02-05-2020, 07:38 PM
(This post was last modified: 30-04-2021, 10:39 PM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
[৩৪]
আজ কলেজে শেষদিন।কালথেকে শুরু হবে গ্রীষ্মাবকাশ।ছুটির পর শিক্ষিকাদের কক্ষে আলাপ চলছে।কাল থেকে কারো সঙ্গে কারো দেখা হবে না তাই যাবার আগে একটু হাল্কা আলোচনা। বড়দি বেশ মজার কথা বললেন,আচ্ছা ঐ ডি এম কি ম্যারেড?
–কেন বড়দি হাতে কোন মেয়ে আছে নাকি?ছন্দাদি বললেন।
–ম্যারেড।শুনলেন না ওর বাড়িতে একটা ছেলে আছে।
–হ্যা হ্যা তাইতো খেয়াল ছিল না।দেখে কিন্তু ম্যারেড মনে হয় না।
সবাই হো-হো করে হেসে উঠল।কৃষ্ণাদি বললেন,দেখে বুঝতে পারেন?
–না ঠাট্টা না।মেয়েদের কপালে সিন্দুর দেখলে বোঝা যায় ছেলেদের ঐসব বালাই নেই কিন্তু বিয়ের পর আচার ব্যবহারে ছেলেদের মধ্যে একটা পরিবর্তনের ছাপ পড়ে।
এবার কেউ হাসলো না।সবার মনে হয় বড়দির কথা উড়িয়ে দেবার মত না।
--যা লাল্টু চেহারা এতবড় পোস্টে চাকরি করেন এতদিনেও কি বিয়ে হবে না?কৃষ্ণাদি চিন্তিত গলায় বললেন।
--বাদ দাও উনি টাকার প্রতিশ্রূতি দিয়েছেন এটাই আমাদের সাফল্য।বড়দি বললেন।
--বড়দি না আচালে বিশ্বাস নেই,ওরকম অনেকেই বলে। আগে টাকা আসুক।
--আমার ভদ্রলোককে সেরকম মনে হলনা।
ছন্দাদি জিজ্ঞেস করলেন,আপনার কেন এমন মনে হল?
--আমি পাশে বসেছিলাম,নৃতনাট্য দেখতে দেখতে উনি বার বার রুমাল দিয়ে চোখ মুছছিলেন।এমন হৃদয়বান মানুষ মিথ্যে বলতে পারেনা।
সুচিস্মিতা চুপচাপ কিছু বলছে না।ডিএমকে সবার নজরে পড়েছে।মেয়েদের এই হ্যাংলামী ভাল লাগে না। পরিবেশ কেমন গম্ভীর হয়ে যায়।ছন্দাদি বলেন,ছুটিতে কার কি প্লান আছে?কেউ কি বেড়াতে যাচ্ছো?
–একদিন সুচিস্মিতার বাড়ি গেলে হয় না?আমার শান্তি নিকেতন দেখা হয় নি। অনসুয়া বলে।
–আহা কথার কি ছিরি! তোমার না হয় বিয়ে হয়নি,আমরা ওকে ছেড়ে তোমাদের সঙ্গে ঘুরতে বয়ে গেছে।
এবার সবাই হো-হো হাসিতে ভেঙ্গে পড়ে।অনসুয়া অপ্রস্তুত বোধ করে এদিকটা সে ভেবে দেখেনি। বাড়িতে তার বিয়ের কথা চলছে।একে একে সবাই চলে যায়।সুপর্ণা মিত্র নিজের ঘরে বসে কিছু কাজ সারছেন।অনসুয়া সুচিস্মিতার রুমমেট,দুজনে হস্টেলে যাবার আগে বড়দির সঙ্গে দেখা করতে এল।সুচিস্মিতা বলল,আমরা আসি বড়দি।
–ওঃ মিস বোস?একটু বোসো,আমিও যাবো।
দুজনে মুখ চাওয়া চাওয়ি করে,বড়দি বলেন,তুমিও বোসো।
বড়দি হাতের কাজ শেষ করে বললেন,আবার একমাস কি বলো?
