Thread Rating:
  • 4 Vote(s) - 3 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
জীবন যে রকম by লেখক (collected and incomplete)
#4
আসলে বিদিশাকে আমি খেলাতে চাইনি। কিন্তু কেন জানি আমার মনে হয়েছিল, কলেজের মেয়েগুলো সব বন্ধু হিসেবেই মেয়েগুলো সব ঠিক আছে। বেশী প্রেমের খেলা খেলতে গেলে মুশকিল। একেতো কলেজে এসে গান গেয়ে এমনই হীরো বনেছি, তাতেই পড়াশুনার বারোটা বাজছে। তারপরে আবার প্রেমে পড়লে, পড়াশুনা একেবারেই ডকে উঠবে। ভালো চাকরি পাওয়া তো দূর কেরানীর চাকরীও তখন জুটবে না কপালে। অতএব এসব বিদিশা টিদিশাকে যত দুরে রাখা যায় ততই মঙ্গল।
শুক্লা আমার খুব ভালো বন্ধু ছিল। সেই শুরু থেকে ক্লাসে ও আর আমি পাশাপাশি বসতাম। শুক্লা আমার কাছ থেকে ফিজিক্স এর নোট নিত। আমার ডায়েরীর পাতাগুলো উল্টে পাল্টে দেখত। ভালো কিছু চোখে পড়লে, সঙ্গে সঙ্গে টুকে রাখতো। এদিকে সৌগত বেশ কিছুদিন ধরেই শুক্লার সাথে লাইন মারার চেষ্টা করছে। আমাকে বারবারই বলছে, দেব তোকে বিরিয়ানি খাওয়াবো। চাউমিন খাওয়াবো। তুই যা খেতে চাইবি তাই খাওয়াবো। শুধু শুক্লাকে তুই আমার হয়ে একবার রাজী করিয়ে দে। তারপর দেখ, তোকে আমি কেমন খুশি করি।
আমি সবই বুঝছি, দেখছি। কিন্তু শুক্লাকে বললেও শুক্লা কিছুতেই সৌগতকে পাত্তা দিচ্ছে না। একদিন কলেজে এসে শরীরটা আমার ভীষন খারাপ হল। গরমে প্রচন্ড বমি হচ্ছে। চোখমুখ লাল হয়ে যাচ্ছে। প্রায় অজ্ঞান হবার মত অবস্থা হল। সবাই চোখে মুখে জল দিয়ে আমাকে ক্যান্টিনে একটু ছায়ার তলায় নিয়ে গেল। শুক্লার কোলে মাথা রেখে আমি তখন শুয়ে আছি। শুক্লা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। তাই দেখে বিদিশা বুঝে গেল, আমি বোধহয় শুক্লার সাথে নিশ্চই প্রেম করি। ওর আমার প্রতি জেদটা আরো বেড়ে গেল।
আমি বিদিশাকে সাতদিন, আমার কাছে ভীড়তে দিইনি। লাইব্রেরীতে সেদিন ও আমাকে দেখার পর থেকে আমি দূরে দূরে থাকতাম। ক্যান্টিনে যখন গান গাইতাম, ও দূরে বসে শুনতো। কিন্তু আমি কিছুতেই ওর দিকে তাকাতাম না।
এরপরই এল সেইদিনটা। সেদিন ছিল কলেজে সরস্বতী পূজোর দিন। বিদিশাকে দেখলাম, ঠিক আমার পেছনেই এসে দাঁড়িয়েছে। একটা ঘি রঙের লাল পেড়ে শাড়ী পড়েছে। কপালে লাল টিপ। সরস্বতী পূজোয় মেয়েরা যেমন সাজে, তার থেকেও সুন্দর লাগছে ওকে। ওর হাসিখুশি মার্জিত চেহারায় একটা স্নিগ্ধতার ছাপ। লম্বা, ঈষৎ ভারী গড়ন আর একরাশ কালো চুল। আমাকে বলল, ‘‘তুমি খুব ভালো গাও। তোমার গান শুনেছি, আমি মুগ্ধ। আজকে তো সরস্বতী পুজো। আমাদের গান শোনাবে না?’’
আমি ভাল করে একবার তাকালাম বিদিশার দিকে। ওকে কয়েক পলক দেখলাম। বিদিশার ঠোঁটের কোনে হঠাৎই এক চিলতে হাসি দেখলাম। মনে হল, মেয়েটা যেন কিছু প্রত্যাশা করে রয়েছে আমার কাছ থেকে পাবে বলে। গান শোনাব? না ওর আমাকে ভাললাগাটাকে মেনে নেবো, কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার হাতে হঠাৎই একটা চিরকূট গুঁজে দিয়ে বিদিশা বলল, ‘আমি এখানে কিছু লিখে রেখেছি। তোমাকে দেবার জন্য। পড়ে দেখো।’ বলেই এক নিমেষে ছুটে পালিয়ে গেল ওখান থেকে।
আমি ওর গুঁজে দেওয়া কাগজটা হাতে নিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি। একটু পরে শুভেন্দু এল ওখানে। আমাকে বলল, কিরে? কি বলছিল বিদিশা? তোকে কিছু বলল?
