Thread Rating:
  • 8 Vote(s) - 3.5 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
গল্পের মত বাস্তব
#54
কিরে মুখের সামনে থেকে পান পাতাটা কি সরানোর জন্য কি এবার...... সরা সরা বলছি, রাঘব অপেক্ষা করছে আর মেয়ের কান্ড দ্যাখো...... কি হল??!!! 

উপায়হীন হয়ে সবার কথায় পানপাতা টা সরাতে বাধ্য হলাম | বাধ্য হলাম এই নোংরা লোকটার সাথে...... এত লোকের মাঝেও কেমন যেন একটা লোভী দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে | দেখলেই গা টা গুলিয়ে ওঠে, তাই নিয়ম রক্ষার্থে একঝলক তাকিয়েই চোখটা সরিয়ে নিলাম | এরপর চললো মালাবদল পর্ব | এসব মিটিয়ে সবে বিয়েতে বসেছি কিন্তু তাতেও সমস্যা, সম্প্রদান কে করবে | হিসেব মত আমার কাকারই করার কথা কিন্তু ভাবটা এমন যেন না করতে হলেই ভালো হয়, সবই কপাল!!!!! অনেক অনুরোধ উপরোধের পর যাও বা সম্প্রদানে বসতে যাবে, অনিরুদ্ধ স্যার কানে কানে এসে কি একটা বলল যাতে ওনার মুখটা পুরো ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছে | ওদিকে কাকীমা, রুপসা দিও কেমন যেন গুটিশুটি মেরে দাঁড়িয়ে | এদের সবার হল টা কি !!!!! আবার এদিকে রাঘবেরও একটা ফোন আসায় ও ও হঠাৎ কেমন যেন ছটফট করে উঠলো | কিছুই বুঝতে পারছি না, এতক্ষন যে বিয়ের জন্য তাড়া দিচ্ছিলো সে এখন পালাই পালাই করছে | এদিক ওদিক দেখে সবটা বুঝে ওঠার আগেই ঠাকুর মশাই রাঘবের কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে বললেন একদম চালাকি নয়, অনেকদিন থেকে খুঁজছি তোকে | আজ একটু নড়লেই কিন্তু একদম শেষ করে দেব |

সাথে সাথে বিয়ে বাড়ির বেশ কয়েকজন অতিথি রাঘব আর ওর ওই বন্ধুবান্ধবদের ঘিরে ধরেছে, সকলের হাতেই বন্দুক | কি যে হচ্ছে কিছুই মাথায় ঢুকছে না | তবে রাঘবের ফ্যাকাসে মুখটা দেখে বেশ ভালোই লাগছিল | এসবের মাঝে অনিরুদ্ধ স্যার আমার কাছে এসে বললেন......... 

- উঠে পড়ো, আর ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই | সারা বাড়িতে অধিকাংশ অতিথিই পুলিশ, রাঘব আর ওর দলবলের কিছু করার ক্ষমতা হবে না | কি হল উঠতে বলছি না, ওঠো জলদি |

এই বলে প্রায় হাত ধরেই আমাকে টেনে তুললেন |

- শালা রুদ্ধ, এটা ভালো করলি না কিন্তু | প্রথমে সন্দেহ হলেও মালের নেশায় বুঝিনি | তোর ওপর আমার প্রথম আন্দাজটাই ঠিক ছিল | একবার শালা নাগাল পাই, বুঝিয়ে দেব রাঘব কি জিনিস |

- এই: একদম কথা বলবি না শালা, লাথি মেরে মুখ ভেঙে দেব | অনেকদিন ধরে তোদের পিছনে ঘুরছি | ঠিক সুবিধা করে উঠতে পারছিলাম না তাই অনিরুদ্ধ বাবু প্রস্তাবটা দিতেই........ তুই ওনাকে কি দেখবি রে, তুই শুধু চল, তারপর আমরা দেখাচ্ছি | মেয়েদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলার খুব শখ না রে, চল আজ সব ঘোঁচাবো |
অনিরুদ্ধ বাবু আপনাকে অনেক ধন্যবাদ | আপনার সহযোগিতা না পেলে এত সুন্দর প্রমান সহ একসাথে এদের পুরো দলটাকে ধরে ওঠা সম্ভব হয়ে উঠত না | ভবিষ্যতে কোনো রকম সাহায্য দরকার হলে নির্দ্ধিধায় বলবেন, আমরা আপনার পাশে থাকব |

- ও: তুই সেই অনিরুদ্ধ, আঁখির প্রথম নাগর | তা নিজে তো মালটাকে ভোগ করলি, আমাদের বেলায় বাগড়া দিলি কেন বে?? বললেই পারতিস আরেকবার........... 

কথাটা শেষ করার আগেই অনিরুদ্ধ স্যার সপাটে একটা চর কসালেন | সেটা সামলে ওঠার আগেই পেটে দুটো লাথি | উনি যে কতটা রেগে গিয়েছেন সেটা ওনার মুখ চোখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে, দুজন কনস্টেবলও ওনাকে সামলে রাখতে পারছে না | আর রাঘব তো এমন অপ্রত্যাশিত আক্রমনে দূরে ছিটকে গিয়েছে | মনে হয় না সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে | কিন্তু এদিকে যে স্যারকে সামলানো মুশকিল হয়ে পড়েছে, উনি ছাড়া পেলে বোধ হয় আজ রাঘব আর বেঁচে ফিরবে না |

আমি তাড়াতাড়ি ওনার সামনে গিয়ে পথ আগলে দাঁড়িয়ে বললাম......... 

- ছেড়ে দিন স্যার, শুধু শুধু ওই নোংরা লোকটার গায়ে হাত দিয়ে নিজেকে ছোটো করবেন না প্লিজ | হাত জোড় করছি, নিজের না হয় একবার আমার কথাটা ভাবুন | আপনার কিছু হয়ে গেলে আমি যে নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না | দয়া করে আপনি শান্ত হন |

আমার কথায় উনি একটু শান্ত হতে, পুলিশের বড়বাবু বলে উঠলেন........... 

- ম্যাডাম ঠিকই বলেছেন, আমি বুঝতে পারছি আপনার রাগের কারণ কিন্তু শুধু শুধু এসবে জড়িয়ে পড়লে আপনাদের জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে | আর ওকে যখন একবার নাগালে পেয়ে গিয়েছি, ওর ব্যাবস্থা আমরাই করে নেব | আপনাকে বা আপনাদের দ্বিতীয়বার ওর সম্মুখীন হতে হবে না |
আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা না, এক্ষুনি এদের সব গাড়িতে তোল | নিয়ে চল শালা গুলোকে আজ এদের সব রস বের করবো, দেখি এখনও কত তেজ বাকি আছে |

বড় সাহেবের কথায় বাকিরা এদের গাড়িতে তুলতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ল | এমনিতেই ধরা পড়ে গিয়েছে, তার ওপর আবার স্যারের রুদ্র রুপ দেখে কেউ আর ট্যা ফো না করে শুড়শুড় করে চলে গেলো | আর রাঘবের অবস্থা দেখে কি যে ভালো লাগছিলো, ওর সব রস এখানেই শুকিয়ে গিয়েছে | স্যারের হাতে মার খেয়ে সোজা হয়েই দাঁড়াতে পারছে না | এরপর পুলিশ স্টেশনে গিয়ে কি যে হবে ভেবেই হাসি পাচ্ছে |

পুলিশের লোকজন রাঘবদের নিয়ে চলে যেতেই, কাকু কাকীমা দের কাছে গিয়ে বললেন......... 

- একদিন সময় দিলাম, কালকের মধ্যেই আঁখির পাওনা সমস্ত কিছু গুছিয়ে আমার বাড়ি দিয়ে আসবেন | একদম চালাকি করার চেষ্টা করবেন না, আশা করি বড়বাবুর কথা গুলো মন দিয়ে শুনেছেন | আর আপনাদের সাথে রাঘবের কি সম্পর্ক, কি প্ল্যান ছিলো সেটা প্রমান করতে আমার একটুও সময় লাগবে না | আর তারপর কি হতে পারে আশা করি বুঝতেই পারছেন |

- না না বাবা, আমরা কালকের মধ্যেই আঁখিকে........ আর ও তো আমাদের ঘরের মেয়ে |

- না আঁখি আপনাদের ঘরের মেয়ে ছিল, কিন্তু আর না |

তারপরেই আমার দিকে ঘুরে বললেন......... 

- নিজের সব দরকারি জিনিষ এখনই গুছিয়ে নাও | তুমি আজই আমার সাথে আমার বাড়ি যাবে | 

আমি সবে কিছু বলতে যাবো কিন্তু তার আগেই উনি আমায় থামিয়ে দিলেন.......... 

- উহু: একটাও কথা বলার চেষ্টা করবে না | আমি তোমায় জিজ্ঞেস করিনি, আদেশ করছি, যাও | আর হ্যাঁ আপনারা কালকের মধ্যে সবকিছু গুছিয়ে আমার বাড়ি দিয়ে আসবেন | আশা করি দ্বিতীয়বার বোঝাতে আসতে হবে না, তাতে আপনাদেরই বিপদ কারণ তখন আর আমি একলা আসবো না | 
আর রুপসা, কলেজে গিয়ে কিছু পড়াশোনা শেখার চেষ্টা করো | তুমি কি ভেবেছিলে যে আমি তোমার বাবার ভয়ে, তোমার টাকার জোড়ে তোমার পেছনে পড়ে আছি?? সব সময় জেনে রাখবে ছলচাতুরি করে, বা টাকার জোড়ে চালাকি করে, ভয় দেখিয়ে কারুর মন পাওয়া যায় না | যেটা বলছি মাথায় রেখো | আর দ্বিতীয় দিন যদি আঁখি বা অন্য কোনো মেয়ের ক্ষতি করার কথা ভাবো বা চেষ্টা করো, তাহলে আমার থেকে খারাপ তোমার জন্য কেউ হবে না | আর আমি কি কি করতে পারি সেটা তুমি ভালো করেই জানো |

কথা গুলো বলেই আমার হাত ধরে টেনে বাড়ি শুদ্ধ লোকের সামনে দিয়ে গটগট করে হেঁটে বেড়িয়ে এলেন |
[+] 4 users Like eklasayan's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: গল্পের মত বাস্তব - by eklasayan - 16-04-2020, 03:11 AM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)