21-04-2020, 05:26 AM
সকালে হয়ত খুব বেশি বলা হয়ে গিয়েছে | এতটা রাগারাগি না করে একটু বুঝিয়ে বললেও হত হয়ত | কিন্তু তাতে যে আমি আরও ওর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়তাম | আর সেটা যদি ও বুঝে ফেলত তাহলে নিজেকে ভুলে আমার খেয়াল রাখার খেলায় মেতে উঠতে ওকে কেউ আটকাতে পারত না | হয়ত ওর ভালোবাসার খেলা ঘর সাজাতে ব্যাস্ত হয়ে আমিও জড়িয়ে পড়তাম ওর ভালোবাসার মায়ার বাঁধনে | সেদিক থেকে যা হয়েছে ভালোই হয়েছে, কিন্তু তখনের পর থেকে ওকে একবারও ঘরের বাইরে আসতে দেখিনি | দুপুর গড়িয়ে বিকেলও শেষ হতে চলল, মেয়েটা ঘরে আলো পর্যন্ত জ্বালায় নি | যাব কি যাব না ভাবতে ভাবতে কখন যে এ ঘরে এসে পড়েছি নিজেই বুঝতে পারিনি | কিন্তু এবার কি বলি ভেবে পাচ্ছি না | অনেক কষ্টে গলাটা একটু ভারী করে জিজ্ঞাসা করলাম.............
- সন্ধ্যা হতে চলল আলো জ্বালাও নি, এমন অন্ধকারে একলা বসে আছো কেন??!!!
- আলোয় যে বড় চোখ ধাঁধিয়ে যায়, তাই আলো জ্বালি নি | আর অন্ধকারে যে ছায়াও সাথ ছেড়ে দেয় তাই একলা |
- হুমমমমম, তাই বলে এমন ভাবে বসে থাকলে তো চলবে না | কিছু ভেবেছ এবার কি করবে??
- হুমমমম, দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় আছে | কিন্তু আমি আর ওই কলেজে যে যেতে চাই না | ওখানে গেলে সবার আলোচনার কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে পড়াশোনায় মন নিবেশ করাটা মুশকিল হয়ে পড়বে | তাই যদি...........
- হুমমমম, বুঝতে পারছি তোমার সঙ্কোচের কারণটা | একটু দূরে আর একটি কলেজে আমার এক বিশেষ পরিচিত বন্ধু আছে | আমি তার সাথে কথা বলে কিছুদিনের ভিতরই ব্যবস্থা করছি | তবে ততদিন গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘর সামলে ঘুরে বেরোলে হবে না, যতদিন না কলেজের ব্যবস্থা হচ্ছে ততদিন বাড়িতে আমার কাছেই পড়াশোনা শুরু করতে হবে |
- হুমমমমম, তবে আমার একটা অনুরোধ ছিল, যদি কিছু মনে না করেন তো..........
- শুনি কি অনুরোধ.........
- না মানে, আমার কি কি কাজে অনুমতি নেই যদি একটু বলে দেন তো সুবিধা হয় | অনিচ্ছাকৃত ভাবে আর আপনাকে উত্তেজিত করতে চাই না |
- সে তো তোমাকে কাল রাতেই আমি বলেছি | কোনো সঙ্কোচ করবে না নিজের মত করে থাকবে | তাহলে এখন কেন..........!!!!
- আসলে সকালে আপনি ওভাবে রেগে গেলেন তো | আসলে সারাদিন বই নিয়ে বসে থাকতেও ভালো লাগে না, তাই যদি ফাঁকা সময়টায় টুকটাক ঘরের কাজ.......... অবশ্যই সেটা আপনার অনুমতি নিয়ে | কারণ আপনার ব্যক্তিগত জিনিষে হাত দিয়ে আমি আপনাকে বিব্রত করতে চাই না |
- এমনভাবে বলার কিছু হয়নি | পড়াশোনার কাজ শেষ করে বাকি যা ইচ্ছা তুমি এখানে করতে পারো | কিন্তু কোনো কিছুর জন্যই তোমার কোনো ক্ষতি........ ওই..... ইয়ে...... মানে পড়াশোনার কোনো ক্ষতি আমি মেনে নেব না সেটা যেন মাথায় থাকে |
- আমি মন দিয়েই পড়াশোনা করব,আপনি দেখবেন | কোনো অসুবিধা হবে না |
- হুমমমম |
