Thread Rating:
  • 27 Vote(s) - 3.44 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পরভৃত / কামদেব
#42



[ঊনিশ]


খিন কিল নার্সিং হোম। অদ্ভুত নাম দেখে সকলেই অবাক হয়।বড় রাস্তার উপর।ছিমছাম সাজানো গোছানো হাসপাতাল। খিন কিল মানে কি?মানে বুঝতে গেলে আরো অনেকটা পিছনে যেতে হবে।


বাংলাদেশের রঙপুরের ছেলে রাজেন দত্ত ভাগ্যান্বেষণে বর্মা মুলুকে পাড়ি দিয়েছিল। সেখানে এক  কাঠ ব্যবসায়ী অং সানের বাগানে কাজ পায়। ধীরে ধীরে উন্নতি করতে থাকে।এক সময় ম্যানেজারের পদ লাভ করে।উন্নতির পিছনে একটাই কারণ রাজেন ছেলেটি মালিকের খুব বিশ্বাসী। অং সানের এক মেয়ে খিন কিল বাপের খুব আদরের। রাজেন ছেলেটি দেখতে শুনতে মন্দ না।তার সঙ্গে মেয়ের বিয়ে হলে ঘরেই থাকবে মেয়ে।এইসব ভেবে অং সান রাজেনকে নিজের জামাই করে নিল।কথায় বলে জন্ম মৃত্যু বিয়ে তিন বিধাতা নিয়ে।মেয়ের বিয়ের কিছুকাল পরেই অং সানের মৃত্যু হল।ব্যবসার মালিকানা তখন খিন কিলের হাতে।রাজেন দত্ত আগের মতই ম্যানেজার।রাজেন দত্তের অভিমান হলেও কিছু করার নেই।বিয়ের কিছুদিন পর খিনকিল এক কন্যা সন্তান জন্ম দিলেন।স্কুল কলেজের পড়া শেষ করে মেয়েকে কলকাতায় পাঠালো ডাক্তারী পড়ার জন্য।মাঝে মধ্যে দেশে গেলেও হোস্টেলে থাকতে হয়েছে দীর্ঘকাল।ডাক্তারীতে পাস করে পোস্ট গ্রাজুয়েশনে চান্স পেলনা কলকাতায়। অগত্যা তাকে দিল্লী যেতে হল।সেখানে পড়তে পড়তে আলাপ হয় কুলভূষণ পটেলের সঙ্গে সে তার এক বছরের সিনিয়ার।ঘর ঠিক করে দেওয়া রাস্তাঘাট চিনিয়ে দেওয়া খুব সাহায্য করেছিল তার জুনিয়ার হওয়া সত্বেও।
মহারাষ্ট্রের এক গরীব পরিবারের ছেলে। তার স্বপ্ন ছিল পাস করে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশ যাবে।কিন্তু গরীবের স্বপ্ন বাস্তবের মাটিতে ঠাই হয়না সব সময়। দীর্ঘকাল মেয়েকে দেখেন না খিন কিল স্বামীকে ব্যবসা দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে চলে এলেন দিল্লী।সেখানে কুল ভূষণের সঙ্গেও আলাপ হল।শুনলেন তার স্বপ্নের কথা। খিন কিল নানাদিক ভেবে প্রস্তাব দিলেন তিনি তার বিদেশ যাবার দায়িত্ব নিতে পারেন একটা শর্তে।কুল্ভূষণ আগ্রহ নিয়ে জানতে চায় কি শর্ত?
যাবার আগে এমাকে রেজিস্ট্রি বিয়ে করে যেতে হবে। তারপর দেশে ফিরে এলে রাজকীয় বিয়ের আয়োজন করা হবে।
অর্ধেক রাজত্ব আবার রাজকন্যা।কুল ভুষণ এককথায় রাজী।এত সহজে তার স্বপ্ন বাস্তব হবে স্বপ্নেও ভাবেনি। এমা এতে খুশি হয়েছিল তা নয়। ভুষণ লেখাপড়ায় ভাল দিল্লী নতুন জায়গা তাকে খুব সাহায্য করেছিল সে কারণে ভুষণকে খুব পছন্দ কিন্তু জীবন সঙ্গী হিসেবে কখনো ভাবেনি। শিয়রে পরীক্ষা এই নিয়ে বেশি মাথা ঘামাবার সময় ছিলনা তখন।
পরীক্ষা শেষ হবার পর কুল ভুষণ পাসপোর্ট নিয়ে শুরু করল খুব দৌড়াদৌড়ি।পাসপোর্ট বের হল ভিসা হল পরীক্ষার রেজাল্ট বের হল। কুল্ভুষণ পাস করল যথারীতি। ইতিমধ্যে খিনকিলকে মাম্মী বলে ডাকা শুরু করে দিয়েছে। খিন কিলের ইচ্ছে ছিল এখানকার পড়া শেষ না করেই ভুষণের সঙ্গে মেয়েও যাক। কিন্তু বেকে বসল এমা।রেজিস্ট্রির দিন ওদের বাড়ীর লোকজনও এসেছিল। তারপর সবাই মিলে বিমান বন্দরে বিমানে তুলে দিল ভুষণকে। বিমান বন্দরে যেতে যেতে পিছন ফিরে হাত নাড়ছিল ভুষণ।সবার সঙ্গে এমাও হাত নেড়ে সাড়া দিয়েছিল।
প্রথম বছর খানেক চিঠি দিত নিয়মিত।পরীক্ষার ব্যস্ততায় ওসব নিয়ে ভাবার সময় ছিল না। পাস করার পর এমার মনে পড়ল কলকাতার কথা। কলকাতা তার খুব ভাল লেগে গেছিল।সবাইকে বিদায় জানিয়ে কলকাতা রওনা হল। রাজবীর সিং তার সহপাঠী স্টেশনে পৌছে দিতে এসেছিল। ট্রেনের জানলা দিয়ে মুখ ঢুকিয়ে বলেছিল,চিট্টঠী দিও ইয়ার। কলকাতা পৌছে রাজবীরকে চিঠী লিখে জানালো ভালভাবে পৌছেচে।ভুষণকে এখানকার ঠিকানা দিয়ে চিঠি দিল।
কলকাতায় এসে বেসরকারী হাসপাতালে চাকরি নিল এমা। ভুষণের চিঠি আসায় ভাটার টান লক্ষ্য করা গেল।রাজবীর লিখল সেও স্টেটসে যাচ্ছে।খবরটা শুনে ভাল লাগল।রাজবীর শিখ ওকে মজা করে চায়না বলে ডাকত। মায়ের চেহারা পেয়েছে এমা মায়ের মত ফর্সা। তিন বছর পর খিন কিল চিঠি দেয় উত্তর আসেনা। জামাইকে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিলেন।
একদিন রাজবীর লিখল ওর সঙ্গে ভুষণের দেখা হয়েছে। ওকে বলেছে ভুষণ নাকি আর দেশে ফিরবে না।বছর তিনেক পর স্বামীকে নিয়ে কলকাতা এলেন খিন কিল।কয়েকটা জটিল অপারেশন করে চিকিৎসক মহলে  ড এমার তখন খুব নাম।ম্যাডাম খিনকিল খোজ খবর নিয়ে উত্তর কলকাতার শেষ প্রান্তে বিঘে খানিক জমি কিনে এই নার্সিং হোম বানাবার সিদ্ধান্ত নিলেন।শুরুতেই নানা বাধা।এত টাকা খরচ করে বিশাল বিল্ডিং হচ্ছে ওদের কিছু দিতে হবে।মজুর মিস্ত্রী কাজ করতে ভয় পাচ্ছে।সেই সময় রাজেন দত্ত সন্ধান পেলেন ত্রিদিবেশ মাইতির।ভদ্রলোক তাকে রাজনীতির লোকের কাছে নিয়ে গেলেন। বাবুলাল নামে একজন মস্তানকে দায়িত্ব দিয়ে পাঠাল।সেই লোকটা দাঁড়িয়ে থেকে বিল্ডীং বানাতে সাহায্য করেছিল। এখনো মাঝে মধ্যে রাস্তা ঘাটে দেখা হয়। মাস্তান হলেও লোকটার ব্যবহার খুব খারাপ নয়। মায়ের নামে নার্সিং হোমের নাম হল খিন কিল নার্সিং হোম।সামনে হাসপাতাল নীচে পলি ক্লিনিক পিছন দিকে স্টাফ কোয়ার্টার। ড এমাও যোগ দিলেন
এই হাসপাতালে।শনি রবি বাদ দিয়ে প্রতিদিনই তাকে পাওয়া যাবে।পারিবারিকভাবে খিনকিলরা বৌদ্ধের উপাসক হলেও খিনকিল রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতি অনুরাগ।নিয়মিত  বেলুড়ে যাতায়াত করে। দীর্ঘকাল কলকাতায় থাকার জন্য বাংলা বলেন চমৎকার।রীনা এখানেই দেখাতে আসে।
দিব্যেন্দু অনেকদিন থেকে আসব আসব করেও আসা হয়নি।রীণার দাবী দিন দিন যেভাবে বাড়ছে দেরী না করে একদিন এসে হাজির হল নার্সিং হোমে।বিশাল বিল্ডিং নীচে অফিস ঘর প্যাথোলজিক্যাল সেণ্টার ডানদিকে পরপর কয়েকটা ডক্টরস রুম।একটা দরজায় লেখা  ড.এমা খিন ,স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ।ভিতরে বেশ কিছু মহিলা বসে। উকি দিয়ে দেখল রীণা তখনো আসেনি। রাস্তায় এসে দাড়ায়।বুঝতে পারছে না রীণা কোনদিক হতে আসতে পারে? অস্থিরভাবে পায়চারী করে দিব্যেন্দু। কব্জি ঘুরিয়ে ঘড়ি দেখল আটটা বাজতে চলল।আর কতক্ষণ অপেক্ষা করবে?বাস স্টপেজে গিয়ে দাড়াল।বাস এসে দাঁড়ায় লোক নামে কিন্তু রীণা কোথায়?
