Poll: এই গল্পে আপনার কি ভালো লাগল?
You do not have permission to vote in this poll.
পরিকল্পনা
33.33%
10 33.33%
গল্পের কন্টেন্ট
46.67%
14 46.67%
গল্পের গতি
20.00%
6 20.00%
Total 30 vote(s) 100%
* You voted for this item. [Show Results]

Thread Rating:
  • 23 Vote(s) - 3.35 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Fantasy ধুমিয়ার  আঁধারী
#13
অধ্যায় 


ফোনের স্ক্রিনে দেখলাম- দেখলাম হুলা মাসী ফোন করেছে।

“হ্যালো?”, আমি ওনার ফোন পেয়ে একটু অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।

“হ্যাঁ, সন্ধ্যা?... আমি বলছি... তুই কি বইটা পোড়তে শুরু করেছিস?”

“হ্যাঁ...”, হুলা মাসী জানল কি করে?

“ভাল- ভাল... না মানে আমি এমনি ফোন করেছিলাম, আজকে দিনটা বেশ ভাল ছিল, তাই আজ থেকে বইটা পড়া শুরু করলে তুই ভাল ফল পাবি তাই ভাবলাম যে তোকে একবার জানিয়ে দি... তা ছাড়া আজ রাত বারোটা থেকে একটা ভাল যোগ আছে... তুই বৃদ্ধি মন্ত্রটা ব্যাবহার করে দেখতে পারিস...”

“আচ্ছা...”

“তুই এই সব নিয়ে পড়া শোনা করিস আর তোর একটু শখ আছে তাই ভাবলাম তোকে জানিয়ে দি, রাস্তা ঘাটে ত আর সব কথা বলা যায় না... আচ্ছা রাখছি...”

হুলা মাসীর ফোনটা রেখে দেবার পরেই যেন সব ঠিক হয়ে গেল। কিন্তু চাঁদের আলোয়ে আমি দেখলাম যে প্যাঁচাটা তখনো জাংলায়ই বসে আছে ওর গায়ে সাদা সাদা আর বাদামি রঙের পালক আছে মনে হল, বেচারা বোধ হয় ঝড়ে ভয় পেয়ে গেছে ও জাংলায় বসে থাকে থাকুক, নিজেই আবার উড়ে যাবে।

বইটা যেন আমাকে বেঁধে রেখে ছিল- টানছিল আমাকে- তাই আমি একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে আবার বইটা পোড়তে শুরু করলাম। বাকি পাতা গুলি পোড়তে আমার বেশি সময় লাগল না- আহ্বান করা শেষ প্রস্তুতির অধ্যায়ও পড়া শেষ, এবারে পরের অধ্যায় – “মন্ত্র এবং রীতি”

হুলা মাসী বলেছিলেন যে বইটার ৭০ নম্বর পাতায় লেখা রয়েছে ‘বৃদ্ধি মন্ত্র’ আর এই তুক সফল করার জন্য বিস্তারপূর্ণ ভাবে লেখা রয়েছ তার সাথে যুক্ত পদ্ধতি (যেটা নাকি সাত দিন টানা করে যেতে হবে) আর এই কাজে যা যা জিনিস লাগবে তার তালিকা। আমি পুরো লেখাটার উপরে একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম আর মোমবাতির আলোতেই একটা কাগজে সব জিনিস পত্র লাগবে সেই গুলি ও লিখে নিলাম, পরক্ষণেই দেওয়ালে টাঙ্গান ঘড়িটার থেকে ‘টং- টং’ করে ঘণ্টা বাজল- এখন রাত আট’ টা বাজে এখনো সব দোকান পাট খোলা আছে, কেন জানি না প্যাঁচাটা তখনই আমার দিকে ‘চ্যাঁ-চ্যাঁ-চ্যাঁ-চ্যাঁ’ করে উঠল। 

যেন আমাকে বলছে, “হ্যাঁ- হ্যাঁ, এখনি যাও- এখনি যাও”...

আমি তাড়াতাড়ি আবার নিজের ব্রা- প্যান্টি আর একটা টি- শার্ট আর জিন্সের প্যান্ট পরে, হাতে একটা থোলে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। ঘরে তালা দিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে মনে হল যে বাড়ির বড়রা বলে ছিলেন যেন রাতের বেলা মেয়েদের এলো চুলে বেরুতে নেই। চুলে একটা খোঁপা অথবা পোনি টেল বেঁধে নিলে হত। কিন্তু আজকাল এই সব কে আর মানে?

