28-04-2020, 04:18 PM
(This post was last modified: 09-04-2021, 11:09 AM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
[৩]
ভোরে হাটতে বেরনো আমার একটা অভ্যাস।কোনদিন হাটতে হাটতে স্টেশন অবধি চলে যেতাম কোনোদিন সেই পূবপাড়া।পাঞ্চালিদি পূব পাড়ায় থাকে।একদিন একটা ছোটো মাঠে দেখলাম ট্রাক্স্যুট পরে পাঞ্চালিদি ক্যারাটে প্রাকটিশ করছে।শূণ্যে হাত-পা ছুড়ছে আর মুখ দিয়ে হাই-হুই শব্দ করছে। কোনো প্রতিপক্ষ নেই একা একা।মজা লাগে দাঁড়িয়ে দেখতে থাকি।আমাকে দেখতে পেয়ে পাঞ্চালিদি কাছে এসে বলল,ক্যারাটে শিখবি?
--আমার মারামারি ভালো লাগে না।
--ধুর বোকা মারামারি কেন,আত্মরক্ষায় ক্যারাটে খুব কাজে লাগে।
--তুমি আছো আমায় কে কি করবে?
--আমি তোকে দেখবো?যেন খুব মজার কথা বলেছি পাঞ্চালিদি হেসে গড়িয়ে পড়ে।
ধনেশ ব্যাটার এখন পড়াশুনায় খুব মন।কলেজ কামাই করলেও কোচিং কামাই করে না।পাঞ্চালদি খুব ভাল,সেদিন কাধে হাত রেখে যখন আমাকে বোঝাচ্ছিল ওর গায়ের গন্ধ পাচ্ছিলাম। ভাবছি একদিন জিজ্ঞেস করবো,এত ভাল লাগে কেন তোমাদের গায়ের গন্ধ?আমাকে বলেছে সব শেখাবে একে একে। আমার ঘুরতে ঘুরতে খেলতে খেলতে শিখতে ভাল লাগে। কাল কলেজে এসেছিল সুচি।আমার দিকে আড় চোখে তাকালেও কথা বলেনি।ছুটির পর আমি নিজেই যেচে গেলাম কথা বলতে।মনে হয় আমার উপর রাগ করেছে।অন্য মেয়েদের থেকে একটু আলাদা হতে সুচিকে বললাম,আমার ভুল হয়ে গেছে সুচি কিছু মনে করিস না।
–কিসের ভুল?
–বিশ্বাস কর আমি মাসিকের ব্যাপারটা জানতাম না।
অন্য মেয়েরা এসে পড়তে আমি সরে গেলাম।সুচি পিছন ফিরে অদ্ভুতভাবে আমাকে দেখল।বুঝতে পারলাম না ওর রাগ পড়েছে কিনা?সেদিনের ভুলের জন্য আমি খুব লজ্জিত নিজের উপর রাগ হচ্ছিল। সত্যি কথা বলতে কি সুচিদের বাড়ির অবস্থা খুব ভাল।প্রতিদিন ভাল টিফিন আনে।আমার উপর রেগে থাকলে কি আর টিফিন দেবে?
পরদিন বুঝতে পারলাম আমার উপর আর রাগ নেই।আমাকে ডেকে টিফিন কৌটার ঢাকনায় তরকারি আর লুচি দিল,লুচি শেষ করতে একটা সন্দেশ দিল।জলের বোতল বের করে এগিয়ে দিল।আমি ঘাড় বেকিয়ে ঢক ঢক করে জল খেয়ে সুচির দিকে তাকাতে দেখলাম ওর ঠোটে পবিত্র হাসি।আমিও চোখে চোখ মিলিয়ে হাসলাম।বন্দনা জিজ্ঞেস করল,চিড়েভাজা এনেছি খাবি?
লুচি সন্দেশ খাবার পর আর ইচ্চে করল না।সুচি মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে।আমি বললাম,আজ আর খাবো নারে।
একদিন টিফিন খাওয়া নিয়ে এমন ধুন্দুমার কাণ্ড হবে ভাবিনি।সেদিন সুচি চাউমিন এনেছিল।কুচো চিংড়ি ভর্তি যখন আমার জন্য আলাদা করছে জিভে জল পড়ে পড়ে অবস্থা।এমন সময় পাঞ্চালিদি বলল,সুসি তুই ওকে আজ টিফিন দিবিনা,সঙ্গীতা দেবে।
–পাঞ্চালিদি তুমি বলার কে? নীল কি তোমার একার?সুচি জিজ্ঞেস করে।
–আমার একার তাতো বলিনি।নীল তোরই বা কে?