আঙ্গুরদি চাবি নিয়ে অপেক্ষা করছে।বড়দি বের হতে ঘরে তালা দিল।বড়দি ভুল করে ছাতা ফেলে এসেছিলেন,আঙ্গুরদি ছাতাটা দিয়ে গেল। চলতে চলতে এক সময় সুপর্ণা মিত্র বলেন,মিস বোস তোমাকে একটা কথা বলি।
সুচিস্মিতা চিন্তিত বড়দি বিয়ে নিয়ে কিছু বলবেন নাতো?
–তুমি কেন বিয়ে করোনি সে ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই।একটা কথা খুব আন্তরিক ভাবে বলছি,তুমি লেখো।তোমার লেখার হাত খুব ভাল।একসময় আমার লেখালিখির খুব ঝোক ছিল–।
–ছাড়লেন কেন?
সুপর্ণা মিত্র দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন,পারিবারিক জীবনে আমি সুখী,কোন ক্ষোভ নেই সে ব্যাপারে।কিন্তু ওর এইসব লেখালিখি ইত্যাদি ব্যাপারে কোন ইন্টারেষ্ট নেই।একজন কেউ যদি পাশে থেকে উৎসাহ না দেয় বেশিদিন দম রাখা যায় না।ডিএম সাহেবকে দেখে কথা বলে ওকে আমার একজন ইন্টেকচুয়াল বলে মনে হয়েছে।আমরা পাশাপাশি বসে অনেক আলাপ করেছি। নিজের মধ্যে অন্য রকম একটা অনুভুতি…।
অনসুয়া হাতে চাপ দিল সুচিস্মিতার।সুচিস্মিতা আমল দেয় না বড়দির কথা বোঝার চেষ্টা করে।
–বিয়ের পর সব কিছুই মনের মত হয় না,আমরা মানিয়ে নিই। সবারই এরুকম মুহুর্ত আসতে পারে কখনো কিন্তু সামাজিক ইনহিবিশন তাকে পরিণত হতে দেয় না।সুপর্ণা মিত্রকে নতুন করে চিনছে সুচিস্মিতা।দৈনন্দিন কাজের মধ্যে মানুষটাকে এভাবে দেখার সুযোগ ঘটেনি।পরস্পর মিশলেও আমরা কতটুকু চিনতে পারি পরস্পরকে?
–এইদেখো কথা বলতে বলতে রিক্সাস্ট্যাণ্ড ছেড়ে চলে এসেছি।সুপর্ণা মিত্র বললেন। মিস বোস কি আজই চলে যাবেন?
–হ্যা বড়দি আজ রাতের গাড়িতে উঠবো তাহলে ভোরবেলা পৌছে যাবো।সুচিস্মিতা বলে।
–যা বললাম মনে রাখবে।
সুচিস্মিতা হেসে সম্মতিসুচক ঘাড় নাড়লেন।বড়দি চলে যেতে অনসুয়া বলল,প্রেমের বীজ এখনো শুকিয়ে যায় নি।
–বীজ মাটির তলায় চাপা থাকে জল বাতাস পেলেই অঙ্কুরিত হবার চেষ্টা করে।
সুচিস্মিতার কথা শুনে চোখ বড় করে অনসুয়া তাকে দেখে।জিজ্ঞেস করে,তোমার মধ্যে কি বীজ চাপা আছে?
সুচিস্মিতা হেসে বলে,মাটির নীচে আমি কি দেখেছি,হয়তো আছে।
ট্রেন রাত নটায় এখন একটূ গড়িয়ে নেওয়া যেতে পারে।গোছগাছ আগেই সারা। বাথরুমে গেল সুচিস্মিতা,চোখে মুখে জল দেয়।হু-হু করে কেদে ফেলে।কান্নার কি হল বুঝতে পারে না কিন্তু ভাল লাগছে কাদতে।কিছুক্ষন কাদার পর বাথরুম থেকে বেরিয়ে এল।অনসুয়া চেঞ্জ করে বিছানায় শুয়ে কি যেন ভাবছে।
–আচ্ছা সুচিস্মিতা একটা কথা বলবে?