আমি বললাম, না সেরকম কিছু না। শুধু একটা কাগজ গুঁজে দিয়ে গেল হাতে। বলল, তোমার জন্য লিখেছি, এটা পড়ে দেখো।
শুভেন্দু বলল, খুলে দেখ। নিশ্চই আমার মনে হচ্ছে এটা কোন প্রেমপত্র। বিদিশা তোকে মনে হয় এই চিঠির মাধ্যমেই প্রেম নিবেদন করেছে।
এটা ঠিক, আজকাল যেভাবে প্রেম ভালোবাসা হয়, আমাদের সময় প্রেমটা এরকম ছিল না। তখন প্রেমটা দানা বাঁধতে একটু সময় নিত। একটু বোঝাপড়ার জন্য সময় লাগত। বিদিশা আমাকে চিঠিতে দুলাইন লিখেছিল, ‘‘আমি তোমাকে ভালবাসি। তুমিও কি তাই?’’
মেয়েটাকে যতবারই দেখেছি আমার মন্দ লাগেনি। রূপ আছে, গুনও আছে নিশ্চই। কিন্তু ওকে পাবার জন্য আমার মধ্যে তখনও ব্যাকুলতাটা আসেনি। সেইভাবে ছটফটানিটাও অনুভব করিনি। মনে হয়েছিল এতই কি সহজ? ও বলল, আমাকে মেনে নিতে হবে? সত্যি ভালবাসে কিনা একবার যাচাই করে নেওয়া তো দরকার।
শুভেন্দু বলল, ‘দেব’ তুই না দিনকে দিন কেমন যেন হয়ে যাচ্ছিস। আরে ও তোকে প্রেম নিবেদন করল। ওর ভালোবাসাটাকে অ্যাকসেপ্ট কর। কলেজে সবাই তোকে নিয়ে মাতামাতি করে বলে, তুই একটু দেমাকী হয়েছিস। দেখতো মেয়েটা কেমন সরল, সুন্দর। পুরুষেরা চিরদিন এমন নারীকেই ভালবেসে এসেছে যার স্নিগ্ধ কোমলতা ব্যাটাছেলেদের শান্তি দিতে পারে। বিদিশার মত মেয়ে আর একটা খুঁজে পাবি তুই?
ঠিক ঐ মূহূর্তে কোন চিন্তা আমার মাথায় এল না। ভাবলাম,শুভেন্দু যা বলছে, তার ঠিক কতটা সত্যি? সুন্দরী নারী বিদিশা। আমার মধ্যে কি এমন ও দেখল, যে আমাকে ওর ভালো লেগে গেল।
শিয়ালদহর কাফেটোরিয়াতে পরের দিন আমরা সবাই বসে আছি। ঠিক ঐ সময়ে বিদিশাও ওখানে এসে উপস্থিত। শুভেন্দু, রনি, সৌগত আর আমি চারজনেই আমরা বিদিশার মুখের দিকে তাকালাম। ওরা তিনজনে বিদিশাকে দেখে খুব খুশি হল। কিন্তু আমি ভীষন অস্বস্তিতে পড়ে গেলাম।
শুভেন্দু বলল, কি রে দেব? তুই কি ওকে খেলাচ্ছিস?
আমি কোন জবাব দিচ্ছি না।
রনি কিছু জানে না, এমন ভাবে শুভেন্দুকে বলল, কি হয়েছে রে শুভ? দেব কাকে খেলাচ্ছে?