*****************************
তুমি বুঝবে না আঁখি কেন আমি তোমাকে আমার থেকে দূরে থাকার জন্য বলেছি | তোমার ওই চঞ্চল মায়া ভরা গভীর কালো দুটি চোখের জাদুতে আমি যে বাস্তব বোধ বুদ্ধি হারাতে বসেছি | আশপাশের এত ঝড় ঝাপটা সামলে হাজার প্রতিকূলতা সত্ত্বেও যখন তুমি খিলখিলিয়ে হেসে ওঠো, মনে হয় আমার এই অন্ধকার জীবন কেউ যেন হাজার হাজার তারার ঝাড়বাতি দিয়ে সাজিয়ে দিচ্ছে | যখন নিষ্পাপ শিশুর মত কৌতূহল নিয়ে তুমি প্রশ্ন করো, যখন কপট গাম্ভীর্যতা দেখিয়ে আদেশের সুরে কথা বলো, তখন তোমার ওই চোখের গভীরতায় দেখি আমি সর্বনাশ | তোমার কথা শুনতে শুনতে, তোমার ওই চোখের দিকে তাকিয়ে, আমি যে আমার সারাজীবন কাটিয়ে দিতে পারি |
হ্যাঁ, বাইরে থেকে দেখলে আমায় খুব রাগী, গম্ভীর, অনুভূতি শূন্য একজন মানুষ বলে মনে হয় | হয়ত আমি তাইই | আসলে অঞ্জলি চলে যাওয়ার পর থেকে নিজের মনের জানালাটা বন্ধ করে রাখাটাই অভ্যেস হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল | কিন্তু তুমি যে এমন মিষ্টি বসন্তের হাওয়ায় এতদিনের শক্ত আবরনটা এত সহজেই ভেঙে ফেলবে বুঝতে পারিনি | বুঝতে পারিনি আর পাঁচজন সাধারণ মেয়ের মত না, তোমাকে নিজের অজান্তেই নিজের মত করে ভাবতে শুরু করেছি | দিনের পর দিন, রাতের পর রাত তোমার আকর্ষণের বাঁধন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য যত লড়াই করেছি ততই তোমার মায়ার বাঁধনে আরও আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে পড়েছি | জানিনা কোনোদিন নিজের অনুভূতি গুলো তোমায় বলা হয়ে উঠবে কিনা, তবে সেদিনের রাতের ঘটনার পর ভালোই বুঝেছি যে তোমার আমার মাঝের এই আট বছরের দূরত্ব সমাজ ভালো চোখে মেনে নেবে না | হয়ত এ জীবনে এই দূরত্ব দূর হওয়ার নয় | তাই আমি চাই তুমি বাঁচো, নিজের মত করে | এর থেকে অনেক সুন্দর অনেক ভালো জীবন তোমার জন্য অপেক্ষা করে আছে | আর আমি তোমার ভালো থাকা দেখেই আনন্দে বাকীটা জীবন কাটিয়ে দিতে পারবো | তাই এই ভালো থাকার জন্য তোমায় যত আঘাত করতে হয় আমি করবো | আঘাতের চিহ্ন গুলো হবে তোমার আর তার প্রতিটা যন্ত্রণা হবে শুধু আমার |
একটা সুন্দর আলোকউজ্জ্বল জীবনই হবে তোমার জন্য আমার দেওয়া ভালোবাসার উপহার |
ভালো তো দূর থেকেও বাসা যায়,
অযথা বাঁধনের কি দরকার....... |
- সন্ধ্যা হতে চলল আলো জ্বালাও নি, এমন অন্ধকারে একলা বসে আছো কেন??!!!
- আলোয় যে বড় চোখ ধাঁধিয়ে যায়, তাই আলো জ্বালি নি | আর অন্ধকারে যে ছায়াও সাথ ছেড়ে দেয় তাই একলা |
- হুমমমমম, তাই বলে এমন ভাবে বসে থাকলে তো চলবে না | কিছু ভেবেছ এবার কি করবে??
- হুমমমম, দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় আছে | কিন্তু আমি আর ওই কলেজে যে যেতে চাই না | ওখানে গেলে সবার আলোচনার কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে পড়াশোনায় মন নিবেশ করাটা মুশকিল হয়ে পড়বে | তাই যদি...........
- হুমমমম, বুঝতে পারছি তোমার সঙ্কোচের কারণটা | একটু দূরে আর একটি কলেজে আমার এক বিশেষ পরিচিত বন্ধু আছে | আমি তার সাথে কথা বলে কিছুদিনের ভিতরই ব্যবস্থা করছি | তবে ততদিন গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘর সামলে ঘুরে বেরোলে হবে না, যতদিন না কলেজের ব্যবস্থা হচ্ছে ততদিন বাড়িতে আমার কাছেই পড়াশোনা শুরু করতে হবে |
- হুমমমমম, তবে আমার একটা অনুরোধ ছিল, যদি কিছু মনে না করেন তো..........
- শুনি কি অনুরোধ.........