–কি কথা?
–এমন কিছু না।তুমি কারো সঙ্গে প্রেম করেছো?এত বয়স হল বিয়ে করোনি তার পিছনে কোনো কাহিনী লুকিয়ে নেইতো?
সুচিস্মিতা হাসে মনে মনে,ভাবে কি বলবে?পাশের খাটে শুয়ে বলে,বিশ্বাস করো এর উত্তর আমার জানা নেই।
–বুঝলাম না।
–প্রেম করিনি বলতে পারবো না আবার প্রেম করেছি তাও বলা ঠিক হবেনা। আর বিয়ে করিনি কারণ বিয়ে করার মত কাউকে পাইনি।
–বুঝেছি তার মানে একতরফা?
–এক না দুই তরফা আমার জানা নেই।কি ব্যাপার এখন এসব নিয়ে পড়লে?
অনসুয়া কিছুক্ষন চুপ করে জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে।তারপর একসময় নিজে নিজেই বলে,তুমি বলছিলে না মাটির তলায় বীজ চাপা থাকে।ঠিকই বলেছো,বীজ চাপা ছিল কিন্তু পচে গেছে।আর অঙ্কুরিত হবে না।
ঘরের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠল।হাল্কাভাবে বলা কথা অজ্ঞাতসারে অনসুয়ার কোথাও গিয়ে স্পর্শ করেছে হয়তো। কৌতুহল দমন করে সুচিস্মিতা ঘুমোবার চেষ্টা করে। অনসুয়ার মন অতীতের পথ ধরে হেটে চলেছে,কথা বলতে ইচ্ছে করে না। কলেজ যাবার পথে দেখতো চাতকের মত দাঁড়িয়ে একটি ছেলে।পরে নাম জেনেছে অতীন।দেখতে দেখতে কেমন মায়া পড়ে যায়। একদিন ওকে অতিক্রম করে আবার পিছন ফিরে তাকায়।তাতেই অতীনের সাহস বাড়ে,এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে, আপনার নামটা জানতে পারি?
–পাঁচি।
–আমার নাম কি জানেন?
–আমার জানার দরকার নেই।
–আপনার নামের সঙ্গে আমার নামের খুব মিল।
–আপনার কি নাম?
–পচা।
হাসি সামলাতে পারে না অনসুয়া।অতীনও হেসে বলে,আপনার নামের যা আদ্যক্ষর আমারও তাই।অনসুয়া শুরু অ-দিয়ে অতীনও।
–তাহলে আমার নাম জিজ্ঞেস করছিলেন কেন? কপট রাগত গলায় জিজ্ঞেস করে অনসুয়া।
–আসলে আলাপ করতে ইচ্ছে হল তাই।
–ঠিক আছে কলেজ এসে গেছে আপনি যান।
–ওভাবে বললে যাবো না।
–কি ভাবে বলতে হবে?
–বলো এখন তুমি যাও।
এইভাবে শুরু অতীনের সঙ্গে সম্পর্ক।দ্বিধা দ্বন্দের দোল দোলায় কেমন জড়িয়ে পড়ে।একেই বলে বয়সের ধর্ম।নির্জনতায় পেলে বুক খামচে ধরতো।উন্মুক্ত কোমরে চাপ দিত। আপত্তি করতো আবার ভালও লাগতো।একদিন কলেজ তাড়াতাড়ি ছুটি হতে দুজনে একটা পার্কে একটু নির্জনতায় গিয়ে বসল।এদিক-ওদিক তাকিয়ে আচমকা একটা হাত জামার মধ্যে ঢূকিয়ে মাই টিপতে লাগল অতীন।
অনসুয়া আপত্তি করে,কি হচ্ছে কি,কেউ দেখবে।
–কে দেখবে?