শুভেন্দু বলল, ঐ যে মেয়েটাকে দেখছিস, দেবের খোঁজে এখানে পর্যন্ত চলে এসেছে। দেব ওকে খেলাচ্ছে।
আমি রেগে গেলাম। বললাম, কি যাতা বলছিস? আমি কাউকে খেলাচ্ছি না।
রনি বলল, কি হয়েছে ব্যাপারটা? আমাকে খুলে বল দেখি।
শুভেন্দু, বিদিশার চিঠি দেবার ব্যাপারটা ওকে সব খুলে বলল। তাই শুনে রনি বলল, ওরে দেব। এই ছিল তোর মনে? ঠিক আছে তুই যদি ওর সাথে লাইন মারতে না চাস, তাহলে বল, আমিই লাইন মারা শুরু করছি।
বিদিশাকে আমাদের মাঝে রনিই ডেকে বসালো। ততক্ষণে শুক্লাও ওখানে এসে উপস্থিত। বিদিশা আমারই উল্টোদিকের চেয়ারটায় এসে বসেছে। ও মাঝে মাঝে আমার দিকে তাকানোর চেষ্টা করছে। আমি মুখ নিচু করে বসে আছি। রনি বলল, এই যে বিদিশা, আমাদের এই বন্ধু মাননীয় শ্রী দেব মহাশয় কে দেখছো তো। ইনি খুব লাজুক প্রকৃতির। ইনি যখন গান গেয়ে সবাইকে মাতিয়ে রাখেন, তখন ইনার মুখ দিয়ে মধু ঝরে পড়ে। কিন্তু প্রেম নিবেদনে ইনি একটু কাঁচা। ইনার গলা দিয়ে তখন আওয়াজ বেরোয় না। কন্ঠস্বর রোধ হয়ে থাকে। জিভে আড়ষ্ঠতা এসে যায়। তুমি একে বাদ দিয়ে বাকী তিনজনের মধ্যে কাউকে পছন্দ হয় কিনা দেখোতো? দেব মনে হচ্ছে ঠিক খেলতে চাইছে না তোমার সঙ্গে।
ইচ্ছে হচ্ছিল রনির পাছায় ক্যাঁত করে একটা লাথি মারি। ও বিদিশার সামনে আমাকে জেনেবুঝেই বেইজ্জ্বত করছে, সেটাও বুঝতে পারছি। কোন কথা না বলে আমি চেয়ার ছেড়ে উঠে বিদিশার হাতটা ধরলাম। ওকে বললাম, এসো তো তুমি আমার সঙ্গে। এসব ফালতু ছেলেদের সাথে মুখ লাগিয়ে কোন লাভ নেই। চলো আমরা বরং আলাদা কোথাও গিয়ে বসি।
বিদিশার হাত ধরে ওকে আমি ক্যাফেটরিয়া থেকে বের করে নিয়ে যাচ্ছি। পেছনে একবার তাকিয়ে দেখলাম, রনি হাসছে। ওকে দেখে বাকীরাও হাসছে। রনি হাসতে হাসতে বলল, এই তো গুরু জেগেছে। কেয়া বাত কেয়া বাত। এই না হলে দেব।
শুভেন্দু হাসতে হাসতে বলল, যাঃ এই বিদিশা এলো। আর অমনি তুই আমাদের ভুলে গেলি? তুই কি স্বার্থপর রে। দেব যাস না আমাদের ছেড়ে। তাকা, একবার তাকা। প্লীজ প্লীজ।
আমরা বাইরে বেরিয়ে এসেছি। ওদের হাসির আওয়াজটা তখনও ভেতর থেকে আসছিল। বিদিশা একটু দূরে গিয়ে বলল, তোমার চিঠিটা আজকেই পেয়েছি। শুভেন্দু আমার হাতে তোমার চিঠিটা দিয়ে বলল, দেব তোমাকে চিঠি দিয়েছে আর কাফেটরিয়াতে আসতে বলেছে। এই নাও দেবের চিঠি।
আমি বললাম, কই দেখি। চিঠি? কই আমি তো চিঠি লিখিনি তোমাকে।
বিদিশা একটা কাগজ দিল আমার হাতে। বলল, যাঃ তা হয় নাকি? তুমিই তো লিখেছ। নইলে কে আবার লিখবে?
খুলে দেখলাম। তাতে আমারই নামকরে বিদিশাকে চিঠিটা লেখা হয়েছে,
বিদিশা,
আমি তোমার চিঠি পড়লাম। জানি না, তোমার ভালবাসাকে আমি কিভাবে গ্রহন করব? আমার মত অতিসাধারন একটা ছেলেকে তুমি ভালবেসে ফেলেছ। মুখ ফুটে আমিও এতদিন বলতে পারিনি। আমিও তোমাকে খুব ভালোবাসি বিদিশা। এ জীবনে কেন, জনমে জনমে আমি তোমাকে চাই। আমার ভালোবাসা তুমিও কি গ্রহন করবে? তাহলে আজকে কাফেটরীয়াতে অবশ্যই এসো। আমি ওখানে তোমার জন্য অবশ্যই অপেক্ষা করব। ইতি তোমার দেব।
