26-04-2020, 10:24 PM
২
যখন বাড়ির আশে পাশে পৌছালাম। তখন আমার মাথায় আর প্রিয়াঙ্কা নেই, নরেশ ও নেই। কিকরে দু দণ্ড দাঁড়িয়ে ভালো করে শ্বাস নেব। তাই ভাবছি। শেষ কবে এরম দৌড়াদৌড়ি করেছি খেয়াল নেই। বুকটা ধড়াস ধড়াস করছে। তাও স্বামীর একটা কর্তব্য আছে। সেই কর্তব্য থেকেই হয়ত। মূল ফটক টা হাল্কা করে ফাঁক করা। আরও অবাক লাগছিল। সেই সাদা আম্বাসাডারটাও নেই। কিন্তু না ভেতরের ঘরটায় চোখ পড়তেই দেখি নরেশ বসে। আরাম কেদারায় শরীরটা এলিয়ে দিয়ে দুই কানে কালো হেড ফোন টা গোঁজা। এমন হাবভাব যে কিছুই হয়নি। ওর কাছাকাছি তো চলে গেলাম, কিন্তু বুকটা তখনো হাঁসফাঁস করছে। ওই বুঝতে পারল যে আমি এসেছি।
‘আর বলিস না অভিক। আজ থেকেই হাইওয়ে বন্ধ। বিশাল লুকসান হয়ে গেলো। কি আর করি। কিছুদিন তোদের কাছেই থাকি’।
‘আচ্ছা, কোন ব্যাপার না। আর এরম কেন বলছিস তোর ই তো বাড়ি...’
নরেশ এমনভাবে তাকিয়ে থাকল আমার দিকে যে নিজের থেকেই চুপ করে গেলাম।
‘কিরে এতো হাঁপাচ্ছিস কেন?’
কি উত্তর দেব? ‘আমার বউ স্নান করছিল। তোর মতো একটা লম্পট বাড়িতে ওর সাথে একা। আর তার চেয়েও বেশী যা তা হোল প্রিয়াঙ্কা তোকে আমি ভেবেছে’। ভাবছিলাম এটাই মুখের ওপর বলে দি। কিন্তু জানিনা কতদিন ওর মুখাপেক্ষী হয়ে এই লক ডাউন এ আটকে থাকতে হবে।
কি বলি কি বলি ভাবছি... ও নিজেই বলল,
‘তুই না সেই একি ইনসিকিওরড রয়ে গেছিস’
সব কিছু কেমন ধোঁয়াশা লাগছে। কিসের ইনসিকিওরিটি? নরেশ যে ফিরে এসেছে, তা আমি জানি, এটা নরেশের তো জানা উচিত না। কেমন যেন একটা আশঙ্কার মেঘ মাথার ওপর ভেসে উঠেছে। এই জটিল একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি পেতে আমার এই বর্ণালী দি সাজা, প্রিয়াঙ্কার সাথে মজা, ওকেও উত্তক্ত করে নিজেদের দাম্পত্য কে একটু রঙিন করে তোলা। এতে অ্যাডভেঞ্চার আছে আর সেরম আছে ঝুঁকি ও। আমি কি একটু অতিরিক্ত ঝুঁকি নিয়ে নিচ্ছি।
কোনরকমে কথা ঘুরিয়ে বললাম, ‘নরেশ তুই চা খাবি তো? তোর জন্য প্রিয়াঙ্কা কে বলে একটু চা নিয়ে আসি’।
‘হুম চা তো খাবোই তবে অভিক আজ কিন্তু আমার তরফ থেকে পার্টি’।
বলেই আলমারির দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে ইঙ্গিত করল। সারে সারে সাজানো আলাদা আলাদা ব্র্যান্ড এর পানীয়।
ড্রিঙ্ক সেভাবে আমি করিনা। করিনা কারন খাওয়ার পর নিজেকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারিনা। আর নরেশ এর মতো অভিজ্ঞ কারুর সাথে তো নয় ই।
‘এক লেড়কি ভিগি ভাগি সি...’
