Thread Rating:
  • 25 Vote(s) - 3.4 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance রূপাই নদীর রূপকথা/কামদেব
#38
।।১৩।।


     স্কুল-কলেজের পাঠ শেষ, কাজ-কম্ম নেই,বেলা করে ঘুম থেকে ওঠা অভ্যাস। সময়মত উঠতে পারবো কিনা দুশ্চিন্তা নিয়ে রাতে ঘুমিয়েছি।সুর্য ওঠার আগেই আমি উঠে পড়লাম ঘড়িতে সবে চারটে বাজে ভাবছি আবার শুয়ে পড়বো কিনা? ঝুঁকি নেওয়া সমীচীন হবে না।যদি ঘুমিয়ে পড়ি ঠিক সময় উঠতে না পারি? বাথরুম সেরে বেরোতে কোথায় যেন পিড়িং করে শব্দ হল। মনে পড়ল কাল রাতে দময়ন্তী একাটা মোবাইল ফোন দিয়েছিল।
অপটু হাতে সুইচ টিপে দেখলাম মেসেজ এসেছে। গুড মর্নিং মন।...দিয়া।
সকাল বেলায় দিয়ার মেসেজ পেয়ে আলোকিত হয়ে উঠল চরাচর।দারুণ তো,দুজনের দেখা হল না কিন্তু কথা এসে গেল।লোকের হাতে মোবাইল দেখেছি কিন্তু হাতে ধরে দেখার সুযোগ হয়নি।ভোর বেলা আমার কথা দিয়ার মনে পড়েছে।কেউ একজন কারো কথা ভাবলে কারই না ভাল লাগে?বিশেষ করে দিয়ার মত সুন্দরী মেয়ে যদি হয়?দিয়ার মুখটা মনে পড়তে মনটা মিইয়ে গেল,গম্ভীর সব সময় রাগী-রাগী ভাব--একটু হাসতে পারেনা?ঐটুকু মেয়ে অত কি চিন্তা তোমার?
শিয়ালদা স্টেশনের খুব কাছে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোডের উপর সন্দীপ মজুমদারের অফিস খুঁজেপেতে অসুবিধে হলনা। ঘরে ঢুকে দেখলাম সুন্দর পরিপাটি করে সাজানো একটা দেওয়ালে প্রায় ছাদ সমান উঁচু বই ভর্তি তাক।হাফ রাউণ্ড টেবিলের পেটের ভিতর বসে আছেন সুবেশা এক মহিলা।দেওয়ালে ঈশ্বর চন্দ্র রবীন্দ্রনাথ বিবেকানন্দের ছবি।
--সন্দীপ মজুমদার?
--হ্যা বলুন।আমি তার স্ত্রী সুদেষ্ণা।
--আমি মনোজমোহন--।
--ও আপনি?বসুন-বসুন। সুদেষ্ণা বললেন।
আমি বসতে বসতে বই এবং চিঠি এগিয়ে দিয়ে বললাম, আপনি আমাকে 'তুমি' বলবেন।
--ও শিয়োর।তুমি অনুরাধার ভাই?
একটা ফোন কল রিসিভ করে আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,তোমার বাইওডাটা এনেছো?
বাইওডেটা মানে রেজাল্ট? এগিয়ে দিলাম।
মনোযোগ দিয়ে দেখলেন সুদেষ্ণা।সাহেবি পোশাক সুদর্শন চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা এক ভদ্রলোক ঢুকে বললেন,তুমি ব্যস্ত আছো?
সুদেষ্ণা হেসে বললেন,তুমি? এই দ্যাখো তোমার শালি কি পাঠিয়েছে? আর এ মনোজ--।
--বহুকাল দেখিনা অনুরাধাকে।আমার দিকে তাকিয়ে বল্লেন,কেমন আছেন অনুরাধা?