- না মানে, আমার কি কি কাজে অনুমতি নেই যদি একটু বলে দেন তো সুবিধা হয় | অনিচ্ছাকৃত ভাবে আর আপনাকে উত্তেজিত করতে চাই না |
- সে তো তোমাকে কাল রাতেই আমি বলেছি | কোনো সঙ্কোচ করবে না নিজের মত করে থাকবে | তাহলে এখন কেন..........!!!!
- আসলে সকালে আপনি ওভাবে রেগে গেলেন তো | আসলে সারাদিন বই নিয়ে বসে থাকতেও ভালো লাগে না, তাই যদি ফাঁকা সময়টায় টুকটাক ঘরের কাজ.......... অবশ্যই সেটা আপনার অনুমতি নিয়ে | কারণ আপনার ব্যক্তিগত জিনিষে হাত দিয়ে আমি আপনাকে বিব্রত করতে চাই না |
- এমনভাবে বলার কিছু হয়নি | পড়াশোনার কাজ শেষ করে বাকি যা ইচ্ছা তুমি এখানে করতে পারো | কিন্তু কোনো কিছুর জন্যই তোমার কোনো ক্ষতি........ ওই..... ইয়ে...... মানে পড়াশোনার কোনো ক্ষতি আমি মেনে নেব না সেটা যেন মাথায় থাকে |
- আমি মন দিয়েই পড়াশোনা করব,আপনি দেখবেন | কোনো অসুবিধা হবে না |
- হুমমমম |
*****************************
তুমি বুঝবে না আঁখি কেন আমি তোমাকে আমার থেকে দূরে থাকার জন্য বলেছি | তোমার ওই চঞ্চল মায়া ভরা গভীর কালো দুটি চোখের জাদুতে আমি যে বাস্তব বোধ বুদ্ধি হারাতে বসেছি | আশপাশের এত ঝড় ঝাপটা সামলে হাজার প্রতিকূলতা সত্ত্বেও যখন তুমি খিলখিলিয়ে হেসে ওঠো, মনে হয় আমার এই অন্ধকার জীবন কেউ যেন হাজার হাজার তারার ঝাড়বাতি দিয়ে সাজিয়ে দিচ্ছে | যখন নিষ্পাপ শিশুর মত কৌতূহল নিয়ে তুমি প্রশ্ন করো, যখন কপট গাম্ভীর্যতা দেখিয়ে আদেশের সুরে কথা বলো, তখন তোমার ওই চোখের গভীরতায় দেখি আমি সর্বনাশ | তোমার কথা শুনতে শুনতে, তোমার ওই চোখের দিকে তাকিয়ে, আমি যে আমার সারাজীবন কাটিয়ে দিতে পারি |
হ্যাঁ, বাইরে থেকে দেখলে আমায় খুব রাগী, গম্ভীর, অনুভূতি শূন্য একজন মানুষ বলে মনে হয় | হয়ত আমি তাইই | আসলে অঞ্জলি চলে যাওয়ার পর থেকে নিজের মনের জানালাটা বন্ধ করে রাখাটাই অভ্যেস হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল | কিন্তু তুমি যে এমন মিষ্টি বসন্তের হাওয়ায় এতদিনের শক্ত আবরনটা এত সহজেই ভেঙে ফেলবে বুঝতে পারিনি | বুঝতে পারিনি আর পাঁচজন সাধারণ মেয়ের মত না, তোমাকে নিজের অজান্তেই নিজের মত করে ভাবতে শুরু করেছি | দিনের পর দিন, রাতের পর রাত তোমার আকর্ষণের বাঁধন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য যত লড়াই করেছি ততই তোমার মায়ার বাঁধনে আরও আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে পড়েছি | জানিনা কোনোদিন নিজের অনুভূতি গুলো তোমায় বলা হয়ে উঠবে কিনা, তবে সেদিনের রাতের ঘটনার পর ভালোই বুঝেছি যে তোমার আমার মাঝের এই আট বছরের দূরত্ব সমাজ ভালো চোখে মেনে নেবে না | হয়ত এ জীবনে এই দূরত্ব দূর হওয়ার নয় | তাই আমি চাই তুমি বাঁচো, নিজের মত করে | এর থেকে অনেক সুন্দর অনেক ভালো জীবন তোমার জন্য অপেক্ষা করে আছে | আর আমি তোমার ভালো থাকা দেখেই আনন্দে বাকীটা জীবন কাটিয়ে দিতে পারবো | তাই এই ভালো থাকার জন্য তোমায় যত আঘাত করতে হয় আমি করবো | আঘাতের চিহ্ন গুলো হবে তোমার আর তার প্রতিটা যন্ত্রণা হবে শুধু আমার |
একটা সুন্দর আলোকউজ্জ্বল জীবনই হবে তোমার জন্য আমার দেওয়া ভালোবাসার উপহার |
ভালো তো দূর থেকেও বাসা যায়,
অযথা বাঁধনের কি দরকার....... |