Thread Rating:
  • 21 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery নিষিদ্ধ সেতু/কামদেব
#71

।।১৬।।

 


            নীলকে খুব অস্থির মনে হয়।কতক্ষনে দীপার সঙ্গে দেখা হবে।শিবেনের কাছে স্বাভাবিক মনে হয়।মাসীমা বলছিলেন ড বোসকে খবর দিতে,ওদের কি জানানো হয়েছে?নীলের পরিকল্পনা কি শিবেন ভাবে জিজ্ঞেস করে,কি রে গাড়ী নিবি না?
--ব্যক্তিগত কাজে যাচ্ছি ট্যাক্সি নিয়ে নেব।
কিছুটা গিয়ে শিবেনকে দাড়াতে বলে নীল ফিরে এল।
--কি হল ভাইজান ফিরে আসলে?
--তুইও চল।একদম বকবক করবি না।
দিলুর খুব উৎসাহ,দ্রুত পোশাক বদলে আম্মুকে বলে বেরিয়ে পড়ল।
কিছুটা গিয়েই ট্যাক্সি পেয়ে গেল।দিলু ড্রাইভারের পাশে ওরা দুজন পিছনে বসল।
--এখন কোথায় যাচ্ছি?
--পুরানো পাড়ায় রাণী পার্ক।ড বোসকে ব্যাপারটা বলা দরকার।
শিবেন বুঝতে পারে আগে জানায় নি।জিজ্ঞেস করে, নীলু তুই ভাল করে ভেবে দেখেছিস তো?
--এতো আমার বহুকালের সিদ্ধান্ত তুই অন্তত জানিস।এখন ভাবাভাবির কি আছে?
--তা জানি।সময় পরিস্থিতি বদলেছে।তার সঙ্গে সিদ্ধান্ত বদল করে মানুষ।
--এক ফর্মুলা সর্বত্র খাটে না।একসময় ছাত্র ছিলি এখন ব্যাঙ্ক অফিসার আর আমি পুলিশে কাজ করি দুজনেরই অবস্থা বদলেছে কিন্তু বন্ধুত্ব কি বদলেছে? তা হলে কি বলবি।
নীলের মুখচোখ দেখে প্রশ্ন করতে ভরসা হয় না।কতক্ষন এভাবে চুপ করে বসে থাকা যায়? হাজারো প্রশ্ন গুড় গুড় করে মনে ট্যাক্সির মধ্যে সেসব তোলা সমীচীন হবে কিনা ভেবে শিবেন বলল,তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
নীল ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়।শিবেন দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে বলল,বন্ধু হিসেবে জিজ্ঞেস করতেই পারি।
নীল হেসে বলল,এত ভণিতা না করে কি বলছিস বল।
--না মানে ঐ মাস্তানটা আপত্তি করবে না?
--ওর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই,দিপু একাই থাকে।
--একা থাকে মানে তাহলে ওর চলে কি করে ওকি চাকরি করে?
নীল একটু অস্বস্তি বোধ করে।শিবেন তার কলেজ জীবনের বন্ধু বিপদে আপদে সব সময় তার সঙ্গে ছিল,এ প্রশ্ন ও করতেই পারে।ফোন করতেই অফিস কামাই করে চলে এসেছে।নীল বলল,দ্যাখ অতীতকে আমি ভুলতে চাই।অতীত দিয়ে মানুষের বিচার করা যায় না। দীপু আমার বাড়িতে আসলে তোর যত কিছু জানার ইচ্ছে ওকেই জিজ্ঞেস করবি।
সামনে থেকে দিলু বলল,এইটা বড়ভাই ঠিক বলেছে অতীতে আমি কি ছিলাম--।
--তোকে বলেছি না বকবক করবি না।নীল বলল।
--আচ্ছা স্যরি।দিলু চুপ করে গেল।শিবেন হেসে ফেলে বলল,একটা অন্য কথা জিজ্ঞেস করছি।যোগাযোগ যদি নাই থাকে তাহলে স্মাগলারটা ওখানে গেছিল কেন?
--এরা নটোরিয়াস লোক অনেক সময় জোর করে ওখানে মালপত্তর ঢুকিয়ে দেয়।একটা মেয়ের পক্ষে বাধা দেওয়া কি সম্ভব?ঐ তো ধরতে সাহায্য করেছে।
--ধর তোর জায়গায় যদি অন্য অফিসার যেতো তাহলে কি সাহায্য করতো?
--হয়তো করত না।পুলিশ সম্পর্কে ধারণা ওর ভাল নয়।বলদেওর সমস্ত রাগ ওর উপর।
ইতিমধ্যে গাড়ি রানী পার্ক অঞ্চলে ঢুকে পড়েছে।নীল বলল, এ্যাই ভাই ডান দিক চেপে ঐ বাড়ীটার কাছে দাড় করান।
ডা.বোসের বাড়ির সামনে ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে পড়ে।ট্যাক্সি দাড়াতে নীল বলল,কত বদলে গেছে।
--হ্যা ফাকা জমি আর নেই একেরপর এক বহুতল উঠছে।শিবেন বলল।  
নীল ট্যাক্সি হতে নেমে বলে,শিবু তুই আমার সঙ্গে আয়,দিলু তুই বস।