ওপরেরে ঘরটা থেকে প্রিয়াঙ্কার গুনগুন করে গাওয়া কানে এলো।
সাদা স্লিভলেস একটা ম্যাক্সি। ভিজে গায়ে ভীষণ ভাবেই এঁটে গেছে। ঊর্ধ্বাঙ্গে যে অন্তর্বাস নেই তা পেছন থেকে দেখলেই বোঝা যায়। আমার তলপেট টা চিনচিন করে উঠল। এটা পড়ে কি প্রিয়াঙ্কা যাবে ওই দুশ্চরিত্র নরেশ এর সামনে! আয়নায় যে কখন আমায় দেখে ফেলেছে খেয়াল করিনি।
‘ফিরে এলে? এতক্ষন লাগলো? মুখে একটা অদ্ভুত হাঁসি’।
কি উত্তর দেবো বুঝতে পারছিলাম না। তাহলে কি প্রিয়াঙ্কা জানত আমি বাইরে গেছি! ও কি এটাও জানে যে নরেশ এসেছে!
ড্রেসিং টেবিল এর ওপর রাখা লাল লিপস্টিক টা হাতে তুলে সামনের দিকে ঝুঁকে ঠোঁটটা ঠিক কিস করার ভঙ্গীতে তুলে ধরল।
আমি আর নিজেকে সংবরণ করতে পারলাম না। কিছুটা রাগের সুরেই বললাম
‘হ্যাঁ, তুমি সেজেই যাও’
খিলখিল করে হেঁসে উঠল প্রিয়াঙ্কা। নিজেকে অবজ্ঞ্যার পাত্র মনে হচ্ছিল বারবার। আমার চোখে তখন আয়নায় ভেসে ওঠা প্রিয়াঙ্কার বক্ষ বিভাজিকা। কি বোলব!
মাথাটা ভনভন করে ঘুরছিল। পরভুমের এক সুপুরুষের সামনে আমার ৮ বছরের বিয়ে করা স্ত্রী কি বিকিয়ে গেলো? আর পারছিলাম না ওখানে থাকতে।
হনহন করে নিচে নেমে এলাম।
‘প্রিয়াঙ্কার স্নান হোল?’
নরেশের ঠোঁট দুটোর ফাঁক দিয়ে দাঁত গুলো বেরিয়ে এসেছিল। যতই আমি ওর বাড়িতে থাকি। আমার একটা প্রাইভেসি আছে। আমার স্ত্রী আছে। তাই পারলাম না। বলেই ফেললাম।
‘দেখো নরেশ, আমরা ওপরের ঘরটায় থাকছি। তুমি নিচে থেকো। আমাদের একটা প্রাইভেসি চাই’
নিজের দুটো ভ্রু ভীষণ ভাবে কুঁচকে নরেশ এক দু পা করে ঠিক আমার গা ঘেঁষে দাঁড়াল। ভাবটা এমন যেন, আমার এসব বলার অধিকার নেই।
উচ্চতায় ও আমার চেয়ে অনেকটাই বড়। তাই কি আর করি মাথাটা অনেকটা উঁচু করে ওর চোখে চোখ রাখতে হোল।
‘আর যদি না মানি?’
নরেশ যে এতটা স্পর্ধা দেখাবে তা আমি বুঝিওনি। রাগের মাথায় মানুষ ভুল করে বসে। হয়ত এতটা না বললেও হত।
এক ধাক্কায় আমায় সিঁড়ির সামনে থেকে সরিয়ে দিলো। কিছুটা হুমড়ি খেয়ে আমি পড়লাম পাশের চেয়ারটায়। আমার কাঁধে প্রচণ্ড লাগলো, কিন্তু ওই অবস্থায় ই আমি বলে উঠলাম
‘নরেশ, প্রিয়াঙ্কা ড্রেস আপ করছে, যেওনা ওপরে’।
আমার দিকে তাকিয়ে মধ্যমা দিয়ে আর জিভটা বার করে ভীষণ অশ্লীল একটা ভঙ্গী করল। রাগে অপমানে মাথায় রক্ত উঠে গেল কিন্তু আমি কিছুই করতে পারলাম না। কিই বা করতাম। ওকে আটকানোর মতো ক্ষমতা আমার শরীরে নেই। আর যদি প্রিয়াঙ্কার সামনেও একি বিহেভ করে তাহলে...
আমি পড়ে থাকলাম ওই চেয়ারটায়। ঠিক মাথার ওপরে দম দেওয়া ঘড়ি। সেকেন্ড এর কাঁটাটা টিকটিক করে শব্দ করে এগিয়ে চলেছে। প্রতিটা শব্দ সমানভাবে আমার কানে ভেসে আসছে। আর মাথার মধ্যে তখন আসন্ন এক বিপদ। চোখের সামনে সব যেন অন্ধকার......