***

বাড়ির কাছেই একটা সুপার মার্কেট ছিল, যার ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে আমি বলতে গেলে সবই পেয়ে গেলাম, বিল দেবার সময় দেখলাম যে কাঁচের দরজা লাগান বড় বড় ফ্রিজে বিয়ার ক্যান গুলি সুন্দর ভাবে সাজান রয়েছে। আমি অনেক দিন বিয়ার খাইনি। আজ বৃদ্ধি মন্ত্রের তুক শুরু করার পরে বিয়ার আর পিজ্জা খেয়ে ঘুমাতে যাব।

বাড়ির জন্য অটো ধরার আগে আমি একটা ষ্টেশনারীর দোকান থেকে একটা চার্ট পেপার আর কয়েকটা মার্কার ও কিনে নিলাম। এতে আমাকে বইতে লেখা নির্দেশের মত একটা আসন আঁকতে হবে।তবে এই আসন বসার জন্য নয়...

বাড়ির কাছে অটো থেকে নেমে দত্তদার মুদি খানার দোকান থেকে আমি তিনটি লাল রঙের বড় বড় মোমবাতি কিনে নিলাম। দত্তদা একটু অবাক হয়ে বললেন, “দিদি, তুমি এই ‘কিং সাইজ’ মোমবাতি গুলি নিয়ে করবেটা কি? এখানে ত তেমন লোড শেডিং হয় না আজকাল...”

আমিও হেঁসে বললাম, “সাজিয়ে রাখব... দরকার হলে পলিতায় আগুন দেব...”
বাড়ি এসে দেখি যে কারেন্ট এসে গেছে। কিন্তু প্যাঁচাটা এখনো জাংলার কাছেই বসে আছে। যাই হোকনা কেন আমি তাড়াতাড়ি কিনে আনা জিনিস গুলি গুছিয়ে রেখে, বিয়ার ক্যান গুলি ফ্রিজে ঢুকিয়ে দিলাম। ব্যাটা সেল্‌স ম্যানটা আমাকে দু খানা বিয়ার ক্যানের সেট গছিয়ে দিয়ে ছিল- একটা সেট মানে ছয়টা ক্যান আর ছয়টা ক্যানের সাথে নাকি একটা ক্যান ফ্রি। শেষকালে আমি ১৪ টা ক্যান নিয়ে বাড়ি ফিরে ছিলাম। 

তারপরে আমি বইটা খুলে নির্দেশ গুলি আবার পড়ে বারান্দায় গিয়ে আধা শুকিয়ে যাওয়া গোলাপ গাছটার থেকে একটা ফুল ও কিছু পাতা ছিঁড়ে নিয়ে এসে বইয়ের লেখা অনুযায়ী একটা কাগজে মুড়ে সেটি সুতো দিয়ে বেঁধে দিলাম আর ভাবলাম যে এবারে জামাকাপড় বদলে চার্ট পেপারে আসনটা আঁকতে হবে। আমি টি-শার্ট আর জিন্স খুলে যেই নাইটিটা পোরতে গেলাম, প্যাঁচাটা আবার ‘চ্যাঁ-চ্যাঁ-চ্যাঁ’ করে উঠল... এ কি রে বাবা? এবারে আমি প্যাঁচাটাকে লক্ষ করে যেন জিজ্ঞেস করলাম, “কি রে প্যাঁচা? আমাকে কি সব এলো চুলে ল্যাংটো হয়ে করতে হবে?...”

প্যাঁচাটা দু বার এপাশ ওপাশ দুলে যেন স্বীকৃতি জানাল, আশ্চর্য ব্যাপার আমার কেমন যেন একটু অদ্ভুত লাগছিল। একবার ভাবলাম যে কেন না আমি একবার হুলা মাসিকে ফোন করে জিজ্ঞেস করে নি? ফোন করার কোন লাভ হল না, হুলা মাসীর ফোন লাগছিল না- সেটি নাকি এখন কভারেজের বাইরে ছিল, তাছাড়া আমার বইতে লেখা কথা গুলি মনে পড়ল, মনে হয় এতে লেখা সব রীতি গুলি অসারত্ব, পূর্বধারণা, অহং ত্যাগ করে একেবারে হীন, নির্বস্ত্র এবং নম্র হয়েই করতে হবে - আমি একটু ইতস্ততটা সহ আবার নিজের ব্রা আরে প্যান্টি খুলে ফেললাম, আশা করি খোলা জাংলা দিয়ে কেউ আমাকে এই উলঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলবে না। 

