Thread Rating:
  • 21 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery নিষিদ্ধ সেতু/কামদেব
#7
।।৩।।






           বাস্তব বোধ আর আবেগের সম্পর্ক মধুর ছিল না কোনদিন।বাস্তব পথ চলে পা টিপে অঙ্ক কষে সতর্ক নজর মাটির দিকে,আবেগ তীব্র গতিপ্রবন, কোন কিছুর তোয়াক্কা করে না।প্রতিপদে তার বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় বাস্তব বোধ।বাস্তবকে বলা যায় আবেগের অভিভাবক।অবাধ্য সন্তান অনেক সময় অভিভাবকের বিরুদ্ধে চলে যায় তেমনি আবেগও অস্বীকার করে কখনও বাস্তবের খবরদারি।নীল এসব একেবারে ভাবে না তা নয়।তবু প্রতিদিন এসময় এই বকুলগাছের নীচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে।ডাক্তারবাবুর মেয়েকে একপলক না দেখলে স্বস্তি হয় না।মগ ডালে ফুটে থাকা ফুল আয়ত্তে নেই জেনেও কি মানুষ তার শোভা উপভোগ করেনা। নিজেকে বুঝিয়েছে,অন্যের বাড়ি কাজ করে তার মা।যত কেন মর্যাদা বোধ থাকুক, সবার কাছে 'কাজের লোক' বই অন্য কিছু না।দিপালির বাবা ডাক্তার সমাজে মান্যগন্য।এতো আকাশ কুসুম কল্পনা! ম্লান হয়ে আসে নীলের মুখ।
একটু আগে দিপালি কলেজে গেল তার দিকে উপেক্ষার দৃষ্টি ছুড়ে দিয়ে।হীরেণ বাবুর সঙ্গে কথা বলছিল তখন নীলু।হিরেনবাবু মুখ চেনা, আলাপ ছিল না।ডাক্তার বাবু ডেকেছেন। চেম্বারে দেখা করবে বলতে হীরেন বাবু বললেন,না, বাড়িতে এসো।ওর স্ত্রী কথা বলবেন।
দিপালি কি কিছু বলেছে বাড়িতে?কথাটা একবার ঝিলিক দিয়ে যায়।কি বলবে? সেতো কোনদিন দিপাকে অসম্মান করেনি।তবে কি বানিয়ে বানিয়ে কিছু বলে থাকবে?
--আচ্ছা উনি কি আমাকে চেনেন? আমাকে কেন ডাকলেন? নীলু প্রশ্ন করে।
--এ অঞ্চলে তোমাকে চেনে না এমন কেউ আছে নাকি? তুমি অঞ্চলের গর্ব।হেসে হীরেন বাবু বলেন।
গর্ব? কে হতে চায় গর্ব? শুধু দিপালি যদি তার প্রতি সদয় হত?মনে মনে ভাবে নীলু,ম্লান হেসে হীরেন বাবুকে বলে,ঠিক আছে বিকেল বেলা যাবো।
হীরেন বাবু চলে যাবার পর শিবেন এল।নীলুর সঙ্গে পড়ে এক কলেজে।শিবেনের বাবা ভাল চাকরি করেন,অবস্থা ভাল।নীলের মা লোকের বাড়ি কাজ করে বলে তাকে অন্যচোখে দেখে না।শিবেন মাকে মাসীমা বলে ডাকে।মাও ওকে খুব স্নেহ করে শিবুকে।
--ওই ভদ্রলোকের নাম হীরেন বাবু।
--আমি চিনি।ডা.বোসের মেয়েকে গান শেখায়।আমার কাছে তোর খোজ করছিল,আমিই তো পাঠিয়েদিলাম।কি বলছিল রে?
--ডাক্তার বোসের বউ ডেকে পাঠিয়েছে।নীল বলে।
--এইতো মওকা গুরু ,চলে যা।
শিবুর কথায় মৃদু হাসি ফোটে নীলের মুখে।কি বলবে শিবুকে,ও অতশত বুঝতে চায় না।
--বেলা হল,চল বাড়ি যাই।
দুজনে বাড়ির দিকে পা বাড়ায়।নীলুর মুখ-চোখ দেখে শিবু আর কোন উচ্চবাচ্য করে না।একসময় ভেবেছিল নীল জয়েণ্ট পরীক্ষায় বসবে।যদি ডাক্তারিতে সুযোগ পায়ও পড়া চালাবার টাকা কোথায়? টাকার জন্য পড়া হবে না জানলে মা কষ্ট পাবে।সূর্য অনেকটা উপরে উঠে এসেছে।বিকেলে ড বোসের বাড়ী যাবে কথা দিয়েছে।
সরমা কাজ সেরে বাড়ি ফিরে এসেছে,ছেলে ফিরল তার ঘণ্টা খানেক পর।বাড়ি ঢুকতে মা জিজ্ঞেস করে,কি রে এত বেলা অবধি ছিলি কোথায়?