চিঠিটা পড়ার পর আমি আর বিদিশাকে কিছু বলিনি। ওকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে গিয়েছিলাম কলেজ স্কোয়ারে। দুজনে নিরিবিলিতে বসে অনেক্ষণ কথা বলেছিলাম। ফিরে এসেছিলাম সন্ধে হবার পর। তারপর পরপর দুদিন শুভেন্দু কলেজে আর আসেনি। যেদিন এসেছিল, ওকে খুব তাড়া করেছিলাম। কলেজ গেট থেকে একেবারে বড় রাস্তার মোড় পর্যন্ত। আমার তাড়া খেয়ে কান ধরে শেষ পর্যন্ত হাসতে হাসতে শুভেন্দু বলেছিল। মাফ করে দে বস। এটা তো করতেই হত। নইলে তোদের প্রেম পর্বটা যে শুরু হতে হতেও বাকী থেকে যেত। বিদিশারও আফশোস থাকত না। আর আমাদের তো নয়ই।
আসলে ওরা সবাই এটা জানত। শুভেন্দু সবাইকে বলে রেখেছিল। এমনকি শুক্লাকেও। সেদিন কাফেটরিয়াতে ওরা কেউ বুঝতে দেয়নি আমাকে। এমনকি রনিও নয়। আজ মনে পড়ে সেসব কথা। আর ভাবি বন্ধুত্বটা আমাদের এমনই ছিল।
বিদিশাকে নিয়ে আমি অনেক ঘুরেছি। ওর সাথে বাসে করে যখন ঘুরতাম, বাসের ঝাঁকুনিতে মাঝে মাঝে বিদিশা আমার গায়ের ওপর টলে পড়ত। মজা পেয়ে আমি একহাত দিয়ে ওকে বুকে টেনে নিতাম। বিদিশা আমার কাঁধে মাথা রাখতো। আমার শরীরে হেলান দিয়ে দাঁড়াতো। সারা রাস্তায় আমাকে ওর বড় আপন মনে হত। বিদিশার মনে হত ও যেন আমার ওপর নিশ্চিন্তে নির্ভর করতে পারে। খুব কাছ থেকে ও বুক ভরে নিঃশ্বাস নিত। বিদিশার কোমরে হাত দিলে ওর সারা শরীরটা শিরশির করে উঠত। এ যেন এক অদ্ভূত অনুভূতি। বিদিশা বলত, ‘‘তুমিই আমার জীবনের একমাত্র প্রেমিক দেব। প্রেমের মানে কি তা, আমি তোমার মধ্যেই খুঁজে পেয়েছি।’’ ভিক্টোরিয়ায়, গঙ্গার ঘাটে নিরিবিলিতে যখন ওকে জড়িয়ে ধরতাম, বিদিশা বলত, ‘‘তোমার মধ্যেই আমার শরীর এখন হারাতে চায় দেব। একজন পুরুষের শরীরেই নারী তার নারীত্বকে আবিষ্কার করে। তাই আজ তোমার শরীরের অস্তিত্বের মধ্যে আমার শরীরের উপস্থিতি খুঁজে পাচ্ছি।’’
বিদিশাকে নিয়ে প্রথমে যেটুকু আমার দ্বিধা আর সংকোচ ছিল, বিদিশাই সেটা কাটিয়ে দিল। দূর্বার, দুরন্ত প্রেমের মধ্যে দিয়ে আমরা দিনগুলো অতিবাহিত করছি। একদিন বিদিশা এল বাড়ীতে। সেদিন মা ঘরে ছিল না। আমি কলেজে যাইনি। শরীরটা একটু খারাপ। বিদিশা কলেজে এসে আমাকে দেখতে পাচ্ছে না বলে পাগলের মত খোঁজাখুঁজি করছে। শুভেন্দুর কাছ থেকে ও জানলো, আমার শরীর খারাপ। আমি কলেজে না গিয়ে বাড়ীতেই এখন বসে রয়েছি।
শুভেন্দু বিদিশাকে বলল, দেবকে পেতে গেলে তোকে এখন ওর বাড়ীতে যেতে হবে। যা, দেখ গিয়ে হয়তো তোরই জন্য পথ চেয়ে বসে আছে।
বিদিশা এল। আমি কোনরকমে বিছানা থেকে উঠে দরজা খুললাম। দেখি বিদিশা দাঁড়িয়ে।
-কি ব্যাপার? তুমি কলেজে যাও নি। শুভেন্দু বলল, তোমার শরীর খারাপ। আশ্চর্য তো তুমি! আমাকে একবারও বলোনি?
বিদিশাকে ঘরের ভেতরে ডেকে নিলাম। ও বলল, মা নেই বুঝি? তুমি একা?
আমার কপালে হাত রাখলো বিদিশা। বলল, জ্বর? সর্দি হয়েছে? ওষুধ খেয়েছ?
