09-05-2020, 12:02 AM
সুছন্দা বলল---ঘোরা হল বাপ-ছেলেতে?
রঞ্জন বলল---তুমি গেলে না কি মিস করলে।
অর্কও বলল---হ্যা মা গেলে না, বাপি ঠিক বলেছে মিস করে গেলে।আমরা বুনো হাতির পাল দেখেছি।
সুছন্দা হেসে বলল---আলিপুরদুয়ার শুধু তোর বাপির পৈত্রিক ভিটে নয়, আমারও মামার বাড়ী।আমিও দেখেছি বহুবার।
রাতে সুছন্দাকে বিছানায় জড়িয়ে ধরল রঞ্জন।সুছন্দা হেসে বলল---বউ ছেড়ে আলিপুরদুয়ার গেছিলে তো বেশ, এখন এত আদর কিসের?
রঞ্জন সুছন্দার কাঁধে মুখ ঘষতে ঘষতে বলল----আমার সুন্দরী বউ ছেড়ে থাকা সত্যিই উচিত হয়নি ডার্লিং।
সুছন্দার শায়িত দেহের উপর রঞ্জন তার দেহের ভার ছাড়ল।একে অপরকে আদরে ভরিয়ে দিল দুজনে।মাঝে সুছন্দা একবার বলল---আস্তে শব্দ করো, পাশে ছেলে ঘুমোচ্ছে।
******
অফিসের কাজে দুটো দিন ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল রঞ্জন।অথচ কেষ্টপুরের বস্তি রঞ্জনদের বাড়ী থেকে খুব কাছে।দশ মিনিট হাঁটলেই পৌঁছানো যায় তবু তার ছোট্টু নামের ছেলেটাকে ফোন করা হয়নি।
সেদিন অফিস ক্যান্টিনে বসেই ফোন করল রঞ্জন।
---হ্যালো?
---আপনি ছোট্টু বলছেন?
---হাঁ বলছি?
---আপনার সঙ্গে আমার একটু দরকার ছিল।
---আমার সঙ্গে? আপনি কি পুলিশের লোক নাকি?
রঞ্জন হেসে বলল---না, না, নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন আমি পুলিশের লোক না।
---ও তাহলে পুরিয়া দরকার।কেষ্টপুরে লগেনের দোকানে চলে আসুন বিকালে, ভালো মাল আছে, মণিপুরী।
রঞ্জন বুঝল ছোট্টু আসলে গাঁজার সরবরাহকারী।
অফিস থেকে তাড়াতাড়িই বেরোলো রঞ্জন ।বাড়ী যাওয়ার পথে কেষ্টপুর বস্তির দিকে একবার ঘুরে যাবার প্ল্যান করল সে।রঞ্জনদের বাড়ী জেদিকটা সেটা একটা অভিজাত কলোনি।তার পরেই ডান দিকে একটা সরকারি কলেজ সেখানেই বসে বাজার।তার পাশ দিয়ে খাল বরাবর গেছে বস্তি।
একটা উটকো লোককে জিজ্ঞেস করল রঞ্জন---নগেনের দোকান কোন দিকে?
---লগার দোকান? এই খালের ধার দিয়ে চলে যান।সেই যে গুমটি চা দোকান...সেটাই লগার।
রঞ্জন দোকানে এসে দেখল গলায় তুলসী মালা বাঁধা একটা বুড়ো চায়ের গেলাস ধুচ্ছে।রঞ্জন বলল---এটা নগেন মানে লগার দোকান?
বুড়োটা রঞ্জনের দিকে তাকিয়ে বলল---হাঁ।
---ছোট্টু..?
একটা ছাব্বিশ-সাতাশ বছরের ছেলে বেরিয়ে এলো।বলল---ও আপনি?
ভালো করে দেখে আবার বলল---আমি ভাবলি কোনো কলেজের ছাত্র...
রঞ্জন বলল---না, আপনি যা ভেবেছেন তার কোনটাই নয়।
---তাহলে বলেন কি জন্য?
---ভেতরে বসে কথা বলা যাবে?
ছোট্টু আর রঞ্জন ভেতরে বসল।দোকানটা ফাঁকা।
রঞ্জন বলল---সুখেন সর্দার কে চেনেন?
---কে সুখেন?
---সুখেন সর্দার, উত্তরবঙ্গে বাড়ী, ছবি আঁকে...
---ও কানু দার কথা বলছেন নাকি?
