বিরক্তি নিয়ে বলল, আশিসদার কথা জানিনা।
এই শোনো যদি কোনোদিন তোমার-আমার ছাড়াছাড়ি হয় তুমিও কি আশিসদার মত–।
কথা শেষ হবার আগেই বঙ্কা এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,যাও তোমার যেখানে ইচ্ছে যাও।
খিলখিল করে হেসে উঠল সঞ্জনা।এগিয়ে এসে আবার বঙ্কার হাত ধরল।সঞ্জনা একসময় বলল,একটা কথা বলব রাগ করবে না।
বঙ্কা পাশ ফিরে সঞ্জনাকে দেখল।সঞ্জনা বলল,তোমার নামটা বদলাতে পারোনা?
বঙ্কিম খারাপ কি?সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিম--।
বুঝেছি বড্ড সেকেলে নাম।
প্রেম করার আগে খেয়াল হয়নি?
এইতো রেগে যাচ্ছো।তোমার সঙ্গে দেখছি কথা বলাই দায়।
ঠিক আছে নাম বদলাতে গেলে অনেক ঝামেলা।বরং তুমি তোমার পছন্দমত একটা নামে ডাকবে।হল তো?
বিশাল ঝিল,ঝিলের পাশ দিয়ে পিচ বাধানো রাস্তা।হাটতে হাটতে অনেকটা চলে এসেছে।
সঞ্জনা বলল,আচ্ছা সন্নিভ নামটা তোমার পছন্দ?
ঠিক আছে আমি তোমার সন্নিভ।
আমি তোমাকে সানু বলে ডাকব।
তাই ডেকো।এবার ফেরা যাক।লোকজন বাড়ছে।
ঝিলের পাড় বেয়ে কিছু বয়স্ক্লোক হাটতে হাটতে আসছে।আর এখানে থাকা ঠিক হবে না কে কোথায় দেখবে ওর বাড়িতে গিয়ে লাগাবে।
সঞ্জনাকে ছেড়ে বঙ্কা অন্যদিকে বাক নিল।কিছুটা যাবার পর সঞ্জনা পিছন থেকে ডাকল, এই সানু?
বঙ্কা আপন মনে হাটতে থাকে।সঞ্জনা ডাকে এই সানু--এই কালা নাকি?
বঙ্কা পিছন ফিরে তাকালো।সঞ্জনা বলল,তোমাকে ডাকছি শুনতে পাওনা?
সানু নামটায় এখনো অভ্যস্থ হইনি।আস্তে আস্তে হয়ে যাবে।কি বলছিলে বলো।
কিছু না।তোমাকে সানু বলে ডাকতে ইচ্ছে হল।হি-হি-হি।সঞ্জনা হাসতে থাকে।
ইচ্ছে হলেই ডাকতে হবে?আমারও তো কত ইচ্ছে হয়?
কি ইচ্ছে হয়?
বঙ্কা কাছ ঘেষে দাঁড়িয়ে নিবিড়ভাবে বলল,কি ইচ্ছে হয় জানো না?
তোমার সাহস তো কম না?এত লোকের সামনে?ভ্রু কুচকে বলল সঞ্জনা।
ফাকা জায়গায় খেতে দেবে তো?
ওসব অমন বলে কয়ে হয়না বঙ্কুসোন।হি-হি-হি।
আবার কবে দেখা হবে?
ফোন করবে।সঞ্জনা চলে গেল।
সঞ্জনাকে পেয়ে খুব খুশি।অনেক গুণের মেয়ে খুব সুন্দর গানের গলা।এক-এক সময় মনে হয় সঞ্জনা তার চেয়ে অনেক উপরে অথচ কোনো অহঙ্কার নেই।সঞ্জনা পিছন ফিরে তাকাতে বঙ্কিম হাত নাড়লো।
শান্তিবাবুর ফোন বাজতেই কানে দিয়ে বলল,হ্যা বলুন?
আমি ত্রিদিবশ বলছি দাদা।একটা জরুরী ব্যাপারে ফোন করলাম।
বুঝেছি বলুন।
আজ ভোরবেলা একটা পাগলীকে ফেলে রেখে গেছে নার্সিং হোমের নীচে।
এই আপনার জরুরী?
দাদা পাগলীটা প্রেগন্যাণ্ট।
আমি কি করব?সক্কালবেলা এই আপনার জরুরী খবর? পাগলি ঠীক জায়গায় পৌছে গেছে।
অপারেশন করে ডেলিভারি করে দিন।
আপনি বুঝতে পারছেন না।পুলিশ কেস হয়ে গেছে।আপনার ছেলেরা ফেলে গেছে।বুঝতেই পারছেন কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
এসব পুলিশকে বলেছেন নাকি?