--শিবুর সঙ্গে গল্প করছিলাম।তুমি কখন ফিরলে?
--আমি ফিরেছি অনেক্ষন আগে।আজ একটা মজা হয়েছে।উকিলবাবুর বউটা ভাল।আজ মাংস রান্না করেছি।ভদ্রমহিলা বলল,নীলুর মা একটা টিফিন কেরিয়ারে একটু মাংস নিয়ে যাও।
--মাংস এনেছো?নীলু জিগেস করে।
সরমার মুখটা করুন হয়ে গেল।তারপর হেসে বলল,আমি বিধবা মানুষ মাংস নিয়ে কি করবো?তখন বলে,তুমি না খাও,তোমার ছেলের জন্য নিয়ে যাও।
--আমি মাংস খাবো না।নীলু বলে।
সরমা হেসে বলে, আনলে তো খাবি।ভদ্রমহিলার মুখটা কালো হয়ে গেল।খুব খারাপ লাগছিল।
--তা হলে আনলে না কেন?
--মাংস খেলে কি লাভ হত জানি না, কিন্তু যদি আনতাম স্বভাবটা নষ্ট হয়ে যেত।
মার কথা শুনে ভেঙ্গে পড়া মনটা চাঙ্গা হয়ে যায়।দীপালির উপেক্ষার জ্বালা এখন তেমন বাজছে না।মনটা হাল্কা বোধ হয়।বিকেলবেলা ওদের বাড়ি যেতে হবে কথা দিয়েছে।সন্ধ্যে বেলা দুটো টীউশনি আছে।
মানুষ এত নির্বিকার হয় কিভাবে।দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকে মুখে বাক্যটি নেই।হাবাগোবা নয় লেখাপড়ায় চৌখস ভেবে পায় না দীপা।নূপুরটা এত ফাজিল ও আছে ওর শাহ্রুককে নিয়ে একটা বুদ্ধি দে তা নয় খালি উল্টোপাল্টা কথা।খাতাপত্তর নিয়ে কোচিং যাবার জন্য প্রস্তুত হয়।
সূর্য হেলে পড়েছে পশ্চিমে।এবার বেরোতে হবে।
--এখন আবার কোথায় বেরোছিস?
--রানি পার্কের দিকে যাব।একটা কাজ সেরে টিউশনি করে রাতে ফিরবো।
--জয়েণ্টে বসলি না,বি.এসসি.তে ভর্তি হয়ে গেলি।এলোমেলো ভাবে নয় একটা লক্ষ্য ঠিক করে এগোতে হয় বাবা।
মায়ের দু-কাঁধে হাত রেখে স্থির তাকিয়ে থাকে নীল।তারপর ধীরে ধীরে বলে,মাগো, আমার লক্ষ্য এইযে তুমি বাড়ি বাড়ি পঞ্চ ব্যঞ্জন রান্না করছো নিজের ঘরে ডাল-ভাতের সংস্থানের জন্য--এইটা বন্ধ করা।
--তাড়াতাড়ি ফিরিস।দ্রুত কথাটা বলে সরমা অন্যদিকে চলে যায়।চোখের জল লুকোতে?
রানীপার্কে রাস্তার ধারে বিশাল বাড়ি।দরজায় নাম ফলক Dr.Debanjon Bose.নীল কবজি ঘুরিয়ে ঘড়ি দেখে পাঁচটা বাজতে তখনও মিনিট পাঁচেক বাকি।কলিং বেল টিপবে কিনা ইতস্তত করে।দীপার সঙ্গে দেখা হলে তার কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে মনে মনে ভাবে।হঠাৎ দরজা খুলে যেতে দেখল,দাড়িয়ে একজন মহিলা, সম্ভবত পরিচারিকা। পোষাক দেখে তাই মনে হল।
--ভিতরে আসেন।
নীলু মহিলাকে অনুসরন করে দোতলায় উঠে গেল।একটি ঘরে বসতে বলে মহিলাটি চলে গেল।খুব গরম না তবু নীলু অস্বস্তি বোধ করে।রুমাল বের করে মুখ মোছে। আয়নায় মুখটা দেখতে পারলে ভাল হত।
--তুমি এসে গেছো?