--ভাল আছেন।
--তোমাকে কেন পাঠিয়েছে,বুঝতে পারছো?সুদেষ্ণা জিজ্ঞেস করেন।
--কিছুটা পারছি।
--বাকিটা তোমাকে বুঝিয়ে দিচ্ছি। আমরা দুজনে মিলে এই সেন্টারটা চালাই। এটা ছাড়া আমাদের পাচটা ব্রাঞ্চ আছে। মেনলি বিসিএস আইএএস ইউপিএসসি মিস্লেনিয়াস গাইড করি।এছাড়া কয়েকটা ব্রাঞ্চে রেল এসএসসিও গাইড করা হয়। অনুরাধার ইচ্ছে তুমি বিসিএস করো।তোমাকে খাটতে হবে।আশাকরি অনুরাধা না বুঝে তোমাকে পাঠায়নি। তোমার রেজাল্ট দেখলাম--ওকে।
--টাকার ব্যাপারে একটু যদি বলেন।
সুদেষ্ণা হাসলেন,তোমাকে সব বলবো। তুমি আগে বলো খাটতে পারবে কিনা।এটা আমাদের প্রেসটিজের ব্যাপার। হ্যাঁ বিসিএস-এ চার্জ ফিফটি থাউসেণ্ড তবে একবারে দিতে হবেনা।
--তা হলে বোধহয় হলনা।হতাশ গলায় বললাম।
উঠে দাড়াতে সুদেষ্ণা বললেন,তুমি বড় অস্থির,বোসো।টাকার কথা তোমাকে ভাবতে হবেনা,বোসো।
পাশে দাঁড়িয়ে সন্দিপবাবু বইটা খুলে মনে হল পড়ছেন।সেদিকে তাকিয়ে সুদেষ্ণা বলেন,কি ব্যাপার শালির কবিতায় ডুবে গেলে যে?
--ভদ্রমহিলার লেখার স্টাইলটা রিয়েলই প্রশংসার দাবী রাখে। শোনো যে কথা বলছিলাম--একটু ওঘরে চলো--।
--যাও যাচ্ছি। শোনো মনোজ তুমি নৈহাটি ব্রাঞ্চে জয়েন করো কাল থেকেই। কয়েকমাস পরেই পরীক্ষা।চা আসছে একটু বসো।আমি একটা কাজ সেরে আসছি।
কিছুক্ষন পর ফিরে এসে বললেন,তোমাকে অনেক্ষন বসিয়ে রেখেছি।
--না না আমার কোনো তাড়া নেই।
--শোনো সেশন শুরু হয়ে গেছে তুমি কালই নৈহাটি সেণ্টারে জয়েন করো।
--কিন্তু ম্যাম--।
--আর কথা নয় অনেক দেরী হয়ে গেছে।ফোন বাজতে উনি ফোন ধরলেন।আমি অফিস থেকে বেরিয়ে আসি।
স্টেশনে ভীড় গিজ গিজ করছে লোক।ভীড়ের মধ্যে ঠেলে ঠুলে ট্রেনে ঢুকে দেখলাম বসার জায়গা নেই।ভিতরে না ঢুকে ফুটবোর্ডে দাঁড়িয়ে থাকি।ঘামছি ট্রেন ছাড়লে একটু হাওয়া আসবে।ট্রেন নড়ে উঠলো যাক স্বস্তি।বিধান নগর পৌছাতে নজর পড়ল পিছনে এক কোনায় বসে আছে দময়ন্তী।পাশে একজন বয়স্ক লোক এমন ভাবে ঘেষে বসে মনে হচ্ছে ওর পরিচিত।আমাকে মনে হয় দেখেনি।
--এ্যাই গুণ্ডা।হাত নেড়ে মনে হল আমাকে ডাকছে।
আশপাশের লোকজন আমাকে অবাক হয়ে দেখছে। আমি চোখ বুজে হাতল ধরে দাঁড়িয়ে থাকি।
--এ্যাই গুণ্ডা শুনতে পাচ্ছো না? 
একজন খুচিয়ে আমাকে বলল,আপনাকে ডাকছে মনে হয়।
নিরুপায় হয়ে ভীড় গুতিয়ে ওর সামনে গিয়ে বললাম,কি ব্যাপার?
