22-04-2020, 05:01 AM
- নতুন কলেজটা বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দূরে | আমি পাড়ার হরেন দাকে বলে দিয়েছি, উনি তোমাকে দুবেলা ওনার রিক্সায় করে পৌঁছে দিয়ে আসবেন | ওখানে গিয়ে প্রিন্সিপাল ম্যামের সাথে যোগাযোগ করবে | আমার ওনার সাথে কথা বলা আছে, আশা করি বিশেষ অসুবিধা হবে না |
- হুমমমমম, আপনি এত তাড়াতাড়ি অল্প সময়ের মধ্যে যেভাবে নতুন কলেজে পড়ার, যাওয়া আসার ব্যাবস্থা করে দিলেন, তার জন্য কি বলে ধন্যবাদ জানাব আমি বুঝে উঠতে পারছি না | আসলে কোনো দিন ভাবিনি যে আমার মত একজন মেয়ের জন্যও কেউ এত কিছু করতে পারে | যেখানে আমার আপন জনেরাই কোনো দিনও ভাবল না সেখানে আপনি.............
- থাক অনেক হয়েছে | সত্যিই যদি বুঝতে পারো তাহলে এইসব বাজে ভাবনা ছেড়ে একটু পড়াশোনায় মন দাও | এই কয়েকদিন এইসব কাজের জন্য আমিও দেখতে পারিনি | এখন কথা না বাড়িয়ে বই নিয়ে বসো, আমি ফ্রেস হয়ে আসছি |
............ বলে উনি তাড়াতাড়ি ফ্রেস হতে চলে গেলেন | ওনার মুখের ওপর কথা বলার সাহস হবে না আমার, তাই অগত্যা বই নিয়ে বসতেই হবে | কিন্তু মনে হচ্ছে আবার জ্বর আসছে | মাথাটা অল্প ব্যাথাও করছে | না না ওনাকে বলে লাভ নেই, এমনিই মানুষটা অনেক ছুটোছুটি করছে আমার পড়াশোনার জন্য | বললে যদি ভাবেন জ্বরের বাহানায় পড়া ফাঁকি দিতে চাইছি......... ভালোবেসে তো উনি কোনো দিনও কাছে আসবেন না, কিছু বলবেন ও না | তাছাড়া এখন আর আমি আশাও করি না | বকুনি দিলেও কথা তো বলেন, তাই এই পড়তে পড়তে ওনার সাথে যতটা সময় পাওয়া যায়......... সেটাই আমার প্রাপ্তি |
প্রায় দুঘন্টা সময় পার হয়ে গিয়েছে পড়তে পড়তে, আর বসে থাকতে পারছি না | চোখ জ্বালা করছে, মাথাটাও ঘুরছে | কি করি এখন, পড়ব না বললেই হাজারটা প্রশ্ন করবেন | আর যদি বুঝে ফেলেন জ্বর এসেছে তাহলে নিজের খেয়াল না রাখার জন্য আবার বকুনিও দেবেন | কি যে করি কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না | এর আগেও বহুবার জ্বর হয়েছে, তখনও একলাই সামলেছি | কাকু কাকীমা থাকতেও একবারও পাশে এসে দাঁড়ায় নি, সুতরাং এবারও পারব | চুপ করে উঠে গিয়ে আরও একটা জ্বরের ওষুধ খেয়ে নিই, তাহলেই কমে যাবে আর উনি বুঝতেও পারবেন না | যেই ভাবা সেই কাজ | আস্তে আস্তে উঠতে যাবো............
- একটা পড়া বোঝাচ্ছি না??? কোথায় যাচ্ছো??!!! দরকার না হলে বলে দাও, শুধু শুধু খেটে মরব না |
- না মানে, আসলে আমি একটু বাথরুমে যাবো | যদি আপনি.........
- ওহ, তা এতে এত লুকিয়ে চুরিয়ে যাওয়ার কি........ পরিস্কার বললেই হত | যাও, তাড়াতাড়ি এসো না হলে পড়াটা নষ্ট হয়ে যাবে |
- হুমমমমম, আসছি |
............... বলে সবে ঘরের দরজা পর্যন্ত গিয়েছি, হঠাৎ মাথাটা কেমন যেন ঘুরে উঠলো | চোখের সামনে সবকিছু কেমন যেন ঝাপসা লাগছে | স্যারের মুখটা এত কা....... কা...... কাছে..... ছে.... কেনন
***************************
- আঁখি, আঁখি কি হল তোমার???? চোখ খোলো!!!! কথা বলছো না কেন??!!!!
উফ: মেয়েটা মোটে নিজের খেয়াল রাখে না | সারাদিন কিছু না কিছু....... এখন দেখো জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে অথচ আমাকে কিছু বুঝতেই দেয় নি | আমি কি এতটাই পাষাণ যে অসুস্থ্যতার কথা শুনলেও জোর করে বসিয়ে রাখব বলে মনে হয় তোমার??!!!! তাড়াতাড়ি কোলে করে বিছানায় এনে শুইয়ে দিলাম | ছোটো বেলায় দেখেছি জ্বর হলে মা মাথায় জলপট্টি দিয়ে দিত | ডাক্তার বাবু আসতে এখনও কিছুটা সময় লাগবে, ততক্ষণ না হয় জলপট্টিই..........
ওর ওই অচেতন নিস্পাপ মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কতক্ষন যে এভাবে বসে ছিলাম খেয়াল নেই | হঠাৎ ডোর বেলটা বেজে ওঠায় সম্বিৎ ফিরতে খেয়াল হল ডাক্তার বাবু আসার কথা তো, হয়ত উনিই হবে | তাড়াতাড়ি গিয়ে ওনাকে ভিতরে নিয়ে এলাম | এতক্ষন ধরে জলপট্টি দেওয়ায় জ্বরটা অনেক কম মনে হলেও ও এখনও চোখ খুলছে না কেন???!!!
- এখন জ্বরটা অতটা নেই ঠিকই, তবে শরীর খুবই দূর্বল | উনি কি ঠিক করে খাওয়া দাওয়া করেন না?? নিজের প্রতি যত্ন নেন না???
- সে আর বলতে, সারাদিন কিছু না কিছু ঘরের কাজ করেই চলেছে | না হলে আমার খেয়াল রাখতে ব্যাস্ত | কোনো কথা বললে শুনবে না |
- হুমমমমম, বুঝলাম |
- কেন স্যার, কি হয়েছে??!!! এনিথিং সিরিয়াস???!!!! দয়া করে বলুন না কি হয়েছে ওর!!!! ও, ও ঠিক আছে তো??!!!!
- আরে আরে এত ব্যাস্ত হওয়ার কিছু হয় নি | ঠান্ডা গরমে একটু জ্বর এসেছে ঠিকই, তবে শরীর ভীষন দূর্বল | আমি একটা ইনজেকশন দিয়ে দিচ্ছি, আশা করি কাল সকালের মধ্যে জ্ঞ্যান ফিরে আসবে | তবে এখন কিছুদিন বিশ্রামের প্রয়োজন | আবার যদি অনিয়ম শুরু করে.............
- না না ডাক্তার বাবু, আপনি চিন্তা করবেন না | একবার জ্ঞ্যান ফিরুক, তারপর দেখছি কেমন কথা না শোনে |
- হুমমমম, অসুবিধা হলে জানাবেন তাহলে | যদিও আশা করি আর কিছু হবে না, তাও |
- সে তো অবশ্যই | আমি কাল কেমন আছে আপনাকে অবশ্যই জানাব আর বিকেলে রক্তের রিপোর্ট গুলো নিয়ে তো যাবই, তখন আপনি ওকে আর একবার দেখে নেবেন |
- হুমমমম, সেটাই ভালো | চলি তাহলে |
- হ্যাঁ হ্যাঁ, চলুন |
- অনিরুদ্ধ বাবু যাওয়ার আগে একটা কথা বলবো কিছু মনে করবেন না তো? আসলে একটু পার্সোনাল তো তাই |
- না না বলুন না, কিচ্ছু মনে করবো না |
- আপনি আমার থেকে অনেকটাই ছোটো, তাই তুমি করেই বলছি কিন্তু |
- হ্যাঁ হ্যাঁ, অবশ্যই | এত কিন্তু কিন্তু করার কি আছে, বয়সে আপনি আমার পিতৃতুল্য | আপনি তুমি বলতেই পারেন |
- হুমমমম, আসলে সবসময় বকাবকি করলেই হয় না | ভালো যখন বাসো, তখন ভালোবেসেও তো পাশে থাকা যায় | জেনে রাখবে এমন অনেক অসুখ আছে যা ওষুধে নয়, একটু ভালোবাসাতেই সেরে যায় |
আসলে ওর মুখ চোখ দেখে মনে হয় ও খুব একাকিত্বে ভোগে | মনমরা হয়ে থাকে | তোমাদের পারিবারিক ব্যাপারে কথা বলা ঠিক না | একজন ডাক্তার হয়ে হয়ত এত ব্যাক্তিগত বিষয়ে কথা বলা উচিত না | তবু তোমার, তোমার স্ত্রীর প্রতি এত ভালোবাসা, চিন্তা দেখে মনে হল বলতে |
*******************************
"ভালোবাসা শুধু চায় ভালোবাসার সময়
ভালোবাসলে ভালোবাসার পাশে থাকতে হয়
হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে যদি ভালোবাসা ব্যাথা পায়
তখন, ভালোবেসে ভালোবাসাকে আপণ করে নিতে হয় |"
- হুমমমমম, আপনি এত তাড়াতাড়ি অল্প সময়ের মধ্যে যেভাবে নতুন কলেজে পড়ার, যাওয়া আসার ব্যাবস্থা করে দিলেন, তার জন্য কি বলে ধন্যবাদ জানাব আমি বুঝে উঠতে পারছি না | আসলে কোনো দিন ভাবিনি যে আমার মত একজন মেয়ের জন্যও কেউ এত কিছু করতে পারে | যেখানে আমার আপন জনেরাই কোনো দিনও ভাবল না সেখানে আপনি.............
- থাক অনেক হয়েছে | সত্যিই যদি বুঝতে পারো তাহলে এইসব বাজে ভাবনা ছেড়ে একটু পড়াশোনায় মন দাও | এই কয়েকদিন এইসব কাজের জন্য আমিও দেখতে পারিনি | এখন কথা না বাড়িয়ে বই নিয়ে বসো, আমি ফ্রেস হয়ে আসছি |
............ বলে উনি তাড়াতাড়ি ফ্রেস হতে চলে গেলেন | ওনার মুখের ওপর কথা বলার সাহস হবে না আমার, তাই অগত্যা বই নিয়ে বসতেই হবে | কিন্তু মনে হচ্ছে আবার জ্বর আসছে | মাথাটা অল্প ব্যাথাও করছে | না না ওনাকে বলে লাভ নেই, এমনিই মানুষটা অনেক ছুটোছুটি করছে আমার পড়াশোনার জন্য | বললে যদি ভাবেন জ্বরের বাহানায় পড়া ফাঁকি দিতে চাইছি......... ভালোবেসে তো উনি কোনো দিনও কাছে আসবেন না, কিছু বলবেন ও না | তাছাড়া এখন আর আমি আশাও করি না | বকুনি দিলেও কথা তো বলেন, তাই এই পড়তে পড়তে ওনার সাথে যতটা সময় পাওয়া যায়......... সেটাই আমার প্রাপ্তি |
প্রায় দুঘন্টা সময় পার হয়ে গিয়েছে পড়তে পড়তে, আর বসে থাকতে পারছি না | চোখ জ্বালা করছে, মাথাটাও ঘুরছে | কি করি এখন, পড়ব না বললেই হাজারটা প্রশ্ন করবেন | আর যদি বুঝে ফেলেন জ্বর এসেছে তাহলে নিজের খেয়াল না রাখার জন্য আবার বকুনিও দেবেন | কি যে করি কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না | এর আগেও বহুবার জ্বর হয়েছে, তখনও একলাই সামলেছি | কাকু কাকীমা থাকতেও একবারও পাশে এসে দাঁড়ায় নি, সুতরাং এবারও পারব | চুপ করে উঠে গিয়ে আরও একটা জ্বরের ওষুধ খেয়ে নিই, তাহলেই কমে যাবে আর উনি বুঝতেও পারবেন না | যেই ভাবা সেই কাজ | আস্তে আস্তে উঠতে যাবো............
- একটা পড়া বোঝাচ্ছি না??? কোথায় যাচ্ছো??!!! দরকার না হলে বলে দাও, শুধু শুধু খেটে মরব না |
- না মানে, আসলে আমি একটু বাথরুমে যাবো | যদি আপনি.........
- ওহ, তা এতে এত লুকিয়ে চুরিয়ে যাওয়ার কি........ পরিস্কার বললেই হত | যাও, তাড়াতাড়ি এসো না হলে পড়াটা নষ্ট হয়ে যাবে |
- হুমমমমম, আসছি |
............... বলে সবে ঘরের দরজা পর্যন্ত গিয়েছি, হঠাৎ মাথাটা কেমন যেন ঘুরে উঠলো | চোখের সামনে সবকিছু কেমন যেন ঝাপসা লাগছে | স্যারের মুখটা এত কা....... কা...... কাছে..... ছে.... কেনন
***************************
- আঁখি, আঁখি কি হল তোমার???? চোখ খোলো!!!! কথা বলছো না কেন??!!!!
উফ: মেয়েটা মোটে নিজের খেয়াল রাখে না | সারাদিন কিছু না কিছু....... এখন দেখো জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে অথচ আমাকে কিছু বুঝতেই দেয় নি | আমি কি এতটাই পাষাণ যে অসুস্থ্যতার কথা শুনলেও জোর করে বসিয়ে রাখব বলে মনে হয় তোমার??!!!! তাড়াতাড়ি কোলে করে বিছানায় এনে শুইয়ে দিলাম | ছোটো বেলায় দেখেছি জ্বর হলে মা মাথায় জলপট্টি দিয়ে দিত | ডাক্তার বাবু আসতে এখনও কিছুটা সময় লাগবে, ততক্ষণ না হয় জলপট্টিই..........