একটা বাস এল উঠতে গিয়েও উঠল না।মোবাইল বাজতে পকেট হতে মোবাইল বের করে কানে লাগিয়ে বলল,কি ব্যাপার? আমি সেই কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছি–।
আপনি দিব্যেন্দু বলছেন?
হ্যা আপনি কে? এটা রীণার ফোন না?
হ্যা। আমি চিত্রা বলছি। ম্যাডামের শরীর খুব খারাপ উনি শুয়ে আছেন। আমাকে বলল জানিয়ে দিতে–।
কি হয়েছে?
তেমন চিন্তার কিছু নেই এসময় এরকম হয়। রাখছি।
আবার কি হল? দিব্যেন্দু বুঝতে পারে না। এমন কি হল যে নিজে ফোন করে জানাতে পারল না? অন্যকে দিয়ে জানাতে হয়?
অনেক রাত হয়েছে দিব্যেন্দু ফেরেনি। কঙ্কার সেজন্য কোন চিন্তা নেই।সিদ্ধান্ত যা নেবার নেওয়া হয়ে গেছে। দেবীর বিয়েটা মিটলে চাপ দেবে।
নিজেকে আয়নার সামনে দাড় করিয়ে দেখল। তলপেটের নীচে লোম একটু বড় হয়েছে কাল সেভ করবে। ত্যারছা হয়ে পাছাটা দেখে বন্দনাদি বলছিল তোর পাছাটা দারুণ সেক্সি।এবার নাইটীটা পরে ফেলা ভাল।যখন দিব্যেন্দু থাকবে না বাসায় ফিরে আর কিছুই পরবে না। নিজের উলঙ্গ শরীর দেখতে ভালই লাগে। সারা শরীরের কোনে কোনে ফুরফুরে বাতাস খুনসুটি করে মন জুড়িয়ে যায়।

সারা পথ বাবুয়া কোনো কথা বলে নি। পাড়ায় ঢূকে বাবুয়া জিজ্ঞেস করল,বস একটা কথা জিজ্ঞেস করব?

না কিছু জিজ্ঞেস করবে না।তোমার মনে খুতখুতানি থাকলে আর ওখানে যেওনা।
তা বলছি না।
কি বলছো? সারা জীবনের সঞ্চয় সে তোমার হাতে তুলে দিচ্ছে একবারও তো ভাবেনি তুমি কে?তোমার কি যোগ্যতা আছে ভেবেছো? মানুষকে চেনো ধর্ম পরে আগে মানুষ।তুমি ব্যবসা করলে তার কি লাভ?তুমি তাকে আঘাত করেছো তোমার ক্ষমা চাওয়া উচিত।
কনক তাকে সত্যিই ভালবাসে শরীর বেচে রোজগারের টাকা তার হাতে তুলে দিতে চায়। জীবনে বহুৎ কষ্ট পেয়েছে এখন তার একমাত্র সহায় এই লাল। একটা মস্তান চাল নেই চুলো নেই বাবুলালের নিজের প্রতি ধিক্কার জন্মায়।বাবুলাল বলল,ঠিক আছে বস ক্ষমা চাইব।কিন্তু বস কিসের ব্যবসা করব?
ঋষি হেসে ফেলল।তারপর বলল,বাবুলাল আমি জানি তোমার মন অনেক বড়।তোমাকে ক্ষমা চাইতে হবে না।ঋষী কিছুক্ষন ভাবে তারপর বলল,ওষূধের দোকান করতে পারো।
ধারবাকীর কারবসার নেই ওষূধ ছাড়া মানুষের এক মুহূর্ত চলেনা।পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ব্যবসা।
কিন্তু বস লেখাপড়ী জানিনা ওষূধের দোকান সব ইংরেজি নাম–।
নূরবেগম লেখাপড়া জানে। সে স্কুল ফাইন্যাল পাস।
দেখলে বস একথাও আমাকে কোনোদিন বলে নি?