সুচি তখনো আমাকে চাউমিন দেয়নি।দিয়ে ঝগড়া করলে আমি বসে বসে খেতে পারতাম।
–দ্যাখো পাঞ্চালিদি আজেবাজে কথা বলবে না।সুচির মুখ লাল।
–অমনি গায়ে লেগে গেল?
সুচি ধুত্তোর বলে চাউমিন ছুড়ে ফেলে দিল।ধনেশরা “নারদ নারদ’ বলে ধুয়ো দিতে লাগল।পাঞ্চালিদি সেদিকে তাকাতে ওরা চুপ করে গেল।চোখে জল চলে এল আমার। পাঞ্চালিদির ব্যবহার আমার ভাল লাগেনি। কিন্তু আমাকে ভালবাসে বলে কিছু বলতেও পারিনি।সবটা পড়ে যায় নি কাত হয়ে পড়ে থাকা টিফিনের ডিব্বেটা তুলে সুচিকে দিলাম। সুচি ঢাকা দিয়ে রেখে দিল আর টিফিন খেল না।ইস কুচো চিংড়ি দিয়ে চাউমিন বানিয়ে এনেছিল পাঞ্চালিদির জন্য কপালে জুটলো না। আমাকে নিয়ে গোলমাল তাই অস্বস্তি বোধ করছিলাম।পাঞ্চালিদির জন্য আজ আমার চিংড়ি খাওয়া হলনা।ছুটির পর সুচিকে বললাম, পাঞ্চালিদি আজ কেন এমন করল আমার খুব খারাপ লেগেছে।
–তুই তখন তো একটা কথা বলিস নি? আচ্ছা নীল,তুই কিরে কিছুই বুঝিস না?
–বারে বুঝবো না কেন?ওদের মতলব ছিল আমাকে দিয়ে সঙ্গীতার শুকনো রুটি গেলাবে।
সুচি হতভম্ব যেন কোন অদ্ভুত বিস্ময়কর কিছু তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।জিজ্ঞেস করি, কিরে কি দেখছিস?
–চাউমিন খাবি?
–দে খাবো না কেন?
ব্যাগ থেকে অবশিষ্ট চাউমিন বের করে আমার হাতে দিল।জিজ্ঞেস করি,তুই একটুও খাবি না?
সুচি হেসে বলে,না তুই খা।আমার ভাল লাগছে না।
চাউমিন খেতে থাকি।সুচি জিজ্ঞেস করল,তুই পাঞ্চালিদিকে কি বলেছিস?
--কে আমি?ওমা কি মিথ্যুক তুই বিশ্বাস কর আমি কিছু বলিনি বরং পাঞ্চালিদিই জিজ্ঞেস করল--।
--ঠিক আছে তুই খা।
চাউমিন খেতে খেতে ভবছিলাম পাঞ্চালিদি ঠিকই বলে,আমি অনেক কিছু জানি না। বিশেষ করে মেয়েদের ব্যাপারে।হঠাৎ কেন যে সুচির ভাল লাগছে না,বাড়ি থেকে টিফিন আনলো অথচ এককণা দাতে কাটলো না।মনে হয় আগে পাঞ্চালিদির সঙ্গে সুচির কিছু হয়েছে।
রোজ রোজ কলেজ আমার ভাল লাগেনা।রবিবার ছুটি থাকলেও সারা পাড়া লোক গিজগিজ করে।কাজের দিন পাড়াটা নির্জন হয়ে যায় বেশ লাগে।সারা পাড়া চক্কর দিই,এমন কি পাড়ার বাইরে ক্যারাটে ক্লাব কালাহারির জঙ্গল পর্যন্ত চলে যেতাম।কালাহারির একটা ইতিহাস আছে।অনেক কাল আগে দুই ভাই কালিদাস আর হরিদাস নামে ডাকাত এই জঙ্গলে বাস করতো।লোক মুখে ফিরতে ফিরতে কালু হরি হয়ে গেল কালাহারি।শুনেছি মেয়েদের প্রতি তাদের ছিল অগাধ শ্রদ্ধা।সন্ধ্যের পর কেউ জঙ্গলের ধারে ঘেষতো না তবে সঙ্গে মেয়ে থাকলে নিশ্চিন্তে জঙ্গলের পাশ দিয়ে যাওয়া যেই।আজ আর তারা নেই কিন্তু এই জঙ্গল আজও তাদের স্মৃতি বহন করছে। কত রকম পাখীর ডাক পাতায় পাতায় বাতাসের শনশনানি মনে হত নির্জনতা আমাকে ডেকে বলছে,এ্যাই নীল কোথায় যাচ্ছিস?আয় না আমাদের সঙ্গে গল্প করবি।
–তোমরা কি গল্প করবে?
–দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখি জঙ্গলের মধ্যে ঘটে কত অদ্ভুত কাণ্ড।জঙ্গলে ঢুকে মানুষ পশুর মত হয়ে যায়।গা শির শির করে ওঠে,নীল দ্রুত হাটতে থাকে।
এতক্ষনে ছুটি হয়ে গেছে কলেজ।ক্যারাটে ক্লাবের উলটো দিকে কোমর সমান উচু পেচ্ছাপখানা। ক্লাবের পাশে জঙ্গল মনে হল ধনেশ পেচ্ছাপ করছে।পরে দেখলাম,সামনের দিকে ঝুকে ডান হাত খুব জোরে জোরে নাড়ছে।কি করছে ধনেশ?আমি জঙ্গলে ঢুকে দেখতে লাগলাম ধনেশের কাণ্ড।সারা শরীর কাপছে কি হল ধনেশের,অসুস্থ বোধ করছে নাকি?আমার কি ওর সাহায্যে যাওয়া উচিত?
এগিয়ে দেখব কিনা ভাবছি,হঠাৎ ‘আঃ-হা-আ-আআআআআআআ’ করে কেমন কাহিল হয়ে পড়ল।মনে হচ্ছে হাত দিয়ে দেওয়ালে কি যেন মুছছে।এদিক-ওদিক তাকিয়ে কি দেখল,তারপর হাটতে হাটতে চলে গেল। কৌতুহল হল গিয়ে দেখলাম পেচ্ছাপখানার সারা দেওয়ালে কফের মত কি লেগে আছে।
–কিরে নীলু কি করছিস?আজ কলেজে আসিস নি কেন?
আমি ঘুরে দাঁড়িয়ে দেখলাম পাঞ্চালিদি।প্যাণ্ট টি শার্ট পরে এসেছে।মনে হল ক্লাবে যাচ্ছে।আমি বললাম, আজ ভাল লাগলো না তাই যাইনি।দ্যাখো পাঞ্চালিদি দেওয়ালে কি সব?
পাঞ্চালি নীচু হয়ে দেখে আমার দিকে তাকালো।মনে হল কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করছে।আমাকে সন্দেহ করছে নাতো?
–ধনেশ একটু আগে ফেলে গেছে,আমি না।জিজ্ঞেস করি,পাঞ্চালিদি এসব কি গো?
পাঞ্চালি হেসে বলল,তুই সুচিকে জিজ্ঞেস করিস।
–যাঃ তুমি না।তুমি বলেছিলে আমাকে সব শেখাবে–।
–ধনেশ খেচে চলে গেছে।ওরে গাধা ধোন খেচলে ঐ রকম বের হয়।যা বাড়ি যা।
পাঞ্চালিদি চলে গেল। ব্যাপারটা আগের মত বুঝিয়ে দিয়ে গেল না।পাঞ্চালি মনে মনে ভাবে ধনেশ বয়স অনুপাতে একটু বেশি পরিনত আর নীলুটা তুলনায় এখনো ম্যাচিয়োর হল না। সুচি কি চায় ও কবে বুঝবে কে জানে।ব্যাটা সব কিছু মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করে, তার খুব ন্যাওটা।নীলুর লেখালিখির দিকে ঝোঁক।
খেচা ব্যাপারটা এখনো বুঝতে পারিনি,ওকে কিভাবে খুলে বলে? একটা ছেলেকে সব কিছু একটা মেয়ের পক্ষে বোঝানো যায়?
সুচিদের বাড়ি পাশ দিয়ে যেতে একতলার বারান্দায় একভদ্রলোককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে চলতে লাগলাম।ভদ্রলোক সম্ভবত অধ্যাপক সুচির কাকা হবেন।নীল চেনে না,ওর বাবাকে চেনে। কালোকোট পরে গাড়িচেপে যেতে দেখেছে।মৃন্ময় বসু,হাই কোর্টের ব্যারিষ্টার। মুখে সব সময় লাগানো থাকে টোবাকো পাইপ।কে যেন ডাকলো,এ্যাই নীল।
পিছন ফিরে দেখলাম দোতলার বারান্দায় হাসিমুখে রেলিং থেকে ঝুকে দাঁড়িয়ে সুচিস্মিতা।
–ভিতরে এসো।
কি ভাবে ভিতরে যাবো ভাবছি, বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্রলোক ইশারা করে দরজা দেখিয়ে দিলেন।গেট খুলে ভিতরে ঢুকতে ভদ্রলোক একটা সোফা সজ্জিত ঘর দেখিয়ে দিলেন। মৃদু হেসে ঘরে ঢূকে একটা সোফায় বসলাম।ভদ্রলোক পাখা ঘুরিয়ে দিয়ে আবার বারান্দায় গিয়ে দাড়ালেন।
কিছুক্ষন পরেই সুচি এসে ঢুকে একটা সোফায় বসে জিজ্ঞেস করে,আজ কলেজে আসোনি কেন?