আসতে আসতে আমার বুকের কাছে এসে দাঁড়ালো বিদিশা।
আমি বললাম, শরীরটা ভালো নয়। তাই কলেজে যাইনি। একটু জ্বরও জ্বরও এসেছে। মা নেই। আজ সকালেই মাসীর বাড়ী গেছে। তাই আমি একা।
চকিতে মুখ তুললো বিদিশা। তারপর ডায়েরীটা টেবিলের ওপর রেখে, হঠাৎই আছড়ে পড়ল আমার বুকে। সমস্ত শরীর থরথর করে কেঁপে উঠলো। আমি দেখলাম বিদিশা পাগলের মতন আমার কাঁধে গলায় মুখ ঘষছে। পায়ের পাতা থেকে হাতের আঙুল অবধি একটা ‘কি জানি কি’ বিন্দু বিন্দু হয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে। আমি বিদিশার কাঁধে হাত রাখলাম। দুহাতে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে ও। আমি দাঁড়িয়ে থেকে টলতে লাগলাম। তারপর বিদিশার মুখ দুহাতে অঞ্জলির মত করে ওপরে তুললাম। দেখলাম বিদিশার চোখে জল।
এখন এই নির্জন দুপুরে, আমারই ঘরেতে, চারদেয়ালের মধ্যে বিদিশা আমাকে জড়িয়ে রেখেছে। আমার সমস্ত ছেলেবেলা, কৈশোর থেকে টেনে এনে ছুঁড়ে দিল যৌবনের রহস্যময় বিস্ময়ে। আমার চোখে চোখ রাখলো বিদিশা। ভিজে চোখের পাতায় এত কথা লেখা থাকতে পারে আমি কখনও জানতাম না। দুহাতে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। তিল তিল করে বুকের মধ্যে একটা বোধ ছড়িয়ে যাচ্ছে। এরই নাম কি সুখ! একটা ঘোরের মধ্যে চাপা স্বরে আমি বলে উঠলাম, ‘বিদিশা আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি’।
আমার বুকের মধ্যে একটা গাল চেপে বিদিশা বললো, জানি, জানি, জানি!
তুমি কষ্ট করে আমার জন্য এলে?
কেন আসবো না? কেন?
ও যেন একটু একটু করে দুলছিলো। ওর দুহাতের মধ্যে জড়িয়ে থাকা আমার শরীরটায় সেই দুলুনি লাগলো। বিদিশার মসৃণ মুখ, ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসির ঢেউ- আমি মাথা নিচু করলাম, মুখ নামালাম। আমার চোখের সামনে একশ নন্দন কানন। বিদিশা চোখ বুজে ফেললো। মনে হল, ওকি ভয় পাচ্ছে? ও কি চাইছে না? আমি দেখলাম কি একটা আশ্চর্য মায়ায় বিদিশা ক্রমশ সুন্দর থেকে সুন্দর হয়ে উঠছে আরো। বিদিশার ঠোঁটে ঠোঁট রাখছিলাম আমি। বিদিশার গরম নিস্বাস লাগছে মুখে। আর ঠিক সেই সময় এক ঝটকায় মুখ সরিয়ে নিল বিদিশা। তারপর আমার কাছ থেকে সরে গিয়ে হুহু করে কেঁদে ফেললো। আমাকে বলল, আমি খারাপ, খুব খারাপ। তোমাকে আমি ঠকিয়েছি।
খুব নাড়া খেলে যেমন সাড়া থাকে না আচমকা। আমি প্রথমে কিছুই বুঝতে পারলাম না। ওর কাছে গিয়ে ওর কাঁধে হাতটা রাখলাম। বিদিশাকে বললাম, কি যাতা বলছ?
‘তুমি আমাকে খুব বিশ্বাস করো না? বিদিশা মুখ ফেরাচ্ছিল না।
আমি তোমাকে শুধু বিশ্বাস করি না বিদিশা, আমি তোমাকে খুব ভালবাসি।
অথচ দেখো, তোমার কাছে আমি সত্যিটা লুকিয়েছি।
কি লুকিয়েছো বলবে তো?
তোমার আগে আমি একটা ছেলেকে ভালবাসতাম দেব, এ সত্যিটা তোমাকে একবারও বলা হয় নি। তুমি কি আমাকে ক্ষমা করে দেবে ‘দেব’?
সেদিন বিদিশার সরল মুখটা দেখে আমার মনে হয়েছিল, ও তো এই কথাটা আমার কাছে চেপেই যেতে পারতো? সত্যিটা না বললে, কি এমন হত? আমি তো ও না বললে কোনদিন জানতে পারতাম না।
বিদিশাকে বললাম, যাকে ভালবাসতে সে এখন কোথায়?
বিদিশা বললো, সে নেই। আমাকে ছেড়ে সে চলে গেছে।
অবাক হয়ে বললাম, কেন?
বিদিশা বললো, ভালোবাসাটা একতরফা ছিল, তাই। আমি ওকে ভালোবাসতাম। কিন্তু ও আমাকে সেভাবে ভালোবাসেইনি কোনদিন। ছেড়ে যাওয়াতে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। আমার বিশ্বাসটাকে চূর্ণ করেছিল সে। সেভাবে মর্যাদা দেয় নি আমাকে।
দেখলাম ওর চোখে এবার বেশ খানিকটা জল। বিদিশাকে বললাম, আমি কিন্তু তোমাকে ছেড়ে যাব না বিদিশা। তুমি আমাকে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস করতে পারো।
কথাটা বলার পরই বিদিশাকে দেখলাম, ও দুহাতে শিশুর মতন জড়িয়ে ধরল আমাকে। তারপর আমার ঠোঁটে আলতো করে ঠোঁট ছোঁয়ালো। যেন চমকে উঠলাম আমি। এরকম হচ্ছে কেন? শরীরের সব রক্ত আচমকা টলে উঠলো কেন? চন্দনের ফোঁটা পড়িয়ে দেবার মত বিদিশা আমার কপালে, চোখের পাতায়, গালে, চিবুকে-এখন সারা মুখে ছোট ছোট চুমু খেয়ে যাচ্ছে। শুধু নিষিদ্ধ করে রাখছে ঠোঁটটা। আমার সমস্ত শরীর শক্ত হয়ে গেলো। অনুভব করলাম, বুকের বাতাস এত ভারী কেন? শেষ পর্যন্ত তিন বছর না খাওয়া কোন ভিখিরীর মত ঝাঁপিয়ে পড়লাম বিদিশার ঠোঁটে। দুটো নরম উষ্ণ অথচ সিক্ত জবাফুলের মত ঠোঁট পাগলের মত নিতে চাইলাম নিজের মত করে। অস্ফুট আওয়াজ করে উঠলো বিদিশা, উঃ একেবারে রাক্ষস। লাগে না বুঝি।’’ একটু থমকে গেলাম আমি। মুখ তুলে দেখলাম বিদিশা হাসছে। আমাকে বলছে, ‘উম আমাকে নাও, নাও, নাও।’
হঠাৎই শরীরে মনে হল, আমার আর জ্বর নেই। অসুস্থ শরীরটাকে যেন সুস্থ করে দিয়েছে বিদিশা। একটা ঝড়ো বাতাসের মত আমি বিদিশাকে বুকে তুলে নিলাম। আমার অগোছালো বিছানায় বিদিশাকে শুইয়ে দিলাম যত্ন করে। ছেলেমানুষের মতন বিদিশা তখন আমায় দেখছিল। খাটের পাশে হাঁটু গে’ড়ে বসে আমি বিদিশার হাতে মুখ রাখলাম। কি নরম জলের মত গন্ধ বিদিশার হাতে, সমস্ত ছেলেবেলা মনে করিয়ে দেয়। আস্তে আস্তে মুখ নামালাম ওর হাতের ওপরের দিকে, বাজুতে। বিদিশার বুকের কাছে মুখ রেখে ও কৃপণের মত চুপ করে বসে থাকলাম খানিক। আজ অবধি কোন যুবতী মেয়ের বুককে এত কাছ থেকে দেখিনি। বিদিশার বুক কি নরম?
একটা হাত আমার মাথায় রেখেছে বিদিশা। আঙ্গুলগুলো আমার চুলের ভেতরে খেলা করছে। বিদিশার বুকের মধ্যে থেকে মন কেমন করা সুবাস উঠে আসছে আমার নাকে। এই শাড়ী আর অন্তর্বাসের আড়াল খুললেই বিদিশার সমস্ত যৌবনটা আমার সামনে এসে দাঁড়াবে। অথচ ওটা খুলতে আমার কেমন যেন ভয় হচ্ছিলো। একবার আড়াল ঘুচে গেলেই সব যে দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে যাবে। বিদিশা তখন কি ভাববে?
আমি আসতে আসতে মুখ নামালাম নিচে। বিদিশার কোমর পেট কি নরম-আঃ।
বিদিশা চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। এখন ওর ঠোঁটদুটো ঈষৎ খোলা। চিকচিকে কুন্দ ফুলের মত সাদা দাঁত দেখা যাচ্ছে। জিভের ডগা দাঁতের গায়ে সামান্য নড়ছে। বিদিশা আমাকে ডাকলো, ‘এই শোনো।’
মুখ তুললাম আমি। বিদিশার গলার স্বরটা কেমন অনরকম।
‘এখানে আমার পাশে এসে শোও।’ হাত বাড়িয়ে আমাকে ডাকলো বিদিশা। মূহূর্তে পরিবেশটা কেমন অন্যরকম হয়ে যাচ্ছে, টের পাচ্ছিলাম আমি। এই বিদিশা কেমন এক আকুতি নিয়ে আমাকে ডাকছে। আমার ভেতরে একটা শিরশিরে অনুভূতি ছড়িয়ে দিচ্ছে। উঠে গিয়ে আমি বিদিশার পাশে শুয়ে পড়লাম। বিদিশা আরো একটু সরে এলো। তারপর আমার বুকে আঙুলের ডগা দিয়ে কি যেন লিখতে লাগল। চোখ বন্ধ করে আমি লেখাটা বোঝার চেষ্টা করছিলাম।
এই আমাকে বিয়ে করবে? আজ কিংবা কাল। খুব আস্তে আস্তে বিদিশা বললো।
‘বিদিশা!’ আমি অবাক হয়ে গেলাম।
এখনই বিয়ে?