কলিং বেল টিপতে দরজা খুলে দেয় মিতালি।নীলু অবাক হয়ে দেখে কতবড় হয়ে গেছে মিতু।দীপুর চেয়ে রঙ একটু চাপা কিন্তু চেহারায় একটা ব্যক্তিত্ব এসেছে।ডাক্তার হলে মানাবে। প্রথমে চিনতে না পারলেও পরে একগাল হেসে মিতু বলে,নীলদা আপনি?
--কত বড় হয়ে গেছো তুমি।
--আহা! লাজুক হেসে বলল, বাঃ বাঃ কতদিন পর  এলেন।
--আণ্টি আছেন?
--হ্যা উপরে আসুন।
--তুমি শেষ পর্যন্ত ডাক্তারী পড়া শুরু করলে?
--ওমা আপনি জানেন?বাপি এত করে বলল কি করব বলুন?
একটা ঘরে বসিয়ে মিতালি চলে গেল। শিবেন ভাবছে নীলের কি মতলব?মিতুকে দেখে মাসীমার কথা মনে পড়ল।মিতুর সঙ্গে নীলকে মানাতো।বেশ স্মার্ট দেখতে হয়েছে মেয়েটা।
--ও তুমি?মিতু না বললে আমি তো চিনতেই পারতুম না।শুস্ক হাসি টেনে ঘরে ঢুকে মিসেস বোস বললেন।
নীল দাঁড়িয়ে উঠে জিজ্ঞেস করে,ভাল আছেন তো আণ্টি?
--উম? হ্যা ভাল আছি।মিসেস বোসের মনে শঙ্কার ছায়া।
নীল ধীরে ধীরে সব কথা বলতে থাকে।এমন সময় ডাক্তার বোস ঢুকে বলেন,না।তুমি ওকে এ বাড়িতে আনবে না।অনেক কালি মেখেচ্ছি--।
--আহা ওর কথাটা শোন ,না শুনেই বলে যাচ্ছ?মিসেস বোস স্বামীকে বাধা দেন।
--কেন বাপি দিদিভাই এলে কি হবে?মিতালি জিজ্ঞেস করে।
--তুমি চুপ করো। মেয়েকে থামিয়ে নীলকে জিজ্ঞেস করে,কি বলছিলে?
--আমি রেজিস্ট্রি করে এখানে রেখে যাবো।তারপর দিনক্ষন দেখে সামাজিক বিয়ে--।
--শুনেছি তুমি পুলিশের উচু পদে চাকরি করো। ওর জীবন-যাপন সম্পর্কে কোন খবর রাখো? ডাক্তার বোস জিজ্ঞেস করেন।
--না,আমার যা জানার জেনেছি।তার বেশি আমার জানার দরকার নেই।নীলের কণ্ঠে দৃঢ়তা।
ডাক্তার বোস হতবাক হয়ে কিছুক্ষন নীলের দিকে তাকিয়ে থাকেন।তার চোখের কোনে বুঝি জল চিকচিক করছে।দ্রুত ঘর ছেড়ে চলে গেলেন।
--দেখো বাবা,তুমি যা ভাল বোঝো করো। মেয়েটা কেন যে এমন ভুল করলো? মিসেস বোস আঁচল দিয়ে চোখ মোছেন।
--আমি আসছি আণ্টি।
--নীলদা দিদিভাইকে কখন আনবেন? মিতালি জিজ্ঞেস করে।
--সন্ধ্যে বেলা, এখন আসি।ওরা বেরিয়ে যায়।
মিতালির মনে জলতরঙ্গ বাজে।কতদিন পরে দিদিভাইয়ের সঙ্গে দেখা হবে,নীলদার সঙ্গে বিয়ে কি মজা হবে।না আলোক সজ্জা না কোন বাদ্যবাদন তবু বোসবাড়ীর চেহারা মুহূর্তে অন্যান্য দিনের চেয়ে অন্য রকম লাগে।

নীচে নামতে দিলু বলল,ভাইজান ঐ ভদ্রলোক তোমারে খোজে।
নীল দেখল পানের দোকানে পান কিনছেন হরষিত বাবু,ম্যারেজ রেজিস্ট্রার।পান মুখে পুরে আসতেই নীল বলল,দিলু তুই পিছনে আয়। হরষিতবাবু গাড়ীতে উঠতেই আবার চলতে শুরু করে।
ড.বোস বেরিয়ে এসে জিজ্ঞেস করেন,চলে গেছে ওরা?
--কেন কিছু বলতে?
--ভাবছিলাম সঙ্গে যাব কিনা?
দেবযানী বোস মেয়েকে বললেন,ওদের ডাকতো।মিতু দ্রুত বারান্দায় গিয়ে দেখল ডাকার আগেই গাড়ী চলে গেল।
মিতু ফিরে এসে বলল,চলে গেছে।
আনন্দে দেবযানী বোসের চোখে জল চলে আসে।জামাই হিসেবে নীলুকে তার খুব পছন্দ।কি সুন্দর দেখতে হয়েছে।মিতু বলেছিল নীল ওর দিদিভাইকে পছন্দ করে,তখন খুব আমল দেন নি।যাইহোক এতদিন পর দীপু আসছে,কিছু একটা ব্যবস্থা করতে হয়।কিছু না হোক একটু ধান-দুব্বো  মিষ্টির ব্যবস্থা করতে হয়।
--এত ব্যস্ত হবার কি আছে আসবে তো সেই সন্ধ্যে বেলা।ড বোস বললেন।
[+] 1 user Likes kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: নিষিদ্ধ সেতু/কামদেব - by kumdev - 20-05-2020, 02:09 PM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)