13-05-2020, 10:24 AM
(This post was last modified: 13-05-2020, 03:03 PM by kumdev. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
দিপালি কলেজ হতে ফিরে স্নান করতে ঢুকল বাথরুমে।কলেজে যাওয়া আসার পথের ধারে হ্যাবলার মত দাঁড়িয়ে থাকে দেখলে গা জ্বলে যায়।ভীতুর ডিম একটা। উলঙ্গ হয়ে সাবান ঘষতে ঘষতে হঠাৎ আবিস্কার করল শুয়োপোকার রোমের মত রেশমি লোম যোনীর চার পাশে বস্তি প্রদেশে গজিয়েছে কচি ঘাসের মত।মনের মধ্যে শুরু হল তুমুল আলোড়ন।কোমর বেকিয়ে বস্তিদেশ মেলে ধরে শাওয়ারের নীচে।উপর হতে ছরছর করে পড়ে জলধারা।দু-আঙ্গুলে ধরে মৃদু টান দিতে অনুভব করে শিহরন। কি সুন্দর নরম রেশমের মত!আস্তে আস্তে হাত বোলায় যোণীর চার পাশে।সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে অনির্বচনীয় সুখানুভুতি।একটা মুখ মুহুর্তের জন্য উকি দেয় মনে।তুমি চিরকাল দাড়িয়েই থাকো,হাঁদারাম একটা।
বুকের নীচে শ্বাস আটকে আছে, হাসফাস করে মন।ঘটনাটা একজন কাউকে শেয়ার না-করা পর্যন্ত স্বস্তি হয় না।স্নান করে বেরিয়ে আসে দিপালি। মনে পড়ে কলেজে সব চেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু নুপুরের কথা।ওর সঙ্গে সব কথা শেয়ার করে। অনেককিছু জানে নুপুর।দুজনের কথা হয় খোলাখুলি।সব গোপন কথা বলে দিপালিকে যা সবাইকে বলা যায় না।ওর লাভার যেদিন নুপুরকে কিস করেছিল প্রথম সেকথা বলেছিল দিপালিকে।নুপুরেরও কি তার মত হয়েছে? নুপুরের বুক দিপালির চেয়ে উচু তাহলে নিশ্চয়ই হয়েছে। কতক্ষনে দেখা হবে নুপুরের সঙ্গে? কাল কলেজের আগে সম্ভব নয়।ইচ্ছে করছে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কেমন লাগছে দেখতে কিন্তু মিতালি যে কোন সময় চলে আসতে পারে।কখন নুপুরের সঙ্গে দেখা হবে সব কথা ওকে বলবে সেই চিন্তায় তর সইছেনা।
ডাক্তার দেবাঞ্জন বোসের দুই মেয়ে,দিপালি এবং মিতালি।দিপালি এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে,মিতালি সপ্তম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হল।দুজনেই মেধাবী ভাল ফলাফল করে ক্লাসে ওঠে।ভাল ডাক্তার হলেও সাংসারিক ব্যাপারে একেবারে আনাড়ি।সে দায়িত্ব সামলাতে হয় স্ত্রী দেবারতিকে। স্বাভাবিকভাবে তিনি স্ত্রীর অতিশয় অনুগত।
ভোর বেলা স্নান সেরে কলেজ যাবার জন্য তৈরী হয় দিপালী।নূপুরকে সব বলতে হবে মনে মনে ভাবে।কলেজে বেরোবার আগে মিতালি এসে বলে,দিদিভাই অঙ্কটা একটু দেখিয়ে দিবি?
--আমার এখন সময় নেই।দিপালি বোনকে হতাশ করে বলে।
এবার মিতুর ক্লাসে বীজগণিত শুরু হবে।দেবারতি টিউটরের খোজ করছেন।দিপুকে দিয়ে হবে না তা ছাড়া ওর কদিন পরে পরীক্ষা।হীরুবাবুকে বলেছেন একজন ভাল শিক্ষকের জন্য।ভদ্রলোক দিপুর গানের শিক্ষক,পাড়ায় বেশ পরিচিতি।দেবারতি বিদুষী আধুনিকা মহিলা,সাজগোজেই তার অধিকতর রুচি।পাড়ার লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা কম।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সাজগোজ করছে দিপালি।হঠাৎ মনে হল বকুলতলায় কি আজ দাঁড়াবে ছেলেটা? সেই নাইন হতে দেখে আসছে বকুলতলায় দাঁড়িয়ে থাকে উদাস দৃষ্টি মেলে।কেমন বোকা বোকা,মনে মনে হাসে দিপালী। অন্যসব ছেলেরা কলেজের গেটের কাছে দাড়ায়।সুদিপও নুপুরের সঙ্গে প্রেম হবার আগে গেটের কাছেই দাড়াত।কিন্তু এই ছেলেটা গেট হতে অনেকটা দূরে বকুলতলায় অতল দিঘীর মত চোখ মেলে দাঁড়িয়ে থাকে।ওর নাম নীল অঞ্চলে উচ্চ-মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে।সবাই বলে পাড়ার গর্ব।দিপালির ঠোট কুচকে যায়,গর্ব না হাঁদারাম একটা।কিছু বলার থাকলে বল।
নুপুর বলেছিল,দিপা তোর জন্য দাঁড়িয়ে আছে।বকুলতলা অতিক্রম করতে গিয়ে দম চেপে কান খাড়া করে রেখেছে, প্রতিদিন ভাবতো এইবুঝি ছেলেটা এগিয়ে এসে কিছু বলবে।বকুলতলা পার হতে বুক ঢিপঢিপ করতো। দিনের পর দিন যায় কিন্তু পাথরের নড়াচড়ার কোন লক্ষন নেই।কি ভাবে নীল নিজেকে? দিপালি উপযাচক হয়ে তার সঙ্গে কথা বলবে? যার মা লোকের বাড়িতে কাজ করে,কিসের এত অংহ্কার তার?