কেন কিসের অসুবিধা? তুমি তো পাশ করে চাকরি পেয়ে যাবে তাই না?
‘কিন্তু আমার তো একটু সময় দরকার। তুমি তো সবই জানো অনার্সটা পাশ করতে এখনও দেড়বছর। আমিও তোমাকে বিয়ে করতে চাই। কিন্তু বিয়ে করে তোমাকে আমি খাওয়াবো কি?
‘আমি জানি না। কিছু জানি না। এসব তুমি ভাববে, আমি আমার সবকিছু তোমাকে দিয়ে দিলাম।’ ছেলেমানুষের মত আমার বুকে মুখ ঘষতে লাগল বিদিশা।
বিদিশাকে বললাম, কিন্তু তোমার বাবা মা? তাদের কাছে তো আমাকে যেতে হবে। কথা বলতে হবে। তবে না বিয়ে।
বিদিশা বললো, বাবাকে তো সব বলাই আছে। তুমি বরং যা করার তাড়াতাড়ি করে ফেলো। আমি আর পারছি না।
কিন্তু এত তাড়াতাড়ি?
প্রেমিক থেকে পতিদেবতা বানাতে চাইছি তোমাকে, তুমি বুঝতে পারছো না?
বিদিশা এরপরে আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ল। আমিও তখন চোখ বুজে চিন্তা করছি বিদিশাকে নিয়ে কি করব? ও এত ছেলেমানুষি করছে। এও কি হয় নাকি? বিয়ে, তা বলে এখনই?
চিন্তা করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানিনা। সন্ধেবেলা ঘুম ভাঙল আমার। দেখি বিদিশাও চোখ খুলে তাকিয়েছে আমার দিকে, তখনো ও আমাকে ছেড়ে যেতে চাইছিলো না। আমার বুকের কাছে মুখটা ঘষছে আবার। বিদিশাকে বললাম, ‘বিদিশা এক কাজ করলে হয় না? আমি যদি শুভেন্দু আর সৌগতকে বলি ব্যাপারটা। তুমি তো জানো। ওদের কাছে আমি সব কথা খুলে বলি। কিছু লুকোই না। ওরা যদি আমাকে কিছু হেল্প করে।’
বিদিশা বলল, ‘বিয়ে করবে তুমি। আর ওরা তোমাকে কি হেল্প করবে?’
আমি বললাম, ‘তুমি জানো না। শুভেন্দুরা খুব বড়লোক। ওদের অনেক পয়সা। আমি যদি শুভেন্দুকে বলি আমাকে একটা কাজ জুটিয়ে দিতে, ও ঠিক পারবে। আমার তো সেরকম চেনাপরিচিত কেউ নেই। তোমাকে বিয়ে করবো, তার আগে রোজগার পাতির একটা ব্যবস্থা তো করতে হবে।
কিছুক্ষণ ভেবে নিয়ে বিদিশা বললো, ‘এই একটা কাজ করবে? তুমি তো ভালো গান গাও। আমাকে গান শেখাবে?’
অবাক হয়ে বললাম, গান শেখাবো? তোমাকে? কিন্তু এর সাথে বিয়ের বা রোজগারের কি সন্মন্ধ আছে? গান তো এমনি শেখাতে পারি তোমাকে।
বিদিশা আমার গালে একটা টোকা দিয়ে বললো, দূর বোকা। গান কি এমনি শেখাবে নাকি? আমি বাবাকে বলবো, মাসে মাসে এরজন্য দুহাজার টাকা করে দিতে। বাবা না করবেন না।
বিদিশার ছেলেমানুষির মত কথা শুনে আমার খুব হাসি পাচ্ছিলো। বললাম, ‘আমি তোমাকে গান শেখাবো। তোমার বাবা আমাকে টাকা দেবেন। আর সেই টাকায় আমি সংসার চালাবো। বা কি সুন্দর। একেবারে বুদ্ধিমতী মেয়ের মত কথা বলেছো তুমি।
বিদিশা কিছুক্ষণ বোকার মত ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে রইলো আমার দিকে। মুখ নিচু করে বললো, হ্যাঁ তাও তো ঠিক। বাবা এভাবে টাকা দেবেই বা কেন? আমি তো তখন তোমার কাছেই থাকবো।
বিছানায় উঠে বসে গালে হাত দিয়ে কি যেন ভাবতে লাগলো বিদিশা। মনে হল, এমন ভাবে আমার জন্য চিন্তা করা শুরু করে দিয়েছে, এবার কিছু একটা ও করেই ছাড়বে।
কিছুক্ষণ ভেবে টেবে এবার নিজেই খুশিতে আমার গালে একটা চুমু খেয়ে বসলো। আমাকে বললো, হয়ে গেছে। আর কোন চিন্তা নেই।
আমি বললাম, কি হয়ে গেছে? কি চিন্তা নেই?