নীলু তাকিয়ে দেখে তার সামনে দাঁড়িয়ে ফর্সা মাঝ বয়সী একজন মহিলা।ইনি মিসেস বোস হতে পারেন।তাড়াতাড়ি দাঁড়িয়ে ওঠে নীলু।
--বোসো-বোসো।তোমার নাম তো নীলু?
--জ্বি।কথাবার্তা শুনে মনে হয় না ভদ্রমহিলার মনে তার প্রতি কোন বিদ্বেষ আছে।
--আমি মিসেস বোস,আমাকে আণ্টি বলতে পারো।
এবার চোখ তুলে তাকায় নীলু।গলার নীচে প্রশস্ত বুক নজরে পড়ে।অনেকটা খোলা থাকায় স্তন দ্বয় ঈষৎ উন্মুক্ত।আধুনিকারা এসব দিকে একটু উদার নীলুর ধারনা। সেই মহিলাটি ঢুকে চায়ের ট্রে সামনের টেবিলে রাখে।আন্টি বলল,চা খাও।
কোনো অভিযোগ আছে মনে হয় না, নীলু কাপ নিয়ে চায়ে চুমুক দেয়।
--তুমি আমার মেয়েকে তো চেনো?
নীলুর হাত কেপে গেল।এ প্রশ্ন কেন বুঝতে পারে না নীলু।ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালো।
--লেখাপড়ায় ভাল কিন্তু অঙ্কটা নিয়ে মুস্কিল।
নীলু শুনেছে দীপালি লেখাপড়ায় সত্যিই ভাল।হঠাৎ সেই প্রসঙ্গ কেন?
--ওকে যদি তুমি একটু অঙ্কটা শিখিয়ে দাও--।
--কদিন পরে তো পরীক্ষা, এখন--?
--কদিন পরে মানে?এখনো সাত-আট মাস বাকি।সবে তো ফেব্রুয়ারী চলছে।মিতু এবার সেভেনে উঠেছে।এবার তো বীজগনিত করতে হবে।
নীলু ভুল বুঝতে পারে,দীপালি নয় মিতালির কথা বলছে।
--কি ভাবছো? তুমি কিছু বলছো না?আণ্টি তাগাদা দেয়।
এতক্ষনে ব্যাপারটা পরিষ্কার হল তাকে টুইশনির জন্য ডাকা হয়েছে। চোখ তুলে তাকাতে আণ্টির স্তনজোড়া চোখে পড়ে।স্তনের উপর কাল তিল।চোখ নামিয়ে নিয়ে বলে নীলু,চেষ্টা করবো।
--চেষ্টা করবো মানে?তোমার কথা বুঝলাম না।তোমাকে শেখাতেই হবে।
--শেখা ব্যাপারটা যে শেখে আর যে শেখায় দুই জনের উপর নির্ভর করে।আমি চেষ্টা করব।
হেসে ফেলেন মিসেস বোস।বেশ কথা বলে ছেলেটি মিসেস বোসের খুব পছন্দ হয় নীলুকে।মানদা বলে উচু গলায় ডাকতে সেই মহিলা এসে দাঁড়ায়।
--ফ্রিজ থেকে ফিশ ফ্রাই বের করে ভেজে নিয়ে আয়।
--না না আমি কিছু খাব না।নীলু আপত্তি করে।
--আমি তাহলে খুব দুঃখ পাবো।
পোষাক চেহারা যাই হোক মনটা সেই নারীর মত মমতা মাখানো।দীপালি কেন অমন রুঢ়ভাষী হল ভেবে অবাক লাগে।
--এবার বলো তোমাকে কত দিতে হবে?
--আমি কিন্তু সপ্তাহে দুদিন আসবো।
--মোটে দুদিন ?তাতে কি হবে? মিতু ,এ ঘরে এসো।
--সেটা আমার দায়িত্ব--।
মিতালি প্রবেশ করে,বোঝা গেল আশপাশেই ছিল।দিপালিও কাছে-পিঠে আছে হয়তো।
--দিপু ফেরেনি?মেয়েকে জিজ্ঞেস করে মিসেস বোস।
--দিদিভাই কোচিং হতে ফেরেনি।
আণ্টির মুখ দেখে মনে হল মেয়ের জন্য উৎকণ্ঠা।মিতুকে বললেন, উনি তোমাকে অঙ্ক করাবেন,মাস্টারমশায়ের নাম নীলু।
--আমি তো চিনি।তুমি খুব ভালো ছেলে?
--তুমি কি আপনি বলো।মিসেস বোস বললেন।
নীলু হেসে বলল,না না ঠিক আছে।

[+] 6 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: নিষিদ্ধ সেতু/কামদেব - by kumdev - 14-05-2020, 11:11 AM



Users browsing this thread: 4 Guest(s)