---হ্যা কানু দা।
---আরে লগা দা? দেখো এই পরথম দেখলুম কানু দা'র খোঁজ কেউ করছে! ছোট্টুর মুখে হাসি।
--নিশ্চই ছবি আঁকাবেন?
রঞ্জন হেসে বলল--না, আমি তার সঙ্গে দেখা করতে চাই।
চা দোকানী বৃদ্ধ বলল---কানু পাগলা'র সঙ্গে দেখা কইরবেন? যা খ্যাপা লোক কথাই বলে কিনা দেখুন।
রঞ্জনের খারাপ লাগল এত বড় মাপের প্রতিভাবান শিল্পীকে এরা পাগল বলছে!ছোট্টু বলল---না না লগা দা, কানু নেশা করলে একটু গোঁ মেরে থাকে।
লগা চা গেলাস ধোয়া শেষ করে হাত মুছতে মুছতে বলল---কে জানে বাপ, দেখলেই ভয় হয়!
ছোট্টু লগার কথায় গুরুত্ব না দিয়ে বলল--- তাহলে চলে যান, এই রাস্তা ধরে গেলে একটা বস্তির শেষ মাথায় একটা দোতলা ঘর দেখবেন।কানু দা থাকেন।
লগা বলল---না, না, এত ঘুরে গেলে কানুর ঘর চিনতে পারবেননি।বস্তিতে এরকম অনেক ঘর আছে।একটা কাজ করেন শর্টকাট বলে দিচ্ছি দিলে আর আপনাকে বস্তি দিয়ে যেতে হবেনি।
রঞ্জন বেশ চাপে পড়ল দুজন দুরকম কথা বলে।তবু বলল--বলুন।
এই যে বড় রাস্তা দেখছেন।এই রাস্তা দিয়ে গেলে একটা ফিলাই ওভার পড়বে তার পাশ দিয়ে মোরাম রাস্তা পড়বে।একদম শেষমাথায় কানুর ঘর।দেওয়ালে তেনোমুলের ভোটের কথা লিখা আছে।
রঞ্জন বলল---ধন্যবাদ।
রঞ্জন বেরিয়ে যাচ্ছিল।ছোট্টু পিছন থেকে ডাকল---ও সার!
---হ্যা বলুন।
---আপনি যখন যাচ্ছেন কানু দা'কে এই ব্যাগটা দিয়ে দিবেন পিলিজ।বলবেন ছোট্টু দিয়েছে।
একটা চটের ব্যাগ দিল ছোট্টু।রঞ্জন হাঁটা দিল।একটা উত্তেজনা হচ্ছে তার।কানু দা'র সাথে কতদিন পর দেখা হবে।কানু দা' তাকে নির্ঘাৎ চিনতে পারবে না।সেই শৈশবেই তাদের শেষ দেখা।
রঞ্জন লগার কথা মত বড় রাস্তা ধরে যেতেই ফ্লাই ওভার পেল।সত্যিই সেখানে মোরাম রাস্তা।শেষমাথায় একটা বাড়ী পেল।একেবারে রাস্তার গায়ে বাড়িটা।দোতলাটা টালির।বাড়ীর রাস্তার সংলগ্ন একটা টিনের দরজা।বাড়িট বস্তির শেষেই।এদিকে কেউ আসে বলে মনে হয়না।
লোহার চেন দিয়ে বাঁধা দরজাটা।রঞ্জন দেখল লোহার চেনে তালা ঝুলছে।
রঞ্জন নাড়িয়ে শব্দ করল তবু।কোন উত্তর নেই।বুঝল নাঃ কেউ নেই।রঞ্জনের হাতে তখনও ব্যাগটা।মনে মনে ভাবল এই ব্যাগটা নিয়ে এখন কি করবে? কোনো মূল্যবান জিনিস নেই তো?
রঞ্জন থলেটা খুলে দেখল দুটো রঙের কৌটো, চারটে আঁকার ব্রাশ, একটা দেশী মদের বোতল, দুটো বিড়ির প্যাকেট, এক প্যাকেট কন্ডোম!
কন্ডোম কি কাজে লাগে কানু দা'র!রঞ্জন হাতে নেড়ে দেখছিল প্যাকেটটা।এই ব্র্যান্ডের কন্ডোম আগে দেখেনি রঞ্জন 'TheyFit G31'!