অবাক লাগলো সুচি এভাবে কথা বলছে কেন? ভাল করে সুচিকে লক্ষ্য করে বললাম,রোজ কলেজে যেতে আমার ভাল লাগে না।আচ্ছা আমাকে ডাকলি কেন?
–আমার তুই-তোকারি করতে বিচ্ছিরি লাগে।তুমিও আমাকে তুই-তোকারি করবে না।
–হ্যা ঠিক।আমি বয়স্ক মুটে মজুরদেরও আপনি বলি।আমার কথা শুনে সুচি হেসে ফেলে।
–হাসছো কেন?
–তুমি খুব সরল।সুচি বলে।
–কলেজে আমাদের কথা শুনলে সবাই হাসবে।আমি আশঙ্কা প্রকাশ করি।
–কলেজে আমরা আগের মতই বলবো।
–কলেজে এক আবার বাইরে এক।মনে থাকবে তো?অবশ্য বাইরে তো আমাদের দেখাই হয় না।
–ইচ্ছে থাকলে দেখা হবে।
–সেটা ঠিক।
সুচি হঠাৎ ডাকে,কাকুমণি।
বাইরের ভদ্রলোক ভিতরে এলেন।সুচি বলল,কাকুমণি এর নাম নীলাভ সেন,আমার সঙ্গে পড়ে। আর এই আমার কাকুমণি অধ্যাপক চিন্ময় বসু।জানো কাকুমণি নীলু গল্প লেখে।
–তাই–তুমি লেখক?আমার দেখেই সন্দেহ হয়েছিল।কোন লেখক তোমার প্রিয়?
–শরৎ চন্দ্র আমার ভাল লাগে।
–বঙ্কিম রবীন্দ্রনাথ ভাল লাগে না?
–তাদেরও ভালো লাগে কিন্তু শরৎ চন্দ্রের নারীদের প্রতি দরদ ভালবাসা সমাজের নীচুস্তরের মানুষদের প্রতি সমানুভুতি আমাকে মুগ্ধ করে।
এমন সময় চিন্ময় বোসের পকেটে ফোন বেজে ওঠে।এক মিনিট বলে ফোন ধরেন,হ্যা বলো…আমি আধঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি….বাজে কথা বোলনা কেটি…ঠিক আছে ঠিক আছে ঘণ্টা খানেকের মধ্যে যাচ্ছি। ফোন কেটে দিয়ে বললেন,শোনো নীলাভ আমরা আর একদিন সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করবো। আমাকে একটু এখন বেরোতে হচ্ছে।
কাকু চলে যেতে ফিক করে হেসে সুচি বলে,কে ফোন করেছিল জানো?
–কাকুর কোন বন্ধু।
–কাকুর গার্ল ফ্রেণ্ড কেতকি ব্যানার্জি।
–আমার ফোন থাকলে আমার গার্লফ্রেণ্ডরাও ফোন করতো।
সুচি গাড়স্বরে জিজ্ঞেস করে,কে তোমার গার্লফ্রেণ্ড?
–কত আছে বন্দনা পাঞ্চালিদি সঙ্গিতা তুই মানে তুমি–।
–ধ্যেৎ।এই বুদ্ধি নিয়ে তুমি লেখক হবে?
–আমি কি বলেছি লেখক হবো?তুমিই আমাকে লেখক বানালে,কি দরকার ছিল কাকুকে ওকথা বলার? জানি সবাই আমাকে মাথামোটা বলে,তোমরা রোগা মাথা নিয়ে থাকো।
খিল খিল করে হেসে উঠল সুচি।আমি ঠোট ফুলিয়ে বলে,আমি তো হাসির পাত্র।
–সেজন্য হাসছি না বিশ্বাস কর,রোগামাথা বললে বলেই হাসি পেয়ে গেল।মাথা রোগা হয় নাকি?
একজন লোক এসে চা দিয়ে গেল।চায়ে চুমুক দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,চাউমিন তুমি বানিয়েছিলে? দারুণ হয়েছিল।
–ধুর আমি কোনদিন চা-ই করিনি।সুরঞ্জনা বসু আমার মামণি করেছে।জানো নীল আমার মামণি যা ফিসফ্রাই করেনা কি বলবো–তোমাকে একদিন খাওয়াবো।
–লুকিয়ে লুকিয়ে দিও।না হলে পাঞ্চালিদিরা গোলমাল করবে।
–কেন লুকিয়ে দেবো?আমার যাকে ভাল লাগে তাকে দেবো,তাতে কার কি?
