16-04-2020, 04:04 PM
(This post was last modified: 20-04-2020, 04:22 PM by kumdev. Edited 6 times in total. Edited 6 times in total.)
মেন লাইন থেকে একটা লাইন বেরিয়ে চলে গেছে সীমান্তের দিকে তারই পাশে আমাদের হিজলতলি গ্রাম।এই হিজলতলিকে ঠীক গ্রাম বলা যায়না আবার শহর হতে গিয়েও সাজপোশাকের টানা টানিতে তা হতে না পেরে আধখেঁচড়া হয়ে থমকে গেছে।
প্রাথমিক মাধ্যমিক মিলিয়ে গোটা তিনেক কলেজ, বাজার, একটা কলেজ আর স্টেশনের কাছে একটা লাইব্রেরি এই নিয়ে হিজলতলি।
স্টেশন লাগোয়া খানিকটা আলো ঝলমল জমজমাট ব্যাপার ছেড়ে কিছুটা এগোলে নির্ভেজাল গ্রামের সীমানা। মেঠো পথ দিয়ে গ্রামে ঢুকেছে বিদ্যুৎ। লোডশেডিঙয়ের দাপটে বিজলি আলোর সঙ্গে বজায় আছে হ্যারিকেন মোমবাতির সহাবস্থান।
স্টেশন থেকে একটা চওড়া পাকা রাস্তা বেরিয়ে আমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে একটু এগিয়ে হঠাৎই মাটির রাস্তা হয়ে চলে গেছে সোজা পলাশপুরের দিকে।সেই রাস্তায় ভ্যান রিক্সা চলে,গরুর গাড়িও কখনো। তারপর অনন্ত শূন্যতার বিস্তার এই শূন্যতার মাঝে একটা বনভূমি দাঁড়িয়ে বিসদৃশ ভাবে কতকাল কেউ জানেনা। তার ভিতরে একটি বিগ্রহ বিহীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ।লোকে বলে হিরু-বিজুর মন্দির। ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির আমল তখন এ অঞ্চলকে বলা হত হিরু-বিজুর তল্লাট। দুই ভাই ছিল ডাকাত।নীল চাষিদের হয়ে লড়াই করে প্রাণ দিয়েছিল। কালক্রমে হিরু-বিজুর তল্লাট বিকৃত হয়ে নাকি হয়েছে হিজল তলি। এর অবশ্য কোন প্রামাণিক ইতিহাস নেই।
কেউ বলে হিজল গাছের জঙ্গল থেকে হিজল তলি নামের উৎপত্তি। সবই শোনা কথা তবে জঙ্গলের মধ্যে এখনো দেখা যায় একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। যেখানে পরবর্তিকালে গড়ে উঠেছিল বোষ্টমদের আখড়া।তারপর কোথায় তারা চলে যায় কেউ জানেনা।
তাদেরই একজন দলছুট হয়ে এখনো ওখানে পড়ে আছে নাম ব্রজবালা, মাধুকরী করতে জনপদে বের হলে চোখে পড়ে। অন্য সময় অশ্বত্থ শিমুল নিম গাম্বুল গাছের জঙ্গলে ঘেরা মন্দির ঘেঁষা চালা ঘরে সেঁধিয়ে থাকে। যা অজ্ঞাত তাকে নিয়ে গড়ে ওঠে নানা অলৌকিক কাহিনী। জলার ধারে ব্রজবালা কাচা মাছ ধরে খায় মারণ-উচাটন মন্ত্র জানে তার কু-দৃষ্টি পড়লে পোয়াতির পেট খসে যায় উলঙ্গ হয়ে অমাবস্যা তিথিতে তন্ত্র সাধনা করে। এইসব উপকথা ব্রজবালার নামের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়ায় সুবিধে হয়েছিল, প্রণয় প্রত্যাশীরা জঙ্গলের সীমানায় এসে থমকে দাঁড়াত।ভিতরে ঢোকার সাহস করতো না।