আঁকা শেষ হবার পরে আমি চার্ট পেপারটা নিজের সামনে দুই হাতে তুলে ধরে নিজের আঁকা দেখে বেশ গর্বিত মনে করলাম। 

 [Image: Tuk2-Ason.jpg]

সোজা লাইন আমি স্কেল দিয়ে টেনে ছিলাম আর বক্র রেখা গুলি টানার সময় একটা পাড় উঁচু থালার সাহায্য নিয়ে ছিলাম। এক্ষণ ঘড়িতে বাজে রাত ১১:২০, সময় আছে।

বেড রুমে জায়গার অভাব, তাই আমি বাইরের ঘর যেইখানে আমার ছোট্ট সোফা, খাবার টেবিল আর মাইক্রোওয়েভ মেশিনটা আছে, সেইখানেই আসনটাকে মাটিতে পেতে আমি ওর উপরে যে আকৃতিটা এঁকে ছিলাম, তার ত্রিভুজের প্রতিটি কোনায় একটা করে লাল মোমবাতি রাখলাম। এই আসনে আমাকে তুক সফল করার জন্য যা যা জিনিস লাগে সেই গুলি আঁকা আসনের উপরে রাখতে হবে। আমি তাই করতে আরম্ভ করলাম। 

তারপরে কাগজে মোড়া গাছের ফুল পাতা গুলি আকৃতির ভিতরে রাখলাম। এবারে বইতে লেখা ছিল, যে ‘প্রতিপালক’ অশরীরীকে তৃপ্ত করার জন্য কিছু খাবারও রাখতে হবে, কিন্তু কি রাখতে হবে তা লেখা ছিল না। আমি কি যেন মনে হল যে আমি পিজ্জাটা মাইক্রোওয়েভে গরম করে, তার থেকে একটা স্লাইস (টুকরো) আর দুটি বিয়ার ক্যান নিয়ে একটি থালায় সাজিয়ে, সে গুলিও আকৃতির ভিতরে রাখলাম। আমার নজর জাংলার দিকে আবার গেল। দেখি আশ্চর্য ব্যাপার, প্যাঁচাটা তখনো জাংলায় বসে আছে আর যেন আমি কি করছি সেটা ভাল করে লক্ষ করছে।

আমি বইটা হাতে নিয়ে, ৭০ নম্বর পাতায় লেখা বৃদ্ধি মন্ত্রটা কয়েকবার মনে মনে পড়লাম। তারপরে আমি নিজের আঁকা আসনের সামনে মাটিতে বসে একটা কৌতূহল আর উৎসাহের মধ্যে  অপেক্ষা করতে লাগলাম... যেই রাত বারোটা বাজল, চোখ বুজে ফিস ফিস করে মন্ত্রটা উচ্চারণ করতে লাগলাম :-

কারোপিকো আহাঊ,আহাঊ,আহাঊ
কো রেইয়া টোকু হিয়া হিয়া ঈঙ্গা
আনা আহাঊ কীটূ টুকু টুপু উঙ্গা
আমার গোলাপ গাছ বেড়ে উঠুক, সুস্থ হোক আর যেন ভাল ফুল হয়
হিয়াহিয়াটিয়া আনা ভাকারিটি ই 

এই মন্ত্রটি আমার ৪৯ বার উচ্চারণ করার কথা, তাই আগের মতই হাতের আঙ্গুলে কতবার মন্ত্র উচ্চারণ করেছি তার গণনা রাখতে লাগলাম... ঠিক ৪৯ মন্ত্র পড়ার পর, আমি চোখ খুলেই চমকে উঠলাম!

দেখি যে কখন প্যাঁচাটা নিঃশব্দে ঘরের ভিতরে উড়ে এসে আমার পাতা আসনের সামনে বসে আছে আর আমাকে দেখছে। 

ক্রমশঃ
[+] 2 users Like naag.champa's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: ধুমিয়ার  আঁধারী - by naag.champa - 19-04-2020, 11:22 AM



Users browsing this thread: