19-04-2020, 08:34 AM
(This post was last modified: 30-11-2023, 10:32 AM by naag.champa. Edited 4 times in total. Edited 4 times in total.)
অধ্যায় ২
সেদিন অফিসে বিশেষ কাজ ছিল না, তাই বোধ হয় আমার মনে হচ্ছিল যে সময়টা যেন বড় আস্তে আস্তে কাটছে, আমি বার বার ঘড়ি দেখ ছিলাম, কিন্তু সময় আর যেন কাটছিল না। আমাদের কোম্পানির মালিক খুব কড়া ব্যক্তি ছিলেন- তিনি নিয়ম, অনুশাসন এবং সময়নিষ্ঠার প্রতি বিশেষ জোর দিতেন। কিন্তু সেদিন কেন জানি না উনি অফিসে শুধু কয়েকজন কে থকাতে বলে আমাদের প্রায় দুই ঘণ্টা আগেই ছুটি দিয়ে দিলেন, হাজার হোক সেদিন শুক্রবার ছিল। আমি যেন হাতে চাঁদ পেয়ে গেলাম।
সাধারণত আমি বাড়ি গিয়ে স্নান করে, রান্না বান্না সেরে একটু টিভি দেখতাম, কিন্তু সেদিন যেন আমার আর তর সই ছিল না। আমার অনুসন্ধিৎসার যেন কোন সীমা ছিল না, তাই সে দিন আমি ফোন করে বাড়িতে পিজ্জা অর্ডার করলাম আর একটা নাইটি পরে নিজের চুল গুলি জড় করে উঁচু করে খোঁপা বেঁধে, ব্যাগ থেকে বইটা বের করে পোড়তে লাগলাম।
হ্যাঁ, বইটি দুর্লভ বটে! আমি নিজের নব অর্জিত সম্পদ ১৮৯২ সালে প্রকাশিত- “প্রাচীন গুপ্ত বিদ্যা”- নিয়ে একটু পোড়তে বসলাম। বাঁধানো মলাট খোলার পরেই বইয়ের নাম আর প্রকাশনের সাল লেখা আছে, তবে আজব ব্যাপার, কোন লেখক/ লেখিকার নাম নেই। আমি তার পরের পাতা উলটলাম, সেই পাতার লেখা পড়ে আমি একটু চমকে উঠলাম। লাল কালি দিয়ে মোটা হরফে লেখা ছিল –
আমি এটা পড়েই শিউরে উঠলাম! কিন্তু যেমন করে আমি ছোট বেলায় ভয়- ভয় ভূতের সিনেমা দেখতাম- ঠিক সেই ভাবে আমি বইয়ের এক একটা পাতা পোড়তে লাগলাম। বইটার প্রবর্তন পোড়তে পোড়তে বুঝতে পারলাম যে বইটির লেখক অনেক দেশের সংস্কৃতি, আস্থা, জাদু বিদ্যা, তন্ত্র মন্ত্র ইন্দ্রজাল অনুসন্ধান করে এই বইটি সঙ্কলন করেছেন এবং উনি লিখেছেন যে এই বইতে লেখা সব কর্ম, ক্রিয়া এবং তুক তাক যেন লেখা নিয়ম অনুযায়ী করা হয়, তা না হলে হয়ত সঠিক ফল পাওয়া যাবে না অথবা বিপদও ঘটতে পারে...
টিং টং!
