Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 3.15 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery জীবন সাধনা/কামদেব
#52
।।১২।।


              বিদেশে ভারতীয় নাচের এত কদর না দেখলে বিশ্বাস হতনা।স্থানীয় সংবাদ পত্রগুলোতে ছবি সহ ভুয়োসী প্রশংসা বেরোচ্ছে নিয়মিত। দিনগুলো কাটতে লাগলো স্বপ্নের মত।বিয়ের একটা ফল লক্ষ্য করছে জয়ী, ছেলেগুলো আর আগের মত আশপাশে ছোক ছোক করছেনা।অবিনাশবাবুও একসময় তাকে দেখে কেমন হয়ে যেতেন, এখন স্বাভাবিক।কয়েকজন বিদেশিনী তার সঙ্গে দেখা করে নাচ শেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।ভারতীয় নাচে তাদের এত আগ্রহ দেখে অবাক লেগেছে।
বাবুজি তাদের ঠিকানা দিয়েছেন।দেখতে দেখতে প্রোগ্রাম শেষ হতে চলল।ম্যানেজারবাবু ফেরার ব্যবস্থা করছেন। দেবজয়ীর এক চিন্তা ‘তপোভঙ্গ’ শিক্ষা,বাবুজি বলেছেন দেশে ফিরে শেখাবেন।বাবুজি তাকে উত্তরসুরি নির্বাচন করেছেন।একে একে সব বাঁধা অপসারিত দেবজয়ীর সামনে মসৃন পথ।দুর্যোগ তাকে আর তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াবে না।মাকে বিশ্রাম দিতে হবে অনেক পরিশ্রম করেছে সারা জীবন।রুমাল দিয়ে চোখ মোছে দেবজয়ী।
পুরানো দিনগুলো মনে পড়ে,কারো প্রতি কোন অভিযোগ নেই তার।দমদমের মাটি ছুল প্লেন ঘড়িতে রাত একটা।ক্যামেরার ফ্ল্যাশ জ্বলে ওঠে খচাখচ,কি করে এরা এত রাতে খবর পায়? খুব লজ্জা করছিল সবাই যখন শিবপ্রসাদ পট্টনায়ককে ছেড়ে দেবজয়িকে নিয়ে মাতামাতি শুরু করল।আড়চোখে একবার বাবুজিকে দেখল, দৃষ্টি যেন হারিয়ে গেছে অন্য কোন জগতে।বাবুজি সাধক মানুষ সম্ভবত জাগতিক কাম-ক্রোধ-ঈর্ষা-দ্বেষের উর্দ্ধে।ভীড়ের মধ্যে হিরালাল স্যরকে দেখতে পেলেও কথা বলার সুযোগ হয়নি।
বালগোপালের গাড়িতে বাবুজি আর দেবজয়ী উঠল।গাড়ি ছুটে চলল ভিয়াইপি রোড ধরে।দুজনেই গম্ভীর চুপচাপ।
–বাবুজি?
শিব প্রসাদ তাকালেন।
–আমি খিদিরপুরে নেমে যাই?
শিবপ্রসাদ কোন উত্তর দিলেন না।মা-র জন্য খুব চিন্তা হচ্ছে।আলিপুরে স্বামী প্রতীক্ষা করছে দেবজয়ী কোনো কথা বলে না।
গাড়ি ছুটছে একই গতিতে। আলিপুরে বাড়ির সামনে থামতেই লোকজন বেরিয়ে এল।শিবপ্রসাদ নেমে মৃদু স্বরে বললেন,গোপাল ম্যাডামকে খিদিরপুর নিয়ে যা।
পিছন ফিরে দেখলেন না সোজা গেট পেরিয়ে ভিতরে ঢুকে গেলেন।
গাড়ি আবার চলতে শুরু করে।গলির মুখে গাড়ি থামতে জয়ী বলে, গোপালজি আপনি চলে যান।
–কখন আসবো?
–আমি ফোন করবো।
নির্জন রাস্তা ,পথে দু-একটা নেড়ি কুত্তা একবার ঘেউ করে উঠল।দেবজয়ী এগিয়ে গিয়ে দরজার কড়া নাড়ে।কারো সাড়াশব্দ নেই।সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর মা এখন গভীর ঘুমে ।
–মা দরজা খোল,আমি দেবু।মা–মা–দরজা খোলো–।
অনেক ডাকাডাকির পর দরজা খুলল।দরজা খুলে বসে পড়ল মা।
–কি হল মা? শরীর খারাপ?
ধরে তুলতে গিয়ে বুঝতে পারে জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে।চমকে ওঠে জয়ি, কবে থেকে জ্বর মা?
–ও কি-ছু-ন-আ।জ্ঞান হারিয়ে ফেলে মা।
জয়ী ফোন করে সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি নিয়ে আসেন অবিনাশবাবু।
তারপর পিজি হাসপাতাল।দেবজয়ীকে দেখে নার্সরা ভীড় করে আসে।হা-করে চেয়ে দেখে।পাব্লিকের ভীড় সামলাতে পুলিশ আসে। কোমায় আচ্ছন্ন মা।ডাক্তারদের নিয়ে বিশেষ টিম গঠিত হয়।বাড়ীতে একা একা ধুকছিলেন কেউ খবর নিতে আসেনি এখন তাকে দেখার জন্য দর্শনার্থির ভীড়। তিনদিনের মাথায় ডাক্তার বললেন,স্যরি।