‘আমার উলঙ্গ স্ত্রী, কোমর টা কে উঁচু করে পিছমোড়া হয়ে শুয়ে আছে। নরেশ এর প্রচণ্ড লম্বা আর মোটা লিঙ্গটা ওর যোনীদ্বারে ঠেকানো।
‘বলও প্রিয়াঙ্কা, হু ইস দা বেস্ট! আমি না অভিক?’
নিজের অজান্তেই হাতটা চলে গেলো নিজেরই লিঙ্গের ওপর। এ আমি কি করছি? আমার স্বল্পবসনা স্ত্রী ওপরের ঘরে একটা দুশ্চরিত্রের সাথে বন্দী আর আমি এভাবে...
কিছুটা সাহস করে এক পা দু পা করে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠলাম...
ভেতরের সেই ঘরটা থেকে খিলখিল করে প্রিয়াঙ্কার হাঁসি ভেসে আসছে। আর তার সাথে ফিসফিস করে কথাবার্তা। আর কয়েক পা এগোলেই দরজা। কিন্তু আমি সামনে গেলে তো ওরা একান্তে ঠিক কি কি কথা বলছে তাও শোনা হবেনা। ওই ঘরটায় সুয়ে সুয়েই দেখেছিলাম ওপাশে একটা ব্যালকনি আছে। কিন্তু সেটায় যেতে হলেও তো দরজা টা পার করেই যেতে হবে। একবার বাঁ দিকে ঝুঁকে দেখলাম বেশ কিছুটা চওড়া শেড।
দুইবার না ভেবে সেই শেড বরাবর ই সন্তর্পণে হেঁটে চললাম। খুব সাবধানে পা ফেললাম ব্যালকনির ওপর।
হ্যাঁ এবার আমি স্পষ্ট ভাবে ওদের কথা শুনতে পাচ্ছি।
‘ঠিক এরম বোকা ছিল অভিক!’
‘তারপর তোমরা কি করলে?’
‘আমরা আর কি করব ওকে বললাম যে ভাই মেয়েদের বলতে নেই...’
বুঝলাম কোন পুরনো গল্প ওকে বলছে। সেদিকে আমার হুশ নেই। একবার ব্যাল্কনি দিয়ে ভেতরের দিকে তাকালাম। ওই স্লিভলেস নাইটিটার ওপর একটা ওড়না জরিয়েছে প্রিয়াঙ্কা। কিছুটা আশ্বস্ত হলাম এই ভেবে যে যা ভয় পাচ্ছিলাম তা নয়।
‘আচ্ছা নরেশ আমি তোমার জন্য চা করে আনি’।
প্রিয়াঙ্কা বাইরে বেরিয়ে গেলো। আমিও বুঝলাম এখানে এভাবে থাকা ঠিক না। কোন রকমে পা টিপে টিপে নীচে নেমে এলাম। নরেশ তখনো ওপরে।
প্রিয়াঙ্কা তখন রান্নাঘরে।
আমাকে দেখা মাত্র ঝাঁঝিয়ে উঠল। দাঁত গুলো কিড়মিড় করতে করতে বলল
‘একবার আমায় বলবে তো নরেশ এসেছে’
আমি কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলাম। ও বলতে দিলো না।
‘আর এভাবে ওকে সারপ্রাইস দেওয়ার জন্য আলাও করলে? তুমি কেমন হ্যাঁ। যখন জানো আমি ওপরে ড্রেস আপ করছি’
মাথার ওপর থেকে কালো মেঘটা সরে গেলো। মানে প্রিয়াঙ্কা জানত না যে নরেশ এসেছে। নিজেকেই দোষ দিয়ে বললাম ‘ধুস কিসব ভাবছিলাম’। এবার আমার কাজ পুরো সিচুএসন টা কন্ট্রোল করা।
‘আরে তোমায় তো আগেই বলেছি, ওদের কালচারটা একটু অন্য রকম। একটু ফ্রেন্ডলি, একটু জলি’।