কলিঙ্গ বেলের শব্দ শুনে আমি আবার চমকে উঠলাম কারণ এতক্ষণ আমি বইটাতে প্রায় ডুবে ছিলাম, - কিন্তু পিজ্জার ডেলিভারি এসে গিয়ে ছিল, প্রায় চল্লিশ মিনিটর কেটে গেছে, আমি বুঝতে পারিনি। পিজ্জা টেবিলে রেখে ডেলিভারি বয়টাকে বিদায় করার পর, আমি নিজের চুল খুলে আবার সোফায় একটু আধ শুয়া অবস্থায় আবার বইটা নিয়ে বসলাম- প্রায় অনেকক্ষণ একভাবে বসে থেকে কেমন যেন একটু আড়ষ্ট লাগছিল।
দেখেতে দেখতে আমি বইটার দুটি অধ্যায় পড়ে ফেললাম। তার পরের অধ্যায়র নাম ছিল- প্রস্তুতি।
প্রথমেই লেখা ছিল যে উহলোকের (অন্য ব্রহ্মাণ্ড)এই সময় সক্রিয়- যে বিদ্যমান অশরীরী, তাহাকে সব অসারত্ব, পূর্বধারণা, অহং ত্যাগ করে একেবারে হীন, নির্বস্ত্র এবং নম্র হয়ে আহ্বান করতে হবে এবং তিনি হবেন আহ্বানকারীর ‘প্রতিপালক’।এই অশরীরী অস্তিত্ব ঠিক সময় মত নিজেকে আহ্বানকারীর সামনে ব্যক্ত করবেন।
এমন অশরীরী অস্তিত্ব কে আহ্বান করার মন্ত্র বইটাতে যথা যত লেখা ছিল :-
বইয়ের লেখা অনুযায়ী এই মন্ত্রটিকে ৩৩ বার উচ্চারণ করলে ‘প্রতিপালক’ অশরীরীকে আহ্বান জানান হবে। আহ্বান সফল হলে আহ্বানকারী নিশ্চয়ই একটি সাড়া পাবেন।
আমি আবার বলছি, বইতে বাংলা হরফে লেখা ঠিকই কিন্তু এ কোন ভাষা আমি জানি না, তাই আমি মনে মনে কয়েকবার মন্ত্রটা আওড়ে নিলাম- যাতে জিনিষটা সড়গড় হয়ে যায়। তারপরে নিজের বেড রুমে মধ্যে নিজের নাইটি, ব্রা আর প্যান্টি ছেড়ে ফেলে একেবারে উলঙ্গ হয়ে গেলাম আর ঠিক করে পা গুটিয়ে সোজা হয়ে বসে- আমি নিজের মনকে একাগ্র করে, চোখ বুজিয়ে- মন্ত্রটা ফিস ফিস করে উচ্চারণ করতে লাগলাম - “টি আউরো- ঈতা ওয়াইরু”, আর হাতের আঙ্গুলে কতবার মন্ত্র উচ্চারণ করেছি তার গণনা রাখতে লাগলাম...
ঠিক ৩৩ বার মন্ত্রটি উচ্চারণ করা শেষ হবার পরেই আমি পট্ করে নিজের চোখ খুলে আসে পাসে দেখতে লাগলাম, আমি জানতাম না যে আমার কি আশা করা উচিত, একটা যেন বিরাট অনিশ্চয়তা... তবে আমাকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলনা, বাইরে থেকে “দুম!” করে একটা আওয়াজ এলো- ইলেকট্রিক ট্রান্সফরমারের আজ অনেক দিন পরে আবার গণ্ডগোল- সারা পাড়ার আলো নিভে গেল, হটাত করে একটা হাল্কা ঝড় মত যেন শুরু হয়ে গেল, বাইরে থেকে আসা জোর একটা ঠাণ্ডা হাওয়াতে ঘরের খোলা জাংলার পর্দা গুলি উড়তে লাগল আর এই গ্রীষ্ম কালেও আমার সারা গা শির- শির করতে লাগল। তার পরেই একটা ‘ফড়- ফড়- ফড়- ফড়’ আওয়াজ; দেখলাম যে কোথা থেকে একটা প্যাঁচা উড়ে এসে বাইরে ঘরের জাংলার কাছে এসে বসেছে।
রাস্তা দিয়ে একটা গাড়ি তীর বেগে চলে গেল আর তার স্টিরিওতে একটা চেনা চেনা গান বাজছিল –“এ যে সেই আঁধার...”
এটা কি আমি নিজের আহ্বানের কোন ‘সাড়া’ পেলাম? ঠিক সেই সময় আমার টেবিলে রাখা আমার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠল।
ক্রমশঃ
সেদিন অফিসে বিশেষ কাজ ছিল না, তাই বোধ হয় আমার মনে হচ্ছিল যে সময়টা যেন বড় আস্তে আস্তে কাটছে, আমি বার বার ঘড়ি দেখ ছিলাম, কিন্তু সময় আর যেন কাটছিল না। আমাদের কোম্পানির মালিক খুব কড়া ব্যক্তি ছিলেন- তিনি নিয়ম, অনুশাসন এবং সময়নিষ্ঠার প্রতি বিশেষ জোর দিতেন। কিন্তু সেদিন কেন জানি না উনি অফিসে শুধু কয়েকজন কে থকাতে বলে আমাদের প্রায় দুই ঘণ্টা আগেই ছুটি দিয়ে দিলেন, হাজার হোক সেদিন শুক্রবার ছিল। আমি যেন হাতে চাঁদ পেয়ে গেলাম।
সাধারণত আমি বাড়ি গিয়ে স্নান করে, রান্না বান্না সেরে একটু টিভি দেখতাম, কিন্তু সেদিন যেন আমার আর তর সই ছিল না। আমার অনুসন্ধিৎসার যেন কোন সীমা ছিল না, তাই সে দিন আমি ফোন করে বাড়িতে পিজ্জা অর্ডার করলাম আর একটা নাইটি পরে নিজের চুল গুলি জড় করে উঁচু করে খোঁপা বেঁধে, ব্যাগ থেকে বইটা বের করে পোড়তে লাগলাম।
হ্যাঁ, বইটি দুর্লভ বটে! আমি নিজের নব অর্জিত সম্পদ ১৮৯২ সালে প্রকাশিত- “প্রাচীন গুপ্ত বিদ্যা”- নিয়ে একটু পোড়তে বসলাম। বাঁধানো মলাট খোলার পরেই বইয়ের নাম আর প্রকাশনের সাল লেখা আছে, তবে আজব ব্যাপার, কোন লেখক/ লেখিকার নাম নেই। আমি তার পরের পাতা উলটলাম, সেই পাতার লেখা পড়ে আমি একটু চমকে উঠলাম। লাল কালি দিয়ে মোটা হরফে লেখা ছিল –
- এই বইটি এটি খুবই প্রবলভাবে কার্যকর অতিপ্রাকৃত গুপ্তবিদ্যার ভাণ্ডার।
- মনে রাখিবেন যে এই বই ব্যবহার করিলে, আপনার জানতে অথবা অজান্তে ইহলোক আর উহলকের মাঝে অনেক দ্বার খুলে যাবে। ইহ লোক- উহ লোক এবং আরও অনেক ',্ডের অনেকগুলি দরজা উন্মুক্ত হবে অজান্তেই হোক বা হোক না কেন আপনার জন্য খুলে যাবে এবং এই দরজাগুলি দিয়ে বিভিন্ন জগতের মধ্যে বহু শক্তি, অস্তিত্ব এবং শক্তির যাতায়াত এবং সঞ্চালন হতে থাকবে… লোক অর্থ ভূত লোক, প্রেত লোক, পাতাল লোক, নরক লোক… ইত্যাদি… ইত্যাদি।
- শেষ করিবার ইচ্ছা অথবা ক্ষমতা না থকিলে, কখনই শুরু করবেন না।
আমি এটা পড়েই শিউরে উঠলাম! কিন্তু যেমন করে আমি ছোট বেলায় ভয়- ভয় ভূতের সিনেমা দেখতাম- ঠিক সেই ভাবে আমি বইয়ের এক একটা পাতা পোড়তে লাগলাম। বইটার প্রবর্তন পোড়তে পোড়তে বুঝতে পারলাম যে বইটির লেখক অনেক দেশের সংস্কৃতি, আস্থা, জাদু বিদ্যা, তন্ত্র মন্ত্র ইন্দ্রজাল অনুসন্ধান করে এই বইটি সঙ্কলন করেছেন এবং উনি লিখেছেন যে এই বইতে লেখা সব কর্ম, ক্রিয়া এবং তুক তাক যেন লেখা নিয়ম অনুযায়ী করা হয়, তা না হলে হয়ত সঠিক ফল পাওয়া যাবে না অথবা বিপদও ঘটতে পারে...
টিং টং!
কলিঙ্গ বেলের শব্দ শুনে আমি আবার চমকে উঠলাম কারণ এতক্ষণ আমি বইটাতে প্রায় ডুবে ছিলাম, - কিন্তু পিজ্জার ডেলিভারি এসে গিয়ে ছিল, প্রায় চল্লিশ মিনিটর কেটে গেছে, আমি বুঝতে পারিনি। পিজ্জা টেবিলে রেখে ডেলিভারি বয়টাকে বিদায় করার পর, আমি নিজের চুল খুলে আবার সোফায় একটু আধ শুয়া অবস্থায় আবার বইটা নিয়ে বসলাম- প্রায় অনেকক্ষণ একভাবে বসে থেকে কেমন যেন একটু আড়ষ্ট লাগছিল।
দেখেতে দেখতে আমি বইটার দুটি অধ্যায় পড়ে ফেললাম। তার পরের অধ্যায়র নাম ছিল- প্রস্তুতি।
প্রথমেই লেখা ছিল যে উহলোকের (অন্য ব্রহ্মাণ্ড)এই সময় সক্রিয়- যে বিদ্যমান অশরীরী, তাহাকে সব অসারত্ব, পূর্বধারণা, অহং ত্যাগ করে একেবারে হীন, নির্বস্ত্র এবং নম্র হয়ে আহ্বান করতে হবে এবং তিনি হবেন আহ্বানকারীর ‘প্রতিপালক’।এই অশরীরী অস্তিত্ব ঠিক সময় মত নিজেকে আহ্বানকারীর সামনে ব্যক্ত করবেন।
এমন অশরীরী অস্তিত্ব কে আহ্বান করার মন্ত্র বইটাতে যথা যত লেখা ছিল :-
আহ্বান মন্ত্র
“টি আউরো- ঈতা ওয়াইরু”
বইয়ের লেখা অনুযায়ী এই মন্ত্রটিকে ৩৩ বার উচ্চারণ করলে ‘প্রতিপালক’ অশরীরীকে আহ্বান জানান হবে। আহ্বান সফল হলে আহ্বানকারী নিশ্চয়ই একটি সাড়া পাবেন।
আমি আবার বলছি, বইতে বাংলা হরফে লেখা ঠিকই কিন্তু এ কোন ভাষা আমি জানি না, তাই আমি মনে মনে কয়েকবার মন্ত্রটা আওড়ে নিলাম- যাতে জিনিষটা সড়গড় হয়ে যায়। তারপরে নিজের বেড রুমে মধ্যে নিজের নাইটি, ব্রা আর প্যান্টি ছেড়ে ফেলে একেবারে উলঙ্গ হয়ে গেলাম আর ঠিক করে পা গুটিয়ে সোজা হয়ে বসে- আমি নিজের মনকে একাগ্র করে, চোখ বুজিয়ে- মন্ত্রটা ফিস ফিস করে উচ্চারণ করতে লাগলাম - “টি আউরো- ঈতা ওয়াইরু”, আর হাতের আঙ্গুলে কতবার মন্ত্র উচ্চারণ করেছি তার গণনা রাখতে লাগলাম...
ঠিক ৩৩ বার মন্ত্রটি উচ্চারণ করা শেষ হবার পরেই আমি পট্ করে নিজের চোখ খুলে আসে পাসে দেখতে লাগলাম, আমি জানতাম না যে আমার কি আশা করা উচিত, একটা যেন বিরাট অনিশ্চয়তা... তবে আমাকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলনা, বাইরে থেকে “দুম!” করে একটা আওয়াজ এলো- ইলেকট্রিক ট্রান্সফরমারের আজ অনেক দিন পরে আবার গণ্ডগোল- সারা পাড়ার আলো নিভে গেল, হটাত করে একটা হাল্কা ঝড় মত যেন শুরু হয়ে গেল, বাইরে থেকে আসা জোর একটা ঠাণ্ডা হাওয়াতে ঘরের খোলা জাংলার পর্দা গুলি উড়তে লাগল আর এই গ্রীষ্ম কালেও আমার সারা গা শির- শির করতে লাগল। তার পরেই একটা ‘ফড়- ফড়- ফড়- ফড়’ আওয়াজ; দেখলাম যে কোথা থেকে একটা প্যাঁচা উড়ে এসে বাইরে ঘরের জাংলার কাছে এসে বসেছে।
![[Image: Story-Owl-Sketch.jpg]](https://i.ibb.co/FWPCkDc/Story-Owl-Sketch.jpg)
রাস্তা দিয়ে একটা গাড়ি তীর বেগে চলে গেল আর তার স্টিরিওতে একটা চেনা চেনা গান বাজছিল –“এ যে সেই আঁধার...”
এটা কি আমি নিজের আহ্বানের কোন ‘সাড়া’ পেলাম? ঠিক সেই সময় আমার টেবিলে রাখা আমার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠল।
ক্রমশঃ
![[Image: Xossip-Signature-2.gif]](https://i.ibb.co/8KbKxms/Xossip-Signature-2.gif)
*Stories-Index* New Story: উওমণ্ডলীর লৌন্ডিয়া