মেয়েকে শেষ দেখার জন্য কোনমতে ধরে রেখেছিলে প্রাণ।কত স্বপ্ন দেখেছিল মা-কে নিয়ে সব স্বপ্নই থেকে গেল।
বিভিন্ন মহল থেকে শোকবার্তা আসতে থাকে।পত্রিকায় দেবজয়ীকে নিয়ে সত্য মিথ্যে মিশিয়ে আর্টকেল বেরোতে থাকে।কঠোর সাধনা নিয়ে নানা গালগল্প লোকের মুখে মুখে ফিরছে। খবর পেয়ে তপন এসেছিল পিজিতে।ভীড় ঠেলে দেবজয়ার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ না পেয়ে ফিরে গেছে।
ব্যাককনিতে দাঁড়িয়ে কমলকলি বাগানটাকে দেখছিল।হালকা বাতাস এসে চুলে খুনসুটি করছে আম গাছের ডালে পাখিরা বসে বিশ্রাম করছে।জয়ীর  হয়তো  বিদেশ থেকে ফেরার সময় হয়ে এল, কতদিন ওর সঙ্গে কথা হয়নি।নজরে পড়ল বড়দি রাস্তা দিয়ে হেটে আসছেন।পশুপতিবাবু মারা যাবার পর বড়দি এখন বড় একা।গেটের কাছে এসে দাঁড়িয়ে পড়লেন। কদিন আগে এসেছিলেন আবার কি মনে করে?উপর দিকে তাকাতে চোখাচুখি হতেই হেসে জিজ্ঞেস করলেন,দরজা খোলা?
--আসছি দাড়ান।
কমল নীচে গিয়ে দরজা খুলে বলল,আসুন।
সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে উঠতে বড়দি বললেন,ছেলেরা কোথায় আজ তো কলেজ নেই?
-- ওরা দাদুর সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছে।
--বাঃ সুন্দর হয়েছে বাড়ীটা।
উপরে উঠে বসার ঘরে বসিয়ে কমল বলল,বড়দি বসুন একটু চা করি?
বড়দিকে বসিয়ে রেখে কমল চা করতে গেল।পশুপতি মরার পরও দেখে মনে হল বেশ আছে।হঠাৎ তার কাছে কেন এল।আগের বার জয়ীকে নিয়ে কত কথা। চা নিয়ে বড়দিকে দিয়ে নিজেও এককাপ নিয়ে সামনা-সামনি বসল।
চায়ে চুমুক দিয়ে বড়দি বললেন,তুমি আমার ছাত্রী ছিলে এখন তুমিও দিদিমণি।এখন আমরা বন্ধুর  মতো।
কমল হাসল।বড়দি জিজ্ঞেস করে্ন,আচ্ছা কমল ও মারা যাবার পর তোমার কষ্ট হয়না?
--মারা যাবার পর কষ্ট তো হয়েছিলই।
বড়দি কি যেন ভাবলেন তারপর একটু ইতস্তত করে বললেন,সে তো শোকের আমি সে কষ্টের কথা বলিনি।
কমল মনে মনে ভাবে শালি পশুপতি মারা যাবার পর বেশ কষ্টে আছে যাচাই করে দেখছে তার কষ্ট হয় কিনা।মুখে বলল,সেতো একটু হবেই।
--তুমি কি করে সামলাও?
--এদিক-সেদিক করে ম্যানেজ করি।
--ভগবান মেয়েদের সঙ্গে সুবিচার করেনি।ছেলেদের কত সুবিধে আর আমাদের গড়েছে পা থেকে মাথা পর্যন্ত সেক্স।যাকে তাকে দিয়ে সব কাজ হয়না।
--ঠিকই একজন বিশ্বাসী লোক থাকলে সুবিধে হয়।একটা উপায় আছে কনভার্সন।
--মানে?
--ভাবনাটা এক বিন্দু হতে অন্য বিন্দুতে যদি নিয়ে যাই--।মানে একটা ছেলের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে যদি অন্য ছেলেকে সেই জায়গায় বসাই তখন আগের ছেলেটার স্মৃতি আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে যাবে--আমি বোধ হয় ঠিক বোঝাতে পারছি না।
--হ্যা বুঝেছি।তুমি যেমন সমস্ত মন প্রাণ সন্তানের সমর্পন করেছো অন্য ইচ্ছেগুলো তেমন বিব্রত করতে পারছে না। কিন্তু কমল আমার--।বড়দির চোখ ছল ছল করে উঠল।
--বড়দি আপনার সন্তান নেই তাতে কি হয়েছে অন্য কোনো সেবামূলক কাজে আত্মনিয়োগ করুন।দেখবেন শরীরের যন্ত্রণা আপনার মন জুড়ে বসে থাকবে না।অবশ্য সুযোগ সুবিধে হলে শরীরটাকেও খুশি করে নেবেন। হি-হি-হি।
বড়দি কোনো কথা বলে না গভীরভাবে কি যেন ভাবতে থাকেন।কমল বলল,বড়দি আপনি বয়সে অনেক বড় তবু বলছি একটু আগে ভগবানের কথা বললেন।আমার মনে হয় সেটা একপেশে চিন্তা।ভগবান আমাদের যা দিয়েছে সেই ঐশ্বর্য কম নয়।তাকে ঠিক মত ব্যবহার করতে হবে।এই ঐশ্বর্য  দিয়ে অনেক বড় বড় মানুষকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।কুঞ্জ উকিলকে চেনেন?
--তোমার শ্বশুর?উনি তো এক সময় জেলার ডাক সাইটে উকিল ছিলেন--।
--ইচ্ছে করলে ওকে দিয়ে আমার পা টেপাতে পারি।হি-হি-হি।
বড়দি হেসে বলল,এটা ঠিকই ওরা ওই সময় এমন আদেখলার মত করে খুব মায়া হয়। 
[+] 2 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: জীবন সাধনা/কামদেব - by kumdev - 26-05-2020, 07:18 PM



Users browsing this thread: 16 Guest(s)