আমি কেন বলতে যাবো?পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে ঠিক খুজে বের করবে।
ধুর মশাই পুলিশে বলতে গেলেন কেন?
আমি কি করবো,ম্যাডাম কিছুতেই শুনবেন না।
ঐ চীনে মাগীটা?
চীনে নয় বার্মিজ।
ঐ হল।শান্তি ভটচাজকে চেনে না।জলে বাস করে কুমীরের সঙ্গে পাঙ্গা?একেবারে বর্মায় পাঠিয়ে দেবো।
আমি বলেছি কিন্তু কে শোনে কার কথা।ভীষণ জিদ্দি।
শান্তিবাবুর মেজাজ বিগড়ে যায়।মনে হচ্ছে মুন্নার কাজ।দেবেশকে বলল,ঠিক আছে আপনি দেখুন পুলিশকে কিকরে ম্যানেজ করা যায়।
আপনাকে বলতে হবে না।আমি দেখছি।
ফোন রেখে দিয়ে মুন্নাকে খবর পাঠাল।মুন্নাকে একটু সমঝে দেওয়া দরকার।
শুভর সঙ্গে সকালে আমতলায় দেখা হল।শুভর অবশ্য ইতিহাসে অনার্স।বেশ চিন্তিত মনে হল শুভকে।শুভ হেসে জিজ্ঞেস করল,কিরে ঋষি কি মনে হচ্ছে?
এমএ পড়বি তো?ঋষি জিজ্ঞেস করল।
শুভ হাসল।বলল,আগে এটা উতরোই?
সন্দেহ আছে?
সন্দেহের কথা হচ্ছে না।তবু হাতে না পাওয়া পর্যন্ত চিন্তা থাকবেই।তুই এমএ পড়বি না?
আমাকে অনেকদিক ভাবতে হয়।উদাস গলায় বলল ঋষি।
ঋষির কথায় শুভর মন খারাপ হয়।ঋষি কিভাবে পড়াশূনা করছে শুভ জানে।তবু বলল,কাল দেখা যাক তারপর ওসব ভাবা যাবে।চা খাবি?
শুভ হাক পেড়ে চায়ের কথা বলল।চা দিয়ে গেলে চুমুক দিয়ে শুভ বলল,শালা শনিবারটা গেলে বাচা যায়।ঋষি মলিন হাসল।শুভ ইতস্তত করে জিজ্ঞেস করল,তুই জ্যোতিষ বিশ্বাস করিস?
জ্যোতিষ কি জানিনা বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্নই আসে না।
সুমির এক মামা জ্যোতিষ চর্চা করে।আমি অবশ্য বিশ্বাস করিনা সুমি বলল তাই হাত দেখালাম।
কি বলল সুমির মামা?
আমরা দুজনেই পাশ করব।
ভাল বলেছে।একজন পাশ একজন ফেল হলে প্রেম কেচে যেতো।
ঝাঃ কিযে বলিস না সবাইকে কল্পনা মনে করিস নাকি?
আচ্ছা শুভ তোর এমন কখনো হয়নি যে দোকান থেকে পছন্দ করে কিছু কিনে বাড়িতে এসে দেখলি তোকে মানাচ্ছে না।দোকানে গিয়ে তুই পালটে আনিস নি?
তার সঙ্গে তুই প্রেমের তুলনা করলি?
আমি কিছুর সঙ্গে কিছু তুলনা করিনি।প্রেমকে তোরা কি মনে করিস বলতো?দুনিয়ায় প্রতিনিয়ত সব কিছুই বদলাচ্ছে আর মন কেবল অপরিবর্তনীয় static থাকবে?
শুভ কোনো কথা বলে না।এসব কথা এখন ভাল লাগছে না।জ্যোতিষের কথা উঠতে ঋষির মাতাজীর কথা মনে পড়ল।বাসায় ফিরে স্থির করবে কি করা যায়।
সাত সকালে শান্তিদা আবার কল করল কেন?আবার কোথায় ঝামেলা হল? কোথাও কিছু হলেই এই মুন্নার ডাক পড়ে।শিবুকে পিছনে বসিয়ে বাইক স্টার্ট করল।কাল রাতে হেভি ঝামেলা গেছে।শান্তিদার বাড়ির কাছে বাইক থামালো।জানলা দিয়ে দেখল গোজ হয়ে বসে আছে।শালা বৌদির সঙ্গে মনে হচ্ছে রাতে কিচাইন হয়েছে।ভিতরে ঢুকে জিজ্ঞেস করল, ,দাদা তলব করেছেন?