–আর না আর না..তনু…।
অতীন হাত বের করে কোমরে শাড়ির বাধনের মধ্যে হাত ঢোকাতে গেল।অনসুয়া বলে,ন-না তনু কি হচ্ছে কি-বলে হাত চেপে ধরে।
–প্লিজ অনু প্লিজ একবার শুধু হাত দেবো।জোর করতে থাকে অতীন।
–ন-না বলছি–।বলতে না বলতে গুদের বাল মুঠীতে চেপে ধরে অতীন।
–ঊঃ লাগছেএএএ..।হাত ধরে হ্যাচকা টান দিল অনসুয়া।
একগুচ্ছ বাল সমেত হাত বেরিয়ে এল।চোখে জল এসে গেল অনসুয়ার।উঠে দাঁড়িয়ে বলে,জানোয়ার ইতর…।
অতীন দাত বের করে বলে,এ্যা তুমি খুব রেগে গেছো,আচ্ছা বাবা স্যরি।কা্ন মলছি–হলতো?
–ইতর কোথাকার।তোমার কান ছিড়ে দেবো..স্কাউণ্ড্রেল।দপদপিয়ে পার্ক থেকে বেরিয়ে গেল অনসুয়া।
লোক আসা শুরু হয়েছে পার্কে অতীন আর বাধা দেবার চেষ্টা করে না। অনসুয়ার কি রকম দাদা পুলিশ অফিসার কয়েকদিন তাকে কলেজ পৌছে দিয়েছে এবং অতীনের খোজ নিয়েছে।অতীন আর ধারে কাছে ঘেষেনি,সময় নষ্ট না করে অন্য শিকারে মন দিয়েছে।এই লম্পটটাকে প্রেমিক ভেবেছিল মনে করে গ্লানি বোধ করে অনসুয়া।
সন্ধ্যে বেলা ঘুম ভেঙ্গে সুচিস্মিতা জিজ্ঞেস করে,তুমি ঘুমাও নি?
–না ঘুম আসছে না।তুমি শুয়ে থাকো ,আমি চা নিয়ে আসছি।চা আনতে ক্যাণ্টিনে চলে গেল অনসুয়া।
আজ কলেজে শেষদিন।কালথেকে শুরু হবে গ্রীষ্মাবকাশ।ছুটির পর শিক্ষিকাদের কক্ষে আলাপ চলছে।কাল থেকে কারো সঙ্গে কারো দেখা হবে না তাই যাবার আগে একটু হাল্কা আলোচনা। বড়দি বেশ মজার কথা বললেন,আচ্ছা ঐ ডি এম কি ম্যারেড?
–কেন বড়দি হাতে কোন মেয়ে আছে নাকি?ছন্দাদি বললেন।
–ম্যারেড।শুনলেন না ওর বাড়িতে একটা ছেলে আছে।
–হ্যা হ্যা তাইতো খেয়াল ছিল না।দেখে কিন্তু ম্যারেড মনে হয় না।
সবাই হো-হো করে হেসে উঠল।কৃষ্ণাদি বললেন,দেখে বুঝতে পারেন?
–না ঠাট্টা না।মেয়েদের কপালে সিন্দুর দেখলে বোঝা যায় ছেলেদের ঐসব বালাই নেই কিন্তু বিয়ের পর আচার ব্যবহারে ছেলেদের মধ্যে একটা পরিবর্তনের ছাপ পড়ে।
এবার কেউ হাসলো না।সবার মনে হয় বড়দির কথা উড়িয়ে দেবার মত না।
--যা লাল্টু চেহারা এতবড় পোস্টে চাকরি করেন এতদিনেও কি বিয়ে হবে না?কৃষ্ণাদি চিন্তিত গলায় বললেন।
--বাদ দাও উনি টাকার প্রতিশ্রূতি দিয়েছেন এটাই আমাদের সাফল্য।বড়দি বললেন।
--বড়দি না আচালে বিশ্বাস নেই,ওরকম অনেকেই বলে। আগে টাকা আসুক।
--আমার ভদ্রলোককে সেরকম মনে হলনা।
ছন্দাদি জিজ্ঞেস করলেন,আপনার কেন এমন মনে হল?