বিদিশা বললো, চাকরি করে কি হবে? তুমি বরং ব্যাবসা করো।
‘ব্যাবসা? সে তো অনেক টাকার ব্যাপার বিদিশা। অত টাকা আমি কোথায় পাবো?’
বিদিশা আবার শুয়ে পড়ে, আমার মুখের কাছে মুখটা এনে বললো, ‘তুমি ব্যাবসা করবে কিনা বলো। টাকার জন্য তোমাকে ভাবতে হবে না।’
যেন লাগলে টাকা দেবে গৌরী সেন। বুঝলাম বাবাকেই গৌরী সেন বানাতে চাইছে বিদিশা। আমার বুকের ওপর আবার আঙুল দিয়ে হিজিবিজি কাটতে কাটতে বললো, কত চাই? দুলাখ, পাঁচলাখ, না আরো বেশী? যা চাইবে, তাই পাবে। আমি আছি না-
‘ও আমার দরদীনি গো। কি বলে কি মেয়েটা? অত টাকা জোগাড় করে দেবে তুমি আমাকে?’
বিদিশা বললো, কেন বিশ্বাস হচ্ছে না?
আমার বুকের ওপর হাতটা রেখে আস্বস্ত করলো বিদিশা। চোখের পাতাদুটো একবার বুজিয়ে বোঝাতে চাইলো, আমি আছি না?
আমি জানি বিদিশারা খুব বড়লোক। দু পাঁচ লাখ টাকা ওর বাবার কাছে কিছুই নয়। তবু বললাম, ‘বিদিশা, তুমি আমার জন্য এতটা করবে?’
‘কেন করতে পারি না?’ বিদিশা যেন এবার একটু অভিমানি হয়ে গেল। আমাকে বললো, ‘আমি কি তোমার কেউ নই?’
উঠে বসে ওর গাল দুটো দুহাতে ধরলাম। বললাম, তুমিই তো আমার সব কিছু বিদিশা। আমার সাথী তুমি, আমার ভালোবাসা তুমি, আমার প্রেরণা তুমি। আমার জীবনের যা কিছু, সবকিছু তুমি।
বিদিশা চোখে চোখ রেখে বললো, থাক আর কবি হতে হবে না। তাহলে তুমি আমাকে না করবে না বলো।
ঘাড় নেড়ে ওকে জানান দিলাম। বললাম, তোমাকে আমি কি কখনও না করতে পারি?
দেখলাম ওর ঠোঁটদুটো আমার ঠোঁটের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে এবার। চুমুটা খেতেই যাচ্ছিলাম। বিদিশা বললো, মা বাড়ীতে নেই, আমাকে পেয়ে খুব দস্যিপানা করতে ইচ্ছে করছে বুঝি?
আমি ওর কথা শুনে মুখটা ঘুরিয়ে নিলাম। দেখলাম বিদিশা আবার নিজে থেকেই আমার গালে গাল ঘষছে। যেন রাগ ভাঙাচ্ছে,সেভাবেই আমার থুতনীটা হাত দিয়ে নাড়তে লাগল। আমাকে বললো, কি রাগ আমার পতিদেবতার? আমি বুঝি চুমু খেতে মানা করেছি তোমাকে?
নিজেই নরম ঠোঁটটা আমার কঠিন ঠোঁটের সাথে ডুবিয়ে দিলো। চুম্বনটা গাঢ হচ্ছে, এই প্রথম ভালবাসার গভীরতা অনুভব করছি। আমাকে চুমু খেতে খেতেই বিদিশা আমাকে জড়িয়ে ধরে হাত দিয়ে আমার পিঠের সবল মাংস পেশীর সাথে খেলা করতে লাগল। সুখটটা যেন ভালবাসার আলিঙ্গনে ক্রমশ আছড়ে পড়ছে। ভাবছি বিদিশার মত মেয়ে আমি পেয়েছি, আমার জীবন ধন্য। আজ যেন বিদিশার মধ্যে এক অনন্য রূপকে আমি দেখলাম। ওকে যেন নতুন করে আমি আবিষ্কার করলাম।
সেদিনের সেই অনুভূতির স্মৃতি আজও আমার মনকে অস্থির করে তোলে। মাঝে মাঝে ভাবি, কেন তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গেলে বিদিশা? আমি তো তোমাকে ঠকাতে চাইনি। সত্যিই চাইনি।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: জীবন যে রকম by an unknown writer (collected and incomplete) - by Buro_Modon - 22-05-2020, 09:55 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)