শান্তিবাবু চোখ তুলে মুন্নাকে দেখল।মুন্না হাত দিয়ে জামার বোতাম খুটতে থাকে।
ভিখারিটার পেট বাধিয়েছে কে?
বোবা কালাটার?দাদা ওর ক্যারাক্টার ভাল নয়।
মারবো এক থাপ্পড় উনি আমাকে ক্যারাকটার বোঝাতে এসেছে।বাঞ্চোত কত ওষুধ আছে কণ্ডোম আছে এসব তোমাকে শেখাতে হবে?এবার পুলিশকে সামলাও।
দাদা ও বোবা পুলিশকে কিছুই বলতে পারবে না।
এই বুদ্ধি নিয়ে তুমি রাজনীতি করবে?পুলিশ পাথরকে দিয়ে কথা বলায়।
দাদা ভুল হয়ে গেছে এবারটা মাপ কোরে দিন।মাই কসম আর হবে না।
বাবুয়ার সময় এত ঝামেলা পোয়াতে হয়নি।ঐ বলে না মুর্খ মিত্রর চেয়ে বুদ্ধিমান শত্রূও ভাল।পুলিশ গন্ধ শুকতে শুকতে কোথায় গিয়ে পৌছায়।
আবার বাবুয়া!মুন্নার মাথায় খুন চেপে যায়।বাবুয়া শুনতে শুনতে শালা কান ঝালাপালা হয়ে গেল।এখনো লোকে ওকে কেন যে ভয় পায় মুন্না বুঝতে পারে না।
শান্তিবাবু বলল,এখন যা।দেখি কি করা যায়।
আমতলা থেকে ঋষি বাসার দিকে রওনা হল।মনের মধ্যে খুতখুতানি যাচ্ছেনা কিছুতেই। কেন এমন হচ্ছে?অন্তরে সেকি কোনো টান অনুভব করছে?বাসায় ঢোকার আগে ফোন করল।
বল ব্যাটা।
মাতাজী আমি ঋষি।
হ্যা সন্ধ্যে বেলা মনে আছে ত?
মাতাজী আজ বাদ দিলে হয়না?
তুই পাগলা আছিস?উপকরণ উপচার সব কেনা হয়ে গেছে।আসন পাতাও শেষ।খুব ভালদিন আছে।শোন তুই এসে সাধ্বীলীলাবতীর সঙ্গে কথা বলবি।মন তোর টলমল কচুপাতায় জল।স্থির কোরে বেধে দেবো।
ঋষির মুখে কথা যোগায় না।তার মন কি সত্যিই চঞ্চল?বাসায় ফিরে খেতে বসল।বড়দি বলল,তুই কোথায় যাবি বললি?
হ্যা যাবো।ঋষী জবাব দিল।
দুপুরে ঋষি ঘুমায় না।একটা বই নিয়ে আধশোয়া হয়ে পড়তে থাকে।বইতে মন বসেনা বিভিন্ন কথা মনের মধ্যে জটলা করছে।কোহিনূরের কথা মনে পড়ল।অর্থের জন্য কত মানুষের শয্যাসঙ্গী হয়েছে তবু মনটা অশুচি হতে দেয়নি।বাবুয়ার সঙ্গে ঘর বাধার স্বপ্ন দেখে।তারমধ্যে কি দেখেছে কে জানে তার প্রতি লক্ষ্য করেছে গভীর বিশ্বাস।সাধনার লক্ষ্য ছিল শম্ভূনাথের অর্থ কিছু সময় তার সঙ্গে কাটাবার পর অর্থের চেয়ে মানুষটা তার মনে জায়গা করে নিল।
কঙ্কা কলেজ থেকে ফিরছে।ঋষির আজ আসার কথা।অটো হতে নামতে সবিতার সঙ্গে দেখা।কিছু বলার আগেই সবিতা বলল,দিদিমণি আমার মনে আছে আসলে কি জানেন ঘর সংসার ফেলে সব সময়ের জন্য কেউ রাজি হচ্ছেনা।
বুঝেছি স্বামী নেই বিধবা কেউ হলেও হবে।
সবিতা হাসল।কঙ্কা বলল,যদি পাও বোলো।বাড়ীর লোকের মত থাকবে।
একজন আছে তার স্বামী না থাকলি কিহবে একটা মেয়ে আছ।
মেয়ে কতবড়?