বলে নি কারণ তুমি মুখ্যু শুনলে তুমি লজ্জা পাবে তাই। জানো বাবুলাল একটা মূল্যবান পাথর আছে যার নাম কোহিনূর। তুমি অনেক মূল্যবান জিনিস পেয়েছো, এখন যদি হারাতে চাও হারাতে পারো।
বাবুলাল লজ্জা পায় কিছু বলে না।কনকের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে ভবে লজ্জিত হয়।সত্যিই তো কি আছে তার একটা মস্তান বইতো নয়।আমতলায় বাইক থেকে নামতেই দেখল কয়েকজন লোক এগিয়ে এল।ভজা বলল,গুরু এখন টায়ার্ড পরে আসবেন।
লোকগুলো চলে যায়না করুন মুখে দাঁড়িয়ে থাকে।ঋষি জিজ্ঞেস করল,এরা কারা?
বাবুলাল হাত নেড়ে লোকগুলোকে ডাকে। বাবুলাল জিজ্ঞেস করল,কি হল মাখনবাবু এগ্রিমেণ্ট হয়েছে?
রোববার সন্ধ্যেবেলা হবে বলল। একজন বয়স্ক লোক বলল।
কুণ্ডূবাবুকে বলো।
উকিলসাব?
এসব আপনারা বুঝবেন না। একজন উকিলকে রাখতেই হবে আইনী ব্যাপার।
মাখনবাবু ইতস্তত করতে থাকেন। বাবুলাল বলল,কি মাখনবাবু কিছু বলবেন?
ওরা বলছিল প্রোমোটার শান্তিবাবুর লোক আবার কুণ্ডূবাবু শান্তিবাবুর জানাশোনা।
উকিলদের সঙ্গে সবার জানাশোনা–।কথাটা বলে বাবুলাল কি যেন ভাবে।আচ্ছা আপনারা যান ফোন করবেন মিটীং এ যাবার আগে।
ওরা চলে গেল। বাবুলাল বলল,সিরিফ বুদ্ধি থাকলেই হবে না লেখাপড়াও জানতে হয়।সব শালা আনপড়।
ঋষী কথা বলে জানল,একজনের বাড়ী প্রোমোটারকে দিয়েছে বহুতল করার জন্য। যারা এসেছিল সবার ঐ বাড়ীতে দোকান আছে।প্রোমোটার বলেছে ঘর ছেড়ে দিতে যখন বহুতল হবে তখন সবাইকে ঘর দেওয়া হবে। কেবল মুখের কথা নয় লিখিত চুক্তি হবে।বাবুয়া কুন্ডূবাবুকে ঠীক করে দিয়েছে। দোকানদারদের সন্দেহ কুণ্ডূবাবু টাকা পয়সা নিয়ে চুক্তির বয়ান ঠিকঠাক লিখবে কিনা?
ঋষী রকের দিকে রওনা হল। বাবুলাল বলল,ভজা চা বল।মোবাইল বের করে ফোন করল ওপার থেকে সাড়া পেয়ে বলল,,ম্যায় তেরা লাল তু মেরা কোহিনূর…আরে কাদছিস কেন…তোর জন্য জান কুরবান…আমার দুনিয়ায় আর কে আছে….তুই হাসলে আমার দিল খুশ…বস বলল মেডিসিন শপ করতে…তুই ঠিক বলেছিস ফেরেস্তাই আছে…ব্যাস রাখছি …বস সেলাম নেহি সিরিফ  প্যার কি গুলাম?
ভজা পাশে দাঁড়িয়ে শুনছিল জিজ্ঞেস করল,কে গুরু ভাবীজী?
বাবুলাল হাত নেড়ে ভজাকে চুপ করতে বলল।ওপাশ থেকে কনকের গলা শোনা গেল, নসিব বালো কি এইসা ফেরিস্তা মিলে।
বাবুলাল ফোন রেখে চওড়া হাসল।গুরুর মুখে হাসি দেখে ভাল লাগে ভজার।ভাবীর সঙ্গে তালমিল হয়ে গেল।কনকের সঙ্গে কথা বলে বেশ হালকা বোধ হচ্ছে।ধরম কভি আদমীর পয়চান হতে পারে না
Like Reply


Messages In This Thread
পরভৃত / কামদেব - by kumdev - 26-05-2020, 07:34 PM
RE: পরভৃত / কামদেব - by kumdev - 30-05-2020, 02:52 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)