সাথে সাথে উত্তর দিল প্রিয়াঙ্কা ‘তাই বলে এতটাও ঠিক না’।
আমি বুঝতে পারছি ও ঠিক কি বলার চেস্তা করছে। তাও ঠিক কিভাবে ও ম্যানেজ করবে তা ওর ওপর ই ছেড়ে দেওয়া ভালো। কারন আমার তো অনেক আগেই পরাজয় হয়েছে।
‘আর তোমায় যে বললাম বাজার করে আনো, তার কি হোল’
আমি প্রচণ্ড অবাক হলাম, ‘কখন বললে’
এবার প্রিয়াঙ্কা বেশ খচে গেলো।
‘আরে অদ্ভুত লোক তো তুমি। চাদর ঢাকা দিয়ে শুয়ে ছিলে। আমি স্নান করতে যাচ্ছিলাম... ‘
ভগবান যেন ঠিক করেছে আমায় হাজারো রহস্যে জর্জরিত করবে। প্রিয়াঙ্কা স্নান করতে যাওয়ার অনেক আগেই তো আমি বেরিয়ে গেছিলাম।
‘একি তোমার কিছুই মনে পড়ছে না! কি অদ্ভুত লোক তুমি’।
‘আচ্ছা আচ্ছা দাঁড়াও আমি দেখছি’।
বলেই বেরিয়ে গেলাম। দরজার বাইরে দেখছি আন্না দাঁড়িয়ে।
‘সাব কাহি যানা হ্যায়?’
ওকে আকারে ইঙ্গিতে বোঝালাম, বাজার যাবো।
পকেট থেকে জাদু ফোনটা বার করলাম। দেখি জাস্ট কয়েক সেকেন্ড হোল প্রিয়াঙ্কার ম্যাসেজ।
‘দিদি, এখানে ভালো লাগছে না। নরেশটা কেমন যেন গায়ে পড়া। কথায় কথায় কাঁধে হাত দিচ্ছে’।
ভালো এটাই লাগলো যে প্রিয়াঙ্কার অস্বস্তি হচ্ছে।
‘দেখ, তুই সবসময় অভিকের আশেপাশে থাক। তাহলে আভএড করতে পারবি’।
বলে তো দিলাম। কিন্তু ওইভাবে আদৌ কি সম্ভব।
যখন বাড়ির আশে পাশে পৌছালাম। তখন আমার মাথায় আর প্রিয়াঙ্কা নেই, নরেশ ও নেই। কিকরে দু দণ্ড দাঁড়িয়ে ভালো করে শ্বাস নেব। তাই ভাবছি। শেষ কবে এরম দৌড়াদৌড়ি করেছি খেয়াল নেই। বুকটা ধড়াস ধড়াস করছে। তাও স্বামীর একটা কর্তব্য আছে। সেই কর্তব্য থেকেই হয়ত। মূল ফটক টা হাল্কা করে ফাঁক করা। আরও অবাক লাগছিল। সেই সাদা আম্বাসাডারটাও নেই। কিন্তু না ভেতরের ঘরটায় চোখ পড়তেই দেখি নরেশ বসে। আরাম কেদারায় শরীরটা এলিয়ে দিয়ে দুই কানে কালো হেড ফোন টা গোঁজা। এমন হাবভাব যে কিছুই হয়নি। ওর কাছাকাছি তো চলে গেলাম, কিন্তু বুকটা তখনো হাঁসফাঁস করছে। ওই বুঝতে পারল যে আমি এসেছি।
‘আর বলিস না অভিক। আজ থেকেই হাইওয়ে বন্ধ। বিশাল লুকসান হয়ে গেলো। কি আর করি। কিছুদিন তোদের কাছেই থাকি’।
‘আচ্ছা, কোন ব্যাপার না। আর এরম কেন বলছিস তোর ই তো বাড়ি...’
নরেশ এমনভাবে তাকিয়ে থাকল আমার দিকে যে নিজের থেকেই চুপ করে গেলাম।
‘কিরে এতো হাঁপাচ্ছিস কেন?’