চা শেষ করে বললাম,আজ উঠি সন্ধ্যে হয়ে এল।বাড়িতে মা আবার ভাবতে বসে যাবে।
সুচির মুখটা করুণ হয়ে গেল বলল,আবার এসো।
সুচিস্মিতা গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিল।
ভোরে হাটতে বেরনো আমার একটা অভ্যাস।কোনদিন হাটতে হাটতে স্টেশন অবধি চলে যেতাম কোনোদিন সেই পূবপাড়া।পাঞ্চালিদি পূব পাড়ায় থাকে।একদিন একটা ছোটো মাঠে দেখলাম ট্রাক্স্যুট পরে পাঞ্চালিদি ক্যারাটে প্রাকটিশ করছে।শূণ্যে হাত-পা ছুড়ছে আর মুখ দিয়ে হাই-হুই শব্দ করছে। কোনো প্রতিপক্ষ নেই একা একা।মজা লাগে দাঁড়িয়ে দেখতে থাকি।আমাকে দেখতে পেয়ে পাঞ্চালিদি কাছে এসে বলল,ক্যারাটে শিখবি?
--আমার মারামারি ভালো লাগে না।
--ধুর বোকা মারামারি কেন,আত্মরক্ষায় ক্যারাটে খুব কাজে লাগে।
--তুমি আছো আমায় কে কি করবে?
--আমি তোকে দেখবো?যেন খুব মজার কথা বলেছি পাঞ্চালিদি হেসে গড়িয়ে পড়ে।
ধনেশ ব্যাটার এখন পড়াশুনায় খুব মন।কলেজ কামাই করলেও কোচিং কামাই করে না।পাঞ্চালদি খুব ভাল,সেদিন কাধে হাত রেখে যখন আমাকে বোঝাচ্ছিল ওর গায়ের গন্ধ পাচ্ছিলাম। ভাবছি একদিন জিজ্ঞেস করবো,এত ভাল লাগে কেন তোমাদের গায়ের গন্ধ?আমাকে বলেছে সব শেখাবে একে একে। আমার ঘুরতে ঘুরতে খেলতে খেলতে শিখতে ভাল লাগে। কাল কলেজে এসেছিল সুচি।আমার দিকে আড় চোখে তাকালেও কথা বলেনি।ছুটির পর আমি নিজেই যেচে গেলাম কথা বলতে।মনে হয় আমার উপর রাগ করেছে।অন্য মেয়েদের থেকে একটু আলাদা হতে সুচিকে বললাম,আমার ভুল হয়ে গেছে সুচি কিছু মনে করিস না।
–কিসের ভুল?
–বিশ্বাস কর আমি মাসিকের ব্যাপারটা জানতাম না।
অন্য মেয়েরা এসে পড়তে আমি সরে গেলাম।সুচি পিছন ফিরে অদ্ভুতভাবে আমাকে দেখল।বুঝতে পারলাম না ওর রাগ পড়েছে কিনা?সেদিনের ভুলের জন্য আমি খুব লজ্জিত নিজের উপর রাগ হচ্ছিল। সত্যি কথা বলতে কি সুচিদের বাড়ির অবস্থা খুব ভাল।প্রতিদিন ভাল টিফিন আনে।আমার উপর রেগে থাকলে কি আর টিফিন দেবে?
পরদিন বুঝতে পারলাম আমার উপর আর রাগ নেই।আমাকে ডেকে টিফিন কৌটার ঢাকনায় তরকারি আর লুচি দিল,লুচি শেষ করতে একটা সন্দেশ দিল।জলের বোতল বের করে এগিয়ে দিল।আমি ঘাড় বেকিয়ে ঢক ঢক করে জল খেয়ে সুচির দিকে তাকাতে দেখলাম ওর ঠোটে পবিত্র হাসি।আমিও চোখে চোখ মিলিয়ে হাসলাম।বন্দনা জিজ্ঞেস করল,চিড়েভাজা এনেছি খাবি?
লুচি সন্দেশ খাবার পর আর ইচ্চে করল না।সুচি মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে।আমি বললাম,আজ আর খাবো নারে।
একদিন টিফিন খাওয়া নিয়ে এমন ধুন্দুমার কাণ্ড হবে ভাবিনি।সেদিন সুচি চাউমিন এনেছিল।কুচো চিংড়ি ভর্তি যখন আমার জন্য আলাদা করছে জিভে জল পড়ে পড়ে অবস্থা।এমন সময় পাঞ্চালিদি বলল,সুসি তুই ওকে আজ টিফিন দিবিনা,সঙ্গীতা দেবে।
–পাঞ্চালিদি তুমি বলার কে? নীল কি তোমার একার?সুচি জিজ্ঞেস করে।
–আমার একার তাতো বলিনি।নীল তোরই বা কে?
সুচি তখনো আমাকে চাউমিন দেয়নি।দিয়ে ঝগড়া করলে আমি বসে বসে খেতে পারতাম।
–দ্যাখো পাঞ্চালিদি আজেবাজে কথা বলবে না।সুচির মুখ লাল।
–অমনি গায়ে লেগে গেল?
