Thread Rating:
  • 21 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery নিষিদ্ধ সেতু/কামদেব
#39
।।১০।।



      প্রায় তিন বছর।সময়টা কম নয় অথচ মনে হয় এইতো সেদিন।ট্রেনিং সেরে কাজে যোগ দিয়েছে নীলকণ্ঠ সেন।শিবেনের বিয়ে হয়ে গেল কদিন আগে।দীপার কথা ভুলতে বসেছে রানীপার্কের মানুষ।অসামাজিক কাজে লিপ্ত ছিল আনোয়ার হোসেন দিলু,ধরা পড়ে এখন এস.পি.সাহেবের আশ্রিত।সরমার এখন দুই বেটা--নীলু আর দিলু।একদা অপরাধ জগতের সঙ্গে সংশ্রব থাকায় নানা খবর এনে দিয়ে ভাইজানকে সাহায্য করে।পর পর অনেকগুলো কেসে সাফল্য পাবার পর এসপি সাহেব সিনিয়ার অফিসারদেওও ঈর্ষার পাত্র।ডিএম সাহেব একটা নতুন ফাইল ধরিয়ে দিয়েছেন,অস্ত্র চোরা চালান। নীল এখন ব্যস্ত সেই কেস নিয়ে। একটা নাম বারবার আসছে ডাব্বু। কে এই ডাব্বু কি তার পরিচয়?পুরানো ফাইল তন্নতন্ন করে ঘেটে কোন হদিশ পায় নি এ্যাডিশনাল এসপি সেন সাহেব। অথচ কাজকর্মের পদ্ধতি দেখে মনে হয়না এই লাইনে নতুন।নাম শুনে বোঝার উপায় নেই লোকটি বাঙালি না অবাঙ্গালি? অবশ্য নীলের বিশ্বাস অপরাধির কোন ধর্ম নেই জাত নেই তার একটাই পরিচয় অপরাধী।
কাল শিবু এসেছিল,একা।আগের পাড়ার খবর পুরানো দিনের গল্প করতে করতে ছবির মত ভেসে ওঠে অতীত।সব কেমন ছেলে মানুষী মনে হয়।শিবুর কাছেই শুনল,মিতু নাকি ডাক্তারী পড়ছে।নীলু একদিন জিজ্ঞেস করেছিল,বড় হয়ে কি হতে চাও? মিতু বলেছিল কলেজ শিক্ষিকা। সে এখন ডাক্তারী পড়ছে।সবকিছু মানুষের হাতে নয়।কলেজে পড়তে নীলু "তোমার জীবনের লক্ষ্য" রচনায় লিখেছিল, অধ্যাপক হবার কথা। ছাত্র নিয়ে থাকার কথা অপরাধীদের নিয়ে কাটছে তার জীবন।এক সময় শিবু মাকে বলল, মাসীমা সারা জীবন তো একা-একা রান্না ঘর সামলালেন,এবার আপনি একজন সহকারীর ব্যবস্থা করেন।
কথাটা শুনে দিলু খুব মজা পায়।মুখ নীচু করে হাসে।
--তোমরা দেখো,আমি আর কতকাল হেঁসেল নিয়ে থাকবো?সরমা বলেন।
--তুই কি এইজন্য এসেছিস?নীল বলে।
--ঐ হল ওর দোষ,কেবল এড়িয়ে যাবে।সরমা বিরক্তির সঙ্গে কথাটা বলে নিজের কাজে চলে যান।
--তুই কি চাস নীলু,সত্যি করে বলতো?শিবেন জিজ্ঞেস করে বন্ধুকে।
--আমি কিছুই চাই না।এই মূহুর্তে আমার একমাত্র চিন্তা জনৈক ডাব্বুকে ধরা। প্রচুর অস্ত্র লোকটা মারফৎ উগ্রপন্থিদের হাতে পৌছে যাচ্ছে।
--তোর ইনফর্মাররা কোন সুত্র দিতে পারছে না?
পাশে দিলু মন দিয়ে ভাইজানের আলোচনা শুনছে।মনে হচ্ছে কয়েকদিনের মধ্যে ভাইজানকে কিছু সুত্র দিতে পারবে।নিশ্চিত না হয়ে এখনি সেকথা বলতে চায় না।
--লোক লাগিয়েছি।কিন্তু এই লোকটা ডাব্বু না কি নাম যেন--অত্যন্ত ঘোড়েল, কোন স্থায়ী ঠিকানা নেই।আজ এখানে কাল সেখানে করে বেড়ায়।ভাবছি দিলুকে একবার ব্রথেলের দিকটা--।
--না,তুই ওকে কোথাও পাঠাবি না।সরমা চা নিয়ে ঢুকতে ঢুকতে বলেন,পুলিশের কাজ পুলিশ করবে ও কি তোদের ওখানে কাজ করে? তোরা কি ওকে মাইনে দিস?
সবাই চুপচাপ,কেউ কোন কথা বলে না।দিলু মুচকি হাসে।সরমা চলে যেতে নীল বলে, জানিস শিবু মার এই নতুন ছেলেটা আসার পর আমার আগের মত গুরুত্ব নেই।
--ভাইজান তুমি বলার আগেই খানকি মহল্লা আমার ঘোরা হয়ে গেছে,কিছু খবরও পাওয়া গেছে।
--আমাকে বলিস নি তো?নীল অবাক হয়ে তাকায়।
--বলিনি কারন এখনও পাকা খবর পাইনি।দু-একদিনের মধ্যে পেয়ে যাবো।
ভিতর থেকে দিলুর ডাক আসে,দিলু ছুটে চলে যায়। শিবেন গম্ভীর কি যেন ভাবছে।
--তুই কি ভাবছিস বলতো?নীলু শিবেনকে গম্ভীর দেখে জিজ্ঞেস করে।
--ভাবছি,মানুষের সম্পর্কগুলো কত বিচিত্র--তাই না?
--ঠিক বলেছিস।এটা কিন্তু লোকদেখানো বা স্বার্থ-জড়িত নয়।আমি লক্ষ্য করেছি এই সম্পর্কের সুতো গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত।যখন ট্রেনিং-এ ছিলাম এই দিলুই মাকে দেখাশুনা করত।মাকে লোকের বাড়ি কাজ ছাড়িয়েছে যা আমি পারিনি।এক-এক সময় সন্দেহ হয় মাকে কি ও আমার চেয়ে বেশি ভালবাসে?
পরিবেশ গম্ভীর হয়ে যায়।দীর্ঘকাল অপরাধ জগতের সঙ্গে থেকে রাতারাতি এমন বদলে যেতে পারে দিলুকে না দেখলে বিশ্বাস হতনা।
--যাক।অনেক রাত হল,এবার যাওয়া যাক।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ায় শিবেন।বন্ধু চলে যাবার পর নীল জিপ নিয়ে বেরিয়ে যায়।ঘণ্টা খানেক পর ডিউটি হতে বাংলোয় ফিরলেন এসপি সাহেব।ড্রাইভার আর পিছনে দুইজন বডিগার্ড। জিপ হতে নামতে না-নামতে ফোন বেজে ওঠে।কানে দিতে শোনা যায় ,ডাব্বু কামিং।
নীলের কপালে ভাজ পড়ে।এতো অন্ধকারে সুচ খোজা।শুয়োরটা খুব ভোগাচ্ছে। রাতে ভাল ঘুম হয় না।ডাব্বু কামিং,কোথায় কামিং?ডাব্বু কারো নাম হতে পারে ভাবা যায়না।
পরদিন বেলা পড়তে লাঞ্চ করতে বাড়ি ফেরে নীল।খাওয়া-দাওয়ার কোন ঠিক নেই। বাংলোর সামনে জিপ থামতে নীল নেমে পড়ে।দিলু হাপাতে হাপাতে ছুটে এসে জানায়, ভাইজান খবর আছে।
নীল ভাবে, দিলু আবার কি খবর আনলো?মুখে বলে,চল ভিতরে চল।
--তুমি বসো।আমি তোমার চা নিয়ে আসি।দিলু চলে যায়।
দিলু নয় চা নিয়ে ঢুকলো সরমা।
--কি রে পোষাক বদলাবি না?জিজ্ঞেস করেন সরমা।
--একটু ঘাম শুকিয়ে নিই।
সরমা চলে যান।দিলু বলে,আমি যা বলবো শুনলে তোমার আর ঘাম শুকোতে হবে না।
নীল আশপাশ দেখে নিয়ে বলে,হ্যা বল কি বলছিলি?
--ভাবছি কি ভাবে বলবো?দিলু নিজের ওজন বাড়ায়।মার প্রশ্রয়ে এইসব কায়দা শিখেছে। নীল গুরুত্ব দেয় না।
--নামটা মিলছে না।এর নাম ইসমাইল।কিন্তু খবর পাকা।
নীল ভাবে,ছিল ডাব্বু এখন আবার ইসমাইল।ছিল রুমাল হয়ে গেল বিড়াল। পরক্ষনে মনে হয় ডাব্বু নাম ভাড়িয়ে ইসমাইল হতে পারে।
--কি বলছিলি বল।দিলুকে তাগাদা দেয়।
--ভাইয়া চাদনির কাছে একটা হোটেল আছে নাম মুসাফিরখানা।কিছুটা দূরে তার আনেস তিনতলা বিল্ডিং--।নীচে দোকান,দুই আর তিন তলায় বোর্ডাররা থাকে।
--আনেক্স বিল্ডিং।
--ঐ হল।সেইখানে কটা রুম আছে।তার একটায় ইসমাইলের যাতায়াত আছে। রুম নং ৪এ।
চায়ের কাপ রেখে উঠে দাঁড়ায় নীল।মনে মনে হিসেব মিলিয়ে নেয়।ডাব্বু কামিং....রুম নং ৪এ। ঘড়ি দেখে পাঁচটার দিকে কাঁটা।দ্রুত খাওয়া সেরে তৈরী হয়ে নেয়,আর দেরী করা ঠিক নয়।অনেক ভোগাচ্ছে হারামিটা।ডাব্বু না হোক ইসমাইলকে তো পাওয়া যাবে।কিম্বা ইসমাইলকে ধরে ডাব্বুর হদিশ পাওয়া অসম্ভব না।এরা পরস্পর মাসতুতো ভাই।কথায় বলে কান টানলে মাথা আসে। ড্রয়ার হতে রিভলবারটা বের করে কোমরে বেল্টের সঙ্গে গুজে রাখল।
দিলু দাঁড়িয়ে ভাইজানের তৈরী হওয়া দেখতে থাকে। খবরটা সে এনে দিয়েছে সেই জন্য ভাইজান বেরোচ্ছে ভেবে খারাপ লাগে।যদি কিছু হয়ে যায়?কিন্তু পুলিশের চাকরি এই রকম সে আর কি করবে।ভাইজানের সঙ্গে যাবার ইচ্ছে হয় কিন্তু সঙ্গে নেবে না।নীলু স্থানীয় থানার ওসিকে ফোন করে কিছু নির্দেশ দিয়ে জিপে উঠে বসল।
জিপের শব্দ শুনে সরমা বেরিয়ে এসে জিজ্ঞেস করেন,এখন আবার কোথায় গেল?
দিলু আসল কথা চেপে গিয়ে বলল,ভাইজান কোথায় যায় আমাকে বলে যায় নাকি?
সরমা মনে মনে বলেন,দুগগা-দুগগা।

[+] 2 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: নিষিদ্ধ সেতু/কামদেব - by kumdev - 17-05-2020, 06:26 PM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)