কত হবে দুই-আড়াই তো হবেই।
ঠিক আছে তাহলে অসুবিধে নেই।কোনো ঝামেলা না হলেই হল।
ঝামেলা হবেনা বেরাম্মনের মেয়ে একজন ভাগায়ে নে এসে বে করেছিল এখন ফেলে পলাইছে ।জানিনা রাজি হবে কিনা?
স্বামী এসে গোলমাল করবে নাতো?
মরে গিলিও ঐ স্বামীরে আর নেবে ভেবেছেন।
কঙ্কা বাসায় ফিরে দেখল দিব্যেন্দুর বাবা অপেক্ষা করছেন।
মাখনবাবুর ওষুধের দোকান।ঋষিকে সবার হয়ে অর্থ দিতে এসেছিল সে নেয়নি।মাখনবাবু বলেছেন দরকার পড়লে সাহায্য করবেন।প্রয়োজনে অভিজ্ঞ লোক ঠিক করে দেবেন। শনিবারের পর একদিন মাখনবাবুর সঙ্গে দেখা করে কোহিনূরের দোকানের কথা বলবে। মনে হয় ভদ্রলোক সাহায্য করবেন।
দোকানে বসার জন্য কাঠের একটা খুপরি করবে।কাঠ কেটে ছোটো কাউণ্টার করে দেবে কোহিনূর সেখানে বসে ক্যাশ সামলাবে।খদ্দেররা তাকে দেখতে পাবে না।এইসব ভাবতে ভাবতে ঋষির হাসি পেয়ে গেল দোকান হল না তার আগেই–গাছে কাঠাল গোফে তেল।
ফোন এল মনে হচ্ছে।ভাইব্রেসনে ছিল ফোন। ঋষি দেখল কঙ্কা ফোন করেছে।দেরী করছি বলে ফোন করেছে মনে হয়।ঋষি কানে লাগিয়ে বলল,হ্যালো?
শোন ঋষি আজ আসিস না।
কেন রক্ত বন্ধ হয়নি?
রক্ত বন্ধ না হলে তুই ছাড়বি?শোন ওর বাবা মানে শ্বশুরমশায় এসেছে।আমাদের ব্যাপারটা জেনেছে সেজন্য মিট্মাট করতে চায়।পরে সব বলবো।রাগ করলি নাতো?
আহা রাগ করব কেন?দিন তো শেষ হয়ে যাচ্ছে না?
খুব খারাপ লাগছে।এখন রাখছি?কঙ্কা ফোন রেখে দিল।
ভোরবেলা প্রাতঃভ্রমণ সেরে রেওয়াজ করতে বসে সঞ্জনা।রবীন্দ্র ভারতীতে বি মিউজের ফাইন্যাল ইয়ার চলছে।মর্নিং ওয়াক ছুতো বঙ্কার সঙ্গে দেখা করা আসল উদ্দেশ্য।বেরিয়ে বঙ্কাকে দেখতে না পেয়ে অস্বস্তি বোধ করে। কতকগুলো চ্যাংড়া ছেলে কদিন হল দেখছে আসা যাওয়া করছে।বঙ্কার সঙ্গে দেখা হতেই সঞ্জনা বলল,একটু আগে আসবে।ঐ ছেলেগুলো থাকে একা একা ভয় করে আমার।
কাল আসব না।চিন্তিতভাবে বঙ্কা বলল।
কাল তোমার রেজাল্ট তাই না?অত ভাবছো কেন পাস করে যাবে।
না ভাবার কি আছে?বঙ্কা হেসে বলল।
দেখছি ভাবছো।সঞ্জনা বলল।
আমি ঐ ছেলেগুলোর কথা ভাবছি।
ওদের নিয়ে ভাবার কি হল?আর ওদের সঙ্গে লাগতে যেওনা বাজে ছেলে।
একদিন সকালে ঋষিকে নিয়ে আসবো।ঋষী ওদের ওষুধ জানে। বঙ্কা বলল।
ঋষি নামটা অনেকবার শুনেছে।রকে বসে থাকতেও দেখেছে।ওর সঙ্গে কথা বলার খুব ইচ্ছে।পথেঘাটে দেখা হলেও এমন মুখ গোমড়া করে থাকে সাহস হয়না।একদিন বঙ্কিম আলাপ করিয়ে দিয়েছিল একেবারে ঘেমেনেয়ে অস্থির।সঞ্জনা অবাক হয় ও নাকি একবার মস্তানদের মেরেছিল।সঞ্জনা বলল,ঋষি নাকি একবার বাবুয়া মস্তানকে মেরেছিল?
ঠিক মারেনি।এমন ধাক্কা দিয়েছিল ব্যাটা চিতপাত।
কিছু করল না?ওরা তো গুণ্ডা।
ওর দলের ছেলেরা মুখিয়ে উঠলেও বাবুয়াই ওদের আটকে দেয়।
একটা কথা বলবো?সঞ্জনার মনে সঙ্কোচ।
বঙ্কা ঘাড় ঘুরিয়ে সঞ্জনাকে দেখল।সঞ্জনা বলল,বাবুয়ার বাইকের পিছনে একদিন দেখলাম তোমাদের ঋষিকে।
আমিও শুনেছি।ঋষী ছেলেটা একটু অন্যরকম।
এ্যাণ্টিশোস্যালদের সঙ্গে মেশে কেন?
বঙ্কা হাসল।বঙ্কার হাত ধরে সঞ্জনা জিজ্ঞেস করল,হাসছো কেন?
বললাম না ও অন্যরকম।ওর মতে সবাই সোশাল এ্যাণ্টি বলে কিছু নেই।
সঞ্জনা খিল-খিল করে হেসে উঠলেও ঋষি সম্পর্কে কৌতুহল আরো বেড়ে গেল।দুজনে নীরবে পথ চলতে থাকে।ঝিলের হাওয়ায় ভাল লাগে। সঞ্জনা জিজ্ঞেস করল,তোমাদের আশিসদার পাগলামী ছেড়েছে?
বঙ্কার মুখের ভাব বদলে যায় বিরক্তি নিয়ে বলল, আশিসদার কথা জানিনা।
এই শোনো যদি কোনোদিন তোমার-আমার ছাড়াছাড়ি হয় তুমিও কি আশিসদার মত–।
কথা শেষ হবার আগেই বঙ্কা এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,যাও তোমার যেখানে ইচ্ছে যাও।
খিলখিল করে হেসে উঠল সঞ্জনা।এগিয়ে এসে আবার বঙ্কার হাত ধরল।সঞ্জনা একসময় বলল,একটা কথা বলব রাগ করবে না।
বঙ্কা পাশ ফিরে সঞ্জনাকে দেখল।সঞ্জনা বলল,তোমার নামটা বদলাতে পারোনা?
বঙ্কিম খারাপ কি?সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিম--।
বুঝেছি বড্ড সেকেলে নাম।
প্রেম করার আগে খেয়াল হয়নি?
এইতো রেগে যাচ্ছো।তোমার সঙ্গে দেখছি কথা বলাই দায়।
ঠিক আছে নাম বদলাতে গেলে অনেক ঝামেলা।বরং তুমি তোমার পছন্দমত একটা নামে ডাকবে।হল তো?
বিশাল ঝিল,ঝিলের পাশ দিয়ে পিচ বাধানো রাস্তা।হাটতে হাটতে অনেকটা চলে এসেছে।
সঞ্জনা বলল,আচ্ছা সন্নিভ নামটা তোমার পছন্দ?
ঠিক আছে আমি তোমার সন্নিভ।
আমি তোমাকে সানু বলে ডাকব।
তাই ডেকো।এবার ফেরা যাক।লোকজন বাড়ছে।
ঝিলের পাড় বেয়ে কিছু বয়স্ক্লোক হাটতে হাটতে আসছে।আর এখানে থাকা ঠিক হবে না কে কোথায় দেখবে ওর বাড়িতে গিয়ে লাগাবে।
সঞ্জনাকে ছেড়ে বঙ্কা অন্যদিকে বাক নিল।কিছুটা যাবার পর সঞ্জনা পিছন থেকে ডাকল, এই সানু?
বঙ্কা আপন মনে হাটতে থাকে।সঞ্জনা ডাকে এই সানু--এই কালা নাকি?
বঙ্কা পিছন ফিরে তাকালো।সঞ্জনা বলল,তোমাকে ডাকছি শুনতে পাওনা?
সানু নামটায় এখনো অভ্যস্থ হইনি।আস্তে আস্তে হয়ে যাবে।কি বলছিলে বলো।
কিছু না।তোমাকে সানু বলে ডাকতে ইচ্ছে হল।হি-হি-হি।সঞ্জনা হাসতে থাকে।
ইচ্ছে হলেই ডাকতে হবে?আমারও তো কত ইচ্ছে হয়?
কি ইচ্ছে হয়?
বঙ্কা কাছ ঘেষে দাঁড়িয়ে নিবিড়ভাবে বলল,কি ইচ্ছে হয় জানো না?
তোমার সাহস তো কম না?এত লোকের সামনে?ভ্রু কুচকে বলল সঞ্জনা।
ফাকা জায়গায় খেতে দেবে তো?
ওসব অমন বলে কয়ে হয়না বঙ্কুসোন।হি-হি-হি।
আবার কবে দেখা হবে?
ফোন করবে।সঞ্জনা চলে গেল।
সঞ্জনাকে পেয়ে খুব খুশি।অনেক গুণের মেয়ে খুব সুন্দর গানের গলা।এক-এক সময় মনে হয় সঞ্জনা তার চেয়ে অনেক উপরে অথচ কোনো অহঙ্কার নেই।সঞ্জনা পিছন ফিরে তাকাতে বঙ্কিম হাত নাড়লো।
শান্তিবাবুর ফোন বাজতেই কানে দিয়ে বলল,হ্যা বলুন?
আমি ত্রিদিবশ বলছি দাদা।একটা জরুরী ব্যাপারে ফোন করলাম।
বুঝেছি বলুন।
আজ ভোরবেলা একটা পাগলীকে ফেলে রেখে গেছে নার্সিং হোমের নীচে।
এই আপনার জরুরী?
দাদা পাগলীটা প্রেগন্যাণ্ট।
আমি কি করব?সক্কালবেলা এই আপনার জরুরী খবর? পাগলি ঠীক জায়গায় পৌছে গেছে।
অপারেশন করে ডেলিভারি করে দিন।
আপনি বুঝতে পারছেন না।পুলিশ কেস হয়ে গেছে।আপনার ছেলেরা ফেলে গেছে।বুঝতেই পারছেন কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
এসব পুলিশকে বলেছেন নাকি?
আমি কেন বলতে যাবো?পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে ঠিক খুজে বের করবে।
ধুর মশাই পুলিশে বলতে গেলেন কেন?
আমি কি করবো,ম্যাডাম কিছুতেই শুনবেন না।
ঐ চীনে মাগীটা?
চীনে নয় বার্মিজ।
ঐ হল।শান্তি ভটচাজকে চেনে না।জলে বাস করে কুমীরের সঙ্গে পাঙ্গা?একেবারে বর্মায় পাঠিয়ে দেবো।
আমি বলেছি কিন্তু কে শোনে কার কথা।ভীষণ জিদ্দি।
শান্তিবাবুর মেজাজ বিগড়ে যায়।মনে হচ্ছে মুন্নার কাজ।দেবেশকে বলল,ঠিক আছে আপনি দেখুন পুলিশকে কিকরে ম্যানেজ করা যায়।
আপনাকে বলতে হবে না।আমি দেখছি।
ফোন রেখে দিয়ে মুন্নাকে খবর পাঠাল।মুন্নাকে একটু সমঝে দেওয়া দরকার।
শুভর সঙ্গে সকালে আমতলায় দেখা হল।শুভর অবশ্য ইতিহাসে অনার্স।বেশ চিন্তিত মনে হল শুভকে।শুভ হেসে জিজ্ঞেস করল,কিরে ঋষি কি মনে হচ্ছে?
এমএ পড়বি তো?ঋষি জিজ্ঞেস করল।
শুভ হাসল।বলল,আগে এটা উতরোই?
সন্দেহ আছে?
সন্দেহের কথা হচ্ছে না।তবু হাতে না পাওয়া পর্যন্ত চিন্তা থাকবেই।তুই এমএ পড়বি না?
আমাকে অনেকদিক ভাবতে হয়।উদাস গলায় বলল ঋষি।
ঋষির কথায় শুভর মন খারাপ হয়।ঋষি কিভাবে পড়াশূনা করছে শুভ জানে।তবু বলল,কাল দেখা যাক তারপর ওসব ভাবা যাবে।চা খাবি?
শুভ হাক পেড়ে চায়ের কথা বলল।চা দিয়ে গেলে চুমুক দিয়ে শুভ বলল,শালা শনিবারটা গেলে বাচা যায়।ঋষি মলিন হাসল।শুভ ইতস্তত করে জিজ্ঞেস করল,তুই জ্যোতিষ বিশ্বাস করিস?
জ্যোতিষ কি জানিনা বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্নই আসে না।
সুমির এক মামা জ্যোতিষ চর্চা করে।আমি অবশ্য বিশ্বাস করিনা সুমি বলল তাই হাত দেখালাম।
কি বলল সুমির মামা?
আমরা দুজনেই পাশ করব।
ভাল বলেছে।একজন পাশ একজন ফেল হলে প্রেম কেচে যেতো।
ঝাঃ কিযে বলিস না সবাইকে কল্পনা মনে করিস নাকি?
আচ্ছা শুভ তোর এমন কখনো হয়নি যে দোকান থেকে পছন্দ করে কিছু কিনে বাড়িতে এসে দেখলি তোকে মানাচ্ছে না।দোকানে গিয়ে তুই পালটে আনিস নি?
তার সঙ্গে তুই প্রেমের তুলনা করলি?
আমি কিছুর সঙ্গে কিছু তুলনা করিনি।প্রেমকে তোরা কি মনে করিস বলতো?দুনিয়ায় প্রতিনিয়ত সব কিছুই বদলাচ্ছে আর মন কেবল অপরিবর্তনীয় static থাকবে?
শুভ কোনো কথা বলে না।এসব কথা এখন ভাল লাগছে না।জ্যোতিষের কথা উঠতে ঋষির মাতাজীর কথা মনে পড়ল।বাসায় ফিরে স্থির করবে কি করা যায়।
সাত সকালে শান্তিদা আবার কল করল কেন?আবার কোথায় ঝামেলা হল? কোথাও কিছু হলেই এই মুন্নার ডাক পড়ে।শিবুকে পিছনে বসিয়ে বাইক স্টার্ট করল।কাল রাতে হেভি ঝামেলা গেছে।শান্তিদার বাড়ির কাছে বাইক থামালো।জানলা দিয়ে দেখল গোজ হয়ে বসে আছে।শালা বৌদির সঙ্গে মনে হচ্ছে রাতে কিচাইন হয়েছে।ভিতরে ঢুকে জিজ্ঞেস করল, ,দাদা তলব করেছেন?
শান্তিবাবু চোখ তুলে মুন্নাকে দেখল।মুন্না হাত দিয়ে জামার বোতাম খুটতে থাকে।
ভিখারিটার পেট বাধিয়েছে কে?
বোবা কালাটার?দাদা ওর ক্যারাক্টার ভাল নয়।
মারবো এক থাপ্পড় উনি আমাকে ক্যারাকটার বোঝাতে এসেছে।বাঞ্চোত কত ওষুধ আছে কণ্ডোম আছে এসব তোমাকে শেখাতে হবে?এবার পুলিশকে সামলাও।
দাদা ও বোবা পুলিশকে কিছুই বলতে পারবে না।
এই বুদ্ধি নিয়ে তুমি রাজনীতি করবে?পুলিশ পাথরকে দিয়ে কথা বলায়।
দাদা ভুল হয়ে গেছে এবারটা মাপ কোরে দিন।মাই কসম আর হবে না।
বাবুয়ার সময় এত ঝামেলা পোয়াতে হয়নি।ঐ বলে না মুর্খ মিত্রর চেয়ে বুদ্ধিমান শত্রূও ভাল।পুলিশ গন্ধ শুকতে শুকতে কোথায় গিয়ে পৌছায়।
আবার বাবুয়া!মুন্নার মাথায় খুন চেপে যায়।বাবুয়া শুনতে শুনতে শালা কান ঝালাপালা হয়ে গেল।এখনো লোকে ওকে কেন যে ভয় পায় মুন্না বুঝতে পারে না।
শান্তিবাবু বলল,এখন যা।দেখি কি করা যায়।
আমতলা থেকে ঋষি বাসার দিকে রওনা হল।মনের মধ্যে খুতখুতানি যাচ্ছেনা কিছুতেই। কেন এমন হচ্ছে?অন্তরে সেকি কোনো টান অনুভব করছে?বাসায় ঢোকার আগে ফোন করল।
বল ব্যাটা।
মাতাজী আমি ঋষি।
হ্যা সন্ধ্যে বেলা মনে আছে ত?
মাতাজী আজ বাদ দিলে হয়না?