অবাক হল রঞ্জন।তবে কি কানু দা'র কোনো নারী ঘটিত সম্পর্ক আছে।রঞ্জন ফোন করল ছোট্টুকে।বলল কানু দা নেই বলে।
ছোট্টু বলল---ব্যাগটা তালে দরজার নীচ দিয়ে গলিয়ে দিন।তাই করল রঞ্জন।
(চলবে)
রঞ্জন বলল---তুমি গেলে না কি মিস করলে।
অর্কও বলল---হ্যা মা গেলে না, বাপি ঠিক বলেছে মিস করে গেলে।আমরা বুনো হাতির পাল দেখেছি।
সুছন্দা হেসে বলল---আলিপুরদুয়ার শুধু তোর বাপির পৈত্রিক ভিটে নয়, আমারও মামার বাড়ী।আমিও দেখেছি বহুবার।
রাতে সুছন্দাকে বিছানায় জড়িয়ে ধরল রঞ্জন।সুছন্দা হেসে বলল---বউ ছেড়ে আলিপুরদুয়ার গেছিলে তো বেশ, এখন এত আদর কিসের?
রঞ্জন সুছন্দার কাঁধে মুখ ঘষতে ঘষতে বলল----আমার সুন্দরী বউ ছেড়ে থাকা সত্যিই উচিত হয়নি ডার্লিং।
সুছন্দার শায়িত দেহের উপর রঞ্জন তার দেহের ভার ছাড়ল।একে অপরকে আদরে ভরিয়ে দিল দুজনে।মাঝে সুছন্দা একবার বলল---আস্তে শব্দ করো, পাশে ছেলে ঘুমোচ্ছে।
******
অফিসের কাজে দুটো দিন ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল রঞ্জন।অথচ কেষ্টপুরের বস্তি রঞ্জনদের বাড়ী থেকে খুব কাছে।দশ মিনিট হাঁটলেই পৌঁছানো যায় তবু তার ছোট্টু নামের ছেলেটাকে ফোন করা হয়নি।
সেদিন অফিস ক্যান্টিনে বসেই ফোন করল রঞ্জন।
---হ্যালো?
---আপনি ছোট্টু বলছেন?
---হাঁ বলছি?
---আপনার সঙ্গে আমার একটু দরকার ছিল।
---আমার সঙ্গে? আপনি কি পুলিশের লোক নাকি?
রঞ্জন হেসে বলল---না, না, নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন আমি পুলিশের লোক না।
---ও তাহলে পুরিয়া দরকার।কেষ্টপুরে লগেনের দোকানে চলে আসুন বিকালে, ভালো মাল আছে, মণিপুরী।
রঞ্জন বুঝল ছোট্টু আসলে গাঁজার সরবরাহকারী।
অফিস থেকে তাড়াতাড়িই বেরোলো রঞ্জন ।বাড়ী যাওয়ার পথে কেষ্টপুর বস্তির দিকে একবার ঘুরে যাবার প্ল্যান করল সে।রঞ্জনদের বাড়ী জেদিকটা সেটা একটা অভিজাত কলোনি।তার পরেই ডান দিকে একটা সরকারি কলেজ সেখানেই বসে বাজার।তার পাশ দিয়ে খাল বরাবর গেছে বস্তি।
একটা উটকো লোককে জিজ্ঞেস করল রঞ্জন---নগেনের দোকান কোন দিকে?
---লগার দোকান? এই খালের ধার দিয়ে চলে যান।সেই যে গুমটি চা দোকান...সেটাই লগার।
রঞ্জন দোকানে এসে দেখল গলায় তুলসী মালা বাঁধা একটা বুড়ো চায়ের গেলাস ধুচ্ছে।রঞ্জন বলল---এটা নগেন মানে লগার দোকান?
বুড়োটা রঞ্জনের দিকে তাকিয়ে বলল---হাঁ।
---ছোট্টু..?
একটা ছাব্বিশ-সাতাশ বছরের ছেলে বেরিয়ে এলো।বলল---ও আপনি?
ভালো করে দেখে আবার বলল---আমি ভাবলি কোনো কলেজের ছাত্র...
রঞ্জন বলল---না, আপনি যা ভেবেছেন তার কোনটাই নয়।
---তাহলে বলেন কি জন্য?
---ভেতরে বসে কথা বলা যাবে?
ছোট্টু আর রঞ্জন ভেতরে বসল।দোকানটা ফাঁকা।
রঞ্জন বলল---সুখেন সর্দার কে চেনেন?
---কে সুখেন?
---সুখেন সর্দার, উত্তরবঙ্গে বাড়ী, ছবি আঁকে...
---ও কানু দার কথা বলছেন নাকি?
---হ্যা কানু দা।
---আরে লগা দা? দেখো এই পরথম দেখলুম কানু দা'র খোঁজ কেউ করছে! ছোট্টুর মুখে হাসি।
--নিশ্চই ছবি আঁকাবেন?