--একটু চড় থাপ্পড় দিতে হবে তাই ডাকলাম।
পাশের বয়স্ক লোকটি অস্বস্তি বোধ করে।
--আমিই পারতাম--।
বয়স্ক লোকটি তড়াক করে উঠে দাঁড়িয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেল।বুঝলাম ভদ্রলোক নামবেন তাই বসার জন্য আমাকে ডেকেছে। দময়ন্তী সেই ফাকা জায়গা দেখিয়ে বলল,বোসো।
দমদম ছেড়ে গেল ভদ্রলোক নামলেন না।দময়ন্তী ওর দিকে তাকাতে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন।
--শালা হারামী তখন থেকে কনুই মারছে।যত সরে যাচ্ছি তত আরো এগিয়ে আসছে।
এতক্ষনে বুঝলাম কেন আমাকে ডেকেছে,জিজ্ঞেস করি,তুমি গুণ্ডা বললে কেন আমার নাম জানো না?লোকে হা-করে আমাকে দেখছিল।
দময়ন্তী ফিক করে হেসে বলল,গুণ্ডা ইজ মাই ফেভারিট।ওদের মধ্যে ফাইটিং স্পিরিট আমার খুব ভালো লাগে।
--গুন্ডা ভাল লাগে?বাপি কেলোকেও তোমার ভাল লাগে?
--ধ্যৎ ওগুলো গুণ্ডা নাকি?ওরা তো ছিচকে।
--আমি যদি তোমাকে দমু বলে ডাকি তোমার ভালো লাগবে?
ঘাড় ঘুরিয়ে আড়চোখে আমাকে এক পলক দেখে বলল,নো প্রবলেম তোমার ভাল লাগবে বলবে।  

হিজলতলিতে নামলাম তখন রাত আটটা। আবার ফোন বেজে উঠল,কানে লাগাতে শুনতে পেলাম,কনগ্রাচুলেশন দময়ন্তী--। যাঃ বাবা! কে মেয়েটা? এর আগেও ফোন এসেছে কয়েকবার। এতো এক ঝামেলা হল।এককথা কতবার বলা যায়? আবার পুনরাবৃত্তি করলাম, আপনি ভুল করছেন--। ফোন কেটে গেল। একবার ভাবলাম অনুদিকে খবরটা দিয়ে যাই। কিন্তু এভাবে ভীড়ের মধ্যে যাওয়া ঠিক হবে কি? বাড়ী গিয়ে আসতে হলে রাত হয়ে যাবে।
ভোলার সঙ্গে দেখা,খুব খুশি। হাতে একটা প্যাকেট দেখিয়ে বলল, মনাদা যত রাত হোক তোমাকে যেতে বলেছে দিদিমণি। হেভি খাওয়া-দাওয়া। ভোলা আর দাঁড়ালো না।মনেহল ভোলার হাতে খাবারের প্যাকেট।
স্নান করে নিলাম।ভোলা এসেছিল কোথায় থাকিস সারাদিন?
মনে পড়ল ভোলা বলেছিল, ভাবছি এতরাতে যাব কিনা? হঠাৎ খেয়াল হয় ম্যাডাম সুদেষ্ণা একটা চিঠি দিয়েছেন অনুদিকে দেবার জন্য। ইশ আসার পথে দিয়ে আসতে পারতাম।না, যেতেই হচ্ছে। আমি আসছি মা বলে বেরিয়ে পড়লাম।মলিনা বৌদির বাড়ির কাছে আসতে সতর্ক হলাম। খানিক এগোতে নজরে পড়ল দুজন পুরুষ-মহিলা অন্ধকারে দাঁড়িয়ে ঘনিষ্টভাবে আলাপরত। একজনেকে চিনতে পারলাম মলিনাবৌদি।রমেশদা ফিরে এল নাকি? রমেশদা বাড়িতেই কথা বলতে পারতো।হাটার গতি বাড়িয় দিলাম।
অনুদির বাড়ির দরজা খোলা, এক ভদ্রলোককে দেখলাম বেরিয়ে যেতে। একটু ইতস্তত করে ঢুকে পড়লাম। মনে হচ্ছে অনুষ্ঠান শেষ,একে একে অতিথিরা চলে যাচ্ছেন। ওদের মধ্যে অনুদিকেও দেখলাম,আমাকে দেখেও যেন দেখেনি এমনভাবে কথা বলছে। একটা টেবিলে দেখলাম কয়েকটা খালি বোতল।কিসের বোতল কিছুটা অনুমান করতে পারি। একটা সুন্দর মাতাল করা গন্ধ ছড়িয়ে আছে সারা ঘরে।সুগতদা-বৌদি কি বাড়ি নেই নাকি? এখন ভাবছি, না-এলেই ভাল হত। চিঠিটা কাল সকালে দিলে মহাভারত অশুদ্ধ হতনা।সবাই চলে গেল আমার দিকে ফিরেও দেখছেনা কেউ। এতক্ষণে অনুদির নজরে পড়ল আমাকে, মৃদু হেসে বলল, দাঁড়িয়ে আছিস কেন,ভিতরে আয়।
মনে হল অনুদির দাড়াতে অসুবিধে হচ্ছে,কথা জড়িয়ে যাচ্ছে। ইতস্তত করে ঘরে ঢুকলাম। অনুদি জিজ্ঞেস করল,সুদেষ্ণা কি বলল?