সুচি ধুত্তোর বলে চাউমিন ছুড়ে ফেলে দিল।ধনেশরা “নারদ নারদ’ বলে ধুয়ো দিতে লাগল।পাঞ্চালিদি সেদিকে তাকাতে ওরা চুপ করে গেল।চোখে জল চলে এল আমার। পাঞ্চালিদির ব্যবহার আমার ভাল লাগেনি। কিন্তু আমাকে ভালবাসে বলে কিছু বলতেও পারিনি।সবটা পড়ে যায় নি কাত হয়ে পড়ে থাকা টিফিনের ডিব্বেটা তুলে সুচিকে দিলাম। সুচি ঢাকা দিয়ে রেখে দিল আর টিফিন খেল না।ইস কুচো চিংড়ি দিয়ে চাউমিন বানিয়ে এনেছিল পাঞ্চালিদির জন্য কপালে জুটলো না। আমাকে নিয়ে গোলমাল তাই অস্বস্তি বোধ করছিলাম।পাঞ্চালিদির জন্য আজ আমার চিংড়ি খাওয়া হলনা।ছুটির পর সুচিকে বললাম, পাঞ্চালিদি আজ কেন এমন করল আমার খুব খারাপ লেগেছে।
–তুই তখন তো একটা কথা বলিস নি? আচ্ছা নীল,তুই কিরে কিছুই বুঝিস না?
–বারে বুঝবো না কেন?ওদের মতলব ছিল আমাকে দিয়ে সঙ্গীতার শুকনো রুটি গেলাবে।
সুচি হতভম্ব যেন কোন অদ্ভুত বিস্ময়কর কিছু তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।জিজ্ঞেস করি, কিরে কি দেখছিস?
–চাউমিন খাবি?
–দে খাবো না কেন?
ব্যাগ থেকে অবশিষ্ট চাউমিন বের করে আমার হাতে দিল।জিজ্ঞেস করি,তুই একটুও খাবি না?
সুচি হেসে বলে,না তুই খা।আমার ভাল লাগছে না।
চাউমিন খেতে থাকি।সুচি জিজ্ঞেস করল,তুই পাঞ্চালিদিকে কি বলেছিস?
--কে আমি?ওমা কি মিথ্যুক তুই বিশ্বাস কর আমি কিছু বলিনি বরং পাঞ্চালিদিই জিজ্ঞেস করল--।
--ঠিক আছে তুই খা।
চাউমিন খেতে খেতে ভবছিলাম পাঞ্চালিদি ঠিকই বলে,আমি অনেক কিছু জানি না। বিশেষ করে মেয়েদের ব্যাপারে।হঠাৎ কেন যে সুচির ভাল লাগছে না,বাড়ি থেকে টিফিন আনলো অথচ এককণা দাতে কাটলো না।মনে হয় আগে পাঞ্চালিদির সঙ্গে সুচির কিছু হয়েছে।
রোজ রোজ কলেজ আমার ভাল লাগেনা।রবিবার ছুটি থাকলেও সারা পাড়া লোক গিজগিজ করে।কাজের দিন পাড়াটা নির্জন হয়ে যায় বেশ লাগে।সারা পাড়া চক্কর দিই,এমন কি পাড়ার বাইরে ক্যারাটে ক্লাব কালাহারির জঙ্গল পর্যন্ত চলে যেতাম।কালাহারির একটা ইতিহাস আছে।অনেক কাল আগে দুই ভাই কালিদাস আর হরিদাস নামে ডাকাত এই জঙ্গলে বাস করতো।লোক মুখে ফিরতে ফিরতে কালু হরি হয়ে গেল কালাহারি।শুনেছি মেয়েদের প্রতি তাদের ছিল অগাধ শ্রদ্ধা।সন্ধ্যের পর কেউ জঙ্গলের ধারে ঘেষতো না তবে সঙ্গে মেয়ে থাকলে নিশ্চিন্তে জঙ্গলের পাশ দিয়ে যাওয়া যেই।আজ আর তারা নেই কিন্তু এই জঙ্গল আজও তাদের স্মৃতি বহন করছে। কত রকম পাখীর ডাক পাতায় পাতায় বাতাসের শনশনানি মনে হত নির্জনতা আমাকে ডেকে বলছে,এ্যাই নীল কোথায় যাচ্ছিস?আয় না আমাদের সঙ্গে গল্প করবি।
–তোমরা কি গল্প করবে?
–দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখি জঙ্গলের মধ্যে ঘটে কত অদ্ভুত কাণ্ড।জঙ্গলে ঢুকে মানুষ পশুর মত হয়ে যায়।গা শির শির করে ওঠে,নীল দ্রুত হাটতে থাকে।
এতক্ষনে ছুটি হয়ে গেছে কলেজ।ক্যারাটে ক্লাবের উলটো দিকে কোমর সমান উচু পেচ্ছাপখানা। ক্লাবের পাশে জঙ্গল মনে হল ধনেশ পেচ্ছাপ করছে।পরে দেখলাম,সামনের দিকে ঝুকে ডান হাত খুব জোরে জোরে নাড়ছে।কি করছে ধনেশ?আমি জঙ্গলে ঢুকে দেখতে লাগলাম ধনেশের কাণ্ড।সারা শরীর কাপছে কি হল ধনেশের,অসুস্থ বোধ করছে নাকি?আমার কি ওর সাহায্যে যাওয়া উচিত?
এগিয়ে দেখব কিনা ভাবছি,হঠাৎ ‘আঃ-হা-আ-আআআআআআআ’ করে কেমন কাহিল হয়ে পড়ল।মনে হচ্ছে হাত দিয়ে দেওয়ালে কি যেন মুছছে।এদিক-ওদিক তাকিয়ে কি দেখল,তারপর হাটতে হাটতে চলে গেল। কৌতুহল হল গিয়ে দেখলাম পেচ্ছাপখানার সারা দেওয়ালে কফের মত কি লেগে আছে।
–কিরে নীলু কি করছিস?আজ কলেজে আসিস নি কেন?
আমি ঘুরে দাঁড়িয়ে দেখলাম পাঞ্চালিদি।প্যাণ্ট টি শার্ট পরে এসেছে।মনে হল ক্লাবে যাচ্ছে।আমি বললাম, আজ ভাল লাগলো না তাই যাইনি।দ্যাখো পাঞ্চালিদি দেওয়ালে কি সব?
পাঞ্চালি নীচু হয়ে দেখে আমার দিকে তাকালো।মনে হল কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করছে।আমাকে সন্দেহ করছে নাতো?
–ধনেশ একটু আগে ফেলে গেছে,আমি না।জিজ্ঞেস করি,পাঞ্চালিদি এসব কি গো?
পাঞ্চালি হেসে বলল,তুই সুচিকে জিজ্ঞেস করিস।
–যাঃ তুমি না।তুমি বলেছিলে আমাকে সব শেখাবে–।
–ধনেশ খেচে চলে গেছে।ওরে গাধা ধোন খেচলে ঐ রকম বের হয়।যা বাড়ি যা।
পাঞ্চালিদি চলে গেল। ব্যাপারটা আগের মত বুঝিয়ে দিয়ে গেল না।পাঞ্চালি মনে মনে ভাবে ধনেশ বয়স অনুপাতে একটু বেশি পরিনত আর নীলুটা তুলনায় এখনো ম্যাচিয়োর হল না। সুচি কি চায় ও কবে বুঝবে কে জানে।ব্যাটা সব কিছু মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করে, তার খুব ন্যাওটা।নীলুর লেখালিখির দিকে ঝোঁক।
খেচা ব্যাপারটা এখনো বুঝতে পারিনি,ওকে কিভাবে খুলে বলে? একটা ছেলেকে সব কিছু একটা মেয়ের পক্ষে বোঝানো যায়?
সুচিদের বাড়ি পাশ দিয়ে যেতে একতলার বারান্দায় একভদ্রলোককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে চলতে লাগলাম।ভদ্রলোক সম্ভবত অধ্যাপক সুচির কাকা হবেন।নীল চেনে না,ওর বাবাকে চেনে। কালোকোট পরে গাড়িচেপে যেতে দেখেছে।মৃন্ময় বসু,হাই কোর্টের ব্যারিষ্টার। মুখে সব সময় লাগানো থাকে টোবাকো পাইপ।কে যেন ডাকলো,এ্যাই নীল।
পিছন ফিরে দেখলাম দোতলার বারান্দায় হাসিমুখে রেলিং থেকে ঝুকে দাঁড়িয়ে সুচিস্মিতা।
–ভিতরে এসো।
কি ভাবে ভিতরে যাবো ভাবছি, বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্রলোক ইশারা করে দরজা দেখিয়ে দিলেন।গেট খুলে ভিতরে ঢুকতে ভদ্রলোক একটা সোফা সজ্জিত ঘর দেখিয়ে দিলেন। মৃদু হেসে ঘরে ঢূকে একটা সোফায় বসলাম।ভদ্রলোক পাখা ঘুরিয়ে দিয়ে আবার বারান্দায় গিয়ে দাড়ালেন।
কিছুক্ষন পরেই সুচি এসে ঢুকে একটা সোফায় বসে জিজ্ঞেস করে,আজ কলেজে আসোনি কেন?