তুই পাগলা আছিস?উপকরণ উপচার সব কেনা হয়ে গেছে।আসন পাতাও শেষ।খুব ভালদিন আছে।শোন তুই এসে সাধ্বীলীলাবতীর সঙ্গে কথা বলবি।মন তোর টলমল কচুপাতায় জল।স্থির কোরে বেধে দেবো।
ঋষির মুখে কথা যোগায় না।তার মন কি সত্যিই চঞ্চল?বাসায় ফিরে খেতে বসল।বড়দি বলল,তুই কোথায় যাবি বললি?
হ্যা যাবো।ঋষী জবাব দিল।
দুপুরে ঋষি ঘুমায় না।একটা বই নিয়ে আধশোয়া হয়ে পড়তে থাকে।বইতে মন বসেনা বিভিন্ন কথা মনের মধ্যে জটলা করছে।কোহিনূরের কথা মনে পড়ল।অর্থের জন্য কত মানুষের শয্যাসঙ্গী হয়েছে তবু মনটা অশুচি হতে দেয়নি।বাবুয়ার সঙ্গে ঘর বাধার স্বপ্ন দেখে।তারমধ্যে কি দেখেছে কে জানে তার প্রতি লক্ষ্য করেছে গভীর বিশ্বাস।সাধনার লক্ষ্য ছিল শম্ভূনাথের অর্থ কিছু সময় তার সঙ্গে কাটাবার পর অর্থের চেয়ে মানুষটা তার মনে জায়গা করে নিল।
কঙ্কা কলেজ থেকে ফিরছে।ঋষির আজ আসার কথা।অটো হতে নামতে সবিতার সঙ্গে দেখা।কিছু বলার আগেই সবিতা বলল,দিদিমণি আমার মনে আছে আসলে কি জানেন ঘর সংসার ফেলে সব সময়ের জন্য কেউ রাজি হচ্ছেনা।
বুঝেছি স্বামী নেই বিধবা কেউ হলেও হবে।
সবিতা হাসল।কঙ্কা বলল,যদি পাও বোলো।বাড়ীর লোকের মত থাকবে।
একজন আছে তার স্বামী না থাকলি কিহবে একটা মেয়ে আছ।
মেয়ে কতবড়?
কত হবে দুই-আড়াই তো হবেই।
ঠিক আছে তাহলে অসুবিধে নেই।কোনো ঝামেলা না হলেই হল।
ঝামেলা হবেনা বেরাম্মনের মেয়ে একজন ভাগায়ে নে এসে বে করেছিল এখন ফেলে পলাইছে ।জানিনা রাজি হবে কিনা?
স্বামী এসে গোলমাল করবে নাতো?
মরে গিলিও ঐ স্বামীরে আর নেবে ভেবেছেন।
কঙ্কা বাসায় ফিরে দেখল দিব্যেন্দুর বাবা অপেক্ষা করছেন।
মাখনবাবুর ওষুধের দোকান।ঋষিকে সবার হয়ে অর্থ দিতে এসেছিল সে নেয়নি।মাখনবাবু বলেছেন দরকার পড়লে সাহায্য করবেন।প্রয়োজনে অভিজ্ঞ লোক ঠিক করে দেবেন। শনিবারের পর একদিন মাখনবাবুর সঙ্গে দেখা করে কোহিনূরের দোকানের কথা বলবে। মনে হয় ভদ্রলোক সাহায্য করবেন।
দোকানে বসার জন্য কাঠের একটা খুপরি করবে।কাঠ কেটে ছোটো কাউণ্টার করে দেবে কোহিনূর সেখানে বসে ক্যাশ সামলাবে।খদ্দেররা তাকে দেখতে পাবে না।এইসব ভাবতে ভাবতে ঋষির হাসি পেয়ে গেল দোকান হল না তার আগেই–গাছে কাঠাল গোফে তেল।
ফোন এল মনে হচ্ছে।ভাইব্রেসনে ছিল ফোন। ঋষি দেখল কঙ্কা ফোন করেছে।দেরী করছি বলে ফোন করেছে মনে হয়।ঋষি কানে লাগিয়ে বলল,হ্যালো?
শোন ঋষি আজ আসিস না।
কেন রক্ত বন্ধ হয়নি?
রক্ত বন্ধ না হলে তুই ছাড়বি?শোন ওর বাবা মানে শ্বশুরমশায় এসেছে।আমাদের ব্যাপারটা জেনেছে সেজন্য মিট্মাট করতে চায়।পরে সব বলবো।রাগ করলি নাতো?
আহা রাগ করব কেন?দিন তো শেষ হয়ে যাচ্ছে না?
খুব খারাপ লাগছে।এখন রাখছি?কঙ্কা ফোন রেখে দিল।