--আমি পাশে বসেছিলাম,নৃতনাট্য দেখতে দেখতে উনি বার বার রুমাল দিয়ে চোখ মুছছিলেন।এমন হৃদয়বান মানুষ মিথ্যে বলতে পারেনা।
সুচিস্মিতা চুপচাপ কিছু বলছে না।ডিএমকে সবার নজরে পড়েছে।মেয়েদের এই হ্যাংলামী ভাল লাগে না। পরিবেশ কেমন গম্ভীর হয়ে যায়।ছন্দাদি বলেন,ছুটিতে কার কি প্লান আছে?কেউ কি বেড়াতে যাচ্ছো?
–একদিন সুচিস্মিতার বাড়ি গেলে হয় না?আমার শান্তি নিকেতন দেখা হয় নি। অনসুয়া বলে।
–আহা কথার কি ছিরি! তোমার না হয় বিয়ে হয়নি,আমরা ওকে ছেড়ে তোমাদের সঙ্গে ঘুরতে বয়ে গেছে।
এবার সবাই হো-হো হাসিতে ভেঙ্গে পড়ে।অনসুয়া অপ্রস্তুত বোধ করে এদিকটা সে ভেবে দেখেনি। বাড়িতে তার বিয়ের কথা চলছে।একে একে সবাই চলে যায়।সুপর্ণা মিত্র নিজের ঘরে বসে কিছু কাজ সারছেন।অনসুয়া সুচিস্মিতার রুমমেট,দুজনে হস্টেলে যাবার আগে বড়দির সঙ্গে দেখা করতে এল।সুচিস্মিতা বলল,আমরা আসি বড়দি।
–ওঃ মিস বোস?একটু বোসো,আমিও যাবো।
দুজনে মুখ চাওয়া চাওয়ি করে,বড়দি বলেন,তুমিও বোসো।
বড়দি হাতের কাজ শেষ করে বললেন,আবার একমাস কি বলো?
আঙ্গুরদি চাবি নিয়ে অপেক্ষা করছে।বড়দি বের হতে ঘরে তালা দিল।বড়দি ভুল করে ছাতা ফেলে এসেছিলেন,আঙ্গুরদি ছাতাটা দিয়ে গেল। চলতে চলতে এক সময় সুপর্ণা মিত্র বলেন,মিস বোস তোমাকে একটা কথা বলি।
সুচিস্মিতা চিন্তিত বড়দি বিয়ে নিয়ে কিছু বলবেন নাতো?
–তুমি কেন বিয়ে করোনি সে ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই।একটা কথা খুব আন্তরিক ভাবে বলছি,তুমি লেখো।তোমার লেখার হাত খুব ভাল।একসময় আমার লেখালিখির খুব ঝোক ছিল–।
–ছাড়লেন কেন?
সুপর্ণা মিত্র দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন,পারিবারিক জীবনে আমি সুখী,কোন ক্ষোভ নেই সে ব্যাপারে।কিন্তু ওর এইসব লেখালিখি ইত্যাদি ব্যাপারে কোন ইন্টারেষ্ট নেই।একজন কেউ যদি পাশে থেকে উৎসাহ না দেয় বেশিদিন দম রাখা যায় না।ডিএম সাহেবকে দেখে কথা বলে ওকে আমার একজন ইন্টেকচুয়াল বলে মনে হয়েছে।আমরা পাশাপাশি বসে অনেক আলাপ করেছি। নিজের মধ্যে অন্য রকম একটা অনুভুতি…।
অনসুয়া হাতে চাপ দিল সুচিস্মিতার।সুচিস্মিতা আমল দেয় না বড়দির কথা বোঝার চেষ্টা করে।
–বিয়ের পর সব কিছুই মনের মত হয় না,আমরা মানিয়ে নিই। সবারই এরুকম মুহুর্ত আসতে পারে কখনো কিন্তু সামাজিক ইনহিবিশন তাকে পরিণত হতে দেয় না।সুপর্ণা মিত্রকে নতুন করে চিনছে সুচিস্মিতা।দৈনন্দিন কাজের মধ্যে মানুষটাকে এভাবে দেখার সুযোগ ঘটেনি।পরস্পর মিশলেও আমরা কতটুকু চিনতে পারি পরস্পরকে?
–এইদেখো কথা বলতে বলতে রিক্সাস্ট্যাণ্ড ছেড়ে চলে এসেছি।সুপর্ণা মিত্র বললেন। মিস বোস কি আজই চলে যাবেন?
–হ্যা বড়দি আজ রাতের গাড়িতে উঠবো তাহলে ভোরবেলা পৌছে যাবো।সুচিস্মিতা বলে।
–যা বললাম মনে রাখবে।
সুচিস্মিতা হেসে সম্মতিসুচক ঘাড় নাড়লেন।বড়দি চলে যেতে অনসুয়া বলল,প্রেমের বীজ এখনো শুকিয়ে যায় নি।
–বীজ মাটির তলায় চাপা থাকে জল বাতাস পেলেই অঙ্কুরিত হবার চেষ্টা করে।
সুচিস্মিতার কথা শুনে চোখ বড় করে অনসুয়া তাকে দেখে।জিজ্ঞেস করে,তোমার মধ্যে কি বীজ চাপা আছে?
সুচিস্মিতা হেসে বলে,মাটির নীচে আমি কি দেখেছি,হয়তো আছে।
ট্রেন রাত নটায় এখন একটূ গড়িয়ে নেওয়া যেতে পারে।গোছগাছ আগেই সারা। বাথরুমে গেল সুচিস্মিতা,চোখে মুখে জল দেয়।হু-হু করে কেদে ফেলে।কান্নার কি হল বুঝতে পারে না কিন্তু ভাল লাগছে কাদতে।কিছুক্ষন কাদার পর বাথরুম থেকে বেরিয়ে এল।অনসুয়া চেঞ্জ করে বিছানায় শুয়ে কি যেন ভাবছে।
–আচ্ছা সুচিস্মিতা একটা কথা বলবে?
–কি কথা?
–এমন কিছু না।তুমি কারো সঙ্গে প্রেম করেছো?এত বয়স হল বিয়ে করোনি তার পিছনে কোনো কাহিনী লুকিয়ে নেইতো?
সুচিস্মিতা হাসে মনে মনে,ভাবে কি বলবে?পাশের খাটে শুয়ে বলে,বিশ্বাস করো এর উত্তর আমার জানা নেই।
–বুঝলাম না।
–প্রেম করিনি বলতে পারবো না আবার প্রেম করেছি তাও বলা ঠিক হবেনা। আর বিয়ে করিনি কারণ বিয়ে করার মত কাউকে পাইনি।
–বুঝেছি তার মানে একতরফা?
–এক না দুই তরফা আমার জানা নেই।কি ব্যাপার এখন এসব নিয়ে পড়লে?
অনসুয়া কিছুক্ষন চুপ করে জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে।তারপর একসময় নিজে নিজেই বলে,তুমি বলছিলে না মাটির তলায় বীজ চাপা থাকে।ঠিকই বলেছো,বীজ চাপা ছিল কিন্তু পচে গেছে।আর অঙ্কুরিত হবে না।
ঘরের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠল।হাল্কাভাবে বলা কথা অজ্ঞাতসারে অনসুয়ার কোথাও গিয়ে স্পর্শ করেছে হয়তো। কৌতুহল দমন করে সুচিস্মিতা ঘুমোবার চেষ্টা করে। অনসুয়ার মন অতীতের পথ ধরে হেটে চলেছে,কথা বলতে ইচ্ছে করে না। কলেজ যাবার পথে দেখতো চাতকের মত দাঁড়িয়ে একটি ছেলে।পরে নাম জেনেছে অতীন।দেখতে দেখতে কেমন মায়া পড়ে যায়। একদিন ওকে অতিক্রম করে আবার পিছন ফিরে তাকায়।তাতেই অতীনের সাহস বাড়ে,এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে, আপনার নামটা জানতে পারি?
–পাঁচি।
–আমার নাম কি জানেন?
–আমার জানার দরকার নেই।
–আপনার নামের সঙ্গে আমার নামের খুব মিল।
–আপনার কি নাম?
–পচা।
হাসি সামলাতে পারে না অনসুয়া।অতীনও হেসে বলে,আপনার নামের যা আদ্যক্ষর আমারও তাই।অনসুয়া শুরু অ-দিয়ে অতীনও।
–তাহলে আমার নাম জিজ্ঞেস করছিলেন কেন? কপট রাগত গলায় জিজ্ঞেস করে অনসুয়া।
–আসলে আলাপ করতে ইচ্ছে হল তাই।
–ঠিক আছে কলেজ এসে গেছে আপনি যান।
–ওভাবে বললে যাবো না।
–কি ভাবে বলতে হবে?
–বলো এখন তুমি যাও।
এইভাবে শুরু অতীনের সঙ্গে সম্পর্ক।দ্বিধা দ্বন্দের দোল দোলায় কেমন জড়িয়ে পড়ে।একেই বলে বয়সের ধর্ম।নির্জনতায় পেলে বুক খামচে ধরতো।উন্মুক্ত কোমরে চাপ দিত। আপত্তি করতো আবার ভালও লাগতো।একদিন কলেজ তাড়াতাড়ি ছুটি হতে দুজনে একটা পার্কে একটু নির্জনতায় গিয়ে বসল।এদিক-ওদিক তাকিয়ে আচমকা একটা হাত জামার মধ্যে ঢূকিয়ে মাই টিপতে লাগল অতীন।
অনসুয়া আপত্তি করে,কি হচ্ছে কি,কেউ দেখবে।
–কে দেখবে?
–আর না আর না..তনু…।
অতীন হাত বের করে কোমরে শাড়ির বাধনের মধ্যে হাত ঢোকাতে গেল।অনসুয়া বলে,ন-না তনু কি হচ্ছে কি-বলে হাত চেপে ধরে।
–প্লিজ অনু প্লিজ একবার শুধু হাত দেবো।জোর করতে থাকে অতীন।
–ন-না বলছি–।বলতে না বলতে গুদের বাল মুঠীতে চেপে ধরে অতীন।
–ঊঃ লাগছেএএএ..।হাত ধরে হ্যাচকা টান দিল অনসুয়া।
একগুচ্ছ বাল সমেত হাত বেরিয়ে এল।চোখে জল এসে গেল অনসুয়ার।উঠে দাঁড়িয়ে বলে,জানোয়ার ইতর…।
অতীন দাত বের করে বলে,এ্যা তুমি খুব রেগে গেছো,আচ্ছা বাবা স্যরি।কা্ন মলছি–হলতো?
–ইতর কোথাকার।তোমার কান ছিড়ে দেবো..স্কাউণ্ড্রেল।দপদপিয়ে পার্ক থেকে বেরিয়ে গেল অনসুয়া।
লোক আসা শুরু হয়েছে পার্কে অতীন আর বাধা দেবার চেষ্টা করে না। অনসুয়ার কি রকম দাদা পুলিশ অফিসার কয়েকদিন তাকে কলেজ পৌছে দিয়েছে এবং অতীনের খোজ নিয়েছে।অতীন আর ধারে কাছে ঘেষেনি,সময় নষ্ট না করে অন্য শিকারে মন দিয়েছে।এই লম্পটটাকে প্রেমিক ভেবেছিল মনে করে গ্লানি বোধ করে অনসুয়া।
সন্ধ্যে বেলা ঘুম ভেঙ্গে সুচিস্মিতা জিজ্ঞেস করে,তুমি ঘুমাও নি?
–না ঘুম আসছে না।তুমি শুয়ে থাকো ,আমি চা নিয়ে আসছি।চা আনতে ক্যাণ্টিনে চলে গেল অনসুয়া।