আমি চিঠিটা এগিয়ে দিলাম।
--কি লিখেছে,পড়।
--তোমার চিঠি আমি পড়বো?
--তুই আমি কি আলাদা?আমি বলছি পড়।
আমি চিঠি খুলে দেখলাম সংক্ষিপ্ত চিঠি।
--জোরে পড়,না হলে বুঝবো কি করে?
--"প্রাণ প্রতিম বন্ধু অনুরাধা, শুভ জন্মদিনে সন্দীপ এবং আমার পক্ষ হতে জানাই আন্তরিক শুভকামনা। ছন্নছাড়া জীবন আর কতদিন? পরের জন্য অনেক করেছিস এবার নিজের প্রতি দয়া কর। আমি বলি কি একটা বিয়ে করে জীবনকে শৃংখলার নিগড়ে বাঁধ। সব পুরুষকে এক তৌলে ফেলে বিচার করলে ভুল হবে। সন্দীপ আমাকে দোষারোপ করে এভাবে একটা প্রতিভার অপচয় তুমি কিভাবে সহ্য করো সুষি? একদিন আয় অনেক কথা আছে।ইতি--তোর সুদেষ্ণা।"
চিঠি পড়ে অনুদির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ছল ছল করছে চোখ।জিজ্ঞেস করি, আজ তোমার জন্মদিন? আমাকে বলোনি তো?
ম্লান হেসে অনুদি বলে,তুই ও ঘরে হ্যাঁঙ্গার থেকে আমার কালো নাইটিটা নিয়ে আসবি?বড় ক্লান্ত লাগছে রে।
আমি পাশের ঘরে গেলাম। বুঝতে পারলাম সুগতদা বৌদি কেউ বাড়িতে নেই। হ্যাঙ্গারে পরপর অনেকগুলো নাইটি ঝুলছে। কালো নাইটিটা নিয়ে এঘরে এসে দেখলাম, শাড়ি খুলে ফেলেছে অনুদি,পরনে কেবল পেটিকোট আর জামা। পৌনে ছফুট দীর্ঘ, চুল এলিয়ে আছে পিঠে। অনুদিকে মনে হচ্ছে গান্ধার শিল্পের কোন প্রস্তর খোদিত রমণী মুর্তি।
--হা করে কি দেখছিস? নাইটিটা দে।
চেয়ার ছেড়ে হাত বাড়িয়ে নাইটীটা নিতে গিয়ে টাল খেয়ে পড়ছিল।আমি ধরে সামলাবার চেষ্টা করি। একটা হাত অনুদির স্পঞ্জের মত নরম স্তনের উপর পড়ল।
--উঃ মাগো এখুনি পড়ছিলাম!
--কেন খাও এসব?
--তুই বুঝি পছন্দ করিস না?
--না তা নয়--পড়লে কি হত বলতো?
--পড়বো কেন তুই আছিস কি করতে? পিছনের হুকগুলো খুলে দে।
অনুদি কি বলছে? আমি হুক খুলে দেবো?আমার দিকে পিছন ফিরে বলে, ক্যাবলার মত দাঁড়িয়ে আছিস কেন? তোকে কি বললাম শুনিস নি?
আমার হাত-পায়ে কাঁপন শুরু হল। কান দিয়ে আগুন বেরোচ্ছে। পিছনে দাঁড়িয়ে কাপা-কাপা হাতে হুক খুলতে থাকি সামনে যেতে ভয় হয় কি জানি কি দেখবো? সামনে যেতে হলনা হুক খোলা হলে অনুদি ঘুরে দাঁড়িয়ে বলে, এইতো লক্ষি ছেলে।
উপরিভাগ সম্পুর্ন নগ্ন। বালু পাথরের মত রং,দিয়ার মত ফর্সা নয়। স্তনযুগল ঈষৎ নতমুখী। আমার দৃষ্টি মাটিতে চোখ তুলে তাকাতে পারছিনা। অনুদি গুনগুন করে গান গাইছে 'আমার সকল নিয়ে বসে আছি সর্বনাশের আশায়----।'
--অনুদি তুমি শুয়ে পড়ো,আমি আসি--?
--শুয়ে পড়বো কিরে, খাবো না? তুই খেয়েছিস?
বেশিক্ষিন দাঁড়ালে কি জানি কি হয়?শরীরের মধ্যে কেমন করছে।এখান থেকে বেরোতে পারলে নিশ্চিন্ত।বললাম, বাড়ি গিয়ে খাবো।
--তার মানে? তুই আমার গেস্ট আজ এখানে খাবি।
--মা চিন্তা করবে।অনুদি আমি যাই?
--মাসিমা চিন্তা করবে কেন? আমার কোন দায়িত্ব নেই? আমি খবর দিয়ে দিয়েছি।
--তুমি গেছিলে আমাদের বাড়ি? গলায় বিস্ময়।
--পাগল! এই অবস্থায় আমি মাসিমার কাছে যাই? ভোলাকে দিয়ে খবর দিয়েছি।
--ভোলা? আমি তো জানতাম ভোলা কল্যানদার চামচা। তোমারও চামচা নাকি?
--ভোলা কারো চামচা নয়,ভোলা ক্ষিধের দাস।
খুব সহজ কথা কিন্তু বুকের মধ্যে ছ্যত করে বাজে।আমি ভোলাকে চিনতে পারিনি। অনুদিকে বলি, তুমি ভোলার জন্য কিছু করতে পারো না?
--আমাদের স্কুলে একজন পিওন নেবে।দেখি সেখানে ঢোকাতে পারি কিনা?
মনে পড়ল একটু আগে সুদেষ্ণা মজুমদারের চিঠির কথা। 'পরের জন্য অনেক করেছিস--।'অনুদিকে এই মুহূর্তে মনে হয় মুর্তিময়ী করুণা আর দাদার ব্যাবহারে লজ্জিত বোধ করি।
--কি ভাবছিস আয় খাবি আয়।
আমার গলা শুকিয়ে এসেছে,খাবো কি? অনুদি আমার অবস্থা বুঝতে পেরে বলে,আয় সহজ করে দিই।
অনুদি আমার গলা জড়িয়ে ধরে নিজের বুকে চেপে ধরে। নরম বুকে মুখ ডুবে যায়।নিশ্বাস নিতে পারিনা। একটা অবস্থায় সবাই এক। অতৃপ্ত রেবতিবৌদি নিরক্ষর মলিনাবৌদি বিদুষী অনুদিতে কোন ফারাক থাকেনা। আমাকে ছেড়ে দিয়ে অনুদি বলে, তোর নামের মানে জানিস?
--মন হতে জাত মনোজ। আমি বললাম।
--মনোজ মানে অনঙ্গ কামের দেবতা। তুই খুব সরল এই জন্য তোকে আমার ভাল লাগে। হিপোক্রিটদের আমি দুচোখে দেখতে পারিনা।তুই মন দিয়ে পড়াশুনা কর,অনেক ভরসা তোর উপর। তুই আমার কাছে একটা চ্যালেঞ্জ,আমার মুখ রাখিস সোনা। সন্দীপের গাইডেন্সে আমি সিয়োর তুই পারবি।তাড়াতাড়ি খেয়ে নে,তারপর তোকে একটা গল্প শোনাবো।
একটা বোতলে খানিকটা পানিয় ছিল,সেটুকু গেলাসে ঢালল অনুদি,প্রায় আধ গেলাসের উপর।আমি বললাম,আবার অতটা খাবে?
--কি করবো,কত দাম জানিস?নষ্ট করবো? এককাজ করি দুজনে ভাগ করে নিই?
--কিছু হবেনা তো?
--কি হবে আমি তো আছি।অনুদি আর একটা গেলাসে অর্ধেক দিল আমাকে।
অনেকদিনের ইচ্ছে একটু স্বাদ নেবার। রাতের দিকে রিক্সাওলারা খায়, সস্তার পানিয়। একচুমুক দিলাম,খারাপ লাগল না। ঝিমঝিম ভাব এল।অনুদিকে বললাম, তোমাকে একটা কথা বলবো?
অনুদি চোখ মেলতে পারছেনা।একটা মাংসের টুকরো মুখে দিতে গিয়ে থেমে গেল।
বললাম, তোমার বন্ধু ঠিকই বলেছেন,তুমি এবার বিয়ে করো।
অনুদি মাংসের টুকরো মুখে দিয়ে চিবোতে থাকে,একসময় আমাকে চমকে দিয়ে বলে, তুই আমাকে বিয়ে করবি?
দময়ন্তী একদিন বলেছিল অনুদি বয়সে আমার চেয়ে বড়। এখন বুঝতে পারছি কেন বলেছিল। কখন এনে দিয়েছি অথচ অনুদি নাইটিটা গায়ে দেয়নি।গা ছমছম করছে।
কিছু বললিনা তো? অনুদি জিজ্ঞেস করে আবার।
--আমি তোমার চেয়ে ছোট--।
--বউকে বরের চেয়ে জ্ঞানে বুদ্ধিতে বয়সে ছোট হতেই হবে? যাতে চিরকাল দাবিয়ে রাখতে পারে--তাই না?
--না মানে আমি বেকার নিজেরই কোন ঠিক নেই,বউকে কি খাওয়াবো বলো?
অনুদি বেসিনে মুখ ধুতে ধুতে বলে,সে সব তোকে ভাবতে হবেনা।আমি আমার বরকে খাওয়াবো।
বুঝতে পারছিনা আমার কি নেশা হয়ে গেছে?যা হচ্ছে সব কি সত্যিই? আমি বললাম, ঠিক আছে তুমি যা বলবে।
অনুদি পেটিকোট খুলতে লাগল। ঐ একটিমাত্র বস্ত্র অনুদির পরনে ছিল।
--অনুদি তুমি কি করছো?
--যার উপর ভরসা করে কাটাবো সারা জীবন তার পরীক্ষা নেবো না?
পেটিকোট খুলে নীচে পড়ে গেল।সম্পুর্ণ অনাবৃত অনুরাধা বসু। সারা ঘর আলোকিত রূপের ছটায়। মুগ্ধ বিস্ময়ে তাকিয়ে আছি। অনুদি এগিয়ে এসে আমাকে উলঙ্গ করল, বাধা দেবার শক্তি নেই আমার।আমি মেঝেতে বসে পা জড়িয়ে ধরে বলি, আমি কি পারবো?
অনুদি আমাকে তুলে দাড় করিয়ে জড়িয়ে ধরল। হাত দিয়ে আমার ধোন চেপে ধরে বলে, বাঃ বেশ লম্বা তো কিন্তু এত নরম কেন?
--আমি কি করবো?
--ঠিক আছে তোকে কিছ করতে হবেনা,আমিই করছি।
আমাকে খাটে বসিয়ে মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসে ধোনটা মুখে পুরে নিল।আমাকে বলল,তুই আমার কাঁধটা টিপে দে।
অবাক ব্যাপার কিছুক্ষণের মধ্যে শিথিল লিঙ্গ শক্ত কাঠের মত হয়ে গেল। মুখ থেকে বের করে ধোনের দিকে তাকিয়ে অনুদি বলল, সত্যিই সার্থক তোর নাম, তুই মুর্তিমান কামদেব।
প্রসঙ্গ বদলাবার জন্য বলি, তুমি কি গল্প বলবে বলেছিলে--।
--তোর মনে আছে? হ্যাঁ বলবো সেই গল্প।ভিতরে তোর ত্রিশূল গেঁথে নিয়ে বলবো।
[+] 7 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: রূপাই নদীর রূপকথা/কামদেব - by kumdev - 19-04-2020, 11:12 AM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)