ওর ওই অচেতন নিস্পাপ মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কতক্ষন যে এভাবে বসে ছিলাম খেয়াল নেই | হঠাৎ ডোর বেলটা বেজে ওঠায় সম্বিৎ ফিরতে খেয়াল হল ডাক্তার বাবু আসার কথা তো, হয়ত উনিই হবে | তাড়াতাড়ি গিয়ে ওনাকে ভিতরে নিয়ে এলাম | এতক্ষন ধরে জলপট্টি দেওয়ায় জ্বরটা অনেক কম মনে হলেও ও এখনও চোখ খুলছে না কেন???!!!
- এখন জ্বরটা অতটা নেই ঠিকই, তবে শরীর খুবই দূর্বল | উনি কি ঠিক করে খাওয়া দাওয়া করেন না?? নিজের প্রতি যত্ন নেন না???
- সে আর বলতে, সারাদিন কিছু না কিছু ঘরের কাজ করেই চলেছে | না হলে আমার খেয়াল রাখতে ব্যাস্ত | কোনো কথা বললে শুনবে না |
- হুমমমমম, বুঝলাম |
- কেন স্যার, কি হয়েছে??!!! এনিথিং সিরিয়াস???!!!! দয়া করে বলুন না কি হয়েছে ওর!!!! ও, ও ঠিক আছে তো??!!!!
- আরে আরে এত ব্যাস্ত হওয়ার কিছু হয় নি | ঠান্ডা গরমে একটু জ্বর এসেছে ঠিকই, তবে শরীর ভীষন দূর্বল | আমি একটা ইনজেকশন দিয়ে দিচ্ছি, আশা করি কাল সকালের মধ্যে জ্ঞ্যান ফিরে আসবে | তবে এখন কিছুদিন বিশ্রামের প্রয়োজন | আবার যদি অনিয়ম শুরু করে.............
- না না ডাক্তার বাবু, আপনি চিন্তা করবেন না | একবার জ্ঞ্যান ফিরুক, তারপর দেখছি কেমন কথা না শোনে |
- হুমমমম, অসুবিধা হলে জানাবেন তাহলে | যদিও আশা করি আর কিছু হবে না, তাও |
- সে তো অবশ্যই | আমি কাল কেমন আছে আপনাকে অবশ্যই জানাব আর বিকেলে রক্তের রিপোর্ট গুলো নিয়ে তো যাবই, তখন আপনি ওকে আর একবার দেখে নেবেন |
- হুমমমম, সেটাই ভালো | চলি তাহলে |
- হ্যাঁ হ্যাঁ, চলুন |
- অনিরুদ্ধ বাবু যাওয়ার আগে একটা কথা বলবো কিছু মনে করবেন না তো? আসলে একটু পার্সোনাল তো তাই |
- না না বলুন না, কিচ্ছু মনে করবো না |
- আপনি আমার থেকে অনেকটাই ছোটো, তাই তুমি করেই বলছি কিন্তু |
- হ্যাঁ হ্যাঁ, অবশ্যই | এত কিন্তু কিন্তু করার কি আছে, বয়সে আপনি আমার পিতৃতুল্য | আপনি তুমি বলতেই পারেন |
- হুমমমম, আসলে সবসময় বকাবকি করলেই হয় না | ভালো যখন বাসো, তখন ভালোবেসেও তো পাশে থাকা যায় | জেনে রাখবে এমন অনেক অসুখ আছে যা ওষুধে নয়, একটু ভালোবাসাতেই সেরে যায় |
আসলে ওর মুখ চোখ দেখে মনে হয় ও খুব একাকিত্বে ভোগে | মনমরা হয়ে থাকে | তোমাদের পারিবারিক ব্যাপারে কথা বলা ঠিক না | একজন ডাক্তার হয়ে হয়ত এত ব্যাক্তিগত বিষয়ে কথা বলা উচিত না | তবু তোমার, তোমার স্ত্রীর প্রতি এত ভালোবাসা, চিন্তা দেখে মনে হল বলতে |
*******************************
"ভালোবাসা শুধু চায় ভালোবাসার সময়
ভালোবাসলে ভালোবাসার পাশে থাকতে হয়
হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে যদি ভালোবাসা ব্যাথা পায়
তখন, ভালোবেসে ভালোবাসাকে আপণ করে নিতে হয় |"