রঞ্জন হেসে বলল--না, আমি তার সঙ্গে দেখা করতে চাই।
চা দোকানী বৃদ্ধ বলল---কানু পাগলা'র সঙ্গে দেখা কইরবেন? যা খ্যাপা লোক কথাই বলে কিনা দেখুন।
রঞ্জনের খারাপ লাগল এত বড় মাপের প্রতিভাবান শিল্পীকে এরা পাগল বলছে!ছোট্টু বলল---না না লগা দা, কানু নেশা করলে একটু গোঁ মেরে থাকে।
লগা চা গেলাস ধোয়া শেষ করে হাত মুছতে মুছতে বলল---কে জানে বাপ, দেখলেই ভয় হয়!
ছোট্টু লগার কথায় গুরুত্ব না দিয়ে বলল--- তাহলে চলে যান, এই রাস্তা ধরে গেলে একটা বস্তির শেষ মাথায় একটা দোতলা ঘর দেখবেন।কানু দা থাকেন।
লগা বলল---না, না, এত ঘুরে গেলে কানুর ঘর চিনতে পারবেননি।বস্তিতে এরকম অনেক ঘর আছে।একটা কাজ করেন শর্টকাট বলে দিচ্ছি দিলে আর আপনাকে বস্তি দিয়ে যেতে হবেনি।
রঞ্জন বেশ চাপে পড়ল দুজন দুরকম কথা বলে।তবু বলল--বলুন।
এই যে বড় রাস্তা দেখছেন।এই রাস্তা দিয়ে গেলে একটা ফিলাই ওভার পড়বে তার পাশ দিয়ে মোরাম রাস্তা পড়বে।একদম শেষমাথায় কানুর ঘর।দেওয়ালে তেনোমুলের ভোটের কথা লিখা আছে।
রঞ্জন বলল---ধন্যবাদ।
রঞ্জন বেরিয়ে যাচ্ছিল।ছোট্টু পিছন থেকে ডাকল---ও সার!
---হ্যা বলুন।
---আপনি যখন যাচ্ছেন কানু দা'কে এই ব্যাগটা দিয়ে দিবেন পিলিজ।বলবেন ছোট্টু দিয়েছে।
একটা চটের ব্যাগ দিল ছোট্টু।রঞ্জন হাঁটা দিল।একটা উত্তেজনা হচ্ছে তার।কানু দা'র সাথে কতদিন পর দেখা হবে।কানু দা' তাকে নির্ঘাৎ চিনতে পারবে না।সেই শৈশবেই তাদের শেষ দেখা।
রঞ্জন লগার কথা মত বড় রাস্তা ধরে যেতেই ফ্লাই ওভার পেল।সত্যিই সেখানে মোরাম রাস্তা।শেষমাথায় একটা বাড়ী পেল।একেবারে রাস্তার গায়ে বাড়িটা।দোতলাটা টালির।বাড়ীর রাস্তার সংলগ্ন একটা টিনের দরজা।বাড়িট বস্তির শেষেই।এদিকে কেউ আসে বলে মনে হয়না।
লোহার চেন দিয়ে বাঁধা দরজাটা।রঞ্জন দেখল লোহার চেনে তালা ঝুলছে।
রঞ্জন নাড়িয়ে শব্দ করল তবু।কোন উত্তর নেই।বুঝল নাঃ কেউ নেই।রঞ্জনের হাতে তখনও ব্যাগটা।মনে মনে ভাবল এই ব্যাগটা নিয়ে এখন কি করবে? কোনো মূল্যবান জিনিস নেই তো?
রঞ্জন থলেটা খুলে দেখল দুটো রঙের কৌটো, চারটে আঁকার ব্রাশ, একটা দেশী মদের বোতল, দুটো বিড়ির প্যাকেট, এক প্যাকেট কন্ডোম!
কন্ডোম কি কাজে লাগে কানু দা'র!রঞ্জন হাতে নেড়ে দেখছিল প্যাকেটটা।এই ব্র্যান্ডের কন্ডোম আগে দেখেনি রঞ্জন 'TheyFit G31'!
অবাক হল রঞ্জন।তবে কি কানু দা'র কোনো নারী ঘটিত সম্পর্ক আছে।রঞ্জন ফোন করল ছোট্টুকে।বলল কানু দা নেই বলে।
ছোট্টু বলল---ব্যাগটা তালে দরজার নীচ দিয়ে গলিয়ে দিন।তাই করল রঞ্জন।
(চলবে)