এখন ঘড়িতে সাড়ে-ছটা,সাতটায় ক্লাস।টেস্টের রেজাল্টের পর যদিও নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে না,কিছু স্পেশাল ক্লাস হয় মেয়েরাও আসে কম।তবু পৌছাতে হবে সময়মত।নুপুর আসে সুদিপের জন্য।সুদিপ নাকি ওকে বলেছে নুপুরকে না-দেখলে ঘুম আসে না।আদিখ্যেতা,যেন ওরাই প্রেম করছে আর কেউ করে না।দুর হতে নজরে পড়ে দাঁড়িয়ে আছে ছেলেটা।কোন বাড়ির ট্রাঞ্জিষ্টার হতে গান ভেসে আসছে--'গোলাপের অলি আছে ফাগুনের আছে বাহার সকলের সাথী আছে কেউ নেই আমার...।'এই একটা ব্যাপারে নুপুরের চেয়ে নিজেকে ছোট মনে হয়।নীলের প্রতি রাগ হয়,এরকম মেনিমুখো ছেলে তার ভাল লাগে না।থাকো তুমি ঐভাবে দাঁড়িয়ে যতক্ষন ইচ্ছে যত দিন ইচ্ছে।অভিমানে চোখে জল এসে যায়।
নুপুর হাফাতে হাফাতে এসে জিজ্ঞেস করে ,কিরে কি ভাবছিলি?তখন থেকে ডাকছি,শুনতে পাসনি?
--ও তুই? একদম খেয়াল করিনি।
--সেই মালটা বকুল গাছের নীচে দাঁড়িয়েছিল দেখেছিস? নুপুর হাসতে হাসতে বলে।
--কে ওই ক্যাবলাকান্ত? আমার দেখতে বয়ে গেছে।
--আরে টেম্পুরারি কাজ চালা না।নুপুর মজা করে বলে।
দিপালির এমনিতে ছেলেটার প্রতি রাগে গা জ্বলছিল,নুপুরের কথায় মনটা চিড়বিড়িয়ে ওঠে,তোর দরকার হয় তুই চালা।
--আমার তো সুদেব আছে,না হলে দেখতাম।গর্বিত গলায় বলে নুপুর।
নুপুরের প্রতি হিংসা হয়।যখন সুদেবের গল্প করে মনে হয় পৃথিবীতে ওর মত সুখী কেউ নেই। সুদেবকে দেখেছে দিপালি।আহামরি কিছু দেখতে নয়।নুপুর বলে শাহরুকের মত দেখতে।কোন কলেজে বি.এ পড়ে।নীলের সঙ্গেই পাস করেছে।অবশ্য নীল ওর চেয়ে হাজার গুন ভাল লেখাপড়ায়। নীলের রঙ ময়লা মাজা ,মাথায় ঝাকড়া এলোমেলো চুল।ব্যাটাছেলের রং-এ কিছু এসে যায় না।
--কি রে কি ভাবছিস বল তো?নুপুর জিজ্ঞেস করে।
--তোকে একটা কথা বলবো--খুব প্রাইভেট।দিপালি বলে।
নুপুর অবাক হয়ে তাকায়,দিপাকে কেমন অন্যরকম মনে হচ্ছে।কিছু হয়েছে নাকি বকুলতলায়?কি কথা বলতে চায় দিপা?দীপা ইতস্তত করে রোম গজানোর কথা ওকে বলবে কিনা?যদি হাসাহাসি করে?
প্রতিদিন ভোরে মর্নিং ওয়াক করতে বেরোয় নীলকণ্ঠ সেন।সঙ্গে থাকে তার সহপাঠি শিবেন।শিবেন অবস্থাপন্ন পরিবারের ছেলে। নীলের বিধবা মা লোকের বাড়ি কাজ রান্নার করলেও শিবেন মাকে খুব সম্মানের সঙ্গে মাসীমা বলে ডাকে।তারপর পৌনে সাতটা নাগাদ বকুলতলায় দাঁড়িয়ে বিশ্রাম করে।দীপুকে দেখতে ওর খুব ভাল লাগে।দুরে একঝাক মেয়ের মধ্যে যখন থাকে চিনতে অসুবিধে হয় না এত ফর্সা।পাকা পেয়ারার মত গায়ের রং।কেউ দীপুকে টিটকিরি দিলে নীলের বুকে বাজে।কিন্তু স্বপ্নেও দীপুকে নিজের বলে ভাবতে পারে না।নিজেকে বোঝায় ভালো লাগলেই তা পেতে হবে নাকি?
শিবেন যথেষ্ট উৎসাহ দিলেও সেসব ভাবতে সাহস হয়নি।ওর বাবা ডাক্তার সমাজে প্রতিষ্ঠিত, বিশাল প্রাসাদোপম বাড়ি।কিসে আর কিসে?তবু মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারেনা। ঘুরে ফিরে মুখটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে।ও যখন আড়চোখে তাকায় শিরশির করে বুকের মধ্যে।