কি উত্তর দেব? ‘আমার বউ স্নান করছিল। তোর মতো একটা লম্পট বাড়িতে ওর সাথে একা। আর তার চেয়েও বেশী যা তা হোল প্রিয়াঙ্কা তোকে আমি ভেবেছে’। ভাবছিলাম এটাই মুখের ওপর বলে দি। কিন্তু জানিনা কতদিন ওর মুখাপেক্ষী হয়ে এই লক ডাউন এ আটকে থাকতে হবে।
কি বলি কি বলি ভাবছি... ও নিজেই বলল,
‘তুই না সেই একি ইনসিকিওরড রয়ে গেছিস’
সব কিছু কেমন ধোঁয়াশা লাগছে। কিসের ইনসিকিওরিটি? নরেশ যে ফিরে এসেছে, তা আমি জানি, এটা নরেশের তো জানা উচিত না। কেমন যেন একটা আশঙ্কার মেঘ মাথার ওপর ভেসে উঠেছে। এই জটিল একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি পেতে আমার এই বর্ণালী দি সাজা, প্রিয়াঙ্কার সাথে মজা, ওকেও উত্তক্ত করে নিজেদের দাম্পত্য কে একটু রঙিন করে তোলা। এতে অ্যাডভেঞ্চার আছে আর সেরম আছে ঝুঁকি ও। আমি কি একটু অতিরিক্ত ঝুঁকি নিয়ে নিচ্ছি।
কোনরকমে কথা ঘুরিয়ে বললাম, ‘নরেশ তুই চা খাবি তো? তোর জন্য প্রিয়াঙ্কা কে বলে একটু চা নিয়ে আসি’।
‘হুম চা তো খাবোই তবে অভিক আজ কিন্তু আমার তরফ থেকে পার্টি’।
বলেই আলমারির দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে ইঙ্গিত করল। সারে সারে সাজানো আলাদা আলাদা ব্র্যান্ড এর পানীয়।
ড্রিঙ্ক সেভাবে আমি করিনা। করিনা কারন খাওয়ার পর নিজেকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারিনা। আর নরেশ এর মতো অভিজ্ঞ কারুর সাথে তো নয় ই।
‘এক লেড়কি ভিগি ভাগি সি...’
ওপরেরে ঘরটা থেকে প্রিয়াঙ্কার গুনগুন করে গাওয়া কানে এলো।
সাদা স্লিভলেস একটা ম্যাক্সি। ভিজে গায়ে ভীষণ ভাবেই এঁটে গেছে। ঊর্ধ্বাঙ্গে যে অন্তর্বাস নেই তা পেছন থেকে দেখলেই বোঝা যায়। আমার তলপেট টা চিনচিন করে উঠল। এটা পড়ে কি প্রিয়াঙ্কা যাবে ওই দুশ্চরিত্র নরেশ এর সামনে! আয়নায় যে কখন আমায় দেখে ফেলেছে খেয়াল করিনি।
‘ফিরে এলে? এতক্ষন লাগলো? মুখে একটা অদ্ভুত হাঁসি’।
কি উত্তর দেবো বুঝতে পারছিলাম না। তাহলে কি প্রিয়াঙ্কা জানত আমি বাইরে গেছি! ও কি এটাও জানে যে নরেশ এসেছে!
ড্রেসিং টেবিল এর ওপর রাখা লাল লিপস্টিক টা হাতে তুলে সামনের দিকে ঝুঁকে ঠোঁটটা ঠিক কিস করার ভঙ্গীতে তুলে ধরল।
আমি আর নিজেকে সংবরণ করতে পারলাম না। কিছুটা রাগের সুরেই বললাম
‘হ্যাঁ, তুমি সেজেই যাও’
খিলখিল করে হেঁসে উঠল প্রিয়াঙ্কা। নিজেকে অবজ্ঞ্যার পাত্র মনে হচ্ছিল বারবার। আমার চোখে তখন আয়নায় ভেসে ওঠা প্রিয়াঙ্কার বক্ষ বিভাজিকা। কি বোলব!
মাথাটা ভনভন করে ঘুরছিল। পরভুমের এক সুপুরুষের সামনে আমার ৮ বছরের বিয়ে করা স্ত্রী কি বিকিয়ে গেলো? আর পারছিলাম না ওখানে থাকতে।
হনহন করে নিচে নেমে এলাম।
‘প্রিয়াঙ্কার স্নান হোল?’
নরেশের ঠোঁট দুটোর ফাঁক দিয়ে দাঁত গুলো বেরিয়ে এসেছিল। যতই আমি ওর বাড়িতে থাকি। আমার একটা প্রাইভেসি আছে। আমার স্ত্রী আছে। তাই পারলাম না। বলেই ফেললাম।
‘দেখো নরেশ, আমরা ওপরের ঘরটায় থাকছি। তুমি নিচে থেকো। আমাদের একটা প্রাইভেসি চাই’
নিজের দুটো ভ্রু ভীষণ ভাবে কুঁচকে নরেশ এক দু পা করে ঠিক আমার গা ঘেঁষে দাঁড়াল। ভাবটা এমন যেন, আমার এসব বলার অধিকার নেই।
উচ্চতায় ও আমার চেয়ে অনেকটাই বড়। তাই কি আর করি মাথাটা অনেকটা উঁচু করে ওর চোখে চোখ রাখতে হোল।
‘আর যদি না মানি?’
নরেশ যে এতটা স্পর্ধা দেখাবে তা আমি বুঝিওনি। রাগের মাথায় মানুষ ভুল করে বসে। হয়ত এতটা না বললেও হত।
এক ধাক্কায় আমায় সিঁড়ির সামনে থেকে সরিয়ে দিলো। কিছুটা হুমড়ি খেয়ে আমি পড়লাম পাশের চেয়ারটায়। আমার কাঁধে প্রচণ্ড লাগলো, কিন্তু ওই অবস্থায় ই আমি বলে উঠলাম
‘নরেশ, প্রিয়াঙ্কা ড্রেস আপ করছে, যেওনা ওপরে’।
আমার দিকে তাকিয়ে মধ্যমা দিয়ে আর জিভটা বার করে ভীষণ অশ্লীল একটা ভঙ্গী করল। রাগে অপমানে মাথায় রক্ত উঠে গেল কিন্তু আমি কিছুই করতে পারলাম না। কিই বা করতাম। ওকে আটকানোর মতো ক্ষমতা আমার শরীরে নেই। আর যদি প্রিয়াঙ্কার সামনেও একি বিহেভ করে তাহলে...
আমি পড়ে থাকলাম ওই চেয়ারটায়। ঠিক মাথার ওপরে দম দেওয়া ঘড়ি। সেকেন্ড এর কাঁটাটা টিকটিক করে শব্দ করে এগিয়ে চলেছে। প্রতিটা শব্দ সমানভাবে আমার কানে ভেসে আসছে। আর মাথার মধ্যে তখন আসন্ন এক বিপদ। চোখের সামনে সব যেন অন্ধকার......
‘আমার উলঙ্গ স্ত্রী, কোমর টা কে উঁচু করে পিছমোড়া হয়ে শুয়ে আছে। নরেশ এর প্রচণ্ড লম্বা আর মোটা লিঙ্গটা ওর যোনীদ্বারে ঠেকানো।
‘বলও প্রিয়াঙ্কা, হু ইস দা বেস্ট! আমি না অভিক?’
নিজের অজান্তেই হাতটা চলে গেলো নিজেরই লিঙ্গের ওপর। এ আমি কি করছি? আমার স্বল্পবসনা স্ত্রী ওপরের ঘরে একটা দুশ্চরিত্রের সাথে বন্দী আর আমি এভাবে...
কিছুটা সাহস করে এক পা দু পা করে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠলাম...
ভেতরের সেই ঘরটা থেকে খিলখিল করে প্রিয়াঙ্কার হাঁসি ভেসে আসছে। আর তার সাথে ফিসফিস করে কথাবার্তা। আর কয়েক পা এগোলেই দরজা। কিন্তু আমি সামনে গেলে তো ওরা একান্তে ঠিক কি কি কথা বলছে তাও শোনা হবেনা। ওই ঘরটায় সুয়ে সুয়েই দেখেছিলাম ওপাশে একটা ব্যালকনি আছে। কিন্তু সেটায় যেতে হলেও তো দরজা টা পার করেই যেতে হবে। একবার বাঁ দিকে ঝুঁকে দেখলাম বেশ কিছুটা চওড়া শেড।
দুইবার না ভেবে সেই শেড বরাবর ই সন্তর্পণে হেঁটে চললাম। খুব সাবধানে পা ফেললাম ব্যালকনির ওপর।
হ্যাঁ এবার আমি স্পষ্ট ভাবে ওদের কথা শুনতে পাচ্ছি।
‘ঠিক এরম বোকা ছিল অভিক!’
‘তারপর তোমরা কি করলে?’
‘আমরা আর কি করব ওকে বললাম যে ভাই মেয়েদের বলতে নেই...’
বুঝলাম কোন পুরনো গল্প ওকে বলছে। সেদিকে আমার হুশ নেই। একবার ব্যাল্কনি দিয়ে ভেতরের দিকে তাকালাম। ওই স্লিভলেস নাইটিটার ওপর একটা ওড়না জরিয়েছে প্রিয়াঙ্কা। কিছুটা আশ্বস্ত হলাম এই ভেবে যে যা ভয় পাচ্ছিলাম তা নয়।
‘আচ্ছা নরেশ আমি তোমার জন্য চা করে আনি’।
প্রিয়াঙ্কা বাইরে বেরিয়ে গেলো। আমিও বুঝলাম এখানে এভাবে থাকা ঠিক না। কোন রকমে পা টিপে টিপে নীচে নেমে এলাম। নরেশ তখনো ওপরে।
প্রিয়াঙ্কা তখন রান্নাঘরে।
আমাকে দেখা মাত্র ঝাঁঝিয়ে উঠল। দাঁত গুলো কিড়মিড় করতে করতে বলল
‘একবার আমায় বলবে তো নরেশ এসেছে’
আমি কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলাম। ও বলতে দিলো না।
‘আর এভাবে ওকে সারপ্রাইস দেওয়ার জন্য আলাও করলে? তুমি কেমন হ্যাঁ। যখন জানো আমি ওপরে ড্রেস আপ করছি’
মাথার ওপর থেকে কালো মেঘটা সরে গেলো। মানে প্রিয়াঙ্কা জানত না যে নরেশ এসেছে। নিজেকেই দোষ দিয়ে বললাম ‘ধুস কিসব ভাবছিলাম’। এবার আমার কাজ পুরো সিচুএসন টা কন্ট্রোল করা।
‘আরে তোমায় তো আগেই বলেছি, ওদের কালচারটা একটু অন্য রকম। একটু ফ্রেন্ডলি, একটু জলি’।
সাথে সাথে উত্তর দিল প্রিয়াঙ্কা ‘তাই বলে এতটাও ঠিক না’।
আমি বুঝতে পারছি ও ঠিক কি বলার চেস্তা করছে। তাও ঠিক কিভাবে ও ম্যানেজ করবে তা ওর ওপর ই ছেড়ে দেওয়া ভালো। কারন আমার তো অনেক আগেই পরাজয় হয়েছে।
‘আর তোমায় যে বললাম বাজার করে আনো, তার কি হোল’
আমি প্রচণ্ড অবাক হলাম, ‘কখন বললে’
এবার প্রিয়াঙ্কা বেশ খচে গেলো।
‘আরে অদ্ভুত লোক তো তুমি। চাদর ঢাকা দিয়ে শুয়ে ছিলে। আমি স্নান করতে যাচ্ছিলাম... ‘
ভগবান যেন ঠিক করেছে আমায় হাজারো রহস্যে জর্জরিত করবে। প্রিয়াঙ্কা স্নান করতে যাওয়ার অনেক আগেই তো আমি বেরিয়ে গেছিলাম।
‘একি তোমার কিছুই মনে পড়ছে না! কি অদ্ভুত লোক তুমি’।
‘আচ্ছা আচ্ছা দাঁড়াও আমি দেখছি’।
বলেই বেরিয়ে গেলাম। দরজার বাইরে দেখছি আন্না দাঁড়িয়ে।
‘সাব কাহি যানা হ্যায়?’
ওকে আকারে ইঙ্গিতে বোঝালাম, বাজার যাবো।
পকেট থেকে জাদু ফোনটা বার করলাম। দেখি জাস্ট কয়েক সেকেন্ড হোল প্রিয়াঙ্কার ম্যাসেজ।
‘দিদি, এখানে ভালো লাগছে না। নরেশটা কেমন যেন গায়ে পড়া। কথায় কথায় কাঁধে হাত দিচ্ছে’।
ভালো এটাই লাগলো যে প্রিয়াঙ্কার অস্বস্তি হচ্ছে।
‘দেখ, তুই সবসময় অভিকের আশেপাশে থাক। তাহলে আভএড করতে পারবি’।
বলে তো দিলাম। কিন্তু ওইভাবে আদৌ কি সম্ভব।