অবাক লাগলো সুচি এভাবে কথা বলছে কেন? ভাল করে সুচিকে লক্ষ্য করে বললাম,রোজ কলেজে যেতে আমার ভাল লাগে না।আচ্ছা আমাকে ডাকলি কেন?
–আমার তুই-তোকারি করতে বিচ্ছিরি লাগে।তুমিও আমাকে তুই-তোকারি করবে না।
–হ্যা ঠিক।আমি বয়স্ক মুটে মজুরদেরও আপনি বলি।আমার কথা শুনে সুচি হেসে ফেলে।
–হাসছো কেন?
–তুমি খুব সরল।সুচি বলে।
–কলেজে আমাদের কথা শুনলে সবাই হাসবে।আমি আশঙ্কা প্রকাশ করি।
–কলেজে আমরা আগের মতই বলবো।
–কলেজে এক আবার বাইরে এক।মনে থাকবে তো?অবশ্য বাইরে তো আমাদের দেখাই হয় না।
–ইচ্ছে থাকলে দেখা হবে।
–সেটা ঠিক।
সুচি হঠাৎ ডাকে,কাকুমণি।
বাইরের ভদ্রলোক ভিতরে এলেন।সুচি বলল,কাকুমণি এর নাম নীলাভ সেন,আমার সঙ্গে পড়ে। আর এই আমার কাকুমণি অধ্যাপক চিন্ময় বসু।জানো কাকুমণি নীলু গল্প লেখে।
–তাই–তুমি লেখক?আমার দেখেই সন্দেহ হয়েছিল।কোন লেখক তোমার প্রিয়?
–শরৎ চন্দ্র আমার ভাল লাগে।
–বঙ্কিম রবীন্দ্রনাথ ভাল লাগে না?
–তাদেরও ভালো লাগে কিন্তু শরৎ চন্দ্রের নারীদের প্রতি দরদ ভালবাসা সমাজের নীচুস্তরের মানুষদের প্রতি সমানুভুতি আমাকে মুগ্ধ করে।
এমন সময় চিন্ময় বোসের পকেটে ফোন বেজে ওঠে।এক মিনিট বলে ফোন ধরেন,হ্যা বলো…আমি আধঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি….বাজে কথা বোলনা কেটি…ঠিক আছে ঠিক আছে ঘণ্টা খানেকের মধ্যে যাচ্ছি। ফোন কেটে দিয়ে বললেন,শোনো নীলাভ আমরা আর একদিন সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করবো। আমাকে একটু এখন বেরোতে হচ্ছে।
কাকু চলে যেতে ফিক করে হেসে সুচি বলে,কে ফোন করেছিল জানো?
–কাকুর কোন বন্ধু।
–কাকুর গার্ল ফ্রেণ্ড কেতকি ব্যানার্জি।
–আমার ফোন থাকলে আমার গার্লফ্রেণ্ডরাও ফোন করতো।
সুচি গাড়স্বরে জিজ্ঞেস করে,কে তোমার গার্লফ্রেণ্ড?
–কত আছে বন্দনা পাঞ্চালিদি সঙ্গিতা তুই মানে তুমি–।
–ধ্যেৎ।এই বুদ্ধি নিয়ে তুমি লেখক হবে?
–আমি কি বলেছি লেখক হবো?তুমিই আমাকে লেখক বানালে,কি দরকার ছিল কাকুকে ওকথা বলার? জানি সবাই আমাকে মাথামোটা বলে,তোমরা রোগা মাথা নিয়ে থাকো।
খিল খিল করে হেসে উঠল সুচি।আমি ঠোট ফুলিয়ে বলে,আমি তো হাসির পাত্র।
–সেজন্য হাসছি না বিশ্বাস কর,রোগামাথা বললে বলেই হাসি পেয়ে গেল।মাথা রোগা হয় নাকি?
একজন লোক এসে চা দিয়ে গেল।চায়ে চুমুক দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,চাউমিন তুমি বানিয়েছিলে? দারুণ হয়েছিল।
–ধুর আমি কোনদিন চা-ই করিনি।সুরঞ্জনা বসু আমার মামণি করেছে।জানো নীল আমার মামণি যা ফিসফ্রাই করেনা কি বলবো–তোমাকে একদিন খাওয়াবো।
–লুকিয়ে লুকিয়ে দিও।না হলে পাঞ্চালিদিরা গোলমাল করবে।
–কেন লুকিয়ে দেবো?আমার যাকে ভাল লাগে তাকে দেবো,তাতে কার কি?
চা শেষ করে বললাম,আজ উঠি সন্ধ্যে হয়ে এল।বাড়িতে মা আবার ভাবতে বসে যাবে।
সুচির মুখটা করুণ হয়ে গেল বলল,আবার এসো।
সুচিস্মিতা গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিল।